তানিম আহমেদ, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আদেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দলের দাবি পূরণের চেষ্টা দেখা গেছে। দলগুলোর দাবি পূরণে সরকারের ভারসাম্যমূলক নীতির প্রতিফলন আছে এই আদেশে।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট করার কথা বলা হয়েছে। এটি বিএনপির দাবি ছিল। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে (পিআর) উচ্চকক্ষ, তত্ত্বাবধায়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) কার্যকর থাকবে না, যা জামায়াত ও এনসিপির দাবির পক্ষে গেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সনদে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া ৮৪টি বিষয় রাখা হয়। যেগুলোর মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব রয়েছে। সনদের অঙ্গীকারনামায় গত ১৭ অক্টোবর সই করে বিএনপি, জামায়াতসহ সংলাপে অংশ নেওয়া ২৪টি দল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা, গণভোটে সনদে আপত্তি থাকবে না এবং আদেশ প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারির দাবি তুলে সেদিন স্বাক্ষর করেনি এনসিপি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির আলোচনার শুরুতেই বিরোধিতা করেছিল বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের আদেশ জারির কোনো ক্ষমতা নেই। রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন দিয়ে গণভোট করার দাবি করেছিল বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি আদেশ জারির দাবি করে আসছিল। তবে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নামে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়। আদেশে খুশি হলেও তা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে হওয়ায় মনঃক্ষুণ্ন এনসিপি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে জামায়াতসহ সমমনা আটটি দল। অন্যদিকে বিএনপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের দাবি জানিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার জারি করা আদেশে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের দিন গণভোটের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করছে জামায়াত।
সংলাপে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাবের সমাধান হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ৩০টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকি ১৮টি প্রস্তাবে দলগুলোর আপত্তি ছিল। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। সেখানে বলা হয়, গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে সনদে থাকা দলগুলোর আপত্তি কার্যকর হবে না। বিএনপি এই বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে। দলটি সুপারিশকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বলে দাবি করে তখন। তবে কমিশনের সুপারিশে খুশি ছিল জামায়াত ও এনসিপি। পরে সরকার কমিশনের সুপারিশের কিছুটা সংশোধন করে সাতটি প্রস্তাবে আপত্তি রাখেনি। প্রস্তাবগুলো হলো—সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের গঠন; সংবিধান সংশোধন (সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ), তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা; ন্যায়পাল নিয়োগ; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে বাছাইয়ে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দল) এবং সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতার সমন্বয়ে বাছাই কমিটি গঠনে দলগুলো একমত হয়েছে। তবে বাছাই কমিটি একমত না হলে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট থেকে দুজন বিচারপতিকে কমিটিতে সমন্বয় করা হবে, যারা র্যাংকড চয়েজ (ক্রমভিত্তিক) ভোটিং পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবেন। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো র্যাংকড চয়েজের বিরোধিতা করে সংসদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পক্ষে অবস্থান নেয়। এখন গণভোটে হ্যাঁ জয়যুক্ত হলে এই প্রস্তাবে বিএনপির আপত্তি কার্যকর থাকবে না।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হলেও কমিশন প্রস্তাবিত পিআরে উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনীর ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে দলগুলোর মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা যেতে পারে এবং উচ্চকক্ষকে সংবিধান সংশোধনীর সুযোগ দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পিআরের উচ্চকক্ষ এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে। আদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদনের কথা বলা আছে।
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ন্যায়পাল; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগের বাছাই কমিটির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হবে। যে কমিটিতে সরকারি দল, বিরোধী দল, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি থাকবে। জামায়াত, এনসিপি প্রস্তাবের পক্ষে ছিল। বিএনপি সংবিধান নয়, আইনের মাধ্যমে নিয়োগের পক্ষে ছিল। জারি করা আদেশ অনুযায়ী গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে বিএনপির আপত্তি থাকবে না।
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিষয়টি বিএনপির আপত্তি থাকলেও একমত ছিল জামায়াত ও এনসিপি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থ বিল এবং আস্থা ভোট ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল একমত হয়েছিল। বিএনপিসহ তার সমমনা দলগুলো এই দুটি বিধানের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন ও জাতীয় নিরাপত্তায় (যুদ্ধ পরিস্থিতি) এমপিদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়ার বিপক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি উল্লেখ করার প্রস্তাব করে কমিশন। বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সমমনা দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করার কথা জানিয়েছে। সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, বাসদ-মার্ক্সবাদী বিদ্যমান সংবিধানে থাকা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে বিষয়গুলো রাখার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
গণভোটের ফল ইতিবাচক হলে আগামী সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা আছে আদেশে। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে পরিষদের সদস্য হিসেবেও শপথ নেবেন। তাঁরা প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবেন। সংবিধান সংস্কার শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। জামায়াত ও এনসিপি পরিষদ গঠনের পক্ষে থাকলেও বিএনপি এর বিপক্ষে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব যাতে খর্ব না হয়, সে জন্য আমরা কোনো আরোপিত আইন দিয়ে, আদেশ দিয়ে, কোনো রকমের জবরদস্তিমূলক প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে দিতে চাই না।’
রাজধানীর মগবাজারে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক আট দলের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিএনপি কখনোই আদেশ বা আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার ব্যাপারে একমত ছিল না। তারা বিরোধিতা করেছিল; তারা একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই সংস্কারগুলো গ্রহণ করার জন্য প্রস্তাব করেছিল। এখানে সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত আদেশ দেওয়ার ওপর দৃঢ় ছিলেন ড. ইউনূস। এ জন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই সনদ আদেশ প্রধান উপদেষ্টার জারি করা, নোট অব ডিসেন্টের ব্যাপারে দলভেদে তারতম্য না করা এবং গণভোটের ফলাফলকে বাধ্যতামূলক করা—এই তিন বিষয়ের মীমাংসা না হওয়ায় আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকি। তবে জুলাই সনদ আদেশের যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে আমাদের তোলা আপত্তির দুটি বিষয় একরকম সুরাহা করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রপতিই আদেশ জারি করেছেন। এটা আদেশের নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন।’

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আদেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দলের দাবি পূরণের চেষ্টা দেখা গেছে। দলগুলোর দাবি পূরণে সরকারের ভারসাম্যমূলক নীতির প্রতিফলন আছে এই আদেশে।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট করার কথা বলা হয়েছে। এটি বিএনপির দাবি ছিল। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে (পিআর) উচ্চকক্ষ, তত্ত্বাবধায়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) কার্যকর থাকবে না, যা জামায়াত ও এনসিপির দাবির পক্ষে গেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সনদে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া ৮৪টি বিষয় রাখা হয়। যেগুলোর মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব রয়েছে। সনদের অঙ্গীকারনামায় গত ১৭ অক্টোবর সই করে বিএনপি, জামায়াতসহ সংলাপে অংশ নেওয়া ২৪টি দল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা, গণভোটে সনদে আপত্তি থাকবে না এবং আদেশ প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারির দাবি তুলে সেদিন স্বাক্ষর করেনি এনসিপি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির আলোচনার শুরুতেই বিরোধিতা করেছিল বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের আদেশ জারির কোনো ক্ষমতা নেই। রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন দিয়ে গণভোট করার দাবি করেছিল বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি আদেশ জারির দাবি করে আসছিল। তবে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নামে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়। আদেশে খুশি হলেও তা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে হওয়ায় মনঃক্ষুণ্ন এনসিপি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে জামায়াতসহ সমমনা আটটি দল। অন্যদিকে বিএনপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের দাবি জানিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার জারি করা আদেশে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের দিন গণভোটের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করছে জামায়াত।
সংলাপে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাবের সমাধান হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ৩০টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকি ১৮টি প্রস্তাবে দলগুলোর আপত্তি ছিল। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। সেখানে বলা হয়, গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে সনদে থাকা দলগুলোর আপত্তি কার্যকর হবে না। বিএনপি এই বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে। দলটি সুপারিশকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বলে দাবি করে তখন। তবে কমিশনের সুপারিশে খুশি ছিল জামায়াত ও এনসিপি। পরে সরকার কমিশনের সুপারিশের কিছুটা সংশোধন করে সাতটি প্রস্তাবে আপত্তি রাখেনি। প্রস্তাবগুলো হলো—সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের গঠন; সংবিধান সংশোধন (সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ), তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা; ন্যায়পাল নিয়োগ; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে বাছাইয়ে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দল) এবং সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতার সমন্বয়ে বাছাই কমিটি গঠনে দলগুলো একমত হয়েছে। তবে বাছাই কমিটি একমত না হলে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট থেকে দুজন বিচারপতিকে কমিটিতে সমন্বয় করা হবে, যারা র্যাংকড চয়েজ (ক্রমভিত্তিক) ভোটিং পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবেন। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো র্যাংকড চয়েজের বিরোধিতা করে সংসদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পক্ষে অবস্থান নেয়। এখন গণভোটে হ্যাঁ জয়যুক্ত হলে এই প্রস্তাবে বিএনপির আপত্তি কার্যকর থাকবে না।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হলেও কমিশন প্রস্তাবিত পিআরে উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনীর ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে দলগুলোর মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা যেতে পারে এবং উচ্চকক্ষকে সংবিধান সংশোধনীর সুযোগ দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পিআরের উচ্চকক্ষ এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে। আদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদনের কথা বলা আছে।
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ন্যায়পাল; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগের বাছাই কমিটির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হবে। যে কমিটিতে সরকারি দল, বিরোধী দল, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি থাকবে। জামায়াত, এনসিপি প্রস্তাবের পক্ষে ছিল। বিএনপি সংবিধান নয়, আইনের মাধ্যমে নিয়োগের পক্ষে ছিল। জারি করা আদেশ অনুযায়ী গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে বিএনপির আপত্তি থাকবে না।
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিষয়টি বিএনপির আপত্তি থাকলেও একমত ছিল জামায়াত ও এনসিপি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থ বিল এবং আস্থা ভোট ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল একমত হয়েছিল। বিএনপিসহ তার সমমনা দলগুলো এই দুটি বিধানের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন ও জাতীয় নিরাপত্তায় (যুদ্ধ পরিস্থিতি) এমপিদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়ার বিপক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি উল্লেখ করার প্রস্তাব করে কমিশন। বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সমমনা দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করার কথা জানিয়েছে। সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, বাসদ-মার্ক্সবাদী বিদ্যমান সংবিধানে থাকা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে বিষয়গুলো রাখার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
গণভোটের ফল ইতিবাচক হলে আগামী সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা আছে আদেশে। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে পরিষদের সদস্য হিসেবেও শপথ নেবেন। তাঁরা প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবেন। সংবিধান সংস্কার শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। জামায়াত ও এনসিপি পরিষদ গঠনের পক্ষে থাকলেও বিএনপি এর বিপক্ষে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব যাতে খর্ব না হয়, সে জন্য আমরা কোনো আরোপিত আইন দিয়ে, আদেশ দিয়ে, কোনো রকমের জবরদস্তিমূলক প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে দিতে চাই না।’
রাজধানীর মগবাজারে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক আট দলের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিএনপি কখনোই আদেশ বা আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার ব্যাপারে একমত ছিল না। তারা বিরোধিতা করেছিল; তারা একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই সংস্কারগুলো গ্রহণ করার জন্য প্রস্তাব করেছিল। এখানে সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত আদেশ দেওয়ার ওপর দৃঢ় ছিলেন ড. ইউনূস। এ জন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই সনদ আদেশ প্রধান উপদেষ্টার জারি করা, নোট অব ডিসেন্টের ব্যাপারে দলভেদে তারতম্য না করা এবং গণভোটের ফলাফলকে বাধ্যতামূলক করা—এই তিন বিষয়ের মীমাংসা না হওয়ায় আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকি। তবে জুলাই সনদ আদেশের যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে আমাদের তোলা আপত্তির দুটি বিষয় একরকম সুরাহা করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রপতিই আদেশ জারি করেছেন। এটা আদেশের নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন।’
তানিম আহমেদ, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আদেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দলের দাবি পূরণের চেষ্টা দেখা গেছে। দলগুলোর দাবি পূরণে সরকারের ভারসাম্যমূলক নীতির প্রতিফলন আছে এই আদেশে।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট করার কথা বলা হয়েছে। এটি বিএনপির দাবি ছিল। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে (পিআর) উচ্চকক্ষ, তত্ত্বাবধায়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) কার্যকর থাকবে না, যা জামায়াত ও এনসিপির দাবির পক্ষে গেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সনদে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া ৮৪টি বিষয় রাখা হয়। যেগুলোর মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব রয়েছে। সনদের অঙ্গীকারনামায় গত ১৭ অক্টোবর সই করে বিএনপি, জামায়াতসহ সংলাপে অংশ নেওয়া ২৪টি দল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা, গণভোটে সনদে আপত্তি থাকবে না এবং আদেশ প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারির দাবি তুলে সেদিন স্বাক্ষর করেনি এনসিপি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির আলোচনার শুরুতেই বিরোধিতা করেছিল বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের আদেশ জারির কোনো ক্ষমতা নেই। রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন দিয়ে গণভোট করার দাবি করেছিল বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি আদেশ জারির দাবি করে আসছিল। তবে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নামে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়। আদেশে খুশি হলেও তা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে হওয়ায় মনঃক্ষুণ্ন এনসিপি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে জামায়াতসহ সমমনা আটটি দল। অন্যদিকে বিএনপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের দাবি জানিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার জারি করা আদেশে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের দিন গণভোটের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করছে জামায়াত।
সংলাপে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাবের সমাধান হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ৩০টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকি ১৮টি প্রস্তাবে দলগুলোর আপত্তি ছিল। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। সেখানে বলা হয়, গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে সনদে থাকা দলগুলোর আপত্তি কার্যকর হবে না। বিএনপি এই বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে। দলটি সুপারিশকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বলে দাবি করে তখন। তবে কমিশনের সুপারিশে খুশি ছিল জামায়াত ও এনসিপি। পরে সরকার কমিশনের সুপারিশের কিছুটা সংশোধন করে সাতটি প্রস্তাবে আপত্তি রাখেনি। প্রস্তাবগুলো হলো—সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের গঠন; সংবিধান সংশোধন (সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ), তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা; ন্যায়পাল নিয়োগ; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে বাছাইয়ে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দল) এবং সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতার সমন্বয়ে বাছাই কমিটি গঠনে দলগুলো একমত হয়েছে। তবে বাছাই কমিটি একমত না হলে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট থেকে দুজন বিচারপতিকে কমিটিতে সমন্বয় করা হবে, যারা র্যাংকড চয়েজ (ক্রমভিত্তিক) ভোটিং পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবেন। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো র্যাংকড চয়েজের বিরোধিতা করে সংসদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পক্ষে অবস্থান নেয়। এখন গণভোটে হ্যাঁ জয়যুক্ত হলে এই প্রস্তাবে বিএনপির আপত্তি কার্যকর থাকবে না।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হলেও কমিশন প্রস্তাবিত পিআরে উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনীর ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে দলগুলোর মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা যেতে পারে এবং উচ্চকক্ষকে সংবিধান সংশোধনীর সুযোগ দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পিআরের উচ্চকক্ষ এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে। আদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদনের কথা বলা আছে।
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ন্যায়পাল; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগের বাছাই কমিটির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হবে। যে কমিটিতে সরকারি দল, বিরোধী দল, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি থাকবে। জামায়াত, এনসিপি প্রস্তাবের পক্ষে ছিল। বিএনপি সংবিধান নয়, আইনের মাধ্যমে নিয়োগের পক্ষে ছিল। জারি করা আদেশ অনুযায়ী গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে বিএনপির আপত্তি থাকবে না।
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিষয়টি বিএনপির আপত্তি থাকলেও একমত ছিল জামায়াত ও এনসিপি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থ বিল এবং আস্থা ভোট ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল একমত হয়েছিল। বিএনপিসহ তার সমমনা দলগুলো এই দুটি বিধানের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন ও জাতীয় নিরাপত্তায় (যুদ্ধ পরিস্থিতি) এমপিদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়ার বিপক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি উল্লেখ করার প্রস্তাব করে কমিশন। বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সমমনা দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করার কথা জানিয়েছে। সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, বাসদ-মার্ক্সবাদী বিদ্যমান সংবিধানে থাকা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে বিষয়গুলো রাখার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
গণভোটের ফল ইতিবাচক হলে আগামী সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা আছে আদেশে। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে পরিষদের সদস্য হিসেবেও শপথ নেবেন। তাঁরা প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবেন। সংবিধান সংস্কার শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। জামায়াত ও এনসিপি পরিষদ গঠনের পক্ষে থাকলেও বিএনপি এর বিপক্ষে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব যাতে খর্ব না হয়, সে জন্য আমরা কোনো আরোপিত আইন দিয়ে, আদেশ দিয়ে, কোনো রকমের জবরদস্তিমূলক প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে দিতে চাই না।’
রাজধানীর মগবাজারে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক আট দলের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিএনপি কখনোই আদেশ বা আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার ব্যাপারে একমত ছিল না। তারা বিরোধিতা করেছিল; তারা একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই সংস্কারগুলো গ্রহণ করার জন্য প্রস্তাব করেছিল। এখানে সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত আদেশ দেওয়ার ওপর দৃঢ় ছিলেন ড. ইউনূস। এ জন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই সনদ আদেশ প্রধান উপদেষ্টার জারি করা, নোট অব ডিসেন্টের ব্যাপারে দলভেদে তারতম্য না করা এবং গণভোটের ফলাফলকে বাধ্যতামূলক করা—এই তিন বিষয়ের মীমাংসা না হওয়ায় আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকি। তবে জুলাই সনদ আদেশের যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে আমাদের তোলা আপত্তির দুটি বিষয় একরকম সুরাহা করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রপতিই আদেশ জারি করেছেন। এটা আদেশের নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন।’

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আদেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দলের দাবি পূরণের চেষ্টা দেখা গেছে। দলগুলোর দাবি পূরণে সরকারের ভারসাম্যমূলক নীতির প্রতিফলন আছে এই আদেশে।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট করার কথা বলা হয়েছে। এটি বিএনপির দাবি ছিল। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে (পিআর) উচ্চকক্ষ, তত্ত্বাবধায়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) কার্যকর থাকবে না, যা জামায়াত ও এনসিপির দাবির পক্ষে গেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সনদে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া ৮৪টি বিষয় রাখা হয়। যেগুলোর মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব রয়েছে। সনদের অঙ্গীকারনামায় গত ১৭ অক্টোবর সই করে বিএনপি, জামায়াতসহ সংলাপে অংশ নেওয়া ২৪টি দল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা, গণভোটে সনদে আপত্তি থাকবে না এবং আদেশ প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারির দাবি তুলে সেদিন স্বাক্ষর করেনি এনসিপি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির আলোচনার শুরুতেই বিরোধিতা করেছিল বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের আদেশ জারির কোনো ক্ষমতা নেই। রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন দিয়ে গণভোট করার দাবি করেছিল বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি আদেশ জারির দাবি করে আসছিল। তবে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নামে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়। আদেশে খুশি হলেও তা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে হওয়ায় মনঃক্ষুণ্ন এনসিপি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে জামায়াতসহ সমমনা আটটি দল। অন্যদিকে বিএনপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের দাবি জানিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার জারি করা আদেশে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের দিন গণভোটের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করছে জামায়াত।
সংলাপে সংবিধানসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাবের সমাধান হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ৩০টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকি ১৮টি প্রস্তাবে দলগুলোর আপত্তি ছিল। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। সেখানে বলা হয়, গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে সনদে থাকা দলগুলোর আপত্তি কার্যকর হবে না। বিএনপি এই বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে। দলটি সুপারিশকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বলে দাবি করে তখন। তবে কমিশনের সুপারিশে খুশি ছিল জামায়াত ও এনসিপি। পরে সরকার কমিশনের সুপারিশের কিছুটা সংশোধন করে সাতটি প্রস্তাবে আপত্তি রাখেনি। প্রস্তাবগুলো হলো—সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের গঠন; সংবিধান সংশোধন (সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ), তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা; ন্যায়পাল নিয়োগ; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে বাছাইয়ে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দল) এবং সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতার সমন্বয়ে বাছাই কমিটি গঠনে দলগুলো একমত হয়েছে। তবে বাছাই কমিটি একমত না হলে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট থেকে দুজন বিচারপতিকে কমিটিতে সমন্বয় করা হবে, যারা র্যাংকড চয়েজ (ক্রমভিত্তিক) ভোটিং পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবেন। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো র্যাংকড চয়েজের বিরোধিতা করে সংসদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পক্ষে অবস্থান নেয়। এখন গণভোটে হ্যাঁ জয়যুক্ত হলে এই প্রস্তাবে বিএনপির আপত্তি কার্যকর থাকবে না।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হলেও কমিশন প্রস্তাবিত পিআরে উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনীর ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে দলগুলোর মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা যেতে পারে এবং উচ্চকক্ষকে সংবিধান সংশোধনীর সুযোগ দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পিআরের উচ্চকক্ষ এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে। আদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদনের কথা বলা আছে।
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ন্যায়পাল; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগের বাছাই কমিটির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হবে। যে কমিটিতে সরকারি দল, বিরোধী দল, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি থাকবে। জামায়াত, এনসিপি প্রস্তাবের পক্ষে ছিল। বিএনপি সংবিধান নয়, আইনের মাধ্যমে নিয়োগের পক্ষে ছিল। জারি করা আদেশ অনুযায়ী গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে বিএনপির আপত্তি থাকবে না।
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিষয়টি বিএনপির আপত্তি থাকলেও একমত ছিল জামায়াত ও এনসিপি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থ বিল এবং আস্থা ভোট ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল একমত হয়েছিল। বিএনপিসহ তার সমমনা দলগুলো এই দুটি বিধানের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন ও জাতীয় নিরাপত্তায় (যুদ্ধ পরিস্থিতি) এমপিদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়ার বিপক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি উল্লেখ করার প্রস্তাব করে কমিশন। বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সমমনা দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করার কথা জানিয়েছে। সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, বাসদ-মার্ক্সবাদী বিদ্যমান সংবিধানে থাকা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে বিষয়গুলো রাখার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিজয়ী দলগুলো সংলাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
গণভোটের ফল ইতিবাচক হলে আগামী সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা আছে আদেশে। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে পরিষদের সদস্য হিসেবেও শপথ নেবেন। তাঁরা প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবেন। সংবিধান সংস্কার শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। জামায়াত ও এনসিপি পরিষদ গঠনের পক্ষে থাকলেও বিএনপি এর বিপক্ষে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব যাতে খর্ব না হয়, সে জন্য আমরা কোনো আরোপিত আইন দিয়ে, আদেশ দিয়ে, কোনো রকমের জবরদস্তিমূলক প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে দিতে চাই না।’
রাজধানীর মগবাজারে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক আট দলের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিএনপি কখনোই আদেশ বা আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার ব্যাপারে একমত ছিল না। তারা বিরোধিতা করেছিল; তারা একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই সংস্কারগুলো গ্রহণ করার জন্য প্রস্তাব করেছিল। এখানে সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত আদেশ দেওয়ার ওপর দৃঢ় ছিলেন ড. ইউনূস। এ জন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই সনদ আদেশ প্রধান উপদেষ্টার জারি করা, নোট অব ডিসেন্টের ব্যাপারে দলভেদে তারতম্য না করা এবং গণভোটের ফলাফলকে বাধ্যতামূলক করা—এই তিন বিষয়ের মীমাংসা না হওয়ায় আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকি। তবে জুলাই সনদ আদেশের যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে আমাদের তোলা আপত্তির দুটি বিষয় একরকম সুরাহা করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রপতিই আদেশ জারি করেছেন। এটা আদেশের নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন।’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫।
২০ দিন আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫।
২০ দিন আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫।
২০ দিন আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫।
২০ দিন আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে