Ajker Patrika

রেলে টাকা দিচ্ছে না ভারত, ৫ প্রকল্পে অনিশ্চয়তা

  • তিন প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি
  • একটির মেয়াদ পাঁচবার বাড়িয়েও অসম্পূর্ণ
  • যোগাযোগ করলেও সাড়া নেই ঋণদাতা ব্যাংকের
  • জানুয়ারিতে চাওয়া হবে ভারতের মত
সৌগত বসু, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ১৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি), অর্থাৎ ঋণপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাঁচ প্রকল্পে ভারতীয় অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকমতো ঋণের অর্থ না পাওয়ায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তিনটি প্রকল্প শুরুই হয়নি। একটি প্রকল্পের কাজ পাঁচবার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি। থমকে যাওয়া অন্যটি নিজস্ব অর্থায়নেই করার কথা ভাবছে রেলওয়ে।

ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা শেখ হাসিনার পতনের পর এসব প্রকল্পের কাজে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। ৫ আগস্টের পর প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরে কয়েকটি প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদার নিজ দেশে চলে যান। রেলসূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এগুলোসহ রেলের বিভিন্ন প্রকল্প গুরুত্বসহকারে দেখছেন। তবে ইতিমধ্যে কয়েকবার আলোচনা হলেও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।

ভারতীয় ঋণের আওতায় রেলের মোট প্রকল্প ছয়টি। এর মধ্যে গত ১০ বছরে আলোর মুখ দেখেছে শুধু খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্প। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলপথ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি। সার্বিক অগ্রগতি মাত্র শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। খুলনা-দর্শনা রেলপথ নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথের কাজের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। কাজ চলমান ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইন ও কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ প্রকল্পের। প্রকল্পগুলোর মোট আর্থিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা।

এলওসি ঋণের শর্তে বলা হয়েছিল, প্রকল্পগুলোর ৭৫ শতাংশ অর্থায়নই হবে ভারত থেকে। বাকি ২৫ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ। ভারতীয় ঋণের পুরো অর্থ দেবে দেশটির এক্সিম ব্যাংক। চুক্তি অনুসারে প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ পণ্য-সেবাই ভারত থেকে আমদানি করতে হবে।

এলওসি অর্থাৎ লাইন অব ক্রেডিট হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের ঋণের ব্যবস্থা। নমনীয়তা এই ঋণের একটি সুবিধার দিক। সম্ভাব্য অসুবিধার মধ্যে রয়েছে সুদের উঁচুহার ও অতিরিক্ত ব্যয়ের আশঙ্কা।

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্পে অর্থছাড় হচ্ছে না

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ আগস্ট। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন থেকে বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন করা হয়। কিন্তু এর কাজ শুরুই হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঋণের অর্থছাড় নিয়ে ভারতের এক্সিম ব্যাংককে পাঁচটি চিঠি দিয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি। শর্ত অনুযায়ী এক্সিম ব্যাংক ঠিকাদারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা দিলে দরপত্র আহ্বান করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সে তালিকার জন্য গত বছরের অক্টোবরে চিঠি দেওয়া হলেও এখনো জবাব আসেনি।

প্রকল্পের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ফিরোজী গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো কিছুতে ভারতের সম্মতি চেয়ে চিঠি দিলে সময়মতো জবাব আসে না।’

ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

রেলে ভারতীয় ঋণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে ধরা হয় ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইন। ২০১২ সালে প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ার পর ১০ বছরেরও বেশি কেটে গেছে। দরপত্রেই লেগেছে ৬ বছর। সূত্র বলছে, এ প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৩৭ শতাংশ। এতে ভারতীয় ঋণ ২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, আর বাংলাদেশ দেবে ৫২১ কোটি টাকা।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়াকে ডাকা হয়েছিল। হাইকমিশন থেকে প্রাথমিকভাবে ভারতের এতে অর্থায়ন না করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত জুনে বাড়তি ঋণসহায়তার জন্য এক্সিম ব্যাংকে আবেদন জানালেও তাদের সাড়া মেলেনি। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করলেও আশানুরূপ বার্তা পাওয়া যায়নি।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারতীয় দূতাবাসে বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পারিশ্রমিক পুনর্মূল্যায়ন এবং ভারত সরকারের নতুন এলওসি নীতিমালার শর্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রকল্পে কেনাকাটা, সমীক্ষা, অর্থ ব্যয় মূল্যায়নে ভারত কিছু শর্ত আরোপের কথা জানিয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় এসব শর্তের উল্লেখ ছিল না। সর্বশেষ গত ২৪ নভেম্বর রেলওয়েতে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এক্সিম ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাড়া না দিলে প্রকল্পটি নতুন বিদেশি সহায়তা বা নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে চুক্তি অনুযায়ী, এজন্য ভারতের সম্মতির প্রয়োজন হবে।

কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রকল্পও ঢিমেতালে

ভারতীয় ঋণের প্রকল্পগুলোর মধ্যে একমাত্র চলমান রয়েছে কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রায় ৫২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্নির্মাণের কাজ। গত নভেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৫১ শতাংশ। ৬৭৮ কোটি টাকার এ প্রকল্পে চুক্তি অনুযায়ী ভারত ঋণ দেবে ৫৫৬ কোটি টাকা। বর্তমানে সরকারি অর্থায়নে কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম দফা বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর। ৫ আগস্টের পর প্রকল্পসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ অনেক কর্মকর্তা ভারতে আটকা পড়েন। থমকে যায় কাজ।

রেল কর্তৃপক্ষ এখন যা ভাবছে

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্পে জাপান আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই জাপানকে কাজটি দেওয়ার জন্য রেলওয়ে থেকে নতুন করে প্রকল্প পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। পছন্দ হলে জাপান এতে অর্থায়ন করবে।

রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুরু না হওয়া প্রকল্প তিনটিতে ভারত অর্থায়ন না করলে বিকল্প চিন্তা করবে রেল। জরুরি হচ্ছে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ। এটি জাপানের অর্থায়নে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্প নিয়ে। এটি হয়তো ভারত ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।

রেল খাতে ভারতের এলওসি প্রকল্পগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে। জানতে চাওয়া হবে, তাঁরা এখন কী ভাবছেন। এরপর এ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। এখনই হুট করে বলে দেওয়া সম্ভব নয়, এলওসি থেকে বের হয়ে সরকারের নিজস্ব বা অন্য কোনো অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে।’

রেলের সূত্রমতে, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এলওসি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এ বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে বলেন, ‘এমন কী শর্ত আছে, তা জানতে হবে। তারা কী নতুন পরিকল্পনা করছে, সেগুলো সবিস্তারে বলুক।... তারা নিরাপত্তা ইস্যুতে আবেদন জানিয়েছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে যাহোক, এলওসি প্রকল্পগুলো নিয়ে খুব বেশি দিন বসে থাকার সুযোগ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার আপসহীন ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে: রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর আপসহীন ভূমিকা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জাতির এই অপূরণীয় ক্ষতির মুহূর্তে আমি মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ ও অনুসারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

দেশবাসীকে মরহুমার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁর জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই হতে পারে খালেদা জিয়ার দাফন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২০
জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন খালেদা জিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন খালেদা জিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের রাজনীতির ‘আপসহীন’ নেত্রী খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

বর্ষীয়ান এই নেত্রীর প্রয়াণে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দাফন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে তাঁর স্বামী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে হতে পারে। এটি দল ও পরিবারের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত।

এ ছাড়া আগামীকাল বুধবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা ও দাফনপ্রক্রিয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বিএনপি বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছে।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষে ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। সে সময় স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতিও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনের শারীরিক জটিলতা এবং মানসিক ধকলের কারণে তিনি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।

গত ২৩ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে এক মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোরে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন এবং চিরবিদায় নেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নেতৃত্ব দেওয়া খালেদা জিয়া ‘দেশনেত্রী’ হিসেবে জনগণের কাছে সমাদৃত ছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাঁর অটল ভূমিকার কারণে তাঁকে ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান ঘটল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাঁর মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দলের পক্ষ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি বিস্তারিতভাবে ঘোষণা করার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নির্বাচন কমিশনের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক শোকবার্তায় জানানো হয়, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আরও দুই দফা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি দীর্ঘদিন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেও সংসদীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আপসহীন ভূমিকা পালন করেন।

নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকাশে তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

নির্বাচন কমিশন মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঠিক করতে উপদেষ্টাদের বৈঠক, দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৫
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে চিরবিদায় নিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যু-পরবর্তী রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ও শোক পালনের রূপরেখা নির্ধারণে জরুরি বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বিশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত আছেন।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১২টার পর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এই ভাষণেই রাষ্ট্রীয় শোক এবং সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শেষ বিদায়ের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে দলের চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে পরবর্তী করণীয় ও জানাজার সময়সূচি নির্ধারণে স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা ডেকেছে বিএনপি। দুপুর সাড়ে ১২টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় নির্বাচনের দিন জুলাই সনদের বিষয়ে প্রস্তাবিত গণভোটের সরকারি প্রচার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই এই গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

১৯৪৫ সালে জন্ম নেওয়া খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন। তিন মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেত্রী মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং নারী শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০২৪ সালের আগস্ট বিপ্লবের পর তিনি পূর্ণ মুক্তি পেলেও শারীরিক জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন হাসপাতালেই কাটছিল তাঁর সময়।

তাঁর মৃত্যুতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা গভীর শোক প্রকাশ করছেন। হাসপাতালের সামনে এবং নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন হাজার হাজার শোকাতুর নেতা-কর্মী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত