Ajker Patrika

বিশ্বমঞ্চে কেন নেই বাংলাদেশের আম্পায়ার

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ৫৬
বিশ্বমঞ্চে কেন নেই বাংলাদেশের আম্পায়ার

কয়েক দিন আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ অফিশিয়ালদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি, সেখানে বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ারের নাম নেই। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অনুপস্থিতি নতুন নয়। কিন্তু দীর্ঘশ্বাসটা তখনই বাড়বে, যখন জানবেন জিম্বাবুয়ের একজন আম্পায়ারও আছেন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যাদের ক্রিকেট অবকাঠামো বাংলাদেশের চেয়ে দুর্বল।

মেয়েদের বিশ্বকাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ কিংবা ছেলেদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অংশগ্রহণ থাকলেও ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় টুর্নামেন্ট, অর্থাৎ ছেলেদের বিশ্বকাপে (৫০ কিংবা ২০ ওভারের) বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ার কখনোই সুযোগ পাননি। ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন বিশ্বমঞ্চে নিজেদের গৌরবগাথা লিখছে; সেখানে আম্পায়ারিংয়ে বাংলাদেশ যেন তৃতীয় সারিতে। অথচ ক্রিকেটে আম্পায়ারদেরও সুযোগ থাকে নিজের দেশকে বিশ্বের কাছে অন্যভাবে পরিচিত করার। বড় উদাহরণ হিসেবে আসবে ডেভিড শেফার্ড, স্টিভ বাকনার, বিলি বাউডেন, আলিম দারদের নাম।

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আম্পায়ারিংয়ে ৯ দেশের যে ১৬ জন আম্পায়ার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁদের ১২ জন এসেছেন এলিট প্যানেল থেকে। বাকি চারজন আইসিসির ইমার্জিং প্যানেল থেকে। এই ইমার্জিং প্যানেলে সাধারণত ১২টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের ৪৮ জন আম্পায়ার তালিকাভুক্ত থাকেন। আইসিসির ইমার্জিং প্যানেলের সংক্ষিপ্ত তালিকাটা হয়ে থাকে ১২ জনের। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে এগিয়ে, সেই শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত আছেন ১৯ নম্বরে। যদি আম্পায়ারিংয়ে আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিং করা হয়, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অবস্থান কোথায়, সেটি নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের কখনোই সুযোগ না পাওয়াটা দেশের আম্পায়ারিংয়ের হতশ্রী চিত্রটাই যেন তুলে ধরে। যদিও বাংলাদেশের আম্পায়াররা ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিয়মিত আম্পায়ারিং করেছেন। দেশের একমাত্র আম্পায়ার হিসেবে এনামুল হক মনি নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে টেস্টে অন ফিল্ড আম্পায়ারিং করেছেন। বাংলাদেশের আরেক আম্পায়ার সৈকতের টেস্ট অভিষেক হয়েছে এ বছর। মহামারিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ চারটি সিরিজ (সীমিত ওভারের ক্রিকেট) পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশেরই আম্পায়াররা। তবু বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের আম্পায়াররা কেন সুযোগ পান না? প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে গিয়ে আলোর নিচে প্রগাঢ় এক অন্ধকার স্পষ্ট হলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের শীর্ষস্থানীয় এক আম্পায়ার আজকের পত্রিকাকে বলছেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার ৯ দেশ থেকে আম্পায়ার এসেছেন, অথচ আমরা নেই। এটা আমাদের কাছে তেমন ভাবনার বিষয়ও নয়! অথচ জাতীয় দলে খেলা একজন তরুণ ক্রিকেটারের তুচ্ছ বিষয় নিয়েও আমাদের কত উন্মাদনা, আগ্রহ। আম্পায়ারদের জন্য বরাদ্দ শুধু গালি। বাংলাদেশ দলের আম্পায়ারদের নিয়ে ইতিবাচক খবর খুব কম। আমাদের তেমন আর্থিক-সামাজিক মর্যাদা নেই।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বেতনভুক্ত আম্পায়ার আছেন ৩০ জন। এর মধ্যে চারজন আইসিসির প্যানেল আম্পায়ার—সৈকত, মাসুদুর রহমান মুকুল, তানভীর আহমেদ ও গাজী সোহেল। এই চার আম্পায়ারই মূলত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক আম্পায়ার। খেলোয়াড়দের মতো আম্পায়ারদেরও নিয়মিত পারফরম্যান্স মূল্যায়ন হয়। খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে যেটি করে টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকেরা।

আন্তর্জাতিক আম্পায়ারদের ক্ষেত্রে সেটি আইসিসি। একজন আম্পায়ারের সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়াই তাঁর মূল্যায়নের একমাত্র মানদণ্ড নয়। দেখা হয় তাঁর শৃঙ্খলা, ইংরেজিতে বলা ও লেখার দক্ষতা, যোগাযোগদক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ, মাঠে খেলোয়াড়দের ওপর নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। এসব মানদণ্ডে বাংলাদেশের আম্পায়াররা অনেক সময় পিছিয়ে যান বিশ্বের উন্নত দেশের আম্পায়ারদের সঙ্গে।
অবশ্য শুধু এসব মানদণ্ডেই নয়, আরও কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ও চলে আসে এখানে। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। তুলনামূলক কম যোগ্যদের বেশি ম্যাচ বরাদ্দ বা প্রভাববিস্তারী ক্লাবগুলোর চাহিদা মেটাতে পছন্দের আম্পায়ারদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগ প্রায় প্রতিবছরই মেলে। গত জুনে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আম্পায়ারিংয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে সাকিব আল হাসানের স্টাম্পে লাথি মারার ঘটনা তো ছড়িয়ে পড়ল পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিজ্ঞ আম্পায়ার বড় হতাশা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘দেশে আম্পায়ারের অভাব নেই। তবে কোয়ালিটি আম্পায়ারের অভাব আছে। যাঁরা ভালো আম্পায়ার, তাঁদের ওপর আসার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা। আম্পায়াররা এখানে উপযাচক, পুতুল হয়ে থাকেন।’ তিনি বেশ ক্ষোভ নিয়েই যোগ করলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কৃতি যেটাই হোক, স্বচ্ছ আম্পায়ারিং না হলে সেটা ক্রিকেটের ক্ষতি, আম্পায়ারদেরও ক্ষতি। ভালো আম্পায়াররা পায় ১০ ম্যাচ, অযোগ্য আম্পায়াররা ৩০টা। ভালো আম্পায়াররা বেশি চাপে থাকেন। এ কারণে ভালো ছেলেরা আম্পায়ারিংয়ে আসতে চায় না।’

দেশের আরেক আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সামনে এনেছেন আর্থিক অনিশ্চয়তার বিষয়টি। যে ছয় ক্যাটাগরিতে বিসিবি ৩০ আম্পায়ারকে বেতনভুক্ত করেছে, তাঁদের মধ্যে আইসিসির চার প্যানেল আম্পায়ার সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার টাকার বেতন পান। ১৫ বছর আগে নাদির শাহ, মনির বেতন ছিল মাসে ৪০ হাজার টাকা। গত ১৫ বছরে শীর্ষ আম্পায়ারদের বেতন ২০ হাজার টাকাও বাড়েনি। যদিও আম্পায়ার বিভাগ জানাচ্ছে, বিসিবি যে ম্যাচ ফি দেয় আম্পায়ারদের, তাতে শীর্ষ আম্পায়ারদের পারিশ্রমিক মাসে আয় ১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। বিসিবি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আম্পায়ারদের ম্যাচ ফি দেয় ৩৫ হাজার টাকা। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে দেয় ১০ হাজার টাকা। অবশ্য ভারতের একজন আম্পায়ার আইপিএলের ১৫টি ম্যাচ পরিচালনা করেই প্রায় ৬৫ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। আম্পায়ারদের পারিশ্রমিক নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাঁদের বেতনের অনেক পার্থক্য হবে। আমাদের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় ঠিক আছে। তবু হয়তো সমস্যা থাকতে পারে। সেটা নিয়ে কাজ করা যাবে।’

বিশ্বমঞ্চে দেশের আম্পায়ারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আইসিসিতে ক্রিকেট বোর্ডের তদবির-সুপারিশের বিষয়টিও অনেক সময় সামনে আসে। যদিও বিসিবির প্রধান নির্বাহী মনে করেন, এটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত দক্ষতার বিষয়। নিজের পারফরম্যান্সের ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে আম্পায়ারদের মান বাড়াতে বিসিবি আরও উদ্যোগ নেবে বলে জানান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, ‘এটা আমাদের চিন্তার বিষয় (ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান)। তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ করতে হবে। আম্পায়ারদের ওপরে তুলতে হলে তাঁদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে এগিয়ে গেল ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৬
অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

যেখানে শুরুর কথা বলার আগেই শেষ—ধর্মশালায় আজ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি দেখে অনেকের এই গান মনে আসতেই পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ায় সেখানেই ম্যাচের ফল সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া যায়। ভারত ম্যাচটা এরপর জিতে গেল হেসেখেলেই।

ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত—টি-টোয়েন্টি সিরিজে ম্যাচগুলোতে এভাবেই পর্যায়ক্রমে আসছে ফল। সমানে সমানে লড়াই হলেও ম্যাচগুলো হচ্ছে একপেশে। ৯ ডিসেম্বর সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০১ রানে হারিয়েছে ভারত। প্রোটিয়াদের ঘুরে দাঁড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। ১১ ডিসেম্বর নিউ চন্ডীগড়ে ভারতকে ৫১ রানে হারিয়ে সমতায় ফেরেন প্রোটিয়ারা। আজ ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে ভারত।

১১৮ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকে ভারত। ৩২ বলে ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়তে অবদান রাখেন শুবমান গিল ও অভিষেক শর্মা। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে অভিষেককে ফিরিয়ে বিস্ফোরক এই জুটি ভাঙেন করবিন বশ। ১৮ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৫ রান করেন অভিষেক। বিস্ফোরক এই ওপেনার ফেরার পরও ভারতের জয় নিয়ে কোনো সংশয় তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন গিল ও তিলক ভার্মা। ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে গিলকে (২৮) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মার্কো ইয়ানসেন।

গিলের বিদায়ের পর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ম্যাচটা প্রায় শেষ করেই এসেছিলেন। তবে ভারতের জয়ের জন্য যখন ৯ রান প্রয়োজন, তখন লুঙ্গি এনগিদির বলে ফেরেন সূর্যকুমার (১২)। তাতে ভারতের স্কোর হয়ে যায় ১৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৯ রান। তুলির শেষ আঁচড় এরপর দিয়েছেন শিবম দুবে। ১৬তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ওটনিল বার্টম্যানকে ছক্কা ও চার মেরে ভারতকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন দুবে।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো ২০ ওভার খেলে ১১৭ রানে গুটিয়ে গেছে। অধিনায়ক এইডেন মার্করামের ৪৬ বলে ৬১ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কিছু নেই প্রোটিয়াদের ইনিংসে। ভারতের আর্শদীপ সিং, হারশিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়া। ৪ ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন আর্শদীপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্ত্রী, পড়াশোনা, বেতনসহ গুগলে শান্তকে নিয়ে মানুষ যা জানতে চান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৬
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা রত্না। ছবি: ফেসবুক
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা রত্না। ছবি: ফেসবুক

গুগল যেন আলাদিনের চেরাগ! যেখানে মুহূর্তে মেলে সব কিছুর উত্তর। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে নিয়মিত তারকাদের কত কিছুই জানতে চান ব্যবহারকারীরা। ২০২৫ সালে গুগলে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয়েছে কাকে, জানেন? ১৪ বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশী। তিনি পেছনে ফেলেছেন বিরাট কোহলির মতো বড় তারকাকে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের নিয়েও গুগলে কত কিছু ‘সার্চ’ করা হয়।

‘নাজমুল হোসেন শান্ত’ লিখে ‘সার্চ’ করলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে (এসইও) কী কী সাজেস্ট করে, এরকম কিছু বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে মজার উত্তর দিলেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগে আর কোনো ম্যাচ না থাকায় শান্ত সপরিবারে ঘুরে এসেছেন মালয়েশিয়ায়। ঘোরাঘুরি করতে শান্তর কাছে সবচেয়ে পছন্দের মালদ্বীপ। ঘুরতে পছন্দ করেন নিজের শহর রাজশাহীতেও। খেতে পছন্দ করেন রাজশাহীর যেকোনো স্ট্রিট ফুড।

গুগল সার্চে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের প্রসঙ্গ আসতেই একটু যেন লাজুক হয়ে গেলেন। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘আমার স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পরিসংখ্যান বিভাগে পড়াশোনা করেন। আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি। আমাদের প্রায় সাড়ে চার-পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিল। এখন প্রায় চার-পাঁচ বছর সংসার করছি।’

শান্তর শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখেও সার্চ করা হয়। এটির উত্তরে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বললেন, ‘রাজশাহী আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকে আমি পড়াশোনা করছি। এখন আমি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির একজন স্টুডেন্ট। এখনো গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয়নি। পড়ছি মার্কেটিং নিয়ে।’

শান্তর বেতন নিয়েও গুগলে সার্চ করা হয় নিয়মিত। এ বিষয়ে তাঁর উত্তর, ‘বিসিবি যখন প্রতিবছর সেন্ট্রাল কন্ট্র্যাক্টের তালিকা প্রকাশ করে, তখন তো এটা উন্মুক্ত হয়ে যায়। এটা তো সবার জানার কথা।’ একবার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল শান্তর বেতন ১০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সেটি নিয়ে শান্তর রসাত্মক জবাব, ‘না, একরকম চলে যাচ্ছে। সংসার আলহামদুলিল্লাহ ভালোমতোই চলে যাচ্ছে।’

সেঞ্চুরির পর হেলমেটটা খুলে শূন্যে একটা লাফ দেন শান্ত। লাফ দেওয়ার পর ডাগআউটের উদ্দেশে চুমু ছুড়ে মারেন তিনি। কার উদ্দেশে তাঁর এই চুমু, সে উত্তরে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘কাউকে উৎসর্গ করা না। এটা শুধু সে সময় চলে এসেছিল। প্রথম আমার মনে হয় যখন ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলাম, তখন এটা আপনাআপনি হয়ে গিয়েছিল। ড্রেসিংরুমে যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেক ক্রিকেটার, সাপোর্টিং স্টাফ সবাই যেভাবে সহায়তা করেছিলেন, এটা ড্রেসিংরুমের উদ্দেশেই আসলে করা। আলাদা কোনো পরিকল্পনা করে করা ছিল না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেসিকে পাওয়া পুরো ভারতের জন্য স্মরণীয় এক মুহূর্ত: শচীন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৯
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির বরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির বরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের আজকের সন্ধ্যাটা ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য মনে রাখার মতোই। সুনীল ছেত্রী, শচীন টেন্ডুলকার, লিওনেল মেসি—এই তিন কিংবদন্তিকে একসঙ্গে দেখতে পেরেছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার মাঠে ঢুকতেই ‘মেসি, মেসি’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ওয়াংখেড়ে।

মেসিকে আজ উৎসবমুখর পরিবেশে শচীন তাঁর ১০ নম্বর জার্সি উপহার দিয়েছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে শচীন এই ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। মেসিও তাঁর ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা, আর্জেন্টিনা, ইন্টার মায়ামির হয়ে ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। দুই ‘নাম্বার টেনে’র এই জার্সি বিনিময়ের ছবি সামাজিকমাধ্যমে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর্জেন্টাইন বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ডকে নিয়ে শচীন বলেন, ‘আজ তিন জনকে এক সঙ্গে পাওয়া মুম্বাইবাসী ও পুরো ভারতবাসীর জন্য সত্যিকার অর্থেই এক স্বর্ণালী মুহূর্ত। আপনারা সবাই যেভাবে তিন গ্রেটকে বরণ করলেন, সত্যিই অসাধারণ।’

ক্যারিয়ারে কত যে পুরস্কার জিতেছেন, সেটা মেসি গুনে হয়তো শেষ করতে পারবেন না। এমএলএস কাপ জিতে ক্যারিয়ারে ৪৭তম শিরোপা জিতেছেন তিনি। ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আটবার। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জিতে আজন্মলালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তাঁর। মেসির সম্পর্কে বলতে গিয়ে শচীন যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘লিওর প্রসঙ্গ এলে যদি তার খেলা সম্পর্কে বলি, এটা সঠিক প্ল্যাটফর্ম নয়। তার সম্পর্কে কী বলার আছে? সে সবকিছু অর্জন করেছে। তার আত্মনিবেদন ও খেলার প্রতি দৃঢ় মানসিকতার ব্যাপারটাকে সত্যি আমরা অনেক প্রশংসা করি।’

২০১১ সালে এই ওয়াংখেড়েতেই শচীন জিতেছিলেন পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ শুধু মুম্বাইয়েই নয়, ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো ভারতজুড়েই। শচীনকে কাঁধে তুলে ওয়াংখেড়ে ঘুরেছিলেন বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। আজ মেসিবরণ অনুষ্ঠানে শচীন স্মরণ করেছেন ১৪ বছর আগের সেই পুরোনো স্মৃতি। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘আমার এখানে মনে রাখার মতো অনেক মুহূর্ত রয়েছে। মুম্বাইকে আমরা স্বপ্নের শহর বলি। এই ভেন্যুতে অনেকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আপনাদের সমর্থন ছাড়া ২০১১ সালে এমন স্বর্ণালী মুহূর্ত আমরা পেতাম না।’

কলকাতায় গতকাল নিজের ৭০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্য উন্মোচন করেছেন তিনি। তবে সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে গিয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থা হয়ে গেছে। রাগে-ক্ষোভে চেয়ার ছুড়ে মেরেছেন ভক্ত-সমর্থকেরা। কলকাতার বাজে অভিজ্ঞতা সঙ্গে করে গতকাল দুপুরে হায়দরাবাদের বিমানে চড়েন মেসি। একটি প্রদর্শনী ম্যাচ শেষে মাঠে নামেন মেসি এবং তাঁর দুই সতীর্থ রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ। সঙ্গে ছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। মেসিকে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা গ্যালারি। হাত নেড়ে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দেন এই ফরোয়ার্ড। মাঠে রেবন্ত এবং শিশুদের সঙ্গে পাসিং খেলার সময় মেসি কয়েকবার বল গ্যালারিতে পাঠান। দর্শকদের আনন্দ সেটা অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ তাঁকে রাজকীয়ভাবে বরণ করা হয়েছে ওয়াংখেড়েতে। মেসির সঙ্গে ছিলেন রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সবার আগে সেমিফাইনালে ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

এশিয়া কাপ, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ—এ বছর মেজর টুর্নামেন্টগুলোতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলোতে একটা দৃশ্য খুবই পরিচিত। টসের সময় কোনো অধিনায়কই অপরজনের সঙ্গে করমর্দন করবেন না। এমনকি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে যে ‘হাইপ’ থাকে, মাঠে ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না।

বাংলাদেশ সময় আজ নির্ধারিত সকাল ১১টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির বাগড়ায় ভারত-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ম্যাচ এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে। ম্যাচের দৈর্ঘ্য ১ ওভার কমানো হয়েছে। দুবাইয়ে আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি মাঠে ৪৯ ওভারের ম্যাচে ভারত ৯০ রানের উড়ন্ত জয় পেয়েছে। টানা দুই জয়ে যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দলটি।

৪৯ ওভারে ২৪১ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৩.১ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান। পঞ্চম উইকেটে ৬৫ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন ফারহান ইউসাফ ও হুজাইফা হাসান। পাকিস্তানের ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ২৪তম ওভারের শেষ বলে অধিনায়ক ফারহানকে (২৩) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বৈভব সূর্যবংশী।

একপ্রান্ত আগলে রাখা হুজাইফা সতীর্থদের কাছ থেকে কোনো সমর্থন পাননি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তান ৪১.২ ওভারে ১৫০ রানে গুটিয়ে গেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭০ রান করেছেন হুজাইফা। ৮৩ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ২ ছক্কা মেরেছেন। ১২ রানে পাকিস্তান হারিয়েছে শেষ ৩ উইকেট। ৪২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আলী রাজাকে (৬) ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের ইতি টানেন কিশান সিং। কিশান পেয়েছেন ২ উইকেট। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন দীপেশ দেবেন্দ্রন ও কনিষ্ক চৌহান।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পেলেও ভারত ৪৯ ওভার খেলতে পারেনি। ৪৬.১ ওভারে ২৪০ রানে গুটিয়ে গেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন অ্যারন জর্জ। ৮৮ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১২ চার ও ১ ছক্কা। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হয়েছেন চৌহান। ৪৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেছেন ৪৬ রান। বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত