Ajker Patrika

৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের গাড়ির সংকট

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ০০: ৫০
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: আজকের পত্রিকা

৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে টহল গাড়ি অন্যদের কাছ থেকে ধার করে চালাতে হচ্ছে, যা পরবর্তীতে অনৈতিক তদবিরের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাওয়ে প্রধান উপদষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এমনটি জানান চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ।

সভায় দেশের ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার, রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটনের কমিশনার ও ক্রাইম বিভাগের উপকমিশনাররা (ডিসি) উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রসচিব ও আইজিপিও উপস্থিত ছিলেন। সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবিদাওয়া শোনার পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ ও কঠোর হতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সভায় বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা বক্তব্য দেন। তাঁরা হলেন রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ফারজানা ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ এবং খুলনা মেট্রোপলিটনের কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার এবং আইজিপি বাহারুল আলম বক্তব্য দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পুলিশকে ৯ দফা নির্দেশনা দেন। তাঁর বক্তব্যের পর প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং উন্নতি করতে বক্তব্য দেন। প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দিয়ে চলে যাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গেও কিছুক্ষণ বৈঠক করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ সময় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার অনুরোধ করেন।

সভায় পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, পুলিশ সদস্য একটানা ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এজন্য তাঁরা কোনো ভাতা পান, খাওয়ার খরচ পান না। কখনো কখনো না খেয়েও দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ সদস্যরা। তাঁরা ক্লান্ত হয়ে যান। তাঁদের মনোবল ভেঙে যায়। তাই পুলিশ সদস্যদের টানা ডিউটির সময় খাওয়ার ভাতা চালুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এ ছাড়াও সভায় পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, দেশের সংকটকালেও কাজ করেছে পুলিশ। কিন্তু বিভিন্নভাবে তাঁরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য তাঁরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। আবাসন সংকট, সময়ঘণ্টা ও গাড়ি সংকট নিয়েও আলোচনা করেন কর্মকর্তারা।

সভায় রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ফারজানা ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, পুলিশ বিভিন্ন সংকটের মধ্যে দায়িত্ব পালন করে। এতে স্ট্রেসে পড়ে পুলিশ। মানসিক অসুস্থতায় ভোগে। কিন্তু তারা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না। পুলিশের বিশ্রামের প্রয়োজন; কিন্তু বিশ্রাম পাচ্ছে না।

পুলিশের আবাসন সংকট নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, পুলিশের তীব্র আবাসন সংকট রয়েছে। মোট পুলিশের ৫ শতাংশেরও কম আবাসন রয়েছে। কনস্টেবল, এএসআই ও এসআইদের আবাসন সংকট সমাধানের প্রয়োজন। ঢাকার আশপাশে তিনি আবাসনের ব্যবস্থার কথা বলেন। থানা পর্যায়ে পুলিশের জন্য কোনো আবাসন ব্যবস্থা নেই, থানা পর্যায়ে তিনি আবাসনের কথা বলেন।

নারী পুলিশ নিয়োগ বাড়ানো এবং পুলিশ সন্তানদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টারের দাবিও করেন তিনি।

পুলিশকে বিভিন্ন দল, সরকার ও ব্যক্তি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার অনুরোধ জানান।

খুলনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, পুলিশকে কাজ করতে দিতে হবে। পুলিশকে প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ পুলিশের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, বাহিনীর বদলি, পদোন্নতি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়মমাফিক হওয়া উচিত। তিনি পুলিশ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং আশা প্রকাশ করেন, সংস্কারের মাধ্যমে বাহিনীর কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খল হবে।

ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে টহল গাড়ি অন্যদের কাছ থেকে ধার করে চালাতে হচ্ছে, যা পরবর্তী সময়ে অনৈতিক তদবিরের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া, মামলা ও জিডির তদন্তের জন্য বরাদ্দ খরচ কমে গেছে এবং অজ্ঞাতনামা লাশের দাফন-কাফনের জন্য কোনো তহবিল পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

পুলিশের এসব দাবিদাওয়া সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকার পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তবে পুলিশের উচিত ভালো কাজের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করা। আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ সদস্যদের কোনো ছাত্রসংগঠন বা বিশেষ দলের প্রতি অনুগত না থেকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মনীতির প্রতি নিষ্ঠা রেখে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে তাঁদের প্রতি।

একই সভায় আইজিপি বাহারুল আলম পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হলে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করা দরকার। ওই কমিশনের অধীনে পুলিশ পরিচালিত হবে। কিন্তু পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে এ বিষয়টি আসেনি বলেও তিনি জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতাকারী এবং তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি পুলিশকে নয়টি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুজব ছড়িয়ে মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। প্রচলিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও কমিয়ে নিয়ে আসার জন‍্য কমিউনিটিভিত্তিক কমিউনিটি/সোশ্যাল মোবিলাইজেশন করা দরকার। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে করা মামলাগুলো বিশেষ মনিটরিং করতে হবে। অধীনস্থ পুলিশদের নজরদারিতে রাখতে হবে। মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসক, সশস্ত্র বাহিনী, র‍্যাব, আনসার, বিজিবি, কোস্ট গার্ডকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এখন র‍্যাপিড পাস রিচার্জ করা যাবে মোবাইল অ্যাপে

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোর র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র‍্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য র‍্যাপিড পাস অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে।

ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, এক মাস ধরে র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অ্যাপটি তৈরি করে ইতিমধ্যে গুগলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গুগল বিভিন্ন ধাপে অ্যাপটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী দুই–এক দিনের মধ্যে এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে।

অ্যাপটি ব্যবহারের নিয়ম

ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র‍্যাপিড পাস অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে যেসব গ্রাহক ইতিমধ্যে rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁরা একই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর ব্যবহারকারী ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত অ্যামাউন্ট সেট করে রিচার্জের জন্য প্রসেস দিতে পারবেন। এ সময় ব্যাংকের কার্ডের পাশাপাশি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমেও সহজে রিচার্জ করা যাবে।

অনলাইনে রিচার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর র‍্যাপিড পাস বা এমআরটি পাস কার্ডটি মেট্রো স্টেশনে থাকা এভিএমে (অ্যাড ভ্যালু মেশিন) ট্যাগ করলেই রিচার্জ করা অর্থ কার্ডে অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কার্ডে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করা হয়েছে—এসব বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে যদি ব্যবহারকারীর মোবাইলে নিয়ার–ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধা থাকে, তাহলে মোবাইলের নিচে র‍্যাপিড পাস কার্ড ধরলেই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখা যাবে।

ডিটিসিএ জানিয়েছে, র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জের সুবিধা নিশ্চিত করতে মেট্রোর ১৬টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি এভিএম বসানো হয়েছে। যাত্রীরা অনলাইনে রিচার্জ করার পর স্টেশনে থাকা এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সক্রিয় হয়ে যাবে।

ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ গ্রাহক র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, অর্থাৎ তাঁরা অনলাইনে রিচার্জ সুবিধা ব্যবহার করছেন।

ডিটিসিএ কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের সময় ও ঝামেলা কমাতেই অ্যাপের মাধ্যমে রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই অর্থ যোগ করা যাবে, ফলে যাতায়াত আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে র‍্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন রিচার্জ যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়বে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু করা হয়েছিল। সেই সময় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেলযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত