Ajker Patrika

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন যারা, কার কী পরিচিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৪, ২৩: ৩৬
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন যারা, কার কী পরিচিতি

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৪ জন আজ বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নেন।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাঁদের শপথ পড়ান। আরো ৩ জন উপদেষ্টা ঢাকায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তাঁদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, এম সাখাওয়াত হোসেন, আ ফ ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূরজাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া আজ শপথ নিয়েছেন।
এছাড়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক–ই–আজম, সুপ্রদীপ চাকমা ও বিধান রঞ্জন রায় উপস্থিত না থাকায় শপথ নিতে পারেননি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। পরে ওই ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন ইউনূস।

১৯৪০ সালের ২৮শে জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ পাশ করেন।

পড়াশোনা শেষে তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিকস-এ যোগ দেন গবেষণা সহকারী হিসাবে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পরে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন।

১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই ১৯৭৬ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষুদ্রঋণের ধারণার মাধ্যমে সারাবিশ্বে একটি সাড়া ফেলে গ্রামীণ ব্যাংক।

পরবর্তীতে ‘ক্ষুদ্রঋণ’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারনা নিয়ে বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালের ২রা অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে আনুষ্ঠানিক জন্ম হয় গ্রামীণ ব্যাংকের। গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচ জনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে এবং এ ঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে।

ব্যাংকের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্রদের রক্ষা করতে ব্যাংক অন্যান্য পদ্ধতিও প্রয়োগ করে। ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে যোগ হয় গৃহঋণ, মৎস্য খামার এবং সেচ ঋণ প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা। গরিবের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য উন্নত বিশ্ব এমন কি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশসমূহকে গ্রামীণের এই মডেল ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হয়।

অধ্যাপক ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এই কার্যক্রম বিস্তৃতি লাভ করলে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি হয় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘রক্তচোষা’ ও ‘সুদখোর’ বলতে দেখা গেছে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের।

১৬ উপদেষ্টার পরিচিতি

১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। 

২. আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুলের জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। 
আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল’ সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন। 

৩. আদিলুর রহমান খান
আদিলুর রহমান খানের জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২। একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। আদিলুর রহমান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। 

২০১৩ সালে, হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ’বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য খানের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। 

৪. হাসান আরিফ
আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। 

হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। 

৫. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার ছিলেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। 

৬. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৫ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘পরিবেশ পুরস্কার’ এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ প্রাপ্ত এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট’ খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী। 

৭. শারমিন মুরশিদ
ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ। 

৮. ফারুক-ই-আজম
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত ওই অভিযানিক দলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি। 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান। 

৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।

৯. এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)।  

১০. সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। 

১১. বিধান রঞ্জন রায়
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাইস্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানে দায়িত্ব পালন করেন। 

১২. আ ফ ম খালিদ হাসান
আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত)। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক। 

১৩. ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতার একজন লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক তিনি। 

১৪. নুরজাহান বেগম
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান। তিনি বেগম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূলে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গ্রামীণ পরিবারের অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম ‘প্রিন্সিপাল’ ছিলেন। তিনি অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক ও মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৮ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।

১৫. মো. নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। ছোট এক ভাই রয়েছে তাঁর। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন। 

১৬. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া 
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হামলা ও মব সহিংসতা: পুলিশের শীর্ষ পদগুলোয় রদবদল হতে পারে

  • প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা।
  • না ঠেকিয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততার অভিযোগ উঠেছে।
  • সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে পুলিশের শীর্ষ পদগুলোয় পরিবর্তনের প্রস্তাব।
  • পুলিশ সদর দপ্তরে নতুন দায়িত্বে ৬ ডিআইজি।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগ; ময়মনসিংহে দীপু হত্যাসহ সম্প্রতি কিছু ঘটনা ঠেকাতে ব্যর্থতায় পুলিশের সমালোচনা চলছে। কোনো কোনো ঘটনায় পুলিশের নির্লিপ্ততার অভিযোগও উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনারদের পরিবর্তনসহ পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কিছু পদে রদবদল হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনের আগেই শিগগির এই রদবদল হতে পারে বলে সরকারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

অবশ্য পুলিশ বলছে, দেশের বেশির ভাগ মানুষ আইন মানছে না। দেশের সংকটকালে মানুষ সহযোগিতা না করায় পুলিশ কাজ করতে পারছে না। আইন না মানা মানুষের সংখ্যা বেশি, পুলিশ সেখানে আইন প্রয়োগ করতে গেলে আরও সহিংসতার সৃষ্টি হয়।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গতকাল সোমবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইন মানার সংস্কৃতি তৈরি না হলে শুধু বলপ্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যাবে না। পুলিশের দিকে যারা তেড়ে আসছে, তারা কাদের প্রটেকশন পায়, সেটাও দেখতে হবে।

সূত্র জানায়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১০টার দিকে মারা যাওয়ার পর ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়। এর মধ্যে রাত ১২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো এবং কিছু দূরে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে হামলাকারীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে এবং কারওয়ান বাজারে বিক্ষোভের পর এই হামলা করা হলেও পুলিশ তা ঠেকাতে পারেনি। এ দুটি কার্যালয়ে দীর্ঘক্ষণ হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগ চললেও এসব ঠেকাতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশ মব বা দাঙ্গা প্রতিরোধে যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়, সেদিন তেমন কিছু অনুসরণ করেনি। কারওয়ান বাজারে মিছিল নিয়ে দুটি ভবনে হামলা চালালেও পুলিশ মিছিল ঠেকাতে কোনো ব্যারিকেড দেয়নি, লাঠিপেটা করেনি, কোনো কাঁদানে গ্যাসের শেল বা সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েনি।

একই অবস্থা দেখা গেছে ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবন ও তোপখানা রোডে উদীচীর কার্যালয়ে হামলার সময়েও।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ অ্যাকশনে গেলে গুলি হতো, দুই-চারজন মারা যেত। এরপর পুলিশের ওপর পাল্টা আক্রমণ হতো। এ কারণে সেদিন পুলিশ অ্যাকশনে যায়নি।

সরকারের একটি সূত্র জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলার আগে কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়। ওই বিক্ষোভের সময় সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সব ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই নির্দেশনা মাঠের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে পৌঁছায়নি।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৮ ডিসেম্বর রাতেই ময়মনসিংহের ভালুকার জামিরদিয়ায় পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড নামের কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ গাছে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে উত্তেজনা শুরু হলেও পুলিশ তা ঠেকাতে পারেনি। র‍্যাব বলেছে, দীপুকে তাঁর কর্মস্থলের কর্মকর্তাই উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেন।

এসব ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা শুরু হয়। সূত্র জানায়, এসব ঘটনার পর ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে পুলিশের কার্যক্রম ও ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। বৈঠকে ডিএমপি ও সিএমপির কমিশনারকে নির্বাচনের আগেই পরিবর্তনের প্রস্তাব ওঠে। পুলিশের শীর্ষ কমান্ডিং পদে আরও অভিজ্ঞ ও বাহিনীর কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন নিয়েও আলোচনা হয়।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, এসব সহিংসতা সংঘবদ্ধভাবে ঘটানো হয়েছে। এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টুলসগুলো কাজ করেনি। যা হয়েছে, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। পুলিশকে সক্রিয় করতে হবে। তারাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মূল বাহিনী। যদি এ রকম পরিস্থিতি থাকে, তাহলে নির্বাচন শঙ্কায় পড়বে।

অবশ্য নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি গতকাল বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে ইসি, রাজনৈতিক দল ও ভোটাররা এক কেন্দ্রবিন্দুতে।

পুলিশ সদর দপ্তরে নতুন দায়িত্বে ৬ ডিআইজি

পুলিশ সদর দপ্তরের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ ডিআইজির ছয়টি পদে রদবদল হয়েছে। বর্তমানে কর্মরত এবং সদ্য যোগদান করা ছয়জন ডিআইজিকে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গতকাল সোমবার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সই করা এক অফিস আদেশে এই রদবদল করা হয়। তাঁদের মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরের লজিস্টিকস বিভাগের ডিআইজি খোন্দকার নজমুল হাসানকে অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে, তাপতুন নাসরীনকে ডিআইজি হেডকোয়ার্টার্সে, আশিক সাঈদকে ডিআইজি ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টে, সারোয়ার মুর্শেদ শামীমকে লজিস্টিকসে, আতিকুর রহমানকে ফিন্যান্সে এবং মোস্তাফিজুর রহমানকে ডেভেলপমেন্টের ডিআইজি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে: মার্কিন বিশেষ দূতকে প্রধান উপদেষ্টা

বাসস, ঢাকা  
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়েই দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, যা স্বৈরাচারী শাসনামলে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।’

আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত সার্জিও গোরের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এই আলাপে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং তরুণ রাজনৈতিক কর্মী শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়।

ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী সার্জিও গোর সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। আলোচনার ফলে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

আলাপকালে মার্কিন বিশেষ দূত শহীদ ওসমান হাদির বৃহৎ জানাজার বিষয়টিও উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসনের সমর্থকেরা নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে এবং তাদের পলাতক নেতা সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন। তবে তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আর প্রায় ৫০ দিন বাকি। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে চাই। এটি যেন স্মরণীয় হয়, সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’

ফোনালাপের সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হিন্দুত্ববাদী বিক্ষোভের মুখে শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র বন্ধ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৪
আজ সোমবার দুপুরে হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে যান। ছবি: শিলিগুড়ি টাইমস
আজ সোমবার দুপুরে হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে যান। ছবি: শিলিগুড়ি টাইমস

পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র ভাঙচুর করেছেন হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), হিন্দু জাগরণ মঞ্চ ও শিলিগুড়ি মহানগর সংগঠনের সদস্যরা আজ সোমবার শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে ভাঙচুরের পর সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দিল্লি ও কলকাতার কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্র বাংলাদেশি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘ডিইউডিজিটাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কয়েক বছর ধরে শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের ঘটনার প্রতিবাদে শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে জমায়েত হন ভিএইচপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, শিলিগুড়ি মহানগর সংগঠনের শ তিনেক সদস্য। এরপর তাঁরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বাংলাদেশের ভিসা অফিস ঘেরাও করেন। বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ, দীপু দাসের হত্যার বিচার ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান।

পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধিদল ভিসা অফিসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এবং প্রতিবাদস্বরূপ ভিসা অফিস বন্ধ রাখতে বলে।

এ সময় প্রতিনিধিদলের এক সদস্য ডিইউডিজিটালের কর্মকর্তাকে ফোন করে বলেন, ‘আপনাকে একটাই অনুরোধ, এই অফিসের তালা খুলবেন না। আপনার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিন, এই অফিসের তালা খুলবে না। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হবে, আপনি এখানে ব্যবসা করবেন, সেটা হবে না। বাংলাদেশের ভিসাসংক্রান্ত ব্যানার অথবা বোর্ড আজকের মধ্যে সরিয়ে নিন।’

প্রতিনিধিদলের ওই সদস্য পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, তাঁরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে জানাবেন। বাংলাদেশে তাঁদের হিন্দু ভাইদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। এখান থেকে যেন কোনো ভারতীয়, কোনো হিন্দু বাংলাদেশে না যায়, ব্যবসা না করে, সেটা তাঁরা চান।

কলকাতা থেকে একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে ডিইউডিজিটাল আজ বেলা ৩টার আগেই ভিসা কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর পুনরায় ভিসা কেন্দ্র চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে শিলিগুড়িতে ওই ভিসা কেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদারের অনুরোধ জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কলকাতা দপ্তরে কূটনৈতিকপত্র পাঠিয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশন।

এদিকে আজ ভারতের দিল্লি ও আগরতলা মিশন থেকেও ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের সামনে এ-সংক্রান্ত নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎পুলিশ সদর দপ্তরে ৬ ডিআইজিকে রদবদল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৫
পুলিশ সদর দপ্তর। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ সদর দপ্তর। ছবি: সংগৃহীত

‎পুলিশ সদর দপ্তরের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ ছয়টি ডিআইজি পদে রদবদল করা হয়েছে। বর্তমানে কর্মরত ও সদ্য যোগদান করা ছয়জন ডিআইজিকে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়।‎

‎আজ সোমবার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সই করা এক অফিস আদেশে এ রদবদল করা হয়েছে।‎

‎ছয়জনের মধ্যে— পুলিশ সদরদপ্তরের লজিস্টিকস বিভাগের ডিআইজি খোন্দকার নজমুল হাসানকে অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে, তাপতুন নাসরীনকে ডিআইজি হেডকোয়ার্টার্সে, আশিক সাঈদকে ডিআইজি ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টে, সারোয়ার মুর্শেদ শামীমকে লজিস্টিকসে, আতিকুর রহমানকে ফিন্যান্সে এবং মোস্তাফিজুর রহমানকে ডেভেলপমেন্টের ডিআইজি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত