Ajker Patrika

ঢাকার সরকারি ৯ হাসপাতালে ফাঁকা নেই আইসিইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২১, ১১: ৩৪
ঢাকার সরকারি ৯ হাসপাতালে ফাঁকা নেই আইসিইউ

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তিন দিনের মাথায় শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন মোবারক হোসেন (৫৮)। অবস্থা সংকটাপন্ন হলে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ পাঁচটি হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু মেলেনি একটি আইসিইউ। পরে মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।

মোবারক হোসেনের ছেলে ইয়াসির আরাফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ২৯ জুন আব্বার করোনা শনাক্ত হয়। আগে থেকে ডায়াবেটিস ছিল। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে একেবারে খারাপ হতে থাকে। পরে এক পরিচিতের মাধ্যমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিই। সেখান থেকে বলা হয় আইসিইউ নেই। পরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়েও একটা আইসিইউ পাইনি। তাই আব্বাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখান থেকেও আমাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে নিয়েছি।’

আইসিইউ না পেয়ে ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথের সঙ্গে কথা হলে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘রোগীদের অনেক চাপ থাকায় গত দুই সপ্তাহ ধরে আমাদের এই হাসপাতালে আইসিইউ খালি থাকছে না। তাই অনেকের আইসিইউ জরুরি হলেও ফেরত দিতে হচ্ছে, আমাদের কিছুই করার নেই। এখনো অনেকে জটিল অবস্থা নিয়ে আছেন, কিন্তু আইসিইউ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে সাধারণ শয্যা পর্যাপ্ত খালি আছে।’

এই হাসপাতালে কোভিড রোগীদের জন্য ৩৫০টি শয্যার ২১৩ টিতে রোগী আছে। তবে খালি নেই ২৪টি আইসিইউর কোনোটি।

হাসপাতালগুলোতে সেবার মান না বাড়ায় আক্রান্ত চিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছেনশুধু মুগদা নয়, রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল–২, মুগদা ৫০০ শয্যা হাসপাতাল, জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট, বিএসএমএমইউ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে খালি নেই কোনো আইসিইউ। কয়েকটি হাসপাতালে আইসিইউ জরুরি এমন রোগীর অপেক্ষায় থাকার সংখ্যাও অনেক। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী নিয়ে চলছে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নতুন করে ৪০ জন কোভিড রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে এখানে।

মুগদা হাসপাতালের ওয়ার্ডমাস্টার আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। একটা আইসিইউও ফাঁকা নেই। অনেকে জটিল অবস্থায়ও কিন্তু আইসিইউ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুলতানা শাহানা বানু আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আইসিইউর সংকট যে তীব্র আকার ধারণ করবে সেটা তো আমরা আগে থেকেই বলে আসছি। কিন্তু সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংক্রমণ ও মৃত্যু যেভাবে ঘটছে, তাতে নতুন করে বাংলাদেশেই করোনার নতুন ধরন তৈরি হবে। এর মধ্য দিয়ে আমরা তৃতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করতে পারি, যেখানে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া একেবারে অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।'

ঢামেকের এই অধ্যাপক বলেন, `হাসপাতালগুলোতে সেবার মান না বাড়ায় আক্রান্তরা চিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। অনেকে অক্সিজেন কিনে হাসপাতালের বারান্দায় সেবা নিচ্ছেন। পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হলে এ রকমটা হতে পারে? যে গতিতে সংক্রমণ ছুটছে, তাতে যেকোনো সময় ভারতের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।'

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে–নজির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ঢাকাসহ সারা দেশে আইসিইউর সংকট অপ্রত্যাশিত নয়, বরং অবধারিত। কারণ রোগী যত বাড়বে, আনুপাতিক হারে হাসপাতালে আগত রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে মৃত্যুও বাড়বে। এজন্য আমাদের প্রতিরোধের মাধ্যমে রোগীর সংখ্যা কমাতে হবে।'

সামনে কী পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধিক সংক্রমিত এলাকাগুলোতে জোরালো ব্যবস্থা নিতে না পারায় সেগুলো থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। আগে সংক্রমণের তীব্রতা ছিল ঢাকাকেন্দ্রিক, এখন গ্রাম পর্যায়ে। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে লকডাউন শুধু রাজধানীতে নয়, গ্রামেও কঠোরভাবে পালন জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, রাজধানীর ১৬টি সরকারি হাসপাতালে ৩৮৪টি আইসিইউ–সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত খালি ছিল মাত্র ১২৭টি। ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড–১৯ হাসপাতালেই ফাঁকা ১০২টি। এই হাসপাতালে আইসিইউর সংখ্যা ২১২। রোগীর চাপ আগের তুলনায় বেশি হওয়ায় ৩ হাজার ৫৫৭ শয্যার অর্ধেকই পূর্ণ রোগীতে।

যে গতিতে সংক্রমণ ছুটছে তাতে যেকোনো সময় ভারতের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারেএদিকে, ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। কয়েক দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হলে বাড়িতেই অক্সিজেন নিচ্ছিলেন পিরোজপুরের আক্তারুজ্জামান চান্নু (৬৫)। এই জেলায় আইসিইউ–সেবা নেই। দ্রুত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউ পেতে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় আনার চেষ্টা করেন স্বজনেরা। কিন্তু পথেই মারা যান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে সংক্রমণের হার উচ্চমুখী এমন ৩০ জেলা জরুরি চিকিৎসা ও রোগী ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে। এসব জেলার রোগীরা নিজ জেলায় চাহিদামতো সেবা পাচ্ছে না। আক্রান্তদের সঠিক ব্যবস্থাপনায়ও রাখা যাচ্ছে না। ফলে তাদের নিয়ে বিভাগীয় শহরে ভিড় করছেন স্বজনেরা।

সংক্রমণের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকায় সংকট দেখা দিয়েছে অধিকাংশ জরুরি চিকিৎসা উপকরণেরও। রাজধানীর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএমএসডি) অধিকাংশ জরুরি চিকিৎসা উপকরণের মজুত শেষ হয়েছে। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলো থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠালেও পূরণ করতে পারছে না অধিদপ্তর।

বর্তমানে সিএমএসডিতে হাই ফ্লো ন্যাজেল ক্যানোলা, কোভিড–১৯ টেস্টিং কিট, ভেন্টিলেটর, রেমডিসিভির ইনজেকশন ও ভেন্টিলেটর নেই। ৫ হাজারে নেমে এসেছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের মজুত। এ ছাড়া ৭০০ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ও আইসিইউর ১০০ শয্যা রয়েছে বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন করবেন না—বিদায়ী ভাষণে বিচারকদের প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।

প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’

বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা থাকলেও ভোট নিয়ে শঙ্কা দেখছে না ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’

সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’

সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’

দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’

প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন আশিক চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট হাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট হাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ

মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে ৫৪টি জাতীয় পতাকা উড়িয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ৫৪ জন প্যারাট্রুপার। এই দলে থাকবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন তিনি।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে। বিজয়ের দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় সকলকে দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানাই।’

এদিন একই পেজে দেওয়া আরেক পোস্টে বলা হয়, ‘এই বিজয় দিবসে চলে আসুন দলে দলে, এক অবিস্মরণীয় এয়ার শো দেখতে। বিজয়ের ৫৪তম বছরে, ৫৪ জন প্যারাট্রুপার, ৫৪টি জাতীয় পতাকা হাতে বিমান থেকে অবতরণ করবেন, গড়বেন বিশ্ব রেকর্ড। এয়ার শো উপভোগ করতে ব্যবহার করবেন আইডিবির উল্টো পাশের তালতলা গেট। গেট খোলা হবে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টায়। ১০টার মধ্যেই সবাইকে নির্ধারিত স্থানে সমবেত হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাই ডাইভিং করবেন। এটি হবে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ।

আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

এতে বলা হয়, এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা ও আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাঁদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন—সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত