নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন আজ বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নেন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাঁদের শপথ পড়ান। আরো ৩ জন উপদেষ্টা ঢাকায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তাঁদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, এম সাখাওয়াত হোসেন, আ ফ ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূরজাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া আজ শপথ নিয়েছেন।
এছাড়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক–ই–আজম, সুপ্রদীপ চাকমা ও বিধান রঞ্জন রায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। পরে ওই ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন ইউনূস।
১৯৪০ সালের ২৮শে জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ পাশ করেন।
পড়াশোনা শেষে তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিকস-এ যোগ দেন গবেষণা সহকারী হিসাবে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পরে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই ১৯৭৬ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষুদ্রঋণের ধারণার মাধ্যমে সারাবিশ্বে একটি সাড়া ফেলে গ্রামীণ ব্যাংক।
পরবর্তীতে ‘ক্ষুদ্রঋণ’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারনা নিয়ে বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালের ২রা অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে আনুষ্ঠানিক জন্ম হয় গ্রামীণ ব্যাংকের। গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচ জনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে এবং এ ঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।
ব্যাংকের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্রদের রক্ষা করতে ব্যাংক অন্যান্য পদ্ধতিও প্রয়োগ করে। ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে যোগ হয় গৃহঋণ, মৎস্য খামার এবং সেচ ঋণ প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা। গরিবের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য উন্নত বিশ্ব এমন কি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশসমূহকে গ্রামীণের এই মডেল ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এই কার্যক্রম বিস্তৃতি লাভ করলে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি হয় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘রক্তচোষা’ ও ‘সুদখোর’ বলতে দেখা গেছে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের।
১৬ উপদেষ্টার পরিচিতি
১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
২. আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুলের জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।
আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল’ সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন।
৩. আদিলুর রহমান খান
আদিলুর রহমান খানের জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২। একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। আদিলুর রহমান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে, হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ’বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য খানের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
৪. হাসান আরিফ
আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
৫. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার ছিলেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন।
৬. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৫ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘পরিবেশ পুরস্কার’ এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ প্রাপ্ত এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট’ খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী।
৭. শারমিন মুরশিদ
ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ।
৮. ফারুক-ই-আজম
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত ওই অভিযানিক দলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান।
৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।
৯. এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)।
১০. সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
১১. বিধান রঞ্জন রায়
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাইস্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানে দায়িত্ব পালন করেন।
১২. আ ফ ম খালিদ হাসান
আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত)। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।
১৩. ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতার একজন লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক তিনি।
১৪. নুরজাহান বেগম
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান। তিনি বেগম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূলে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গ্রামীণ পরিবারের অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম ‘প্রিন্সিপাল’ ছিলেন। তিনি অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক ও মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৮ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
১৫. মো. নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। ছোট এক ভাই রয়েছে তাঁর। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
১৬. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন আজ বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নেন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাঁদের শপথ পড়ান। আরো ৩ জন উপদেষ্টা ঢাকায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তাঁদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, এম সাখাওয়াত হোসেন, আ ফ ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূরজাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া আজ শপথ নিয়েছেন।
এছাড়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক–ই–আজম, সুপ্রদীপ চাকমা ও বিধান রঞ্জন রায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। পরে ওই ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন ইউনূস।
১৯৪০ সালের ২৮শে জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ পাশ করেন।
পড়াশোনা শেষে তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিকস-এ যোগ দেন গবেষণা সহকারী হিসাবে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পরে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই ১৯৭৬ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষুদ্রঋণের ধারণার মাধ্যমে সারাবিশ্বে একটি সাড়া ফেলে গ্রামীণ ব্যাংক।
পরবর্তীতে ‘ক্ষুদ্রঋণ’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারনা নিয়ে বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালের ২রা অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে আনুষ্ঠানিক জন্ম হয় গ্রামীণ ব্যাংকের। গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচ জনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে এবং এ ঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।
ব্যাংকের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্রদের রক্ষা করতে ব্যাংক অন্যান্য পদ্ধতিও প্রয়োগ করে। ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে যোগ হয় গৃহঋণ, মৎস্য খামার এবং সেচ ঋণ প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা। গরিবের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য উন্নত বিশ্ব এমন কি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশসমূহকে গ্রামীণের এই মডেল ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এই কার্যক্রম বিস্তৃতি লাভ করলে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি হয় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘রক্তচোষা’ ও ‘সুদখোর’ বলতে দেখা গেছে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের।
১৬ উপদেষ্টার পরিচিতি
১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
২. আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুলের জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।
আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল’ সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন।
৩. আদিলুর রহমান খান
আদিলুর রহমান খানের জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২। একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। আদিলুর রহমান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে, হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ’বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য খানের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
৪. হাসান আরিফ
আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
৫. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার ছিলেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন।
৬. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৫ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘পরিবেশ পুরস্কার’ এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ প্রাপ্ত এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট’ খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী।
৭. শারমিন মুরশিদ
ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ।
৮. ফারুক-ই-আজম
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত ওই অভিযানিক দলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান।
৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।
৯. এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)।
১০. সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
১১. বিধান রঞ্জন রায়
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাইস্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানে দায়িত্ব পালন করেন।
১২. আ ফ ম খালিদ হাসান
আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত)। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।
১৩. ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতার একজন লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক তিনি।
১৪. নুরজাহান বেগম
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান। তিনি বেগম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূলে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গ্রামীণ পরিবারের অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম ‘প্রিন্সিপাল’ ছিলেন। তিনি অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক ও মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৮ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
১৫. মো. নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। ছোট এক ভাই রয়েছে তাঁর। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
১৬. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন আজ বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নেন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাঁদের শপথ পড়ান। আরো ৩ জন উপদেষ্টা ঢাকায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তাঁদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, এম সাখাওয়াত হোসেন, আ ফ ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূরজাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া আজ শপথ নিয়েছেন।
এছাড়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক–ই–আজম, সুপ্রদীপ চাকমা ও বিধান রঞ্জন রায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। পরে ওই ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন ইউনূস।
১৯৪০ সালের ২৮শে জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ পাশ করেন।
পড়াশোনা শেষে তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিকস-এ যোগ দেন গবেষণা সহকারী হিসাবে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পরে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই ১৯৭৬ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষুদ্রঋণের ধারণার মাধ্যমে সারাবিশ্বে একটি সাড়া ফেলে গ্রামীণ ব্যাংক।
পরবর্তীতে ‘ক্ষুদ্রঋণ’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারনা নিয়ে বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালের ২রা অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে আনুষ্ঠানিক জন্ম হয় গ্রামীণ ব্যাংকের। গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচ জনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে এবং এ ঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।
ব্যাংকের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্রদের রক্ষা করতে ব্যাংক অন্যান্য পদ্ধতিও প্রয়োগ করে। ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে যোগ হয় গৃহঋণ, মৎস্য খামার এবং সেচ ঋণ প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা। গরিবের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য উন্নত বিশ্ব এমন কি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশসমূহকে গ্রামীণের এই মডেল ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এই কার্যক্রম বিস্তৃতি লাভ করলে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি হয় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘রক্তচোষা’ ও ‘সুদখোর’ বলতে দেখা গেছে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের।
১৬ উপদেষ্টার পরিচিতি
১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
২. আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুলের জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।
আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল’ সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন।
৩. আদিলুর রহমান খান
আদিলুর রহমান খানের জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২। একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। আদিলুর রহমান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে, হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ’বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য খানের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
৪. হাসান আরিফ
আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
৫. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার ছিলেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন।
৬. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৫ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘পরিবেশ পুরস্কার’ এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ প্রাপ্ত এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট’ খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী।
৭. শারমিন মুরশিদ
ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ।
৮. ফারুক-ই-আজম
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত ওই অভিযানিক দলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান।
৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।
৯. এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)।
১০. সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
১১. বিধান রঞ্জন রায়
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাইস্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানে দায়িত্ব পালন করেন।
১২. আ ফ ম খালিদ হাসান
আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত)। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।
১৩. ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতার একজন লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক তিনি।
১৪. নুরজাহান বেগম
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান। তিনি বেগম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূলে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গ্রামীণ পরিবারের অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম ‘প্রিন্সিপাল’ ছিলেন। তিনি অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক ও মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৮ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
১৫. মো. নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। ছোট এক ভাই রয়েছে তাঁর। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
১৬. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন আজ বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নেন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাঁদের শপথ পড়ান। আরো ৩ জন উপদেষ্টা ঢাকায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তাঁদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, এম সাখাওয়াত হোসেন, আ ফ ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূরজাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া আজ শপথ নিয়েছেন।
এছাড়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক–ই–আজম, সুপ্রদীপ চাকমা ও বিধান রঞ্জন রায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। পরে ওই ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন ইউনূস।
১৯৪০ সালের ২৮শে জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ পাশ করেন।
পড়াশোনা শেষে তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিকস-এ যোগ দেন গবেষণা সহকারী হিসাবে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পরে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই ১৯৭৬ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষুদ্রঋণের ধারণার মাধ্যমে সারাবিশ্বে একটি সাড়া ফেলে গ্রামীণ ব্যাংক।
পরবর্তীতে ‘ক্ষুদ্রঋণ’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারনা নিয়ে বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালের ২রা অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে আনুষ্ঠানিক জন্ম হয় গ্রামীণ ব্যাংকের। গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচ জনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে এবং এ ঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।
ব্যাংকের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্রদের রক্ষা করতে ব্যাংক অন্যান্য পদ্ধতিও প্রয়োগ করে। ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে যোগ হয় গৃহঋণ, মৎস্য খামার এবং সেচ ঋণ প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা। গরিবের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য উন্নত বিশ্ব এমন কি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশসমূহকে গ্রামীণের এই মডেল ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এই কার্যক্রম বিস্তৃতি লাভ করলে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি হয় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘রক্তচোষা’ ও ‘সুদখোর’ বলতে দেখা গেছে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের।
১৬ উপদেষ্টার পরিচিতি
১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
২. আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুলের জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।
আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল’ সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন।
৩. আদিলুর রহমান খান
আদিলুর রহমান খানের জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২। একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। আদিলুর রহমান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে, হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ’বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য খানের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
৪. হাসান আরিফ
আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
৫. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার ছিলেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন।
৬. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৫ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘পরিবেশ পুরস্কার’ এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ প্রাপ্ত এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট’ খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী।
৭. শারমিন মুরশিদ
ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ।
৮. ফারুক-ই-আজম
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত ওই অভিযানিক দলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান।
৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।
৯. এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)।
১০. সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
১১. বিধান রঞ্জন রায়
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাইস্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানে দায়িত্ব পালন করেন।
১২. আ ফ ম খালিদ হাসান
আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত)। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।
১৩. ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতার একজন লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক তিনি।
১৪. নুরজাহান বেগম
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান। তিনি বেগম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূলে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গ্রামীণ পরিবারের অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম ‘প্রিন্সিপাল’ ছিলেন। তিনি অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক ও মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৮ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
১৫. মো. নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। ছোট এক ভাই রয়েছে তাঁর। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
১৬. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।

দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
৮ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হারুন জামিল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী লিথো এই প্রতিবাদ জানান।
বিপিজেএ নেতারা বলেন, সংবাদপত্রের ওপর যেকোনো ধরনের হামলা স্বাধীন মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য।
বিবৃতিতে তাঁরা উল্লেখ করেন, সমাজে ভিন্নমত থাকবেই এবং মতের ভিন্নতা একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে সহায়তা করে। সাংবাদিকতা কোনো অপরাধমূলক কাজ নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার দায় দুষ্কৃতকারীদের। নেতারা বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢালাওভাবে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা চরম অন্যায়।
বিবৃতিতে নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে যখন একটি সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপচেষ্টা হতে পারে।
বিপিজেএ অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হারুন জামিল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী লিথো এই প্রতিবাদ জানান।
বিপিজেএ নেতারা বলেন, সংবাদপত্রের ওপর যেকোনো ধরনের হামলা স্বাধীন মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য।
বিবৃতিতে তাঁরা উল্লেখ করেন, সমাজে ভিন্নমত থাকবেই এবং মতের ভিন্নতা একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে সহায়তা করে। সাংবাদিকতা কোনো অপরাধমূলক কাজ নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার দায় দুষ্কৃতকারীদের। নেতারা বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢালাওভাবে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা চরম অন্যায়।
বিবৃতিতে নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে যখন একটি সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপচেষ্টা হতে পারে।
বিপিজেএ অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৬ উপদেষ্টা নিয়ে তার সরকারের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে শপথগ্রহণ করে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন তিনি।
০৮ আগস্ট ২০২৪
দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
৮ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জ্ঞাপন ও শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
এতে বলা হয়, ‘এই হামলা শুধু গণমাধ্যমের ওপর নয়, এটা আমাদের সমাজের ওপর, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আক্রমণ। সর্বোপরি বাংলাদেশের ওপর আক্রমণ। গভীর রাতের ওই হামলায় প্রতিষ্ঠান দুটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও সম্পদহানির পাশাপাশি সংবাদকর্মীদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির পাশাপাশি রাষ্ট্রের দায় এবং দায়িত্বহীনতারও স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব মনে করে, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শুরু থেকেই মব ভায়োলেন্স (সংগঠিত) প্রতিরোধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার যে ধারাবাহিকতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, সর্বশেষ ঘটনা তার আরেকটি ভয়াবহ উদাহরণ। গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা প্রমাণ করে যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’
একই সঙ্গে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব ছায়ানটে হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামকে ফোন করে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন এবং পাশে আছেন বলে জানান। তবে এই হামলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। বিবৃতি বা আশ্বাস নয়, অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারসহ সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তায় ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।
পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।

দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জ্ঞাপন ও শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
এতে বলা হয়, ‘এই হামলা শুধু গণমাধ্যমের ওপর নয়, এটা আমাদের সমাজের ওপর, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আক্রমণ। সর্বোপরি বাংলাদেশের ওপর আক্রমণ। গভীর রাতের ওই হামলায় প্রতিষ্ঠান দুটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও সম্পদহানির পাশাপাশি সংবাদকর্মীদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির পাশাপাশি রাষ্ট্রের দায় এবং দায়িত্বহীনতারও স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব মনে করে, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শুরু থেকেই মব ভায়োলেন্স (সংগঠিত) প্রতিরোধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার যে ধারাবাহিকতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, সর্বশেষ ঘটনা তার আরেকটি ভয়াবহ উদাহরণ। গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা প্রমাণ করে যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’
একই সঙ্গে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব ছায়ানটে হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামকে ফোন করে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন এবং পাশে আছেন বলে জানান। তবে এই হামলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। বিবৃতি বা আশ্বাস নয়, অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারসহ সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তায় ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।
পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৬ উপদেষ্টা নিয়ে তার সরকারের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে শপথগ্রহণ করে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন তিনি।
০৮ আগস্ট ২০২৪
দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
৫ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
৯ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হাদির মৃত্যুর ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বচ্ছ তদন্ত করার জন্য আমি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দায়ীদের জবাবদিহি এবং আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।’
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ফলকার তুর্ক সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ কেবল বিভাজন বাড়াবে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।’
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই সময়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল উল্লেখ করে ফলকার তুর্ক বলেন, ‘এই সময়ে এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি, যেখানে জনজীবনে সবার নিরাপদ অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনভাবে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকবে।’
ফলকার তুর্ক আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ অস্থিরতা যাতে আর না বাড়ে, সে বিষয়ে সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হাদির মৃত্যুর ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বচ্ছ তদন্ত করার জন্য আমি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দায়ীদের জবাবদিহি এবং আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।’
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ফলকার তুর্ক সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ কেবল বিভাজন বাড়াবে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।’
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই সময়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল উল্লেখ করে ফলকার তুর্ক বলেন, ‘এই সময়ে এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি, যেখানে জনজীবনে সবার নিরাপদ অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনভাবে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকবে।’
ফলকার তুর্ক আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ অস্থিরতা যাতে আর না বাড়ে, সে বিষয়ে সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৬ উপদেষ্টা নিয়ে তার সরকারের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে শপথগ্রহণ করে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন তিনি।
০৮ আগস্ট ২০২৪
দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
৮ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।
টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।
টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৬ উপদেষ্টা নিয়ে তার সরকারের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে শপথগ্রহণ করে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন তিনি।
০৮ আগস্ট ২০২৪
দেশের পাঠকপ্রিয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে নাজেহাল ও হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
৮ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
৯ ঘণ্টা আগে