Ajker Patrika

জুলাই চেতনা নিয়ে ব্যবসা না করার অনুরোধ সালাহউদ্দিন আহমদের

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা নিয়ে ব্যবসা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘যারা জুলাই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা করতে চায়—আমরা তাদের অনুরোধ করি, কখনো যেন সেই রাস্তায় না যায়। কারণ, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করতে করতে আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে গেছে। আজকে তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।’

আজ শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার মুগ্ধ মঞ্চে শোকরানা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সদস্য মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা, এই যে মহিমা সারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে আত্মদান করেছে, সকল মানুষেরই চেতনা। সকল মানুষেরই এই অর্জন। সুতরাং, কোনো একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে, তারা যদি এককভাবে জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার, ধারক, বাহক এবং দাবি করে, সেটা বাংলাদেশের জন্য শুভ পরিণতি নিয়ে আসবে না। তাদের জন্য তো না-ই।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে, যারা আত্মদান করেছে, রক্তদান করেছে—তাদের, শহীদদের পরিবারকে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সবাই বক্তব্যে বলেছে, হাসিনা দেশত্যাগ করেছে। পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমি বলি, হাসিনার দেশ এটা কখনোই ছিল না। তারা এখানে কখনো রাজনীতি করেনি। এ দেশের মানুষ এবং গণতন্ত্রের পক্ষে মুজিব ও হাসিনা কখনো ভূমিকা রাখেনি। মুজিব ভূমিকা রেখেছিল এ দেশে একদলীয়, স্বৈরতন্ত্র, বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্য, একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং নিজেকে একনায়ক হিসেবে ঘোষণা করাই তার স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে। হাসিনা সেই বাকশালেরই উত্তরসূরি। হাসিনাও বাস্তবে বাকশাল এবং ওপরে গণতন্ত্রের মুখোশ, সাংবিধানিক শাসনতন্ত্রের নমুনা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। এটাই ছিল বাপ-বেটির মধ্যে ব্যবধান। কিন্তু দ্রব্য একই। সুতরাং, তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে, যেখানে তাদের ঘরবাড়ি। তাদের শেকড় যেখানে, তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা সেই ভাষাটা এখন প্রয়োগ করতে চাই।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশে মানুষ বুঝতে পেরেছে, শেখ হাসিনা নিজে প্রমাণ করেছে তিনি এখানকার মানুষ কখনোই ছিলেন না। তারা এখানে রাজনীতি কখনোই করেননি। এ দেশের গণমানুষের চিন্তাচেতনা তো দূরের কথা, এ দেশের মাটি মানুষের সঙ্গে তাদের কোনো দিন সম্পর্ক ছিল না।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চব্বিশে ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। কেউ কেউ বলে ৩৬ দিনে। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, এই ৩৬ দিন অর্জন করার জন্য আমাদের ৩৬টা রক্তের সিঁড়ি পেরোতে হয়েছে। সেই রক্তের সিঁড়ি বানানো হয়েছে ২০০৯ সাল থেকে। সেই সিঁড়ি বানাতে বানাতে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম করতে করতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিসহ এ দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং শক্তিসমূহ, রাজনীতির বাইরেও সাংবাদিক বন্ধুগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং শ্রমজীবী, মেহনতি মানুষ এই ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অবদান রেখেছে। রক্ত দিয়েছে, শহীদ হয়েছে। শহীদ আবরারের পিতাকে দেখে আজকে তাই মনে হয়েছে। তুলিকে দেখে তাই মনে হয়েছে। আমি নিজেও গুমের শিকার। তারা প্রত্যেকটি সিঁড়ি নির্মাণের জন্য একেকটি অবদান রেখেছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, ‘যারা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এই ইতিহাসকে একত্রিত করবেন, তাঁরা ২০৯ জন গুমের শিকার ব্যক্তিকে দেখবেন। কিন্তু আমরা গুম কমিশনে রেকর্ড করতে দেখেছি ১ হাজার ৮৫০ জনের নাম। তার মধ্যে ৩৫০ জন নাকি এখনো ফেরত আসে নাই। আমরা খতিয়ান দেখেছি, তিন হাজারেরও বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে সেই সময়ের মধ্যে। এই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আগের ইতিহাস। আমরা দেখেছি, সাত হাজারেরও বেশি মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়ে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে। এক্সট্রা জুডিশিয়াল ক্লিনিংয়ের মাধ্যমে প্রাণ দিয়েছে। রাজনৈতিক নির্যাতনের মাধ্যমে প্রাণ দিয়েছে। এইভাবে একেকটা সিঁড়ি নির্মাণ করার জন্য ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যাদের রক্ত দিয়ে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে, যারা গুম হয়েছে, কারা নির্যাতিত হয়েছে, যারা বিভিন্নভাবে অঙ্গহানি হয়েছে, যারা বাংলাদেশের সকল মানুষকে মুক্ত করার জন্য নিজের জীবন দেশের মাটিয়ে বিলিয়ে দিয়েছেন, এই সিঁড়িগুলো বেয়েই ২০২৪ সালের ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।’

বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেন সেই বাংলাদেশ প্রত্যাশা করি, যেই বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেছিল মীর মুগ্ধ। আমরা যেন সেই বাংলাদেশের জনমানুষের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করি, সেই প্রত্যাশা ছিল ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের সকল শহীদের আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশা একটি বৈষম্যবিহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে, সত্যিকারের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে, এই বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, এই বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কিসের শুকরানা আদায় করছ? তারা বলেছে, শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে—সে জন্য, সে জন্য। কিন্তু এখানে একজন বক্তব্য দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে কয়েকবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার বিচার হবে না। যদি কয়েক হাজারবার শেখ হাসিনার ফাঁসি হয়, তা-ও তার বিচার শেষ হবে না। আমি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছে, মামলা করেছে সে আদালতে। আরও যারা গুমের শিকার হয়েছে তারা মামলা করেছে। জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে অসংখ্য যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় প্রত্যেকটি মামলার রায় হবে ফাঁসির রায়। কতবার ফাঁসি হবে শেখ হাসিনার? শেষ হবে না।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘মুজিব এবং হাসিনার ইতিহাস বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। হত্যাযজ্ঞের রাজনীতি নামে অপরাজনীতি প্রণয়নের ইতিহাস। সাংবিধানিকভাবে গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। তাদের ক্ষমা নেই। এ দেশ থেকে আপনারা যত দিন পর্যন্ত আওয়ামী-বাকশালীর মূল উৎপাটন না করতে পারবেন, তত দিন পর্যন্ত এই স্বৈরাচার শাসনের প্রত্যাবর্তন ব্যবস্থার সম্ভাবনা থেকে যাবে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, মায়ের ডাক ফাউন্ডেশনের সানজিদা ইসলাম তুলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় পৌঁছেছেন জোবাইদা রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৬
জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি
জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর তাঁকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৩০২) হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে।

এর আগে দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত ৬ মে দেশে এসেছিলেন জোবাইদা রহমান। এক মাস পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ৫ জুন আবারো লন্ডন ফিরে যান তিনি।

এদিকে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি আসতে বিলম্ব হচ্ছে।

কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে—গতকাল বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা বলেছিলেন। তবে সন্ধ্যার পর দলটির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কিছু টেকনিক্যাল (কারিগরি) সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর যাত্রা বিলম্বিত হবে। সর্বশেষ বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আগামী রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে।

খালেদা জিয়ার ১৪ জন সফরসঙ্গী

পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদার, চিকিৎসক নুরুদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন, হাসান শাহরিয়ার ইকবাল (এসএসএফ), সৈয়দ সামিন মাহফুজ (এসএসএফ), আব্দুল হাই মল্লিক (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী), মাসুদের রহমান (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রাইভেট সেক্রেটারি), ফাতেমা বেগম (গৃহকর্মী) ও রুপা শিকদার (গৃহকর্মী)।

জোবাইদা রহমানেরও এই তালিকায় সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই ১২ দিন ধরে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পিছিয়ে গেছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।

আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে দলের মিডিয়া সেলের এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়, কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখনো না পৌঁছানোয় বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জন্য কাতার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে বিলম্ব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৭
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে নেওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ। শুক্রবার ভোরে তাঁকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের রওনা হওয়ার কথা থাকলেও এই সূচি ঠিক থাকছে না। দুপুর নাগাদ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা ছাড়তে পারে। তবে সেটি নিশ্চিত নয়।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে। আর নির্ধারিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় আরেকটি পাঠাবে কাতার। সে কারণেই এই দেরি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কাতার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি রাতের মধ্যেই ঢাকা এসে পৌঁছাবে এবং সম্ভবত খুব ভোরেই খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাবে। তবে সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটির কথা জানান।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়ার পর দ্রুত তা মেরামত সম্ভব হয়নি। এরপর নতুন আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেটি ঢাকা পৌঁছাতে বেশ কয়েক ঘণ্টা দেরি হবে।

এ দিকে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রায় সঙ্গী হতে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার পর (বাংলাদেশ সময় রাত ১২টার পর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি লন্ডন ছেড়েছেন।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা আজকের পত্রিকাকে জানান, জোবাইদা রহমান এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখান থেকেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন ফিরবেন তিনি।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. জাহিদ হোসেন, ডা. এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন থাকবেন।

চিকিৎসক দলের বাইরে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, তারেক রহমানের সহকারী মো. আব্দুল হাই মল্লিক, খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান এবং গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার ছাড়াও এসএসএফের দুজন সদস্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে। সেদিন থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে এসে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লন্ডন থেকে ঢাকার পথে জোবাইদা রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে যুক্তরাজ্য থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে বাংলাদেশের পথে যাত্রা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর তাঁকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৩০২) হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।

এদিকে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ রাতে ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি আসতে বিলম্ব হচ্ছে।

কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে—আজ বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা বলেছিলেন। তবে সন্ধ্যার পর দলটির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কিছু টেকনিক্যাল (কারিগরি) সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর যাত্রা বিলম্বিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত