Ajker Patrika

শেন ওয়ার্ন: ভালোমন্দ মিলায়ে সকলি

অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি থেকে 
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১১: ১৩
শেন ওয়ার্ন: ভালোমন্দ মিলায়ে সকলি

ভালো খেলোয়াড় তো অনেকেই হয়। নামীদামি ভদ্র এমন খেলোয়াড়ে ভর্তি ক্রীড়া দুনিয়া। কিন্তু তর্ক-বিতর্ক আর মেধায় সমান ঝলসে ওঠা খেলোয়াড় কজন হতে পারে? 

আমাদের সময়কালে আমি দুজনের কথা বলব। একজন ষাট বছর বয়সে বিদায় নেওয়া ডিয়েগো ম্যারাডোনা। নেশা-পেশা-ডোপ কত বিতর্ক, কিন্তু ফুটবলের ভগবানতুল্য ছিলেন এই প্রতিভা। আর একজন সদ্য বিদায়ি শেন ওয়ার্ন। তাঁর নামে কত গল্প, কত বাদ-অপবাদ, কিন্তু শেন তো শেনই। অস্ট্রেলিয়া খেলাপাগল দেশ। এত কম জনসংখ্যার একটি দেশ দুনিয়ার সব খেলায় আধিপত্য বজায় রাখে। এর কারণ, খেলাধুলার প্রতি মনোযোগ আর তার লালন-পালন। এ দেশের আইকন ডন ব্র্যাডম্যান। নাক উঁচু অজি কিংবদন্তি। ১৯৯৬ সালে তাঁর জন্মদিনে মাত্র দুজন খেলোয়াড়কে বাসভবনে ডেকেছিলেন তিনি। একজন ব্র্যাডম্যানের মতে, তাঁর মতো খেলে, যাঁর নাম শচীন টেন্ডুলকার। আরেকজন তাঁর সঙ্গী সেরা স্পিনার শেন ওয়ার্ন। বাকি সব তারকা হোটেল রুমে বসে আর এই দুজন ছিলেন অতিথি। 

সিডনি তো বটেই, পুরো বিশ্বের ক্রীড়ামোদী মানুষের মন খারাপ করে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন শেন ওয়ার্ন। যে কটি দেশ খেলে, তাদের ভেতরেই কয়েকজন হয়ে ওঠেন বিশ্বসেরা কিংবদন্তি। অস্ট্রেলিয়ার সমৃদ্ধ ক্রিকেট জগতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। তবে একটি বিষয়ে কেউ নেই তাঁর ধারে-কাছে। বিনোদন ও লাইফ লিভিং বলতে যা বোঝায়, তা শতভাগ করে গেছেন। যত দিন মাঠে ছিলেন, তত দিন মুখরোচক শিরোনাম। যখন মাঠের বাইরে, তখনো শিরোনাম। যখন ধারাভাষ্য দিতে প্রেসবক্সে, তখনো মজার মানুষ। 

তিনি যখন ক্রিকেট থেকে অবসর নেন, তখন তাঁর নামের পাশে টেস্টে ৭০৮ উইকেট, যেটা তখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ। শুধু ৭০৮ উইকেট বা তাঁর একের পর এক বিষাক্ত লেগ স্পিনে বিপক্ষ ব্যাটারদের আউট হওয়া দিয়ে হয়তো ধরা যাবে না শেন ওয়ার্নকে। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম বর্ণময় চরিত্র তিনি। রেকর্ডের খ্যাতির পাশে সেখানে সমান উজ্জ্বল যৌন কেলেঙ্কারি। কোনো কিছুই লুকিয়ে করেননি ওয়ার্ন। বুক চিতিয়ে, হাসিমুখে সবটা নিয়ে সামনে দাঁড়িয়েছেন। মাত্র ৫২ বছর বয়সে তাঁর চলে যাওয়ায় তাই হতবাক ক্রিকেট দুনিয়া। এখনো মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। হঠাৎ করে যেন শেষ হয়ে গেল ক্রিকেটের একটা অধ্যায়। 

একটা মজার গল্প বলার লোভ সামলাতে পারছি না। আমার অনুজপ্রতিম সিডনিবাসী আহসান হাবিব তখন নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। একবার তার কাজ পড়েছিল পাঁচ তারকা এক হোটেলে। তাঁর দায়িত্ব ছিল আগত অতিথিদের একটি রেজিস্টারে নাম লিখতে বলা। একদিন হাবিবের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন দুই অজি খ্যাতিমান মানুষ। একজন তখনকার মন্ত্রী, আরেকজন ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন। মিনিস্টার হাবিবকে অনুরোধ করলেন তাঁর নাম লিখতে। একটু থতমত খেয়ে যাওয়ায় মন্ত্রী তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তুমি আমাকে চিনতে পারোনি? হাবিব মাথা নেড়ে জবাব দিয়েছিল: সরি, আমি তোমাকে চিনি না। নাম লেখা শেষে মন্ত্রী কিছুটা মজা আর ব্যঙ্গসহকারে হাবিবকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন: কবে এসেছ এই দেশে? আর কাকে চেনো তুমি? 

হাবিব একটুও বিচলিত না হয়ে জবাব দিল, এই যে তোমার পেছনে দাঁড়ানো শেন ওয়ার্ন, তাঁকে চিনি। তিনি আমার হিরো। আমাদের দেশের সবাই চেনে তাঁকে। শেন ওয়ার্ন অজি স্টাইলে এক চোখ টিপে তাকে স্বাগত জানিয়ে হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে ভেতরে ঢুকলেও বেরোনোর সময় আবার তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করতে ভোলেননি। এটাই ছিল তাঁর চরিত্র। সরল-সহজ ফান লাভিং এক স্পিন জাদুকর। 

সত্যিকারের অজি লাইফ মেনে খাঁটি অস্ট্রেলিয়ান আমরা হতে পারব না, সম্ভবও না। যুগ যুগ ধরে বাস করে বা ক্যাঙারুর দেশে জন্ম নিলেও তা হবে না। এর সংস্কৃতি ও শিকড় যেখানে, সেখান থেকে শুরু করলে তাঁর মতো গাঁক-গাঁক করে অজি উচ্চারণে ইংরেজি বলা, অমন অঙ্গভঙ্গি করা, ইচ্ছেমতো বিয়ার পান করা এমনকি নেশা করাও জানা চাই বৈকি। এই যেমন একবার ভারত সফরে যাওয়ার সময় সবাই যখন বাক্সপেটরা নিয়ে ব্যস্ত, তখন তিনি ব্রেকফাস্টের জন্য অসংখ্য বিনসের কৌটা নিতে গিয়ে শিরোনাম হয়েছিলেন, ‘মি. বিন!’ 

সরল-সহজ ফান লাভিং এক স্পিন জাদুকর শেন ওয়ার্নজীবনের প্রতি, শরীরের প্রতি খুব একটা সুবিচার করেননি কখনো। ওয়ার্নের সিগারেটপ্রেমের কথা জানা যায় তাঁর একসময়ের সতীর্থ মাইকেল ক্লার্কের কাছ থেকে। ২০০৬ সালে অ্যাশেজ সিরিজের আগে এক অনুশীলন ক্যাম্পে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া দল। সে সময় শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া বাকি সবকিছু নিয়ে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। ওয়ার্ন বেছে নিয়েছিলেন সিগারেট। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ক্লার্ক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ওয়ার্ন সিগারেট খেতে পছন্দ করে। ও সেই ক্যাম্পে যাওয়ার আগে জানিয়ে দিয়েছিল, সিগারেট ছাড়া যাবে না। ওয়ার্ন তিন জোড়া অন্তর্বাস এবং মোজার বদলে সিগারেট নিয়ে গিয়েছিল।’ ক্লার্ক বলেন, ‘অন্ধকারের মধ্যে সবাই স্লিপিং ব্যাগের ভেতরে। শুধু একটা জায়গায় কমলা রঙের একটা আলো। স্লিপিং ব্যাগের ভেতরে ধূমপান করছে ওয়ার্ন।’

আবার সেই মানুষটিই একসময় আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক হয়ে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম অধিনায়ক, যিনি আইপিএল জেতেন। প্রতিযোগিতার প্রথম বছরই রাজস্থান রয়্যালসকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। যত মুখরোচক গল্পই থাকুক না কেন, শেন ছিলেন সেরার সেরা স্পিনার। ১৯৯৩ সালের আ্যশেজ সিরিজে তাঁর জাদুকরী স্পিনে আউট হন ইংল্যান্ডের মাইক গ্যাটিং। এই বলকে বলা হয় ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’। 

নারী, নেশা, উদ্দাম জীবনযাপন—সবকিছুর বাইরে এক বর্ণাঢ্য চরিত্র ছিলেন শেন। তাঁর জবানবন্দিতে সেরা দুই ব্যাটার শচীন ও লারা। এঁরাই তো তাঁরা, যাঁরা আমাদের যৌবন ও খেলার জগৎকে রাঙিয়ে রেখেছিলেন। এখনো রাঙিয়ে রাখেন বিদায় অস্তরাগে। ক্রিকেট কী, সেটাও পৃথিবীর অনেক মানুষ জানেন না, বোঝেনও না। কিন্তু তাঁদের অনেকে শেন ওয়ার্নের নাম জানেন। 

শেন তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি)। এই মাঠে খেলা দেখতে দেখতে মনে পড়ে যাবে সোনালি চুল উড়িয়ে দৌড়ে আসা সেই কিংবদন্তি বোলারকে, যাঁর বলের ঘূর্ণি বুঝতে পারার আগেই উপড়ে নিত সেরা ব্যাটারের মিডেল স্টাম্প। 

গত রাতে হঠাৎই তাঁর জীবনের খুঁটি উপড়ে নিয়েছে নিয়তি। থাইল্যান্ডে মারা গেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিন জাদুকর।
গুডবাই মেট, গুড বাই শেন ওয়ার্ন। আওয়ার বিলাভড ওয়ার্নি...।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৫ উইকেট নিয়ে থামলেন মোস্তাফিজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত

আইপিএলে কেন কলকাতা নাইট রাইডার্স এবার তাঁকে ১২ কোটি টাকায় নিয়েছে, সেটি খুব ভালোভাবেই আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আজ একটা পর্যায়ে মোস্তাফিজের নামটা উইকেটশিকারির তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে ছিল।

শারজা ওয়ারিয়র্জের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলে কাল দুপুরে ঢাকায় ফিরে আসার কথা মোস্তাফিজের। এসেই নেমে পড়তে হবে বিপিএল খেলতে। সিলেটে তাঁর দল রংপুর রাইডার্সের প্রথম ম্যাচ আগামী সোমবারে। ঢাকায় ফিরে দুদিনের সংক্ষিপ্ত বিরতিতে তিনি চলে যাবেন সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়িতে। সেখান থেকে ফিরে দলে যোগ দেবেন রোববার।

বিপিএলে যোগ দেওয়ার আগে একাধিক সুখবর পেলেন মোস্তাফিজ। আইপিএল নিলামে তিনি বিক্রি হয়েছেন রেকর্ড দামে। আরব আমিরাতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে আইএল টি-টোয়েন্টিতেও ধারাবাহিক ভালো খেলেছেন। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। আজ শারজার বিপক্ষে শীর্ষ উইকেটশিকারি হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন সতীর্থ ওয়াকার সালামখেইলের সঙ্গে। ওয়াকার ২ উইকেট নিয়ে টপকে যান মোস্তাফিজকে। তবু টুর্নামেন্টজুড়ে যে বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ, আজ দেশে ফেরায় তাঁকে নিশ্চিতভাবেই মিস করবে দুবাই ক্যাপিটালস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসছে বিসিবির নতুন টুর্নামেন্ট

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি
পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নতুন একটি টুর্নামেন্ট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেটির নাম ‘রাইজিং স্টার অনূর্ধ্ব-২৩ ’। সংস্থাটির মিডিয়া কমিটির প্রধান আমজাদ হোসেন জানালেন, টুর্নামেন্টটি হবে অনেকটা বিসিএলের মতো। যেখানে অংশ নেবে চারটা দল। দলগুলো হলো–পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল।

টুর্নামেন্ট হবে ডাবল লিগ পদ্ধতিতে। সেখান থেকে শীর্ষ দুই দল শিরোপার লড়াই করবে। অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ের এই টুর্নামেন্টে ম্যাচ হবে মোট ৩১ টি। মূলত পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি।

সংবাদমাধ্যমকে আমজাদ বলেন, ‘আমরা রাইজিং স্টার অনূর্ধ্ব ২৩ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। এটা বিসিএলের মতই হবে। অনূর্ধ্ব ২৩ এর পর নির্দিষ্ট কোনো টুর্নামেন্ট ছিল না। কিন্তু এবার হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ফেব্রুয়ারিতে এই টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনা করছি আমরা।’

টুর্নামেন্টের ভেন্যু প্রসঙ্গে আমজাদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে দুটো স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচগুলো। ডাবল লিগ পদ্ধতিতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। ফাইনাল ঢাকায় হবে। এগুলো ছিল আমাদের প্রধান কিছু সিদ্ধান্ত।’

আসন্ন নতুন বছরে বিসিবি সারা বাংলাদেশে ১০০ উইকেট বানাতে চায়, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’। আমজাদ বলেন, ‘জেলা লিগগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য অন্তত ৪০টি জেলায় লিগ আয়োজন করা। আমাদের নতুন একটি থিম লঞ্চ করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা দেশে ১ বছরে ১০০ উইকেট বানাবে বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৯
জেলা লিগগুলো সচল করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি
জেলা লিগগুলো সচল করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি

প্রায় দিনব্যাপী বোর্ড সভার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলন। লম্বা অপেক্ষায় থাকা সংবাদমাধ্যম কর্মীদের চমকে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাননি সংবাদ সম্মেলনে আসা তিন পরিচালক। তবে বোর্ড মিটিংয়ে নেওয়া নতুন দুটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান।

আসন্ন নতুন বছরে বিসিবি সারা বাংলাদেশে ১০০ উইকেট বানাতে চায়, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’। আমজাদ বলেন, ‘জেলা লিগগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য অন্তত ৪০টি জেলায় লিগ আয়োজন করা। আমাদের নতুন একটি থিম লঞ্চ করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’।

সারা দেশে এক বছরে ১০০ উইকেট তৈরির পরিকল্পনা বিসিবির গ্রাউন্ডস বিভাগের প্রধান খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ‘১০০ উইকেটের পরিকল্পনাটা হচ্ছে মাঠের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। মাঠ ছাড়া ক্রিকেটে এগোনো কঠিন। ফতুল্লা ইনসাইড এবং আউটার, সঙ্গে পূর্বাচলে যে মাঠটি আছে, সেগুলোর উন্নয়ন আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আমরা এই মৌসুমের মধ্যে ১০০টির বেশি উইকেট তৈরির চেষ্টা করছি। আমাদের বিভাগীয় ভেন্যু; যেমন বগুড়া, খুলনা, রাজশাহী—এগুলো ২০ বছর আগের মডেলে চলছে। সেন্টার উইকেটের পাশে আরও উইকেট বাড়িয়ে আমরা এগুলো আধুনিক করতে চাই। বরিশাল মাঠের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই আমাদের বিভাগীয় সদর দপ্তরগুলো একেকটি ‘হাব’ হিসেবে কাজ করুক, যাতে জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটাররা ঠিকঠাক যন্ত্রপাতি এবং সুযোগ-সুবিধা পায়।’

১০০ উইকেট তৈরিতে নতুন কোনো মাঠ কেনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পাইলট। বর্তমানে যে মাঠগুলো আছে, সেগুলোকে সচল করা এবং আধুনিক উইকেট তৈরি করাই তাঁদের লক্ষ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীর লক্ষ্য নিয়ে কী বললেন সন্দীপ লামিচানে

ক্রীড়া ডেস্ক    
অনুশীলনে বল হাতে তারকা লেগস্পিনার। ছবি: রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক পেজ।
অনুশীলনে বল হাতে তারকা লেগস্পিনার। ছবি: রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক পেজ।

নিলামের পর সন্দীপ লামিচানেকে দলে টেনেছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। প্রধান কোচ হান্নান সরকারের ইচ্ছায় এই লেগস্পিনারকে নিয়েছে পদ্মাপাড়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ২০২৬ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অংশ নিতে গতকাল রাজশাহী শিবিরে যোগ দিয়েছেন তিনি।

আজ দলীয় অনুশীলনেও দেখা গেল লামিচানেকে। এক দিন না যেতেই গোটা দলের মধ্যমণি এই নেপালি ক্রিকেটার। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেছেন। সেখানেই জানিয়েছেন, নিজেদের স্কোয়াডের গভীরতা কাজে লাগিয়ে শিরোপা জেতার লড়াই চালিয়ে যাবে রাজশাহী।

লামিচানে বলেন, ‘আমাদের দলে যে ধরণের সম্ভাবনা রয়েছে তা অসাধারণ। বিশেষ করে যখন আপনি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেন, তখন স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে অনেক প্রতিভা আছে। আমি এদের অনেকের সাথেই আগে খেলেছি, তাই তাদের চিনি। আমরা সিলেটের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের জন্য পুরো দল বেশ রোমাঞ্চিত। দলের ভেতরের পরিবেশও এখন খুব ইতিবাচক।’

নিজেদের স্কোয়াড নিয়ে সন্তুষ্ট লামিচানে। তিনি বলেন, ‘আমাদের টপ অর্ডার থেকে শুরু করে লোয়ার অর্ডার, সব জায়গাতেই ভারসাম্য আছে। স্পিনার, ফাস্ট বোলার-সব বিভাগে ভালো খেলোয়াড় আছে। শান্ত দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। দলে ভালো বিদেশি ক্রিকেটারও আছে। সব মিলিয়ে আমাদের দলটা স্বয়ংসম্পূর্ণ। সবাই শিরোপার জন্য নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।’

দর্শকদের হতাশ করতে চান না লামিচানে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো ম্যাচ জেতা। এটিই সবচেয়ে সহজ লক্ষ্য। সেই সাথে দর্শকদের আনন্দ দেয়া এবং দলের জন্য পয়েন্ট অর্জন করা। সবার ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা এবং আমরা দল হিসেবে ট্রফি জেতার চেষ্টা করব।’

কীভাবে রাজশাহীতে যোগ দিলেন সে অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে লামিচানে বলেন, ‘আমি নেপাল প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল দেখছিলাম। তখন আসাদের কোচ হান্নান সরকার মেসেজ করে জিজ্ঞেস করেন আমি রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে খেলতে চাই কিনা। অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা সবকিছু চূড়ান্ত করে ফেলি। তিনি যেভাবে পুরো বিষয়টি সহজ করেছেন, তার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত