
বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেরংপুর প্রতিনিধি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে