Ajker Patrika

বাংলাদেশে দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় এত বিশৃঙ্খলা হয় কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, ১১: ০৭
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় স্কুলভবনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উৎসুক জনতার ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় স্কুলভবনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উৎসুক জনতার ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে আকস্মিক কোনো দুর্যোগ বা দুর্ঘটনা ঘটলেই একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশেষ করে ঢাকার মতো জনবহুল এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের সময় এই বিশৃঙ্খলা বেশি দৃশ্যমান হয়। যানজট ও প্রশস্ত রাস্তা না থাকার কারণে প্রায়ই ফায়ার সার্ভিসের দলকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়। অনেক যুদ্ধ করে পৌঁছানোর পর পানি উৎস পেতে সমস্যা হয়। কোনো বড় শহরেই যথেষ্ট জলাশয় ও হাইড্রেন্ট নেই। রয়েছে সরঞ্জামের সংকটও।

ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক আর অগ্নিকাণ্ড, সড়ক দুর্ঘটনার মতো দুর্ঘটনা হোক তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার, ত্রাণ, রক্তদানের মতো কাজে হাত দিতে হয় স্থানীয় সাধারণ মানুষকেই। সাধারণ মানুষের অদক্ষতা ও পেশাদার বাহিনীর দেরিতে পৌঁছানোর কারণে অনেক সময়ই প্রাণহানি ন্যূনতম রাখা সম্ভব হয় না।

সেই সঙ্গে রয়েছে উৎসুক জনতা। সোশ্যাল মিডিয়াতে কনটেন্ট মনিটাইজেশন আসার পর এই প্রবণতা আরও বেড়ে গেছে। বিপদগ্রস্ত মানুষের মুখের সামনে মোবাইল ক্যামেরা ধরে ফুটেজ নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যায়। এতেও উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। এই ধরনের বিশৃঙ্খলা সামলানোর মতো যথেষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে মোতায়েন করাও সম্ভব হয় না।

সম্প্রতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার হৃদয়বিদারক ঘটনাটিতেও আমরা এমন দৃশ্য দেখেছি। বাংলাদেশে কেন যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই এমন বিশৃঙ্খলা দেখতে হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই প্রশ্ন অনেকে তুলেছেন। অথচ ‘হাডসনের মিরাকল’-এর মতো ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকাই, যেখানে সুসংগঠিত প্রস্তুতি ও দায়িত্বশীলতা কীভাবে বিপর্যয়কে সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারে তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

‘হাডসনের মিরাকল’: প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত

২০০৯ সালে নিউইয়র্কের লা গারডিয়া বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই একটি এয়ারবাস এ৩২০-এর দুটি ইঞ্জিন পাখির আঘাতে বিকল হয়ে যায়। ১৫৫ জন যাত্রী নিয়ে পাইলট ক্যাপ্টেন সালি সুলেনবার্গার নিউইয়র্কের হাডসন নদীর বরফশীতল পানিতে বিমানটি সফলভাবে অবতরণ করান। অবিশ্বাস্যভাবে, বিমানের প্রতিটি যাত্রী ও ক্রু বেঁচে যান। এই ঘটনাকে অনেকে অলৌকিক বললেও, পাইলট সালি নিজেই ব্যাখ্যা করেছিলেন যে এটি কোনো অলৌকিক ঘটনা ছিল না, বরং ছিল ‘দশকের পর দশক ধরে চলে আসা প্রস্তুতির ফলাফল’।

হাডসন নদীতে অবতরণের পর সব আরোহীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ছবি: উইকিপিডিয়া
হাডসন নদীতে অবতরণের পর সব আরোহীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ছবি: উইকিপিডিয়া

সালি ব্যাখ্যা করেন, তিনি এবং তাঁর কো-পাইলট জেফ্রি স্কাইলস প্রায় কোনো কথা না বলেই তাঁদের নিজ নিজ কাজ সুচারুভাবে করেছেন। কারণ তাঁরা একে অপরের দায়িত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। ইঞ্জিন বিকল হওয়া বা পানিতে অবতরণের জন্য তাঁদের একটি সুনির্দিষ্ট চেকলিস্ট ছিল, তাঁরা ঠিক সেই অনুযায়ী কাজ করেছেন। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি রুট নির্দেশ করে। যখন ‘ব্রেস ফর ইমপ্যাক্ট’ বা ‘এভাকুয়েট’-এর মতো নির্দেশনা দেওয়া হয়, তখন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা নিজেদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে দ্রুত কেবিন প্রস্তুত করেন এবং যাত্রীদের নিরাপদে বের করে আনেন। এমনকি নদীর ওপর নামার বিষয়টিও তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে বুঝে নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পরিবর্তন করেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, উদ্ধারকারী ফেরি বোট চালকেরা প্রতি মাসেই প্রশিক্ষণ নেন। বছরে একবার সিমুলেটর দিয়ে উদ্ধার অভিযান অনুশীলন করেন তাঁরা। বিমানটি হাডসন নদীতে অবতরণের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান তাঁরা। ফায়ারবোট, পুলিশ হেলিকপ্টার এবং শহরের হাসপাতালগুলো—সবাই প্রস্তুত ছিল। এমনকি অফ-ডিউটি চিকিৎসক, নার্সদেরও ডেকে আনা হয়েছিল। সালি জোর দিয়ে বলেন, তিনি এবং তাঁর কো-পাইলট কেবল তাঁদের কাজ করেছেন। কিন্তু ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট, ১৫০ জন যাত্রী, উদ্ধারকারী বোট এবং জল ও স্থল উভয় জায়গার ফার্স্ট রেসপন্ডাররা সবাই তাঁদের নির্ধারিত কাজ নিখুঁতভাবে করেছেন। এই সম্মিলিত ও নিখুঁত প্রস্তুতির ফলাফলই ছিল ‘মিরাকল’।

মাইলস্টোন স্কুলের ঘটনা

‘হাডসনের মিরাকল’-এর এই চিত্র, আর বাংলাদেশের মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনার ঘটনাটি মিলিয়ে দেখুন, আলাদা এক বাস্তবতা উঠে এসেছে। সেনাবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান স্কুল ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। এফোঁড়-ওফোঁড় করে যায় ভবন। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন ধরে যায়। শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ এক মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন করে দেয়।

এর পরের ঘটনাপ্রবাহ কেমন ছিল—উদ্ধারে অনেক সময় লেগেছে। আগুন আধপোড়া শিশু-কিশোরদের পাঁজাকোলা করে উদ্ধার করতে দেখা গেছে। সেখানে জরুরি চিকিৎসার কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। যদিও পরে ফায়ার সার্ভিস অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে, সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও করেছিল। শত শত উৎসুক জনতা উদ্ধারে হাত না লাগিয়ে ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃতদেহ গুম করার গুজব ছড়িয়েছে, এআই দিয়ে তৈরি অনেক ছবি ছড়ানো হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে শোডাউন করেছেন। চিকিৎসকের কোনো পরামর্শ ও আহ্বান ছাড়াই রক্তদাতাদের ভিড়ও সমস্যা তৈরি করেছে। হাসপাতালেও উৎসুক জনতা ভিড় দেখা গেছে। অথচ এই ধরনের দুর্ঘটনায় আহত ও দগ্ধদের নিবিড় ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসা জরুরি। অব্যবস্থাপনার কারণে সামান্য দেরিও একজনের জীবন কেড়ে নিতে পারে।

দুর্ঘটনা যেকোনো দেশেই ঘটতে পারে। কিন্তু আসল প্রশ্ন হলো—দুর্ঘটনার পর সমাজ ও রাষ্ট্র কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। কিছু দেশ প্রস্তুত থাকে, যাতে প্রাণহানি কমানো যায়, আর কিছু দেশে বিশৃঙ্খলা, অব্যবস্থা আর দায়িত্বহীনতার কারণে আরও বেশি ক্ষতি হয়।

পাইলট সালি বলেছিলেন, ‘১৫৫ জন যাত্রী নিয়ে হাডসনে বিমান নামানোর পরেও কোনো প্রাণহানি না হওয়া কোনো অলৌকিকতা ছিল না। এটা ছিল সিস্টেম, বছরের পর বছর ট্রেনিং, প্রস্তুতি আর দায়িত্বশীলতার ফলাফল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত