Ajker Patrika

১৭ বছরে ভোটার চান ড. ইউনূস, এনসিপির প্রস্তাব ১৬ বছর: যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বয়স ১৬ বছর করার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। গতকাল রোববার সংস্কার প্রস্তাবের সুপারিশমালা কমিশনে জমা দিয়েছে দলটি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে।

গত অগাস্টে শেখ হাসিনার সরকারকে পতনের অভ্যুত্থানে জেন-জি প্রজন্ম তথা কিশোর-তরুণ প্রজন্মের ভূমিকাকে ভোটার হওয়ার বয়স ১৬ বছর করার পক্ষে যুক্তি হিসেবে খাঁড়া করেছে এনসিপি। দলটির মত, অভ্যুত্থানে জেন-জির ভূমিকা বিবেচনায় নিলে ভোটারের বয়স ১৮ বছরে সীমিত রাখা গ্রহণযোগ্য নয়।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, ‘আমরা মনে করছি, ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর হতে পারে। এর কারণ হচ্ছে, এবারের অভ্যুত্থানকে সারা বিশ্বের জেন-জির অভ্যুত্থান বলা হচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানে তাদের এত বড় একটা স্টেক তৈরি হলো, এরপর পরিবর্তিত যে বাংলাদেশ এবং আসন্ন যে নির্বাচন, সেই নির্বাচনে তারা মতামত দিতে পারবে না শুধু বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ার কারণে, এটা আমরা যৌক্তিক মনে করছি না।’

এনসিপির বহু আগেই অভ্যুত্থানের নেতাদের আহ্বানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটার করার প্রস্তাব দিয়েছেন। গত বছর ২৭ ডিসেম্বর এক আলোচনায় সভায় তিনি ভোটারের বয়স ১৭ বছর করার পক্ষে মত দেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি মনে করি, ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারণ হওয়া উচিত। নির্বাচন সংস্কার কমিশন কী সুপারিশ করবে, তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে, ঐকমত্যে পৌঁছার জন‍্য আমি তা মেনে নেব।’

তবে ড. ইউনূস বা এনসিপির এই প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ১৮ বছরের নিচে অর্থাৎ অপ্রাপ্তবয়স্কদের ভোটার ক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনি বাধা এবং শিশু অধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরেছেন আইনজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে তিনজন বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে তাঁদের অভিমত জানিয়েছেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম। ছবি: সংগৃহীত

এটা করতে হলে সাংবিধানিক পরিবর্তন ও ঐকমত্য লাগবে: ড. আব্দুল আলীম

১৬ বছর বয়সীদের ভোটার করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। এটি করতে হলে সংসদ লাগবে। তার আগে ১৬ বছর বয়সীদের ভোটার করা হবে কি না সে বিষয়ে ঐকমত্য লাগবে বলে মনে করেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম।

এ বিষয়ে ড. মো. আব্দুল আলীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্লোভেনিয়ায় ১৬ বছর বয়সী যদি কেউ চাকরিজীবী হয়, তখন তাকে ভোট দিতে দেওয়া হয়। আর এস্তোনিয়ায় ১৬ বছর বয়সীদের শুধু স্থানীয় সরকার নির্বাচন ভোট দিতে দেওয়া হয়। আমি দু-একটি দেশের উদাহরণ জানি, যেখানে ভোটারের বয়স ১৭ আছে। এ রকম একটি দেশ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। সেখানে বিয়ের বয়সও ১৭। এ ছাড়া বেশির ভাগ দেশে ভোটার হওয়ার বয়স ১৮। তারপরও যেহেতু ছাত্ররা আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন, তাই তাঁরা মনে করছেন ১৬-তেই ম্যাচিউরড হয়ে যাচ্ছেন।

সংবিধান নতুন করে লেখা বা সংশোধন সংসদ ছাড়া হবে না উল্লেখ করে আব্দুল আলীম বলেন, আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অথবা সীমানা নির্ধারণ আইন সংশোধন অধ্যাদেশ দিয়েই করা যায়। কিন্তু সংবিধানে তো ভোটার (১৮ বছর) ও প্রার্থী (২৫ বছর) হওয়ার বয়স বলা আছে। কাজেই সংবিধানের কোনো জিনিস পরিবর্তন হলে সংসদ দরকার হয়।

ভোটারের বয়স ১৬ বছর করার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? জানতে চাইলে আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমি সরাসরি এ বিষয়ে কিছু বললাম না। তবে এটি অসম্ভব বলে কিছু না। কিন্তু এটি করতে হলে ঐকমত্য লাগবে। প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৩-এর বিষয়ে এই নির্বাচন বিশেষজ্ঞের মত, ২৩, ২৪, ২৫ কাছাকাছি। আমার মনে হয়, যেটি আছে, ঠিক আছে।’

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত

অযৌক্তিক প্রস্তাব, শিশুরা অধিকার লঙ্ঘন হবে: ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া

১৬ বছর বয়সীদের ভোটার করা হলে প্রটেকশনের ক্ষেত্রে শিশুরা বড় আকারে অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

এই আইনজীবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেখুন এগুলো শিশুতোষ আলাপ। শিশুরা সম্পত্তির মালিক হতে পারে, কিন্তু আইন অনুযায়ী সরাসরি বিক্রি বা অন্য কিছু করতে পারে না। অভিভাবকের মাধ্যমে করতে হয়। অভিভাবকেরাও নিজে থেকে কিছু করতে পারেন না, আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে সেটি যদি শিশুর রক্ষণাবেক্ষণ বা বড় করার জন্য ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজন হয় তবে করতে পারেন।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, সম্পত্তির অধিকার থেকে শুরু করে কোনো কিছুতেই শিশুর নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আইনগত স্বীকৃতি কোথাও নেই। সেখানে ভোট দেওয়ার মতো বিষয়ে শিশু কীভাবে দেবে? ২০১৩ সালের শিশু আইনে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু। ১৮ বছর হওয়ার পর তার ভোট দেওয়ার অধিকারসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার তৈরি হচ্ছে। ১৬ বছর করার যে দাবি, এটি আসলে অর্বাচিন দাবি। এগুলো বিবেচনায় নেওয়ার মতো কোনো সুযোগ নেই।

ভোটারের বয়স কমাতে থাকলে শিশুর প্রটেকশনের জায়গাটা কমে আসবে উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, তারা বুঝছে না আইনের দিকে যে ঝুঁকিটা তৈরি হবে, সেটি সামাল দিতে পারবে না। শিশু আইনে তাদের যাতে জেলের মধ্যে না রাখে, তার জন্য শাস্তি না দিয়ে সংশোধন করার জন্য সংশোধনাগার তৈরি করা হয়েছে। শিশুর প্রটেকশনের জন্য জাতিসংঘের শিশুসনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে। সেটিতে স্বাক্ষর করায় ১৯৭৯ সালের আইন পরিবর্তন করে ২০১৩ সালে নতুন আইন করা হয়েছে। সেখানে শিশুদের প্রটেকশনের ব্যাপার আছে। সেই প্রটেকশন সব উঠে যাবে যখন ভোটার হওয়ার বয়স কমিয়ে ১৬-তে নিয়ে আসা হবে।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার মতে, ‘১৬ বছর বয়সে সবার মানসিক পরিপক্বতা এতটা কোনোভাবেই হয় না। আমাদের দেশের যে পরিবেশ-পরিস্থিতি তাতে সব ভালো কাজ নয়, সব খারাপ কাজের দায়ভার তার ঘাড়ে পড়বে। এখন আমরা বিতর্ক করতে চাই বা পারি যে এটি তো শিশু আদালতে যাবে, ওতো শিশু, সবকিছু বিবেচনায় ভোটারের বয়স ১৬ বছর করার দাবি আমি অযৌক্তিক বলে মনে করি।’

২৩ বছর বয়সে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে এই আইনজীবী বলেন, ‘একটি ছেলে আসলে ২৩ বছর বয়সে পড়াশোনা করে মাত্র বের হয়। সে আসলে তখন রাজনীতির কী বোঝে? পরিপক্ব সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তো একটি বয়সের প্রয়োজন হয়। অন্যরা যে পরামর্শই দিক, আমি মনে করি প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ২৫ বছর এবং ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ বছর—এটিই ঠিক আছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রস্তাব: ড. সাব্বির আহমেদ

ভোটের মতো বিষয়ে ১৬ বছরের একটি ছেলে বা মেয়ে সঠিকভাবে মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তাঁর মতে, ১৬ বছরে ভোটার করার উদ্যোগটি সঠিক নয়। বরং ১৮ বছর বয়স যেটি আছে, সেটি ঠিকই আছে।

অধ্যাপক সাব্বির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আরেকটি হচ্ছে, ১৬ বছর আপনি কেমনে করেন? আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের সংজ্ঞা আমি যতটুকু জানি, সেটি ১৬ বছর কোনোভাবেই আসে না। সুতরাং এটি করলে দেশীয় আইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইনকে সাংঘর্ষিক জায়গায় নিয়ে যাবেন। আমার কাছে যেটি বড় জিনিস মনে হয়, আমি মনে করি ভোটের মতো বিষয়ে একটি ১৬ বছরের ছেলে বা মেয়ে সঠিক মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। এটি আমি মনে করি। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।’

প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৩ বছর করার বিষয়ে এই অধ্যাপক বলেন, সংসদ সদস্য হওয়ার বয়স বর্তমানে ২৫ আছে। ২৩ বছর বয়সে একজনের পড়াশোনাই তো সঠিকভাবে শেষ হয় না অনার্স, মাস্টার্স। তো এটি করার মাধ্যমে তরুণদের পড়াশোনার জায়গা থেকে নিরুৎসাহিত করা হবে। ২৩ বছর বয়সের একজন যুবকের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিচক্ষণতা থাকে বলে আমার মনে হয় না। তারপরও ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ এবং প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৫ যেটি আছে, সেটিই সঠিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত