Ajker Patrika

সম্পর্ক /মনোবিদদের মতে প্রিয়জনকে খুশি করার সেরা উপহার

আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৮
রঙিন কাগজে মোড়ানো দামি উপহারই সব নয়। প্রতীকী ছবি
রঙিন কাগজে মোড়ানো দামি উপহারই সব নয়। প্রতীকী ছবি

প্রিয়জনকে খুশি করবেন এবং তাঁর মনে গভীর প্রভাব ফেলবেন—এমন উপহারের কথা চিন্তা করলে সাধারণত বড়, দৃশ্যমান জিনিসগুলোই মনে আসে। যেমন—ফুল, তাঁর প্রিয় জিনিস বা নিয়মিত ব্যবহারের জিনিস, এমনকি স্থূল ইঙ্গিত বা ভাববিনিময়ও হতে পারে। ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে উপহারের ভূমিকা প্রশ্নাতীত।

তবে আপনি যদি সেই মুহূর্তগুলো নিয়ে ভাবেন, যখন আপনি তাঁর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সংযোগ অনুভব করেছেন এবং সত্যিকার অর্থে তাঁকে অনুভব করেছেন, তাহলে দেখবেন যে রঙিন প্যাকেটে মোড়ানো কোনো বস্তু ততটা প্রভাব ফেলতে পারে না। বরং, সেসব সহজ, সংক্ষিপ্ত ও সূক্ষ্ম মুহূর্তগুলোই আপনাকে সত্যিকার অর্থে বোঝার ও অনুভব করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর হয়, যেগুলো আপনার নিঃশব্দ ও অপ্রকাশিত চাহিদাগুলো বুঝতে সহায়তা করেছে। আর অপরপক্ষও অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে সাড়া দিয়েছে।

মনোবিদেরা এমন কিছু বিষয়ই শনাক্ত করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, সবচেয়ে কার্যকর প্রভাবশালী উপহারগুলো সাধারণত বস্তুগত হয় না!

সত্যিকারের উপহার: কারও না বলা প্রয়োজনকে সম্মান করা

তাহলে, প্রিয়জনের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার কী? এটি স্থূল ভাববিনিময়ে নয়, বরং আরও অন্তরঙ্গ কিছুতে নিহিত—এটি হলো প্রিয়জনের অস্ফুট বা অপ্রকাশিত প্রয়োজনকে সম্মান করা। যখন আপনি কারও নিঃশব্দ সংকেত চিনতে পারেন এবং সাড়া দেন, তখন আপনি একটি গভীর বার্তা পাঠান। বার্তা এমন—আমি তোমার প্রতি নজর রাখি, তোমার কথা শুনি এবং তোমার যত্ন নিই।

এই উপহার বস্তুগত বিনিময়ের বাইরে কিছু। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী আবেগগত ছাপ ফেলে। এই বিশেষ উপহারটি কীভাবে কাছের মানুষকে আরও সুচিন্তিতভাবে দিতে পারেন, সেটি নিয়েই এই আলোচনা।

১. না বলা চাহিদাগুলো চেনা

কারও (প্রয়োজনের) ইঙ্গিতের প্রতি সম্মান করা মানে শুধু তাদের কথা শোনা নয়; এটি তার শরীরী ভাষা, আচরণগত পরিবর্তন এবং সূক্ষ্ম স্বরভঙ্গিগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া।

না বলা এই সংকেতগুলো প্রায়ই একজনের মানসিক অবস্থার অনেক কিছু প্রকাশ করে। এগুলো শনাক্ত করতে পারলে প্রয়োজনের মুহূর্তে সময়োপযোগী, অর্থবহ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয়।

উদাহরণস্বরূপ, আপনার সঙ্গী যদি হঠাৎ করে বেশির ভাগ সময় চুপচাপ থাকে বা দূরে দূরে থাকতে পছন্দ করে, তাহলে এর অর্থ হতে পারে সে কোনো কারণে বিপর্যস্ত। এ সময় একটি সহজ বাক্য, যেমন—আমি লক্ষ্য করছি, আজ তোমাকে একটু অন্য রকম লাগছে, তুমি কি কিছু বলতে চাও?—এই ধরনের আন্তরিক আলাপ তাকে মন খুলে কথা বলতে উৎসাহিত করতে পারে। আবার, ‘তুমি খুব চাপে আছ মনে হচ্ছে—আমি কি এতে কিছু সাহায্য করতে পারি?’ এই ধরনের ছোট ছোট প্রস্তাব আস্থার একটি পরিসর তৈরি করে এবং সম্পর্ককে গভীর করে।

২. তাদের আনন্দ উদ্‌যাপনে শরিক হওয়া

আনন্দ এমন একটি শক্তিশালী অনুভূতি—যা প্রায়ই চোখের ঝিলিক, উত্তেজনাপূর্ণ ভঙ্গি বা প্রাণবন্ত স্বরে প্রকাশ পায়। এই মুহূর্তগুলো স্বীকার করা মানে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া যে আপনি শুধু তাঁর দুঃখ–কষ্টেই নয়, সুখেও অংশ নিচ্ছেন।

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার সঙ্গী একটি বিশেষ শখ সম্পর্কে উচ্ছ্বাস দেখায়—ধরুন, ছবি আঁকা বা ট্রেকিং পছন্দ করে—তাহলে সেই আগ্রহের প্রতি মনোযোগ দিন। বলতে পারেন, ‘ছবি আঁকা নিয়ে কথা বলার সময় তোমাকে বেশ খুশি দেখায়। আমরা কি এ সপ্তাহে কিছু সময় বের করে এ বিষয়ে কিছু করতে পারি?’

গবেষণা বলছে, ইতিবাচক মুহূর্ত উদ্‌যাপন সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। ২০০৬ সালে ‘জার্নাল অব পারসোনালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকোলজি’–এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় পাওয়া যায়, যারা পরস্পরের আনন্দের মুহূর্তগুলো উদ্‌যাপন করে, তাদের সম্পর্ক বেশি স্থায়ী এবং সুখী হয়।

৩. দুর্বলতাকে স্বীকার করা

দুর্বলতা প্রায়ই সূক্ষ্ম সংকেতের আড়ালে থাকে—দ্বিধান্বিত কণ্ঠস্বর, অস্থিরভাবে হাত নাড়ানো বা আচরণে পরিবর্তন। এই সংকেতগুলো চেনা এবং সেগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া সম্পর্ককে আরও গভীর করে।

ধরা যাক, আপনার সঙ্গী কোনো বড় প্রেজেন্টেশন নিয়ে নার্ভাস। আপনি লক্ষ্য করলেন, সে অস্থিরভাবে পায়চারি করছে। এই মুহূর্তে একটি সরল বাক্য, যেমন—আমি জানি তুমি খুব ভালো করবে—তুমি সব সময় এমন পরিস্থিতিতে ভালো করো। এ ধরনের কথা তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।

৪. নিজেকে প্রকাশ করার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা

গভীর আবেগঘন সম্পর্কের জন্য নিরাপত্তা অপরিহার্য। যখন কেউ জানেন তিনি অপরের বিচার বা মূল্যায়নের মুখে পড়া ছাড়াই মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন, তখন একটি শক্তিশালী সংযোগ গড়ে ওঠে।

এই পরিবেশ তৈরি করতে, সক্রিয়ভাবে তাঁকে শুনুন এবং তাঁর আলাপ ও কর্মকাণ্ডে নিজের পুরোপুরি উপস্থিতি নিশ্চিত করুন। যখন আপনার সঙ্গী ব্যক্তিগত কিছু শেয়ার করেন, তখন ‘শুনে মনে হচ্ছে এটা তোমার কাছে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ; আমাকে আরও বলো’—এই ধরনের প্রতিক্রিয়া তাঁর অভিজ্ঞতাগুলোকে আরও মূল্যবান করে তোলে।

৫. সহানুভূতির মাধ্যমে বন্ধন দৃঢ় করা

সহানুভূতি সব ধরনের সম্পর্কের ভিত্তি। যখন আপনি আপনার সঙ্গীর সংকেতগুলো চেনেন, তখন আপনি তাঁর অনুভূতিগুলোর প্রতি আন্তরিকভাবে সাড়া দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি তিনি কর্মস্থলের চাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন হন, তাহলে বলতে পারেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, এটা তোমার জন্য কতটা কঠিন; তুমি যে চেষ্টা করছ এর জন্যই আমি গর্বিত।’

এভাবে, আপনি শুধু তাঁর কথা শুনছেন এমন না, বরং তাঁর যাত্রার অংশ হচ্ছেন এবং তাঁর অনুভূতিগুলোকে সত্যিকার অর্থে স্বীকৃতি দিচ্ছেন।

সবশেষ কথা হলো, প্রিয়জনকে যত্নের অনুভূতি দেওয়ার জন্য তাঁর সংকেতগুলোর প্রতি মনোযোগ দিন। উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে এই সংকেতগুলোতে সাড়া দিন এবং দেখুন, কীভাবে আপনার সম্পর্ক আরও গভীর এবং অর্থবহ হয়ে ওঠে!

তথ্যসূত্র: ফোর্বস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরের হিম রাজ্যে তুষারবিলাসের রোমাঞ্চ, হিমাঙ্কের নিচে তপ্ত রাত

ফিচার ডেস্ক
আইস হোটেল ৩৬ এর এবারের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। ছবি: আইসহোটেল ডটকম
আইস হোটেল ৩৬ এর এবারের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। ছবি: আইসহোটেল ডটকম

প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া লাগলেই এই তুষার প্রাসাদগুলো নিভৃতে গলে যায়। তখন তারা ফিরে যায় আপন উৎস, নদীর বুকে। আপনি কি কখনো হিমাঙ্কের নিচে এমন বরফের বিছানায় রাত কাটানোর অদম্য রোমাঞ্চ অনুভব করতে চেয়েছেন?

অনেকে ভাবেন, বরফের ঘরে ঘুমানো মানেই জমে যাওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। রুমের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পর্যটকদের দেওয়া হয় বিশেষ থার্মাল স্লিপিং ব্যাগ এবং রেইনডিয়ারের চামড়া, যা শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা ধরে রাখে। বাথরুম বা পোশাক পরিবর্তনের জন্য পাশেই থাকে উত্তপ্ত আধুনিক ভবন। ২০২৫ সালের এই হাড়কাঁপানো মৌসুমেও সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড আর কানাডায় ফিরে এসেছে এই অনন্য ‘বরফবিলাস’।

ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্টের দেখামেলে কাঁচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা। ছবি: আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম
ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্টের দেখামেলে কাঁচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা। ছবি: আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম

আইস হোটেল ৩৬

বিশ্বের বিখ্যাত বরফ হোটেল আইস হোটেল ৩৬। প্রতিবছর এটি নতুন করে তৈরি করা হয় এবং এর প্রধান আকর্ষণ হলো বরফের ভাস্কর্য, বরফের ঘর, বরফের বার এবং আর্কটিক কার্যকলাপ; যেমন ডগ স্লেডিং ও নর্দান লাইট দেখা। সুইডিশ ল্যাপল্যান্ডের জুকাসজারভি ভিলেজে এ বছর উদ্বোধন করা হয়েছে আইস হোটেল ৩৬। নামের সংখ্যাটিই বলে দেয়, এটি তাদের ৩৬তম সংস্করণ। এবার এখানে ১২টি আর্ট স্যুট, আইস রুম, একটি প্রধান হল এবং সেরিমনি হল থাকবে। প্রতিবছর টোর্নে নদী থেকে বরফ সংগ্রহ করে হোটেলটি তৈরি করা হয়। বসন্তে এটি গলে নদীতে ফিরে যায়। এ বছরের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, এটি শুধু প্রদর্শনের জন্য নয়, রীতিমতো বাজানোর যোগ্য। ১২টি দেশের ৩৩ জন তুখোড় শিল্পী তাঁদের তুলির বদলে ছেনি-হাতুড়ির কারুকার্যে ফুটিয়ে তুলেছেন একেকটি কক্ষ বা আর্ট স্যুট। কোথাও দেয়ালে খোদাই করা হিমায়িত লাইব্রেরি, আবার কোথাও গোলকগুলো মাথার ওপর ভেসে থাকার বিভ্রম তৈরি করছে। জেনে রাখুন, এই হোটেলে দুজনের জন্য এক রাত কাটানোর খরচ পড়বে প্রায় ৬০০ ইউরো।

আল্পস পর্বতমালার ২,৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট। ছবি: ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম
আল্পস পর্বতমালার ২,৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট। ছবি: ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম

উত্তর মেরুর অন্যান্য বরফস্বর্গ

সুইডেনের বাইরেও ফিনল্যান্ড থেকে কানাডা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই হিমাঙ্ক-বিজয়ীদের আস্তানা।

ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্ট: ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েনিতে কাচের তৈরি ইগলুতে শুয়ে আকাশের ‘নর্দান লাইটস’ বা মেরুজ্যোতি দেখা এক স্বর্গীয় অনুভূতি। কাচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা পর্যন্ত, আপুক্কা রিসোর্ট আপনার আর্কটিক স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়। আগস্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলবে। এখানে খরচ শুরু হয় ৪০০ ইউরো থেকে।

সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট: আল্পস পর্বতমালার ২ হাজার ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই ইগলু ভিলেজ। এই ইগলু গ্রামের অবস্থান এতটাই চমৎকার যে আপনি যখন এর রোদ-ঝলমলে বারান্দায় বসে কফি খাবেন কিংবা খোলা আকাশের নিচে উষ্ণ পানিতে হট টব বা ঘূর্ণি জলধারায় গা এলিয়ে দিতে পারবেন। আর আপনার ঠিক চোখের সামনে ধরা দেবে সুইজারল্যান্ডের সব থেকে আইকনিক পাহাড় ‘ম্যাটারহর্ন’। এখানে রাত কাটাতে লাগবে ৪৫০ ইউরো।

কানাডার হোটেল ডি গ্লেস: উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল এটি। এখানে কেবল থাকার ঘর নয়, রয়েছে বরফ-বার, হট টব এবং শরীর চাঙা করার সাউনা। পশমি চাদর, মেরুজ্যোতির আভা আর স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ নিস্তব্ধতার মাঝে হাতে খোদাই করা একটি স্যুটে রাত কাটানোর রোমাঞ্চই আলাদা। এখানে থাকার খরচ শুরু হয় ৫০০ ইউরো থেকে।

উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল কানাডার হোটেল ডি গ্লেস। ছবি: হোটেল ডি গ্লেস
উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল কানাডার হোটেল ডি গ্লেস। ছবি: হোটেল ডি গ্লেস

যেভাবে গড়া হয় তুষার প্রাসাদ

একটি আইস হোটেল তৈরি করা আর এক মহাকাব্য রচনা করা প্রায় একই কথা। এর প্রস্তুতি শুরু হয় সাত-আট মাস আগে থেকে। প্রথমে বরফ সংগ্রহের পালা। বসন্তের শেষে যখন বরফ সবচেয়ে স্বচ্ছ ও পুরু থাকে, তখন টর্ন রিভারের মতো নদীগুলো থেকে বিশাল বিশাল বরফের চাঁই কেটে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো সোলার পাওয়ারড হ্যাঙ্গারে যত্ন করে রাখা হয় পরবর্তী শীত পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় নির্মাণযজ্ঞ। নভেম্বর মাসে যখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে স্থির হয়, তখন প্রায় ৯০ জন শিল্পী, ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকের এক অমানুষিক পরিশ্রমে মাত্র ৬ সপ্তাহে গড়ে ওঠে এই স্থাপত্য। নির্মাণের গোপন উপাদান ‘সনিস’। এটি তৈরিতে শত শত টন স্বচ্ছ বরফের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় এই বিশেষ উপাদান। এটি তুষার ও বরফের এমন এক বিশেষ মিশ্রণ, যা দেয়াল ও ছাদকে পাথরের মতো মজবুত করে।

সূত্র: আফ্রিকা নিউজ, আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম, ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম, হোটেল ডি গ্লেস ডটকম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: অহেতুক তর্কে মৌনতাই শ্রেয়, ঘর গোছাতে গিয়ে মাথা অগোছালো হবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩
আজকের রাশিফল: অহেতুক তর্কে মৌনতাই শ্রেয়, ঘর গোছাতে গিয়ে মাথা অগোছালো হবে

মেষ

আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।

বৃষ

আজকের মূল মনোযোগ থাকবে পেটের দিকে। বিদেশের কোনো কাজ বা দূরে ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে, কিন্তু মন পড়ে থাকবে বিরিয়ানির হাঁড়িতে। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, তবে খরচ কমাতে আজ বন্ধুর পকেটের দিকে নজর রাখুন! মনে রাখবেন, বাজেট মানে শুধুই ডায়েরির পাতা নয়, মানিব্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।

মিথুন

আজ মনে হবে আপনি একই সঙ্গে পঞ্চগড় আর লালপুরে আছেন। পরস্পরবিরোধী আবেগ আপনাকে ভোগাবে। একদিকে মনে হবে খুব কাজ করি, অন্যদিকে লেপ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করবে না। বিবাহিতদের জন্য দিনটি ‘জি হুজুর’ বলে কাটানোই নিরাপদ। সাতটি বিষাদ ও বিচ্ছেদের গান শুনুন, আর না হলে অন্তত সাতবার দীর্ঘশ্বাস ফেলুন।

কর্কট

আজ আপনার আবেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে। তুচ্ছ কারণে চোখে পানি আসতে পারে। ব্যবসায় বড় বিনিয়োগের প্ল্যান আজ ড্রয়ারেই থাক। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ আবেগের বন্যায় ভাসছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, কিন্তু ঝগড়া করবেন না। ফেসবুক বা ইনস্টায় ইমোশনাল স্ট্যাটাস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

সিংহ

আজ যেখানেই যাবেন, লাইমলাইট আপনার ওপর থাকবে। গ্রহ বলছে আপনি প্রচুর আত্মবিশ্বাসী। তবে অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটু ‘ভলিউম’ কমিয়ে রাখুন, নতুবা তারা আপনার রাজকীয় গর্জনে ভয় পেয়ে ছুটি নিয়ে নিতে পারে! বড়দের সম্মান দিন, আর ছোটদের চকলেট খাইয়ে শান্ত রাখুন।

কন্যা

পারিপার্শ্বিক অস্থিরতা আপনাকে আজ একটু খিটখিটে করে তুলতে পারে। চাইবেন সবকিছু একদম নিখুঁত হোক, কিন্তু পৃথিবীটা তো আপনার নোটবই নয়! সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন, সঙ্গীর ভুল ধরাটা আজকের মতো অফ রাখুন। ঘর গোছাতে গিয়ে নিজের মাথাটা বেশি অগোছালো করবেন না।

তুলা

শরীর আজ বেশ চনমনে থাকবে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা কাজ ঝটপট শেষ করে ফেলবেন। তবে সাবধান, সংসারের বিবাদ আজ আপনার শান্তির রাজ্যে হানা দিতে পারে। টাকাপয়সার যোগ ভালো হলেও পকেটে ফুটো যেন না হয় খেয়াল রাখুন। অহেতুক তর্কে ‘মৌনতাই শ্রেয়’।

বৃশ্চিক

আজ আপনি চার মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে কনফিউজড বোধ করবেন—ডানে যাব না বাঁয়ে? রিয়েল এস্টেট বা জমি-সংক্রান্ত কাজে লাভের মুখ দেখতে পারেন। প্রেমে আজ রসপিঠার মতো মিষ্টি সম্পর্ক থাকবে, যদি না আপনি পুরোনো কোনো ঝগড়া টেনে আনেন। মনের কথা শুনুন, কিন্তু গুগল ম্যাপকেও একটু বিশ্বাস করুন।

ধনু

আজ আপনার রাশিতে গ্রহের মেলা বসেছে! আজ গোল্ডেন টাইম এনজয় করবেন। সৃজনশীল কাজে ফাটিয়ে দেবেন। টাকাপয়সা আসার প্রবল যোগ, কিন্তু সেই খুশিতে সবাইকে অকাতরে খাওয়াতে গিয়ে যেন নিজেকে উপোস করতে না হয়! মাজারে একটু শিরনি দিয়ে আসুন, মাথা ঠান্ডা থাকবে।

মকর

আজ আপনাকে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হতে পারে। তবে ফল হবে মিষ্টি। টাকা একদিকে পকেটে ঢুকবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ গতিতে বেরিয়ে যাবে। বিদেশি কোম্পানি বা দূরপাল্লার যোগাযোগ থেকে লাভের খবর আসতে পারে। উপার্জনের খাতাটা একটু আড়াল করে রাখুন।

কুম্ভ

আজ নতুন লোকজনের সঙ্গে আলাপ হবে, যা জীবনের মানে বদলে দিতে পারে। সাধারণ কাজও আপনি অসাধারণভাবে করবেন। তবে অতিরিক্ত উৎসাহে যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটা অন্তত আজকের জন্য ট্রাই করুন।

মীন

মীন রাশির জাতকেরা আজ কল্পনার জগতে ভাসবেন। ক্যারিয়ারে বড় কিছু করার সুযোগ আসবে। তবে বাস্তবে পা রাখাটা জরুরি। আর্থিক হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে পারেন। বন্ধুর সাহায্য নিলে কাজ সহজ হবে। আকাশকুসুম চিন্তা না করে হাতের কাজটা আগে শেষ করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কিন টাইপ বা ত্বকের ধরন জানা কেন জরুরি: সুস্থ ত্বকের প্রথম ধাপ

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৬
আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো সঠিক রূপচর্চার মূল মন্ত্র। ছবি: পেক্সেলস
আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো সঠিক রূপচর্চার মূল মন্ত্র। ছবি: পেক্সেলস

আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো সঠিক রূপচর্চার মূলমন্ত্র।

ত্বকের ধরন কেন আলাদা হয়

আপনার ত্বক তৈলাক্ত হবে, নাকি শুষ্ক; তা মূলত কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলো বংশগতি বা জিন। এ ছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ধরন বদলাতে পারে। হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম এবং পরিবেশগত উপাদানও আপনার ত্বকের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। শরীরের বৃহত্তম এই অঙ্গের সঠিক যত্ন নিতে এর ধরন চেনা তাই অপরিহার্য। নিজের ত্বককে আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ চেনে না। তাই কোনো নতুন পরামর্শ বা পণ্য ব্যবহারের আগে আপনার ত্বকের প্রয়োজনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন।

আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি অনুসারে ত্বকের পাঁচটি ধরন

শুষ্ক ত্বক

সিবাম একধরনের তৈলাক্ত উপাদান। ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে যখন পর্যাপ্ত সিবাম উৎপন্ন হয় না, তখন শুষ্ক হয়। আর একেই বলে শুষ্ক ত্বক। এমন ত্বকের অধিকারীদের জন্য খুব মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। ময়শ্চারাইজার হিসেবে এমন কিছু বেছে নিতে হবে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় শুষ্ক ত্বকে নাক বা ভ্রুর আশপাশে ছত্রাকজনিত লালচে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে, যাকে সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলা হয়; এর জন্য বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

মুখ ধোয়ার ৩০ মিনিট পর লক্ষ্য করুন আপনার ত্বক কেমন অনুভব করছে। ছবি: পেক্সেলস
মুখ ধোয়ার ৩০ মিনিট পর লক্ষ্য করুন আপনার ত্বক কেমন অনুভব করছে। ছবি: পেক্সেলস

তৈলাক্ত ত্বক

যখন ত্বক অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদন করে, তখন ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। এমন ত্বকে লোমকূপ বড় দেখায় এবং মুখ সব সময় চকচকে বা তেলতেলে থাকে। সিবাম বেশি হওয়ায় লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, যা থেকে প্রায়ই ব্রণ হয়। তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইড যুক্ত ক্লিনজার এবং ‘নন-কমেডোজেনিক’ (যা লোমকূপ বন্ধ করে না) পণ্য ব্যবহার করা ভালো। এ ছাড়া ব্যায়াম বা পরিশ্রমের পরপরই মুখ ধুয়ে ফেলা জরুরি।

কম্বিনেশন বা মিশ্র ত্বক

এই ধরনের ত্বকে মুখের বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখায়। সাধারণত টি-জোন কপাল, নাক ও চিবুক তৈলাক্ত হয় এবং গাল শুষ্ক থাকে। এ ক্ষেত্রে মুখের প্রতিটি অংশকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদাভাবে যত্ন নিতে হয়।

নরমাল বা স্বাভাবিক ত্বক

একে ত্বকের আদর্শ অবস্থা বলা যেতে পারে। এই ত্বক খুব বেশি শুষ্কও নয়, আবার তৈলাক্তও নয়। এতে ব্রণের উপদ্রব বা সংবেদনশীলতা খুব একটা দেখা যায় না। সাধারণ ক্লিনজার দিয়ে দিনে দুবার মুখ ধোয়া এবং রাতে ও দিনে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করাই এই ত্বকের জন্য যথেষ্ট।

দোকানে হাজারো প্রসাধনীর ভিড়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক পণ্যটি বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেয় আপনার স্কিন টাইপ। ছবি: পেক্সেলস
দোকানে হাজারো প্রসাধনীর ভিড়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক পণ্যটি বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেয় আপনার স্কিন টাইপ। ছবি: পেক্সেলস

সংবেদনশীল ত্বক

সংবেদনশীল ত্বক চেনার উপায় তেলের পরিমাণ নয়, বরং এর প্রতিক্রিয়া। এই ত্বক তৈলাক্ত বা শুষ্ক; যা-ই হোক না কেন, প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হয়। অনেক সময় একজিমা বা অ্যালার্জির মতো সমস্যাও থাকতে পারে। এমন ত্বকে রং, সুগন্ধি, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইড যুক্ত কড়া পণ্য এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

কীভাবে বুঝবেন আপনার ত্বকের ধরন

আপনার ত্বকের ধরন নির্ধারণের জন্য কোনো ল্যাবরেটরি টেস্টের প্রয়োজন নেই। সহজ কিছু উপায়ে এটি বুঝতে পারেন। মুখ ধোয়ার ৩০ মিনিট পর লক্ষ করুন, ত্বক কেমন অনুভব করছে। এটি কি খুব তেলতেলে লাগছে, নাকি টান টান ও শুষ্ক মনে হচ্ছে? এভাবে বুঝবেন আপনার ত্বক শুষ্ক নাকি তৈলাক্ত। মুখ ধুয়ে শুকানোর ৩০ মিনিট পর একটি ব্লটিং পেপার নিয়ে গাল এবং টি-জোনে হালকা চাপ দিন। পেপারে তেলের পরিমাণ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার ত্বক তৈলাক্ত নাকি শুষ্ক।

কেন নিজের ত্বককে জানা জরুরি

দোকানে হাজারো প্রসাধনীর ভিড়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক পণ্য বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেয় আপনার স্কিন টাইপ। আপনি অকালবার্ধক্য রোধ করতে চান, নাকি ব্রণ ও মেছতা দূর করতে চান। এটা আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ঠিক করতে হবে। এ ছাড়া মেকআপ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এটি বড় ভূমিকা রাখে। সঠিক মেকআপ আপনার ত্বককে যেমন নিখুঁত দেখাবে, তেমনি ভুল পণ্য আপনার লোমকূপ বন্ধ করে ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর আপনার ঘুমের মান, পানি পানের পরিমাণ এবং শরীরচর্চার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মনে রাখবেন, আপনার ত্বকের ধরন ঋতুভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন শীতে ত্বক বেশি শুষ্ক থাকে এবং গরমে তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার রূপচর্চার রুটিনেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

সূত্র: আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অতিরিক্ত মিষ্টি বা খাবার খাওয়ার পর সামলে নেবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। ছবি: পেক্সেলস
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। ছবি: পেক্সেলস

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।

অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। ছবি: পেক্সেলস
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। ছবি: পেক্সেলস

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না

বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।

২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ

অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।

৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন

অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

যারা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তারা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। ছবি: পেক্সেলস
যারা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তারা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। ছবি: পেক্সেলস

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে

পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।

৫. নিজের প্রতি সদয় হোন

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

সূত্র: ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত