সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন

দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমারও হচ্ছিল। ভুবনেরও কি একই অনুভূতি হচ্ছিল? ওর উত্তেজনা যে আমার চেয়ে কম ছিল না, বরং বেশি, সেটা বেশ ভালোভাবেই টের পেয়েছিলাম।
মোটামুটি মাস তিনেক লাগিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যেভাবে যেখান দিয়ে পারি আমাদের স্বল্প আয় থেকে একটু একটু করে টাকা জমিয়েছি। এই কদিনে যে সিকিম সম্পর্কে অন্তর্জালে কত ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, সেটার ইয়ত্তা নেই। কথা ছিল সঙ্গে কয়েকজন বন্ধুও যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে বাকি রইলাম শুধু আমরা দুজন। মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম, যাবই।
ভারতের ভিসাটা খুব সহজে পেয়ে গেলাম আমরা। এর আগেই ভুবন দিনক্ষণ ঠিক করে রেখেছিল। ভিসা পেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার বাসের টিকিট কাটা হলো। যেহেতু তুষারপাত হয় এমন জায়গায় যাচ্ছি, তাই প্রস্তুতিটা তো ভিন্ন হবেই। যাওয়ার আগে একদিন বেরিয়ে পড়লাম কেনাকাটা করতে। ঘুরে ঘুরে শেষে বঙ্গবাজার থেকে দুটি জ্যাকেট কিনলাম, হুডিওয়ালা। হুডির কিনার ঘেঁষে পশমের সারি, আমার খুব পছন্দ। কিনলাম দুই সেট থার্মাল পোশাক। মাইনাসের তাপমাত্রা ঠেকাতে এটা অত্যন্ত জরুরি ছিল। নিজের জন্য এক জোড়া হাতমোজা কিনলাম। ভুবনের আগে থেকে ছিল বলে আর কেনা হয়নি। সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণ করার জন্য চলে গেলাম বসুন্ধরা সিটির উল্টো পাশে। সেখান থেকে দুই জোড়া বুট কিনলাম। মোটামুটি সব মিলিয়ে হাজার সাতেক টাকা খরচা হয়ে গিয়েছিল সেদিন। তবু আমরা খুশি ছিলাম। খুঁজে খুঁজে কম দামে ভালো জিনিস বের করতে পেরেছিলাম বলে!
দুটি স্যুটকেসে নতুন জিনিসগুলো ছাড়াও বাড়তি শীতের পোশাক নিয়ে নিয়েছিলাম। সপ্তাহখানেক ভ্রমণে থাকব বলে আমি নিজের জন্য নিয়েছিলাম তিন জোড়া মোজা। শীতের কাপড়ে মুড়ে থাকব বলে গয়নাগাটি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি। সালোয়ার-কামিজও নিলাম শুধু এক সেট। বাকি সব প্যান্ট আর ফতুয়া বা টিউনিক টাইপ পোশাক, যেন ছোটাছুটির কাজটা সহজ হয়। ভুবনও জিনস নিল, চিনোস নিল আর ওর যা লাগে। শুকনো খাবার বলতে শুধু চিপস নিয়েছিলাম। যেগুলো না নিলেই নয়, সেই সব প্রসাধনী পুরে ফেললাম সঙ্গে। আর যদি কোথাও খামাখা অপেক্ষা করতে হয়, তাই ব্যাকপ্যাকটায় ভরে নিলাম প্রিয় কমিকস ‘বেসিক আলী’র দশম খণ্ড। সদ্যই বইমেলা থেকে কিনে এক বন্ধু উপহার দিয়েছিল। ভালো কথা, পাসপোর্ট আর যাবতীয় জরুরি কাগজপত্র হ্যান্ডব্যাগে আলাদা করে নিয়ে নিয়েছিলাম। যেখানে-সেখানে এগুলো বের করে দেখাতে হয়। হাতের কাছে রাখাই শ্রেয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ, সিকিম ভ্রমণ করতে হলে অবশ্যই কমপক্ষে দশ কপি ভিসা, পাসপোর্টের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিতে হয়। এগুলো ছাড়াও আমরা নিরাপত্তার জন্য বিয়ের কাবিননামার ফটোকপি নিয়েছিলাম। আর হ্যাঁ, সিকিমে জায়গায় জায়গায় অনুমতি লাগে ভ্রমণ করার জন্য। সে কারণেই এতগুলো কাগজপত্র আর ছবি সঙ্গে নিতে হয়।
শ্যামলী পরিবহনের বাস ছাড়ে ৬টায়, আরামবাগ থেকে। সেখান থেকে আমাদের নিয়ে যায় কল্যাণপুরের স্টপেজে। পরে আমরা উঠি মূল বাসে, যেটা আমাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছে দেবে। মূল বাস ছাড়তে ছাড়তে প্রায় পৌনে ৮টা বেজে গেল। জ্যাম একদম পাইনি। বিশ মিনিটে সাভারের গেন্ডা অতিক্রম করে ফেলেছিলাম। কিন্তু যেতে যেতে একটা জায়গায় এসে জ্যামে আটকে গেলাম। কোথায় তা রাতের অন্ধকারে আন্দাজ করতে পারিনি। বাসের জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখলাম বিশাল মাঠ। মোটামুটি দূরে দেখা গেল মঞ্চ বানিয়ে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ শব্দটাই একমাত্র দেখতে পেলাম দূর থেকে। কিন্তু কীসের, সেটা আর দেখতে পারলাম না। ভাবলাম, হয়তো ভাষা দিবসের। কিন্তু অবাক হলাম মঞ্চের নৃত্যশিল্পীর নৃত্য দেখে। অশ্লীল ভঙ্গিতে ঢালিউড বা বলিউড স্টাইলে দাপাদাপি করছিলেন তিনি। ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে এমন ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ আমার বোধগম্য হলো না। ভুবন কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিল। ওকে ডেকে দেখাতেই কী একটা আনন্দ পেয়ে ফিক করে হেসে দিল। সঙ্গে আমিও। এমনিতেও আমার এ ধরনের নৃত্য ভালো লাগে না। দেশীয় ধাঁচের মুদ্রায়, মণিপুরি, ক্ল্যাসিক্যাল—এসব বান্ধবীকে নাচতে দেখে বড় হয়েছি। এগুলোই ভালোবেসেছি। যাই হোক, বাস আবার চলতে শুরু করে।
আসনটা এত পিচ্ছিল ছিল, একটু পর পর পিছলে পড়ে যাচ্ছিলাম। মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি। বাস ছাড়ার আগে বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং যাবতীয় দুশ্চিন্তাকারী আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনালাপ সেরে নিয়েছিলাম। কিন্তু যেই না আমার একটু ঘুম ঘুম পেয়ে চোখ লাগছিল, ঠিক তখনই আমার ফোনটা বেজে উঠছিল। না ধরা পর্যন্ত ফোন বাজতেই থাকছিল। এই করে সারা রাত পার হয়ে গেল। ভোর সাড়ে ৬টায় আমরা পৌঁছলাম রংপুরের পাটগ্রামে। সীমান্ত এলাকা। বেশ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে শ্যামলীর সেখানকার বাস কাউন্টারে। সকাল ৯টার আগে সীমান্ত খুলবে না। ততক্ষণ পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতেই হবে। তাই এই ফাঁকে সকালের নাশতাটা সেরে নিলাম আমরা। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন সেন্টারের কাজ সেরে ভারতে ঢুকতে ঢুকতে সকাল ১০টার মতো বেজে গেল। এরপর আবার ঘণ্টাখানেক সময় লাগল ভারতের ইমিগ্রেশন সেন্টারে। এর মধ্যে ভুবন তক্কে তক্কে ছিল সিকিমে যাওয়ার আরও মানুষ জোগাড় করতে। এমনিতে ফেসবুকে ভ্রমণ গ্রুপ থেকে দুজন জোগাড় হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা পরদিন আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা।
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন সেন্টারে বসে থেকে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়ে যায়, যাঁরা সিকিমে যাবেন। এর মধ্যে প্রহর সাহা নামের পাকা পিচ্চিটার বাবা-মা আমাদের তাঁদের সঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন। তাঁরা একদম আলাদা ঘুরবেন। কোনো দলের সঙ্গে না। শুধু পরিবার। তাঁরা রিসোর্টে থাকবেন। তাঁদের খরচাটা মনে হচ্ছিল একটু বেশি। তাঁরা আমাদের কাছ থেকে খরচ নিতেও আপত্তি করছিলেন। কিন্তু আমার মন সায় দিচ্ছিল না তাঁদের সঙ্গে যেতে। তবে প্রহর সাহাকে আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। ছয়-সাত বছরের মিষ্টি, গুলুগুলু একটা বাচ্চা।
মাঝরাতে বাস যখন বিরতিতে থেমেছিল, তখন সে হুড়মুড় করে লাফিয়ে উঠে বলেছিল, ‘আমরা কি গ্যাংটক চলে আসছি?’ ওর কথা শুনে বাসের সবাই খুব মজা পেয়েছিল। আরেকটা পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে দল বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ইমিগ্রেশনের ঠেলা সামলাতে সামলাতে তাঁদের হারিয়ে ফেললাম। বাংলাদেশের সীমানা পার হওয়ার সময় এক আংকেলকে দেখলাম তাঁর নাম আগে না ডাকায় একটা লঙ্কাকাণ্ড বাঁধিয়ে দিলেন। সঙ্গে যোগ দিলেন তাঁর সঙ্গীরাও। ওই লাইনে দাঁড়িয়ে আকাশ ভাইদের সঙ্গে দেখা হলো। তখনো জানতাম না এরাই আমাদের বাকিটা ভ্রমণ বিনোদন দেবেন। একপর্যায়ে ভুবনকে ডেকে নিয়ে গেল ভারতের ইমিগ্রেশন সেন্টারে। আমি দেশের মাটিতে একা দাঁড়িয়ে কেমন জানি একটা অনুভূতি পাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আমার ডাক পড়ল। সব ঝামেলা শেষ করে যখন ঠিক ভারতের সীমানায় দাঁড়িয়ে আমার দেশটাকে দেখছিলাম, কেমন জানি এক অনুভূতি হচ্ছিল। বোঝাতে পারব না। খুব সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছি জেনেও চোখটা ছলছল করে উঠেছিল। দেশকে যে কতটা ভালোবাসি, তা প্রতিমুহূর্তে টের পেয়েছিলাম এই ভ্রমণের সময়। হোক আমার দেশ নোংরা, যানজটে ভরা, দুর্নীতিতে সেরা; কিন্তু আমার দেশ আমি ভালোবাসি। এসব আবেগ ভাবতে ভাবতে বাসে উঠে বসলাম। শিলিগুড়ি যেতে হবে। বাসের সহকারীকে দেখলাম সিকিমে যাওয়া মানুষদের সঙ্গে আলাপ করতে। তাঁরা যাচ্ছিলেন শ্যামলী পরিবহনের প্যাকেজে। আমরা প্যাকেজ নিইনি খরচ কমাব বলে। কিন্তু দল তো খুঁজতেই হবে। দল ছাড়া সিকিমে যাওয়াটা ঝক্কি। ভুবনকে বললাম সহকারীর সঙ্গে কথা বলতে। ভুবন তাঁকে জিজ্ঞেস করায় আরেকজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। মিলন ভাই।বাংলাদেশি। রংপুরের মানুষ। শ্যামলীর পক্ষ থেকে উনি সিকিম প্যাকেজের ভ্রমণকারীদের শিলিগুড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। যদিও আনন্দের ফাঁদে পড়ে পুরো ভ্রমণটাই আমাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন পরে। মিলন ভাই আশা দিলেন, শিলিগুড়ি পৌঁছে অমর দার সঙ্গে কথা বলিয়ে দিলে উনি একটা ব্যবস্থা করবেন। অমর দা হচ্ছেন শ্যামলী প্যাকেজের গাইড। ওনার বাড়ি আসলে বাংলাদেশে। কিন্তু অভিমান করে শিলিগুড়িতে চলে গেছেন। দুই দেশের নাগরিকত্ব আছে তাঁর। আচ্ছা, তাঁর গল্প পরে কোথাও করব।
কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ছাড়তে ছাড়তে চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করে নিলাম। পথে একটু পর পর দেখলাম কালীমন্দির আর মদের দোকান! সিকিমে তো ফুটপাতে নিয়ে বিক্রি করে। হঠাৎ মনে হলো, নাটক-সিনেমায় দেখি ভারতীয় বাঙালিরা দুর্গাপূজা বেশি করে। অথচ এদিকে কালীমন্দির বেশি। সর্বসাকল্যে একটা মাত্র দুর্গা প্রতিমা দেখতে পেয়েছিলাম। শিলিগুড়ির পথে আবার হনুমানের মূর্তি আর মন্দির বেশি দেখলাম। বুঝলাম, একেক জায়গায় একেক ভগবানের প্রভাব বেশি। আরেকটা জিনিস নজর এড়াল না আমার। জলপাইগুড়ি পর্যন্ত সহজে মনে হচ্ছিল না বাংলাদেশ থেকে ভিন্ন কিছু। পার্থক্য এটুকু বের করতে পারলাম—তাদের ঘরবাড়িগুলো আমাদের চেয়ে খানিকটা খাটো মনে হলো; ওদের ট্রাকের নাক বোঁচা, আমাদেরগুলো চোখা; ট্রাকের গায়ে হিন্দিতে লেখা ‘জয় মাতা দি’ কিংবা বাংলায় লেখা ‘জয় মা দুর্গা বা কালী’, আমাদের যেমন লেখা থাকে ‘আল্লাহর দান’ টাইপ কথাবার্তা। এগুলো ভাবছিলাম আর সেই সঙ্গে তিস্তার মায়াভরা মুখ দেখছিলাম। যদিও আসল রূপ সিকিমের পথেই দেখা গেছে। কী যে মায়াময় এই নদী! ওহ্, ভারতের সীমানায় ঢুকেও কিন্তু বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলাম। ওই চেংড়াবান্ধা পর্যন্তই। কিন্তু ব্যাপারটা আমার খুব মজা লেগেছিল। বাবা অবশ্য আগে বলে দিয়েছিল, ‘নেটওয়ার্ক পাবি, পার হয়ে ফোন দিস।’ দিয়েছিলাম।
ঘণ্টা তিনেক সময় লাগল শিলিগুড়ি পৌঁছাতে। এই শহরটাকে বলা হয় জলপাইগুড়ি শহরের যমজ! তবে এর ৬২ ভাগ দার্জিলিংয়ে আর ৩৮ ভাগ অংশ পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কলকাতার পরেই যে বড় শহরের নাম উঠে আসে, সেটা শিলিগুড়ি। বলা চলে, হিমালয়ের পাদদেশে শিলিগুড়ির অবস্থান। আর ওপরে সিকিম রাজ্য। শিলিগুড়ির মানুষ এভাবে স্থান নির্ধারণ করে—পাহাড়ের ওপরে আর পাহাড়ের নিচে। সিকিমের মানুষদের ওরা বলে ‘ওপরের লোক’!
(চলবে)

দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমারও হচ্ছিল। ভুবনেরও কি একই অনুভূতি হচ্ছিল? ওর উত্তেজনা যে আমার চেয়ে কম ছিল না, বরং বেশি, সেটা বেশ ভালোভাবেই টের পেয়েছিলাম।
মোটামুটি মাস তিনেক লাগিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যেভাবে যেখান দিয়ে পারি আমাদের স্বল্প আয় থেকে একটু একটু করে টাকা জমিয়েছি। এই কদিনে যে সিকিম সম্পর্কে অন্তর্জালে কত ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, সেটার ইয়ত্তা নেই। কথা ছিল সঙ্গে কয়েকজন বন্ধুও যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে বাকি রইলাম শুধু আমরা দুজন। মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম, যাবই।
ভারতের ভিসাটা খুব সহজে পেয়ে গেলাম আমরা। এর আগেই ভুবন দিনক্ষণ ঠিক করে রেখেছিল। ভিসা পেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার বাসের টিকিট কাটা হলো। যেহেতু তুষারপাত হয় এমন জায়গায় যাচ্ছি, তাই প্রস্তুতিটা তো ভিন্ন হবেই। যাওয়ার আগে একদিন বেরিয়ে পড়লাম কেনাকাটা করতে। ঘুরে ঘুরে শেষে বঙ্গবাজার থেকে দুটি জ্যাকেট কিনলাম, হুডিওয়ালা। হুডির কিনার ঘেঁষে পশমের সারি, আমার খুব পছন্দ। কিনলাম দুই সেট থার্মাল পোশাক। মাইনাসের তাপমাত্রা ঠেকাতে এটা অত্যন্ত জরুরি ছিল। নিজের জন্য এক জোড়া হাতমোজা কিনলাম। ভুবনের আগে থেকে ছিল বলে আর কেনা হয়নি। সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণ করার জন্য চলে গেলাম বসুন্ধরা সিটির উল্টো পাশে। সেখান থেকে দুই জোড়া বুট কিনলাম। মোটামুটি সব মিলিয়ে হাজার সাতেক টাকা খরচা হয়ে গিয়েছিল সেদিন। তবু আমরা খুশি ছিলাম। খুঁজে খুঁজে কম দামে ভালো জিনিস বের করতে পেরেছিলাম বলে!
দুটি স্যুটকেসে নতুন জিনিসগুলো ছাড়াও বাড়তি শীতের পোশাক নিয়ে নিয়েছিলাম। সপ্তাহখানেক ভ্রমণে থাকব বলে আমি নিজের জন্য নিয়েছিলাম তিন জোড়া মোজা। শীতের কাপড়ে মুড়ে থাকব বলে গয়নাগাটি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি। সালোয়ার-কামিজও নিলাম শুধু এক সেট। বাকি সব প্যান্ট আর ফতুয়া বা টিউনিক টাইপ পোশাক, যেন ছোটাছুটির কাজটা সহজ হয়। ভুবনও জিনস নিল, চিনোস নিল আর ওর যা লাগে। শুকনো খাবার বলতে শুধু চিপস নিয়েছিলাম। যেগুলো না নিলেই নয়, সেই সব প্রসাধনী পুরে ফেললাম সঙ্গে। আর যদি কোথাও খামাখা অপেক্ষা করতে হয়, তাই ব্যাকপ্যাকটায় ভরে নিলাম প্রিয় কমিকস ‘বেসিক আলী’র দশম খণ্ড। সদ্যই বইমেলা থেকে কিনে এক বন্ধু উপহার দিয়েছিল। ভালো কথা, পাসপোর্ট আর যাবতীয় জরুরি কাগজপত্র হ্যান্ডব্যাগে আলাদা করে নিয়ে নিয়েছিলাম। যেখানে-সেখানে এগুলো বের করে দেখাতে হয়। হাতের কাছে রাখাই শ্রেয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ, সিকিম ভ্রমণ করতে হলে অবশ্যই কমপক্ষে দশ কপি ভিসা, পাসপোর্টের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিতে হয়। এগুলো ছাড়াও আমরা নিরাপত্তার জন্য বিয়ের কাবিননামার ফটোকপি নিয়েছিলাম। আর হ্যাঁ, সিকিমে জায়গায় জায়গায় অনুমতি লাগে ভ্রমণ করার জন্য। সে কারণেই এতগুলো কাগজপত্র আর ছবি সঙ্গে নিতে হয়।
শ্যামলী পরিবহনের বাস ছাড়ে ৬টায়, আরামবাগ থেকে। সেখান থেকে আমাদের নিয়ে যায় কল্যাণপুরের স্টপেজে। পরে আমরা উঠি মূল বাসে, যেটা আমাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছে দেবে। মূল বাস ছাড়তে ছাড়তে প্রায় পৌনে ৮টা বেজে গেল। জ্যাম একদম পাইনি। বিশ মিনিটে সাভারের গেন্ডা অতিক্রম করে ফেলেছিলাম। কিন্তু যেতে যেতে একটা জায়গায় এসে জ্যামে আটকে গেলাম। কোথায় তা রাতের অন্ধকারে আন্দাজ করতে পারিনি। বাসের জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখলাম বিশাল মাঠ। মোটামুটি দূরে দেখা গেল মঞ্চ বানিয়ে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ শব্দটাই একমাত্র দেখতে পেলাম দূর থেকে। কিন্তু কীসের, সেটা আর দেখতে পারলাম না। ভাবলাম, হয়তো ভাষা দিবসের। কিন্তু অবাক হলাম মঞ্চের নৃত্যশিল্পীর নৃত্য দেখে। অশ্লীল ভঙ্গিতে ঢালিউড বা বলিউড স্টাইলে দাপাদাপি করছিলেন তিনি। ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে এমন ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ আমার বোধগম্য হলো না। ভুবন কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিল। ওকে ডেকে দেখাতেই কী একটা আনন্দ পেয়ে ফিক করে হেসে দিল। সঙ্গে আমিও। এমনিতেও আমার এ ধরনের নৃত্য ভালো লাগে না। দেশীয় ধাঁচের মুদ্রায়, মণিপুরি, ক্ল্যাসিক্যাল—এসব বান্ধবীকে নাচতে দেখে বড় হয়েছি। এগুলোই ভালোবেসেছি। যাই হোক, বাস আবার চলতে শুরু করে।
আসনটা এত পিচ্ছিল ছিল, একটু পর পর পিছলে পড়ে যাচ্ছিলাম। মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি। বাস ছাড়ার আগে বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং যাবতীয় দুশ্চিন্তাকারী আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনালাপ সেরে নিয়েছিলাম। কিন্তু যেই না আমার একটু ঘুম ঘুম পেয়ে চোখ লাগছিল, ঠিক তখনই আমার ফোনটা বেজে উঠছিল। না ধরা পর্যন্ত ফোন বাজতেই থাকছিল। এই করে সারা রাত পার হয়ে গেল। ভোর সাড়ে ৬টায় আমরা পৌঁছলাম রংপুরের পাটগ্রামে। সীমান্ত এলাকা। বেশ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে শ্যামলীর সেখানকার বাস কাউন্টারে। সকাল ৯টার আগে সীমান্ত খুলবে না। ততক্ষণ পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতেই হবে। তাই এই ফাঁকে সকালের নাশতাটা সেরে নিলাম আমরা। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন সেন্টারের কাজ সেরে ভারতে ঢুকতে ঢুকতে সকাল ১০টার মতো বেজে গেল। এরপর আবার ঘণ্টাখানেক সময় লাগল ভারতের ইমিগ্রেশন সেন্টারে। এর মধ্যে ভুবন তক্কে তক্কে ছিল সিকিমে যাওয়ার আরও মানুষ জোগাড় করতে। এমনিতে ফেসবুকে ভ্রমণ গ্রুপ থেকে দুজন জোগাড় হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা পরদিন আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা।
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন সেন্টারে বসে থেকে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়ে যায়, যাঁরা সিকিমে যাবেন। এর মধ্যে প্রহর সাহা নামের পাকা পিচ্চিটার বাবা-মা আমাদের তাঁদের সঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন। তাঁরা একদম আলাদা ঘুরবেন। কোনো দলের সঙ্গে না। শুধু পরিবার। তাঁরা রিসোর্টে থাকবেন। তাঁদের খরচাটা মনে হচ্ছিল একটু বেশি। তাঁরা আমাদের কাছ থেকে খরচ নিতেও আপত্তি করছিলেন। কিন্তু আমার মন সায় দিচ্ছিল না তাঁদের সঙ্গে যেতে। তবে প্রহর সাহাকে আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। ছয়-সাত বছরের মিষ্টি, গুলুগুলু একটা বাচ্চা।
মাঝরাতে বাস যখন বিরতিতে থেমেছিল, তখন সে হুড়মুড় করে লাফিয়ে উঠে বলেছিল, ‘আমরা কি গ্যাংটক চলে আসছি?’ ওর কথা শুনে বাসের সবাই খুব মজা পেয়েছিল। আরেকটা পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে দল বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ইমিগ্রেশনের ঠেলা সামলাতে সামলাতে তাঁদের হারিয়ে ফেললাম। বাংলাদেশের সীমানা পার হওয়ার সময় এক আংকেলকে দেখলাম তাঁর নাম আগে না ডাকায় একটা লঙ্কাকাণ্ড বাঁধিয়ে দিলেন। সঙ্গে যোগ দিলেন তাঁর সঙ্গীরাও। ওই লাইনে দাঁড়িয়ে আকাশ ভাইদের সঙ্গে দেখা হলো। তখনো জানতাম না এরাই আমাদের বাকিটা ভ্রমণ বিনোদন দেবেন। একপর্যায়ে ভুবনকে ডেকে নিয়ে গেল ভারতের ইমিগ্রেশন সেন্টারে। আমি দেশের মাটিতে একা দাঁড়িয়ে কেমন জানি একটা অনুভূতি পাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আমার ডাক পড়ল। সব ঝামেলা শেষ করে যখন ঠিক ভারতের সীমানায় দাঁড়িয়ে আমার দেশটাকে দেখছিলাম, কেমন জানি এক অনুভূতি হচ্ছিল। বোঝাতে পারব না। খুব সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছি জেনেও চোখটা ছলছল করে উঠেছিল। দেশকে যে কতটা ভালোবাসি, তা প্রতিমুহূর্তে টের পেয়েছিলাম এই ভ্রমণের সময়। হোক আমার দেশ নোংরা, যানজটে ভরা, দুর্নীতিতে সেরা; কিন্তু আমার দেশ আমি ভালোবাসি। এসব আবেগ ভাবতে ভাবতে বাসে উঠে বসলাম। শিলিগুড়ি যেতে হবে। বাসের সহকারীকে দেখলাম সিকিমে যাওয়া মানুষদের সঙ্গে আলাপ করতে। তাঁরা যাচ্ছিলেন শ্যামলী পরিবহনের প্যাকেজে। আমরা প্যাকেজ নিইনি খরচ কমাব বলে। কিন্তু দল তো খুঁজতেই হবে। দল ছাড়া সিকিমে যাওয়াটা ঝক্কি। ভুবনকে বললাম সহকারীর সঙ্গে কথা বলতে। ভুবন তাঁকে জিজ্ঞেস করায় আরেকজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। মিলন ভাই।বাংলাদেশি। রংপুরের মানুষ। শ্যামলীর পক্ষ থেকে উনি সিকিম প্যাকেজের ভ্রমণকারীদের শিলিগুড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। যদিও আনন্দের ফাঁদে পড়ে পুরো ভ্রমণটাই আমাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন পরে। মিলন ভাই আশা দিলেন, শিলিগুড়ি পৌঁছে অমর দার সঙ্গে কথা বলিয়ে দিলে উনি একটা ব্যবস্থা করবেন। অমর দা হচ্ছেন শ্যামলী প্যাকেজের গাইড। ওনার বাড়ি আসলে বাংলাদেশে। কিন্তু অভিমান করে শিলিগুড়িতে চলে গেছেন। দুই দেশের নাগরিকত্ব আছে তাঁর। আচ্ছা, তাঁর গল্প পরে কোথাও করব।
কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ছাড়তে ছাড়তে চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করে নিলাম। পথে একটু পর পর দেখলাম কালীমন্দির আর মদের দোকান! সিকিমে তো ফুটপাতে নিয়ে বিক্রি করে। হঠাৎ মনে হলো, নাটক-সিনেমায় দেখি ভারতীয় বাঙালিরা দুর্গাপূজা বেশি করে। অথচ এদিকে কালীমন্দির বেশি। সর্বসাকল্যে একটা মাত্র দুর্গা প্রতিমা দেখতে পেয়েছিলাম। শিলিগুড়ির পথে আবার হনুমানের মূর্তি আর মন্দির বেশি দেখলাম। বুঝলাম, একেক জায়গায় একেক ভগবানের প্রভাব বেশি। আরেকটা জিনিস নজর এড়াল না আমার। জলপাইগুড়ি পর্যন্ত সহজে মনে হচ্ছিল না বাংলাদেশ থেকে ভিন্ন কিছু। পার্থক্য এটুকু বের করতে পারলাম—তাদের ঘরবাড়িগুলো আমাদের চেয়ে খানিকটা খাটো মনে হলো; ওদের ট্রাকের নাক বোঁচা, আমাদেরগুলো চোখা; ট্রাকের গায়ে হিন্দিতে লেখা ‘জয় মাতা দি’ কিংবা বাংলায় লেখা ‘জয় মা দুর্গা বা কালী’, আমাদের যেমন লেখা থাকে ‘আল্লাহর দান’ টাইপ কথাবার্তা। এগুলো ভাবছিলাম আর সেই সঙ্গে তিস্তার মায়াভরা মুখ দেখছিলাম। যদিও আসল রূপ সিকিমের পথেই দেখা গেছে। কী যে মায়াময় এই নদী! ওহ্, ভারতের সীমানায় ঢুকেও কিন্তু বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলাম। ওই চেংড়াবান্ধা পর্যন্তই। কিন্তু ব্যাপারটা আমার খুব মজা লেগেছিল। বাবা অবশ্য আগে বলে দিয়েছিল, ‘নেটওয়ার্ক পাবি, পার হয়ে ফোন দিস।’ দিয়েছিলাম।
ঘণ্টা তিনেক সময় লাগল শিলিগুড়ি পৌঁছাতে। এই শহরটাকে বলা হয় জলপাইগুড়ি শহরের যমজ! তবে এর ৬২ ভাগ দার্জিলিংয়ে আর ৩৮ ভাগ অংশ পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কলকাতার পরেই যে বড় শহরের নাম উঠে আসে, সেটা শিলিগুড়ি। বলা চলে, হিমালয়ের পাদদেশে শিলিগুড়ির অবস্থান। আর ওপরে সিকিম রাজ্য। শিলিগুড়ির মানুষ এভাবে স্থান নির্ধারণ করে—পাহাড়ের ওপরে আর পাহাড়ের নিচে। সিকিমের মানুষদের ওরা বলে ‘ওপরের লোক’!
(চলবে)

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৯ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১১ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৩ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না
বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।
৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে
পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।
৫. নিজের প্রতি সদয় হোন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না
বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।
৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে
পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।
৫. নিজের প্রতি সদয় হোন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল

দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমার
১১ অক্টোবর ২০২২
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১১ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৩ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমার
১১ অক্টোবর ২০২২
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৯ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৩ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমার
১১ অক্টোবর ২০২২
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৯ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১১ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৫ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমার
১১ অক্টোবর ২০২২
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৯ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১১ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৩ ঘণ্টা আগে