Ajker Patrika

মডেল মসজিদে আসবাব সরবরাহে অভিনব শর্ত

  • বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ফার্নিচার কেনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • সারা দেশের বিভাগীয় শহরে কমপক্ষে ১২টি শোরুম থাকার শর্ত।
  • সর্বশেষ ৩ বছরে ২৫০০ ফার্নিচার উৎপাদনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ১২: ৩৫
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি অর্থায়নে সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ প্রকল্পের কাজ কোথাও শেষ, আবার কোথাও চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে কেনা হবে ২০ পদের আসবাব। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে কাঠের তৈরি জানালা, মুর্দা বহনের খাটিয়া, কোরআন শরিফ রাখার রেহাল, টেবিল ও চেয়ার। কাঁঠাল বা সেগুন কাঠের তৈরি এসব আসবাব সরবরাহের দরপত্রে অংশ নিতে হলে পূরণ করতে হবে অভিনব নানা শর্ত। উদ্দেশ্য একটাই—যেন ২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কাজটি পছন্দের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পান।

প্রকল্পের একাধিক প্রকৌশলী এবং খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, ফার্নিচার সরবরাহের দরপত্রে অংশ নিতে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ফার্নিচার কেনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য শর্তের মধ্যে রয়েছে—সারা দেশের বিভাগীয় শহরে কমপক্ষে ১২টি শোরুম থাকতে হবে। প্রতি মাসে ১০০ কর্মীকে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেতন দেওয়া হয় এমন শিট থাকতে হবে। কাঠ সিজনিং ও কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। এ ছাড়া সর্বশেষ ৩ বছরে ২৫০০ ফার্নিচার উৎপাদন ও সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের।

মডেল মসজিদ প্রকল্প প্রস্তাবে যেসব ফার্নিচার রাখা হয়েছে, সেগুলো সরবরাহের জন্য এমন জটিল শর্ত থাকার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে মনে করেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকৌশলী। তাঁরা বলেন, মসজিদের জন্য ইতিপূর্বে যেসব আসবাব কেনা হয়েছে, সেখানে এমন জটিল বা অপ্রাসঙ্গিক শর্তগুলো ছিল না। ফলে অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে কেনাকাটা করা সম্ভব হয়েছে। এখানে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা বাংলাদেশে হাতে গোনা দু-তিনটি প্রতিষ্ঠান পূরণ করতে পারবে। তাই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, কোনো বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই এসব শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি পিপিআরও।

এ কাজের সঙ্গে জড়িত গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (কাঠের কারখানা) মো. ইশ্রাফিল শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আগে লোকাল ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাতাম। ইসলামিক ফাউন্ডেশন তা পছন্দ করছে না। তারাও ব্র্যান্ড চায়। তাই ব্র্যান্ডেড প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে কিছু শর্ত দিতে হয়েছে। ব্র্যান্ডেড প্রতিষ্ঠানের কাজের ফিনিশিং ভালো হয়। তাই ওপরের স্যারদের পরামর্শে আমরা দরপত্রে এমন শর্ত দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব ফার্নিচারের জন্য এত কঠিন শর্ত দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা মান নিশ্চিতে অনেক সময় ‘ব্র্যান্ডেড’ প্রতিষ্ঠানের ওপর ভরসা করতে চাই। এরপরও এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেব।’

যেসব ফার্নিচার কেনা হচ্ছে

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। উদ্বোধন করা এবং নির্মাণাধীন এসব মসজিদের জন্য ৮টি প্যাকেজে ফার্নিচার কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এখানে ৭টি মসজিদ নিয়ে একেকটি প্যাকেজ করা হয়। এযাত্রায় মোট ২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার আসবাব কেনা হচ্ছে। সেখানে আছে প্রতিটি মসজিদের জন্য সেগুন কাঠের স্টেজ টেবিল ১টি, চেয়ার ৩টি, রাইটিং প্যাড চেয়ার ৪০টি, বুকশেলফ ১২টি, রিডিং টেবিল ৬টি, হাতলওয়ালা কাঠের চেয়ার ৩৮টি, কাঠের জানালা ৪টি, ডাইনিং টেবিল ৪টি, ডাইনিং চেয়ার ৪০টি, হাতা ছাড়া কাঠের চেয়ার ৩৬টি, তিন সেট কুশন সোফা, আর্মড কুশন চেয়ার ৪টি, সেক্রেটারি টেবিল দুটি, মুর্দা খাটিয়া দুটি, কোরআন শরিফের রেহাল ২৬টি, কাঠের খাট ২টি (বড়), ড্রেসিং টেবিল ২টি, সিঙ্গেল খাট ৪টি, দুই ড্রয়ারের টেবিল ৪টি, কনফারেন্স টেবিল ১টি এবং কনফারেন্স চেয়ার ৪০টি। তবে জেলা ও উপজেলা ভিত্তিতে ফার্নিচারের পরিমাণ কম-বেশি আছে।

পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কবজায় সব কাজ

একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক দশক ধরে একচেটিয়া কাজ করে যাচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি আসবাব প্রতিষ্ঠান। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আসবাব সরবরাহ ও ইন্টেরিয়র কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে মূলত হাতিল, কনসেপ্ট, পারটেক্স, আখতার আর লিগ্যাসি ফার্নিচার নামের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। আকাশচুম্বী দামে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের যোগসাজশে মূলত কাজ করিয়ে থাকেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এদের কাজ দিতে পিপিআর লঙ্ঘন করে এমন সব শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যা অন্য প্রতিষ্ঠানের থাকে না। অথচ এক প্রতিষ্ঠান থেকে বারবার কাজ না পায়, এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

পূর্তের কাঠের কারখানার কাজ কী

গণপূর্তের নিজেরই কাঠের কারখানা আছে। পূর্তের একাধিক প্রকৌশলী জানান, একসময় সব ফার্নিচারই এ কারখানায় তৈরি হতো। সেখানে সব ধরনের যন্ত্রপাতিও ছিল। সব ফার্নিচার বানিয়ে পরে তা সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এখন পূর্তের কাঠের কারখানা শুধু অর্ডার নিয়ে থাকে। এরপর ঠিকাদারদের সরবরাহ করা নকশা ও ডিজাইনে দরপত্র তৈরি করে। মূলত নিজেরা এখানে তেমন কিছুই করে না। এর অন্যতম কারণ, কাঠের কারখানার কাজটি মূলত সিভিল ওয়ার্ক। দরজা, জানালাসহ ইন্টেরিয়র—সবই সিভিল প্রকৌশলীদের ভালো জানাশোনা থাকার কথা। কিন্তু সেখানে কায়দা করে ইলেকট্রো মেকানিক্যাল (ই/এম) বিভাগের প্রকৌশলী চেয়ার দখল করে রেখেছে। ফলে কাঠের কারখানা থেকে প্রকল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো আসবাব এখন আর তৈরি করা হচ্ছে না।

অনিয়ম খুঁজতে কমিটি

৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় উদ্বোধন করা এবং নির্মীয়মাণ মডেল মসজিদের নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আগেই। এসব অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করার উদ্যোগ নেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মডেল মসজিদের নির্মাণ বা ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত অভিযোগ সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। এ কমিটিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (উন্নয়ন) আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক; ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন); সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা প্রতিনিধি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নিচে নয়); সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর; সংশ্লিষ্ট জেলার উপপরিচালক (শুধু বিভাগীয় শহরের ক্ষেত্রে পরিচালক), ইসলামিক ফাউন্ডেশন; পরিচালক (পরিকল্পনা), ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আর কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে (পরিকল্পনা-১)। এই তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি এ. কে. আজাদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম সকল গোষ্ঠী ও মতের ঊর্ধ্বে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও দলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবারও বাড়ল পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়সীমা শেষবারের মতো বাড়িয়ে ৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইসি জানায়, আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ১০ লাখ ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।

এর আগে, ২৪ ডিসেম্বর ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল, তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর এক দিন আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। তিনি যে তিনটি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন, সেগুলোতে নতুন করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল সোমবার ছিল নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার পক্ষে বগুড়া–৭, দিনাজপুর–৩ ও ফেনী–১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এই তিন আসনেই বিএনপির পক্ষ থেকে একজন করে ‘বিকল্প প্রার্থী’ রাখা হয়েছে, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়া শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই প্রয়াণের পর প্রশ্ন উঠেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ওই তিন আসনে নতুন করে নির্বাচনের সময়সূচি বা তফসিল ঘোষণা করতে হবে কি না।

জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা আছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোনো ‘বৈধভাবে মনোনীত’ প্রার্থীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট আসনে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হয়। তবে বর্তমান ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন বলে মনে করছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবদুর রহমানেল মাছউদ গণমাধ্যমকে জানান, মনোনয়নপত্র জমা দিলেই কেউ বৈধ প্রার্থী হয়ে যান না। বাছাইপ্রক্রিয়ায় টিকে যাওয়ার পর চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃত হন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, ফলে আইনিভাবে তিনি এখনো ‘বৈধ প্রার্থী’ হিসেবে বিবেচিত হননি। তাঁর মৃত্যুর কারণে সংশ্লিষ্ট তিন আসনে মনোনয়নপত্রটি স্থগিত থাকবে।

ইসি কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু ওই তিনটি আসনেই বিএনপির বিকল্প প্রার্থী রয়েছে, তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। প্রতীক বরাদ্দের আগে দল থেকে যাঁর নামে চিঠি দেওয়া হবে, তিনিই দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হবেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী তফসিলে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ বা প্রয়োজন নেই। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ওই আসনগুলোতে বাছাই ও ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির বিকল্প প্রার্থীরাই এখন ওই আসনগুলোতে দলের হাল ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে শেখ হাসিনার দায় আছে: আসিফ নজরুল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৬
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা প্রহসনমূলক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ব্যক্তিগতভাবে তিনি করেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের দায় রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উনাকে একটা প্রহসনমূলক রায়ে জেলখানায় পাঠিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়াকে যে মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এটা যে প্রহসনের একটা রায় ছিল, এটা যে একটা সম্পূর্ণ সাজানো রায় ছিল, এটা আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল ও রিভিউয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের রায়ের মধ্যে বারবার বলা হয়েছে যে, বেগম জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ রংলি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জিঘাংসাপ্রসূতভাবে উনাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘উনাকে জেলখানায় বিভিন্ন সময় যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, উনাকে আমরা হয়তো এত তাড়াতাড়ি হারাতাম না, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বেগম জিয়ার এই মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা এবং উনার যে সরকার আছে, অবশ্যই তাঁর দায় রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত