Ajker Patrika

তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা

রজত কান্তি রায়, ঢাকা  
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ২১
তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ‍্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।

এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।

কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।

গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!

আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!

নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।

পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।

আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই মেঘনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।

এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।

জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।

অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।

মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।

টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকাল যেভাবে সেলিব্রেট করতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
বছরের এই শেষ সময়ে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে নতুন বছর শুরুর প্রস্তুতি নিন। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
বছরের এই শেষ সময়ে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে নতুন বছর শুরুর প্রস্তুতি নিন। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।

আলো ও উষ্ণতার আমেজ

শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন। এতে ইতিবাচক শক্তি পাবেন নতুন বছরে। ছবি: পেক্সেলস
পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন। এতে ইতিবাচক শক্তি পাবেন নতুন বছরে। ছবি: পেক্সেলস

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন

শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।

একটা সালতামামি হয়ে যাক

এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

বছর শেষের শীতকালে একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
বছর শেষের শীতকালে একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন

জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।

নিজের যত্ন নিন

শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতি মন ভালো করার ওষুধ। শীতকালে অপেক্ষাকৃত কম কাজের চাপের সময় প্রকৃতি উপভোগ করুন। ছবি: ফ্রিপিক
প্রকৃতি মন ভালো করার ওষুধ। শীতকালে অপেক্ষাকৃত কম কাজের চাপের সময় প্রকৃতি উপভোগ করুন। ছবি: ফ্রিপিক

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন

শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।

প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান

শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।

এবার ‘না’ বলতে শিখুন

শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।

সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আপনার প্রিয় সাজের সামগ্রী কত দিন নিরাপদ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
নতুন বছর শুরুর আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
নতুন বছর শুরুর আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর শেষ। উৎসবের আমেজ আর নতুন বছরের প্রস্তুতির ভিড়ে আমরা অনেকেই নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছি আমাদের ঘরবাড়ি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে একবার কি আপনার ড্রেসিং টেবিলের দিকে নজর দিয়েছেন? যে মেকআপ আইটেমগুলো দিয়ে আপনি নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলোর মেয়াদ ঠিকঠাক আছে তো?

লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়; বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্যের খাতিরেই আমাদের জানা প্রয়োজন, কোন প্রসাধনী কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ।

ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর। আপনার ঠোঁটের প্রসাধনীর বয়স কত? ছবি: ফ্রিপিক
ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর। আপনার ঠোঁটের প্রসাধনীর বয়স কত? ছবি: ফ্রিপিক

আপনার ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং সাজের নিখুঁত ফিনিশিং ধরে রাখতে ড্রেসিং টেবিলের এই মেকআপ ক্লিন আউট বা অকেজো পণ্য ছেঁটে ফেলা এখন সময়ের দাবি। নতুন বছর শুরু করার আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়।

মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ কেন বিপজ্জনক

আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে কি না খুঁজে দেখুন। ছবি: ফ্রিপিক
আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে কি না খুঁজে দেখুন। ছবি: ফ্রিপিক

মেকআপের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তার রাসায়নিক গঠন বদলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়া পণ্য ব্যবহারে ত্বকে সংক্রমণ, প্রদাহ (কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস) এমনকি রাসায়নিক পোড়া ভাবও দেখা দিতে পারে।

চোখের প্রসাধনী, যেমন আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ পণ্যগুলো চোখের খুব আর্দ্র পরিবেশে ব্যবহৃত হয় বলে সেখানে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মায়, যা থেকে আঞ্জনি বা কনজাংটিভাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মেয়াদ ফুরোলে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, যা থেকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়।

মেয়াদ বোঝার সহজ উপায়

প্রসাধনীর মোড়কের গায়ে তাকালেই আপনি একটি খোলা কৌটার ছোট ছবি দেখতে পাবেন। তার পাশে লেখা থাকে ৬ এম, ১২ এম বা ২৪ এম। এগুলোর মানে হলো, পণ্যটির মুখ খোলার পর তা যথাক্রমে ৬, ১২ বা ২৪ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যদি এ চিহ্ন খুঁজে না পান, তবে নিজের ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন। যদি দেখেন লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন থেকে অদ্ভুত গন্ধ আসছে, তরল মেকআপের ওপর তেলের স্তর জমে গেছে কিংবা আইশ্যাডোর ওপর পাউরুটির মতো কালো বা ধূসর ছাতা পড়েছে, তবে বুঝে নেবেন সেটি বিদায় করার সময় হয়েছে।

কোন পণ্য কত দিন টেকে

চোখের সাজ টেকে ৩ থেকে ৬ মাস: মাসকারা ও তরল আইলাইনার সবচেয়ে কম সময় ভালো থাকে। যেহেতু এগুলো সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর এগুলো বদলে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।

ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর: লিপস্টিক সাধারণত পানির পরিমাণ কম থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তবে লিপগ্লসের মেয়াদ সাধারণত ১ বছরের বেশি হয় না।

বেস মেকআপ টেকে ২ বছর: ফাউন্ডেশন, কনসিলার কিংবা ফেস পাউডার সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তবে তরল ফাউন্ডেশনের উপাদান আলাদা হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করবেন না।

ব্লাশ ও ব্রোঞ্জার ৩ বছর: পাউডার জাতীয় ব্লাশ বা ব্রোঞ্জার সঠিক যত্নে থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত আপনার ড্রেসিং টেবিলের শোভা বাড়াতে পারে।

পারফিউম ও নেলপলিশ টেকে ৩ থেকে ৫ বছর: সুগন্ধি বা পারফিউম ৩ থেকে ৫ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর নেলপলিশের ক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি সময় এটি নিরাপদ থাকে।

প্রসাধনী দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু টিপস

আপনার প্রিয় প্রসাধনীগুলো যাতে মেয়াদের পুরোটা সময় ভালো থাকে সে জন্য:

  • প্রসাধনী নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিন।
  • বাথরুমের মতো স্যাঁতসেঁতে জায়গায় না রেখে শোয়ার ঘরের ঠান্ডা ও শুষ্ক জায়গায় রাখুন।
  • ক্রিমের কৌটায় সরাসরি হাত না দিয়ে ব্রাশ বা স্প্যাচুলা ব্যবহার করুন।
  • বছরের এই শেষ সময়ে নিয়ম করে একবার সব চেক করুন। এতে আপনার ত্বক ও সাজ ভালো থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

সূত্র: ভোগ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে, ঘরের বসকে মেনে চলুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৬
আজকের রাশিফল: ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে, ঘরের বসকে মেনে চলুন

মেষ

আপনি আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।

বৃষ

আজ আপনার অর্থভাগ্যে একটু ‘ব্রেকফাস্ট’ লেগেছে, মানে খরচ বেশি। অচেনা লোক দেখলে আজ একটু দূরত্ব বজায় রাখুন, বিশেষ করে যারা বিমা বা ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করতে আসে। বাবার কথা আজ শুনে নিন, না হলে পকেট গড়ের মাঠ হতে সময় লাগবে না। পেটের দিকে একটু নজর দিন, রাস্তার চপ-শিঙাড়া আজ বিষবৎ!

মিথুন

গ্রহরা বলছে আপনার আজ ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে। কিন্তু দয়া করে তা বাড়ির লোকের ওপর প্রয়োগ করবেন না। ধৈর্য ধরুন, না হলে রাতে কিন্তু না খেয়ে শুতে হতে পারে! কথা বলার আগে দুবার ভাবুন। আপনি ভাবছেন আপনি রসিকতা করছেন, কিন্তু সামনের জন হয়তো ভাবছে আপনাকে ব্লক করবে!

কর্কট

আজ আপনার জন্য ‘শুভ’ দিন। নতুন ব্যবসার আইডিয়া মাথায় আসতে পারে, যেমন ধরুন ‘অনলাইন ধৈর্য বিক্রয় কেন্দ্র’। শেয়ারবাজারে আজ আপনার পোয়াবারো হতে পারে, তবে পকেট সামলে। বিয়ের সিদ্ধান্তে সবাই খুশি হবে, কিন্তু আপনি নিজে কি খুশি? সেটা একবার আয়নায় নিজেকে জিজ্ঞাসা করে নিন।

সিংহ

স্ত্রীর সঙ্গে আজ বিবাদ হতে পারে। মনে রাখবেন, তর্ক করে সিংহের মতো গর্জন করলে শেষে কিন্তু বিড়ালের মতো রান্নাঘরে গিয়েই লুকাতে হবে। সন্তানদের কারণে আনন্দ পাবেন। খরচ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে শেষমেশ মুড়ি খেয়ে দিন কাটাতে হবে।

কন্যা

আজ আপনার আয় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা! হয়তো পুরোনো জিনসের পকেটে ৫০০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ার চান্স ১০০%।

বসের সামনে কথা বলার সময় জিব একটু নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বস মানেই ঠিক—এই নীতিতে চললে আজ দিনটা বেঁচে যাবেন।

তুলা

আজ পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতে পারে। তারা আপনার কাছে টাকা ধার চাইবে নাকি খাওয়াতে চাইবে—সেটা আপনার গ্রহ ঠিক করবে। সম্পর্কে স্বচ্ছতা আসবে।সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যান, তবে পপকর্নের দাম দেখে আবার হার্ট অ্যাটাক করবেন না!

বৃশ্চিক

আজ আপনার কপালে ‘ঘোর দুর্দিন’ লেখা নেই, তবে একটু সাবধান থাকাই ভালো। আয়ের উৎস ভালো থাকবে। আপনার কথা শুনে সবাই মুগ্ধ হবে (অথবা বিরক্ত হয়ে চলে যাবে)। আজ বাদাম বা শুকনা রুটি দান করুন, এতে অন্তত কারও পেটে খাবার জুটবে!

ধনু

আজ আপনি খুব দয়ালু হয়ে উঠতে পারেন। পাড়ার কুকুর থেকে শুরু করে অফিসের পিওন—সবাইকে সাহায্য করতে চাইবেন। কর্মক্ষেত্রে বসের নেক নজরে থাকবেন।

বেশি আবেগপ্রবণ হবেন না, আবেগ দিয়ে তো আর ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা যায় না!

মকর

তাড়াহুড়ো করলেই আজ বিপদ! রাস্তা পার হওয়ার সময় হোক বা অফিসের মেইল পাঠানোর সময়—একটু ধীরে চলুন। ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নিয়ে বেশি লাফালাফি করবেন না। আপনার আজ অলসতা গ্রাস করবে। বিছানা থেকে উঠতে গেলেই মনে হবে বিছানা আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলছে, 'যেও না'!

কুম্ভ

আজ অর্থভাগ্যে তেমন কোনো বিপর্যয় নেই, কিন্তু শরীরটা নিয়ে চিন্তা আছে। পিঠের ব্যথা বা ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে—হয়তো সারা দিন রিলস দেখার ফল! চুক্তিতে সই করার সময় চশমাটা সঙ্গে রাখবেন। বন্ধুরা ডাকলে আজ এড়িয়ে চলাই মঙ্গল, না হলে বিলটা আপনার কাঁধেই পড়বে।

মীন

আপনি আজ নতুন কিছু করার ইচ্ছা অনুভব করবেন, যেমন ধরুন নতুন ডায়েট শুরু করা (যা দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে)। সন্তানের আচরণে একটু চিন্তিত হতে পারেন। যদি কারও কাছে টাকা ধার নিয়ে থাকেন, আজ তার ফোন না ধরাই ভালো। কারণ, সে টাকা ফেরত চাইতে পারে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৬ সালে যে অভ্যাসগুলো আপনাকে সফল করে তুলতে পারে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

‘বছরটা খুব একটা ভালো গেল না’! ২০২৫ সাল নিয়ে এমন ভাবনা আছে অনেকের। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই দিয়েছিলেন অনেকেই।

আর কিছুদিন পরই ২০২৬ সালে প্রবেশ করতে যাচ্ছি আমরা। নতুন বছর সবার জন্যই রোমাঞ্চকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানলে হয়তো খুশি হবেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় হয়তো পড়েও ফেলেছেন যে, ২০২৬ সালকে সম্ভাবনার বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি একটি চমৎকার বছর হতে চলেছে, যা ব্যক্তিগত ও পেশাদার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং নতুন শুরু দিকনির্দেশনা দেবে বলে আশাবাদী জ্য়োতিষশাস্ত্র।

সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। হলুদ ও সোনালি সাধারণত সূর্যের রং হিসেবে পরিচিত। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। হলুদ ও সোনালি সাধারণত সূর্যের রং হিসেবে পরিচিত। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

এ শাস্ত্র মতে, সূর্যের বছরে মানুষ জীবনে নতুন কিছু অন্বেষণ করবে এবং তাদের ভাগ্য গঠনের দায়িত্ব নেবে। এ বছর আপনার জীবন তার গন্তব্য দেখিয়ে দেবে, জীবনে এগিয়ে যেতে, নেতৃত্ব নিতে এবং নেতৃত্বদানের স্থান বুঝতে সাহায্য করবে।

সূর্যের রাজত্বের বছরে দৈনন্দিন জীবনযাপনে এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন, যেগুলো জীবনে অপার শক্তি ও প্রাচুর্য হয়ে ধরা দেয়।

সৌর চক্রকে শক্তিশালী করুন

সৌর চক্র সূর্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। সুফল পেতে আপনাকে ২০২৬ সালে এই বিশেষ চক্রের ওপর কাজ করতে হবে। আপনি কীভাবে এ চক্র উন্নত করতে পারেন? সে পরামর্শ রইল এখানে।

প্রতিদিন গায়ে রোদ লাগান। দুপুর ১২টার আগে সূর্যের আলোতে বসুন, এরপর নয়। এতে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি তো পূরণ হবেই, পাশাপাশি কাজকর্মে উদ্যমী হয়ে উঠবেন আপনি। ঠান্ডা বা সাইনাসের মতো অসুখ যাঁদের লেগেই থাকে, তাঁরাও সেরে উঠবেন। সূর্যের আলো মন ফুরফুরে রাখতে সাহায্য় করে। ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটাও জোরালো হবে।

সকালে নরম সূর্যের আলোতে বসে যোগব্যায়াম করুন। ফিট থাকতে তো বটেই, মুড ভালো রাখতেও এটি জরুরি। হাতে সময় কম থাকায় সূর্য নমস্কার আসনটিই বেছে নিন। এতে একের ভেতর অনেকগুলো আসন সেরে ফেলা যায়। এতে আপনার সৌরশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।

সূর্যকে বলা হয় গ্রহদের রাজা। তাই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটা এ বছর আরেকটু ভালো করার চেষ্টা করুন। তাঁদের যত্ন নিন, সময় দিন।

তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। ছবি: পেক্সেলস
তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। ছবি: পেক্সেলস

দৈনন্দিন জীবনে যা মেনে চলতে পারেন

সকালে উঠে জানালা খুলে পর্দা সরিয়ে দিন। প্রতিটি ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে দিন। এতে করে ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব কেটে যাবে ও পোকামাকড়ের উপদ্রবও কমবে।

২০২৬-এ রান্নাঘর ও ডাইনিং টেবিলে তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। সারা রাত তামার পাত্রে পানি রেখে প্রতিদিন সকালে তা পান করার চেষ্টা করুন। এতে শরীরে শক্তি সঞ্চার হবে ও বাড়বে জীবনীশক্তিও।

২০২৬-এ সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। কী সেই রং? হলুদ ও সোনালি। এই রং দেখতে যেমন উজ্জ্বল, তেমনি মনও ফুরফুরে রাখবে।

রান্নায় জাফরান ব্যবহার করুন এবং ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করুন। প্রতিটি ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করা সম্ভব না হলে বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে উষ্ণ আলো ব্যবহার করুন।

বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে বেশি আসবাব রাখবেন না। অপ্রয়োজনীয় ও অব্যবহৃত জিনিস দান করে দিন বা বিক্রি করে ফেলুন।

প্রতিদিন ঘর মোছার সময় পানিতে লবণ মিশিয়ে তারপর মুছে নিন। ঘরে তরতাজা ভাব বিরাজ করবে। আর ঘর পরিচ্ছন্ন থাকলে কাজকর্মেও মন বসবে। তাহলেই না সবকিছু ঠিকঠাক চলবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত