Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের জন্য দরকার সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি: দ্য হিন্দুকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট সরকারের ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত অষ্টম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এপ্রিল মাসে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে সাক্ষাৎ করতে পারেন।

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৩২

ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কথা বলেন। এর মধ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, শেখ হাসিনার ভারত থেকে দেওয়া বক্তব্য, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, জেলেদের প্রতি অবমাননামূলক আচরণ এবং আদানি বিদ্যুৎ প্রকল্পসংক্রান্ত সমস্যা আছে।

দ্য হিন্দু: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আপনার বৈঠকের বিষয়ে বলুন, বিশেষ করে যখন দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা চলছে...?

তৌহিদ হোসেন: সত্যি বলতে, (বাংলাদেশের) অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্ক খুবই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। শুরুটা বেশ কঠিন ছিল। কারণ আমি মনে করি, ভারত গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে একটি নির্দিষ্ট ধাঁচের সম্পর্কে অভ্যস্ত ছিল, তবে হঠাৎ করেই সেই সম্পর্কের ধরনে দ্রুত পরিবর্তন আসে। সম্ভবত নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে ভারতের কিছুটা সময় লেগেছে, তাই শুরুতে সম্পর্ক নিয়ে অনেক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল এবং একধরনের অস্বস্তি ছিল।

তবে আমি মনে করি, ছয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর সেই অবস্থা কেটে যাওয়া উচিত। এখন আমাদের এমন একটি পরিবেশ দরকার, যেখানে আমরা স্বাভাবিকভাবে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে পারব। ছয় মাস আগের তুলনায় এখন দুই দেশ অনেক ভালোভাবে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে।

দ্য হিন্দু: সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেছেন, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আপনি কি এ বিষয়ে এস জয়শঙ্করের কাছে কিছু জানতে চেয়েছেন?

তৌহিদ হোসেন: আসলে আমি এটা জানতে চাইনি। কারণ, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে কী আলোচনা করে, সেটি তাদের ব্যাপার। তবে আমি মনে করি, এ নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে হবে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটি ইতিমধ্যেই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, বাণিজ্যের ক্ষেত্রেই আমরা এটা দেখতে পাচ্ছি। কিছু সময়ের জন্য বাণিজ্যে বিঘ্ন ঘটেছিল, তবে সেটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, দুই দেশের জনগণ ও বেসরকারি খাত পরস্পরের সঙ্গে কাজ করতে চায় এবং এটি আমাদের স্বার্থের বিষয়। দুই দেশের স্বার্থরক্ষা করাটা গুরুত্বপূর্ণ।

দ্য হিন্দু: ভারতে একাধিকবার প্রকাশ্যে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। আপনি কি মনে করেন, আপনার সরকার এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে? ভারত কি এ বিষয়ে সন্তুষ্ট? কারণ, এটি এখন দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

তৌহিদ: আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে হিন্দু বা অন্য যে কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ মুসলমান বা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মতোই সমান নাগরিক। তাদের সমান অধিকার রয়েছে এবং সুরক্ষা পাওয়াও তাদের অধিকার। বাংলাদেশ সরকার তাদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছে। যেভাবে অন্য যে কোনো নাগরিকের জন্য করে থাকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ভারতীয় গণমাধ্যমে এ বিষয়ে এক ধরনের অযৌক্তিক প্রচারণা শুরু হয়, যা বেশির ভাগই মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ছিল।

আমি আপনাদের অনুরোধ করব, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের দিকে নজর দিতে, যা দুই দিন আগে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিল না। জাতিসংঘ আমাদের অনুরোধে এটি পর্যবেক্ষণ করেছে। কারণ আমরা চেয়েছিলাম, পরিস্থিতির একটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ মূল্যায়ন হোক।

দ্য হিন্দু: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে আপনারা ভারতের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করছেন?

তৌহিদ হোসেন: তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং আমরা ভারতকে অনুরোধ করেছি, তাঁকে ফেরত পাঠাতে। যাতে তাঁকে বাংলাদেশের আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা যেতে পারে। যদি ভারত সরকার তা না-ও করে, তবে অন্তত আমাদের প্রত্যাশা থাকবে যে, তিনি যেন ভারতের মাটি থেকে উসকানিমূলক ও মিথ্যা বক্তব্য না দেন, যা বাংলাদেশের ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, গত ১৫ বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। জনগণ চায় না, তিনি পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করুন।

দ্য হিন্দু: কিন্তু শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের পর শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালানোর বিষয়টিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

তৌহিদ: কিছু লোক হয়তো কোনো কিছু করতে পারে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সেটি সরকারের সমর্থনপুষ্ট।

দ্য হিন্দু: আপনাদের সরকার এখন পর্যন্ত শুধু ভারতকে ‘নোট ভারবাল’ পাঠিয়েছে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর জন্য। আনুষ্ঠানিকভাবে কি প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হবে?

তৌহিদ হোসেন: আমাদের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, এবং আমরা ভারতের কাছে বহু অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ফেরত দিয়েছি যাতে তারা সেখানে বিচারের মুখোমুখি হতে পারে। আমি মনে করি, ভারতও তাকে বাংলাদেশে ফেরত দিতে পারে যাতে তিনি এখানে বিচারের সম্মুখীন হতে পারেন।

দ্য হিন্দু: কিন্তু সেই প্রত্যর্পণ চুক্তির জন্য আপনাদের বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এমএলএটি (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স) নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত পরোয়ানাও থাকতে হবে। বাংলাদেশ কবে এই প্রক্রিয়া শুরু করার আশা করছে?

তৌহিদ হোসেন: দেখুন, প্রক্রিয়াটি এরই মধ্যেই চলমান, কারণ মামলাগুলো এখন আদালতে আছে। আমরা তাদের তাড়াহুড়ো করতে বাধ্য করতে পারি না। আর আমরা এটাও জানি যে, তিনি ভারতীয় বিচারিক ব্যবস্থারও আশ্রয় নিতে পারেন। এতে সময় লাগতে পারে, তবে আমাদের মূল চাওয়া হলো—তিনি ভারতে থাকাকালীন উসকানিমূলক বক্তব্য না দেন।

দ্য হিন্দু: সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের আটক প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি কিছু মুক্তিপ্রাপ্ত মৎস্যজীবীর সঙ্গে কথা বলেছেন, যাদের বাংলাদেশের কারাগার থেকে ছাড়া হয়েছে। তাদের মারাত্মকভাবে মারধর করা হয়েছে, তাদের অনেকে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন, অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। আপনি কি মনে করেন, এটি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতির ফল?

তৌহিদ হোসেন: আমি তা মনে করি না। প্রথমত, সীমান্তের বিষয়টি দেখুন। ২০২৪ সালের অর্ধেক সময় আগের সরকার ক্ষমতায় ছিল। সে সময়েই সীমান্তে ২৪ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এটি বিশ্বের কোথাও হয় না। আপনি এই বিষয়ে আমার সঙ্গে একমত হবেন। কারণ, ভারতীয় পক্ষ থেকে প্রায়ই বলা হয় যে, যেহেতু সীমান্তে অপরাধ হচ্ছে, তাই এটি ঘটছে। কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি সীমান্তেই অপরাধ সংঘটিত হয়।

কিন্তু কোথাও মানুষকে এভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় না। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, তাহলে তাঁকে গ্রেপ্তার করুন, আদালতে উপস্থাপন করুন, কারাগারে পাঠান বা আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই করুন। কিন্তু এভাবে সরাসরি হত্যা করা যায় না। অথচ বছরের পর বছর ধরে, বিভিন্ন সরকার থাকার পরও, সীমান্তে এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি, ভারত যদি চায়, তবে এটি বন্ধ করতে পারে এবং অবশ্যই বন্ধ করা উচিত।

দ্য হিন্দু: দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল সামুদ্রিক অঞ্চল সংক্রান্ত। বাংলাদেশ ও ভারত বহু বছর আগে একটি সামুদ্রিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তবুও এখনো দুই দেশের মধ্যে মৎস্যজীবীদের আটকের ঘটনা ঘটছে...?

তৌহিদ হোসেন: আমি সরাসরি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, তবে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি, তা হলো—মৎস্যজীবীরা মাছ অনুসরণ করে চলে। স্থলে স্পষ্ট সীমান্তরেখা থাকে, আপনি জানেন যে এখানেই সীমা। কিন্তু সমুদ্রে বিষয়টি এতটা সহজ নয়। প্রায়ই দুই পক্ষের মৎস্যজীবীরাই একে অপরের সামুদ্রিক সীমানা অতিক্রম করে ফেলে। আপনারা কিছু মৎস্যজীবী আটক করেছেন, আমরাও কিছু করেছি, এবং আমরা উভয়েই সময়ে সময়ে তাদের মুক্তি দেই।

যেখানে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে...আমরা এরই মধ্যে একটি তদন্তের জন্য অনুরোধ করেছি এবং যদি দেখা যায় যে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর কেউ সত্যিই জড়িত ছিল বা আইন লঙ্ঘন করেছে, তাহলে অবশ্যই আমরা তা বিবেচনায় নেব। তবে এটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। আমি কলকাতায় চার বছরেরও বেশি সময় কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং এই বন্দী বিনিময়ের প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছি। সাধারণত তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় না। যদি কোনো ব্যতিক্রম ঘটে থাকে, আমরা অবশ্যই তা খতিয়ে দেখব।

দ্য হিন্দু: আদানি বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালুর জন্য আদানি গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করছে। বাংলাদেশ সরকার আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি চালিয়ে যেতে চায়, এটি কি নিশ্চিত করে বলা যায়?

তৌহিদ হোসেন: আমি মনে করি, আমরা সাধারণত দুই ধাপে আলোচনা করি—একটি চুক্তি স্বাক্ষরের আগে এবং অন্যটি চুক্তি স্বাক্ষরের পরে। যখন কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তখন আমাদের সেই চুক্তির শর্ত মেনে চলতে হয়। তবে যদি দেখি যে, এটি যথাযথভাবে সম্পাদিত হয়নি বা এতে কোনো অসংগতি রয়েছে, তাহলে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে তা পুনরায় পর্যালোচনা করা যেতে পারে।

আমার মতে, আমরা আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করব এবং এটিকে আরও যৌক্তিক করার চেষ্টা করব। আমি প্রযুক্তিবিদ নই, তাই বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কারিগরি বিষয়ের বিস্তারিত আমি বলতে পারছি না। তবে অন্যান্য বিদ্যুৎ চুক্তির সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে, এই চুক্তির আওতায় নির্ধারিত বিদ্যুৎ ট্যারিফ তুলনামূলকভাবে বেশি। আমাদের বিশ্বাস, এটি পুনরায় আলোচনা করা উচিত, বিশেষ করে কয়লা ক্রয়ের বিষয়টি নিয়ে।

যেকোনো যৌক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা গেলে, এই প্রকল্পের জন্য বিশ্ববাজারে সর্বোত্তম মূল্যে কয়লা কেনা উচিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা করা হয়নি। এই বিষয়গুলোতে আমরা আদানি গ্রুপের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করতে পারি এবং পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে একটি সমাধানে পৌঁছাতে চাই।

তবে বর্তমান সময় বিবেচনায়, আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালুর অনুরোধ করেছি। কারণ, আমাদের বিদ্যুৎ প্রয়োজন এবং আমাদের পরিকল্পনাও এই সরবরাহের ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। আমরা চাই, আদানি গ্রুপ আমাদের এই বিদ্যুৎ সরবরাহ করুক এবং আমরা এর জন্য অর্থ পরিশোধ করব।

দ্য হিন্দু: আপনি এরই মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দুইবার সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের মধ্যে কোনো বৈঠক হয়নি। আপনি কি মনে করেন, আগামী এপ্রিলে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিমসটেক সম্মেলনে তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারে?

তৌহিদ হোসেন: এখন পর্যন্ত দুই নেতা একই দিনে একই স্থানে ছিলেন না। তাই তাদের মধ্যে সাক্ষাতের সুযোগ হয়নি। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, উভয় পক্ষই মুক্ত ও আন্তরিকভাবে আলোচনা করতে আগ্রহী।

আমাদের অঞ্চলের সংস্কৃতিতে, যখন শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা একসঙ্গে বসেন, তখন একটি শব্দেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে। যেখানে আমাদের মতো কর্মকর্তাদের জন্য এটি বছরের পর বছর আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেদিক থেকে, তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হওয়া ইতিবাচক হবে।

যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন তাঁরা একবার ফোনে কথা বলেছেন। তাঁরা বিমসটেক সম্মেলনে একই ভেন্যুতে থাকবেন, কারণ সেখানে সব রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত থাকবেন। স্বাভাবিকভাবেই, এটি ছোট পরিসরের একটি সম্মেলন হওয়ায় তাদের মধ্যে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্কের সম্মেলনগুলোতে প্রতিটি রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান অন্য সাতজন নেতার সঙ্গে আলোচনা করতেন। তাই আমি মনে করি, বিমসটেকেও তেমন কিছু হতে পারে।

দ্য হিন্দু: আপনি কি এই বিষয়টি জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন?

তৌহিদ হোসেন: আমি শুধু বিষয়টি উল্লেখ করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বৈঠকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি এখনো আগাম বলা যাবে না। সাধারণত এসব বিষয় সম্মেলনের কয়েক দিন আগে চূড়ান্ত করা হয়, যখন পুরো কর্মসূচি নির্ধারিত হয়। দেখা যাক কী হয়।

দ্য হিন্দু: আপনি পররাষ্ট্রনীতিতে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। ২০০৯ সালের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তা কি আবার আগের অবস্থায় ফিরতে পারে?

তৌহিদ হোসেন: কেন শুধু গত ১৫ বছরকে বিবেচনা করবেন? এমনকি বিএনপির শাসনামলেও (১৯৯৬-২০০১) দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। আমি মনে করি না যে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট সরকারের ওপর নির্ভরশীল।

১৯৯৬-১৯৯৭ সালে আমরা গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি করেছিলাম, যা দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ থেকে বোঝা যায়, যে-ই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, আমাদের সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে গড়ে উঠতে হবে।

আমার বিশ্বাস, উভয় পক্ষই জানে তাদের স্বার্থ কোথায় এবং কীভাবে পারস্পরিক সুবিধা অর্জন করা যায়। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করলে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম আজ ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের সভা বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম আজ ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের সভা বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ছবি: পিআইডি

রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকেরা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবকে পাঁচ মার্কিন আইনপ্রণেতার দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন করেন। জবাবে শফিকুল আলম জানান, তিনি ওই চিঠি দেখেননি এবং এ বিষয়ে অবগত নন। তবে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে, সেহেতু আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।’

চলতি বছরের মে মাসে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এদিকে একই সংবাদ সম্মেলনে ওসমান হাদির খুনের মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘সরকার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করছে। পুলিশসহ সব নিরাপত্তা সংস্থা এ বিষয়ে কাজ করছে।’ তিনি জানান, মূল সন্দেহভাজন না হলেও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আশপাশের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূত্র পাওয়া যাচ্ছে। সরকার তদন্তে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘সরকার এ ঘটনায় সিরিয়াসভাবে তদন্ত করছে এবং আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এর বিচার হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সরকার তাঁর দেশে ফেরাকে স্বাগত জানায়। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বিষয়ে তাঁর দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং তারা যতটুকু সহযোগিতা চাচ্ছেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি জানান, তাঁর দলের পক্ষ থেকেই মূলত নিরাপত্তা বিষয়টি দেখা হচ্ছে, তবে সরকার প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা প্রদান করছে।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘দীপু চন্দ্র দাস ও ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করে মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, দীপু চন্দ্র দাসের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে এসব মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যে কোনো অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনী ব্যয় বেশি হলে ভোটে জিতে জনগণের কাছ থেকে আদায় করা হয়: দেবপ্রিয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৪
নির্বাচনী ব্যয় বেশি হলে ভোটে জিতে জনগণের কাছ থেকে আদায় করা হয়: দেবপ্রিয়
টানা তৃতীয়বার জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্টের (সিডিপি) সদস্য হয়েছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি

নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতি কমানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-উত্তর দুর্নীতি কমানো যাবে না। কারণ এই ব্যয় পরে জনগণের কাছ থেকে আদায়ের চেষ্টা করা হয়।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ বুধবার আয়োজিত ‘নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার: অগ্রগতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ বৈঠকের আয়োজন করে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন উভয়ের যে দায়িত্ব আছে, দুই ক্ষেত্রেই তা অবহেলা করা হচ্ছে। যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের কোনো প্রক্রিয়া হলো না এবং এটা আমরা পারলাম না, সে কারণে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারবে কি না–এটা এখন দেখার বিষয়।’

তিনি বলেন, নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রিফর্ম ট্র্যাকার নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে; যেখানে নির্বাচন, দুর্নীতি দমন, মিডিয়া এবং শ্রমসহ মোট ১৮টি ডোমেইনের সংস্কার কাজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নির্বাচন সংক্রান্ত প্রায় ৫০টি ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৩১টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে মাত্র দুটি বাস্তবায়নের পর্যায়ে আছে। একটি হলো জেন্ডার গ্যাপ কমানো এবং অন্যটি নির্বাচনের প্রাক্কালে যারা ১৮ বছরে উপনীত হবেন, তারা যাতে ভোটার তালিকায় যুক্ত থাকতে পারেন, সেটার ব্যবস্থা করা।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নির্বাচনই এখন চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের প্রধান স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে–নির্বাচন আদৌ হবে কি না বা হলেও এর গুণমান কেমন হবে। কয়টা বুথ দখল হলে বা কত শতাংশ ভোট পড়লে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে–এমন প্রশ্ন সবার। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সূচক কী হবে এবং ‘অংশগ্রহণমূলক’ ও ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ শব্দ দুটির প্রকৃত অর্থ কী, তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন। এ শব্দগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা না থাকলে নির্বাচনের গুণমান নিয়ে পরবর্তী সময়ে বড় বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য সরকারের এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত।

বৈঠকে সুজনের সম্পাদক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিচারপতি এম এ মতিন, ইসির সাবেক অতিরিক্তি সচিব জেসমিন টুলি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট

ব্যালট পেলেন পৌনে ২ লাখ প্রবাসী, সর্বোচ্চ নিবন্ধন সৌদি আরব থেকে

বাসস, ঢাকা  
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দিতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৭২ হাজার ১২ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা নিবন্ধন করছেন।

ইতিমধ্যে প্রবাসীদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত পাঁচ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯০০ জন প্রবাসী ভোটারের কাছে ব্যালট পাঠানো হয়েছে জানিয়েছেন ‘আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই)’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান।

আজ বুধবার সকাল ১১টায় ইসির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, নিবন্ধনকারীদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ২১ হাজার ৮০০ জন এবং নারী ভোটার ৫০ হাজার ২১০ জন।

পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ নিবন্ধনকারী প্রবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সৌদি আরবের। দেশটি থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯১৬ জন নিবন্ধন করেছেন। এছাড়া কাতারে ৫৬ হাজার ১৪৪ জন, ওমানে ৪১ হাজার ৭৩৭ জন, মালয়েশিয়ায় ৩৯ হাজার ১০৫ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩০ হাজার ১০০ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ হাজার ৮৪৯ জন, কুয়েতে ২২ হাজার ১২৩ জন, যুক্তরাজ্যে ২০ হাজার ২০৯ জন ও সিঙ্গাপুরে ১৭ হাজার ৩৪৬ জন নিবন্ধন করেছেন।

গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠানো শুরু হয়েছে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার কাতারে ২১ হাজার, ওমানে ৩ হাজার ৬০০, সৌদি আরবে ১০ হাজার ৫০০, কুয়েতে ১ হাজার, ইতালিতে ৫ হাজার, পর্তুগালে ১ হাজার ৫০০, ফ্রান্সে ১ হাজার এবং জার্মানিতে ১ হাজার ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া, গত সোমবার অস্ট্রেলিয়ায় ৬ হাজার ৭৭৯, মালয়েশিয়ায় ১৬ হাজার ৫৬৮, ওমানে ১৮ হাজার এবং কাতারে ১১ হাজার ব্যালট পাঠানো হয়। এরপর গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ায় ৮৯২, যুক্তরাজ্যে ৫৭৩ এবং মালয়েশিয়ায় ৬ হাজার ২৪৬ ব্যালট পাঠানো হয়।

গত শনিবার সন্ধ্যায় মোট সাতটি দেশে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৮ হাজার ৪৮০, চীনে ৬৮১, কুয়েতে ১ হাজার ৩১০, কাতারে ২ হাজার ৭৩৭, সৌদি আরবে ৭ হাজার ৩৪৩, জাপানে ৫ হাজার ৬০০ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭ হাজার ৬৮১টি ব্যালট পাঠানো হয়।

এছাড়া, গত রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ হাজার ১১৬, যুক্তরাষ্ট্রে ৮ হাজার ৭১৮, কানাডায় ৯ হাজার ৪৪৩, ইতালিতে ৫ হাজার ৬৮৬, জার্মানিতে ২ হাজার ১২৬ এবং ফ্রান্সে ৩ হাজার ৩২১টি ব্যালট পাঠানো হয়।

আগামী ২১ জানুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটাররা অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে প্রার্থীর তালিকা দেখতে পাবেন এবং নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যালট পেপারে প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে পারবেন।

সালীম আহমাদ খান জানান, প্রবাসীদের কেউ যদি (আগে থেকে প্রার্থীর বিষয় নিশ্চিত হয়ে) প্রতীক বরাদ্দের আগে ভোট দেন সেক্ষেত্রে তাঁর ভোট বাতিল হবে না। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর প্রার্থী দেখে ভোট দেবেন প্রবাসীরা।

তিনি আরও জানান, প্রবাসীদের নিবন্ধনের শেষ সময় ২৫ ডিসেম্বর। এর পর আর সময় বাড়ানো হবে না।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী ভোটাররা যে দেশ থেকে ভোট দেবেন, অবশ্যই সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।

অন্যদিকে, দেশে অবস্থানরত ভোটারদের মধ্যে ‘ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৫০ জন।

জেলাভিত্তিক নিবন্ধনে শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, ৬৪ হাজার ১৩২ জন। ঢাকায় ৫৫ হাজার ৬৪০ জন, চট্টগ্রামে ৫৪ হাজার ৭৬৯ জন, নোয়াখালীতে ৩৬ হাজার ৫৯০ জন, সিলেটে ২৬ হাজার ৭৪৯ জন ও চাঁদপুরে ২৫ হাজার ৩১৮ জন নিবন্ধন করেছেন।

আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে ৯ হাজার ৬১১ জন নিবন্ধন করেছেন, যা সর্বোচ্চ। এছাড়া, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ৮ হাজার ৯৩০ জন, কুমিল্লা-১০ আসনে ৮ হাজার ৪৩৮ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ৮ হাজার ৩৮৪ জন ভোটার পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন।

নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বর, আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর এবং নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।

ইসি জানায়, পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে নিবন্ধনের সময় ভোটারের অবস্থানকালীন দেশের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা দিতে হবে। প্রয়োজনে কর্মস্থল বা পরিচিতজনের ঠিকানাও ব্যবহার করা যাবে। তবে ভুল ঠিকানা দিলে ব্যালট পাঠানো সম্ভব হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৭
আতাউর রহমান বিক্রমপুরী। ছবি: ফেসবুক
আতাউর রহমান বিক্রমপুরী। ছবি: ফেসবুক

আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মামুন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ রাখা হয়েছে।

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী, আসাদুল্লাহ বা আতাউর নামেও পরিচিত। তাঁর বাবার নাম হুমায়ুন সর্দার, মা রোকেয়া বেগম।

আতাউর রহমান বিক্রমপুরীর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী উপজেলার আমতলী গ্রামে। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ইস্তা গ্রামে অবস্থিত মারকাজুল হুনাফা আল মুসলিমিন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া হুনাফা ইসলামীক স্কুলেরও প্রিন্সিপাল।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৪ মার্চ ঝিকরগাছা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা এফআইআর (নং- ১৮ / ৭৭)-এর এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।

মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সক্রিয়। রাজধানীতেও বিভিন্ন আন্দোলন বিক্ষোভের সময় তাঁকে সামনের সারিতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, আতাউর রহমান, আযাদী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির, বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং শানে সাহাবা জাতীয় খতীব ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানেরও পদে রয়েছেন।

গত অক্টোবরে গাজীপুর কালিয়াকৈর উপজেলায় হিন্দু যুবক কর্তৃক মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। একই মাসে গাজীপুরের একটি মসজিদের ইমাম মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর কথিত ‘অপহরণ’ ঘটনা সারা দেশে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। দুটি ঘটনা নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় তৎপর ছিলেন আতাউর রহমান। এ দুটি বিষয় নিয়ে সশরীরে থানা-পুলিশ করেন তিনি। যদিও মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর ঘটনাটি পরে ‘অপহরণ’ নয় বলে জানায় পুলিশ।

সর্ব সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগে আয়োজিত বিক্ষোভের একটি অংশে আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। যদিও অন্য বিক্ষোভকারীরা তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখায় তিনি মাঝপথে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে চলে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত