Ajker Patrika

গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি অনুসরণ করার এখনই সময়: প্রধানমন্ত্রী

বাসস
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ১১: ২৮
গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি অনুসরণ করার এখনই সময়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তি অনুসরণ করার এখনই সময়’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া, আর্লিংটন কাউন্টিতে অবস্থিত আমেরিকান-জার্মান মালিকানাধীন রাজনীতিবিষয়ক গণমাধ্যম ‘পলিটিকোতে’ প্রকাশিত হয়েছিল।

নিবন্ধটির সম্পূর্ণ পাঠ্য নিচে তুলে ধরা হলো 
মানব ইতিহাসের অন্য কোনো সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেয়ে জরুরি কোনো কারণ প্রমাণিত হয়নি; এই গ্রহে আমরা যাকে বাড়ি বলে ডাকি এবং প্রতিটি প্রজাতির জন্য আমরা এটি শেয়ার করে নিয়েছি, সেখানে আমাদের এর চেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়নি।

যাই হোক, উদ্দীপনামূলক বক্তৃতা এবং অনুপ্রেরণাদায়ক ভাষা এখন শুধু শূন্য অনুভূতি। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘকাল ধরে জোরদার পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েও খালি অলংকার এবং সূক্ষ্ম কাতানো ছাড়া আর কিছুই পাননি।

এক শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি বাংলাদেশের সিলেটের মানুষের কাছে শব্দগুলো পর্যাপ্ত নয়। শব্দগুলো আকস্মিক বন্যাকে তাদের বাড়িঘর নিয়ে যাওয়া, তাদের জীবিকা ধ্বংস করা, তাদের প্রিয়জনকে হত্যা করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি এবং গত মাসে পাকিস্তানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩ মিলিয়ন জনগণের জন্য সমর্থন বা ছোট সাহায্য প্যাকেজগুলোর টুইটগুলো যথেষ্ট ছিল না।

এর পরিবর্তে আমি আজকে যা আহ্বান করছি তা হলো পদক্ষেপ্ত—বছর গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে কপ-২৬-এ দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য পদক্ষেপ, একটি উষ্ণ গ্রহের কঠোরতম বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় আমার মতো দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য এবং যখন বিশ্বনেতারা আবারও একত্রিত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এইবার শারম আল-শেখে আমি আমার সম্মানিত সহকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষার উপায় খুঁজে বের করার জন্য। অন্ততপক্ষে ২০২৫ সালের মধ্যে অভিযোজনের পাশাপাশি অর্থের ব্যবস্থা দ্বিগুণ করার জন্য।

উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে এই প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্তিকে একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত এবং এটি আমার মতো জলবায়ুর ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অত্যাবশ্যক। এটি ভবিষ্যতের কোনো তারিখের জন্য ছেড়ে দেওয়া যাবে না। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের বিস্তৃত পরিণতির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি এবং এই মুহূর্তে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়, তাহলে অবিলম্বে সহায়তা দেওয়া দরকার।

বাংলাদেশ বর্তমানে বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনে ০.৫৬% অবদান রাখে এবং তবু, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশের ক্ষতির অনুপাত অপ্রতিরোধ্য।

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় ক্ষয়, খরা, তাপ এবং বন্যা সবই আমাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। তারা আমাদের অবকাঠামো এবং কৃষিশিল্পকে ধ্বংস করবে কারণ, আমরা চরম ও ধীরগতির ঘটনাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত ক্ষয়ক্ষতি এবং ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ, হ্রাস এবং মোকাবিলায় যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মানবসৃষ্ট উষ্ণায়নের কারণে আমাদের জিডিপি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং গড় আয় ২১০০ সালে ৯০ শতাংশ কম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। অন্যথায়, আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্টে ধারণা করা হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

এ ধরনের অন্ধকারাচ্ছন্ন পূর্বাভাসের মুখোমুখি হলে হতাশাগ্রস্ত হওয়া সহজ হবে, যখন জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান অনেকের কাছে শোনা যাচ্ছে না এবং অগ্রগতিও খুব ধীর। উদ্বেগের পক্ষাঘাতে আত্মহত্যা করা অনেক সহজ হবে, তবে আমাদের অবশ্যই তা প্রতিরোধ করতে হবে। আর বাংলাদেশে আমরা সেটাই করছি।

এই ধরনের গুরুতর হুমকির মুখে আমরা এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে প্রাণবন্ত এবং ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো মোকাবিলার জন্য আমরা মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনাও উন্মোচন করেছি, আমাদের শক্তি নেটওয়ার্ককে ডিকার্বনাইজ করা থেকে শুরু করে সবুজ বিনিয়োগের উদ্যোগ এখন এবং ভবিষ্যতে উভয়ই আমাদের গতিপথকে ক্ষতিকর প্রভাবের পরিবর্তে সমৃদ্ধিশালী করবে।

আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে প্রথম ছিলাম, যারা ২০০৯ সালে একটি বিস্তৃত জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম ৷ এখন পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ৪৮০ মিলিয়ন বরাদ্দ করেছি ৷

বর্তমানে, আমরা আমাদের উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য একটি আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। এই প্রকল্পে প্রায় ৫,০০০ জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ১৩৯টি বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছি। আমার ১৮ বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বে এই সরকার আজ পর্যন্ত প্রায় ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যক্তিকে বাড়ি দিয়েছে।

ইতিমধ্যে আমরা ‘বাংলাদেশ ডেলটা প্ল্যান ২১০০’ গ্রহণ করেছি। যার লক্ষ্য একটি নিরাপদ, জলবায়ু-সহনশীল ও সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ গঠন করা। প্রতি বছর আমার দল আমাদের দেশের গাছের পরিধি বাড়াতে লক্ষ লক্ষ চারা রোপণ করে।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি-২০-এর প্রাক্তন চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থের প্রচারে মনোনিবেশ করে চলেছে। শুধু বেঁচে থাকাই যথেষ্ট নয়; আমরা সফল হতে চাই। একজন বিশ্বনেতা হতে চাই, আমাদের প্রতিবেশী এবং বিশ্বকে দেখাতে চাই যে, এখনো একটি আশাপূর্ণ ভবিষ্যতের পথ রয়েছে, কিন্তু আমরা একা এটি করতে পারি না।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কথাগুলোকে অবশ্যই কাজে পরিণত করতে হবে।

গ্লাসগোতে সম্মত হওয়া অভিযোজন তহবিলে ৪০ বিলিয়ন বৃদ্ধিকে অবশ্যই আমাদের সাধারণ ভবিষ্যতের প্রাথমিক বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। অন্যথায়, নিষ্ক্রিয়তার খরচ অপরিসীম হবে: গত বছরের আইপিসিসি ওয়ার্কিং গ্রুপ দ্বিতীয় রিপোর্ট ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে যে, ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জিডিপি ক্ষতি ১০%-২৩% হতে পারে, যা পূর্বের পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি।

প্রতিটি পেরিয়ে যাওয়া বছর ২১ শতকে আমাদের গ্রহের গভীরভাবে আন্তঃসংযুক্ত প্রকৃতিকে আরও শক্তিশালীভাবে হাইলাইট করে, সরবরাহ লাইন এবং শক্তিনির্ভরতা আমাদের সবার ওপরে একটি দীর্ঘ ছায়া ফেলে। এই বছর ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে আরও রেকর্ড ব্রেকিং তাপমাত্রার ঘটনা নিয়ে এসেছে, রেকর্ড করা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে।

জলবায়ু পরিবর্তন, ক্ষতি এবং ক্ষয়ক্ষতি ইতিমধ্যেই আমাদের সঙ্গে আছে, আমরা যেদিকে তাকাই না কেন, এটি বিশ্বজুড়ে অসংখ্য উপায়ে চলছে এবং আমাদের মতো জলবায়ু-সংবেদনশীল দেশগুলোর মুখোমুখি সমস্যাগুলো খুব শিগগিরই অন্যান্য জাতির দ্বারস্থ হবে।

আমাদের যদি এই বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার কোনো আশা থাকে, তাহলে আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, বাংলাদেশে বন্যা, ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল, ইউরোপের খরা-তাপমাত্রা ১.২-ডিগ্রি বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট-সবই পরস্পর সংযুক্ত এবং আমাদেরকে অবশ্যই একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। গত বছর দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করতে হবে; তাহলেই কেবল প্রতিশ্রুতিগুলো অবশেষে কর্মের দিকে পরিচালিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফায়ার সার্ভিসে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করবে সরকার, বাড়বে সুযোগ-সুবিধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৪
‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়াররা নিজেদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প, বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্যোগে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য আপনারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আপনারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারেরও অধিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূর হচ্ছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা বা বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকেরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কিনা—এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন প্রণয়ন করা হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। এই আইনটিও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে।’ তিনি আশ্বস্ত করেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।

এর আগে উপদেষ্টা পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরতের ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৯
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, রোববার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।

কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।

এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।

শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’

যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।

কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।

গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।

পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যালটের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এসপিরা

  • দেশের নবজন্মে ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন এসপিরা: প্রধান উপদেষ্টা
  • সবাইকে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহিত করতে আইজিপির পরামর্শ।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ০৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।

রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।

আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।

বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’

এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’

অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।

গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’

পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত