Ajker Patrika

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতদের পুনর্বাসনে হচ্ছে অধ্যাদেশ

  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরকে অধ্যাদেশের আওতায় আনা হবে।
  • জুলাই থেকে মাসিক ভাতা বিতরণ শুরু।
  • পরিবর্তন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা।
  • আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ ভোটার ও যোগাযোগ বিবেচনায়।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ১৬: ১০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সুবিধা প্রদান এবং আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে অন্তর্বর্তী সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে অধ্যাদেশ হচ্ছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরকে এই আইনের আওতায় আনা হবে। এই অধিদপ্তরের মাধ্যমেই শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সুবিধা, আহত ব্যক্তিদের জন্য সঞ্চয়পত্র ক্রয় ও মাসে মাসে ভাতা দেওয়া, তাঁদের দেশে-বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তবে সরকারি চাকরিতে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে অধ্যাদেশের খসড়ায় কিছু বলা হয়নি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে একটি নীতিমালার খসড়া করেছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু ওই খসড়া অনুমোদন না দিয়ে আইনি কাঠামোর মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানে হতাহত ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে তড়িঘড়ি করে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ছাত্র-জনতার কল্যাণ ও পুনর্বাসন’ অধ্যাদেশের খসড়া করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটিতে গতকাল রোববার খসড়াটি পর্যালোচনা করা হয়েছে। অনুমোদনের জন্য শিগগিরই এটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।

অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণ, নিহতদের পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন এবং গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করা হবে। যদিও গত ১২ এপ্রিল এই অধিদপ্তর গঠন করেছে সরকার।

গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের পাশাপাশি আহতদেরও ধরনভেদে কীভাবে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে অধ্যাদেশের খসড়ায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আহতদের দেশে-বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টিও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের পরিবার ও আহতদের সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া এবং মাসে মাসে ভাতা দেওয়ার বিষয়গুলোও অধ্যাদেশে রাখা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল নীতিমালার মাধ্যমেই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, অভ্যুত্থানে হতাহতদের সুযোগ-সুবিধা যাতে বন্ধ করতে না পারে, সে জন্য এসব বিষয়কে আইনি কাঠামোতে আনতে নতুন অধ্যাদেশ করার সিদ্ধান্ত হয়।

গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদের সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে অধ্যাদেশের খসড়ায় কিছু বলা হয়নি। এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, অধ্যাদেশে তাঁদের পুনর্বাসনের কথা বলা আছে। কীভাবে তা করা হবে, সরকার সে বিষয়ে আলাদা গাইডলাইন জারি করতে পারে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সহজেই তাঁদের পুনর্বাসন করা যাবে। তবে এ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গণ-অভ্যুত্থানে প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে ৩০ লাখ এবং চার শ্রেণির আহতদের ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া শেষ হলে আগামী জুলাই থেকে তাঁদের মাসিক ভাতা দেওয়া শুরু হবে।

গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম হলে ওই পরিবারকে এবং অতিগুরুতর আহত ব্যক্তিদের মাসে অর্থসহায়তা দেওয়া হবে। এর বাইরে শহীদ পরিবারের সন্তানদের শিক্ষাসহায়তা এবং আহত ব্যক্তিদের সারাজীবন বিনা মূল্যে চিকিৎসা ছাড়াও শিক্ষাগত যোগ্যতা ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী কর্মসংস্থান এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভ্যুত্থানে হতাহতদের যত ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে এবং তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়গুলোকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে নতুন অধ্যাদেশ করা হচ্ছে।

বদলে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা

মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা বদলাতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার। এই সংজ্ঞা বদলে গেলে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামও বাদ পড়তে পারে। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে যাঁরা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি, তাঁদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগী হিসেবে রাখা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আগামীকাল মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উত্থাপনের কথা রয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধার বর্তমান সংজ্ঞায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি এমন আট ধরনের ব্যক্তি ও পেশাজীবীর বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া আছে। নতুন সংজ্ঞায় যাঁরা বিদেশে থেকে যুদ্ধের জনমত গঠন করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত; মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যাঁরা পরবর্তী সময়ে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলা বেতর কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড়কে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে রাখা হয়েছে।

খসড়ায় মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞা থেকেও শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষায় হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’

ভোটার, যোগাযোগ সুবিধা দেখে সীমানা পুনর্নির্ধারণ

জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার। আগামীকালের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ অনুমোদনের জন্য তোলার কথা রয়েছে।

খসড়া অনুযায়ী, জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যা, ভৌগোলিক ও জাতিগত বৈশিষ্ট্য এবং যোগাযোগ সুবিধা দেখে সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তবে ইউনিয়ন এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার ওয়ার্ডকে কোনোভাবেই ভাগ করা হবে না।

২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য এ টি এম শামসুল হুদার কমিশন শতাধিক নির্বাচনী এলাকার সীমানায় পরিবর্তন আনে। এরপর কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ কমিশন দশম সংসদ নির্বাচনে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনে। কে এম নূরুল হুদা কমিশন ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৫টি আসনে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কাজী হাবিবুল আউয়ালের কমিশন ১২টি আসনের সীমানায় সামান্য পরিবর্তন আনে। তার আগে ১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালে ৩৩টি নির্বাচনী এলাকার সীমানায় পরিবর্তন করা হয়।

কৃষিপণ্য হচ্ছে তুলা

তুলার উৎপাদন বাড়াতে দেশে উৎপাদিত তুলাকে কৃষিপণ্যের স্বীকৃতি দিচ্ছে সরকার। মঙ্গলবারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দেশে উৎপাদিত আঁশ তুলাকে কৃষিপণ্য ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করবে কৃষি মন্ত্রণালয়।

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশে ২ লাখ হেক্টর জমিতে তুলা উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এতে দেশের চাহিদার ২০ শতাংশ তুলা উৎপাদন সম্ভব হবে। এ জন্য সরকার খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত না করে চরাঞ্চল, বরেন্দ্র এলাকা, পার্বত্য এলাকা ও দেশের বিভিন্ন এলাকার ফলবাগানকে তুলা চাষের আওতায় আনতে চায়।

তুলা চাষের আওতা বাড়াতে গেলে চাষিদের সুবিধা দিতে হবে। এ জন্যই তুলাকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। তুলাকে কৃষিপণ্য ঘোষণা করা হলে তুলা উৎপাদনকারীদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিতে পারবে সরকার। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ মার্চ পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বাংলাদেশ এনার্জি পোর্ট লিমিটেড নামক কোম্পানি গঠনের বিষয়ে গঠিত কমিটিসহ কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব বাতিলের বিষয়টি ওঠার কথা রয়েছে। এ ছাড়া প্রত্নসম্পদ অধ্যাদেশ, বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং জাতীয় যুব উন্নয়ন নীতিমালা, জাতীয় জীন ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালার খসড়াও অনুমোদনের জন্য উত্থাপনের কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার শোক বইয়ে স্বাক্ষর করতে মানুষের ঢল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের আবহ বিরাজ করছে। তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট নাগরিক ও সর্বস্তরের জনগণ।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে খোলা হয় শোক বই। এর পর থেকে আসতে থাকেন দলের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আজ রাতে শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তাঁরা রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শোক প্রকাশ করেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।

শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শোক বইয়ে স্বাক্ষর করে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন।

শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত
শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও শোক জানানো হয়েছে। দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজ সন্ধ্যায় শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

খালেদা জিয়ার প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে শোক বইটি উন্মুক্ত রয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিত্ব ও সর্বস্তরের মানুষ স্বাক্ষর অব্যাহত রেখেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে চিরবিদায় জানাতে আসবেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দ শর্মা। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দ শর্মা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় জানাজায় অংশ নেবেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দ শর্মা। আগামীকাল বুধবারের জানাজায় অংশগ্রহণ ও শ্রদ্ধা জানাতে আজ মঙ্গলবারই তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়েছে।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সফর সাবেক নেত্রীর প্রতি নেপালের গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁর তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বকালে নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের অবদানকে সম্মান জানানোর প্রতিফলন।

সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা থাকবেন। জানাজা সম্পন্ন হওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি কাঠমান্ডু ফিরবেন।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সফরকে নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং কূটনৈতিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেও উল্লেখ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় নারীদের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫০
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় নারীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে তাঁরা সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশে জানাজায় অংশ নিতে পারেন।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সরকার। এই প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো ধরনের ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে আগত সবার সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত