Ajker Patrika

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে আজ সারা দেশে ধর্মঘট, ঢাবিতে ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ সোমবার দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা। এই আহ্বানের প্রতি সংহতি জানিয়ে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগ আজ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আজ বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে সংহতি সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছে। তারা আজ বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংহতি ও বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।

প্ল্যাটফর্মটির বার্তাপ্রেরক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমেদ রিফাত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে সোমবার বিশ্বব্যাপী হরতাল পালিত হবে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান থাকছে।’

এ কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানিয়ে নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম।

ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় আজ সারা দেশে ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা এই ধর্মঘট সফল করুন। সোমবার বাংলাদেশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন না চালু হয়, কোনো স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস না হয়, তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করুন।’

গতকাল রোববার দুপুরে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলনের’ দুই সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ ও এ বি যুবায়েরও এ কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এক ফেসবুক পোস্টে এ বি যুবায়ের বলেন, ‘সোমবার বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের মজলুম গাজাবাসী ভাইবোনেরা। গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের সব দেশে একযোগে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, অফিস ও আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার সারা দিন বাংলাদেশেও সাধারণ ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। সোমবার আপনারা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, অফিস-আদালত বন্ধ রাখুন। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করুন। চলুন বৈশ্বিকভাবে একযোগে দাবি জানাই, ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন।’

এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ, আরবি বিভাগ, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ফলিত গণিত, মনোবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতাসহ অনেকগুলো বিভাগ এ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে। তারা সোমবারের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।

ছাত্রদলের সংহতি ও কর্মসূচি ঘোষণা

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। একই সঙ্গে ইসরায়েলের হামলায় হতাহত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে আজ সোমবার বিশ্বব্যাপী কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় ইতিমধ্যে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ শহীদ হয়েছেন। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের নির্মমভাবে হত্যা করছেন ইসরায়েলি সেনারা। গাজা আজ মৃত্যু উপত্যকা। পৃথিবীর মানচিত্র থেকে গাজাকে মুছে ফেলতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে ইসরায়েল। পরিতাপের বিষয় এই যে, বিশ্ব এখনো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

বিবৃতিতে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রদলের নেতারা বলেন, এমন ভয়ংকর বর্বরতার নিন্দা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়। ইসরায়েলের বর্বরতা সত্ত্বেও বিশ্ববাসীর নির্লিপ্ত আচরণ ততোধিক অমানবিক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রদল গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল মঙ্গলবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করছে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান এবং দুপুর ১২টায় প্রতিটি শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মিছিল বের করে শহরের প্রাণকেন্দ্রে সম্মিলিত বিক্ষোভ সমাবেশ করবে ছাত্রদল। ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য দেশের আপামর ছাত্র-জনতার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে গণযাত্রার ঘোষণা

এদিকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন একদল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। পরে সেখানে একটি গায়েবানা জানাজাও সম্পন্ন হয়।

এই কর্মসূচি থেকে ৮ এপ্রিল আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে গণযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা অনেক ব্যথা নিয়ে এখানে হাজির হয়েছি। গণহত্যার ভিডিওগুলো যখন সামনে আসে সেগুলো দেখে আমরা নিজেদের ধরে রাখতে পারি না। আমরা দেখেছি, বোমার আঘাতে ফিলিস্তিনের শিশুদের হাড়গুলো কীভাবে উড়ে যাচ্ছে। আমার মুসলিম ভাইয়েরা যখন মরছিল, আরব বিশ্বের নেতারা তখন হাতে চুড়ি পরে বসে ছিল।’

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ সোমবার সারা দেশে ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আনাস ইবনে মুনির। তিনি বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করব এবং ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আরিয়ান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দাঁড়াতে আপনাকে মুসলমান হওয়া লাগবে না, মানুষ হওয়া লাগবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার খালেদা জিয়ার জানাজায় তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার খালেদা জিয়ার জানাজায় তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জানাজা শেষে প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই কঠিন সময়ে তাঁর ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবদান স্মরণ করে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এ সময় বিএনপির শীর্ষ নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, কূটনৈতিক মহল এবং সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের আবহ বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট দিতে ১১ লাখ নিবন্ধন, ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়াল ইসি

বাসস, ঢাকা  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।

প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান

প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।

দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন

দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।

ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম

প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।

নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তানের স্পিকারের কুশল বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৩
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।

আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত