
শেখ হাসিনার পতনের আগে ও পরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনার পর এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।
ওএইচসিএইচআর ৩৪টি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এসব হামলার বিস্তারিত সংগ্রহ করেছে, যেখানে ১২ জন সরাসরি ভুক্তভোগী ছিলেন। বেশ কয়েকটি ঘটনায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ‘বিজয় মিছিলের’ অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ৩৭টি সহিংস ঘটনার তথ্য বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সরবরাহ করেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে ১ হাজার ৭৬৯টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৩৪টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ২০টি সাম্প্রদায়িক এবং ১৬১টি অভিযোগ ভুয়া ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে বাঙালি সেটলারদের সঙ্গে ভূমি বিরোধ ও সামরিক হস্তক্ষেপ দীর্ঘদিনের সমস্যা। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বেড়ে যায়। কয়েকটি ঘটনায় স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
সাবেক সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের ওপর ব্যাপক হামলা চালানো হয়। বিশেষত ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুরসহ উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলে এ ধরনের সহিংসতা বেশি ঘটেছে। এ ছাড়া সিলেট, খুলনা, রংপুরসহ অন্যান্য এলাকায়ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা মূলত সেই সব এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে হিন্দুদের দেখা হতো।
হিন্দু ব্যবসায়ী ও গৃহস্বামীরা ওএইচসিএইচআরকে জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যবসা, বাড়িঘর, জমি ও ধর্মীয় স্থানে হামলা হয়েছে। তাঁদের দোকান লুটপাট করা হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ ও নানা হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ার ফলে এই সহিংসতা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়।
উদাহরণস্বরূপ, এক সাক্ষাৎকারদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু শ্মশান ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। অন্য সাক্ষীরা জানিয়েছেন, হামলার পর ৩-৪ হাজার হিন্দু বাসিন্দা নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় সীমান্তের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। আক্রান্ত পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতা এবং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। অনেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, গবাদিপশু ও ব্যবসা হারিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এসব হামলা মূলত বিজয় মিছিলের অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়, যেখানে সাবেক সরকারের পতন উদ্যাপন করা হচ্ছিল। যদিও হামলাকারীদের পরিচয় সব ক্ষেত্রে স্পষ্ট নয়, কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের সমর্থক ছিল। তবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের কিছু নেতা এসব সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে এবং ৬ আগস্টের পর তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয় রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে।
বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে, হিন্দু প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এক ঘটনায় ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও ছিলেন।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্য অনুসারে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর ৩৭টি সহিংস হামলা সংঘটিত হয়েছে। এসব হামলা যশোর, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, নাটোর, দিনাজপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, মেহেরপুর, বরগুনা, বরিশাল, রাজবাড়ী, ঠাকুরগাঁও, ফরিদপুর, পিরোজপুর ও নেত্রকোনায় ঘটেছে। অধিকাংশ হামলায় বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করা হয়েছে। চারটি ঘটনায় মন্দির লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন নারীর গলা কাটা হয়েছে এবং একজন পুরুষ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনাগুলোর মধ্যে পাঁচটি হামলায় বিএনপি-সমর্থকদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়
৫ থেকে ৯ আগস্টের মধ্যে আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায় সাতটি সহিংসতার শিকার হয়েছে। ওএইচসিএইচআর বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পেয়েছে যে ৫ আগস্ট পঞ্চগড় জেলায় ধর্মীয় নেতাদের নেতৃত্বে একটি দল আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েকজন সদস্যের ওপর হামলা চালায় এবং ১১৭টি বাড়ি ও একটি মসজিদ ধ্বংস করে। ওএইচসিএইচআর আরও একটি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যেখানে ৫ আগস্টের ওই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর মারাত্মকভাবে আহত হয়। হামলার পর তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করতে হয় এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। ওএইচসিএইচআর এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য পায়নি।
চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে নির্যাতন
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করে এবং সংবিধানের তাঁদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৭ সালে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তা কখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং সেনা উপস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
এর মধ্যে জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে এটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এসব প্রচারণার মধ্যে একটি মিথ্যা দাবি ছিল যে একজন বাঙালি শিক্ষার্থীকে একজন আদিবাসী শিক্ষার্থীর চেয়ে কম সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে উভয়ই ভর্তি হয়েছিল। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে উসকে দেয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা বাড়ায়।
৫ আগস্টের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে বিক্ষোভের সময় এবং তার পরেও স্থানীয় ইস্যু, বিশেষ করে সেনা প্রত্যাহারের দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন ও দেয়াললিখন দেখা যায়। আন্দোলন থামাতে সেনাবাহিনী এসব দেয়াললিখন মুছে ফেলে এবং অ্যাকটিভিস্টদের আটক করে। এসব পদক্ষেপ আরও বেশি কঠোর দমন-পীড়নের আশঙ্কা তৈরি করে।
সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বান্দরবানে সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠে, যেখানে আদিবাসী ও বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। কিছু সশস্ত্র বাঙালি গোষ্ঠী ট্রাকে করে এসে স্থানীয় এক নেতার বাসভবনে হামলা চালায়।
৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে গণমাধ্যম ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী হিন্দু, আহমদিয়া, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয়গুলোর ওপর বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার ঘটনা ঘটে। ওএইচসিএইচআরে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার বুরাশারদুবি গ্রামে তিনটি মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। প্রায় ২০টি বাড়ি লুটপাট করা হয়, যা সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার ইঙ্গিত।
এ ছাড়া মেহেরপুরে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসের (ইসকন) একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট নন্দীপাড়ায় একটি কালীমন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে তদন্তে জানা যায়, এটি ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে নয়, বরং জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বিরোধের কারণে ছিল।

শেখ হাসিনার পতনের আগে ও পরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনার পর এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।
ওএইচসিএইচআর ৩৪টি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এসব হামলার বিস্তারিত সংগ্রহ করেছে, যেখানে ১২ জন সরাসরি ভুক্তভোগী ছিলেন। বেশ কয়েকটি ঘটনায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ‘বিজয় মিছিলের’ অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ৩৭টি সহিংস ঘটনার তথ্য বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সরবরাহ করেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে ১ হাজার ৭৬৯টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৩৪টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ২০টি সাম্প্রদায়িক এবং ১৬১টি অভিযোগ ভুয়া ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে বাঙালি সেটলারদের সঙ্গে ভূমি বিরোধ ও সামরিক হস্তক্ষেপ দীর্ঘদিনের সমস্যা। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বেড়ে যায়। কয়েকটি ঘটনায় স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
সাবেক সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের ওপর ব্যাপক হামলা চালানো হয়। বিশেষত ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুরসহ উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলে এ ধরনের সহিংসতা বেশি ঘটেছে। এ ছাড়া সিলেট, খুলনা, রংপুরসহ অন্যান্য এলাকায়ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা মূলত সেই সব এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে হিন্দুদের দেখা হতো।
হিন্দু ব্যবসায়ী ও গৃহস্বামীরা ওএইচসিএইচআরকে জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যবসা, বাড়িঘর, জমি ও ধর্মীয় স্থানে হামলা হয়েছে। তাঁদের দোকান লুটপাট করা হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ ও নানা হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ার ফলে এই সহিংসতা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়।
উদাহরণস্বরূপ, এক সাক্ষাৎকারদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু শ্মশান ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। অন্য সাক্ষীরা জানিয়েছেন, হামলার পর ৩-৪ হাজার হিন্দু বাসিন্দা নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় সীমান্তের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। আক্রান্ত পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতা এবং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। অনেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, গবাদিপশু ও ব্যবসা হারিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এসব হামলা মূলত বিজয় মিছিলের অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়, যেখানে সাবেক সরকারের পতন উদ্যাপন করা হচ্ছিল। যদিও হামলাকারীদের পরিচয় সব ক্ষেত্রে স্পষ্ট নয়, কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের সমর্থক ছিল। তবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের কিছু নেতা এসব সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে এবং ৬ আগস্টের পর তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয় রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে।
বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে, হিন্দু প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এক ঘটনায় ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও ছিলেন।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্য অনুসারে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর ৩৭টি সহিংস হামলা সংঘটিত হয়েছে। এসব হামলা যশোর, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, নাটোর, দিনাজপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, মেহেরপুর, বরগুনা, বরিশাল, রাজবাড়ী, ঠাকুরগাঁও, ফরিদপুর, পিরোজপুর ও নেত্রকোনায় ঘটেছে। অধিকাংশ হামলায় বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করা হয়েছে। চারটি ঘটনায় মন্দির লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন নারীর গলা কাটা হয়েছে এবং একজন পুরুষ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনাগুলোর মধ্যে পাঁচটি হামলায় বিএনপি-সমর্থকদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়
৫ থেকে ৯ আগস্টের মধ্যে আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায় সাতটি সহিংসতার শিকার হয়েছে। ওএইচসিএইচআর বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পেয়েছে যে ৫ আগস্ট পঞ্চগড় জেলায় ধর্মীয় নেতাদের নেতৃত্বে একটি দল আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েকজন সদস্যের ওপর হামলা চালায় এবং ১১৭টি বাড়ি ও একটি মসজিদ ধ্বংস করে। ওএইচসিএইচআর আরও একটি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যেখানে ৫ আগস্টের ওই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর মারাত্মকভাবে আহত হয়। হামলার পর তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করতে হয় এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। ওএইচসিএইচআর এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য পায়নি।
চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে নির্যাতন
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করে এবং সংবিধানের তাঁদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৭ সালে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তা কখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং সেনা উপস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
এর মধ্যে জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে এটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এসব প্রচারণার মধ্যে একটি মিথ্যা দাবি ছিল যে একজন বাঙালি শিক্ষার্থীকে একজন আদিবাসী শিক্ষার্থীর চেয়ে কম সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে উভয়ই ভর্তি হয়েছিল। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে উসকে দেয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা বাড়ায়।
৫ আগস্টের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে বিক্ষোভের সময় এবং তার পরেও স্থানীয় ইস্যু, বিশেষ করে সেনা প্রত্যাহারের দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন ও দেয়াললিখন দেখা যায়। আন্দোলন থামাতে সেনাবাহিনী এসব দেয়াললিখন মুছে ফেলে এবং অ্যাকটিভিস্টদের আটক করে। এসব পদক্ষেপ আরও বেশি কঠোর দমন-পীড়নের আশঙ্কা তৈরি করে।
সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বান্দরবানে সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠে, যেখানে আদিবাসী ও বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। কিছু সশস্ত্র বাঙালি গোষ্ঠী ট্রাকে করে এসে স্থানীয় এক নেতার বাসভবনে হামলা চালায়।
৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে গণমাধ্যম ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী হিন্দু, আহমদিয়া, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয়গুলোর ওপর বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার ঘটনা ঘটে। ওএইচসিএইচআরে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার বুরাশারদুবি গ্রামে তিনটি মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। প্রায় ২০টি বাড়ি লুটপাট করা হয়, যা সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার ইঙ্গিত।
এ ছাড়া মেহেরপুরে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসের (ইসকন) একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট নন্দীপাড়ায় একটি কালীমন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে তদন্তে জানা যায়, এটি ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে নয়, বরং জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বিরোধের কারণে ছিল।

শেখ হাসিনার পতনের আগে ও পরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনার পর এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।
ওএইচসিএইচআর ৩৪টি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এসব হামলার বিস্তারিত সংগ্রহ করেছে, যেখানে ১২ জন সরাসরি ভুক্তভোগী ছিলেন। বেশ কয়েকটি ঘটনায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ‘বিজয় মিছিলের’ অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ৩৭টি সহিংস ঘটনার তথ্য বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সরবরাহ করেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে ১ হাজার ৭৬৯টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৩৪টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ২০টি সাম্প্রদায়িক এবং ১৬১টি অভিযোগ ভুয়া ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে বাঙালি সেটলারদের সঙ্গে ভূমি বিরোধ ও সামরিক হস্তক্ষেপ দীর্ঘদিনের সমস্যা। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বেড়ে যায়। কয়েকটি ঘটনায় স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
সাবেক সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের ওপর ব্যাপক হামলা চালানো হয়। বিশেষত ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুরসহ উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলে এ ধরনের সহিংসতা বেশি ঘটেছে। এ ছাড়া সিলেট, খুলনা, রংপুরসহ অন্যান্য এলাকায়ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা মূলত সেই সব এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে হিন্দুদের দেখা হতো।
হিন্দু ব্যবসায়ী ও গৃহস্বামীরা ওএইচসিএইচআরকে জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যবসা, বাড়িঘর, জমি ও ধর্মীয় স্থানে হামলা হয়েছে। তাঁদের দোকান লুটপাট করা হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ ও নানা হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ার ফলে এই সহিংসতা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়।
উদাহরণস্বরূপ, এক সাক্ষাৎকারদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু শ্মশান ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। অন্য সাক্ষীরা জানিয়েছেন, হামলার পর ৩-৪ হাজার হিন্দু বাসিন্দা নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় সীমান্তের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। আক্রান্ত পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতা এবং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। অনেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, গবাদিপশু ও ব্যবসা হারিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এসব হামলা মূলত বিজয় মিছিলের অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়, যেখানে সাবেক সরকারের পতন উদ্যাপন করা হচ্ছিল। যদিও হামলাকারীদের পরিচয় সব ক্ষেত্রে স্পষ্ট নয়, কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের সমর্থক ছিল। তবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের কিছু নেতা এসব সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে এবং ৬ আগস্টের পর তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয় রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে।
বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে, হিন্দু প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এক ঘটনায় ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও ছিলেন।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্য অনুসারে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর ৩৭টি সহিংস হামলা সংঘটিত হয়েছে। এসব হামলা যশোর, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, নাটোর, দিনাজপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, মেহেরপুর, বরগুনা, বরিশাল, রাজবাড়ী, ঠাকুরগাঁও, ফরিদপুর, পিরোজপুর ও নেত্রকোনায় ঘটেছে। অধিকাংশ হামলায় বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করা হয়েছে। চারটি ঘটনায় মন্দির লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন নারীর গলা কাটা হয়েছে এবং একজন পুরুষ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনাগুলোর মধ্যে পাঁচটি হামলায় বিএনপি-সমর্থকদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়
৫ থেকে ৯ আগস্টের মধ্যে আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায় সাতটি সহিংসতার শিকার হয়েছে। ওএইচসিএইচআর বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পেয়েছে যে ৫ আগস্ট পঞ্চগড় জেলায় ধর্মীয় নেতাদের নেতৃত্বে একটি দল আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েকজন সদস্যের ওপর হামলা চালায় এবং ১১৭টি বাড়ি ও একটি মসজিদ ধ্বংস করে। ওএইচসিএইচআর আরও একটি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যেখানে ৫ আগস্টের ওই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর মারাত্মকভাবে আহত হয়। হামলার পর তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করতে হয় এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। ওএইচসিএইচআর এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য পায়নি।
চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে নির্যাতন
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করে এবং সংবিধানের তাঁদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৭ সালে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তা কখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং সেনা উপস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
এর মধ্যে জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে এটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এসব প্রচারণার মধ্যে একটি মিথ্যা দাবি ছিল যে একজন বাঙালি শিক্ষার্থীকে একজন আদিবাসী শিক্ষার্থীর চেয়ে কম সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে উভয়ই ভর্তি হয়েছিল। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে উসকে দেয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা বাড়ায়।
৫ আগস্টের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে বিক্ষোভের সময় এবং তার পরেও স্থানীয় ইস্যু, বিশেষ করে সেনা প্রত্যাহারের দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন ও দেয়াললিখন দেখা যায়। আন্দোলন থামাতে সেনাবাহিনী এসব দেয়াললিখন মুছে ফেলে এবং অ্যাকটিভিস্টদের আটক করে। এসব পদক্ষেপ আরও বেশি কঠোর দমন-পীড়নের আশঙ্কা তৈরি করে।
সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বান্দরবানে সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠে, যেখানে আদিবাসী ও বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। কিছু সশস্ত্র বাঙালি গোষ্ঠী ট্রাকে করে এসে স্থানীয় এক নেতার বাসভবনে হামলা চালায়।
৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে গণমাধ্যম ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী হিন্দু, আহমদিয়া, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয়গুলোর ওপর বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার ঘটনা ঘটে। ওএইচসিএইচআরে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার বুরাশারদুবি গ্রামে তিনটি মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। প্রায় ২০টি বাড়ি লুটপাট করা হয়, যা সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার ইঙ্গিত।
এ ছাড়া মেহেরপুরে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসের (ইসকন) একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট নন্দীপাড়ায় একটি কালীমন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে তদন্তে জানা যায়, এটি ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে নয়, বরং জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বিরোধের কারণে ছিল।

শেখ হাসিনার পতনের আগে ও পরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনার পর এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।
ওএইচসিএইচআর ৩৪টি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এসব হামলার বিস্তারিত সংগ্রহ করেছে, যেখানে ১২ জন সরাসরি ভুক্তভোগী ছিলেন। বেশ কয়েকটি ঘটনায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ‘বিজয় মিছিলের’ অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ৩৭টি সহিংস ঘটনার তথ্য বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সরবরাহ করেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে ১ হাজার ৭৬৯টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৩৪টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ২০টি সাম্প্রদায়িক এবং ১৬১টি অভিযোগ ভুয়া ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে বাঙালি সেটলারদের সঙ্গে ভূমি বিরোধ ও সামরিক হস্তক্ষেপ দীর্ঘদিনের সমস্যা। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বেড়ে যায়। কয়েকটি ঘটনায় স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
সাবেক সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের ওপর ব্যাপক হামলা চালানো হয়। বিশেষত ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুরসহ উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলে এ ধরনের সহিংসতা বেশি ঘটেছে। এ ছাড়া সিলেট, খুলনা, রংপুরসহ অন্যান্য এলাকায়ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা মূলত সেই সব এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে হিন্দুদের দেখা হতো।
হিন্দু ব্যবসায়ী ও গৃহস্বামীরা ওএইচসিএইচআরকে জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যবসা, বাড়িঘর, জমি ও ধর্মীয় স্থানে হামলা হয়েছে। তাঁদের দোকান লুটপাট করা হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ ও নানা হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ার ফলে এই সহিংসতা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়।
উদাহরণস্বরূপ, এক সাক্ষাৎকারদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু শ্মশান ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। অন্য সাক্ষীরা জানিয়েছেন, হামলার পর ৩-৪ হাজার হিন্দু বাসিন্দা নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় সীমান্তের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। আক্রান্ত পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতা এবং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। অনেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, গবাদিপশু ও ব্যবসা হারিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এসব হামলা মূলত বিজয় মিছিলের অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়, যেখানে সাবেক সরকারের পতন উদ্যাপন করা হচ্ছিল। যদিও হামলাকারীদের পরিচয় সব ক্ষেত্রে স্পষ্ট নয়, কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের সমর্থক ছিল। তবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠনের কিছু নেতা এসব সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে এবং ৬ আগস্টের পর তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয় রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে।
বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে, হিন্দু প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এক ঘটনায় ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও ছিলেন।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্য অনুসারে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর ৩৭টি সহিংস হামলা সংঘটিত হয়েছে। এসব হামলা যশোর, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, নাটোর, দিনাজপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, মেহেরপুর, বরগুনা, বরিশাল, রাজবাড়ী, ঠাকুরগাঁও, ফরিদপুর, পিরোজপুর ও নেত্রকোনায় ঘটেছে। অধিকাংশ হামলায় বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করা হয়েছে। চারটি ঘটনায় মন্দির লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন নারীর গলা কাটা হয়েছে এবং একজন পুরুষ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনাগুলোর মধ্যে পাঁচটি হামলায় বিএনপি-সমর্থকদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়
৫ থেকে ৯ আগস্টের মধ্যে আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায় সাতটি সহিংসতার শিকার হয়েছে। ওএইচসিএইচআর বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পেয়েছে যে ৫ আগস্ট পঞ্চগড় জেলায় ধর্মীয় নেতাদের নেতৃত্বে একটি দল আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েকজন সদস্যের ওপর হামলা চালায় এবং ১১৭টি বাড়ি ও একটি মসজিদ ধ্বংস করে। ওএইচসিএইচআর আরও একটি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যেখানে ৫ আগস্টের ওই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর মারাত্মকভাবে আহত হয়। হামলার পর তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করতে হয় এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। ওএইচসিএইচআর এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য পায়নি।
চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে নির্যাতন
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করে এবং সংবিধানের তাঁদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৭ সালে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তা কখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং সেনা উপস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
এর মধ্যে জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে এটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এসব প্রচারণার মধ্যে একটি মিথ্যা দাবি ছিল যে একজন বাঙালি শিক্ষার্থীকে একজন আদিবাসী শিক্ষার্থীর চেয়ে কম সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে উভয়ই ভর্তি হয়েছিল। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে উসকে দেয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা বাড়ায়।
৫ আগস্টের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে বিক্ষোভের সময় এবং তার পরেও স্থানীয় ইস্যু, বিশেষ করে সেনা প্রত্যাহারের দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন ও দেয়াললিখন দেখা যায়। আন্দোলন থামাতে সেনাবাহিনী এসব দেয়াললিখন মুছে ফেলে এবং অ্যাকটিভিস্টদের আটক করে। এসব পদক্ষেপ আরও বেশি কঠোর দমন-পীড়নের আশঙ্কা তৈরি করে।
সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বান্দরবানে সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠে, যেখানে আদিবাসী ও বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। কিছু সশস্ত্র বাঙালি গোষ্ঠী ট্রাকে করে এসে স্থানীয় এক নেতার বাসভবনে হামলা চালায়।
৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে গণমাধ্যম ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী হিন্দু, আহমদিয়া, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয়গুলোর ওপর বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার ঘটনা ঘটে। ওএইচসিএইচআরে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার বুরাশারদুবি গ্রামে তিনটি মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। প্রায় ২০টি বাড়ি লুটপাট করা হয়, যা সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার ইঙ্গিত।
এ ছাড়া মেহেরপুরে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসের (ইসকন) একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট নন্দীপাড়ায় একটি কালীমন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে তদন্তে জানা যায়, এটি ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে নয়, বরং জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বিরোধের কারণে ছিল।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৭ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হামলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে হামলার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে