Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘আপনি কেন ভালো আছেন, আমি তাই অসুখী’

বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন জাতীয় দলে গত ডিসেম্বরে যুক্ত হওয়ার পর গত আট মাসে মুদ্রার দুটি পিঠই দেখে ফেলেছেন। জাতীয় দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সালাহ উদ্দীন সমালোচিত হয়েছেন। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটের সাফল্যে তিনি এত দিন শুধু প্রশংসা পেয়ে অভ্যস্ত ছিলেন। এসব নিয়েই গতকাল মাস্কো ক্রিকেট একাডেমিতে সালাহ উদ্দীন কথা বললেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১২: ০১

প্রশ্ন: গত ৮ মাসে জাতীয় দলের অভিজ্ঞতা কেমন হলো?

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন: খুব বেশি পরিবর্তন হইনি। আমি আগের মতোই; যা ছিলাম, তা-ই আছি। এখন চ্যালেঞ্জ একটু বেশি। আগে মানুষের প্রত্যাশা কম ছিল, এখন বেশি। এটা স্বাভাবিক এবং তা হবেই। যেহেতু অনেক দিন হয়ে গেছে, আমরা বড় কোনো টুর্নামেন্টে ভালো করিনি। এটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রশ্ন: বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল আপনাকে ডেকেছিলেন। তিনি কী বললেন?

সালাহ উদ্দীন: এসব আসলে প্রকাশ্যে বলা যাবে না। আমার মনে হয় একটা ভালো দিক, যেকোনো পরিস্থিতিতে বোর্ড আমাকে ভালো সহায়তা করছে, যেন কাজের দিকে বেশি মনোযোগ রাখি। খেলায় তিনটা পার্ট থাকে। ক্রিকেটাররা খেলে, ম্যানেজমেন্ট আছে আর কর্মকর্তা আছে। সবকিছুর ওপর নির্ভর করে, আমাদের সামগ্রিক ক্রিকেটটা কীভাবে এগোবে। সমন্বয়টা যদি ঠিকমতো হয়, তাহলে হয়তো আমাদের ক্রিকেট এগোবে। এসব নিয়েই কথা হয়েছে। বোর্ড সভাপতি বুলবুল ভাই নিজেও ক্রিকেট প্লেয়ার ছিলেন। তিনি জানেন আসলে কী কী লাগবে। খুবই জ্ঞানী মানুষ। তাঁর ইচ্ছা আছে।

প্রশ্ন: বলা হচ্ছে, জাতীয় দলে আপনার মধুচন্দ্রিমা শেষ। এখন তাহলে আপনি কি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি?

সালাহ উদ্দীন: ওভাবে চিন্তা করাটা ভুল হবে। এই আট মাসে আমরা হয়তো কিছু সাফল্য পেয়েছি। কিছু জায়গায় বেশি খারাপ করে ফেলছি। নির্দিষ্টভাবে বললে অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে, আমরা কয়েক ঘণ্টা খারাপ খেলছি। তাতেই টেস্ট হেরে গেছি। আরব আমিরাতের সঙ্গে যে সিরিজটা হেরেছি, ওটা বড় ধাক্কা ছিল। এ ছাড়া আমরা প্রতিটি জায়গায় ভালো খেলেছি। কিছু ফল এসেছে। আরও কিছু ফল এলে দলের জন্য আরও ভালো হতো। তাতে দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়ত। এর মধ্যে আমরা যেসব সিরিজ জিতেছি, সেগুলো দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আমার মনে হয়, ছেলেদের জেতার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। আমরা চাচ্ছি, বড় টুর্নামেন্টে ভালো খেলি। সবাই সেভাবেই এগোচ্ছি।

প্রশ্ন: আরব আমিরাতে হারের পর একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। আপনি যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, গ্যালারি থেকে ছুটে আসা দর্শকদের তির্যক মন্তব্যে শামীম পাটোয়ারী তেড়ে গেলেন। এটা আপনার জন্য কতটা ধাক্কার? এই দর্শকই তো একসময় আপনাকে মাথায় তুলে রেখেছিল।

সালাহ উদ্দীন: এটা স্বাভাবিক। মানুষের প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি। আমাকে এটা মেনে নিতেই হবে। যখন এই দায়িত্বে এসেছি, তখন নিজেও জানতাম, এখানে সাফল্য পেলে আমাকে মাথায় তুলে নাচবে। আবার সাফল্য না পেলে মাথা থেকে নামিয়েও দেবে। সাফল্য-ব্যর্থতা মিলিয়ে দলকে কীভাবে এগিয়ে নিতে পারছি, এটাই মূলকথা। ছেলেদের ভেতরে পরিবর্তন আসছে কি না, ছেলেরা শিখছে কি না ভালোভাবে—সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এক দিনেই তো সব পরিবর্তন করা যাবে না। প্রতিটি বিষয়ের ধাপ আছে। মনে হয়, দিন শেষে আমার কাছে মানুষ ফলটা চাইবে। যেহেতু খুব বেশি পিছিয়ে নেই। যদি তাড়াতাড়ি ওভারকাম করতে পারি, বড় টুর্নামেন্টেও আমরা ভালো করব।

প্রশ্ন: অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার চলে গেছেন। দল কতটা গুছিয়ে নিতে পেরেছেন?

সালাহ উদ্দীন: টি-টোয়েন্টিতে কমবেশি ফল আসছে। আমাদের ছেলেরা নিজ নিজ দায়িত্ব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে। কে কোন ভূমিকায় খেলবে। কোন পথে আমরা টি-টোয়েন্টিতে এগোব। আমরা এখানে কিছুটা পরিষ্কার হয়ে গেছি। পরিষ্কার থাকাটাই বেশি জরুরি। ব্যাটার হোক বা বোলার—কার কী ভূমিকা। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে একটা ভালো সেটআপের মধ্যে চলে আসছি। ওয়ানডেতে একটু সময় লাগবে। এখানে ভালো করতে অনেক অভিজ্ঞতা লাগে। আমরা বিশেষভাবে মিডল ওভারে কিছুটা সংগ্রাম করছি। এই জায়গাটা পূরণ হতে কিছুটা সময় লাগবে। এখানে এটাও খেয়াল রাখতে হবে, ছেলেদের কতটা সুযোগ আমরা দিচ্ছি। তারা কীভাবে গুছিয়ে উঠছে। সবচেয়ে বড় উন্নতিটা হয়েছে, আমাদের বোলাররা নিচে দারুণ ব্যাটিং করছে। আগে এটা ছিল না। আগে পাঁচ উইকেট পড়ে গেলে আমরা শেষ! কিন্তু এখন ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসছি। সাদা বলে ওপেনিংয়ে ভালো একটা জুটি দেখতে পাচ্ছি। এটা থিতু হওয়ার চান্স আছে।

প্রশ্ন: ফিনিশিং রোলে জাকের আলী ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ভূমিকা আপনাকে কতটা আশাবাদী করছে?

সালাহ উদ্দীন: ওরা এসব জায়গায় নিয়মিতই খেলে। এখানে তারা অভ্যস্ত। কঠিন পরিস্থিতিতে বহুবার খেলেছে। নার্ভটা তারা ধরে রাখে। মনে হয়, তারা দিনে দিনে আরও পরিণত হবে। আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যতে তারা হারা ম্যাচও এক হাতে জেতাবে।

প্রশ্ন: পাকিস্তান সিরিজ জিতলেও যে উইকেটে খেলেছেন, সেটা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আপনার কি মনে হয়, এটা আদর্শ ছিল?

সালাহ উদ্দীন: ভুল আসলে দুই দলই করেছে। উইকেট এত খারাপ ছিল না, যতটা খারাপ বলা হচ্ছে। খেলা আসলে প্রথম ৬ ওভারেই শেষ! প্রথম ৬ ওভারেই তো অনেক সময় যেভাবে ব্যাটিং করা দরকার ছিল, কোনো দলই সেভাবে করেনি। এটা আমরা ভুল করেছি। ওরাও ভুল করেছে। এখানেই খেলাটা শেষ হয়ে গেছে। এই উইকেটে দেখবেন, ৬ ওভার পর ব্যাটাররা স্ট্রোক খেলতে পেরেছে। প্রতিটি ম্যাচেই দেখবেন, প্রথম দু-তিন ওভারে ৩-৪টা উইকেট পড়ে গেছে। ওই পরিস্থিতিতে যেভাবে খেলা উচিত ছিল, আমরা খেলিনি, ওরাও খেলেনি সেভাবে। আমরা একটা ম্যাচে খেলিনি। ওরা দুটি ম্যাচে খেলেনি। প্রথম দিকের ব্যাটাররাই ভুল করছে।

অনুশীলনে শেখ মেহেদী ও সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অনুশীলনে শেখ মেহেদী ও সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রশ্ন: এশিয়া কাপের আগেও কি এমন উইকেটে প্রস্তুতি সারতে চান?

সালাহ উদ্দীন: আমরা যে দুবাইয়ে খেলেছি, প্রায় একই ধরনের উইকেট মনে হয়েছে। উইকেটে স্পিন ধরে। হাই স্কোরিং ম্যাচ তেমন একটা হয় না কিন্তু। খুব বেশি যে কঠিন হবে বলে মনে হয় না। কারণ, মোটামুটি একই ধরনের।

প্রশ্ন: যদি বাংলাদেশের ম্যাচ আবুধাবিতে পড়ে?

সালাহ উদ্দীন: সেটা হয়তো ভিন্ন হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে আপনাকে সব ধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে হবে। উইকেটে হেল্প থাকলে দলের জন্য কিছুটা উপকার আছে। সেটা যেখানেই খেলি। শুধু ফ্ল্যাট ট্র্যাকে খেলবেন, তা তো নয়। আপনাকে বিভিন্ন উইকেটে বিভিন্নভাবে মানিয়ে নিতে হবে।

প্রশ্ন: বিসিবি নেপাল-নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে খেলে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি সারতে চাইছে। এটা আদর্শ হবে কি না।

সালাহ উদ্দীন: এখন তো আন্তর্জাতিক কোনো দল নেই। ছেলেরা যাওয়ার আগে কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে যেতে পারলে দলের জন্য ভালো হবে। দিন শেষে আপনাকে খেলতে হবে। শুধু অনুশীলনই করবেন, তা তো নয়। ম্যাচ খেলার জন্য যা যা করা দরকার, সেগুলো হয়তো ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে তিন অধিনায়ক তত্ত্ব কি সঠিক মনে করেন?

সালাহ উদ্দীন: আগে ছিলাম দলের বাইরে। তখন হয়তো চাইলে অনেক কথা বলতে পারতাম। এখন চাইলেও অনেক কথা বলতে পারব না। ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বলতে পারি। বোর্ডের সঙ্গে বলতে পারি। তবে সেটা জনসমক্ষে বলতে পারব না। প্রতিষ্ঠান যা মনে করবে, সেই পলিসির সঙ্গে দ্বিমত করা যায় না। দ্বিমত করতে হলে অভ্যন্তরীণভাবে করব।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কা সফরের মাঝে নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়া আপনাকে কতটা অবাক করেছে?

সালাহ উদ্দীন: ও (শান্ত) তো দায়িত্ব ছেড়ে দেয়নি। (টেস্ট) সিরিজটা সম্পূর্ণ করে তারপর করেছে। এমন নয় যে সে সিরিজের আগে বলেছে, আমি করব না (অধিনায়কত্ব)। তা তো নয়। সিরিজটা শেষ করে ভালোভাবেই করেছে (অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া)। আমার মতে, সবারই ব্যক্তিগত মতামত আছে। এটা তো আসলে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার মতো নয়। সবারই ব্যক্তিগত মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সে (শান্ত) যদি মানসিকভাবে বিরক্ত থাকে, সে কিন্তু খেলতে পারবে না। দিন শেষে তাকে খেলোয়াড় হিসেবে পারফর্ম করতে হবে। তার যদি মনে হয়, এটা মানসিকভাবে খুবই ভোগাচ্ছে, তার সেই সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের সম্মান জানানো উচিত।

প্রশ্ন: দলে আপনার অনেক প্রভাবের কথা শোনা যায়। কথাগুলো আপনাকে কতটা বিব্রত করে?

সালাহ উদ্দীন: বিব্রত হওয়ার মতো কিছু না। জানি, আগে থেকেই এখানে কিছু ঘটলে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ, আমি দেশি মানুষ। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিদেশিদের সঙ্গে পার্থক্য করাও ঠিক নয়। তাহলে তাদের প্রতি অসম্মান করা হয়। এটা আমাদের সংস্কৃতি। এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। আমাদের নিয়মই হচ্ছে, আপনি কেন ভালো আছেন, আমি তাই খুব অসুখী! আমাদের সংস্কৃতির একটা দিক, ও কেন ভালো আছে। নিজে কেমন আছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। এটা মেনে নিয়েছি। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নাই। তবে আমার মনে হয়, গঠনমূলক সমালোচনা করলে সবার জন্যই ভালো। আমি ব্যাটিং কোচ। দল ভালো করছে না। সেটা নিয়ে আপনি বলেন। কোনো সমস্যা নেই। সবকিছুই গঠনমূলক হলে সবার প্রতি সম্মান থাকে। কারও মোটিভ যদি প্রয়োগ করতে চান, ঠিক নয়। শুধু অন্যায়ভাবে না জেনে দোষ দেওয়া ঠিক নয়। এখানে হেড কোচ, অধিনায়ক আছে। কোচিং স্টাফে অনেক কিংবদন্তি খেলোয়াড় আছেন। আমি চাইলেও মুশতাক ভাইয়ের ওপর মাতব্বরি করতে পারব না। তাঁরাও অনেক হাই প্রোফাইল কোচ। বুঝেশুনে কথা বললে ভালো হয়।

প্রশ্ন: হুট করে শেখ মেহেদীকে সহ-অধিনায়ক করা, বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরা হয়েও মেহেদী হাসান মিরাজের টি-টোয়েন্টি দলে উপেক্ষিত থাকা ইত্যাদি বিষয় আপনার প্রভাবের উদাহরণ হিসেবে এসেছে।

সালাহ উদ্দীন: সব তো প্রকাশ্যে বলা যায় না। এতটুকু বলব, নির্বাচক, অধিনায়ক, প্রধান কোচ আছেন। এগুলো বুঝতে হবে। আমার মতামতেই যদি সব হতো, তাহলে আমারই দল চালালে ভালো হতো। এটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। প্রতিটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে। দলে সাফল্য আসে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে।

প্রশ্ন: দলে একজন পাওয়ার হিটিং কোচ যোগ হচ্ছেন। আপনার কাজের পরিধি কমে যেতে পারে। কীভাবে দেখছেন?

সালাহ উদ্দীন: আমার দল যদি সামান্য লাভবান হয়, যেকোনো বিভাগে, আমি কেন ঈর্ষান্বিত হতে যাব। দল হিসেবে ভালো করলে সবারই ভালো লাগবে। আমি তো বলতে যাইনি, গত এক বছরে আমরা সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছি, আমাদের পাওয়ার হিটিং কোচ আনার দরকার নেই! আমার যদি মনে হয় দলের সামান্য উপকারেও যদি কেউ আসে, সেটা দলেরই হবে। দলটা পুরো বাংলাদেশের। এখানে ভিন্নভাবে দেখার কিছু নেই।

প্রশ্ন: সংক্ষিপ্ত সময়ে একজন পাওয়ার হিটিং কোচ কতটা বদলে দিতে পারবেন?

সালাহ উদ্দীন: যদি কেউ একটা ধাপ এগিয়ে দিতে পারে, সেটা দলেরই লাভ। কী শিখবে, কী শেখাবে, জানি না। তবে কেউ যদি সামান্য নিতে পারে, তাতে দলই লাভবান। এখানে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কেউ গুরুত্বপূর্ণ নই, দল গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: অধিনায়ক লিটন দাস এই রানে আছেন তো এই নেই! তাঁকে নিয়ে কী বলবেন?

সালাহ উদ্দীন: শুধু লিটন দাস নয়, ব্যাটিং কোচ হিসেবে আমার আরও কয়েকটা চ্যালেঞ্জ আছে। বোলাররা যেন ভালো ব্যাটিং করতে পারে। তাতে ওপরের নাম্বার ছয়-সাতে যারা ব্যাটিং করে, তারা অনেক চাপে খেলে। ওরা ভাবে, আমার পরে আর কেউ নেই! আমরা অধারাবাহিক। এক ম্যাচে সবাই ভালো করল, পরের ম্যাচের সবাই একসঙ্গে খারাপ করল। শুধু লিটন নয়, এখানে সবাইকে উন্নতি করতে হবে। শ্রীলঙ্কার টেস্ট ব্যাটারদের গড় দেখুন, সবারই ৪০-এর ওপরে। আমাদের কারও নেই, ৩৬-৩৭ তারা যদি ৪০-৪২ গড়ে নিয়ে যায়, যারা ২৭-২৮ তারা যদি ৪০-এর কাছাকাছি চলে যায়, তাহলে দল থিতু হয়ে যাবে। এই চ্যালেঞ্জ আছে সামনে। এখানে বেশি উন্নতি করা জরুরি।

প্রশ্ন: সাকিব-তামিমদের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মৌলিক পার্থক্য কী?

সালাহ উদ্দীন: পার্থক্য খুব বেশি নয়। তাদের সময়ে দলের চাহিদা কম ছিল। টেস্টে আমরা কখনো চিন্তা করতাম, যেন আড়াই দিনে যায়। আড়াই দিনে গেলে বেঁচে যাই! ওয়ানডেতে ২০০৮ সালের দিকে ২০০-২২০ করলে আমরা খুশি হয়ে যেতাম। জেমি (সিডন্স) মাঝে মাঝে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলত—সালাহ উদ্দীন, আজ আমরা ২২০ করেছি। তখন চাওয়া-পাওয়া অন্য রকম ছিল। এখন দলটা একটা ভালো পর্যায়ে গেছে। এখন জয়ের প্রত্যাশা বেশি। ছেলেদের এই মানসিকতা আছে, জয়ের ক্ষুধা আছে। এই পরিবর্তন যুগের সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নিতেই হবে।

প্রশ্ন: সাকিবের সঙ্গে শেষ কথা কবে?

সালাহ উদ্দীন: সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে।

প্রশ্ন: কী কথা হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে?

সালাহ উদ্দীন: সাকিব আমাকে নিয়ে একটু চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। জিজ্ঞেস করল, আপনি টেনশনে পড়ে গেছেন কি না। সে আমাকে ভালোভাবে চেনে। একটা ডায়ালগ দিয়েছিলাম ওকে, দেখ, জীবনে মাইনাস ৫০০ টাকা নিয়ে সংসার শুরু করেছিলাম। তুই আমাকে টেনশন দিয়ে কাবু করবি, আমি ওই মানুষ না। তখন বলে, রাখি! রাখি!

প্রশ্ন: ওর ক্রিকেট ক্যারিয়ার কোন দিকে যাচ্ছে, নিভৃতে শেষ?

সালাহ উদ্দীন: এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বোর্ডও কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। এটা সরকারি নীতি, তাদের ওপর নির্ভর করে। বোর্ডেরও কিছু করার নেই। যখন সরকার মনে করবে, তখনই সে আসতে পারবে। না হলে আসলে...তাকে ক্রিকেট খেলতে দেশে আসতে হবে। এটা নিয়ে আমাদের খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। হয়তো সেভাবে সে মেনে নেবে। বা কখনো যদি সে ফিরে আসতে পারে, সবাই চাই আসুক। এটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কবে অবসর নেবেন রোহিত শর্মা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৮
অস্ট্রেলিয়ার সফরটা দারুণ গেছে এই ব্যাটারের। ছবি: বিসিসিআই
অস্ট্রেলিয়ার সফরটা দারুণ গেছে এই ব্যাটারের। ছবি: বিসিসিআই

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়ে এখন কেবল ভারতের হয়ে ওয়ানডে খেলছেন রোহিত শর্মা। এই সংস্করণ থেকে কবে অবসর নেবেন সেটা নিয়েও আলোচনার শেষ নেই। তবে তারকা ব্যাটার জানালেন, এখনই অবসরের পরিকল্পনা করছেন না তিনি।

ব্যাট হাতে ২০২৫ সালটা দারুণ গেছে রোহিতের। এই বছর ১৪ ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি ও চার ফিফটিতে করেন ৬৫০ রান। সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরটা তো স্বপ্নের মতো গেছে তাঁর। ৩ ম্যাচে করেন ২০২ রান। একটি করে সেঞ্চুরি এবং ফিফটি আসে তাঁর ব্যাট থেকে। অজিদের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্সের পর প্রথমবারের মতো আইসিসি ওয়ানডে ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে জায়গা করে নেন তিনি। এরপরও রোহিতের অবসর নিয়ে আলোচনার কমতি ছিল না। তবে সাবেক অধিনায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এখনই থামতে চান না তিনি।

রোহিত বলেন, ‘আমার জীবনটা হলো অনেকটা উড়োজাহাজের মতো। শুরুটা কঠিন ছিল। কিন্তু একবার গতি পাওয়ার পর প্লেনটা যে উচ্চতায় উঠেছে সেখান থেকে আর নিচে নামেনি। প্লেনটা এখনই নিচে নামুক সেটা চাই না।’

অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে হেরে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা হাতছাড়া করে ভারত। সে ম্যাচের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন রোহিত। এমনকি ক্রিকেটই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। ধাক্কা সামলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বেশ সময় লেগেছে তাঁর।

এই প্রসঙ্গে রোহিত বলেন, ‘২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর, আমি পুরোপুরি হতাশ ছিলাম এবং অনুভব করছিলাম যে আমি আর ক্রিকেট খেলতে চাই না। কারণ এটা আমার মন ভেঙেছে এবং আমার মনে হয়েছিল আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’

অধিনায়ক হিসেবে এখনো বিশ্বকাপ না জেতার আফসোসে পুড়ছেন রোহিত, ‘আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপ জেতা। সেটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হোক বা ২০২৩ বিশ্বকাপ। সেটা না হওয়ায় আমি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছিলাম। আমার শরীরে কোনো শক্তি অবশিষ্ট ছিল না। নিজেকে সুস্থ করে তুলতে এবং আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আমার কয়েক মাস সময় লেগেছে।’

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরে রোহিতের মতো দলের বাকি সদস্যরাও বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিল। রোহিত বলেন, ‘সবাই অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েছিল। আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি যে কী হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে এটা ছিল আমার জন্য খুব কঠিন সময়। কারণ আমি বিশ্বকাপ জেতার জন্য আমার চেষ্টার কমতি ছিল না। ২০২২ সালে অধিনায়কত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমি এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতকে হারিয়ে ২১ লাখ টাকা পাচ্ছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা

ক্রীড়া ডেস্ক    
চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ এখন নামেমাত্রই ‘হাইভোল্টেজ’ ম্যাচ। বেশির ভাগ ম্যাচই হয় একতরফা আর এসব পানসে ম্যাচগুলোতে ভারতের জয় একরকম অনুমিত। কিন্তু গতকাল দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে পাশার দান উল্টে দিল পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। দেশটির জুনিয়র ক্রিকেটাররা পাবেন মোটা অঙ্কের টাকা অর্থ পুরস্কার।

দুবাই শেষে সামির মিনহাস, ফারহান ইউসাফ, হুসাইফা হাসানরা আজ বীরের বেশে দেশে ফিরেছেন। ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে রাজকীয় বরণ করা হয়েছে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে বের হচ্ছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। ছাদখোলা বাসে যখন চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান দল ভ্রমণ করছে, তখন ভক্ত-সমর্থকেরা তাঁদের উদ্দেশে ফুল ছিটিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারদের দেখতে অনেকে উট ভাড়া করে এসেছেন। শিরোপা জয়ের আনন্দে সানাই বাজিয়েছেন ভক্ত-সমর্থকেরা। হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভিসহ দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি মহসিন নাকভি পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারদের জন্য ৫০ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ২১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

নাকভি একই সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যানও। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়কে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম সেরা জয় বলে ঘোষণা করেছেন। দেশটির বয়সভিত্তিক ক্রিকেট আড়ালে চলে গেলেও ভারতের বিপক্ষে জয়ের পর এক রকম পুনর্জন্ম হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ চ্যাম্পিয়ন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের জন্য বিশাল এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন বলে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা পাকিস্তান এর আগে একবারই জিতেছিল। ২০১২ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। ১৩ বছর পর এবার আর শিরোপা ভাগাভাগি করতে হয়নি ভারত-পাকিস্তানকে। দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি মাঠে ভারতকে ১৯১ রানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতল পাকিস্তান। ম্যাচসেরা, সিরিজসেরা দুটি পুরস্কারই পেয়েছেন সামির মিনহাস। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ১১৩ বলে ১৭ চার ও ৯ ছক্কায় করেছেন ১৭২ রান। । ৫ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৪৭১ রান করে ২০২৫ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তিনি।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এ বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত। সেবার সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নাকভির কাছ থেকে শিরোপা নেয়নি। প্রায় তিন মাস পর গতকাল দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে পরাজিত ভারতকে রানার্সআপ পদক দিতে যান নাকভি। ভারতীয় ক্রিকেটাররা তাঁর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেননি। বৈভব সূর্যবংশী, আয়ুশ মাত্রে, কিষাণ সিংরা রানার্সআপ পদক নিয়েছেন মুবাশশির উসমানির কাছ থেকে। উসমানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) সহযোগী সদস্য দেশগুলোর বোর্ড পরিচালক। একই সঙ্গে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও আছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইসিসি কেন এই সিস্টেমের খরচ বহন করছে না, প্রশ্ন স্টার্কের

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১২
ডিআরএস নিয়ে আইসিসির ওপর প্রশ্ন তুলেছেন মিচেল স্টার্ক। ছবি: ক্রিকইনফো
ডিআরএস নিয়ে আইসিসির ওপর প্রশ্ন তুলেছেন মিচেল স্টার্ক। ছবি: ক্রিকইনফো

অ্যাশেজে মাঠের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পেরে উঠছে না ইংল্যান্ড। কিন্তু প্রায় দেড়শ বছর ব্যাপী এই টেস্ট সিরিজে আলাপ-আলোচনা না থেকে কি পারে! দুই দলের মাঠের পারফরম্যান্স ছাপিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আম্পায়ারিং নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাকে (আইসিসি) খোঁচা মেরেছেন।

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) চালু হয়েছে অনেক আগেই। ডিআরএসের এই সিস্টেমে স্নিকোমিটার, আল্ট্রা এজ নামে দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে আইসিসি। কোন সিরিজে কোনটি ব্যবহার করা হবে, আয়োজক ক্রিকেট বোর্ডের ওপর নির্ভর করে। ২০২৫-২৬ মৌসুমের অ্যাশেজে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া স্নিকোমিটার দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। তবে অ্যাডিলেডে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে স্নিকোমিটার বেশির ভাগ সময় ঠিকভাবে কাজ করেনি। সিস্টেমে গলদ থাকার কারণে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত উল্টাপাল্টা হয়েছে।

অ্যাডিলেডে গতকাল পাঁচ দিনে শেষ হওয়া অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের পর স্নিকোমিটার প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইসিসির উদ্দেশে স্টার্ক বলেন, ‘সব দেশে একই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা উচিত ও আইসিসি সেটা তত্ত্বাবধান করবে। স্নিকোর উল্টাপাল্টা আচরণ সত্যিই হতাশাজনক। দর্শক থেকে শুরু করে ম্যাচ কর্মকর্তা, সম্প্রচারক সবার জন্যই ঝামেলা। ম্যাচ কর্মকর্তারাও তো স্নিকোমিটার ব্যবহার করেন। এটার খরচ কেন আইসিসি বহন করবে না?’

অ্যাডিলেডে ক্যারি গত ১৭ ডিসেম্বর অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম দিনে ৭২ রানে আউট হতে পারতেন ক্যারি। ইনিংসের ৬৩তম ওভারের প্রথম বলে ক্যারির বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন ইংলিশ পেসার জশ টাঙ। আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। স্পাইক ধরা পড়ার পরও ক্যারিকে আউট ঘোষণা করা হয়নি। ৭২ রানে বেঁচে যাওয়া ক্যারি তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ১৪৩ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় অজি উইকেটরক্ষক ব্যাটার ১০৬ রান করেছেন। পরের দিন (দ্বিতীয় দিন) ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক ব্যাটার জেমি স্মিথের বিপক্ষে ডিআরএস প্রযুক্তি দুইবার ভুল ডিসিশন দিয়েছে।

টানা দুই দিন স্নিকোমিটার প্রযুক্তি কাজ না করায় স্টার্ক তৎক্ষণাৎ ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার বলেছিলেন, ‘স্নিকোমিটার বাদ দেওয়া উচিত। সবচেয়ে বাজে প্রযুক্তি এটা। আগের দিনও তারা ভুল করেছে। আজ তারা আরেকটা ভুল করল।’ তাঁর এই কথা রেকর্ড হয়েছিল স্টাম্প মাইকে। টানা পাঁচবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার পাওয়া সাইমন টফেল তখন বলেছিলেন, ‘আম্পায়ারকে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে দেখতে চাই। প্রযুক্তি অবশ্যই পাশে থাকবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তো সবকিছু বদলে ফেলা যাবে না।’ টফেলের মতে দুই বছর আগে আম্পায়ারের ‘সফট সিগনাল’-এর নিয়ম উঠিয়ে দিয়েই আইসিসি ভুলটা করেছে।

পার্থ, ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম দুই টেস্টেই ৮ উইকেটে হেরেছে ইংল্যান্ড। পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্ট শেষ হয়েছে দুই দিনে। ব্রিসবেনে গোলাপি বলে হওয়া অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের স্থায়িত্ব ছিল চার দিন। অ্যাডিলেডে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট পাঁচ দিনে গড়িয়েছে ও অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানে জিতে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই অ্যাশেজ জিতেছে। ২৬ ডিসেম্বর মেলবোর্নে শুরু হবে চতুর্থ টেস্ট। এই টেস্ট বক্সিং ডে টেস্ট নামে পরিচিত। নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি মাঠে গড়াবে অ্যাশেজের পঞ্চম তথা শেষ টেস্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাসকিন কি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারবেন

ক্রীড়া ডেস্ক    
ডেজার্টের বিপক্ষে ২০ রানে ২ উইকেট নেন তাসকিন। ছবি: শারজা ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক
ডেজার্টের বিপক্ষে ২০ রানে ২ উইকেট নেন তাসকিন। ছবি: শারজা ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক

আইএল টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ৩ ম্যাচে ৪ উইকেট নিলেও রান খরচের দিক থেকে উদার ছিলেন তাসকিন আহমেদ। চতুর্থ ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন এই গতি তারকা। ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আজ শারজার প্রতিপক্ষ আবুধাবি নাইট রাইডার্স। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে। এছাড়া আজ টিভিতে আছে আরও বেশকিছু ম্যাচ। একনজরে আজকের টিভি সূচি।

ক্রিকেট

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট: ৫ম দিন

নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ভোর ৪ টা, সরাসরি

টি স্পোর্টস

বিগ ব্যাশ লিগ

সিডনি থান্ডার-ব্রিসবেন হিট

বেলা ২টা ৩০ মিনিট, সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ২

আইএল টি-২০

আবুধাবি-শারজা

রাত ৮টা ৩০ মিনিট, সরাসরি

টি স্পোর্টস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত