Ajker Patrika

চোখের নিচে কালি, ক্লান্ত দেখানোই এখন টিকটকে বিউটি ট্রেন্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এই নতুন ট্রেন্ডের সূচনা করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জেনা ওর্তেগা। ছবি: সংগৃহীত
এই নতুন ট্রেন্ডের সূচনা করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জেনা ওর্তেগা। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান প্রজন্মের সাজসজ্জায় এসেছে এক অভিনব পরিবর্তন। চোখের নিচে কালো দাগ, ফ্যাকাশে মুখ আর ঠোঁটে হালকা বেগুনি রং মিলিয়ে একধরনের ক্লান্ত ও অবসন্ন মেকআপ লুক এখন টিকটকে খুবই জনপ্রিয়। এত দিন চেহারার যেসব ক্লান্তির চিহ্ন লুকানোর চেষ্টা করা হতো, এখন সেটাই ‘টায়ার্ড গার্ল’ নামের নতুন ট্রেন্ড।

সাজসজ্জায় বা মেকআপের মাধ্যমে যতটা সম্ভব চেহারায় ক্লান্তির ছাপ লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে বহু বছর ধরেই। কনসিলার, আই ক্রিম ও কারেক্টর স্টিকের মতো প্রসাধনী মূলত আমাদের সতেজ দেখানোর জন্যই তৈরি। ঐতিহাসিকভাবে ক্লান্ত চেহারা মানে ধরা হয়েছে অসুস্থতা ও বার্ধক্যের প্রতীক হিসেবে। তবে টায়ার্ড গার্ল বিউটি ট্রেন্ড সেই ধারণার ঠিক উল্টো—এটি সেই ত্রুটিগুলোকেই আলিঙ্গন করে, যেগুলো আমরা এত দিন লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি।

এই নতুন ট্রেন্ডের সূচনা করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জেনা ওর্তেগা। নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় ‘ওয়েডনেসডে’ সিরিজে অ্যাডামস পরিবারের মেয়ের অভিনয়ে এ ধরনের মেকআপ করেন তিনি।

নতুন মৌসুমের প্রিমিয়ারে লন্ডনের রেড কার্পেটেও তিনি এই সাজ বজায় রাখেন—হালকা স্মাজড আইশ্যাডো, ফ্যাকাশে গাল আর প্রাকৃতিকভাবে চোখের নিচে কালো দাগ।

ট্রেন্ডটি মূলত জেনারেশন জেডদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেও আগের প্রজন্মের দর্শকদের জন্য এটি নতুন কিছু নয়। অনেকেই স্মরণ করবেন বিখ্যাত সিনেমা ‘গার্ল, ইনটারাপটেড’-এ অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সাজকে অথবা ‘লিওন: দ্য প্রোফেশনাল’-এ নাটালি পোর্টম্যানকে। তাঁদের সেই সময়ের মেকআপ স্টাইলের সঙ্গে এই নতুন ট্রেন্ডের বেশ মিল রয়েছে।

বর্তমানে এই মেকআপ লুক অনুসরণ করছেন—জনি ডেপের মেয়ে লিলি রোজ ডেপ, মডেল ও সংগীতশিল্পী গ্যাব্রিয়েট, ইনফ্লুয়েন্সার এমা চেম্বারলেইন, ড্যানিয়েল মারকান এবং লারা ভায়োলেটা। টিকটকে এখন ‘#tiredgirlmakeup’ নামে হাজার হাজার ভিডিও তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ভিডিও ৩ লাখেরও বেশি ভিউ পেয়েছে।

এদিকে টায়ার্ড গার্ল ট্রেন্ডের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ লারা ভায়োলেট। তিনি বলেন, চোখের নিচের কালো দাগ খুবই স্টাইলিশ, কারণ এগুলোর জন্য সত্যিকারের পরিশ্রম করতে হয়।’ অবশ্য তিনি নিজের বিশেষ মেকআপ স্টাইলকে ‘মোল্ডি মেকআপ’ হিসেবে পরিচিতি দিতে পছন্দ করেন।

‘টায়ার্গ গার্ল’ লুককে গথ (goth) বা গ্রাঞ্জ (grunge) বলে ভুল করা যাবে না। গথ সংস্কৃতি যেমন সংগীত ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এসেছে, গ্রাঞ্জ আবার ৯০ দশকের কর্টনি লাভের মতো শিল্পীদের ফ্যাশনের মাধ্যমে। তবে টায়ার্ড গার্ল ট্রেন্ডটি অনেকটাই দ্রুত পরিবর্তনশীল।

ট্রেন্ড গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ফিউচার ল্যাব্রেটরি’ উপসম্পাদক ড্যান হেস্টিংস-নারায়ানিন বলেন, এটি মূলত ‘কোর’ সংস্কৃতির একটি অংশ যেমন—‘কটেজকোর’ (প্রাকৃতিক ও রোমান্টিক) কিংবা ‘বার্বিকোর’ (প্রাণবন্ত ও অতিনারীবাদী)। এগুলো ব্যক্তি বা মেজাজকে মুহূর্তেই তুলে ধরতে সাহায্য করে, তবে দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

ওয়েডনেসডে সিরিজে এই সাজ তৈরির নেপথ্যে ছিলেন মেকআপ আর্টিস্ট তারা ম্যাকডোনাল্ড। তিনি জানান, ওর্তেগার ত্বকের চেয়ে আরও বেশি ফ্যাকাশে রঙের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয় এবং চোখের নিচের কালো দাগ গোপন না করেই তাকে একটি ‘প্রাকৃতিক অথচ স্মার্ট’ সাজ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ঠোঁটের রং এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়, যেন ঠোঁটটি সদ্য কামড়ে লাল হয়ে গেছে।

ওয়েডনেসডের সিজন টু-র মেকআপ ডিজাইনার নিরভানা জালালভান্দ জানান, ‘ওয়েডনেসডে এমন এক মেয়ে নন যে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিজের সাজগোজে ব্যয় করবে। তাঁর সামনে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব রয়েছে।’ এই সাজ মূলত প্রচলিত ‘ক্লিন গার্ল’ ট্রেন্ডের বিপরীতে—যেখানে মসৃণ ত্বক, গোলাপি গাল ও হালকা চোখের মেকআপ থাকে।

জালালভান্দ বলেন, ‘এটি শুধু মেকআপ নয়, এটি একটি সংস্কৃতির প্রতিফলন। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও এখন আর অতিরিক্ত নিখুঁত ছবি পোস্ট নয়—বরং ঘোলাটে, এলোমেলো ছবির মাধ্যমেই নিজেকে প্রকাশ করছে তরুণেরা। টায়ার্ড গার্ল সেই পরিবর্তনেরই বহিঃপ্রকাশ।’

ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘এই মেকআপ যে কেউ করতে পারেন। এখানে নিখুঁত হ্যান্ড বা দামি ব্রাশের দরকার নেই।’

ড্যান হেস্টিংস-নারায়ানিন মনে করেন, জেন–জেডদের এই ক্লান্তির ট্রেন্ড বাস্তব জীবনের চাপের প্রতিফলন—চাকরি, পড়াশোনা, ঋণ, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগসহ নানা কিছুর সঙ্গে লড়াই করছে তারা। তাই এই ক্লান্তির প্রকাশ একরকম মানসিক লড়াইয়ের প্রকাশও বটে।

তিনি বলেন, ‘এই সাজ যেন এক হাস্যরসাত্মক প্রতিবাদ—‘হ্যাঁ, আমি ক্লান্ত, ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত, কিন্তু আমি এই গ্লানি নিয়েই হাসছি।’

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিরে ফিরে আসে ষাটের দশকের মেকআপ

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৯
ষাটের দশকের মেকআপ লুক নানান সময় কোনো না কোনোভাবে ফিরে ফিরে এসেছে। ছবি কৃতজ্ঞতা: যাদুর বাক্স
ষাটের দশকের মেকআপ লুক নানান সময় কোনো না কোনোভাবে ফিরে ফিরে এসেছে। ছবি কৃতজ্ঞতা: যাদুর বাক্স

রুপালি পর্দায় ষাটের দশকের নায়িকাদের দেখলে এখনো মুগ্ধতা কাজ করে। অথচ সে সময়ে এখনকার মতো আধুনিক মেকআপ কিট তো ছিলই না, বরং মেকআপ নিখুঁত করতে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হতো। তবু সে সময়কার মেকআপ লুক এখনকার মেকআপ থেকে অনেকটা আলাদা হওয়া সত্ত্বেও কেমন যেন এক মায়া ভ্রম সৃষ্টি করে। সে কারণেই কিনা, সেই সব লুক নানান সময় কোনো না কোনোভাবে ফিরে ফিরে এসেছে। একেবারে শতভাগ না হলেও আলাদাভাবে চোখের সাজ, ঠোঁটের সাজ, বেজ মেকআপ—সবই কোনো না কোনোভাবে ঘুরেফিরে ঠিকই জায়গা করে নিচ্ছে তরুণীদের মনে।

সেই সময়ের মেকআপের মূল আকর্ষণ ছিল চোখের সাজের নাটকীয়তা আর ঠোঁটের ন্য়ুড মেকআপ। কিছু কৌশল ব্যবহার করে এখনো সহজে ষাটের দশকের ক্ল্যাসিক ও নজরকাড়া লুক তৈরি করতে পারেন। আসছে নতুন বছর ষাটের দশকের সাজে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে কী করতে পারেন, তাই দেখে নিন একনজরে।

‘ডল-আইড’ লুক

ষাটের দশকে মেকআপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত চোখ। সে সময়ের জনপ্রিয় লুক ছিল মডেল টুইগির ‘ডল-আইড’। এই মেকআপে দুই থেকে তিন স্তরের মাসকারা ব্যবহার করে চোখের পাপড়িকে খুবই ঘন, লম্বা ও ড্রামাটিক করা হতো। সঙ্গে চোখের নিচের পাতার ওয়াটার লাইনে সাদা আই পেনসিল ব্যবহার করে চোখের আকৃতি পুতুলের চোখের মতো বড় দেখানো হতো।

উইংগড লাইনার

এই দশকে চোখের সাজে আইলাইনারের ব্যবহার ছিল খুবই জনপ্রিয়। সোফিয়া লরেন বা ডায়ানা রসের মতো তারকারা চোখের ওপরে ল্যাশ লাইনে মোটা করে কালো লাইনার টেনে দিতেন। এতে চোখে একধরনের নাটকীয়তা আসত। এই বোল্ড উইংগড লাইনার লুকটি আজও সমানভাবে জনপ্রিয়।

উইংগড লাইনার। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স
উইংগড লাইনার। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স

ক্যাট আই ও স্মাজড আই লুক

ষাটের দশকে ক্যাট আই ছিল খুবই প্রচলিত। গায়িকা অ্যারেথা ফ্র্যাঙ্কলিন ক্যাট আই লুকের সঙ্গে চোখের ওপরের ও নিচের লাইনার কিছুটা স্মাজ করে একটা আবেদনময় লুক আনতেন। এই লুক রাতের সাজ হিসেবে খুবই মানানসই।

কাট ক্রিজ লাইনার

তখনকার মেকআপ কৌশলগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল কাট ক্রিজ লাইনার। অভিনেত্রী শের ও ডায়হান ক্যারলের মতো তারকারা চোখের ভাঁজের ওপর দিয়ে একটি চিকন কালো রেখা টেনে দিতেন। এটি চোখে একটি গভীর ও নাটকীয় লুক দিত।

ষাটের দশকে মেকআপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত চোখ। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স
ষাটের দশকে মেকআপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত চোখ। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স

কৌল-রিমড আইস

অভিনেত্রী ব্রিজিট বার্দোত বা রনি স্পেক্টারের লুকে এই কৌশল চোখে পড়ে। এই কৌশলে চোখের চারপাশে, বিশেষ করে নিচের ল্যাশ লাইনে ঘন কালো কাজল ব্যবহার করা হতো। সাধারণত দিনের বেলার সাজের চেয়ে রাতের সাজে এটি চোখকে আরও বোল্ড ও রহস্যময় করে তোলে। বর্তমানেও ড্রামাটিক লুক তৈরি করতে চাইলে কৌল-রিমড আইস লুকটি তৈরি করে দেখতে পারেন।

ঠোঁটে ন্যুড শেডের ব্যবহার

সে সময় চোখের সাজ যেহেতু খুবই জাঁকজমকপূর্ণ ও নাটকীয় হতো, তাই ভারসাম্য বজায় রাখতে ঠোঁটের সাজ হতো একেবারেই সাদামাটা। এই দশকে কখনোই ঠোঁট ও চোখকে একসঙ্গে হাইলাইট করা হতো না; বরং চোখের সাজকেই প্রাধান্য দিতে ঠোঁটে ন্যুড, সাদামাটা গোলাপি বা হালকা কমলার মতো মিউট শেডগুলো ব্যবহার করা হতো। অভিনেত্রী জেন বার্কিন সব সময় সফট পিংক লিপ কালার দিয়ে একটা ন্যাচারাল লুক তৈরি করতেন।

চোখের পাতায় রং

সে সময় চোখের সাজে উজ্জ্বল রংগুলোর মধ্যে কালো, ধূসর, সাদা বা নীল রঙের প্রাধান্য ছিল বেশি। এলিজাবেথ টেলর বা ডেনিয়েল লুনার মতো তারকারা চোখে উজ্জ্বল নীল রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করতেন, যা সাজে একটা চমৎকার আভিজাত্য আনত।

ত্বকের বেস-ম্যাট থেকে গ্লোয়ি

ষাটের দশকের শুরুর দিকে মেকআপের বেস তৈরিতে পাউডার ব্যবহার করে ত্বক সম্পূর্ণ ম্যাট রাখা হতো। সময়ের সঙ্গে এই ধারা বদলে দশকের শেষের দিকে ত্বক প্রাণবন্ত ও সতেজ দেখাতে গ্লোয়ি বা উজ্জ্বল মেকআপের চল শুরু হয়। আজকের দিনেও ডালনেস কাটিয়ে ফ্রেশ লুক তৈরিতে গ্লোয়ি বেস বেশ জনপ্রিয়।

হাই-আর্চড আইব্রো

সে যুগে ভ্রুর আকারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো। ন্যান্সি কোয়ান বা নিনা সিমনের মতো তারকারা হাই-আর্চড আইব্রোর ট্রেন্ড সেট করেন, যা চোখের নাটকীয়তা আরও বাড়িয়ে তুলত।

মাসকারার ব্যবহার

সে সময় বোল্ড লুক থেকে শুরু করে মিনিমালিস্টিক বা ক্যাজুয়াল লুক—সবখানেই মাসকারা ছিল সাজের অপরিহার্য অংশ। অড্রে হেপবার্ন তাঁর মিনিমালিস্টিক লুকে চোখের ওপরের পাতায় মোটা লাইনারের সঙ্গে ঘন করে মাসকারা এবং ঠোঁটে হালকা কোরাল শেড ব্যবহার করে ক্ল্যাসিক লুক তৈরি করতেন।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ, ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুরে আসুন কাউয়ার চর

মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম 
ঘুরে আসুন কাউয়ার চর

এক বন্ধুকে নিয়ে ভীষণ সংগোপনে কুয়াকাটার বাসে উঠে পড়লাম ঢাকা থেকে। পাখিডাকা ভোরে নেমে পড়লাম কুয়াকাটার কিছু দূর আগে আলীপুর বাজারে। কুয়াকাটার এক ভ্রমণবন্ধু আগেই স্থানীয় এক হোটেলে রুম বুক করে রেখেছিলেন বলে বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হয়নি। রুম থেকে ঝটপট বেরিয়ে পড়লাম আলীপুরের মাছের আড়তগুলোতে আসা নানান পদের মাছ দেখতে। রিকশা ভ্যানে দ্রুত পৌঁছেও গেলাম।

মাছের বাজার মানেই বিক্রির হাঁকডাক। ঘাটে নোঙর করা রয়েছে জেলেদের সারি সারি সাগরফেরত ট্রলার। তাতে চেনা-অচেনা বাহারি মাছ। এত মাছ দেখে কেনার ইচ্ছা জাগল। কিছু টাটকা চিংড়ি ও বেল ঘাগড়া মাছ কিনে ভ্যানচালকের বাসায় রান্নার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হলো। এবার হোটেলে ফিরে খানিকটা সময় বিশ্রাম। দুপুরে ভ্যানচালক ফিরে এলেন দেশীয় মোটা চালের ভাত, ডাল, ভর্তা ও মাছের তরকারি নিয়ে! পাকা রাঁধুনির রান্না বেশ আয়েশ করে খেয়েদেয়ে বের হয়ে পড়ি তাহেরপুরের পথে।

যেতে যেতে আমখোলা পাড়ায় ব্রেক। সড়কের পাশেই তালগাছের ছায়ায় ঘেরা স্বচ্ছ টলটলে পানির একটি পুকুর। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো কুয়াকাটার প্রথম খনন করা মিষ্টি পানির পুকুর এটি। এখান থেকে মগ জনগোষ্ঠী সুপেয় পানি সংগ্রহ করত। পুকুরের আশপাশের পরিবেশটাও বেশ চমৎকার। চাইলে এক বিকেল আমখোলা পাড়া পুকুরটির ধারে বসে কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু আমাদের যেতে হবে অনেক দূর।

রিকশা ভ্যান চলল। চলতে চলতে সাবমেরিন অফিস পার হওয়ার পরেই তাহেরপুরের সৌন্দর্য আমাদের গিলে ফেলল! পথের দুই ধারে সারি সারি প্রাচীন তালগাছ। কোনো কোনো সড়কের দুই পাশে বাবলাগাছ। এর সৌন্দর্য লিখে বোঝানো দায়। পা বাড়ালাম লেবুর বনের পথে। বেহাল বেড়িবাঁধ সড়ক হলেও যাওয়ার পরে নিমেষে পথের ক্লান্তি উবে যায়। প্রায় এক হাজার একর আয়তনের লেবুর বনে লেবুগাছের দেখা না মিললেও দেখা হলো প্রচুর কেওড়া, গেওয়া, গরান, কড়ই, গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে। এগুলোর মধ্যে সৈকত লাগোয়া কিছু মৃত গাছের আকার দেখে আমাদের মনে হলো, যেন প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিরে গিয়েছি! লেবুগাছের অস্তিত্ব না থাকলেও লেবুর বন এককথায় অসাধারণ।

ইতিমধ্যে পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে সূর্য। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। ভাটার ফলে শান্ত সাগরের দিগন্তবিস্তৃত বালিয়াড়িতে, মৃদু হাওয়ায় এবার ভ্যান চলে আন্ধারমানিকের দিকে। মাগরিবের ওয়াক্ত হলে সৈকতঘেঁষা মসজিদে নামাজ আদায় করে, সারি সারি দোকানের কোনো একটা থেকে তাজা সামুদ্রিক মাছ আর কাঁকড়া কিনে ফ্রাই করতে দিই। চোখের সামনে তেলে ভাজা মচমচে কাঁকড়া চলেও আসে আমাদের হাতে। খেতে সুস্বাদু।

চারদিকে অন্ধকার জেঁকে বসলে আমরা আলীপুরের দিকে ফিরি। রাতের খাবার খেয়ে রুমে ঢুকে ঘুমের প্রস্তুতি। উঠতে হবে ভোররাত চারটায়। টার্গেট কাউয়ার চরে সূর্যোদয় দেখা।

এখন পর্যন্ত সবকিছু চলছে ঠিকমতো। চারটায় উঠে প্রস্তুত। যেতে যেতে লক্ষ্মীর বাজার গ্রামের সুন্দর উঠানওয়ালা একটি মসজিদ। সেখানে নামাজ আদায় করেই ছুটতে শুরু করি। কিন্তু নাহ্‌! গঙ্গামতির চর পর্যন্ত পৌঁছাতেই পুব আকাশে একরাশ মেঘের আগমনে সূর্যোদয় দেখা ভেস্তে যায়। তাতে কি? একটি টার্গেট মিস হয়েছে মাত্র। বাকিগুলো তো পড়েই আছে। একটা ডাবের পানি শেষ করে আমরা উঠে পড়ি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে।

1000065269---Copy

সেটা চলতে শুরু করল সৈকত ধরে। ডানে সাগর আর বাঁয়ে দীর্ঘ ঝাউবন। আমরা যাচ্ছি আর থামছি। মূলত অবারিত প্রকৃতি আমাদের থামতে বাধ্য করছে। প্রায় বিলুপ্ত সাগরলতার দেখা মিলল কাউয়ার চরে। চোখে পড়ল শব্দ পেলেই গর্তে লুকিয়ে পড়া লাল কাঁকড়াদের। পায়রা নদীর মোহনায় দেখা হলো খেয়া জালে মাছ শিকার। এই সকালে উত্তাল সাগরের রূপ শান্ত। এ রকমটা দেখতে দেখতে পৌঁছে যাই কাউয়ার চর সৈকতের শেষ সীমা পর্যন্ত। বাইক ছেড়ে ঢুকে যাই ঝাউবনের ভেতরে। প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাউবনের সৌন্দর্য কি ধরা যাবে এই লেখায়!

কাউয়ার চরের আরেক দর্শনীয় জিনিস বটতলীর হামিদ সি প্যালেস। সেখানে যাওয়ার আগে সাগর থেকে ধরে আনা তাজা ইলিশ দিয়ে খিচুড়ি খাওয়া হলো। এত কম দাম দেখে ঢাকাবাসীর জন্য দীর্ঘশ্বাস না ছেড়ে পারলাম না। ডুবোতেলে নিজ হাতে ইলিশ ভাজতে পেরে যারপরনাই খুশি হয়ে ভ্যানে উঠে বসি।

1000065067

সৈকত লাগোয়া বেড়িবাঁধের দুই পাশে সারি সারি বাবলাগাছ। নির্জন রাস্তা ধরে মাত্র ১০ মিনিটে ভ্যান পৌঁছে গেল হামিদ প্যালেসের দোরগোড়ায়। ধীর পায়ে হেঁটে প্রবেশ করলাম ভেতরে। প্রবেশদ্বারের দুই পাশে আকাশমণি বৃক্ষ। ভেতরটাতে অন্যান্য গাছ। নান্দনিক ডিজাইনের দোতলা বাংলো। এর ছাদ থেকে ঝাউবনসহ পুরো প্যালেসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নজরে আসে। প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে অসংখ্য তালগাছ। প্যালেসটাকে তালবাগান বললেও ভুল হবে না। রয়েছে মাছের খামার। সঙ্গে দেশি গরুর বহর। অচেনা স্বর্ণ-৫ জাতের ধানের চাষাবাদ। বাতাসে ধানগাছের দোল। এ সবকিছু মিলিয়ে কাউয়ার চর ভ্রমণ সত্যি সার্থক।

যাবেন যেভাবে

ঢাকা-কুয়াকাটা সরাসরি বাস চলাচল করে। কুয়াকাটা থেকে মোটরবাইক অথবা অটো কিংবা ভ্যানগাড়িতে কাউয়ার চরে যাওয়া যায়। সকালে গিয়ে দুপুরেই ফিরে আসা সম্ভব।

থাকা-খাওয়া

কুয়াকাটায় অনেক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট রয়েছে। তাই থাকা-খাওয়ার চিন্তা নেই। কাউয়ার চরে থাকতে চাইলে নিজস্ব তাঁবুতে অথবা স্থানীয়দের সহযোগিতায় কিংবা মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে গঙ্গামতিতে থাকা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশে সরকার অনুমোদিত পাঁচ তারা ২০টি হোটেল

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪১
ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা
ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা

পাঁচ তারা হোটেল কোনগুলো? অনেকে এ নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তাই হোটেল নির্বাচনের আগে দেখে নিতে পারেন সরকার অনুমোদিত তালিকা। সেই তালিকা অনুসারে আমাদের দেশে পাঁচ তারা হোটেলের সংখ্যা ২০।

পাঁচ তারা স্বীকৃতি পাওয়া মানে হলো হোটেলটিতে আন্তর্জাতিক মানের কক্ষ, নিরাপত্তা, রেস্টুরেন্ট, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ, স্টাফ প্রশিক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করা। তাই যেকোনো ভ্রমণকারী নিশ্চিন্তে সেসব হোটেল বেছে নিতে পারেন।

ঢাকার অনুমোদিত পাঁচ তারা হোটেল

  • প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও
  • ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা
  • র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন
  • ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • হোটেল সারিনা
  • ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • লো মেরিডিয়ান
  • রেনেসাঁ হোটেলস
  • কারিশমা সার্ভিসেস লিমিটেড

এই হোটেলগুলো মূলত গুলশান, বনানী, খিলক্ষেত ও তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত। ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী, কনফারেন্স, কনসার্ট এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্টের জন্য এগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কক্সবাজারের পাঁচ তারা হোটেল

বিশ্বের দীর্ঘতম সাদা বালুর সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে পাঁচ তারা হোটেলের চাহিদা বেশি। এখানে বিলাসী পর্যটকদের জন্য পাঁচ তারা ৩টি হোটেল রয়েছে। সেগুলো হলো—

  • রয়্যাল টিউলিপ সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
  • সিগাল হোটেল
  • ওশান প্যারাডাইস
  • সাইমন বিচ রিসোর্ট

এই হোটেলগুলো মূলত সমুদ্রের কাছে। ইনফিনিটি পুল, বিচ অ্যাক্সেস, লাইভ রেস্টুরেন্ট ও স্পা সেবার জন্য জনপ্রিয়।

গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল

পাহাড়ি ও রিসোর্ট অঞ্চল

অনেকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য শান্ত পরিবেশ খোঁজেন। তাঁদের জন্য সিলেট বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাঁচ তারকা হোটেল ও রিসোর্ট।

  • গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল
  • দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, হবিগঞ্জ
  • গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • উত্তর ও দক্ষিণে রয়েছে ২টি

র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ
র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ

চট্টগ্রামে আছে পাঁচ তারা একটি হোটেল

চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কারণে এখানে উচ্চমানের হোটেলের চাহিদা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। তবে এই শহরে সরকারি তালিকা অনুযায়ী মাত্র একটি পাঁচ তারা হোটেল রয়েছে। নাম র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ।

সাম্প্রতিক আপডেট অনুযায়ী নতুন যে হোটেলগুলো পাঁচ তারা তালিকায় যুক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের দুটি হোটেল রয়েছে। এগুলো দেশের আঞ্চলিক হোটেলশিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এ দুটি হোটেল হলো—

  • মম ইন হোটেল, বগুড়া
  • হোটেল জাবীর প্যারাডাইস, যশোর

যেহেতু অনেক হোটেল নিজেকে ‘পাঁচ তারা’ দাবি করে, তাই সরকারি স্বীকৃতি থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। মান যাচাই, নিরাপত্তা, স্টাফ কোয়ালিটি এবং সেবা মানের মতো বিষয়ে সরকারিভাবে অনুমোদিত হোটেলগুলোকে নির্ধারিত মান বজায় রাখতে হয়। এতে পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট সেবা নিশ্চিত থাকে।

সূত্র: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রিয়জন-বেষ্টিত থেকেও নিঃসঙ্গ লাগবে, মানুষ চেনার অধ্যায় শুরু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫২
আজকের রাশিফল: প্রিয়জন-বেষ্টিত থেকেও নিঃসঙ্গ লাগবে, মানুষ চেনার অধ্যায় শুরু

মেষ

আজ আপনার অর্থভাগ্য অনেকটা ফাটকা ব্যবসার মতো। হয় অপ্রত্যাশিত লাভ হবে, নয়তো কপাল পুড়বে। তবে চিন্তা নেই, লাভ হলেও সেই টাকা দিয়ে হয়তো একটা দামি কফি কিনবেন, আর লোকসান হলেও কফিটাই কিনবেন; তবে সেটা ব্ল্যাক কফি। শত্রুরা আজ আপনাকে নিয়ে খুব আলোচনা করবে, বিশেষত সেই পাশের বাড়ির আন্টি, যিনি আপনার বারান্দার গাছগুলো দেখে হিংসা করেন। ব্যবসায় সাফল্য নিশ্চিত, কিন্তু এর কৃতিত্ব যেন সঙ্গী না নিয়ে নেন!

বৃষ

কর্মক্ষেত্রে আজ পরিস্থিতি সুবিধাজনক না-ও হতে পারে। মানে বস আজ সকালে টক দই খেয়ে এসেছেন, তাই ভুলেও আজ কোনো অতিরিক্ত বুদ্ধি খাটাতে যাবেন না। সহকর্মীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন। কারণ, আপনি গত সপ্তাহে অফিসে সহকর্মীর জন্মদিনের কেকটা একাই অর্ধেকের বেশি খেয়ে নিয়েছিলেন। সন্তানের চিন্তা বাড়বে, সম্ভবত তারা আপনার লুকিয়ে রাখা চিপসের প্যাকেট খুঁজে পেয়েছে। এলিট শ্রেণীর কোনো মানুষের সান্নিধ্য পাবেন, তবে তার আগে আপনার জুতাটা ভালো করে পালিশ করে নেবেন। নতুন কাজে সাফল্য আসবে, কিন্তু তার আগে সমাজে একটু ইজ্জত খোয়া যেতে পারে।

মিথুন

আজ শত্রুদের কারণে দুশ্চিন্তা বাড়বে। আপনার আসল শত্রু হলো নিজের মন, যেটা এক সেকেন্ডে তিনটি ভিন্ন প্ল্যান করে ফেলে। উদ্দেশ্যবিহীনভাবে ভ্রমণ হতে পারে; যেমন ফ্রিজে কী আছে দেখতে গিয়ে ড্রয়ারে কী আছে তা খুঁজতে শুরু করা। বন্ধুর কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে, বিশেষত সেই বন্ধু যিনি টাকা ধার করে আর ফিরিয়ে দেন না। মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন, না হলে তিনি রান্নাঘরের ‘রাজদণ্ড’ ছেড়ে দেবেন না। সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝি মিটে যাবে। ফাইনালি রিমোট কন্ট্রোল যুদ্ধ শেষ!

কর্কট

রাস্তাঘাটে সতর্কভাবে চলাফেরা করুন। পাছে কলার খোসার ওপর পা দিয়ে পিছলে না যান। কারণ, আঘাতের যোগ আছে। অনেক দিনের পুরোনো অসুখ থেকে মুক্তি পেতে পারেন—হ্যাঁ, সেই পুরোনো অভ্যাস, রাতে দেরি করে আইসক্রিম খাওয়াটা আজ বন্ধ হবে। অপ্রত্যাশিত লাভ হবে, হয়তো ওয়াশিং মেশিনের পকেট থেকে একটা পুরোনো ৫০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। কাউকে অবহেলা করবেন না, বিশেষত জীবনসঙ্গীকে। কারণ, আজ রাতে সোফায় শোয়ার যোগ আছে।

সিংহ

আজ আপনার সর্দি, কাশি বা ঠান্ডা লাগার সমস্যায় কষ্ট হতে পারে। কারণ, আপনার নাটুকে মন সহ্য করতে না পেরে মহাবিশ্ব আপনাকে একটু শান্ত থাকার সংকেত দিচ্ছে। জ্ঞাতিরা আপনার সঙ্গে শত্রুতা করবে। কারণ, তারা আপনার নতুন কেনা গ্যাজেটটার জন্য হিংসা করছে। কর্মক্ষেত্রে মর্যাদাহানি বা স্থান পরিবর্তন হতে পারে; ধরুন, আপনাকে এসি রুম থেকে পাশের স্টোররুমে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে, তবে সাবধান! দাম্পত্যে সমস্যা আসতে পারে। তাই প্রেমিকের/প্রেমিকার কাছে বেশি হিরোগিরি দেখাবেন না।

কন্যা

খারাপ খাবার খেয়ে শারীরিক সমস্যা হতে পারে। যে রাস্তার ধারের ফুচকা ছাড়া থাকতে পারেন না, তার ফল আজ ভুগতেই হবে। অত্যধিক চিন্তায় আজ উৎকণ্ঠা বাড়বে। প্লিজ, আজ অন্তত বিড়ালটা কেন অমন করে আপনার দিকে তাকাচ্ছে, সেটা নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করুন। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পাবেন, খুঁতখুঁতে স্বভাব আজ বসের মন জয় করে নেবে। অংশীদারি ব্যবসায় লাভবান হবেন, তাই পার্টনারকে আজই একটা ভালো ট্রিট দিতে বলুন।

তুলা

আজ সহকর্মী বন্ধুরা আপনাকে দারুণ সহযোগিতা করবে। এটা হয়তো পৃথিবীর শেষ দিন, তাই তারা এতটা ভালো ব্যবহার করছে। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা হবে, তাই চটজলদি ভালো জামাকাপড় পরে ফেলুন। আলোচনায় ধৈর্য বজায় রাখুন। কেউ যদি অযথা কোনো তর্কে জড়াতে চায়, তবে শুধু হাসুন আর বলুন, 'আকাশটা আজ সুন্দর, নীল।' প্রিয়জনেরা সুখ বৃদ্ধি করবে, তারা হয়তো আপনার জন্য আপনার পছন্দের খাবার বানিয়ে দেবে।

বৃশ্চিক

নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অবহেলা করবেন না। মাঝরাতে অতিরিক্ত চিপস খাওয়া বন্ধ করুন, আপনার লিভার হয়তো আজ একটা চিঠি পাঠাবে। নিজের ভেতরের আগুনটা আজ খুব তীব্র, তাই কাজে সেই তেজ ব্যবহার করুন। কাউকে আজ অতিরিক্ত বিশ্বাস করবেন না, বিশেষত যারা আপনাকে 'সুপার ডুপার সিক্রেট' বলে সব কথা বলে দেয়। মনোযোগ আজ লেজারের মতো তীক্ষ্ণ, কাজে লাগান!

ধনু

আজ সবাইকে কাছে পেয়েও নিজেকে খুব নিঃসঙ্গ বলে মনে হবে। চারদিকে লোক, কিন্তু সবাই নিজেদের ফোনে মুখ গুঁজে আছে—এই দৃশ্য দেখলে নিঃসঙ্গ লাগতেই পারে। এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে গ্রহরা আপনাকে আরও কাজের দায়িত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন, আরও কাজ! কারণ, ছুটি থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো অফিসের ই-মেইল চেক করা, তাই না? ভ্রমণযোগ আছে, সম্ভবত বাড়ির ছাদ থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত।

মকর

কিছু মানুষের ব্যবহারের জন্য মানুষ চেনার আসল অধ্যায় শুরু হবে। মানে বুঝবেন যে কে আপনার সামনে মধু আর পেছনে বিষ ঢালে। এই জ্ঞানের ফলে আপনি আরও বেশি সিরিয়াস হয়ে যাবেন, যা দেখে আপনার বন্ধুদের কপালে ভাঁজ পড়বে। পারিবারিক দিকে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করবেন, হয়তো ভাই/বোন অবশেষে তাদের ঘর পরিষ্কার করবে। পুরোনো বিনিয়োগ থেকে লাভ আসতে পারে, কিন্তু সেটা আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সকে বিশেষ প্রভাবিত করবে না।

কুম্ভ

আজকে আপনি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং শক্তির মুখোমুখি হতে পারেন। এর সহজ অর্থ হলো, আপনার ইন্টারনেট স্পিড আজ ভীষণ স্লো থাকবে এবং প্রিয় ইউটিউব ভিডিওর মাঝে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন আসবে। প্রযুক্তির সঙ্গে বেশি তর্ক করবেন না, শুধু রাউটারটা একবার রিস্টার্ট করে দেখুন। মনে রাখবেন, আপনার আইডিয়াগুলো দুর্দান্ত, কিন্তু পৃথিবীতে সেটা কার্যকর করার জন্য একটু মাটিতে পা রাখতে হবে।

মীন

প্রেম এবং সম্প্রীতি আপনার জীবনে পূর্ণ থাকবে। আজ সবাই আপনার প্রতি বিশেষভাবে সদয়। কেন? কারণ, এত শান্ত থাকেন যে কেউ আপনার সঙ্গে ঝগড়া করতে ভয় পায়। অন্যদের সঙ্গে সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে। আধ্যাত্মিক সংযোগ আজ তুঙ্গে থাকবে, তাই আজ গাছেদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতে পারেন। কারণ, তারা আপনাকে বন্ধুদের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে শুনবে। তবে অফিসের মিটিংয়ে দিবাস্বপ্ন দেখা থেকে বিরত থাকুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত