Ajker Patrika

টিকিট প্রতারণা চক্র নিয়ে গ্রাহকদের সতর্ক করল বিমান

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
টিকিট প্রতারণা চক্র নিয়ে গ্রাহকদের সতর্ক করল বিমান

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নামে ভুয়া বুকিং রেফারেন্স বা পিএনআর দিয়ে অনলাইনে টিকিট প্রতারণা করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। অসাধু ব্যক্তি ও কিছু অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি বিমানের নাম, লোগো এবং কর্মীদের ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে গ্রাহকদের বিশ্বাস ভেঙে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে গ্রাহকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিমান।

প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক রওশন কবীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতারকেরা বিমানের কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নম্বর থেকে গ্রাহকদের ফোন করে। শুরুতে তাঁরা ভুয়া পিএনআর নম্বর দিয়ে বুকিং নিশ্চিত বলে দাবি করে এবং পরে টাকা আদায় করে নেয়। টাকা নেওয়ার পর ওই পিএনআর হয় বাতিল করে দেয়, না হয় টিকিট ইস্যু না হওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বিমান আরও জানিয়েছে, গ্রাহকদের অনেকেরই জানা নেই, ভুয়া বুকিং রেফারেন্স বা পিএনআর এবং টিকিট এক বিষয় নয়। পিএনআর আসন সংরক্ষণের নিশ্চয়তা দেয় কিন্তু টিকিট ইস্যুর নিশ্চয়তা দেয় না। বিমানে ভ্রমণের জন্য আসন নিশ্চিত করতে টিকিট ইস্যু করা অত্যাবশ্যক। পিএনআর সৃষ্টি করে টিকিট ইস্যু না করলে সে ক্ষেত্রে উক্ত পিএনআর যেকোনো সময় বাতিল হতে পারে অর্থাৎ, যাত্রী বিমানে আরোহণ করতে পারবেন না।

কোনো এজেন্ট পিএনআর প্রদান করলে অর্থ লেনদেনের আগেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের নিকটস্থ সেলস সেন্টার অথবা কল সেন্টারে (১৩৬৩৬) যোগাযোগ করে পিএনআর সঠিক কি না, যাচাই করার জন্য অনুরোধ করার কথা জানিয়েছে বিমান।

বিমানের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মোবাইল নম্বর ০১৭৪৯৮৮১৯৭৮, ০১৩২২৮৭৮৮৬৩ এবং ইসলামি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর: ২০৫০৩১০০২০১৮৮০২১১, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর-০১৩৯১৪৩০০০০০২১৫ ব্যবহার করে ইতিমধ্যে প্রতারক চক্র বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের প্রতারণা এড়িয়ে চলার জন্য যাত্রী সাধারণকে বিমানের নিকটস্থ সেলস অফিস, বিমানের ওয়েবসাইট, কল সেন্টার, বিমান বা আইএটিএ অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহের অনুরোধ করা হলো। ইতিমধ্যে কেউ প্রতারণার শিকার হয়ে থাকলে নিকটস্থ থানায় অভিযোগ দায়ের করার জন্য বলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রত্যয়

বাসস, ঢাকা  
স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং করবেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং করবেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা উড়িয়ে প্যারাস্যুটিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি চলছে। যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি এবার গিনেস বুকে নাম লেখাতে চায় বাংলাদেশ।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী এই উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং করবেন। এটিই হবে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে।

গতকাল সোমবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক সভায় এ কথা জানানো হয়। সভায় অংশগ্রহণকারীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাপক আকারে বিশেষ বিশেষ কর্মসূচির প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনা করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, বিজয় দিবসের দিন সকাল ১১টা থেকে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই পাস্ট মহড়া পরিচালনা করবে। চলবে বিজয় দিবসের বিশেষ ব্যান্ড-শো। সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করবেন। জনসাধারণের জন্য এই বিশেষ আয়োজন উন্মুক্ত থাকবে।

এছাড়া দেশের অন্যান্য শহরেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ফ্লাই-পাস্ট মহড়া পরিচালনা করবে। সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ বাহিনী, বিজিবি, আনসার বাহিনী ব্যান্ড-শো’য়ের আয়োজন করবে। প্রতিটি আয়োজন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গত বছরের মতো এবারও দেশের সকল জেলা-উপজেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয়মেলা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়।

অপরদিকে, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১৫ই ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল ৩টায় আ্যাক্রোবেটিক শো ও সন্ধ্যা ৬টায় যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’ অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিবেশিত হবে বিজয় দিবসের গান। পাশাপাশি, সারাদেশের ৬৪ জেলায় একযোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা।

দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে তথ্য মন্ত্রণালয়। বিধি অনুযায়ী, এদিন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন, বিদেশে অবস্থানরত দূতাবাস ও মিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে। প্রতিবছরের মতো এবারেও ৩১ বার তোপধ্বনি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠান, জেলা-উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া, চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা ও পায়রা বন্দর, ঢাকার সদরঘাট, পাগলা ও বরিশালসহ বিআইডব্লিউটিসির ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড একক বা যৌথভাবে জাহাজসমূহ সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখবে।

ঢাকাসহ সারাদেশের সিনেমা হলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টিকেটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং মিলনায়তন ও উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।

সরকারি ও বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জাদুঘরগুলো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা টিকেটে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিনোদনমূলক স্থান শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনাটিকেটে প্রবেশের ব্যবস্থা থাকবে।

সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত বা প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

দেশের সকল হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, ডে কেয়ার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রীতিভোজের আয়োজন থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের সমর্থনে রওনা হলো মার্কিন সপ্তম নৌবহর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
পাকিস্তানের সমর্থনে রওনা হলো মার্কিন সপ্তম নৌবহর

বাংলাদেশ ও ভারতের মিলিত বাহিনীর অগ্রাভিযানের মুখে ৯-১০ ডিসেম্বর নাগাদ পাকিস্তানি বাহিনী দ্রুত পশ্চাদ-পসরণে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যশোর, ফেনী ও কুড়িগ্রামের পতনের পর একের পর এক এলাকা থেকে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে থাকে। ৯ ডিসেম্বর চাঁদপুর ও দাউদকান্দি থেকে পাকিস্তানি সেনাদের দখলের অবসান ঘটে। এতে মেঘনার পুরো পূর্বাঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়। ৯-১০ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্দশ ও ষোড়শ ডিভিশন যথাক্রমে কুমিল্লা ও উত্তরবঙ্গ থেকে পিছু হটতে থাকে।

এদিকে সিআইএর কাছ থেকে পাকিস্তানি ভূখণ্ড দখলের ভারতীয় অভিসন্ধির অভিযোগ পেয়ে তা ঠেকানোর কথা বলে ৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন মার্কিন সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার নির্দেশ দেন। আসলে স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়া বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর সর্বাত্মক পতন ঠেকানোই ছিল সপ্তম নৌবহরের প্রকৃত উদ্দেশ্য। বিশ্লেষকদের এ যুক্তির পেছনের অন্যতম কারণ, সিআইএ কথিত ভারতীয় পরিকল্পনা উদঘাটিত করার প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই মার্কিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় সপ্তম নৌবহরের এখতিয়ার বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে মার্কিন নৌবহরের জন্য বঙ্গোপসাগর ছিল ৪-৫ দিনের যাত্রাপথ।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র পুরোনো মিত্র পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। হেনরি কিসিঞ্জার তখন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। পরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। ‘কট্টর বাংলাদেশবিদ্বেষী’ হিসেবে পরিচিত কিসিঞ্জার তাঁর একটি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, সিআইএর নির্ভরযোগ্য সূত্র খবর দিয়েছিল, ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সংঘাতের সুবাদে ‘আজাদ কাশ্মীর’ দখলের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিমান ও সাঁজোয়া বাহিনী ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এমনিতেই পাকিস্তানকে সহায়তা করে যাচ্ছিল। সিআইএর এ খবরের পর সপ্তম নৌবহর পাঠানোর পক্ষে সাফাই গাওয়া নিক্সন প্রশাসনের জন্য সহজ হয়।

এদিকে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ৯ ডিসেম্বর নাগাদ ঢাকায় পাকিস্তানের তাঁবেদার গভর্নর মালেক সেনাবাহিনীসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ঢাকার গভর্নর হাউস থেকে পাঠানো এক গোপনীয় বার্তায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানি বাহিনীর সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। তিনি রাজনৈতিক সমাধানসহ কোনো একটি মীমাংসায় পৌঁছানোর জন্যও গভর্নর মালেককে উদ্যোগ নিতে বলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের আগের সতর্কবাণীর জবাবে ৯ ডিসেম্বরেই সোভিয়েত নেতা লিওনিদ ব্রেজনেভ নিক্সনকে বলেন, উপমহাদেশের সমস্যা সমাধানের জন্য আসলে প্রয়োজন ইয়াহিয়াকে পূর্বাঞ্চল থেকে পাকিস্তানি সেনা প্রত্যাহারে রাজি করানো। ইয়াহিয়া এতে প্রথমে সম্মত হলেও সপ্তম নৌবহর যাত্রা শুরু করার খবর পেয়ে মার্কিন পরামর্শে পরদিনই মত বদলে ফেলেন।

৯ ডিসেম্বর কলকাতায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা এবং উপদেষ্টা কমিটির যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক অধিকৃত মুক্ত এলাকায় বেসামরিক প্রশাসন শুরু করা, খাদ্য, চিকিৎসা এবং পুনর্গঠন ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি জাতিসংঘে কয়েকটি পরাশক্তির কূটকৌশলের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

এদিন লন্ডন থেকে বিবিসি রেডিও প্রচার করে, পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল নিয়াজী পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করে পালিয়ে গেছেন। তবে পরদিনই নিয়াজী ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আকস্মিক বিবিসির সাংবাদিকের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘আমি পালাইনি, আপনার সামনেই আছি!’

রাজধানী ঢাকায় যুদ্ধের শেষ পর্যায়ের অনিশ্চয়তার কারণে লোকজন ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে শুরু করে। পলায়নপর পাকিস্তানিরা ব্যাংকে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে বা টাকা নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যেতে পারে—জনমনে এই আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। অনেকেই ব্যাংকে গিয়ে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স সার্টিফিকেট’ও (সঞ্চয়পত্র) ভেঙে ফেলতে শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনারা বাড়িতে তল্লাশি চালালে দেখে ফেলবে সে ভয়ে নগদ টাকা লুকিয়ে রাখা হয় গর্তে বা চালের বস্তায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অর্ধেক আসামিই খালাস পাচ্ছে দুদকের মামলায়

  • ১১ মাসে দায়ের ৫১২টি মামলা
  • দেশে সম্পদ ক্রোক ৩,৩৬১ কোটি টাকার
  • জরিমানা আদায় ৫,০৫৩ কোটি টাকা
সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৮
অর্ধেক আসামিই খালাস পাচ্ছে দুদকের মামলায়

বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর প্রায় অর্ধেকেই আসামিরা শেষ পর্যন্ত খালাস পাচ্ছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত যেসব মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, তার পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে মোট ২২৮টি মামলার রায় হয়েছে। ১০৩টি মামলাতেই আসামিরা খালাস পেয়েছেন। সেই হিসাবে ৪৯ শতাংশ মামলার আসামিরা খালাস পেয়েছেন। একই সময়ে আসামির সাজা হয়েছে ১২২টি মামলায়। সাজার হার মামলার ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া নিষ্পত্তি হয়েছে ১০টি মামলা ও প্রত্যাহার করা হয়েছে একটি মামলা। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এই হার অনেকটাই কম।

দুদকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১১ মাসে সংস্থাটি মোট ৫১২টি মামলা করেছে। এ সময়ে দুদকে জমা পড়া ১১ হাজার ৬৩০টি অভিযোগের মধ্যে ৯৬০টি আমলে নেওয়া হয়। অভিযোগ আমলে নেওয়ার হার ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেকটাই বেশি।

দুদকের আবেদনে এই সময়ের মধ্যে দেশে ৩ হাজার ৩৬১ কোটি ২৯ লাখ টাকার সম্পদ এবং বিদেশে ৯৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে।

১১ মাসে দুদক মোট ৩১৫টি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অপর দিকে ৭৩টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এই সময়ে দণ্ডিত আসামিদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫৩ কোটি টাকার জরিমানা আদায় করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৩২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে; যা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য।

দেশের বিভিন্ন আদালতে দুদকের ৩ হাজার ৪৫১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৭টি মামলা বিচারাধীন এবং ৪০৪টি মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত। ঢাকায় বিচারাধীন ৮৭৪টি এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ১৭৩টি মামলার বিচার চলছে।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, দুদক অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগের মেরিট অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এখানে রাজনৈতিক বা সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করার সুযোগ নেই।

তবে সাজার হার কমে যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন দুদকের লিগ্যাল শাখার সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দুদক সব সময় ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করে। এটা দুদকের বড় দুর্বলতা।’

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস আজ

আজ ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দুদক কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসন পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা: গড়বে আগামীর শুদ্ধতা’। দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, মানববন্ধনসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে। সকালে রাজধানীতে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা ও দুদকের পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন-বেলুন ওড়ানোর মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল প্রকল্প: অর্থায়ন নিশ্চিত হয়নি বেড়েছে অধিগ্রহণ ব্যয়

  • জমি অধিগ্রহণে ডিপিপির প্রাক্কলন থেকে ব্যয় বেড়েছে ৩২৩ কোটি টাকা।
  • ডিপিপিতে জমির পরিমাণ ছিল ৯৬০ একর, এখন লাগবে ৯০১.৭৭ একর।
  • ভারতীয় এলওসি বাতিল, নতুন অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে এআইআইবি।
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অর্থায়ন এখনো নিশ্চিত না হলেও বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ব্যয় বেড়েছে ৩২৩ কোটি টাকা। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। এখন সমীক্ষা শেষে জমির পরিমাণ কমে ৯০১.৭৭ একর হলেও অধিগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ হাজার ২৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ঋণের অর্থছাড় না হওয়ায় প্রকল্পের কাজে তেমন অগ্রগতি নেই। চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় অর্থায়ন বাতিল করে। ফলে এই প্রকল্পের জন্য নতুন অর্থায়নকারীর খোঁজ চলছে। এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) প্রকল্পটিতে অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আফজাল হোসেন।

২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বগুড়া থেকে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন (সিরাজগঞ্জ) পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের আওতায় এমব্যাংকমেন্টসহ ৮৬.৫০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ মেইন লাইন এবং ৩৭ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লুপ ও ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। এই রেললাইন নির্মিত হলে ঢাকা থেকে রেলপথে বগুড়ার দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার কমে যাবে। সময় বাঁচবে কয়েক ঘণ্টা।

রেলওয়ের অন্যতম বড় এই প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমে নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

২০১৮ সালে এলওসির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখন প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৪৬ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দেওয়ার কথা ছিল ভারতের। বাকি অর্থায়ন করার কথা ছিল বাংলাদেশ সরকারের। চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় অর্থায়ন বাতিল করে।

এদিকে ভারতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা ও সম্ভাব্যতা সমীক্ষার প্রতিবেদনে দেখে গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৮ সালের দামের ভিত্তিতে। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীসহ সবকিছুর দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ২০২৫ সালের হালনাগাদ ডিপিপিতে প্রকল্প ব্যয় স্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ডিপিপিতে ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। তবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (অ্যালাইনমেন্ট) পথরেখা চূড়ান্ত করে এবং ভূমি অধিগ্রহণ পরিকল্পনা প্রস্তুত করার পর প্রয়োজনীয় জমির পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৯০১.৭৭ একর। সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার জেলা প্রশাসকেরা জমি অধিগ্রহণে চূড়ান্ত ব্যয় প্রাক্কলন দেওয়ায় তা দাঁড়ায় ২ হাজার ২৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে খরচ বেড়েছে ৩২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ খাতে ব্যয়বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৬.৮২ শতাংশ।

এই ব্যয় বাড়ায় গত নভেম্বরে রেলওয়ের মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে বিশেষ সংশোধন প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর ২৩ নভেম্বর রেলসচিবের সভাপতিত্বে বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (ডিপিইসি) সভায় জমি অধিগ্রহণে বাড়তি টাকার প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়ে সবাই একমত হন। বিশেষ সংশোধনীর বিষয়েও সহমত জানানো হয় সভায়।

জানতে চাইলে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সমীক্ষা শেষ হওয়ার পর বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসকেরা তাঁদের নিজ নিজ এলএ (ভূমি অধিগ্রহণ) পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যয়ের চূড়ান্ত প্রাক্কলন দিয়েছেন। এতে আগের অনুমান থেকে ৩২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা বেশি লাগছে। ডিপিপিতে এই অতিরিক্ত ব্যয়ের সুযোগ না থাকায় বিশেষ সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হলে মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে এই প্রকল্পের জন্য অর্থায়নকারী খুঁজছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কাছে অর্থায়ন নিশ্চিতের জন্য প্রকল্প দপ্তর থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এই প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি।

এআইআইবির অর্থায়নের আগ্রহের বিষয়ে ইআরডি সূত্রেও জানা গেছে।

সূত্র বলেছে, প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ০.৩০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ০.০৭ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণের ব্যয় হচ্ছে জিওবি থেকে। এই প্রকল্পে অগ্রগতি না হওয়ার প্রধান কারণ ভারতীয় ঋণের জটিলতা।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, নতুন অর্থায়নকারী পাওয়ার পরে কাজ শেষ করতে আরও তিন-চার বছর লাগবে। অর্থ পাওয়া গেলে ঠিকাদার নিয়োগসহ দরপত্রের কাজ শুরু হবে। তবে কবে তা সম্ভব হবে, এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

প্রকল্পের আওতায় রেলপথ নির্মাণ ছাড়াও করতোয়া ও ইছামতী নদীর ওপর দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণসহ ছোট-বড় সেতুসহ মোট প্রায় ৬৭৮ মিটার সেতুর কাজ হবে। এ ছাড়া একটি সড়ক ওভারপাস এবং একটি রেল ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে আরও রয়েছে ২৬টি বড় সেতু, ৮৩টি ছোট সেতু (আরসিসি বক্স কালভার্ট) এবং ৮টি নতুন রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ ও ৩টি স্টেশন সংস্কার করা হবে।

বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি রেলপথ না থাকায় এই অঞ্চলের ট্রেনগুলোকে বর্তমানে সান্তাহার, নাটোর ও পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে অতিরিক্ত পথ ঘুরে চলতে হয়। এতে ভাড়া ও সময়—দুটিই বেশি লাগছে। বিদ্যমান রেললাইনে ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব প্রায় ৩২৪ কিলোমিটার। প্রকল্প সূত্র বলছে, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ সংযোগ রেললাইন নির্মিত হলে এই দূরত্ব কমে যাবে ১১২ কিলোমিটার। ফলে যাত্রীদের ভাড়া ও সময় কমে যাবে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অর্থায়ন ঝুলে থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে। জমি অধিগ্রহণ ব্যয় বাড়ার পেছনে বাজারদর বৃদ্ধি, নীতিমালার দুর্বলতা এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে ডিজিটাল ও স্বচ্ছ মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা, মধ্যস্থতা কমানো এবং নীতিমালা সংস্কার করা হলে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া দ্রুত করা সম্ভব।

অবশ্য প্রকল্প নিয়ে আশাবাদী রেলওয়ের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘যেহেতু জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে, তাই প্রকল্প নিয়ে আমরা আশা রাখছি। সরকার যেকোনোভাবে এটা শেষ করতে চায়। এটা আমাদের অগ্রাধিকারের একটা প্রকল্প।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত