সম্পাদকীয়
নানা মত, ধর্ম ও রীতিনীতির মধ্যেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য—এই উক্তির ভেতর যেমন একধরনের আন্তরিক উচ্চারণ লুকিয়ে আছে, তেমনি এ দেশের বাস্তবতা সম্পর্কে একরাশ সংশয়ও উঁকি দেয়। ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে সম্প্রীতি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে শুভ, সৌহার্দ্য ও সম্মিলনের বার্তা বয়ে আনে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই কথাগুলো কতটা কার্যকর? আর কতবার এই ধাঁচের কথা শুনে আমরা আশাবাদী হব?
ড. ইউনূস বলেন, এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড়ি ও সমতলের নানা জনগোষ্ঠী মিলেই আমরা এক পরিবার। বৈচিত্র্যময় এই সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্য আমাদের শক্তি। পয়লা বৈশাখকে তিনি সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন। গৌতম বুদ্ধের অহিংস ও সাম্যের বাণী, অতীশ দীপঙ্করের জ্ঞানতৃষ্ণা আর অতীতের বৌদ্ধবিহারগুলোর শিক্ষা ও জনকল্যাণমূলক ভূমিকার কথা তিনি যে দরদের সঙ্গে বললেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারকে তিনি কেবল একটি ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং জাতিগত ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে দেখতে চান—এই চিন্তা সত্যিই প্রগতিশীল।
অন্যদিকে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘আমরা শান্তির দেশ চাই, হানাহানি চাই না’—এটাও আমাদের পরিচিত উচ্চারণ। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রয়োজনীয়তা এবং গৌতম বুদ্ধের অহিংস নীতির কথা বলেছেন, দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশ্বাসও। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বুঝিয়েছেন, সেনাবাহিনী সম্প্রীতির রক্ষক হিসেবে কাজ করছে এবং সম্প্রীতি ভবনের নির্মাণকাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।
এতসব হৃদয়গ্রাহী, ভালো কথা আর প্রতিশ্রুতির পরও প্রশ্ন জাগে, কেন আজও পাহাড়ে অশান্তির ঝোড়ো হাওয়া, কেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মন থেকে নিরাপত্তাহীনতা দূর হয় না? কেন এক সম্প্রদায়ের উৎসব অন্য সম্প্রদায়ের চোখে কাঁটা হয়ে ওঠে? এসব বক্তৃতা, প্রতিশ্রুতি, নির্মাণকাজ আর ঐতিহ্যের কথা আমরা বহুবার শুনেছি—নির্বাচনের আগে, জাতিগত উত্তেজনার পরে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বা জাতীয় দিবসে। কিন্তু যখন বাস্তবজীবনে সংখ্যালঘু নারী নির্যাতনের শিকার হয়, মন্দিরে আগুন লাগে কিংবা পাহাড়ের কোনো নিরীহ গ্রামে হামলা হয়, তখন বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন না হয়ে পারা যায় না।
আমরা চাই, আমাদের ঘরে, পাড়ায়, রাজপথে, বিদ্যালয়ে, কর্মক্ষেত্রে সম্প্রীতি সম্প্রসারিত হোক। সমতলে আর পাহাড়ে, শহরে আর গ্রামে একই সঙ্গে সব ধর্ম, মত ও সংস্কৃতির মানুষের জন্য রাষ্ট্র সমান নিরাপদ হোক। প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন, সেনাপ্রধানের প্রতিশ্রুতি—সবই শুভ। কিন্তু এ দেশের সম্প্রীতির ভবিষ্যৎ কেবল বক্তব্যে নয়, তার বাস্তবায়নে নির্ভর করে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে সত্যিই এই দেশকে সবার দেশ বলে ভাবতে পারে, সে বাস্তবতা তৈরি করে দিতে হবে। না হলে ‘সম্প্রীতি ভবন’ ও ভালো ভালো কথা সবই ‘কথার কথা’ ও জাতির দীর্ঘশ্বাস হয়ে থেকে যাবে।
নানা মত, ধর্ম ও রীতিনীতির মধ্যেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য—এই উক্তির ভেতর যেমন একধরনের আন্তরিক উচ্চারণ লুকিয়ে আছে, তেমনি এ দেশের বাস্তবতা সম্পর্কে একরাশ সংশয়ও উঁকি দেয়। ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে সম্প্রীতি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে শুভ, সৌহার্দ্য ও সম্মিলনের বার্তা বয়ে আনে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই কথাগুলো কতটা কার্যকর? আর কতবার এই ধাঁচের কথা শুনে আমরা আশাবাদী হব?
ড. ইউনূস বলেন, এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড়ি ও সমতলের নানা জনগোষ্ঠী মিলেই আমরা এক পরিবার। বৈচিত্র্যময় এই সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্য আমাদের শক্তি। পয়লা বৈশাখকে তিনি সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন। গৌতম বুদ্ধের অহিংস ও সাম্যের বাণী, অতীশ দীপঙ্করের জ্ঞানতৃষ্ণা আর অতীতের বৌদ্ধবিহারগুলোর শিক্ষা ও জনকল্যাণমূলক ভূমিকার কথা তিনি যে দরদের সঙ্গে বললেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারকে তিনি কেবল একটি ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং জাতিগত ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে দেখতে চান—এই চিন্তা সত্যিই প্রগতিশীল।
অন্যদিকে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘আমরা শান্তির দেশ চাই, হানাহানি চাই না’—এটাও আমাদের পরিচিত উচ্চারণ। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রয়োজনীয়তা এবং গৌতম বুদ্ধের অহিংস নীতির কথা বলেছেন, দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশ্বাসও। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বুঝিয়েছেন, সেনাবাহিনী সম্প্রীতির রক্ষক হিসেবে কাজ করছে এবং সম্প্রীতি ভবনের নির্মাণকাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।
এতসব হৃদয়গ্রাহী, ভালো কথা আর প্রতিশ্রুতির পরও প্রশ্ন জাগে, কেন আজও পাহাড়ে অশান্তির ঝোড়ো হাওয়া, কেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মন থেকে নিরাপত্তাহীনতা দূর হয় না? কেন এক সম্প্রদায়ের উৎসব অন্য সম্প্রদায়ের চোখে কাঁটা হয়ে ওঠে? এসব বক্তৃতা, প্রতিশ্রুতি, নির্মাণকাজ আর ঐতিহ্যের কথা আমরা বহুবার শুনেছি—নির্বাচনের আগে, জাতিগত উত্তেজনার পরে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বা জাতীয় দিবসে। কিন্তু যখন বাস্তবজীবনে সংখ্যালঘু নারী নির্যাতনের শিকার হয়, মন্দিরে আগুন লাগে কিংবা পাহাড়ের কোনো নিরীহ গ্রামে হামলা হয়, তখন বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন না হয়ে পারা যায় না।
আমরা চাই, আমাদের ঘরে, পাড়ায়, রাজপথে, বিদ্যালয়ে, কর্মক্ষেত্রে সম্প্রীতি সম্প্রসারিত হোক। সমতলে আর পাহাড়ে, শহরে আর গ্রামে একই সঙ্গে সব ধর্ম, মত ও সংস্কৃতির মানুষের জন্য রাষ্ট্র সমান নিরাপদ হোক। প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন, সেনাপ্রধানের প্রতিশ্রুতি—সবই শুভ। কিন্তু এ দেশের সম্প্রীতির ভবিষ্যৎ কেবল বক্তব্যে নয়, তার বাস্তবায়নে নির্ভর করে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে সত্যিই এই দেশকে সবার দেশ বলে ভাবতে পারে, সে বাস্তবতা তৈরি করে দিতে হবে। না হলে ‘সম্প্রীতি ভবন’ ও ভালো ভালো কথা সবই ‘কথার কথা’ ও জাতির দীর্ঘশ্বাস হয়ে থেকে যাবে।
রমনায় প্রাতর্ভ্রমণ অনেকেরই মতো আমারও দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তেমনই একজন নিত্যভ্রামণিক বন্ধু ২২ মে সকালে তাঁর ফেসবুকে ভিডিওচিত্রসহ একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, রমনাকে ঘিরে, বিশেষ করে মিন্টো রোডসংলগ্ন রমনার পূর্ব পাশে এ রকম সুনসান নীরবতা কোনো দিন দেখেননি। প্রতিদিন সকালে সেই শত শত গাড়ির...
৫ ঘণ্টা আগেবর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিজিপিএ (কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) প্রতিযোগিতা যেন এক অদৃশ্য যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। উচ্চশিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো গবেষণা ও চিন্তাশক্তির বিকাশ। সেখানে এখন গ্রেডই হয়ে উঠেছে সাফল্যের একমাত্র মানদণ্ড। যাদের সিজিপিএ উচ্চ, তাদের মেধাবী হিসেবে...
৫ ঘণ্টা আগেমে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ সফরের মধ্য দিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি সিরিয়া...
৫ ঘণ্টা আগেস্বনামধন্য ইরানি চলচ্চিত্রকার জাফর পানাহি অবশেষে কান চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত হয়েছেন। ২০০৩ সালে শেষবারের মতো তিনি কানে উপস্থিত হতে পেরেছিলেন। এবার ২০ মে পানাহি পরিচালিত ‘ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাকসিডেন্ট’ সিনেমাটি প্রদর্শনীর পর টানা ৮ মিনিট তিনি ডুবেছিলেন দর্শকদের করতালিতে। একজন কীর্তিমান মানুষের...
৫ ঘণ্টা আগে