Ajker Patrika

গুলশানের সেই ফ্ল্যাট এখনো টিউলিপ সিদ্দিকের নামে, ডেইলি মেইলের দাবি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ৩৮
গুলশানের সেই ফ্লাট ভবনের নাম ‘সিদ্দিকস’, যা টিউলিপের বাবার পারিবারিক নাম
গুলশানের সেই ফ্লাট ভবনের নাম ‘সিদ্দিকস’, যা টিউলিপের বাবার পারিবারিক নাম

শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকার গুলশানের ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে অসত্য তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে ডেইলি মেইল। ওই ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। তাঁর দাবি, এমপি হওয়ার পরপরই তিনি ওই বাসা ছোট বোনের কাছে হস্তান্তর করেন।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ ডেইলি মেইলকে বলেছেন, ২০০২ সালে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসেবে তিনি ওই ফ্ল্যাট পান। ২০১৫ সালের মে মাসে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফ্ল্যাটটি তিনি ‘বৈধভাবে’ বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর কাছে হস্তান্তর করেন।

এমপি হিসেবে পার্লামেন্টে দেওয়া টিউলিপের সম্পদের হিসাবে বলা হয়, পরিবারের একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ওই সম্পত্তির মালিকানায় ছিলেন টিউলিপ। জুলাই মাসেই তা হস্তান্তর করার কথা বলা হয়েছে সেখানে।

২০১৫ সালের ৯ জুন টিউলিপ ‘হেবা’র মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা রূপন্তীকে দেন। সেখানে দাতা হিসেবে রিজওয়ানা সিদ্দিক (টিউলিপ সিদ্দিক); গ্রহীতা ছিলেন আজমিনা সিদ্দিক। দলিলে বলা হয়, ‘ভালোবাসা ও স্নেহ’ থেকে বোনকে সম্পত্তি হেবা দিতে চান তিনি।

দলিল অনুযায়ী, ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় কেনা গুলশানের ফ্ল্যাটটি আজমিনা সিদ্দিককে দেওয়া হয়। দলিলে ফ্ল্যাটের সম্পূর্ণ মালিকানা, স্বত্ব, অধিকার এবং একটি পার্কিং স্পেস হস্তান্তরের কথা বলা রয়েছে।

দলিল অনুযায়ী ফ্ল্যাটের অবস্থান, গুলশান রেসিডেনশিয়াল মডেল টাউনের ১১ নম্বর প্লটে। এটি ভবনের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের একটি ফ্ল্যাট। দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে দলিল সম্পন্ন হয়।

তবে ডেইলি মেইল দাবি করছে, ঢাকার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান চালিয়ে তারা ভিন্ন তথ্য পেয়েছে। গত সপ্তাহে সেখানে সংরক্ষিত নথি তাদের প্রতিবেদক দেখেছেন। সেখানে টিউলিপকে এখনো ওই ফ্ল্যাটের মালিক, যা দুদকের অভিযোগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। গত ১০ মার্চ দুদক জানায়, গুলশানের ওই ফ্ল্যাট হস্তান্তরে টিউলিপ যে নোটারি ব্যবহার করেছেন, তদন্তে তা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।

সেই হেবা দলিলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের স্বাক্ষর রয়েছে। দুদককে দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি বলেছেন, টিউলিপের ফ্ল্যাট হস্তান্তরের হেবা দলিলটি তাঁর নোটারির নামে দেখানো হলেও স্বাক্ষর ‘তাঁর নয়’। হেবাদাতাকেও তিনি চেনেন না বলে দুদকের কাছে দাবি করেছেন।

বিশেষজ্ঞের বরাতে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেকর্ড করা না হলে ফ্ল্যাট বা সম্পত্তির হস্তান্তর বৈধ বলে গণ্য হয় না।

দুদকের দাবি, যেহেতু আইনজীবী অস্বীকার করেছেন এবং তাঁর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন, তাই হেবা দলিলটি ‘ভুয়া’।

খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

তবে টিউলিপের আইনজীবীর দাবি, যথানিয়মেই হেবা সম্পন্ন হয়। যেহেতু ফ্ল্যাটের ভাড়া তাঁর বোনই পেতেন। দুদকের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

আইনজীবী পল থুয়েট ডেইলি মেইলকে বলেন, এ ক্ষেত্রে হেবা দলিলই যথেষ্ট বলে বাংলাদেশি আইন বিশেষজ্ঞ তাঁকে জানিয়েছেন। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের যে নথির কথা বলা হচ্ছে, তা ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’। টিউলিপ সিদ্দিক পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছেন—এমন দাবি ‘অসত্য ও অযৌক্তিক’।

গত বছর আগস্টে গণবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ব্রিটেনে তাঁর ভাগনির ‘উপহারের’ ফ্ল্যাট নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা শুরু হয়। হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে সাত লাখ পাউন্ড দামের ফ্ল্যাট টিউলিপ সিদ্দিক ‘উপহার’ পান বলে খবর বের হয়। বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ।

এর আগে ২০২২ সালে ডেইলি মেইলের কাছে টিউলিপ দাবি করেন, তাঁর বাবা-মা ওই ফ্ল্যাট কিনে তাঁকে দিয়েছেন। তবে পরে স্যার লরি ম্যাগনাসের তদন্তে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিলেন।

এদিকে গত সপ্তাহে এক এক্স পোস্টে টিউলিপ দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুদকের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে দুদক ‘হয়রানিমূলক’ প্রচার চালাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

ওই পোস্টে টিউলিপ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের ঐতিহ্য আছে এখানে। তাদের যুক্তিসংগত যেকোনো প্রশ্নের জবাব আমি খুশিমনে দেব। কিন্তু আমাকে নোংরা রাজনীতিতে টেনে নামানোর চেষ্টায় জড়াব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি ব্রিটিশ নাগরিক ও পার্লামেন্টের গর্বিত সদস্য হিসেবে আমার কাজের মর্যাদা নষ্ট করে—এমন বাজে হয়রানিমূলক কিছু করার সুযোগও তাদের দেব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এবার এক দিনে গ্রেপ্তার ১৩৯৮ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এবার এক দিনে গ্রেপ্তার ১৩৯৮ জন

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এর বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে এবার ১ হাজার ৩৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় বিভিন্ন ধরনের অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ‎

‎পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, গতকাল মঙ্গলবার থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এর অভিযানে সারা দেশে ১ হাজার ৩৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৫২৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে অবৈধ একটি পিস্তল, পাঁচটি দেশীয় অস্ত্র, একটি ওয়ান শুটারগান, একটি বন্দুক, তিন রাউন্ড গুলি, একটি ফায়ার করা গুলি, তিন রাউন্ড কার্তুজ, ১১টি দেশীয় অস্ত্র ও ১২টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ডিএমপি, আরএমপি, জিএমপি, ঢাকা রেঞ্জ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ, খুলনা রেঞ্জ ও রাজশাহী রেঞ্জ ইউনিটের অভিযানে এসব অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। বেশ কয়েকটি ইউনিট চেকপোস্ট চালায়।

এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২১ হাজার ৬৩০টি মোটরসাইকেল ও ১৯ হাজার ৯৪টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে একটি একনলা বন্ধুক, দুটি ধারালো ছুরি, একটি বার্মিজ চাকু, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ফায়ার করা গুলি উদ্ধার এবং ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। প্রথম দিন গ্রেপ্তার করা হয় ৪৭৬ জন, দ্বিতীয় দিন ৫৬৭, তৃতীয় দিন ৮২৩ ও চতুর্থ দিন ১ হাজার ৩৯৮ জন। গত চার দিনে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এ মোট গ্রেপ্তার ৩ হাজার ২৬৪ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এই সরকারের শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে ‘টানাপোড়েন আছে’— এটা বাস্তবতা, মেনে নেওয়াই ভালো: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৭
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: পিআইডি
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: পিআইডি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ‘টানাপোড়েন আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন এই সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। এটা মেনে নিয়েই ‘ভালো সম্পর্ক তৈরির’ চেষ্টা সরকার করছে বলেও তিনি জানান। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তৌহিদ হোসেন।

এর আগে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির’ কথা তুলে ধরা হয়।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা (দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে তলব) খুব অপ্রত্যাশিত কিছু না। সাধারণত এটা ঘটে। একজনকে ডাকলে আরেকজনকে ডাকা হয়।

তৌহিদ হোসেন বলেন, এই বাস্তবতাকে মেনে নেওয়াই ভালো যে—আসলে এই সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত (সম্পর্কে) টানাপোড়েন তো আছেই ভারতের সঙ্গে।

তবে বাস্তবতা মেনে নিয়েই বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে জানিয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তবে আমরা চাইলেই যে হবে, এমন কোনো কথা নেই। দুই পক্ষ থেকেই সম্পর্ককে এগোনোর চেষ্টা করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র: এবার গুলশান থানার মামলায় গ্রেপ্তার মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩১
মেজর সাদিক ও স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।
মেজর সাদিক ও স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।

মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

সুমাইয়ার স্বামী মেজর সাদিকুল হকের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কোর্ট-মার্শাল গঠন করেছে সেনাবাহিনী।

আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুমাইয়া জাফরিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক মামুন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সকালে গুলশান-১-এর জব্বার টাওয়ারের পাশে ৩০-৩৫ জন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ-মিছিল করেন। আসামিরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা দেশবিরোধী স্লোগান দেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ ওই দিনই গুলশান থানায় মামলা করে।

আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি ও স্থানীয়ভাবে তদন্তে জানা যায়, সুমাইয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অর্থ জোগানদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা। তিনি সক্রিয়ভাবে দেশবিরোধী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। আসামি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়। তিনি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের অর্থ জোগান দিয়ে থাকেন বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই আসামি সারা দেশের আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সুসংগঠিত করে দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পরে আদালত তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণের ঘটনায় ভাটারা থানায় করা মামলায় গত ৬ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৭ আগস্ট তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড হয়। রিমান্ড শেষে ১২ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৭৫ থেকে ২০০ পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: ইসি সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে বিভিন্ন পর্যায়ে ১৭৫ থেকে ২০০ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ বুধবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমাকে যেটা ধারণা দেওয়া হয়েছে—বিভিন্ন সময়ে ১৭৫ থেকে ২০০ জনের মতো আসবেন। এখন কে আগে আসবেন, তাঁদের সংখ্যা কত, তাঁরা কী কী দেখবেন, তাঁদের সঙ্গে পরবর্তীতে কেউ জয়েন করবেন কি না—এই সম্পর্কে কোনো প্রস্তাবনা এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।’

গত সোমবার চুক্তি হয়েছে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে একটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তির আওতায় আমরা তাঁদের ফ্যাসিলিটিজ প্রোভাইড করব। তাঁদের যাতায়াত, চলাফেরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে তাঁদের লোকাল প্রটোকল কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানতে হবে।’

এখন পর্যন্ত ইইউ ও তুরস্ক থেকে পর্যবেক্ষক দল আসবে নিশ্চিত হয়েছে বলে জানান সচিব।

প্রার্থীর নিরাপত্তায় অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন অনুমতি নিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে কি না—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় এটা বলেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে করতে হবে। তাঁরা ভালো মনে করেছেন এবং আমরা সবাই এ বিষয়ে একমত।’

কীভাবে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব—এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্নটা করলে বোধ হয় আমার জন্য ভালো হয়। আমার সঙ্গে উনার এ ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি। কাজেই, আমি এর ব্যাখ্যা দিতে গেলে অপব্যাখ্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যেটা আমি করতে চাই না।’

নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হতে পারে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এটার ব্যাপারেও আমি কোনো মন্তব্য করব না। নিরাপত্তার বিষয়টা কখনো ভীতি হয়? আমি আপনাকে পাল্টা প্রশ্ন করি। নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত করলে আবার ভীতি সঞ্চার হবে, এটা কোনো কথা হতে পারে? এটি তো সবারই চেষ্টা করা উচিত।’

আখতার আহমেদ আরও বলেন, বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টা যখন প্রাসঙ্গিক হবে, তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত