আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২১ মিনিট আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
১ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৫ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।
প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান
প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।
দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন
দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।
ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম
প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।
নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।
প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান
প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।
দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন
দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।
ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম
প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।
নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
১ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২১ মিনিট আগে
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।
আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।
আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।
আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।
আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২১ মিনিট আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
১ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।
এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।
এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২১ মিনিট আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
১ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
৩ ঘণ্টা আগে