Ajker Patrika

তামিমদের এই কাণ্ডে বিসিবি কি শুধুই দর্শক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪, ১৭: ৪৭
তামিমদের এই কাণ্ডে বিসিবি কি শুধুই দর্শক

৩৫তম জন্মদিন কাল তামিম ইকবালের একটু অন্য রকম গেল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ৬৭ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন। ক্রিকেটীয় দিক বিবেচনা করলে জন্মদিন রঙিন করে রাখতে ভালো উপাদানই পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে নিয়ে এদিন যে আলোচনা-সমালোচনার ঢেউ, তাতে তামিমের জন্মদিনটা খুব ভালো কাটার কথা নয়। 

বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে একটা দৃশ্য প্রায় দেখা যায়। যে খেলোয়াড় জাতীয় দলের বাইরে থাকেন বা নানা কারণে বাইরে চলে যান—সমর্থকদের কাছে তাঁর একটা ‘হিরো’র ভাবমূর্তি দাঁড়িয়ে যায়। তাঁর অনুপস্থিতি তখন প্রবল অনুভব হয় সমর্থকদের মনে। যেন তিনি থাকলেই দলের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। গত জুলাই থেকে নানা ঘটনাপ্রবাহে জাতীয় দলের বাইরে থাকা তামিমেরও এমন একটা ‘হিরো’র ইমেজ দাঁড়িয়েছে। যেটি তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে খুব কমই পেয়েছেন। তাঁর চাচা আকরাম খান যখন বিসিবির প্রধান নির্বাচক ছিলেন, তখন তাঁকে নানা নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের সময় তাঁকে নিয়ে যে বিষাক্ত সমালোচনা হয়েছে, তখন ক্যারিয়ারের শেষই প্রায় দেখে ফেলেছিলেন তামিম। নানা বাঁক পেরিয়ে নিজেকে তিনি দেশের সেরা ওপেনার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের খেলার কথা ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপ। কিন্তু গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—যে ঘটনা ঘটে গেছে, তাতে তাঁর প্রতি বাংলাদেশের বড় একটা ক্রিকেট সমর্থকগোষ্ঠীর বিশেষ সহানুভূতি তৈরি হয়েছে। 

সবশেষ বিপিএলে তামিমের প্রতি সেই সহানুভূতি, সমর্থনের বড় ঢেউ দেখা গেল। যদি টুর্নামেন্টে একটা সমর্থক-জরিপ চালানো হতো, নিশ্চিত তামিমের ফরচুন বরিশালের সমর্থকই বেশি দেখা যেত। তামিমের দলে ছিলেন মাহমুদউল্লাহর মতো পোড় খাওয়া ক্রিকেটার। যিনি বন্ধুর পথে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। সেই তামিম ইকবালের ‘নেতৃত্বে’ গত দুই দিনে এমন এক ঘটনা ঘটেছে, যেটিতে দেশের বেশির ভাগ ক্রিকেটপ্রেমী বিরক্ত, হতাশ, ক্ষুব্ধ। সামাজিক মাধ্যম ছেয়ে গেছে তামিমসহ তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে নেতিবাচক সব পোস্টে। গত কিছুদিনে তামিমের যে ‘হিরো ইমেজ’ তৈরি হয়েছিল, সেটিও নিদারুণ ধাক্কা খেয়েছে। ‘টাকার জন্য ক্রিকেটাররা কত নিচে নামতে পারেন, টাকার জন্য তাঁরা কত সস্তা হতে পারেন’—এ ধরনের মন্তব্য ওয়ালে ওয়ালে ঘুরছে। প্রশ্ন উঠছে সংবাদ সম্প্রচার ও পণ্যের বিপণন নীতি নিয়েও। 

দুই দিন আগে একটি বেসরকারি চ্যানেল ও একটি ওয়েবসাইটের ফেসবুক পেজে একেবারে খবরের আদলে তামিম আর মেহেদী হাসান মিরাজের একটি ফোন কল রেকর্ড ‘ফাঁস’ হয়। এটি যে কোনো খবর নয়, সেদিনই নেটিজেনরা আঁচ করতে পারেন। সমর্থকদের সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় নিজেদের নিকৃষ্ট ব্যবহারের উদাহরণ আগেও দেখা গেছে। সাকিব আল হাসান যেমন—২০২৩ এশিয়া কাপের দল ঘোষণার রাতে নিজের পেজে স্ট্যাটাস দিলেন, ‘আমি আর খেলব না, খেলবে কে জানাচ্ছি।’ পরে জানা গেল এটা একটা মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী প্রচারণার অংশ। 

ক্রিকেটের প্রতি দেশের মানুষের আবেগ কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞাপনী প্রচারণা দোষের কিছু নয়। উপমহাদেশে এটি হরহামেশাই ব্যবহার হয়। কিন্তু এটি শিল্পিত রূপে ব্যবহার হলে প্রশ্ন তোলার অবকাশ কমই থাকে। বাংলাদেশে বোধ হয় আবেগকে পুঁজি করে বিজ্ঞাপন তৈরির সবচেয়ে কদর্য রূপটাই বেশি দেখা যায়। তামিম-মিরাজের ঘটনাটা এর সবশেষ উদাহরণ। সেই ফোন কল রেকর্ডে মিরাজের উদ্দেশে তামিমকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘যদি অধিনায়ক থাকতাম (জাতীয় দলে) তাহলে তো তোরা এটা করতে পারতি না। এখন আমার দাম নাই, তাই তোরা এসব করছ। অসুবিধা নাই মিরাজ, সময় আমারও তো আসবে। একটা কথা শোন, পৃথিবীটা গোল। তুই ওই সাইডে, আমি এই সাইডে। কালকে আমি ওই সাইডে বসব তুই এই সাইডে আসবি। বিষয়টা ভুলে যাইস না, তোর বড় ভাইকেও বলে দিস।...সময় আমারও তো আসবে। এখন তো ন্যাশনাল টিমে খেলি না, তাতে অনেকের ভাব বেড়ে গেছে।’ 

গতকাল সন্ধ্যায় নিজেরাই একটি ফেসবুক লাইভে এসে তাঁরা বোঝালেন, তামিম-মিরাজের এই সংলাপ ছিল পুরোই সাজানো। এটি একটি মোবাইল ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী প্রচারণার অংশ। এতে শুধু সমালোচনার ঢেউ ওঠেনি, দর্শক-সমর্থকেরা এতে ভীষণ প্রতারিত বোধও করেছেন। 

যতই বিজ্ঞাপনী প্রচারণার অংশ হোক, দুজন তারকা ক্রিকেটারের এই কথোপকথন শুধুই আপত্তিকর নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি ভঙ্গের শামিল। তামিম কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকতে পারেন, কিন্তু তিনি তো বিসিবির বিভিন্ন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট খেলছেন। এই বিজ্ঞাপনে তামিমের সঙ্গী মিরাজ বিসিবির চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়। ক্রিকেট বোর্ডের দুর্বল প্লেয়ার ম্যানেজমেন্টও এখানে সামনে আসছে। আচরণবিধির ক্ষেত্রে তারকা ক্রিকেটারদের প্রতি তাদের নমনীয় আচরণের কারণে খেলোয়াড়েরা আরও সুযোগ পাচ্ছেন প্রশ্নবিদ্ধ সব কর্মকাণ্ড ঘটাতে। 

বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে যে উন্মাদনা আর ক্রিকেটারদের যে জনপ্রিয়তা, তার বিপরীতে তাঁদের সাফল্যের প্রসঙ্গও এখন সামনে আসছে। প্রথম ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে ৮টিরই কোনো না কোনো আইসিসির টুর্নামেন্ট জেতার রেকর্ড আছে। শুধু বাংলাদেশ আর জিম্বাবুয়ের শোকেস গড়ের মাঠ! গত দুই দশকে জিম্বাবুয়ের যে ভঙ্গুর ক্রিকেট প্রশাসন, তাতে তাদের বড় কিছু জেতা কঠিনও। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আর্থিক কাঠামো অনেক শক্তিশালী। ক্রিকেট অবকাঠামোও শক্তিশালী হয়েছে আগের চেয়ে অনেক। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন, বোনাস, ম্যাচ ফি, সুযোগ-সুবিধা হয়েছে আকর্ষণীয়। নিজেদের তারকাখ্যাতি পুঁজি করে ক্রিকেটাররাও যে যাঁর মতো বিত্তবান হয়েছেন, ব্যবসা করছেন। রাজনীতিতে পর্যন্ত নাম লেখাচ্ছেন। কিন্তু ক্রিকেটে বাংলাদেশের বড় সাফল্য কোথায়?

বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ক্রিকেট দলের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়। যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল তুলনামূলক দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ড। যে দল এখনো একটা এশিয়া কাপ জিততে পারেনি, (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও উঠতে পারেনি কখনো—তাদের নিয়ে যে উন্মাদনা, আগ্রহ, তাতে বাংলাদেশ দলকে পৃথিবীর সবচেয়ে ‘হাইলি রেটেড ক্রিকেট টিম’ বললে অত্যুক্তি হবে না। সেই দলের তারকা ক্রিকেটাররা যখন মানুষের আবেগ-বিশ্বাসকে পুঁজি করে খুব সস্তা বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় অংশ নেয়, মানুষ তাতে হতাশ, ক্ষুব্ধ আর বিরক্ত না হয়ে কি পারে? আর তামিমদের এই কাণ্ডে বিসিবি যেন শুধুই দর্শক!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৫ উইকেট নিয়ে থামলেন মোস্তাফিজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত

আইপিএলে কেন কলকাতা নাইট রাইডার্স এবার তাঁকে ১২ কোটি টাকায় নিয়েছে, সেটি খুব ভালোভাবেই আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আজ একটা পর্যায়ে মোস্তাফিজের নামটা উইকেটশিকারির তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে ছিল।

শারজা ওয়ারিয়র্জের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলে কাল দুপুরে ঢাকায় ফিরে আসার কথা মোস্তাফিজের। এসেই নেমে পড়তে হবে বিপিএল খেলতে। সিলেটে তাঁর দল রংপুর রাইডার্সের প্রথম ম্যাচ আগামী সোমবারে। ঢাকায় ফিরে দুদিনের সংক্ষিপ্ত বিরতিতে তিনি চলে যাবেন সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়িতে। সেখান থেকে ফিরে দলে যোগ দেবেন রোববার।

বিপিএলে যোগ দেওয়ার আগে একাধিক সুখবর পেলেন মোস্তাফিজ। আইপিএল নিলামে তিনি বিক্রি হয়েছেন রেকর্ড দামে। আরব আমিরাতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে আইএল টি-টোয়েন্টিতেও ধারাবাহিক ভালো খেলেছেন। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। আজ শারজার বিপক্ষে শীর্ষ উইকেটশিকারি হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন সতীর্থ ওয়াকার সালামখেইলের সঙ্গে। ওয়াকার ২ উইকেট নিয়ে টপকে যান মোস্তাফিজকে। তবু টুর্নামেন্টজুড়ে যে বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ, আজ দেশে ফেরায় তাঁকে নিশ্চিতভাবেই মিস করবে দুবাই ক্যাপিটালস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসছে বিসিবির নতুন টুর্নামেন্ট

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি
পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নতুন একটি টুর্নামেন্ট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেটির নাম ‘রাইজিং স্টার অনূর্ধ্ব-২৩ ’। সংস্থাটির মিডিয়া কমিটির প্রধান আমজাদ হোসেন জানালেন, টুর্নামেন্টটি হবে অনেকটা বিসিএলের মতো। যেখানে অংশ নেবে চারটা দল। দলগুলো হলো–পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল।

টুর্নামেন্ট হবে ডাবল লিগ পদ্ধতিতে। সেখান থেকে শীর্ষ দুই দল শিরোপার লড়াই করবে। অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ের এই টুর্নামেন্টে ম্যাচ হবে মোট ৩১ টি। মূলত পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি।

সংবাদমাধ্যমকে আমজাদ বলেন, ‘আমরা রাইজিং স্টার অনূর্ধ্ব ২৩ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। এটা বিসিএলের মতই হবে। অনূর্ধ্ব ২৩ এর পর নির্দিষ্ট কোনো টুর্নামেন্ট ছিল না। কিন্তু এবার হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ফেব্রুয়ারিতে এই টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনা করছি আমরা।’

টুর্নামেন্টের ভেন্যু প্রসঙ্গে আমজাদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে দুটো স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচগুলো। ডাবল লিগ পদ্ধতিতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। ফাইনাল ঢাকায় হবে। এগুলো ছিল আমাদের প্রধান কিছু সিদ্ধান্ত।’

আসন্ন নতুন বছরে বিসিবি সারা বাংলাদেশে ১০০ উইকেট বানাতে চায়, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’। আমজাদ বলেন, ‘জেলা লিগগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য অন্তত ৪০টি জেলায় লিগ আয়োজন করা। আমাদের নতুন একটি থিম লঞ্চ করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা দেশে ১ বছরে ১০০ উইকেট বানাবে বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৯
জেলা লিগগুলো সচল করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি
জেলা লিগগুলো সচল করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি

প্রায় দিনব্যাপী বোর্ড সভার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলন। লম্বা অপেক্ষায় থাকা সংবাদমাধ্যম কর্মীদের চমকে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাননি সংবাদ সম্মেলনে আসা তিন পরিচালক। তবে বোর্ড মিটিংয়ে নেওয়া নতুন দুটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান।

আসন্ন নতুন বছরে বিসিবি সারা বাংলাদেশে ১০০ উইকেট বানাতে চায়, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’। আমজাদ বলেন, ‘জেলা লিগগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য অন্তত ৪০টি জেলায় লিগ আয়োজন করা। আমাদের নতুন একটি থিম লঞ্চ করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’।

সারা দেশে এক বছরে ১০০ উইকেট তৈরির পরিকল্পনা বিসিবির গ্রাউন্ডস বিভাগের প্রধান খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ‘১০০ উইকেটের পরিকল্পনাটা হচ্ছে মাঠের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। মাঠ ছাড়া ক্রিকেটে এগোনো কঠিন। ফতুল্লা ইনসাইড এবং আউটার, সঙ্গে পূর্বাচলে যে মাঠটি আছে, সেগুলোর উন্নয়ন আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আমরা এই মৌসুমের মধ্যে ১০০টির বেশি উইকেট তৈরির চেষ্টা করছি। আমাদের বিভাগীয় ভেন্যু; যেমন বগুড়া, খুলনা, রাজশাহী—এগুলো ২০ বছর আগের মডেলে চলছে। সেন্টার উইকেটের পাশে আরও উইকেট বাড়িয়ে আমরা এগুলো আধুনিক করতে চাই। বরিশাল মাঠের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই আমাদের বিভাগীয় সদর দপ্তরগুলো একেকটি ‘হাব’ হিসেবে কাজ করুক, যাতে জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটাররা ঠিকঠাক যন্ত্রপাতি এবং সুযোগ-সুবিধা পায়।’

১০০ উইকেট তৈরিতে নতুন কোনো মাঠ কেনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পাইলট। বর্তমানে যে মাঠগুলো আছে, সেগুলোকে সচল করা এবং আধুনিক উইকেট তৈরি করাই তাঁদের লক্ষ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীর লক্ষ্য নিয়ে কী বললেন সন্দীপ লামিচানে

ক্রীড়া ডেস্ক    
অনুশীলনে বল হাতে তারকা লেগস্পিনার। ছবি: রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক পেজ।
অনুশীলনে বল হাতে তারকা লেগস্পিনার। ছবি: রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক পেজ।

নিলামের পর সন্দীপ লামিচানেকে দলে টেনেছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। প্রধান কোচ হান্নান সরকারের ইচ্ছায় এই লেগস্পিনারকে নিয়েছে পদ্মাপাড়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ২০২৬ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অংশ নিতে গতকাল রাজশাহী শিবিরে যোগ দিয়েছেন তিনি।

আজ দলীয় অনুশীলনেও দেখা গেল লামিচানেকে। এক দিন না যেতেই গোটা দলের মধ্যমণি এই নেপালি ক্রিকেটার। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেছেন। সেখানেই জানিয়েছেন, নিজেদের স্কোয়াডের গভীরতা কাজে লাগিয়ে শিরোপা জেতার লড়াই চালিয়ে যাবে রাজশাহী।

লামিচানে বলেন, ‘আমাদের দলে যে ধরণের সম্ভাবনা রয়েছে তা অসাধারণ। বিশেষ করে যখন আপনি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেন, তখন স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে অনেক প্রতিভা আছে। আমি এদের অনেকের সাথেই আগে খেলেছি, তাই তাদের চিনি। আমরা সিলেটের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের জন্য পুরো দল বেশ রোমাঞ্চিত। দলের ভেতরের পরিবেশও এখন খুব ইতিবাচক।’

নিজেদের স্কোয়াড নিয়ে সন্তুষ্ট লামিচানে। তিনি বলেন, ‘আমাদের টপ অর্ডার থেকে শুরু করে লোয়ার অর্ডার, সব জায়গাতেই ভারসাম্য আছে। স্পিনার, ফাস্ট বোলার-সব বিভাগে ভালো খেলোয়াড় আছে। শান্ত দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। দলে ভালো বিদেশি ক্রিকেটারও আছে। সব মিলিয়ে আমাদের দলটা স্বয়ংসম্পূর্ণ। সবাই শিরোপার জন্য নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।’

দর্শকদের হতাশ করতে চান না লামিচানে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো ম্যাচ জেতা। এটিই সবচেয়ে সহজ লক্ষ্য। সেই সাথে দর্শকদের আনন্দ দেয়া এবং দলের জন্য পয়েন্ট অর্জন করা। সবার ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা এবং আমরা দল হিসেবে ট্রফি জেতার চেষ্টা করব।’

কীভাবে রাজশাহীতে যোগ দিলেন সে অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে লামিচানে বলেন, ‘আমি নেপাল প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল দেখছিলাম। তখন আসাদের কোচ হান্নান সরকার মেসেজ করে জিজ্ঞেস করেন আমি রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে খেলতে চাই কিনা। অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা সবকিছু চূড়ান্ত করে ফেলি। তিনি যেভাবে পুরো বিষয়টি সহজ করেছেন, তার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত