Ajker Patrika

সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ মারা গেছেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ২৮
সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ মারা গেছেন। আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের অভিজাত চট্টগ্রাম ক্লাবের আবাসিক কক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, এম হারুন-অর-রশীদ গতকাল রাতে ক্লাবের গেস্টহাউসের একটি কক্ষে একাই ছিলেন। আজ সকাল পর্যন্ত তাঁর কক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় ক্লাবের কর্মীরা বিচলিত হন। দুপুর ১২টার পর পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কক্ষের তালা ভেঙে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, কক্ষের মধ্যেই রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

হারুন-অর-রশীদ ছিলেন ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট। ২০০০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ছিলেন তিনি। ডেসটিনির আর্থিক কেলেঙ্কারির একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রামে আসেন। চট্টগ্রাম ক্লাব গেস্টহাউসের ৩০৮ নম্বর কক্ষে তিনি উঠেছিলেন।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম আজ দুপুরে জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দল চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়া হারুন-অর-রশীদের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়।

২০০০ সালের ডিসেম্বরে সেনাপ্রধান হন হারুন-অর-রশীদ। ২০০২ সালের জুনে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাঁকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও দিয়েছিল।

সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাবেক মহাসচিব হারুন-অর-রশীদ ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন ২০০৬ সালে।

কিন্তু জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠলে ২০১২ সালে হারুনকে কারাগারে যেতে হয়। পরে ‘স্বাস্থ্য ও সামাজিক অবস্থা’ বিবেচনায় তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ডেসটিনির গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের এক মামলায় ২০২২ সালের ১২ মে হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

সাবেক সেনাশাসক এইচ এম এরশাদের পর হারুন-অর-রশীদই প্রথম সাবেক সেনাপ্রধান, যাঁকে কোনো মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...