Ajker Patrika

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ৭ আন্তর্জাতিক সংগঠন, ৫ সুপারিশ 

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ৪৫
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ৭ আন্তর্জাতিক সংগঠন, ৫ সুপারিশ 

আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি ও নাগরিক অধিকার সংকোচনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। মার্কিন মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস স্থানীয় সময় আজ বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এতে সংগঠনগুলো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের কাছে পাঁচটি সুপারিশও করেছে।

রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ছাড়াও অন্য সংগঠনগুলো হলো—ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট টর্চার কনসোর্টিয়াম, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স, অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক, ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স ও এশিয়ান ফোরাম ফল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষের দিক থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন করতে সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। এই ক্র্যাকডাউনের ফলে এক সাংবাদিকসহ ১৭ জন নিহত হয়েছে এবং ৮ হাজার ২৪৯ জন বিরোধী নেতা আহত হয়েছে। বিবৃতিতে আরও কিছু এমন ঘটনার উল্লেখ করে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনা, সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ ও স্বাধীন তদন্তের ওপর তাগিদ দেওয়া হয়। 

বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর যেসব কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার ও বল প্রয়োগ করেন, তা মোকাবিলায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার প্রসঙ্গে বলা হয়—এ ধরনের হাতিয়ারের অসম ব্যবহার কেবল নাগরিকদের মৌলিক অধিকারই লঙ্ঘন করে না, বরং উত্তেজনা উসকে দেয়। এমন পরিবেশ তৈরি করে, যা ভিন্নমত, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে। এতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে জাতিসংঘের মৌলিক নীতি ও মানবাধিকার নির্দেশিকা মেনে চলার ব্যাপারেও আহ্বান জানানো হয়। 

সংস্থাগুলোর যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত অক্টোবর মাসের শেষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক আকারে ধরপাকড় চালিয়ে ২০ হাজারেরও বেশি বিরোধী নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ৮৩৭টি বানোয়াট মামলা রয়েছে এবং এসবের বিপরীতে তাদের জামিন বারবার প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। এসব বন্দীকে শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। 
 
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য বিরোধী প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য আদালতের কার্যকাল বাড়িয়ে বিচারের মাধ্যমে প্রধান বিরোধী নেতাদের ব্যাপকভাবে দোষী সাব্যস্ত করতে সরকার বিচার বিভাগকে পদ্ধতিগতভাবে ব্যবহার করছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই যৌথ বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ব্যাপক আটক ও দোষী সাব্যস্ত করার বিষয়টি কেবল মত প্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার, স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত অধিকার ও ন্যায়বিচারের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে না; বরং অসংখ্য পরিবারকে দুর্দশায় ফেলে দেয়, কারণ আটকেরা প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। 

আন্তর্জাতিক এই সাত সংগঠন তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশে সহিংসতা ও নির্বিচারে আটক দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার অবস্থার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। এই অপব্যবহার একটি সামাজিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয়েছে, যেখানে জনগণ আগামী জানুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করছে। গণতন্ত্রের মৌলিক নীতিগুলোকে সমুন্নত রাখার পরিবর্তে বাংলাদেশ সরকারের সহিংস ও দমনমূলক প্রতিক্রিয়া ‘নাগরিকদের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ ও চরম নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি করেছে।’ 

বাংলাদেশের খসড়া ডেটা সুরক্ষা আইনকেও আরেকটি উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে উল্লিখিত সংগঠনগুলো। খসড়া এই আইন অনুসারে, ‘জাতীয় সুরক্ষা, কোনো ধরনের অপরাধ ঠেকানো বা শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে হলে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের ডেটা অ্যাকসেস করতে পরাবে। 

এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার ব্যাপক নজরদারির দিকে পরিচালিত করতে পারে। এটি রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণকারীদের এবং মানবাধিকার, বিশেষ করে গোপনীয়তার অধিকারের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ ও অ্যাকসেসের প্রয়োজন সেগুলোকে অবশ্যই স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা উচিত।’ 

আন্তর্জাতিক এই সংগঠনগুলো তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘একটি সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের যে সংগ্রাম, তার সমর্থনে আমরা তাদের পাশে আছি। আমরা দৃঢ়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে সহিংসতা, দমন-পীড়ন এবং ভয় দেখানো অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

সংগঠনগুলো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ সার্বিক অগ্রগতির লক্ষ্যে পাঁচটি সুপারিশ করেছে। প্রথমত, অবিলম্বে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করুন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, জানমালের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত অখণ্ডতার অধিকারগুলো সম্মান ও সুরক্ষিত করা নিশ্চিত করুন। দ্বিতীয়ত, অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার করে নির্বিচারে আটক সব কর্মী ও বিরোধী দলের সদস্যদের মুক্তি দিন এবং সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করুন। 

তৃতীয় সুপারিশে বলা হয়, মোটা দাগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করুন। বিশেষ করে মৃত্যু এবং নির্যাতনের অভিযোগে জড়িত মামলাগুলো আমলে নিন। চতুর্থ সুপারিশে ডেটা সুরক্ষা আইন প্রসঙ্গে বলা হয়, খসড়া ডেটা সুরক্ষা আইনের পুনর্মূল্যায়ন ও সংশোধন করুন, যাতে এটি নাগরিকদের গোপনীয়তা ও অধিকার রক্ষা করে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে একই কাতারে থাকে। পঞ্চম সুপারিশে বলা হয়, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার ও মৌলিক অধিকার রক্ষার পক্ষে সমর্থনের প্রতি আহ্বান জানাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৭
খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত