শিমুল খালেদ

সকালবেলার চন্দ্রঘোনা। কুয়াশার আচ্ছাদন থেকে চারপাশ আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠতে শুরু করেছে কেবল। রাঙ্গুনিয়া লিচুবাগান হয়ে আমরা যখন চন্দ্রঘোনা বাজারে পৌঁছাই, বেলা বাড়ার সঙ্গে মফস্বল শহরটিও ব্যস্ত হয়ে উঠছে। দূর পাহাড়ের জুমে ফলানো আনারস এক জায়গায় স্তূপ করে রাখা; গায়ের চাদর একপাশে রেখে মিঠে রোদ গায়ে মাখতে মাখতে মধ্যবয়সী বিক্রেতা বেতের মোড়া পেতে বসেছেন। ধাতব শব্দ তুলে দোকানের শাটার একটা-দুটো করে উঠতে শুরু করেছে।
দীর্ঘ ভ্রমণের পর আড়ষ্ট হয়ে থাকা শরীর এক-আধটু কসরতের জন্য মুখিয়ে ছিল। তবে সেই আশায় গুঁড়েবালি। সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের তাড়া—তড়িঘড়ি ওঠে পড়তে হবে। তিন চাকায় চড়িয়ে নিয়ে যাবে আমাদের গন্তব্যস্থল কাপ্তাইয়ে, কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন ক্যাম্পসাইটে। সারা রাত সিলেট-চট্টগ্রাম ট্রেন ভ্রমণের পর ভোরবেলায় বাস, অতঃপর অটোরিকশায় প্রায় ষোলো ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষ হচ্ছে। রাঙামাটিতে এটা আমার প্রথম ভ্রমণ এবং এই আসাটাও হুটহাট করেই।
সপ্তাহের মাঝামাঝি এক সকালবেলার কথা। সেদিন সকাল সকাল অচেনা নম্বর থেকে ফোনে একটা এসএমএস আসে। আমেরিকাপ্রবাসী বন্ধু রাফাত আনসারী সেটি পাঠিয়েছে। মেসেজের সারমর্ম, সে দুই দিন আগে দেশে ছুটিতে এসেছে এবং সপ্তাহের শেষ দিকে কয়েকজন মিলে রাঙামাটি বেড়াতে যাচ্ছে। আমাকেও সেই দলের সদস্য ধরে নিয়ে ইতিমধ্যে ট্রেনের টিকিটও কেটে ফেলেছে। আমি যেন অমত না করি!
পাহাড়ের গা পেঁচিয়ে ফিতার মতো চলে যাওয়া পিচঢালা পথ ধরে ছোট বাহনজোড়া চলতে থাকল। মাঝে মাঝে একটা-দুটো সিঁড়িপথ চোখে পড়ল, মূল পথ থেকে ওপরের দিকে উঠে গেছে, পাহাড়ের চূড়ায় বাংলো আকৃতির একটা-দুটো কুটির। যেতে যেতে পথের দুপাশ ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। বনানীর চেহারাও পাল্টায়। পাহাড়জুড়ে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা বনের ঠাসবুনোট, বনতলে লতাগুল্ম কন্দজাতীয় উদ্ভিদের আচ্ছাদন। আন্দাজ করি, কাপ্তাইয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমায় চলে এসেছি। পথের ধারে সাঁটানো সাইনবোর্ড দেখে নিশ্চিত হলাম কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান হয়েই যাচ্ছি।
অরণ্যের বুনো স্পর্শ মেখে চোখেমুখে আছড়ে পড়ছে পৌষের বাতাস। গন্তব্যস্থল কাপ্তাই প্রশান্তি পার্কের ফটকের সামনে ইতিমধ্যে এসে পড়েছি। ঘড়ির কাঁটা বলছে, সবে দুপুর হতে চলেছে। আমরা এসেছি ক্যাম্পিং ট্যুরে। তাই আপাতত বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে সবার ব্যাগ-ব্যাগেজ রাখার জন্য একটা রুম পাওয়া গেল। সেখানে ব্যাগপত্র রেখে ছাউনিতে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে চলে গেলাম নদীর একদম তীরে।
খরস্রোতা কর্ণফুলীর কলকল স্রোত বয়ে চলেছে জীবনের উচ্ছ্বাসে। নদীর একদম পাশ ঘেঁষে পার্ক কর্তৃপক্ষের বানানো একটা মাচাঘর। ওপরে শণ ও বেত, মেঝে মুলিবাঁশ দিয়ে তৈরি। ক্লান্ত শরীর নিয়ে সাত-পাঁচ না ভেবেই মাচার মেঝেতে শুয়ে পড়ি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দল ভারী করতে যোগ দেয় রাফাত ও রুবেল। শীত ঋতুর শান্ত সৌম্য কর্ণফুলী। উজ্জ্বল সূর্যালোকে ঝলমল করছে ছোট ছোট ঢেউ কিংবা অল্পস্বল্প নড়াচড়া।
নদী পেরিয়ে ওই পাশে শিলাপাথরের পাহাড়, তার গায়ে ঘন পাহাড়ি বন। দীর্ঘ ভ্রমণের পর গা এলানোর সুযোগ পেয়ে আয়েশি ভঙ্গিতে, শীতে দুপুরের ফুরফুরে শীতল হাওয়া গায়ে মেখে কতক্ষণ শুয়ে ছিলাম ঠিক জানি না। বছর ষোলোর ছিপছিপে গড়নের এক কিশোরের গলার আওয়াজে সংবিৎ ফিরল। ঘাটে কায়াক প্রস্তুত; আমাদের কায়াকিংয়ের সময় হয়ে গেছে। মরা ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শুকনো একটি গাছের নিচে অপেক্ষমাণ রংবেরঙের কয়েকটি কায়াক। চারটি নৌকার প্রতিটিতে দুজন করে ভাগ হয়ে আমরা আটজন চেপে কর্ণফুলীর টলমলে জলে নেমে পড়ি।
একদম প্রথম বোটের সামনের সিটে আমি, পেছনের সিটে সঙ্গী সুমন। বোটগুলোর প্রতিটির জন্য একটা করেই বইঠা বরাদ্দ। দুপাশে পাখা লাগানো বইঠা ঠেলতে ঠেলতে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছিল। এ এক আজব জলতরি, যেটার পেটের ভেতরে ঢুকলে অর্ধেক শরীর ঢুকে যায় আন্ডারওয়াটার বা পানির তলায়! বেশ রোমাঞ্চ লাগছিল। পানিতে বইঠার চাপে কায়াক ছুটতে থাকে। ভাটি ধরে যেতে যেতে আমরা দেখতে থাকি নদীতীরের দিনযাপন। পানিতে হাপুস-হুপুস করছিল ছেলেপুলেদের একটা দল। আরেকটু সামনে যেতেই দেখলাম ছোট জাল নদী থেকে তুলে তা থেকে মাছ ধরে খলুইতে রাখছেন এক জেলে দম্পতি।
বইঠা বাইতে বাইতে খেয়াল করলাম, নদীর ঠিক মাঝামাঝি চলে এসেছি। আর সেখান থেকে চোখের সামনে দৃশ্যমান হয় মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্যপট। নদীর মাঝ বরাবর পানির সমতলের দেড়-দুই ফুট ওপর থেকে সামনে তাকালে ভাটির পানে বয়ে যাওয়া জলস্রোত পেরিয়ে দুই পাড়জুড়ে ঘন অরণ্যঢাকা পাহাড়শ্রেণি। নদীর গা ঘেঁষা সেই পাহাড় পেরিয়ে পেছনে উঁকি দিচ্ছে আরও উঁচু পাহাড়। তারপর আরও উঁচু পাহাড় স্তর। অপূর্ব সেই দৃশ্য!
সীতা পাহাড় আর রাম পাহাড় নামের এই পাহাড়ের মধ্য দিয়েই খরস্রোতা কর্ণফুলী প্রবাহিত হয়েছে। কর্ণফুলীর উচ্ছল স্রোতোধারা আর চারপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট জন্ম দিয়েছে না জানি কত শত ছন্দ আর কবিতার! প্রেমের কবি নজরুল তাই তো কর্ণফুলীকে ভালোবেসে লিখেছিলেন, ‘তোমার সলিলে পড়েছিল কবে কার কানফুল খুলি, তোমার স্রোতের উজান ঠেলিয়া কোন তরুণী কে জানে, সাম্পান নায়ে ফিরেছিল তার-দয়িতের সন্ধানে, আনমনে তার খুলে গেল খোঁপা, কানফুল গেল খুলি, সে ফুল যতনে পরিয়া কর্ণে হলে কি কর্ণফুলী?’
কর্ণফুলী নদীর নামের উৎপত্তি সম্পর্কে নানা কাহিনি শোনা যায়। তবে সবচেয়ে প্রচলিত গল্পটি হচ্ছে—আরাকানের এক রাজকন্যা চট্টগ্রামের এক রাজপুত্রের প্রেমে পড়ে। এক জ্যোৎস্না রাতে তারা দুজন এই নদীতে নৌভ্রমণ উপভোগ করছিল। নদীর পানিতে চাঁদের প্রতিফলন দেখার সময় রাজকন্যার কানে গোঁজা একটি ফুল পানিতে পড়ে যায়। ফুলটি হারিয়ে কাতর রাজকন্যা সেটি উদ্ধারের জন্য পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু প্রবল স্রোতে রাজকন্যা ভেসে যায়, তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাজপুত্র রাজকন্যাকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপ দেয়, কিন্তু সফল হয়নি। প্রিয়তমার শোকে রাজপুত্র পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেয়। করুণ এই কাহিনি থেকেই নদীটির নাম হয় কর্ণফুলী। মারমা জনগোষ্ঠীর কাছে এর নাম কিনসা খিয়ং। উজানে সীমান্তের ওপারে মিজোরামে কর্ণফুলীকে ডাকা হয় খাওৎলাং তুইপুই নামে।
বইঠা থামিয়ে মাঝ নদীতে থেমে ভরদুপুরের মৌনতা কিছুক্ষণ উপভোগ করে তারপর কায়াকের মাথা নদীর অপর পাশ অভিমুখে ঘুরালাম। সেখানে কয়েকজন জেলে পাথুরে পাহাড়ের দেয়াল ঘেঁষে নৌকা নিয়ে একদম স্থির বসে ছিল। চোখে শ্যেনদৃষ্টি; নিবদ্ধ নদীর পানির দিকে। যেন স্রোতের ভেতরে কোনো বিশেষ নড়াচড়ার অপেক্ষায়। পাহাড়ের পাথুরে শিলা উপরিভাগে যতটা দৃশ্যমান হয়; তার চেয়েও নদীর তলদেশে লুকিয়ে থাকা অংশ খুব একটা কম নয়। জেলেদের সঙ্গে আলাপে জানলাম, নদীর এই অংশে গভীরতা ৩৫-৪০ ফুটের মতো।
খেয়াল করলাম, নদীর অপরাপর দিকে পানি বাতাসে মৃদু ঢেউ খেলানো থাকলেও এখানে একদম স্থির। উজান থেকে নেমে আসা স্রোতে পাথুরে দেয়ালে বাধা পেয়ে ঘূর্ণিপাক খাচ্ছিল। লাইফ জ্যাকেট পরা থাকলেও সঙ্গী সুমন সাঁতার জানেন না। তাই সেখান থেকে তড়িঘড়ি করে এপাশে ঘাটের দিকে চলে আসি। কায়াক পর্ব শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর লাঞ্চের ডাক পড়ে। পরের গন্তব্য কাপ্তাই হ্রদ।
পার্কের ফটক থেকে কাপ্তাই সদর অভিমুখে চলে যাওয়া পথের পুরোটাই ক্রমশ ওপরের দিকে উঠে গেছে। এক পাশে সংরক্ষিত পাহাড়ি বনভূমি, অপর পাশে বেশ নিচে কর্ণফুলী। কাপ্তাই সদরে বাহন থেকে মাটিতে পা ফেলার আগেই চোখে পড়ল কাপ্তাই হ্রদের অবারিত জলরাশি। নৌকাঘাট সামনেই। ডানের রাস্তাটি চলে গেছে জলবিদ্যুৎ বাঁধের দিকে। বাহন থেকে নেমে প্রথমেই কানে এল মধ্যবয়সী এক নারীকণ্ঠ—মামা, লেকে ঘুরবেন, সাম্পান দিয়া?
ঘাটে গিয়ে দরদাম শেষে আটজনের দলের জন্য একটা জুতসই লঞ্চ নেওয়া হলো। লঞ্চের চালকই গাইড। কাপ্তাই হ্রদের জলরাশিতে আলোড়ন তুলে ছুটে চলল জলযান। দূরে এক-দুটো সাম্পান নৌকা ভাসতে দেখলাম। নৌকার দুপাশে একজোড়া বইঠা। বইঠা দুটো গলুইয়ের দুপাশ থেকে উঠে গিয়ে তার হাতল একসঙ্গে বাঁধা হয়েছে কোমরসমান উঁচুতে। মাঝিকে তাই দাঁড়িয়ে ঠেলতে হচ্ছিল বইঠাযুগল। ছোট নৌকা, তাই দুজন করেই যাত্রী দেখলাম। লঞ্চ আস্তে আস্তে হ্রদের গভীরের দিকে যাচ্ছে আর আমরা যেন ক্রমশ ঢুকে যাচ্ছি নীলাভ কোনো রাজ্যপাটে!
হ্রদের নীল জল যেন সুনয়নার নীলচক্ষু! জলরাশির মাঝে সবুজ দ্বীপের মতো জেগে আছে একেকটা টিলা। টিলাগুলোর বেশির ভাগেই জনবসতি নেই। নীল আর সবুজ মিলেমিশে দৃষ্টিতে মুগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দিতে থাকল। ভাসতে ভাসতে অন্য নৌকায় যাত্রী হওয়া পাহাড়ের স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় হয়। দূরে, বহু দূরে আবছা অবয়বে কয়েক স্তরের পাহাড়শ্রেণি। মাঝি বলল, পাহাড়ের ওই গহিনে মিজোরাম সীমান্ত। আরও কিছুক্ষণ হ্রদে ভাসার পর একটি টিলার পাশে লঞ্চ নোঙর করা হলো।
একটা বয়সী পাকুড়গাছ দাঁড়িয়ে আছে পাকা সিঁড়ি বাঁধানো ঘাটে। টিলার ওপর একটা বাজার। নেমে পা বাড়াই সেদিকে। বাজারটির ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই চাকমা। ছোট ছোট দোকান। বয়সী কয়েকজন প্রৌঢ় এক জায়গায় জটলা বেঁধে গল্প জুড়ে দিয়েছেন। কথা চলছিল তাঁদের মাতৃভাষায়। টিলার ওপর বাজারের শেষ মাথায় অল্পনা চাকমা দিদির ছোট্ট খাবারের দোকান। কড়াইয়ের গরম তেলে পিঠা ভাজা হচ্ছিল। নারকেলের টুকরো আর গুড়ের সঙ্গে ময়দার মিশ্রণে বানানো লালচে রঙের সেই পিঠার স্বাদ মুখে লেগে আছে এখনো।
রাঙামাটির মগবান ইউনিয়নে পড়েছে এই বাজার। নাম নতুন বাজার। টিলার অন্য পাশে চাকমাদের পাড়াটার নাম দোখাইয়াপাড়া। দোকানগুলোর টিনের দেয়ালে সাঁটানো নির্বাচনী পোস্টার। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছিল তখন। হ্রদে নৌকায় করে মাইকে চলছিল প্রার্থীদের প্রচার। এ রকম এক মাইক থেকে কানে আসে, ‘পাহাড়ি বাঙালি ভাই ভাই, আনারস মার্কায় ভোট চাই’। নৌকায় ফিরে আরও কিছুক্ষণ নৌযাত্রার পর আমরা প্রবেশ করলাম জীবনতলী ইউনিয়নে। বিকেল গড়াচ্ছে, রোদও মিঠে মিঠে হচ্ছে। মাঝি এবার নোঙর করল এক বৌদ্ধবিহারের টিলার পাদদেশে।
টিলার চূড়ায় সোনালি রঙের বুদ্ধমূর্তি। বেশ দূর থেকেও স্পষ্ট চোখে পড়ে। টিলার সিঁড়ি বেয়ে আমরা ওপরে উঠে এলাম। বৌদ্ধমন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড়। প্রার্থনাকক্ষের ভেতরে মৃদু আলোয় যেন অন্যরকম আবহ! ফুরফুরে বাতাস উঠে আসছে হ্রদ থেকে। ধনপাতা বনবিহার থেকে নৌকায় ফিরে এলাম আমরা; মাঝিও আবার নোঙর তুললেন।
কাপ্তাই হ্রদ এবার সেজেছে অন্যরকম চেহারায়। সূর্য পাটে যাচ্ছে। গোধূলির সোনা রঙে নৈসর্গিক মুগ্ধতায় সেজেছে পুরো হ্রদ। চারপাশজুড়ে অপূর্ব এক নীরবতা। অনুভব করতে জানলে মৌনতারও প্রগাঢ় কোনো ভাষা থাকে! ফুরোমন পাহাড়ের রাজ্যপাটে পৌষের শীতলতা ভর করতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার ছাই রং আস্তে আস্তে চারপাশের সোনালি জলরাশির ওপর আঁধারের চাদর ফেলে ঢেকে দিচ্ছে। কাপ্তাই নৌকাঘাটে ফেরার আগেই গ্রাস করল ঘুটঘুটে অন্ধকার।
ঘাটে নেমে সেখানের এক টংদোকানে চায়ের পর্ব সেরে ফিরে এলাম আস্তানায়। ক্যাম্পসাইটে তাঁবু বসানো হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। রাতের খাবারের ডাক পড়ল একটু আগেভাগেই। উদরপূর্তির পর তাঁবুতে ফিরে টের পেলাম হাড় কাঁপানো ঠান্ডা চেপে ধরছে। শীতে কাঁপতে কাঁপতে নদীর পাড়ে বসে কিছুক্ষণ চলল আড্ডা-গল্প। কিছু ফানুস আমরা সঙ্গে করে নিয়েছিলাম। সেগুলো ওড়াতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হলো। নদী থেকে আসা বাতাসের দাপটে দেশলাইয়ের কাঠিতে আগুন জ্বালানো যাচ্ছিল না। কয়েকবারের প্রচেষ্টার পর ওড়ানো গেল। রঙিন কাপড়ের ভেতরে আলোর প্রদীপ জ্বলতে জ্বলতে ওপরে উঠে যেতে থাকে। ঘাড় পেছনে বাঁকিয়ে একটানা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় তারাদের ভিড়ে কোনটা ফানুস সেটা আর ঠাহর করতে পারলাম না।
রাত বাড়ছে; ক্যাম্পিংয়ে আসা প্রায় সবাই ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে যার যার তাঁবুতে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে গেছে নদীর অন্য পাশের ঘন বন। বন্যপ্রাণীবিষয়ক এক লেখকের বয়ানে জেনেছিলাম, কাপ্তাইয়ের ওই পাহাড়ি বনভূমিতে বসবাস করে বিড়াল গোত্রের সুন্দরতম এক সদস্য ক্লাউডেড লেপার্ড বা মেঘলা চিতা। স্থানীয়রা যাকে ডাকে লতা বাঘ বা গেছোবাঘ নামে। সারা দিন কোনো গাছের ডালে অলস শুয়ে থেকে নিশ্চয় তার সময় হয়েছে শিকারের সন্ধানে বের হওয়ার! নদীপাড়ের পাথরের চাতালে থাবার শক্ত নখে ভারসাম্য রক্ষা করে সামনে ঝুঁকে তৃষ্ণা মেটাতে মেটাতে দেখছে কি অন্য পাড়ের মনুষ্য ক্রিয়াকলাপ?
তাঁবুতে ঢুকে পড়ার পর শীত যেন আরও জেঁকে বসল। নদী থেকে ধেয়ে আসা বাতাসের সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীত; দাঁতে দাঁত বাড়ি লাগছিল যেন। বেড হিসেবে প্রতিটি তাঁবুর মেঝেতে দেওয়া হয়েছে দুই ফালি ককশিট। নিচ থেকে ওঠা ঠান্ডা আটকানোর জন্য তা যথেষ্ট না হওয়ায় রাফাত তাঁবু থেকে বের হয়ে কোত্থেকে জানি আরও দুই ফালি ককশিট নিয়ে এল। এবার বেডটা মোটামুটি আরামদায়ক হয়ে উঠল। ঝিম ধরে থাকা শীতের রাতে নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে কানে আসছিল ফোঁটা ফোঁটা কুয়াশা দলা বেঁধে তাঁবুর গায়ে আছড়ে পড়ার শব্দ। দূর থেকে থেমে থেমে কানে আসছিল একপাল শেয়ালের হুক্কাহুয়া।
ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে রাত কাটানোর পর ঘুম ভাঙল বেশ ভোরে। তাঁবুর চেইন খুলে বাইরে বেরিয়ে দেখি ইতিমধ্যে দলের অনেকেই উঠে পড়েছে। ভোরের কর্ণফুলী সবে আড়মোড়া ভাঙছে। কুয়াশার দঙ্গল সারা রাত নদীর ওপর ঘাপটি মেরে বসে থাকার পর আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। নদীর শান্ত জলে ছুঁয়ে ছুঁয়ে কুয়াশার অস্থির ছুটে চলার সঙ্গে যোগ দেয় একট-দুটো পানকৌড়ি। নদীর ওপর পাশের বনের চেহারাও হয়ে গেছে কুয়াশাময়।
জেলেরা তাঁদের নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন সেই ভোরেই। কোনোটা ছইওয়ালা, আবার কোনোটা খোলা ছোট নৌকা। হাড় কাঁপানো এমন শীতও যেন তাঁদের থোড়াই কেয়ার! আগের দিন কায়াকিংয়ের সময় জেলেদের কাছে জেনেছিলাম, নদীর অপর পাশের পাথুরে পাহাড়ের খাড়ির অংশ বেশি গভীর। ক্যাটফিশ গোত্রীয় মাছের আবাসস্থল সেই পাথুরে তলদেশে। আর পুরো নদীতেই চলাফেরা করে কার্পজাতীয় মাছ। এসব নিয়ে যখন ভাবছিলাম, হঠাৎই একটা বড়সড় মাছের ঘাই নদীর মাঝ বরাবর আলোড়ন তুলল! শান্ত পানিতে তৈরি হওয়া ঢেউয়ের গোলাকার বলয় চারপাশে প্রসারিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ল মিলিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
ক্যাম্পসাইট থেকে ফিরে নাশতার জন্য রেস্তোরাঁয় ডাক পড়ল। ডিম ভুনার সঙ্গে গরম-গরম খিচুড়িতে পেট পুরে নাশতা সেরে ঝটপট গোছগাছ সেরে বেরিয়ে পড়তে হলো। আমাদের পরের গন্তব্য রাঙামাটি শহর। কাপ্তাই হ্রদের পাশজুড়ে শৈল্পিক রেখা টেনে চলে গেছে যে পাহাড়শ্রেণি, তার ওপর দিয়ে চলে যাওয়া চড়াই-উতরাই পথ ধরে আমরা যাব। বাহনে চেপে বসার আগে ঘাড় ফিরিয়ে আরেকবার কর্ণফুলীর দিকে চোখ রেখে অস্ফুটে বললাম, ভালো থেকো কাপ্তাই; আবার দেখা হবে নিশ্চয়!
লেখক: ব্যাংক কর্মকর্তা

সকালবেলার চন্দ্রঘোনা। কুয়াশার আচ্ছাদন থেকে চারপাশ আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠতে শুরু করেছে কেবল। রাঙ্গুনিয়া লিচুবাগান হয়ে আমরা যখন চন্দ্রঘোনা বাজারে পৌঁছাই, বেলা বাড়ার সঙ্গে মফস্বল শহরটিও ব্যস্ত হয়ে উঠছে। দূর পাহাড়ের জুমে ফলানো আনারস এক জায়গায় স্তূপ করে রাখা; গায়ের চাদর একপাশে রেখে মিঠে রোদ গায়ে মাখতে মাখতে মধ্যবয়সী বিক্রেতা বেতের মোড়া পেতে বসেছেন। ধাতব শব্দ তুলে দোকানের শাটার একটা-দুটো করে উঠতে শুরু করেছে।
দীর্ঘ ভ্রমণের পর আড়ষ্ট হয়ে থাকা শরীর এক-আধটু কসরতের জন্য মুখিয়ে ছিল। তবে সেই আশায় গুঁড়েবালি। সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের তাড়া—তড়িঘড়ি ওঠে পড়তে হবে। তিন চাকায় চড়িয়ে নিয়ে যাবে আমাদের গন্তব্যস্থল কাপ্তাইয়ে, কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন ক্যাম্পসাইটে। সারা রাত সিলেট-চট্টগ্রাম ট্রেন ভ্রমণের পর ভোরবেলায় বাস, অতঃপর অটোরিকশায় প্রায় ষোলো ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষ হচ্ছে। রাঙামাটিতে এটা আমার প্রথম ভ্রমণ এবং এই আসাটাও হুটহাট করেই।
সপ্তাহের মাঝামাঝি এক সকালবেলার কথা। সেদিন সকাল সকাল অচেনা নম্বর থেকে ফোনে একটা এসএমএস আসে। আমেরিকাপ্রবাসী বন্ধু রাফাত আনসারী সেটি পাঠিয়েছে। মেসেজের সারমর্ম, সে দুই দিন আগে দেশে ছুটিতে এসেছে এবং সপ্তাহের শেষ দিকে কয়েকজন মিলে রাঙামাটি বেড়াতে যাচ্ছে। আমাকেও সেই দলের সদস্য ধরে নিয়ে ইতিমধ্যে ট্রেনের টিকিটও কেটে ফেলেছে। আমি যেন অমত না করি!
পাহাড়ের গা পেঁচিয়ে ফিতার মতো চলে যাওয়া পিচঢালা পথ ধরে ছোট বাহনজোড়া চলতে থাকল। মাঝে মাঝে একটা-দুটো সিঁড়িপথ চোখে পড়ল, মূল পথ থেকে ওপরের দিকে উঠে গেছে, পাহাড়ের চূড়ায় বাংলো আকৃতির একটা-দুটো কুটির। যেতে যেতে পথের দুপাশ ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। বনানীর চেহারাও পাল্টায়। পাহাড়জুড়ে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা বনের ঠাসবুনোট, বনতলে লতাগুল্ম কন্দজাতীয় উদ্ভিদের আচ্ছাদন। আন্দাজ করি, কাপ্তাইয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমায় চলে এসেছি। পথের ধারে সাঁটানো সাইনবোর্ড দেখে নিশ্চিত হলাম কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান হয়েই যাচ্ছি।
অরণ্যের বুনো স্পর্শ মেখে চোখেমুখে আছড়ে পড়ছে পৌষের বাতাস। গন্তব্যস্থল কাপ্তাই প্রশান্তি পার্কের ফটকের সামনে ইতিমধ্যে এসে পড়েছি। ঘড়ির কাঁটা বলছে, সবে দুপুর হতে চলেছে। আমরা এসেছি ক্যাম্পিং ট্যুরে। তাই আপাতত বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে সবার ব্যাগ-ব্যাগেজ রাখার জন্য একটা রুম পাওয়া গেল। সেখানে ব্যাগপত্র রেখে ছাউনিতে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে চলে গেলাম নদীর একদম তীরে।
খরস্রোতা কর্ণফুলীর কলকল স্রোত বয়ে চলেছে জীবনের উচ্ছ্বাসে। নদীর একদম পাশ ঘেঁষে পার্ক কর্তৃপক্ষের বানানো একটা মাচাঘর। ওপরে শণ ও বেত, মেঝে মুলিবাঁশ দিয়ে তৈরি। ক্লান্ত শরীর নিয়ে সাত-পাঁচ না ভেবেই মাচার মেঝেতে শুয়ে পড়ি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দল ভারী করতে যোগ দেয় রাফাত ও রুবেল। শীত ঋতুর শান্ত সৌম্য কর্ণফুলী। উজ্জ্বল সূর্যালোকে ঝলমল করছে ছোট ছোট ঢেউ কিংবা অল্পস্বল্প নড়াচড়া।
নদী পেরিয়ে ওই পাশে শিলাপাথরের পাহাড়, তার গায়ে ঘন পাহাড়ি বন। দীর্ঘ ভ্রমণের পর গা এলানোর সুযোগ পেয়ে আয়েশি ভঙ্গিতে, শীতে দুপুরের ফুরফুরে শীতল হাওয়া গায়ে মেখে কতক্ষণ শুয়ে ছিলাম ঠিক জানি না। বছর ষোলোর ছিপছিপে গড়নের এক কিশোরের গলার আওয়াজে সংবিৎ ফিরল। ঘাটে কায়াক প্রস্তুত; আমাদের কায়াকিংয়ের সময় হয়ে গেছে। মরা ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শুকনো একটি গাছের নিচে অপেক্ষমাণ রংবেরঙের কয়েকটি কায়াক। চারটি নৌকার প্রতিটিতে দুজন করে ভাগ হয়ে আমরা আটজন চেপে কর্ণফুলীর টলমলে জলে নেমে পড়ি।
একদম প্রথম বোটের সামনের সিটে আমি, পেছনের সিটে সঙ্গী সুমন। বোটগুলোর প্রতিটির জন্য একটা করেই বইঠা বরাদ্দ। দুপাশে পাখা লাগানো বইঠা ঠেলতে ঠেলতে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছিল। এ এক আজব জলতরি, যেটার পেটের ভেতরে ঢুকলে অর্ধেক শরীর ঢুকে যায় আন্ডারওয়াটার বা পানির তলায়! বেশ রোমাঞ্চ লাগছিল। পানিতে বইঠার চাপে কায়াক ছুটতে থাকে। ভাটি ধরে যেতে যেতে আমরা দেখতে থাকি নদীতীরের দিনযাপন। পানিতে হাপুস-হুপুস করছিল ছেলেপুলেদের একটা দল। আরেকটু সামনে যেতেই দেখলাম ছোট জাল নদী থেকে তুলে তা থেকে মাছ ধরে খলুইতে রাখছেন এক জেলে দম্পতি।
বইঠা বাইতে বাইতে খেয়াল করলাম, নদীর ঠিক মাঝামাঝি চলে এসেছি। আর সেখান থেকে চোখের সামনে দৃশ্যমান হয় মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্যপট। নদীর মাঝ বরাবর পানির সমতলের দেড়-দুই ফুট ওপর থেকে সামনে তাকালে ভাটির পানে বয়ে যাওয়া জলস্রোত পেরিয়ে দুই পাড়জুড়ে ঘন অরণ্যঢাকা পাহাড়শ্রেণি। নদীর গা ঘেঁষা সেই পাহাড় পেরিয়ে পেছনে উঁকি দিচ্ছে আরও উঁচু পাহাড়। তারপর আরও উঁচু পাহাড় স্তর। অপূর্ব সেই দৃশ্য!
সীতা পাহাড় আর রাম পাহাড় নামের এই পাহাড়ের মধ্য দিয়েই খরস্রোতা কর্ণফুলী প্রবাহিত হয়েছে। কর্ণফুলীর উচ্ছল স্রোতোধারা আর চারপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট জন্ম দিয়েছে না জানি কত শত ছন্দ আর কবিতার! প্রেমের কবি নজরুল তাই তো কর্ণফুলীকে ভালোবেসে লিখেছিলেন, ‘তোমার সলিলে পড়েছিল কবে কার কানফুল খুলি, তোমার স্রোতের উজান ঠেলিয়া কোন তরুণী কে জানে, সাম্পান নায়ে ফিরেছিল তার-দয়িতের সন্ধানে, আনমনে তার খুলে গেল খোঁপা, কানফুল গেল খুলি, সে ফুল যতনে পরিয়া কর্ণে হলে কি কর্ণফুলী?’
কর্ণফুলী নদীর নামের উৎপত্তি সম্পর্কে নানা কাহিনি শোনা যায়। তবে সবচেয়ে প্রচলিত গল্পটি হচ্ছে—আরাকানের এক রাজকন্যা চট্টগ্রামের এক রাজপুত্রের প্রেমে পড়ে। এক জ্যোৎস্না রাতে তারা দুজন এই নদীতে নৌভ্রমণ উপভোগ করছিল। নদীর পানিতে চাঁদের প্রতিফলন দেখার সময় রাজকন্যার কানে গোঁজা একটি ফুল পানিতে পড়ে যায়। ফুলটি হারিয়ে কাতর রাজকন্যা সেটি উদ্ধারের জন্য পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু প্রবল স্রোতে রাজকন্যা ভেসে যায়, তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাজপুত্র রাজকন্যাকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপ দেয়, কিন্তু সফল হয়নি। প্রিয়তমার শোকে রাজপুত্র পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেয়। করুণ এই কাহিনি থেকেই নদীটির নাম হয় কর্ণফুলী। মারমা জনগোষ্ঠীর কাছে এর নাম কিনসা খিয়ং। উজানে সীমান্তের ওপারে মিজোরামে কর্ণফুলীকে ডাকা হয় খাওৎলাং তুইপুই নামে।
বইঠা থামিয়ে মাঝ নদীতে থেমে ভরদুপুরের মৌনতা কিছুক্ষণ উপভোগ করে তারপর কায়াকের মাথা নদীর অপর পাশ অভিমুখে ঘুরালাম। সেখানে কয়েকজন জেলে পাথুরে পাহাড়ের দেয়াল ঘেঁষে নৌকা নিয়ে একদম স্থির বসে ছিল। চোখে শ্যেনদৃষ্টি; নিবদ্ধ নদীর পানির দিকে। যেন স্রোতের ভেতরে কোনো বিশেষ নড়াচড়ার অপেক্ষায়। পাহাড়ের পাথুরে শিলা উপরিভাগে যতটা দৃশ্যমান হয়; তার চেয়েও নদীর তলদেশে লুকিয়ে থাকা অংশ খুব একটা কম নয়। জেলেদের সঙ্গে আলাপে জানলাম, নদীর এই অংশে গভীরতা ৩৫-৪০ ফুটের মতো।
খেয়াল করলাম, নদীর অপরাপর দিকে পানি বাতাসে মৃদু ঢেউ খেলানো থাকলেও এখানে একদম স্থির। উজান থেকে নেমে আসা স্রোতে পাথুরে দেয়ালে বাধা পেয়ে ঘূর্ণিপাক খাচ্ছিল। লাইফ জ্যাকেট পরা থাকলেও সঙ্গী সুমন সাঁতার জানেন না। তাই সেখান থেকে তড়িঘড়ি করে এপাশে ঘাটের দিকে চলে আসি। কায়াক পর্ব শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর লাঞ্চের ডাক পড়ে। পরের গন্তব্য কাপ্তাই হ্রদ।
পার্কের ফটক থেকে কাপ্তাই সদর অভিমুখে চলে যাওয়া পথের পুরোটাই ক্রমশ ওপরের দিকে উঠে গেছে। এক পাশে সংরক্ষিত পাহাড়ি বনভূমি, অপর পাশে বেশ নিচে কর্ণফুলী। কাপ্তাই সদরে বাহন থেকে মাটিতে পা ফেলার আগেই চোখে পড়ল কাপ্তাই হ্রদের অবারিত জলরাশি। নৌকাঘাট সামনেই। ডানের রাস্তাটি চলে গেছে জলবিদ্যুৎ বাঁধের দিকে। বাহন থেকে নেমে প্রথমেই কানে এল মধ্যবয়সী এক নারীকণ্ঠ—মামা, লেকে ঘুরবেন, সাম্পান দিয়া?
ঘাটে গিয়ে দরদাম শেষে আটজনের দলের জন্য একটা জুতসই লঞ্চ নেওয়া হলো। লঞ্চের চালকই গাইড। কাপ্তাই হ্রদের জলরাশিতে আলোড়ন তুলে ছুটে চলল জলযান। দূরে এক-দুটো সাম্পান নৌকা ভাসতে দেখলাম। নৌকার দুপাশে একজোড়া বইঠা। বইঠা দুটো গলুইয়ের দুপাশ থেকে উঠে গিয়ে তার হাতল একসঙ্গে বাঁধা হয়েছে কোমরসমান উঁচুতে। মাঝিকে তাই দাঁড়িয়ে ঠেলতে হচ্ছিল বইঠাযুগল। ছোট নৌকা, তাই দুজন করেই যাত্রী দেখলাম। লঞ্চ আস্তে আস্তে হ্রদের গভীরের দিকে যাচ্ছে আর আমরা যেন ক্রমশ ঢুকে যাচ্ছি নীলাভ কোনো রাজ্যপাটে!
হ্রদের নীল জল যেন সুনয়নার নীলচক্ষু! জলরাশির মাঝে সবুজ দ্বীপের মতো জেগে আছে একেকটা টিলা। টিলাগুলোর বেশির ভাগেই জনবসতি নেই। নীল আর সবুজ মিলেমিশে দৃষ্টিতে মুগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দিতে থাকল। ভাসতে ভাসতে অন্য নৌকায় যাত্রী হওয়া পাহাড়ের স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় হয়। দূরে, বহু দূরে আবছা অবয়বে কয়েক স্তরের পাহাড়শ্রেণি। মাঝি বলল, পাহাড়ের ওই গহিনে মিজোরাম সীমান্ত। আরও কিছুক্ষণ হ্রদে ভাসার পর একটি টিলার পাশে লঞ্চ নোঙর করা হলো।
একটা বয়সী পাকুড়গাছ দাঁড়িয়ে আছে পাকা সিঁড়ি বাঁধানো ঘাটে। টিলার ওপর একটা বাজার। নেমে পা বাড়াই সেদিকে। বাজারটির ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই চাকমা। ছোট ছোট দোকান। বয়সী কয়েকজন প্রৌঢ় এক জায়গায় জটলা বেঁধে গল্প জুড়ে দিয়েছেন। কথা চলছিল তাঁদের মাতৃভাষায়। টিলার ওপর বাজারের শেষ মাথায় অল্পনা চাকমা দিদির ছোট্ট খাবারের দোকান। কড়াইয়ের গরম তেলে পিঠা ভাজা হচ্ছিল। নারকেলের টুকরো আর গুড়ের সঙ্গে ময়দার মিশ্রণে বানানো লালচে রঙের সেই পিঠার স্বাদ মুখে লেগে আছে এখনো।
রাঙামাটির মগবান ইউনিয়নে পড়েছে এই বাজার। নাম নতুন বাজার। টিলার অন্য পাশে চাকমাদের পাড়াটার নাম দোখাইয়াপাড়া। দোকানগুলোর টিনের দেয়ালে সাঁটানো নির্বাচনী পোস্টার। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছিল তখন। হ্রদে নৌকায় করে মাইকে চলছিল প্রার্থীদের প্রচার। এ রকম এক মাইক থেকে কানে আসে, ‘পাহাড়ি বাঙালি ভাই ভাই, আনারস মার্কায় ভোট চাই’। নৌকায় ফিরে আরও কিছুক্ষণ নৌযাত্রার পর আমরা প্রবেশ করলাম জীবনতলী ইউনিয়নে। বিকেল গড়াচ্ছে, রোদও মিঠে মিঠে হচ্ছে। মাঝি এবার নোঙর করল এক বৌদ্ধবিহারের টিলার পাদদেশে।
টিলার চূড়ায় সোনালি রঙের বুদ্ধমূর্তি। বেশ দূর থেকেও স্পষ্ট চোখে পড়ে। টিলার সিঁড়ি বেয়ে আমরা ওপরে উঠে এলাম। বৌদ্ধমন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড়। প্রার্থনাকক্ষের ভেতরে মৃদু আলোয় যেন অন্যরকম আবহ! ফুরফুরে বাতাস উঠে আসছে হ্রদ থেকে। ধনপাতা বনবিহার থেকে নৌকায় ফিরে এলাম আমরা; মাঝিও আবার নোঙর তুললেন।
কাপ্তাই হ্রদ এবার সেজেছে অন্যরকম চেহারায়। সূর্য পাটে যাচ্ছে। গোধূলির সোনা রঙে নৈসর্গিক মুগ্ধতায় সেজেছে পুরো হ্রদ। চারপাশজুড়ে অপূর্ব এক নীরবতা। অনুভব করতে জানলে মৌনতারও প্রগাঢ় কোনো ভাষা থাকে! ফুরোমন পাহাড়ের রাজ্যপাটে পৌষের শীতলতা ভর করতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার ছাই রং আস্তে আস্তে চারপাশের সোনালি জলরাশির ওপর আঁধারের চাদর ফেলে ঢেকে দিচ্ছে। কাপ্তাই নৌকাঘাটে ফেরার আগেই গ্রাস করল ঘুটঘুটে অন্ধকার।
ঘাটে নেমে সেখানের এক টংদোকানে চায়ের পর্ব সেরে ফিরে এলাম আস্তানায়। ক্যাম্পসাইটে তাঁবু বসানো হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। রাতের খাবারের ডাক পড়ল একটু আগেভাগেই। উদরপূর্তির পর তাঁবুতে ফিরে টের পেলাম হাড় কাঁপানো ঠান্ডা চেপে ধরছে। শীতে কাঁপতে কাঁপতে নদীর পাড়ে বসে কিছুক্ষণ চলল আড্ডা-গল্প। কিছু ফানুস আমরা সঙ্গে করে নিয়েছিলাম। সেগুলো ওড়াতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হলো। নদী থেকে আসা বাতাসের দাপটে দেশলাইয়ের কাঠিতে আগুন জ্বালানো যাচ্ছিল না। কয়েকবারের প্রচেষ্টার পর ওড়ানো গেল। রঙিন কাপড়ের ভেতরে আলোর প্রদীপ জ্বলতে জ্বলতে ওপরে উঠে যেতে থাকে। ঘাড় পেছনে বাঁকিয়ে একটানা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় তারাদের ভিড়ে কোনটা ফানুস সেটা আর ঠাহর করতে পারলাম না।
রাত বাড়ছে; ক্যাম্পিংয়ে আসা প্রায় সবাই ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে যার যার তাঁবুতে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে গেছে নদীর অন্য পাশের ঘন বন। বন্যপ্রাণীবিষয়ক এক লেখকের বয়ানে জেনেছিলাম, কাপ্তাইয়ের ওই পাহাড়ি বনভূমিতে বসবাস করে বিড়াল গোত্রের সুন্দরতম এক সদস্য ক্লাউডেড লেপার্ড বা মেঘলা চিতা। স্থানীয়রা যাকে ডাকে লতা বাঘ বা গেছোবাঘ নামে। সারা দিন কোনো গাছের ডালে অলস শুয়ে থেকে নিশ্চয় তার সময় হয়েছে শিকারের সন্ধানে বের হওয়ার! নদীপাড়ের পাথরের চাতালে থাবার শক্ত নখে ভারসাম্য রক্ষা করে সামনে ঝুঁকে তৃষ্ণা মেটাতে মেটাতে দেখছে কি অন্য পাড়ের মনুষ্য ক্রিয়াকলাপ?
তাঁবুতে ঢুকে পড়ার পর শীত যেন আরও জেঁকে বসল। নদী থেকে ধেয়ে আসা বাতাসের সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীত; দাঁতে দাঁত বাড়ি লাগছিল যেন। বেড হিসেবে প্রতিটি তাঁবুর মেঝেতে দেওয়া হয়েছে দুই ফালি ককশিট। নিচ থেকে ওঠা ঠান্ডা আটকানোর জন্য তা যথেষ্ট না হওয়ায় রাফাত তাঁবু থেকে বের হয়ে কোত্থেকে জানি আরও দুই ফালি ককশিট নিয়ে এল। এবার বেডটা মোটামুটি আরামদায়ক হয়ে উঠল। ঝিম ধরে থাকা শীতের রাতে নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে কানে আসছিল ফোঁটা ফোঁটা কুয়াশা দলা বেঁধে তাঁবুর গায়ে আছড়ে পড়ার শব্দ। দূর থেকে থেমে থেমে কানে আসছিল একপাল শেয়ালের হুক্কাহুয়া।
ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে রাত কাটানোর পর ঘুম ভাঙল বেশ ভোরে। তাঁবুর চেইন খুলে বাইরে বেরিয়ে দেখি ইতিমধ্যে দলের অনেকেই উঠে পড়েছে। ভোরের কর্ণফুলী সবে আড়মোড়া ভাঙছে। কুয়াশার দঙ্গল সারা রাত নদীর ওপর ঘাপটি মেরে বসে থাকার পর আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। নদীর শান্ত জলে ছুঁয়ে ছুঁয়ে কুয়াশার অস্থির ছুটে চলার সঙ্গে যোগ দেয় একট-দুটো পানকৌড়ি। নদীর ওপর পাশের বনের চেহারাও হয়ে গেছে কুয়াশাময়।
জেলেরা তাঁদের নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন সেই ভোরেই। কোনোটা ছইওয়ালা, আবার কোনোটা খোলা ছোট নৌকা। হাড় কাঁপানো এমন শীতও যেন তাঁদের থোড়াই কেয়ার! আগের দিন কায়াকিংয়ের সময় জেলেদের কাছে জেনেছিলাম, নদীর অপর পাশের পাথুরে পাহাড়ের খাড়ির অংশ বেশি গভীর। ক্যাটফিশ গোত্রীয় মাছের আবাসস্থল সেই পাথুরে তলদেশে। আর পুরো নদীতেই চলাফেরা করে কার্পজাতীয় মাছ। এসব নিয়ে যখন ভাবছিলাম, হঠাৎই একটা বড়সড় মাছের ঘাই নদীর মাঝ বরাবর আলোড়ন তুলল! শান্ত পানিতে তৈরি হওয়া ঢেউয়ের গোলাকার বলয় চারপাশে প্রসারিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ল মিলিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
ক্যাম্পসাইট থেকে ফিরে নাশতার জন্য রেস্তোরাঁয় ডাক পড়ল। ডিম ভুনার সঙ্গে গরম-গরম খিচুড়িতে পেট পুরে নাশতা সেরে ঝটপট গোছগাছ সেরে বেরিয়ে পড়তে হলো। আমাদের পরের গন্তব্য রাঙামাটি শহর। কাপ্তাই হ্রদের পাশজুড়ে শৈল্পিক রেখা টেনে চলে গেছে যে পাহাড়শ্রেণি, তার ওপর দিয়ে চলে যাওয়া চড়াই-উতরাই পথ ধরে আমরা যাব। বাহনে চেপে বসার আগে ঘাড় ফিরিয়ে আরেকবার কর্ণফুলীর দিকে চোখ রেখে অস্ফুটে বললাম, ভালো থেকো কাপ্তাই; আবার দেখা হবে নিশ্চয়!
লেখক: ব্যাংক কর্মকর্তা

হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৪২ মিনিট আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৩ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
৫ ঘণ্টা আগে
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

পাহাড়ের গা পেঁচিয়ে ফিতার মতো চলে যাওয়া পিচঢালা পথ ধরে চলছে গাড়ি। যেতে যেতে পথের দুপাশ ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। আন্দাজ করি, কাপ্তাইয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমায় চলে এসেছি। আমাদের গন্তব্যস্থল কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন একটি ক্যাম্পসাইট। আমরা এসেছি ক্যাম্পিং ট্যুরে।
১৫ মার্চ ২০২৩
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৩ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
৫ ঘণ্টা আগে
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

পাহাড়ের গা পেঁচিয়ে ফিতার মতো চলে যাওয়া পিচঢালা পথ ধরে চলছে গাড়ি। যেতে যেতে পথের দুপাশ ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। আন্দাজ করি, কাপ্তাইয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমায় চলে এসেছি। আমাদের গন্তব্যস্থল কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন একটি ক্যাম্পসাইট। আমরা এসেছি ক্যাম্পিং ট্যুরে।
১৫ মার্চ ২০২৩
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৪২ মিনিট আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
৫ ঘণ্টা আগে
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
৭ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

পাহাড়ের গা পেঁচিয়ে ফিতার মতো চলে যাওয়া পিচঢালা পথ ধরে চলছে গাড়ি। যেতে যেতে পথের দুপাশ ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। আন্দাজ করি, কাপ্তাইয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমায় চলে এসেছি। আমাদের গন্তব্যস্থল কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন একটি ক্যাম্পসাইট। আমরা এসেছি ক্যাম্পিং ট্যুরে।
১৫ মার্চ ২০২৩
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৪২ মিনিট আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৩ ঘণ্টা আগে
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর শেষ। উৎসবের আমেজ আর নতুন বছরের প্রস্তুতির ভিড়ে আমরা অনেকেই নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছি আমাদের ঘরবাড়ি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে একবার কি আপনার ড্রেসিং টেবিলের দিকে নজর দিয়েছেন? যে মেকআপ আইটেমগুলো দিয়ে আপনি নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলোর মেয়াদ ঠিকঠাক আছে তো?
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়; বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্যের খাতিরেই আমাদের জানা প্রয়োজন, কোন প্রসাধনী কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ।

আপনার ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং সাজের নিখুঁত ফিনিশিং ধরে রাখতে ড্রেসিং টেবিলের এই মেকআপ ক্লিন আউট বা অকেজো পণ্য ছেঁটে ফেলা এখন সময়ের দাবি। নতুন বছর শুরু করার আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়।
মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ কেন বিপজ্জনক

মেকআপের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তার রাসায়নিক গঠন বদলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়া পণ্য ব্যবহারে ত্বকে সংক্রমণ, প্রদাহ (কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস) এমনকি রাসায়নিক পোড়া ভাবও দেখা দিতে পারে।
চোখের প্রসাধনী, যেমন আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ পণ্যগুলো চোখের খুব আর্দ্র পরিবেশে ব্যবহৃত হয় বলে সেখানে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মায়, যা থেকে আঞ্জনি বা কনজাংটিভাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মেয়াদ ফুরোলে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, যা থেকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়।
মেয়াদ বোঝার সহজ উপায়
প্রসাধনীর মোড়কের গায়ে তাকালেই আপনি একটি খোলা কৌটার ছোট ছবি দেখতে পাবেন। তার পাশে লেখা থাকে ৬ এম, ১২ এম বা ২৪ এম। এগুলোর মানে হলো, পণ্যটির মুখ খোলার পর তা যথাক্রমে ৬, ১২ বা ২৪ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যদি এ চিহ্ন খুঁজে না পান, তবে নিজের ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন। যদি দেখেন লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন থেকে অদ্ভুত গন্ধ আসছে, তরল মেকআপের ওপর তেলের স্তর জমে গেছে কিংবা আইশ্যাডোর ওপর পাউরুটির মতো কালো বা ধূসর ছাতা পড়েছে, তবে বুঝে নেবেন সেটি বিদায় করার সময় হয়েছে।
কোন পণ্য কত দিন টেকে
চোখের সাজ টেকে ৩ থেকে ৬ মাস: মাসকারা ও তরল আইলাইনার সবচেয়ে কম সময় ভালো থাকে। যেহেতু এগুলো সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর এগুলো বদলে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।
ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর: লিপস্টিক সাধারণত পানির পরিমাণ কম থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তবে লিপগ্লসের মেয়াদ সাধারণত ১ বছরের বেশি হয় না।
বেস মেকআপ টেকে ২ বছর: ফাউন্ডেশন, কনসিলার কিংবা ফেস পাউডার সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তবে তরল ফাউন্ডেশনের উপাদান আলাদা হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করবেন না।
ব্লাশ ও ব্রোঞ্জার ৩ বছর: পাউডার জাতীয় ব্লাশ বা ব্রোঞ্জার সঠিক যত্নে থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত আপনার ড্রেসিং টেবিলের শোভা বাড়াতে পারে।
পারফিউম ও নেলপলিশ টেকে ৩ থেকে ৫ বছর: সুগন্ধি বা পারফিউম ৩ থেকে ৫ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর নেলপলিশের ক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি সময় এটি নিরাপদ থাকে।
প্রসাধনী দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু টিপস
আপনার প্রিয় প্রসাধনীগুলো যাতে মেয়াদের পুরোটা সময় ভালো থাকে সে জন্য:
সূত্র: ভোগ

ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর শেষ। উৎসবের আমেজ আর নতুন বছরের প্রস্তুতির ভিড়ে আমরা অনেকেই নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছি আমাদের ঘরবাড়ি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে একবার কি আপনার ড্রেসিং টেবিলের দিকে নজর দিয়েছেন? যে মেকআপ আইটেমগুলো দিয়ে আপনি নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলোর মেয়াদ ঠিকঠাক আছে তো?
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়; বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্যের খাতিরেই আমাদের জানা প্রয়োজন, কোন প্রসাধনী কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ।

আপনার ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং সাজের নিখুঁত ফিনিশিং ধরে রাখতে ড্রেসিং টেবিলের এই মেকআপ ক্লিন আউট বা অকেজো পণ্য ছেঁটে ফেলা এখন সময়ের দাবি। নতুন বছর শুরু করার আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়।
মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ কেন বিপজ্জনক

মেকআপের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তার রাসায়নিক গঠন বদলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়া পণ্য ব্যবহারে ত্বকে সংক্রমণ, প্রদাহ (কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস) এমনকি রাসায়নিক পোড়া ভাবও দেখা দিতে পারে।
চোখের প্রসাধনী, যেমন আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ পণ্যগুলো চোখের খুব আর্দ্র পরিবেশে ব্যবহৃত হয় বলে সেখানে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মায়, যা থেকে আঞ্জনি বা কনজাংটিভাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মেয়াদ ফুরোলে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, যা থেকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়।
মেয়াদ বোঝার সহজ উপায়
প্রসাধনীর মোড়কের গায়ে তাকালেই আপনি একটি খোলা কৌটার ছোট ছবি দেখতে পাবেন। তার পাশে লেখা থাকে ৬ এম, ১২ এম বা ২৪ এম। এগুলোর মানে হলো, পণ্যটির মুখ খোলার পর তা যথাক্রমে ৬, ১২ বা ২৪ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যদি এ চিহ্ন খুঁজে না পান, তবে নিজের ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন। যদি দেখেন লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন থেকে অদ্ভুত গন্ধ আসছে, তরল মেকআপের ওপর তেলের স্তর জমে গেছে কিংবা আইশ্যাডোর ওপর পাউরুটির মতো কালো বা ধূসর ছাতা পড়েছে, তবে বুঝে নেবেন সেটি বিদায় করার সময় হয়েছে।
কোন পণ্য কত দিন টেকে
চোখের সাজ টেকে ৩ থেকে ৬ মাস: মাসকারা ও তরল আইলাইনার সবচেয়ে কম সময় ভালো থাকে। যেহেতু এগুলো সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর এগুলো বদলে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।
ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর: লিপস্টিক সাধারণত পানির পরিমাণ কম থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তবে লিপগ্লসের মেয়াদ সাধারণত ১ বছরের বেশি হয় না।
বেস মেকআপ টেকে ২ বছর: ফাউন্ডেশন, কনসিলার কিংবা ফেস পাউডার সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তবে তরল ফাউন্ডেশনের উপাদান আলাদা হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করবেন না।
ব্লাশ ও ব্রোঞ্জার ৩ বছর: পাউডার জাতীয় ব্লাশ বা ব্রোঞ্জার সঠিক যত্নে থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত আপনার ড্রেসিং টেবিলের শোভা বাড়াতে পারে।
পারফিউম ও নেলপলিশ টেকে ৩ থেকে ৫ বছর: সুগন্ধি বা পারফিউম ৩ থেকে ৫ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর নেলপলিশের ক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি সময় এটি নিরাপদ থাকে।
প্রসাধনী দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু টিপস
আপনার প্রিয় প্রসাধনীগুলো যাতে মেয়াদের পুরোটা সময় ভালো থাকে সে জন্য:
সূত্র: ভোগ

পাহাড়ের গা পেঁচিয়ে ফিতার মতো চলে যাওয়া পিচঢালা পথ ধরে চলছে গাড়ি। যেতে যেতে পথের দুপাশ ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। আন্দাজ করি, কাপ্তাইয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমায় চলে এসেছি। আমাদের গন্তব্যস্থল কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীর তীরসংলগ্ন একটি ক্যাম্পসাইট। আমরা এসেছি ক্যাম্পিং ট্যুরে।
১৫ মার্চ ২০২৩
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৪২ মিনিট আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৩ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
৫ ঘণ্টা আগে