Ajker Patrika

মডেল মসজিদে আসবাব সরবরাহে অভিনব শর্ত

  • বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ফার্নিচার কেনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • সারা দেশের বিভাগীয় শহরে কমপক্ষে ১২টি শোরুম থাকার শর্ত।
  • সর্বশেষ ৩ বছরে ২৫০০ ফার্নিচার উৎপাদনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ১২: ৩৫
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি অর্থায়নে সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ প্রকল্পের কাজ কোথাও শেষ, আবার কোথাও চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে কেনা হবে ২০ পদের আসবাব। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে কাঠের তৈরি জানালা, মুর্দা বহনের খাটিয়া, কোরআন শরিফ রাখার রেহাল, টেবিল ও চেয়ার। কাঁঠাল বা সেগুন কাঠের তৈরি এসব আসবাব সরবরাহের দরপত্রে অংশ নিতে হলে পূরণ করতে হবে অভিনব নানা শর্ত। উদ্দেশ্য একটাই—যেন ২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কাজটি পছন্দের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পান।

প্রকল্পের একাধিক প্রকৌশলী এবং খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, ফার্নিচার সরবরাহের দরপত্রে অংশ নিতে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ফার্নিচার কেনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য শর্তের মধ্যে রয়েছে—সারা দেশের বিভাগীয় শহরে কমপক্ষে ১২টি শোরুম থাকতে হবে। প্রতি মাসে ১০০ কর্মীকে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেতন দেওয়া হয় এমন শিট থাকতে হবে। কাঠ সিজনিং ও কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। এ ছাড়া সর্বশেষ ৩ বছরে ২৫০০ ফার্নিচার উৎপাদন ও সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের।

মডেল মসজিদ প্রকল্প প্রস্তাবে যেসব ফার্নিচার রাখা হয়েছে, সেগুলো সরবরাহের জন্য এমন জটিল শর্ত থাকার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে মনে করেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকৌশলী। তাঁরা বলেন, মসজিদের জন্য ইতিপূর্বে যেসব আসবাব কেনা হয়েছে, সেখানে এমন জটিল বা অপ্রাসঙ্গিক শর্তগুলো ছিল না। ফলে অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে কেনাকাটা করা সম্ভব হয়েছে। এখানে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা বাংলাদেশে হাতে গোনা দু-তিনটি প্রতিষ্ঠান পূরণ করতে পারবে। তাই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, কোনো বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই এসব শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি পিপিআরও।

এ কাজের সঙ্গে জড়িত গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (কাঠের কারখানা) মো. ইশ্রাফিল শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আগে লোকাল ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাতাম। ইসলামিক ফাউন্ডেশন তা পছন্দ করছে না। তারাও ব্র্যান্ড চায়। তাই ব্র্যান্ডেড প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে কিছু শর্ত দিতে হয়েছে। ব্র্যান্ডেড প্রতিষ্ঠানের কাজের ফিনিশিং ভালো হয়। তাই ওপরের স্যারদের পরামর্শে আমরা দরপত্রে এমন শর্ত দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব ফার্নিচারের জন্য এত কঠিন শর্ত দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা মান নিশ্চিতে অনেক সময় ‘ব্র্যান্ডেড’ প্রতিষ্ঠানের ওপর ভরসা করতে চাই। এরপরও এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেব।’

যেসব ফার্নিচার কেনা হচ্ছে

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। উদ্বোধন করা এবং নির্মাণাধীন এসব মসজিদের জন্য ৮টি প্যাকেজে ফার্নিচার কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এখানে ৭টি মসজিদ নিয়ে একেকটি প্যাকেজ করা হয়। এযাত্রায় মোট ২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার আসবাব কেনা হচ্ছে। সেখানে আছে প্রতিটি মসজিদের জন্য সেগুন কাঠের স্টেজ টেবিল ১টি, চেয়ার ৩টি, রাইটিং প্যাড চেয়ার ৪০টি, বুকশেলফ ১২টি, রিডিং টেবিল ৬টি, হাতলওয়ালা কাঠের চেয়ার ৩৮টি, কাঠের জানালা ৪টি, ডাইনিং টেবিল ৪টি, ডাইনিং চেয়ার ৪০টি, হাতা ছাড়া কাঠের চেয়ার ৩৬টি, তিন সেট কুশন সোফা, আর্মড কুশন চেয়ার ৪টি, সেক্রেটারি টেবিল দুটি, মুর্দা খাটিয়া দুটি, কোরআন শরিফের রেহাল ২৬টি, কাঠের খাট ২টি (বড়), ড্রেসিং টেবিল ২টি, সিঙ্গেল খাট ৪টি, দুই ড্রয়ারের টেবিল ৪টি, কনফারেন্স টেবিল ১টি এবং কনফারেন্স চেয়ার ৪০টি। তবে জেলা ও উপজেলা ভিত্তিতে ফার্নিচারের পরিমাণ কম-বেশি আছে।

পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কবজায় সব কাজ

একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক দশক ধরে একচেটিয়া কাজ করে যাচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি আসবাব প্রতিষ্ঠান। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আসবাব সরবরাহ ও ইন্টেরিয়র কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে মূলত হাতিল, কনসেপ্ট, পারটেক্স, আখতার আর লিগ্যাসি ফার্নিচার নামের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। আকাশচুম্বী দামে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের যোগসাজশে মূলত কাজ করিয়ে থাকেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এদের কাজ দিতে পিপিআর লঙ্ঘন করে এমন সব শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যা অন্য প্রতিষ্ঠানের থাকে না। অথচ এক প্রতিষ্ঠান থেকে বারবার কাজ না পায়, এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

পূর্তের কাঠের কারখানার কাজ কী

গণপূর্তের নিজেরই কাঠের কারখানা আছে। পূর্তের একাধিক প্রকৌশলী জানান, একসময় সব ফার্নিচারই এ কারখানায় তৈরি হতো। সেখানে সব ধরনের যন্ত্রপাতিও ছিল। সব ফার্নিচার বানিয়ে পরে তা সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এখন পূর্তের কাঠের কারখানা শুধু অর্ডার নিয়ে থাকে। এরপর ঠিকাদারদের সরবরাহ করা নকশা ও ডিজাইনে দরপত্র তৈরি করে। মূলত নিজেরা এখানে তেমন কিছুই করে না। এর অন্যতম কারণ, কাঠের কারখানার কাজটি মূলত সিভিল ওয়ার্ক। দরজা, জানালাসহ ইন্টেরিয়র—সবই সিভিল প্রকৌশলীদের ভালো জানাশোনা থাকার কথা। কিন্তু সেখানে কায়দা করে ইলেকট্রো মেকানিক্যাল (ই/এম) বিভাগের প্রকৌশলী চেয়ার দখল করে রেখেছে। ফলে কাঠের কারখানা থেকে প্রকল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো আসবাব এখন আর তৈরি করা হচ্ছে না।

অনিয়ম খুঁজতে কমিটি

৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় উদ্বোধন করা এবং নির্মীয়মাণ মডেল মসজিদের নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আগেই। এসব অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করার উদ্যোগ নেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মডেল মসজিদের নির্মাণ বা ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত অভিযোগ সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। এ কমিটিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (উন্নয়ন) আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক; ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন); সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা প্রতিনিধি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নিচে নয়); সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর; সংশ্লিষ্ট জেলার উপপরিচালক (শুধু বিভাগীয় শহরের ক্ষেত্রে পরিচালক), ইসলামিক ফাউন্ডেশন; পরিচালক (পরিকল্পনা), ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আর কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে (পরিকল্পনা-১)। এই তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে: আসক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে: আসক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই অবস্থায় দেশের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি আজ সর্বমহলের। নির্মম হামলায় তরুণ রাজনীতিবিদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদকে কেন্দ্র করে গতকাল রাত থেকে দেশে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাসমূহের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সহিংসতার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর মব তৈরি করে হেনস্তা করার ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়ংকর বার্তা বহন করে। একই সঙ্গে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ভবনে হামলা, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়ির ধ্বংসাবশেষে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, রাজশাহী ও খুলনায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের নামে জমায়েত এবং চট্টগ্রামে ভারতীয় উপহাইকমিশনের সামনে রাতের বেলা অবস্থান—সব মিলিয়ে একটি সুপরিকল্পিত অস্থিরতা সৃষ্টির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় একজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে।

আসক মনে করে, সংবাদমাধ্যম, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহাসিক স্থাপনার ওপর এ ধরনের সমন্বিত হামলা দেশে উগ্র ও সহিংস চিন্তার বিপজ্জনক বিস্তারের ইঙ্গিত দেয়। ছায়ানট দীর্ঘদিন ধরে শিল্প-সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার কেন্দ্র হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত; সেই প্রতিষ্ঠানে হামলা প্রমাণ করে যে, অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার একটি অপ্রত্যাশিত ক্ষেত্র ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাঠে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী কেন সময়মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, তা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

আসক আরও মনে করে, সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার বিশেষত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের যে সীমাবদ্ধতাগুলো প্রকাশ পাচ্ছে, তা দুঃখজনক।

আসক অবিলম্বে হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠ‍ু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তসহ মব সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা, সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নিরাপত্তা এবং জুলাই আন্দোলনের তরুণদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় এই ধারাবাহিক সহিংসতা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক পরিসর এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্থায়ী সংকট হিসেবে থেকে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির জানাজা আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। আর তাঁর জানাজা হবে আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর, সংসদ ভবন এলাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল শনিবার দুপুরে সংসদ ভবন এলাকায় শরিফ ওসমান হাদির জানাজা হবে। এর আগে, ওসমান হাদির গড়া প্রতিষ্ঠান ইনকিলাব মঞ্চ জানায়, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।

আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে শোকাহত ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩২
হাদির মৃত্যুতে শোকাহত ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস। আজ শুক্রবার দূতাবাস তাদের নামের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক পোস্টে এই শোক প্রকাশ করে।

পোস্টে বলা হয়, ‘শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং শোকসন্তপ্ত সবার প্রতি রইল আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।’

এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে ব্রিটিশ হাইকমিশনের শোক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০১
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন। আজ শুক্রবার ব্রিটিশ হাইকমিশন তাদের ‘ইউকে ইন বাংলাদেশ’ নামের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক পোস্টে এই শোক প্রকাশ করে।

পোস্টে ব্রিটিশ হাইকমিশন বলেছে, ‘যুব নেতা শরীফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই কঠিন সময়ে তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং সমর্থকদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।’

এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত