Ajker Patrika

‘নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না’

মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১১: ২৯
‘নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না’

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন। 

আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে। 

এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়। 

ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে। 

লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’ 

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও। 

লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’ 

লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’ 

রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’ 

রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’

নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’ 

দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে। 

এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’ 

সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’ 

সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা। 

এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত