Ajker Patrika

শেন ওয়ার্ন: ভালোমন্দ মিলায়ে সকলি

অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি থেকে 
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১১: ১৩
শেন ওয়ার্ন: ভালোমন্দ মিলায়ে সকলি

ভালো খেলোয়াড় তো অনেকেই হয়। নামীদামি ভদ্র এমন খেলোয়াড়ে ভর্তি ক্রীড়া দুনিয়া। কিন্তু তর্ক-বিতর্ক আর মেধায় সমান ঝলসে ওঠা খেলোয়াড় কজন হতে পারে? 

আমাদের সময়কালে আমি দুজনের কথা বলব। একজন ষাট বছর বয়সে বিদায় নেওয়া ডিয়েগো ম্যারাডোনা। নেশা-পেশা-ডোপ কত বিতর্ক, কিন্তু ফুটবলের ভগবানতুল্য ছিলেন এই প্রতিভা। আর একজন সদ্য বিদায়ি শেন ওয়ার্ন। তাঁর নামে কত গল্প, কত বাদ-অপবাদ, কিন্তু শেন তো শেনই। অস্ট্রেলিয়া খেলাপাগল দেশ। এত কম জনসংখ্যার একটি দেশ দুনিয়ার সব খেলায় আধিপত্য বজায় রাখে। এর কারণ, খেলাধুলার প্রতি মনোযোগ আর তার লালন-পালন। এ দেশের আইকন ডন ব্র্যাডম্যান। নাক উঁচু অজি কিংবদন্তি। ১৯৯৬ সালে তাঁর জন্মদিনে মাত্র দুজন খেলোয়াড়কে বাসভবনে ডেকেছিলেন তিনি। একজন ব্র্যাডম্যানের মতে, তাঁর মতো খেলে, যাঁর নাম শচীন টেন্ডুলকার। আরেকজন তাঁর সঙ্গী সেরা স্পিনার শেন ওয়ার্ন। বাকি সব তারকা হোটেল রুমে বসে আর এই দুজন ছিলেন অতিথি। 

সিডনি তো বটেই, পুরো বিশ্বের ক্রীড়ামোদী মানুষের মন খারাপ করে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন শেন ওয়ার্ন। যে কটি দেশ খেলে, তাদের ভেতরেই কয়েকজন হয়ে ওঠেন বিশ্বসেরা কিংবদন্তি। অস্ট্রেলিয়ার সমৃদ্ধ ক্রিকেট জগতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। তবে একটি বিষয়ে কেউ নেই তাঁর ধারে-কাছে। বিনোদন ও লাইফ লিভিং বলতে যা বোঝায়, তা শতভাগ করে গেছেন। যত দিন মাঠে ছিলেন, তত দিন মুখরোচক শিরোনাম। যখন মাঠের বাইরে, তখনো শিরোনাম। যখন ধারাভাষ্য দিতে প্রেসবক্সে, তখনো মজার মানুষ। 

তিনি যখন ক্রিকেট থেকে অবসর নেন, তখন তাঁর নামের পাশে টেস্টে ৭০৮ উইকেট, যেটা তখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ। শুধু ৭০৮ উইকেট বা তাঁর একের পর এক বিষাক্ত লেগ স্পিনে বিপক্ষ ব্যাটারদের আউট হওয়া দিয়ে হয়তো ধরা যাবে না শেন ওয়ার্নকে। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম বর্ণময় চরিত্র তিনি। রেকর্ডের খ্যাতির পাশে সেখানে সমান উজ্জ্বল যৌন কেলেঙ্কারি। কোনো কিছুই লুকিয়ে করেননি ওয়ার্ন। বুক চিতিয়ে, হাসিমুখে সবটা নিয়ে সামনে দাঁড়িয়েছেন। মাত্র ৫২ বছর বয়সে তাঁর চলে যাওয়ায় তাই হতবাক ক্রিকেট দুনিয়া। এখনো মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। হঠাৎ করে যেন শেষ হয়ে গেল ক্রিকেটের একটা অধ্যায়। 

একটা মজার গল্প বলার লোভ সামলাতে পারছি না। আমার অনুজপ্রতিম সিডনিবাসী আহসান হাবিব তখন নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। একবার তার কাজ পড়েছিল পাঁচ তারকা এক হোটেলে। তাঁর দায়িত্ব ছিল আগত অতিথিদের একটি রেজিস্টারে নাম লিখতে বলা। একদিন হাবিবের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন দুই অজি খ্যাতিমান মানুষ। একজন তখনকার মন্ত্রী, আরেকজন ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন। মিনিস্টার হাবিবকে অনুরোধ করলেন তাঁর নাম লিখতে। একটু থতমত খেয়ে যাওয়ায় মন্ত্রী তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তুমি আমাকে চিনতে পারোনি? হাবিব মাথা নেড়ে জবাব দিয়েছিল: সরি, আমি তোমাকে চিনি না। নাম লেখা শেষে মন্ত্রী কিছুটা মজা আর ব্যঙ্গসহকারে হাবিবকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন: কবে এসেছ এই দেশে? আর কাকে চেনো তুমি? 

হাবিব একটুও বিচলিত না হয়ে জবাব দিল, এই যে তোমার পেছনে দাঁড়ানো শেন ওয়ার্ন, তাঁকে চিনি। তিনি আমার হিরো। আমাদের দেশের সবাই চেনে তাঁকে। শেন ওয়ার্ন অজি স্টাইলে এক চোখ টিপে তাকে স্বাগত জানিয়ে হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে ভেতরে ঢুকলেও বেরোনোর সময় আবার তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করতে ভোলেননি। এটাই ছিল তাঁর চরিত্র। সরল-সহজ ফান লাভিং এক স্পিন জাদুকর। 

সত্যিকারের অজি লাইফ মেনে খাঁটি অস্ট্রেলিয়ান আমরা হতে পারব না, সম্ভবও না। যুগ যুগ ধরে বাস করে বা ক্যাঙারুর দেশে জন্ম নিলেও তা হবে না। এর সংস্কৃতি ও শিকড় যেখানে, সেখান থেকে শুরু করলে তাঁর মতো গাঁক-গাঁক করে অজি উচ্চারণে ইংরেজি বলা, অমন অঙ্গভঙ্গি করা, ইচ্ছেমতো বিয়ার পান করা এমনকি নেশা করাও জানা চাই বৈকি। এই যেমন একবার ভারত সফরে যাওয়ার সময় সবাই যখন বাক্সপেটরা নিয়ে ব্যস্ত, তখন তিনি ব্রেকফাস্টের জন্য অসংখ্য বিনসের কৌটা নিতে গিয়ে শিরোনাম হয়েছিলেন, ‘মি. বিন!’ 

সরল-সহজ ফান লাভিং এক স্পিন জাদুকর শেন ওয়ার্নজীবনের প্রতি, শরীরের প্রতি খুব একটা সুবিচার করেননি কখনো। ওয়ার্নের সিগারেটপ্রেমের কথা জানা যায় তাঁর একসময়ের সতীর্থ মাইকেল ক্লার্কের কাছ থেকে। ২০০৬ সালে অ্যাশেজ সিরিজের আগে এক অনুশীলন ক্যাম্পে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া দল। সে সময় শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া বাকি সবকিছু নিয়ে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। ওয়ার্ন বেছে নিয়েছিলেন সিগারেট। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ক্লার্ক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ওয়ার্ন সিগারেট খেতে পছন্দ করে। ও সেই ক্যাম্পে যাওয়ার আগে জানিয়ে দিয়েছিল, সিগারেট ছাড়া যাবে না। ওয়ার্ন তিন জোড়া অন্তর্বাস এবং মোজার বদলে সিগারেট নিয়ে গিয়েছিল।’ ক্লার্ক বলেন, ‘অন্ধকারের মধ্যে সবাই স্লিপিং ব্যাগের ভেতরে। শুধু একটা জায়গায় কমলা রঙের একটা আলো। স্লিপিং ব্যাগের ভেতরে ধূমপান করছে ওয়ার্ন।’

আবার সেই মানুষটিই একসময় আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক হয়ে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম অধিনায়ক, যিনি আইপিএল জেতেন। প্রতিযোগিতার প্রথম বছরই রাজস্থান রয়্যালসকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। যত মুখরোচক গল্পই থাকুক না কেন, শেন ছিলেন সেরার সেরা স্পিনার। ১৯৯৩ সালের আ্যশেজ সিরিজে তাঁর জাদুকরী স্পিনে আউট হন ইংল্যান্ডের মাইক গ্যাটিং। এই বলকে বলা হয় ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’। 

নারী, নেশা, উদ্দাম জীবনযাপন—সবকিছুর বাইরে এক বর্ণাঢ্য চরিত্র ছিলেন শেন। তাঁর জবানবন্দিতে সেরা দুই ব্যাটার শচীন ও লারা। এঁরাই তো তাঁরা, যাঁরা আমাদের যৌবন ও খেলার জগৎকে রাঙিয়ে রেখেছিলেন। এখনো রাঙিয়ে রাখেন বিদায় অস্তরাগে। ক্রিকেট কী, সেটাও পৃথিবীর অনেক মানুষ জানেন না, বোঝেনও না। কিন্তু তাঁদের অনেকে শেন ওয়ার্নের নাম জানেন। 

শেন তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি)। এই মাঠে খেলা দেখতে দেখতে মনে পড়ে যাবে সোনালি চুল উড়িয়ে দৌড়ে আসা সেই কিংবদন্তি বোলারকে, যাঁর বলের ঘূর্ণি বুঝতে পারার আগেই উপড়ে নিত সেরা ব্যাটারের মিডেল স্টাম্প। 

গত রাতে হঠাৎই তাঁর জীবনের খুঁটি উপড়ে নিয়েছে নিয়তি। থাইল্যান্ডে মারা গেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিন জাদুকর।
গুডবাই মেট, গুড বাই শেন ওয়ার্ন। আওয়ার বিলাভড ওয়ার্নি...।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

ক্রীড়া ডেস্ক    
সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। ছবি: এসিসি
সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। ছবি: এসিসি

এতক্ষণে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের দুই সেমিফাইনালেরই প্রথম ইনিংসের খেলা শেষ হয়ে যেত। সেটা না হলেও কমপক্ষে ৪০ ওভার তো হতোই। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচ শুরু হওয়া তো দূরের কথা, টসই হতে পারেনি। আদৌ দুই সেমিফাইনাল মাঠে গড়ায় কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একই সময়ে শুরু হতো ভারত-শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনালও। কিন্তু সকালে বৃষ্টির পর আউটফিল্ড এতটাই অবস্থা যে ম্যাচ শুরুর মতো অবস্থা নেই। যদি বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। কারণ, ‘বি’ গ্রুপ থেকে আজিজুল হাকিম তামিমের বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে। একই কথা ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ভারত যেহেতু ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, তাহলে সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে তারা শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে উঠে যাবে।

সেমিফাইনালের জন্য কোনো রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি। ফল দেখার জন্য কমপক্ষে ২০ ওভারের ম্যাচ চালু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, সেজন্য বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কখনো কখনো সুখবরের আভাস মিললেও দুই সেমিফাইনাল চালু করার মতো অবস্থা এখনো আসেনি। আউটফিল্ডে গর্ত সৃষ্টির কারণে খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার ঝুঁকি বেশি। মূলত সেই কারণেই খেলা চালু করতে আম্পায়াররা অপেক্ষা করছেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় দিয়ে এবারের এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। নেপালকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিল তামিমের দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতা বাংলাদেশ পুষিয়ে দিয়েছিল বোলিংয়ে। লঙ্কানদের ৩৯ রানে হারিয়েই মূলত ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তামিমের দল সেমিতে উঠেছে। এর আগে বৃষ্টি হানা দিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও। সেকারণে ৪৯ ওভারে খেলা নামানো হয়েছিল। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়েছিল ভারত। ‘এ’ গ্রুপের অপর দুই দল সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ভারত-পাকিস্তানের কাছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেডের সেঞ্চুরিতে বড় লিডের পথে অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া ডেস্ক    
১৪২ রানে অপরাজিত আছেন হেড। ছবি: ক্রিকইনফো
১৪২ রানে অপরাজিত আছেন হেড। ছবি: ক্রিকইনফো

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বেশ হাসিমুখেই মাঠ ছাড়লেন ট্রাভিস হেড। সেঞ্চুরি করে অপরাজিত আছেন তিনি। তাঁর মুখে হাসি শোভা পাবে সেটাই তো স্বাভাবিক। হেডের সঙ্গী অ্যালেক্স ক্যারির মুখেও দেখা গেল চওড়া হাসি। দিনের খেলা শেষে এই দুই ব্যাটারের হাসি মুখই এখন অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিচ্ছবি। ইংল্যান্ডকে বড় লিড ছুঁড়ে দেওয়ার পথে স্বাগতিকেরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২৭১ রান। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে এগিয়ে থাকায় তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩৫৬ রান। অতি নাটকীয় কিছু নাহলে ৬ উইকেট হাতে থাকায় ইংল্যান্ডের সামনে লিডটা বেশ বড়ই হবে সেটা বলা বাহুল্য।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া থামে ৩৭১ রানে। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ২১৩ রান। অধিনায়ক বেন স্টোকসের ৮৩ রান এবং জফরা আর্চারের ৫১ রানের ইনিংসের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ২৮৬ রান করেছে সফরকারী দল। এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ৮ রানে জ্যাক ওয়েদারাল্ডকে হারায় তারা। মারনাস লাবুশেন ফিরলে ৫৩ রানে ২ উইকেটের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকেরা।

শুরুর ধাক্কা সামলে হেডের সেঞ্চুরি ও ক্যারির ফিফটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় উইকেটে ৮৬ রান যোগ করেন উসমান খাজা ও হেড। ৪০ রান করে উইল জ্যাকসের শিকার হন খাজা। অল্প সময়ের ব্যবধানে ক্যামরুন গ্রিনও ফিরে যান।

অবিচ্ছিন্ন থেকে দিনের বাকিটা সময় পার করে দেন হেড ও ক্যারি। ১২২ রানের জুটি গড়েছেন তাঁরা। ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৪২ রানে অপরাজিত আছেন খাজার চোটে ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া হেড। তাঁর সঙ্গী ক্যারি ৫২ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লুসাইলে ফিরল আর্জেন্টিনার স্মৃতি, মরক্কোকে রাষ্ট্র প্রধানের অভিনন্দন

ক্রীড়া ডেস্ক    
অতিরিক্ত সময়ের গোলে বাজিমাত করেছে মরক্কানরা। ছবি: সংগৃহীত
অতিরিক্ত সময়ের গোলে বাজিমাত করেছে মরক্কানরা। ছবি: সংগৃহীত

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে যেন ঠিক ৩ বছর আগের স্মৃতির পুনরাবৃত্তিই হলো। ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই ভেন্যুতে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিদের সেই স্মৃতি এবার ফিরে এল মরক্কোর হাত ধরে।

সবশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালে নির্ধারিত এবং অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষে ৩-৩ সমতায় ছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ভাগ্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় এমিলিয়ানো মার্তিনেজের দুটি দারুণ সেভে বাজিমাত করে লা আলবিসেলেস্তেরা। ফিফা আরব কাপের ফাইনালে মরক্কো ও জর্ডানের ম্যাচ টাইব্রেকারে না গড়ালেও উত্তেজনার কোনো কমতি ছিল না। নাটকীয় লড়াই শেষে ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মরক্কো।

লুসাইল স্টেডিয়ামে শুরুতেই এগিয়ে যায় মরক্কো। চতুর্থ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে তান্নানের নেওয়া গতিময় শট জর্ডানের জাল খুঁজে নেয়। লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মরক্কো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আলী ওলওয়ানের কল্যাণে ম্যাচে ফেরে জর্ডান। ৬৮ মিনিটে তাঁর স্পট কিক থেকে প্রথমবার এগিয়ে যায় দলটি। এই গোলে ভর দিয়ে প্রায় জিতেই যাচ্ছিল জর্ডান। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে আব্দেররাজ্জাক মরক্কোকে সমতায় ফেরান।

২-২ সমতায় নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়ে মরক্কোর হয়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন আব্দেররাজ্জাক। বাকি সময়ে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি জর্ডানের।

মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মরক্কো রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ। এই সাফল্য দেশের ফুটবলকে আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মানজনক স্থানে নিয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি। খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স খুশি ষষ্ঠ মোহাম্মদ। বিভিন্ন আঞ্চলিক, মহাদেশীয় এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জাতীয় পতাকাকে উঁচুতে তোলার জন্য খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক এবং টেকসই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি ফুটবলপ্রমীদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কনওয়ের ডাবল সেঞ্চুরি, মাউন্ট মঙ্গানুইতে ব্যাটারদের দাপট

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৪
২২৭ রান করেছেন কনওয়ে। ছবি: ক্রিকইনফো
২২৭ রান করেছেন কনওয়ে। ছবি: ক্রিকইনফো

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও আধিপত্য দেখিয়েছে ব্যাটাররা। সবচেয়ে বেশি আলো কেড়েছেন ডেভন কনওয়ে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। তাঁর দ্বি-শতকে রান পাহাড় গড়ছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটাও হয়েছে উড়ন্ত।

৫৭৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম দিনের খেলা শেষে ১ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকেদের সংগ্রহ ছিল ৩৩৪ রান। ১৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন কনওয়ে। তাঁর সঙ্গী ডাফি ব্যাট করতে নামেন ৯ রান নিয়ে। আগের দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৮ রান যোগ করে ফিরে যান ডাফি। তাঁর মতো বাজে অভিজ্ঞতা হয়নি কনওয়ের। প্রথম সেশনেই ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। জাস্টিন গ্রিভসের করা ১২১ তম ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ক্যারিয়ারসেরা ২২৭ রান করেন এই ব্যাটার। ৩১ চারে সাজানো তাঁর ৩৬৭ বলের ইনিংস।

১৫ চার ও ১ ছক্কায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩৭ রান এনে দেন টম লাথাম। রাচিন রবীন্দ্রর অবদান ৭২ রান। এছাড়া কেউন উইলিয়ামসন ৩১ ও এজাজ প্যাটেল করেন ৩০ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জেডন সিলস, অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও গ্রিভস দুটি করে উইকেট নেন।

রান তাড়া করতে নেমে বিনা উইকেটে ১১০ রান করে দিনের খেলা শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্র্যান্ডন কিং ৫৫ ও জন ক্যাম্পবেল ৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। এখনো ৪৬৫ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী দল। বে ওভালে প্রথম দিনের চেয়ে আজ আরও বেশি রান হয়েছে। এদিন দুই দল মিল করেছে ৩৫১ রান। প্রথম দুই দিনের পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে রান বন্যায় ভেসে যাবে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত