Ajker Patrika

সুশাসন নিশ্চিতের চুক্তি থাকছে কাগজে-কলমেই, মাঠ পর্যায়ে নেই বাস্তবায়ন

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ১১: ৪৭
সুশাসন নিশ্চিতের চুক্তি থাকছে কাগজে-কলমেই, মাঠ পর্যায়ে নেই বাস্তবায়ন

সরকারের মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা বিভাগের আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি জোরদার করা, সুশাসন ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে রূপকল্প-২০৪১ নির্ধারণ করা হয়। সেটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যন্ত সুশাসন নিশ্চিতে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর হয়ে আসছে নিয়মিত। কিন্তু সরকারের এই কর্মকাণ্ড মাঠ প্রশাসনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। অর্থাৎ এমন সরকারি সেবার বিষয়ে জনগণ জানতেই পারছে না। ফলে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতের চুক্তি রয়ে যাচ্ছে কাগজে-কলমেই।

দেশে সুশাসন নিশ্চিতের জন্য জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, অভিযোগ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা, সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি, তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি যথাযথভাবে পালনের জন্য ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে দেশের ৪৮টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে আসছে। অর্থাৎ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে দেশের সব মন্ত্রণালয় আগামী অর্থবছরে কী কী কাজ বাস্তবায়ন করবে, সেটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী কাজ যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এই চুক্তির কারণে প্রতিটি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিভাগ বা জেলা জবাবদিহির আওতায় থাকছে।

জানা গেছে, সরকারের পাঁচটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য সব মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। এসব প্রতিশ্রুতি সার্বিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ৩০ নম্বর রয়েছে। আর ৭০ নম্বর নিজ নিজ মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। এই চুক্তি অনুযায়ী কোনো মন্ত্রণালয় ভালো কাজ করলে তাদের পুরস্কৃতও করা হচ্ছে। এতে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে নম্বর রয়েছে। অসাধারণ ১০০, অতি উত্তম ৯০, উত্তম ৮০, চলতি মান ৭০ ও চলতি মানের নিচে ৬০ নম্বর ধার্য রয়েছে। ফলে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর বা সংস্থার মধ্যে সেবা ও প্রতিকার দেওয়ার প্রতিযোগিতা কাজ করছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি ১০০টি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন কিনতে চায়, তবে কিছু বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। দরপত্র আহ্বান, কারা অংশগ্রহণ করেছে, কে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছে—এসব তথ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। মূল্যায়ন কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের স্বাক্ষরযুক্ত প্রতিবেদন থাকতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে সেটির জন্য কোনো নম্বর পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ, প্রতিটি কাজের দালিলিক প্রমাণ থাকতে হবে।

কিন্তু মাঠ পর্যায়ে জনগণের কাজে সরকারের এসব প্রতিশ্রুতির কথা পৌঁছাচ্ছে না। এ কারণে সরকারি বিভিন্ন সেবা ও প্রতিকার নিতে এসে মানুষের হয়রানি কমছে না, দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারণাও থামছে না। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, অভিযোগ ও প্রতিকার, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি, তথ্য অধিকার ও বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির বিষয়টি জনগণ সঠিকভাবে জানতে পারছে না। চুক্তি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা ও সম্পাদনে প্রতিযোগিতা থাকলেও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেটি নেই। কর্মকর্তাদের মধ্যে সময়ে সময়ে সভা-সমাবেশ হলেও তৃণমূলের নাগরিকদের কাছে সরকারের প্রতিশ্রুতির বাণী পৌঁছাচ্ছে না। এতে জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা ও প্রতিকার পেতে কখনো অর্থ, কখনো ক্ষমতার উৎসের সন্ধান করছে।

ঢাকার দোহার উপজেলা প্রশাসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত এক বছরে কেউ তথ্য অধিকার আইনে কোনো তথ্য চাননি। অথচ ২০০৯ সালে আইনটি পাশ হয়। উপজেলা প্রশাসনে এসে মানুষ কী কী সেবা পাবে, সে সংক্রান্ত কোনো প্রচারণাও সেখানে নেই। তবে ভূমি অফিসের সামনে কিছু সেবার বিষয়ে বলা আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও সেবা প্রতিশ্রুতিসংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। এমনকি সেখানে কোনো অভিযোগও জমা পড়েনি বা কেউ তথ্য অধিকার আইনে তথ্যও চাননি বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন।

সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি যোগদানের পর থেকে কেউ তথ্য চেয়ে আবেদনই করেননি। তবে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, অভিযোগ ও প্রতিকার নিয়ে তাদের নিয়মিত সভা হচ্ছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইনের সঙ্গে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি নিয়ে কথা হয়। তিনি জানান, তথ্য অধিকার আইনে কেউ কখনো কোনো তথ্য চাননি। কোনো অভিযোগ নিয়েও কেউ আসছে না। তবে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির বিষয়ে তাদের সভা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অথচ বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি এবং সরকারি দপ্তরসমূহের দক্ষতার উন্নয়ন ও কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা। সরকারি সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে কাজের মূল্যায়নের মাধ্যমে সরকারি দপ্তরসমূহের ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক উন্নয়ন করাই এর মূল লক্ষ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বমোট ৯১ হাজার ৫৯৩টি প্রতিষ্ঠান এপিএ স্বাক্ষর করছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২২৮টি প্রতিষ্ঠান এপিএএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে এপিএ স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এ থেকে জনগণকে সুবিধাভোগী করার বিষয়টি অধরাই থেকে যাচ্ছে।

বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. সামসুল আরেফিন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাঠ প্রশাসনে এপিএ বাস্তবায়নে সময় লাগবে। জনগণকে গিয়ারআপ করতে চেষ্টা চলছে।’ মানুষকে সচেতন করতে গণমাধ্যমের সহযোগিতাও চান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি: আসিফ নজরুল

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রবাসীরা জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বলে মন্তব্য করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিজয় অর্জনে প্রবাসীদের সমর্থন ও ত্যাগ অতুলনীয়। তাঁদের কল্যাণে সরকার বদ্ধপরিকর।

আজ মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে আয়োজিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সের সর্বোত্তম ব্যবহারবিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের জন্য ভোটাধিকার চালু করা। এর ফলে তাঁরা প্রবাসে থেকেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কর্মীদের জন্য মাল্টিভিসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে সাধারণ কর্মী নিয়োগ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে দক্ষ কর্মী নিয়োগ বাড়বে এবং কর্মী ও নিয়োগকর্তার অধিকার ও স্বার্থ অধিকতর সুরক্ষিত হবে।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো শুরু করেছি। দক্ষতার ভিত্তিতে শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জর্ডানে নারী শ্রমিকদের বিনা ফি-তে ও জরিমানা ছাড়া রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবাসীরা দেশে আসার সময় আগে একটি মোবাইল ফোন আনতে পারতেন। আমরা এটি বাড়িয়ে দুটি আনতে পারার সুযোগ করেছি। এ ছাড়া বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী লাউঞ্জ স্থাপন করা হয়েছে এবং আংশিক মালিকানায় হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে এ ধারা অব্যাহত থাকলে প্রবাসীদের কল্যাণে মাইলফলক অগ্রগতি অর্জিত হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া ও ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আই আর ভ্যালেন্টাইন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা-দাফনে মোতায়েন থাকবেন ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হবে। তাই তাঁর লাশবাহী গাড়ি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা পর্যন্ত নেওয়া, জানাজা ও দাফন ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার ১০ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, খালেদা জিয়ার লাশবাহী গাড়িকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। ১০ হাজারের বেশি পুলিশ ও এপিবিএন সদস্য থাকবেন। কিছু কিছু জায়গায় সেনাবাহিনীর সদস্যও থাকবেন।

প্রেস সচিব বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। আপসহীন নেত্রী। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। দেশের জন্য তিনি যা করেছেন, এটা অতুলনীয়। এভারকেয়ার থেকে খালেদা জিয়ার লাশবাহী গাড়ি সংসদে ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আসা পর্যন্ত জানাজা এবং দাফন—সবকিছু পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর জানাজা, দাফনসহ প্রতিটি অনুষ্ঠান সুচারুভাবে করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সরকার। এ জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন, সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্বে করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নিরাপত্তা টিমের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ কে এম শামসুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সার্বিক কার্যক্রম ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, আগামীকাল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ডিএমপির ১০ হাজারের বেশি পুলিশ, এপিবিএন এবং অন্য নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা থাকবেন। কিছু কিছু জায়গায় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে একটা ব্যবস্থাপনা থাকবে।

নিরাপত্তার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, পুলিশ, নিরাপত্তা সংস্থার তরফ থেকে প্রত্যেকটা বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে একটি বড় জানাজা হয়েছে। ফলে পুলিশের এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর নিজেদের মধ্যে কিছু প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল, এখন আরও বড় আকারে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।

শফিকুল আলম বলেন, আগামীকাল সকালে তাঁর লাশবাহী গাড়ি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সংসদ ভবন এলাকায় নেওয়া হবে। নেওয়ার পথে রাস্তার দুই পাশে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা করা হবে। তবে কখন লাশ সংসদ ভবন এলাকায় নেওয়া হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাঁকে নিয়ে আসা হবে।

প্রেস সচিব বলেন, খালেদা জিয়ার জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা ও কূটনীতিকেরা উপস্থিত থাকবেন। কিছুদিন আগে সংসদ ভবন এলাকায় বড় একটি জানাজা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জানাজা আরও বড় আকারে হবে। সে আলোকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তুতিতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শামসুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী ছিলেন না, তিনি জাতীয় নেত্রী ছিলেন। বিএনপির দলীয় অবস্থান থেকে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শামসুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার লাশ যখন এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা নেওয়া হবে, তখন রাস্তার দুপাশে জনসাধারণ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫০
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগামীকাল বুধবার ঢাকায় খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জানাজায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। বিষয়টিকে বাংলাদেশ ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সৌজন্য ও রাজনৈতিক শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে খালেদা জিয়ার জানাজায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার যোগ দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন। হাইকমিশনের একটি সূত্র জানায়, ইসহাক দার আগামীকাল বুধবার ঢাকায় এসে সরাসরি জানাজায় অংশ নেবেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, একাধিক দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবস্থান ও দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রীয় ভূমিকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এদিকে, জানাজা ঘিরে ঢাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোও জানাজা এবং সংশ্লিষ্ট আনুষ্ঠানিকতায় ব্যাপক জনসমাগমের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মতভেদ ছাপিয়ে দেশজুড়ে শোক ও শ্রদ্ধার আবহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি এ. কে. আজাদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম সকল গোষ্ঠী ও মতের ঊর্ধ্বে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও দলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত