Ajker Patrika

কিছু চক্র বাংলাদেশ ও তুরস্কের ভালো সম্পর্ক দেখতে চায় না: তুরস্কের রাষ্ট্রদূত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
কিছু চক্র বাংলাদেশ ও তুরস্কের ভালো সম্পর্ক দেখতে চায় না: তুরস্কের রাষ্ট্রদূত

কিছু চক্র রয়েছে বিভিন্ন স্বার্থে তারা বাংলাদেশ ও তুরস্কের ভালো সম্পর্ক দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান। তিনি জানান যে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের রায় নিয়ে সে সময়ে দুই দেশের সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
 
বুধবার বিকেলে তুরস্ক দূতাবাসে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান। কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় ঢাকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ওসমান তুরান দুই দেশের সম্পর্ক, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বাণিজ্য সম্ভাবনা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
 
জামায়াত ইসলাম নিয়ে তুরস্কের অবস্থান জানতে চাইলে মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, বাংলাদেশে যতক্ষণ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল বৈধ, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আলোচনা করে থাকে কূটনীতিকেরা। তবে বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক দল নিয়ে তুরস্কের কোন অবস্থান নেই। তুরস্কের অবস্থান বাংলাদেশ ও তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে। এটি বাংলাদেশের বিষয় তার দেশের কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কি রকম আচরণ করবে। আর বাংলাদেশের সেই অবস্থানকে তুরস্ক সম্মান করে। তবে এর অর্থ এই নয় যে কোন দেশ তার মতামত প্রকাশ করতে পারবে না।
 
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের যুদ্ধাপরাধীদের রায় নিয়ে তুরস্কের নেওয়া তখনকার ও বর্তমান অবস্থান জানতে চাইলে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তুরস্কের ও বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কোন রাজনৈতিক পরিস্থিতি এর পরিবর্তন করতে পারবে না। সেই সময়টিতে যা হয়েছে তার ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য কখনো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ছিল না। তুরস্ক বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতি যত্নশীল। কিন্তু বন্ধু হিসেবে পুনবিবেচনার জন্য কিছু বলতে পারে। এটি ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে নয়। বরং সৎ উদ্দেশ্যে মতামত দিয়েছিল।’
 
তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, মৃত্যুদণ্ডের বিশ্বাস করে না তুরস্ক। তুরস্কে মৃত্যুদণ্ড নেই। কারণ মৃত্যুদণ্ড সমাধানের পরিবর্তে সমস্যা তৈরি করে। কিন্তু এটি বাংলাদেশের বিষয় তার দেশের আইন কীভাবে চলবে। কিন্তু বন্ধ হিসেবে কিছু সময়ে আমাদের মধ্যেও মতানৈক্য হয়। কিছু সময়ে বিষয়গুলোকে রাজনৈতিক কারণে পরিস্থিতির বাইরে গিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়।
 
মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, ২০১৬ সালে যখন তুরস্কে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে। তখন বাংলাদেশই সর্বপ্রথম তুরস্কের সরকারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিল। সে সময়ে তুরস্কের অন্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলো সংহতি প্রকাশ করেনি। আর বাংলাদেশে যখন রোহিঙ্গারা চলে আসে তখন তুরস্ক বাংলাদেশের প্রতি প্রথম সংহতি জানিয়েছিল। এটিই প্রমাণ করে দুই দেশের সম্পর্ক কতটা মজবুত। অতীতে কিছু বিষয়ে মতানৈক্য হয়েছে, যা ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা ভালো বন্ধু। তুরস্ক যা করে বা যা বলে তা বাংলাদেশের ভালোর জন্য করে বা বলে। বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। তুরস্ক বাংলাদেশের সঙ্গে খারাপ করছে, এভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না। 

প্রারম্ভিক বক্তব্যে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার রাজনৈতিক সম্পর্কে আশানুরূপ পর্যায়ে নেই বলে মন্তব্য করেছেন মোস্তফা ওসমান তুরান। তার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয় কেন দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক আশানুরূপ পর্যায়ে নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সফর প্রয়োজন। যখন আমাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর হবে। তখন দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভালো হবে। দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে ভালো হচ্ছে।
 
তুরস্কে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের চেষ্টা ও রোহিঙ্গার সময়ে দুই দেশ একে অপরের প্রতি সংহতি জানানোর কারণে কি সম্পর্ক আবার নতুন মোড় নিয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই, এ কারণে সম্পর্ক নতুন মোড় নিয়েছে।
 
জামায়াত নিয়ে তুরস্ক ও বাংলাদেশের মাঝে ভুল ব্যাখ্যা কে দিয়েছিল? এর উত্তরে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, আমরা জানতাম কি হচ্ছে। ফলে এখানে আমাদের দ্বারা ভুল ব্যাখ্যা করা হয়নি। আর বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়ে সব জানে। কিছু চক্র রয়েছে তারা বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে ভালো সম্পর্ক দেখতে চায় না। যখন সুযোগ এসেছে, তখন তারা (চক্র) সম্পর্ককে খারাপের দিকে নিয়ে গেছে। আমরা সেই ফাঁদে পা দিইনি, এমনকি আগেও দিইনি।
 
চক্র বলতে কি বোঝাতে চাইছেন জানতে চাইলে মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, এদের নাম আমি জানাতে পারব না। বুঝতে হবে কিছু সময়ে বিভিন্ন চক্র বিভিন্ন স্বার্থে রাজনীতি নিয়ে রাজনীতি করে। বাকিটা আপনারা বুঝে নেন। 

প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্ক প্রযুক্তির হস্তান্তর করবে কি না? এর উত্তরে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, গত ১০ / ১৫ বছরে তুরস্ক প্রতিরক্ষা খাতে বেশ এগিয়ে গেছে। আর এর মূল কারণ হচ্ছে যাদের সঙ্গেই আমরা প্রতিরক্ষায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক করেছি, তাদের সঙ্গে যৌথ উৎপাদনে গিয়েছি। প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্ক এখন ৭০ শতাংশ স্বনির্ভর হয়েছে। একই ভাবে বাংলাদেশকেও বাহিনীগুলোর জন্য জাহাজ তৈরিতে যৌথ উৎপাদনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেখানে শুধু প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য নয়, বাণিজ্যিক ভাবে চলাচলের জন্যও জাহাজ তৈরি করা যাবে। আর বাংলাদেশকে আমরা যে সমরাস্ত্র বিক্রি করব না কেন, তার সঙ্গে এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যা দুই দেশের রাজনৈতিক পর্যায়ের সুসম্পর্কের বার্তা দেয়।
 
অস্ত্র বিক্রি করলে এ ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ভারসাম্য বাংলাদেশ কিভাবে বজায় রাখবে? প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা ওসমান বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে মিসাইল বিক্রি করেছে তুরস্ক। কিন্তু তা দুই দেশের বাণিজ্যে প্রতিফলন হবে না। এটি নিয়মিত পণ্য নয়। বাংলাদেশ ও তুরস্কের বাণিজ্য দুই বছর আগেও প্রায় ৮৫ কোটি ডলারের মত ছিল। তা বর্তমানে করোনা থাকার পরও ১২০ কোটির ওপর দিয়েছে। আগামী তিন বছরে বাণিজ্য ৩০০ কোটিতে নেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশের বিশ্বমানের ওষুধ, তথ্য ও প্রযুক্তি, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। যার রপ্তানি তুরস্কে বাড়িয়ে বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে পারে। 

কি ধরনের সমরাস্ত্র বাংলাদেশকে বিক্রি করছে তুরস্ক? এর উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, এর তালিকা এভাবে দেওয়া যাবে না। তবে এটি বলতে চাই যে বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা খাতের সমাধান দিতে চায় তুরস্ক। চলতি মাসের শেষ দিকে তুরস্কের নৌবাহিনীর প্রধান বাংলাদেশ সফরে আসছে। এ সময়ে বাহিনীর জন্য জাহাজ তৈরি নিয়ে আলোচনা হবে। 

ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল নিয়ে তুরস্কের অবস্থান জানতে চাইলে মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, এ অঞ্চলকে ঘিরে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এ প্রতিযোগিতা আগে ইউরোপকে নিয়ে ছিল। যা পরিবর্তন হয়ে এদিকে এসেছে। মূলত চীনের উল্লেখযোগ্য উত্থানের কারণে এ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। তবে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে বাংলাদেশ ও তুরস্ক কোন পক্ষ না নিয়ে কাজ করছে। বরং তুরস্ক এশিয়ার জন্য নতুন নীতি নিয়েছে। আর সেই নীতিতে তুরস্কের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ।
 
তুরস্কের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফর নিয়ে প্রশ্ন করলে রাষ্ট্রদূত বলেন, তুরস্কের রাষ্ট্রপতি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন। করোনা না থাকলে এত দিনে এ সফরটি হয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মার্চে তাকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। আর সে দাওয়াত এখন বলবৎ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি এ. কে. আজাদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম সকল গোষ্ঠী ও মতের ঊর্ধ্বে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও দলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবারও বাড়ল পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়সীমা শেষবারের মতো বাড়িয়ে ৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইসি জানায়, আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ১০ লাখ ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।

এর আগে, ২৪ ডিসেম্বর ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল, তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর এক দিন আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। তিনি যে তিনটি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন, সেগুলোতে নতুন করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল সোমবার ছিল নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার পক্ষে বগুড়া–৭, দিনাজপুর–৩ ও ফেনী–১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এই তিন আসনেই বিএনপির পক্ষ থেকে একজন করে ‘বিকল্প প্রার্থী’ রাখা হয়েছে, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়া শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই প্রয়াণের পর প্রশ্ন উঠেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ওই তিন আসনে নতুন করে নির্বাচনের সময়সূচি বা তফসিল ঘোষণা করতে হবে কি না।

জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা আছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোনো ‘বৈধভাবে মনোনীত’ প্রার্থীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট আসনে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হয়। তবে বর্তমান ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন বলে মনে করছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবদুর রহমানেল মাছউদ গণমাধ্যমকে জানান, মনোনয়নপত্র জমা দিলেই কেউ বৈধ প্রার্থী হয়ে যান না। বাছাইপ্রক্রিয়ায় টিকে যাওয়ার পর চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃত হন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, ফলে আইনিভাবে তিনি এখনো ‘বৈধ প্রার্থী’ হিসেবে বিবেচিত হননি। তাঁর মৃত্যুর কারণে সংশ্লিষ্ট তিন আসনে মনোনয়নপত্রটি স্থগিত থাকবে।

ইসি কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু ওই তিনটি আসনেই বিএনপির বিকল্প প্রার্থী রয়েছে, তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। প্রতীক বরাদ্দের আগে দল থেকে যাঁর নামে চিঠি দেওয়া হবে, তিনিই দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হবেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী তফসিলে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ বা প্রয়োজন নেই। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ওই আসনগুলোতে বাছাই ও ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির বিকল্প প্রার্থীরাই এখন ওই আসনগুলোতে দলের হাল ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে শেখ হাসিনার দায় আছে: আসিফ নজরুল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৬
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা প্রহসনমূলক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ব্যক্তিগতভাবে তিনি করেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের দায় রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উনাকে একটা প্রহসনমূলক রায়ে জেলখানায় পাঠিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়াকে যে মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এটা যে প্রহসনের একটা রায় ছিল, এটা যে একটা সম্পূর্ণ সাজানো রায় ছিল, এটা আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল ও রিভিউয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের রায়ের মধ্যে বারবার বলা হয়েছে যে, বেগম জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ রংলি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জিঘাংসাপ্রসূতভাবে উনাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘উনাকে জেলখানায় বিভিন্ন সময় যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, উনাকে আমরা হয়তো এত তাড়াতাড়ি হারাতাম না, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বেগম জিয়ার এই মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা এবং উনার যে সরকার আছে, অবশ্যই তাঁর দায় রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত