Ajker Patrika

ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলার নেওয়া ‘নাম না শোনা’ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি কারা

আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১: ৫০
‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির ৫ বছরমেয়াদী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির ৫ বছরমেয়াদী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।

গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’

সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’

ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।

তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।

লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।

পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।

গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।

গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’

আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।

এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।

দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।

উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।

এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।

ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট দিতে ১১ লাখ নিবন্ধন, ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়াল ইসি

বাসস, ঢাকা  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।

প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান

প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।

দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন

দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।

ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম

প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।

নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তানের স্পিকারের কুশল বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৩
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।

আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত