Ajker Patrika

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন

শেখ হাসিনার নির্দেশে নৃশংসতা

  • ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সুপরিকল্পিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন।
  • সরকার চাইলে এসব অভিযোগ নিয়ে আইসিসিতে যেতে পারে।
  • রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না করা, র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ।
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১: ৪৩
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ফলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ফলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের হত্যা, নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও তদারকিতে। তাঁর ও অন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ও তদারকিতে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা, নির্যাতন ও গ্রেপ্তার করে। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সুপরিকল্পিত ও পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার চাইলে এসব অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) যেতে পারে। প্রতিবেদনে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না করা, র‍্যাব বিলুপ্ত করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার, গণগ্রেপ্তার বন্ধ করাসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) গতকাল বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংস্থার সদর দপ্তর ও অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে ১১৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। আহত হয় হাজার হাজার মানুষ। হতাহতদের অধিকাংশ নির্বিচার গুলির শিকার হয়। নিহতদের ১২ থেকে ১৩ শতাংশ (অন্তত ১৮০ জন) ছিল শিশু। গ্রেপ্তার করা হয় ১১ হাজার ৭০২ জনকে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতায় টিকে থাকতে তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকার ও আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিত ও পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ঘটনা ঘটায়। পুলিশ, র‍্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এতে জড়িয়ে পড়ে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (আসাদুজ্জামান খান) ও অন্য কর্মকর্তারা একাধিক বড় ধরনের অভিযানের নির্দেশনা দেন ও তদারক করেন। এসব অভিযানে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করে। নির্বিচার গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে এবং অবৈধভাবে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বা পঙ্গু করার সঙ্গে জড়িত ছিল। এমনকি একেবারে সামনে থেকেও গুলি করা হয়।

জাতিসংঘের এই সংস্থার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত ও সমন্বিত কৌশল, যার মাধ্যমে জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, বিক্ষোভ দমনের কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জানার মধ্যে, তাঁদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে। নির্বিচার গ্রেপ্তার, আটক ও ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে। জরুরিভিত্তিতে এ বিষয়গুলোর আরও ফৌজদারি তদন্ত প্রয়োজন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এক মাসের তদন্তে ১৪ ধরনের অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই আন্দোলন দমনে বিচারবহির্ভূত হত্যা, প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে নির্বিচার গুলি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ভীতি প্রদর্শন, চিকিৎসায় বাধা ও মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে টার্গেট কিলিং হয়েছে।

ফলকার তুর্ক বলেন, যেসব সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে, তাতে ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে ওঠে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর। এসব কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগও গঠন করা যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকার চাইলে এসব অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিসি) যেতে পারে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। ড. ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনাবলির বিষয়ে একটি তথ্য অনুসন্ধান দল পাঠায়। প্রতিবেদন তৈরিতে সংস্থাটি ১৫৩টি হতাহতের ঘটনার ফরেনসিক বিশ্লেষণ, ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ২৩০টি সাক্ষাৎকার, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার ৯৫৯টি বক্তব্য ও হাজারো ছবি, ভিডিও, ভয়েস রেকর্ড ও দলিল ব্যবহার করেছে। চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বগুড়া, সিলেট ও গাজীপুরেও অনুসন্ধান হয়।

প্রতিবেদনে এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান, পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি, এসবি, সিটিটিসি, গোয়েন্দা সংস্থা, এনটিএমসি ও বিজিবিকে দায়ী করা হয়।

প্রতিবেদনে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের সময় আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড বিশদভাবে বিশ্লেষণ করা হয়। পুলিশকে উদ্দেশ করে দুই হাত ছড়িয়ে ‘আমাকে গুলি করুন’ বলে তাঁর চিৎকারসহ পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র ও ভূ-অবস্থান প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারীরা ওই হত্যাকাণ্ড কীভাবে ঘটেছে, তা সাক্ষ্যপ্রমাণের জন্য পুনর্নির্মাণ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, আবু সাঈদ পুলিশের ইচ্ছাকৃত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভের সামনের সারিতে থাকায় নারীসহ নেতৃত্ব দানকারীদের অনেকে নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আক্রমণের শিকার হন। প্রতিবেদনে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে শারীরিক আক্রমণ ও ধর্ষণের হুমকি রয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করেন, এর লক্ষ্য ছিল নারীদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমনের সময় শিশুদেরও হত্যা ও পঙ্গু করেছে। তাদের নির্বিচার গ্রেপ্তার, অমানবিক অবস্থায় আটক ও অত্যাচার করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৮৪১টি হত্যা ও ১৩ হাজার ৫২৯ ব্যক্তির আহত হওয়ার ঘটনা তালিকাভুক্ত করলেও এটি ছিল অসম্পূর্ণ। পুলিশ ও র‍্যাব ১১ হাজার ৭০২ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জাতিসংঘ বলছে, নিহত ব্যক্তিদের ৬৬ শতাংশ রাইফেল, ১২ শতাংশ শটগান, ২ শতাংশ পিস্তল ও ২০ শতাংশ অনান্য অস্ত্রের গুলির শিকার হন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধানমন্ডিতে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী প্রায় ২০০টি ধাতব গুলির কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে মারা যায়। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে মা-বাবা বিক্ষোভে নিয়ে যাওয়া ছোট্ট শিশু, পথচারী ও দর্শকও ছিলেন। নারায়ণগঞ্জে ছয় বছরের একটি মেয়েকে বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ দেখার সময় মাথায় গুলি করা হয়।

প্রতিবেদনে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নেওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অস্বীকৃতির ঘটনাও তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ, হাসপাতালগুলো থেকে তাঁদের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয় এবং চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের ভয় দেখানো হয়। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজও জব্দ করা হয়। এতে স্পষ্ট, আইনানুগ প্রক্রিয়া ছাড়া রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহিংসতার মাত্রা কোন পর্যায়ে ছিল যে তা গোপন করার চেষ্টা করা হচ্ছিল।

প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের কর্মী ও পুলিশের প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং গণমাধ্যমের কর্মীদের ওপর সহিংসতার ঘটনাও উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। এমন ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের অনেকে এখনো দায়মুক্তি ভোগ করছে।

জাতিসংঘ বলছে, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের জেরে ওই বিক্ষোভের সূত্রপাত হলেও এর পেছনে ছিল ধ্বংসাত্মক ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং প্রশাসন থেকে সৃষ্ট বিস্তৃত ক্ষোভ, যা অর্থনৈতিক বৈষম্যের সৃষ্টি করেছিল।

ফলকার তুর্ক বলেন, এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতি পেছনে ফেলে বাংলাদেশের জন্য এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম পথ হলো, একটি বিশদ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গত জুলাই-আগস্টের ভয়াবহ অন্যায়গুলোর সত্য উন্মোচন, নিরাময় ও জবাবদিহির মুখোমুখি করা। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতার প্রতিকার করা। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর কখনো না ঘটে, তা নিশ্চিত করা। তিনি সত্য উন্মোচনে একটি জাতীয় কমিশন (ট্রুথ কমিশন) গঠনের তাগিদ দিয়ে বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দিলে কীভাবে আইনের মুখোমুখি করা যাবে, এ প্রশ্নে ফলকার তুর্ক বলেন, এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের সুযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ও অন্যান্য আদালতে ঘটনাগুলোর বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রতিবেদনে নিরাপত্তা ও বিচার খাতের সংস্কার, নাগরিক ও রাজনৈতিক ভিন্নমতকে দমিয়ে রাখার জন্য প্রণীত দমনমূলক আইন ও প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করার পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক শাসনব্যবস্থায় বৃহত্তর পরিবর্তন আনাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়।

প্রতিবেদনে জাতিসংঘ সংস্থাটি বেশ কিছু সুপারিশও করেছে। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে: রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না করা; র‍্যাব বিলুপ্ত করা; বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; পুলিশ কমিশন গঠনের মাধ্যমে বাহিনীটির ব্যাপক সংস্কার; পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের আইন লঙ্ঘনের ঘটনার জবাবদিহির জন্য স্বাধীন কমিশন গঠন; বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করা; পুলিশ, বিজিবি ও আনসারের সামরিকীকরণ বন্ধ করা; বিজিবি ও ডিজিএফআইকে তাদের জন্য নির্ধারিত দায়িত্বে সীমিত রাখা; গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রোধ করে এমন আইনি বিধান বাতিল করা; এনটিএমসির বেআইনি নজরদারি বন্ধ করা।

এর বাইরে অবৈধ সম্পদ ও অর্থ আটক এবং দেশে ফিরিয়ে আনতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতেও সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে: আসক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে: আসক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই অবস্থায় দেশের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি আজ সর্বমহলের। নির্মম হামলায় তরুণ রাজনীতিবিদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদকে কেন্দ্র করে গতকাল রাত থেকে দেশে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাসমূহের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সহিংসতার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর মব তৈরি করে হেনস্তা করার ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়ংকর বার্তা বহন করে। একই সঙ্গে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ভবনে হামলা, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়ির ধ্বংসাবশেষে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, রাজশাহী ও খুলনায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের নামে জমায়েত এবং চট্টগ্রামে ভারতীয় উপহাইকমিশনের সামনে রাতের বেলা অবস্থান—সব মিলিয়ে একটি সুপরিকল্পিত অস্থিরতা সৃষ্টির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় একজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে।

আসক মনে করে, সংবাদমাধ্যম, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহাসিক স্থাপনার ওপর এ ধরনের সমন্বিত হামলা দেশে উগ্র ও সহিংস চিন্তার বিপজ্জনক বিস্তারের ইঙ্গিত দেয়। ছায়ানট দীর্ঘদিন ধরে শিল্প-সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার কেন্দ্র হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত; সেই প্রতিষ্ঠানে হামলা প্রমাণ করে যে, অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার একটি অপ্রত্যাশিত ক্ষেত্র ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাঠে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী কেন সময়মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, তা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

আসক আরও মনে করে, সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার বিশেষত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের যে সীমাবদ্ধতাগুলো প্রকাশ পাচ্ছে, তা দুঃখজনক।

আসক অবিলম্বে হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠ‍ু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তসহ মব সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা, সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নিরাপত্তা এবং জুলাই আন্দোলনের তরুণদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় এই ধারাবাহিক সহিংসতা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক পরিসর এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্থায়ী সংকট হিসেবে থেকে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির জানাজা আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। আর তাঁর জানাজা হবে আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর, সংসদ ভবন এলাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল শনিবার দুপুরে সংসদ ভবন এলাকায় শরিফ ওসমান হাদির জানাজা হবে। এর আগে, ওসমান হাদির গড়া প্রতিষ্ঠান ইনকিলাব মঞ্চ জানায়, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।

আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে শোকাহত ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩২
হাদির মৃত্যুতে শোকাহত ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস। আজ শুক্রবার দূতাবাস তাদের নামের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক পোস্টে এই শোক প্রকাশ করে।

পোস্টে বলা হয়, ‘শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং শোকসন্তপ্ত সবার প্রতি রইল আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।’

এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে ব্রিটিশ হাইকমিশনের শোক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০১
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন। আজ শুক্রবার ব্রিটিশ হাইকমিশন তাদের ‘ইউকে ইন বাংলাদেশ’ নামের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এক পোস্টে এই শোক প্রকাশ করে।

পোস্টে ব্রিটিশ হাইকমিশন বলেছে, ‘যুব নেতা শরীফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই কঠিন সময়ে তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং সমর্থকদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।’

এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত