Ajker Patrika

তামিমকে নিয়ে অবশেষে সাকিবের আবেগঘন বার্তা

আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৩, ১৪: ১৮
তামিমকে নিয়ে অবশেষে সাকিবের আবেগঘন বার্তা

তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হঠাৎ অবসরের পরই তোলপাড় ক্রিকেট বিশ্ব। মাশরাফি বিন মর্তুজা থেকে মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদসহ অনেকেই গতকাল তামিমের বিদায়ে কিছু না কিছু বলেছেন। তবে বন্ধু তামিমের বিদায়ের ধাক্কা কাটাতেই যেন সাকিব আল হাসানের একটু সময় লেগেছে। বন্ধুকে নিয়ে আজ সকালে সামাজিক মাধ্যমে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাকিব।

চট্টগ্রামে চলছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। গত পরশু প্রথম ওয়ানডেতে খেলেন তামিম, যা তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শেষ ম্যাচ। আর বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক গতকাল দুপুরে কাঁদতে কাঁদতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। সদ্য সাবেক হওয়া তামিমকে নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করেছেন সাকিব। বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার আজ সকালে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘২০০৩ থেকে জাতীয় দলের অনূর্ধ্ব-১৫ ক্রিকেটে আমাদের একসাথে প্রথম পথ চলা এবং গত ২০ বছর ধরে আমাদের স্বপ্ন ও লক্ষ্যগুলো একসাথে ভাগ করে একটি দৃঢ় বন্ধন ও বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি এবং তোমার আবেগ ও আগ্রাসন আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করতে সহায়তা করেছে। একই লক্ষ্য অর্জন করতে আমরা একে অপরের ওপর নির্ভর করেছিলাম আমাদের দেশের জয়লাভ করার জন্য।’

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করেছেন তামিম। তিন সংস্করণ মিলে ৩৮৫ ম্যাচে ৩৫.৩৯ গড়ে করেছেন ১৫১৪৮ রান। সর্বোচ্চ ২৫ সেঞ্চুরির রেকর্ডও করেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনার। রেকর্ডের কথা উল্লেখ করে তামিমকে শুভকামনা জানিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘তোমার রান ও রেকর্ডগুলো নিজের পক্ষে কথা বলে এবং তুমি যা অর্জন করেছ, সতীর্থ হিসেবে তার জন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত। তোমার সঙ্গে আর মাঠে না থাকাটা অদ্ভুত হবে...কিন্তু যখন আমরা প্রতিটি লড়াইয়ে পা রাখব, তোমার আগুন তখন আমাদের সবার ভেতরে জ্বলবে। তুমি তোমার নতুন জীবনে ছক্কা হাঁকাতে থাকো এবং তোমার প্রিয়জনের সাথে নতুন মুহূর্তগুলো উপভোগ করো।’

তামিমের পরিবর্তে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক এখন লিটন দাসতামিমের হঠাৎ অবসরে সামাজিক মাধ্যমে মাশরাফি, মোহাম্মদ আশরাফুল, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসরা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মাশরাফি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একজন তামিম হয়ে উঠতে কতটা পরিশ্রম, কতটা সময়, কতটা মেধা, কত ত্যাগ থাকতে হয়, তা সময় সবকিছু বুঝিয়ে দেবে।’ আশরাফুল বলেছেন, ‘তামিম, গত ১৯টা বছর তুমি আমাদের অনেক বিনোদন দিয়েছ। আমি বলব, ২০১৪-১৮ পর্যন্ত তোমার ক্যারিয়ারের সেরা সময় গিয়েছে। ওই সময় তোমার গড় ৭০+ ছিল। অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়েছ। বাংলাদেশের হয়ে অনেক অবদান রেখেছ।’ আর তামিমকে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার বলে মুশফিক লিখেছেন, ‘বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, আমরা একসঙ্গে আর ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করব না এবং দেশকে জয় এনে দেব না। তোর কৃতিত্বের জন্য আমি গর্বিত। তুই বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য যা করেছিস, সাধুবাদ জানাই। বিদায় বন্ধু—আমার চোখে আমাদের দেশের সেরা ব্যাটার তুই। সত্যিই তোর জন্য গর্বিত।’ তামিমের অনুপস্থিতিতে বর্তমান ওয়ানডে অধিনায়ক লিটন লিখেছেন, ‘একসঙ্গে ব্যাট করেছি, ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছি। একসঙ্গে অনেক স্মৃতি রয়েছে আমাদের। আপনি আর খেলবেন না, সেটি বিশ্বাস করতে পারছি না। আপনাকে খুব মিস করব ভাই।’ আর তামিমের অবসরের খবর বিশ্বাসই করতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমান, ‘খবরটা শুনে অবাক হয়েছি। নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছি না! আমি সব সময় আপনার নেতৃত্ব এবং আমার কাঁধে আপনার সহায়তার হাত মিস করব তামিম ভাই।’ 

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাকিব-তামিম দ্বন্দ্বের কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ড্রেসিংরুমে ‘গ্রুপিংয়ের’ কথাও গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন বিসিবির সভাপতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৯
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের চেয়ে রাজনীতিবিদ সাকিব আল হাসানের পরিচয়টাই যেন বড় হয়ে উঠেছে। ঘরের মাঠে খেলে বিদায় নেওয়ার কথা তিনি অনেকবার বলেছেন। কিন্তু সেই সুযোগ তাঁর মিলছে না। যদিও গত বছর দুই উপদেষ্টার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মিরপুরেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন। তাঁকে নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাইয়ে এসেও দেশে ফেরা হয়নি তাঁর। তখন আসলে কী ঘটেছিল, সেই ঘটনা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে গতকাল দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমাকে সরাসরি ক্রীড়া উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। আমি প্লেনে উঠেছি। বিসিবি থেকে আমাকে পুরো নিশ্চিত করা হয়েছে। (যুক্তরাষ্ট্র থেকে) তারপর আমি প্লেনে উঠেছি। দুবাইয়ে নামার পর তাদের সব জায়গা থেকে আবার বলছে, না, তাদের নাকি ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। যদি না আসি, তাহলে ভালো হয়। আমি আর যাইনি।’

ঘরের মাঠে টেস্ট তো দূরে থাক, গত ১৪ মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগও (বিপিএল) খেলতে পারেননি সাকিব। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশে ফেরার আশা কতটুকু রয়েছে—এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্র, সরকার—এগুলো আসা মানেই তো ক্রিকেট বোর্ডেও স্বচ্ছতা নেই। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এগুলো তো বোঝাই যায়। আপনাদের আসলে প্রশ্নগুলো করা উচিত ঠিক জায়গায়, ঠিকভাবে। ভয় না পেয়ে! আপনারাও ওই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে প্রশ্ন করেন দেখে তারা ওই ঘুরিয়ে উত্তর দিতে পারে। এ প্রশ্ন আমাকে তো করার বিষয় নয়। জিজ্ঞেস করবেন সরকারকে। সরকার আর ক্রিকেট বোর্ডের মুখোমুখি হয়ে।’

ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের ব্যাপারটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) পর্যন্ত যাওয়া উচিত বলে মনে করেন সাকিব। বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘কথা হচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্কই থাকার কথা নয়। আর ক্রিকেট বোর্ড যদি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয়, এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এর অর্থ হলো, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত। তাদের সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া উচিত (হাসি)! আসলে ওই সাবজেক্টেই যাওয়া উচিত নয়। আমাকে যদি ক্রিকেট বোর্ড ফেরত না নিতে পারে (দেশে), এটা তাদের ব্যর্থতা। ঠিক না? আমার কী করার আছে এখানে?’

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারত সফরের মাঝপথেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। খেলে যেতে চেয়েছিলেন ওয়ানডে ও টেস্ট। তবে গত ১৬ মাসে বাংলাদেশের হয়ে একটা ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি। ভারতের বিপক্ষে কানপুরে গত বছরের অক্টোবরে টেস্ট ম্যাচটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের সবশেষ কোনো ম্যাচ। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে না পারলেও বিদেশের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিয়মিত খেলছেন তিনি। বর্তমানে আইএল টি-টোয়েন্টিতে এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলছেন সাকিব। গত রাতে তাঁর দল প্রথম কোয়ালিফায়ারে ডেজার্ট ভাইপার্সের কাছে ৪৫ রানে হেরেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাত বছর কোমায় থাকার পর লঙ্কান ক্রিকেটারের মৃত্যু

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৮
সাত বছর কোমায় থাকার পর না ফেরার দেশে আকশু ফার্নান্দো। ছবি: সংগৃহীত
সাত বছর কোমায় থাকার পর না ফেরার দেশে আকশু ফার্নান্দো। ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর পাঞ্জা লড়ছিলেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার আকশু ফার্নান্দো। শেষ পর্যন্ত হার মানলেন তিনি। গতকাল ৩৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফার্নান্দো।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম গতকাল ফার্নান্দোর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত লঙ্কান ধারাভাষ্যকার রোশন অভয়সিংহে বলেন, ‘এই মাত্র আকশু ফার্নান্দোর মৃত্যুর খবর পেলাম। তাঁর ক্যারিয়ার ছিল দারুণ সম্ভাবনাময়। তবে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা তাঁর ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছে। ভদ্র, হাসিখুশি ও সবার ছিল সে। তার স্কুল ও রাগামা ক্লাবের দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার ছিল। তাকে আমরা চিরদিন মনে রাখব।’

২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর কলম্বোর মাউন্ট লাভিনিয়ায় অনুশীলন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ফার্নান্দো। তখন তিনি ছিলেন ২৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার। এক রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘ সাত বছর কোমায় ছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে (২০১৮-এর ১৪ ডিসেম্বর) রাগামা ক্লাবের হয়ে ১০২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন ফার্নান্দো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেই ম্যাচে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিল মুরস ক্রিকেট ক্লাব। অবশেষে দীর্ঘ সাত বছর কোমায় থাকার পর গতকাল হার মানলেন তিনি।

অল্প সময়েই সম্ভাবনাময় এক ক্রিকেটার হয়ে উঠেছিলেন ফার্নান্দো। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৮ বলে ৫২ রান করেছিলেন। প্রাণপণ লড়াই করেও শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটে হেরে গিয়েছিল অজিদের কাছে। শেষ পর্যন্ত সেই অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না খেললেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করতেন ফার্নান্দো। সিনিয়র ক্রিকেটে সাতটি ফিফটি করেছিলেন তিনি। ৯ বছরের ঘরোয়া ক্যারিয়ারে ফার্নান্দো কোল্টস ক্রিকেট ক্লাব, পানাদুরা স্পোর্টস ক্লাব, চিলাও মারিয়ান্স, রাগামা স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে অধিনায়ক ছিলেন। লঙ্কান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সহ অধিনায়ক ছিলেন ফার্নান্দো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোমায় অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৬
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ড্যামিয়েন মার্টিন এখন কোমায়। ছবি: ক্রিকইনফো
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ড্যামিয়েন মার্টিন এখন কোমায়। ছবি: ক্রিকইনফো

হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ড্যামিয়েন মার্টিন। কুইন্সল্যান্ডের একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার বর্তমানে কোমায় রয়েছেন।

মার্টিনের শারীরিক অসুস্থতার খবর জানাজানি হয় গতকাল সন্ধ্যায়। ক্রিকইনফো আজ মার্টিনের হাসপাতালে ভর্তির খবর প্রকাশ করেছে। ৫৪ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার এই ক্রিকেটারকে বিশেষ এক ওষুধ প্রয়োগ করে কৃত্রিমভাবে কোমায় রাখা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘চ্যানেল নাইন’-এর প্রতিবেদনে জানা গেছে, বক্সিং ডেতে (২৬ ডিসেম্বর) বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন মার্টিন। শোয়ার পরপরই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অস্ট্রেলিয়ার ২০০৩ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে সিডনি মর্নিং হেরাল্ড আজ মার্টিনের অসুস্থতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত মার্টিন এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডকে ঘিরে রাখা সুরক্ষামূলক ঝিল্লির ব্যথাই এই রোগের লক্ষণ। কুইন্সল্যান্ডের গোল্ড কোস্ট হাসপাতালের মুখপাত্র আজ সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে বলেছেন, ‘গোল্ড কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে এখন গুরুতর অবস্থায় মার্টিন।’ অস্ট্রেলিয়ার ২০০৩ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার যেন দ্রুত সেরে ওঠেন, সেই প্রার্থনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ পোস্ট দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বাঁহাতি স্পিনার ড্যারেন লেম্যান নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘মার্টিনের জন্য অনেক ভালোবাসা। শক্ত থাক যোদ্ধা। দ্রুত যেন সেরে ওঠ, সেই প্রার্থনা রইল।’

মার্টিনকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ কর্প’কে গিলক্রিস্ট বলেন, ‘মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত মার্টিনের উন্নত চিকিৎসা চলছে। তার (মার্টিন) জীবনসঙ্গিনী আমান্দা ও তার পরিবার জানে অসংখ্য মানুষ তার জন্য প্রার্থনা করছে।’ খুব দ্রুত কোমা থেকে মার্টিন বের হয়ে আসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। বর্তমানে তাঁর অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ১৯৯২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৬৭ টেস্ট, ২০৮ ওয়ানডে ও ৪ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মার্টিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ২৭৯ ম্যাচে ৪২.৯২ গড়ে করেছেন ৯৮৭২ রান। তিন সংস্করণ মিলে ১৮ সেঞ্চুরি ও ৬১ ফিফটি করেছেন। ১৯৯৯, ২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনি। ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপাও জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই তারকা ক্রিকেটার। ১৮ সেঞ্চুরির মধ্যে টেস্টে করেছেন ১৩ সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন পাঁচবার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার ব্যর্থ সাকিব, বড় ব্যবধানে হারল তাঁর দলও

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৮
এবার নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ছবি: ক্রিকইনফো
এবার নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ছবি: ক্রিকইনফো

ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পর হঠাৎ সাকিব আল হাসানের ছন্দপতন। ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে গত রাতে ব্যাটিং কিংবা বোলিং, কোথাও তিনি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। প্লে-অফের ম্যাচটিতে তাঁর দল এমআই এমিরেটস হেরেছে ৪৫ রানের বিশাল ব্যবধানে।

আইএল টি-টোয়েন্টির প্রথম কোয়ালিফায়ারে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে গত রাতে মুখোমুখি হয়েছে ডেজার্ট ভাইপার্স-এমআই এমিরেটস। এই ম্যাচের জয়ী দল সরাসরি ফাইনালের ‘ভিআইপি টিকিট’ পেয়ে যেত। এমআই এমিরেটসকে ৪৫ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ডেজার্ট ভাইপার্স। এমআই এমিরেটসের অলরাউন্ডার সাকিব এক অঙ্কের রান করে আউট হয়েছেন। এক ওভার বোলিং করেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি।

২৩৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ২৭ রানেই ভেঙে যায় এমআই এমিরেটসের উদ্বোধনী জুটি। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে আন্দ্রে ফ্লেচারকে (৪) ফিরিয়েছেন ডেজার্টের পেসার খুজাইমা তানভীর। ফ্লেচার মূলত ফজলহক ফারুকির পরিবর্তে ব্যাটিং করতে নেমেছেন। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৩ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন টম ব্যান্টন ও মোহাম্মদ ওয়াসিম। ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে ওয়াসিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাসিম শাহ। ওয়াসিম ৩২ বলে ৫ চারে ৪১ রান করে বিদায় নিয়েছেন।

ওয়াসিম বিদায় নেওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা এমআই এমিরেটস ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৮ রানে থেমে যায়। সতীর্থদের কাছ থেকে তেমন সাপোর্ট না পাওয়ায় ব্যান্টনের ঝড় বৃথা গেছে। ২৭ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৬৩ রান। আট নম্বরে নামা সাকিব ৬ বলে ১ চারে করেন ৮ রান। ডেজার্ট ভাইপার্সের উসমান তারিক ৪ ওভারে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তাঁর সতীর্থ আন্দ্রিস গাউস হয়েছেন ম্যাচসেরা। ৫৮ বলে ৭ চার ও ৯ ছক্কায় ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন তিনি। তাঁর ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদে টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া ডেজার্ট ভাইপার্স ২০ ওভারে ১ উইকেটে ২৩৩ রান করেছে। সাকিব এক ওভার বোলিং করে ১০ রান খরচ করেও কোনো উইকেট পাননি।

হেরে গেলেও অবশ্য ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পাচ্ছে এমআই এমিরেটস। ২ জানুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে সাকিবের দল। সেই ম্যাচে এমআই এমিরেটসের প্রতিপক্ষ হবে এলিমিনেটরের জয়ী দল। আগামীকাল দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এলিমিনেটরে মুখোমুখি হবে আবুধাবি নাইট রাইডার্স-দুবাই ক্যাপিটালস। এই ম্যাচের পরাজিত দলের টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যাবে এখানেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত