Ajker Patrika

ম্যানেজারের সঙ্গে ওয়ান-অন-ওয়ান সভায় সফল হওয়ার ৫ উপায়

শিক্ষা ডেস্ক
ম্যানেজারের সঙ্গে ওয়ান-অন-ওয়ান সভায় সফল হওয়ার ৫ উপায়

কর্মজীবনে শুধু কাজ করে যাওয়াই যথেষ্ট নয়। কাজের প্রভাব, উন্নয়ন এবং নেতৃত্বের প্রস্তুতি নিয়েও সচেতন থাকা উচিত। অনেকেই ম্যানেজারের সঙ্গে নিয়মিত ওয়ান-অন-ওয়ান সভাগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করেন না। তাঁরা এ সভাকে কেবল নিয়মিত কাজের অগ্রগতি জানানোর সুযোগ হিসেবে দেখেন। অথচ বাস্তবে এটি হতে পারে আত্মোন্নয়ন, সম্পর্ক উন্নয়ন এবং নেতৃত্ব গড়ার এক দারুণ সুযোগ। ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা অ্যাট শার্লটের অধ্যাপক স্টিভেন রোজেলবার্গ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় অর্ধেক কর্মী মনে করেন, ওয়ান-অন-ওয়ান সভাগুলো যথেষ্ট কার্যকর নয়। অন্যদিকে, যাঁরা এ সভাগুলো দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেন, তাঁরা ম্যানেজারের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলেন, মূল্যবান পরামর্শ পান এবং ক্যারিয়ার অগ্রগতির পথ সুগম করতে সক্ষম হন।

আজ থাকছে ম্যানেজারের সঙ্গে ওয়ান-অন-ওয়ান সভা আরও ফলপ্রসূ করার ৫টি কার্যকর উপায়। যেগুলো আপনার পেশাগত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে পারে এবং ভবিষ্যতের নেতৃত্বের পথে আপনাকে এগিয়ে নেবে।

সভাটি আপনার নিয়ন্ত্রণে আনুন

বেশির ভাগ কর্মী প্রস্তুতিহীনভাবে সভায় অংশ নেন। তাঁরা আশা করেন, ম্যানেজারই হয়তো দিকনির্দেশনা দেবেন। এ মনোভাব কেবল সময় নষ্ট করে না; বরং আপনাকে নিষ্ক্রিয় কর্মী হিসেবেও উপস্থাপন করে। এ জন্য সভার আগে নিজেই একটি স্পষ্ট অ্যাজেন্ডা তৈরি করুন এবং অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে ম্যানেজারকে পাঠিয়ে দিন। আলোচনায় রাখুন আপনার কাজের চ্যালেঞ্জ, শেখার সুযোগ ও নতুন আইডিয়া। সভার শুরুতে বলুন, ‘আমি কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপনার মতামত জানতে চাচ্ছিলাম...’ এমন স্বতঃস্ফূর্ত সূচনা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং আলোচনায় নেতৃত্ব নিতে সহায়তা করবে। এতে আপনার ম্যানেজার বুঝতে পারবে, আপনি উদ্যোগী, কৌশলগতভাবে ভাবেন এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত।

কাজের বাইরেও বলুন নিজের কথা

ওয়ান-অন-ওয়ান সভা ধীরে ধীরে কেবল নিয়মিত কাজের অগ্রগতি দেওয়ার রুটিন ইভেন্টে পরিণত হয়। অথচ এটি হতে পারে আপনার স্বপ্ন ও দক্ষতা নিয়ে গভীর আলোচনার চমৎকার সুযোগ। এ জন্য প্রতিটি সভায় অন্তত ১০ মিনিট সময় রাখুন পেশাগত উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করার জন্য। জিজ্ঞেস করুন, ‘আমার ক্যারিয়ার উন্নয়নে কী কী স্কিল গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনি মনে করেন?’ অথবা বলুন, ‘আমি একটি নতুন প্রকল্পে নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী, যাতে আরও কিছু শেখার সুযোগ হয়।’ এর কারণ, ম্যানেজাররা চান এমন কর্মী যাঁরা শুধু কাজই করেন না, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়েও সচেতন থাকেন। এ ধরনের আলোচনা আপনাকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং বিনিয়োগযোগ্য কর্মী হিসেবে তুলে ধরবে।

সমস্যা নয়, সমাধান নিয়ে যান

শুধু সমস্যা নিয়ে যাওয়ার বদলে ম্যানেজারের সামনে এমন সমাধান নিয়ে হাজির হন, যা বাস্তবায়নযোগ্য। এ জন্য যেকোনো চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সঙ্গে দিন দুটি সম্ভাব্য সমাধান। উদাহরণস্বরূপ: ‘আমি লক্ষ্য করেছি ক্লায়েন্ট সাড়া দিতে আমাদের সময় বেড়ে যাচ্ছে। আমি কিছু সিস্টেম খুঁজে পেয়েছি, যা হয়তো এ বিষয়টি সমাধান করতে পারে...।’ এর কারণ ম্যানেজাররা কর্মীদের মধ্যে সেই মূল্যবান সহকর্মীকেই খোঁজেন, যাঁরা সমস্যা কমিয়ে তাঁদের কাজ সহজ করেন। আপনি যখন সমাধান নিয়ে আসেন, তখন আপনি হয়ে ওঠেন টিমের নির্ভরযোগ্য স্তম্ভ।

নির্দিষ্ট ফিডব্যাক চান এবং তা কাজে লাগান

অনেকেই ভাবেন, ‘ম্যানেজার কিছু বলেননি মানে সব ঠিকই আছে।’ কিন্তু এই নীরবতা আপনাকে উন্নতির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। এ জন্য সরাসরি ফিডব্যাক চেয়ে নিন। যেমন ‘গত প্রেজেন্টেশনে আমি কীভাবে আরও ভালো করতে পারতাম?’ এবং পরবর্তী সময়ে সে ফিডব্যাক অনুযায়ী কীভাবে নিজেকে উন্নত করেছেন, তাও ম্যানেজারকে জানান। এ জন্য, আপনার পরবর্তী ওয়ান-অন-ওয়ান সভাটিকেই কাজে লাগান সম্পর্ক গড়ার, শেখার ও নিজের অবস্থান মজবুত করার একটি সুযোগ হিসেবে।

সম্পর্ক গড়ে তুলুন কাজের বাইরেও

শুধু অফিসের টাস্ক আর টাইমলাইন নিয়ে কথা বললে সম্পর্ক গভীর হয় না। সম্পর্ক তৈরি করতে হয় মনোযোগ দিয়ে শুনে, উৎসাহ দিয়ে ও ব্যক্তিগত মানবিক স্পর্শ দিয়ে। এ জন্য ম্যানেজারের অর্জনে অভিনন্দন জানান, তাঁদের আগ্রহ ও অভিজ্ঞতা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করুন। বলুন, ‘আপনার জন্য এই সপ্তাহে সবচেয়ে ইতিবাচক মুহূর্তটা কী ছিল?’ কিংবা ‘আপনার যে ক্যারিয়ার টার্নিং পয়েন্টের কথা বলেছিলেন, সেটা নিয়ে আরও জানতে চাই।’ এর কারণ গভীর সম্পর্ক মানে বিশ্বাস, সহযোগিতা এবং খোলামেলা আলোচনা। একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা পেশাগত বন্ধনকে করে আরও দৃঢ়।

গবেষণা বলছে, যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ওয়ান-অন-ওয়ান সভার গুরুত্ব দেয়, সেখানে কর্মীদের সম্পৃক্ততা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়, কমে যায় কর্মী ঘূর্ণন হার। তবে এর বাইরেও, এমন সভা আপনাকে আরও আত্মবিশ্বাসী, স্পষ্টভাষী ও ভবিষ্যৎকেন্দ্রিক কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।

সূত্র: ফর্বস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম ওয়াসায় চাকরির সুযোগ

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষে (চট্টগ্রাম ওয়াসা) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ২ ক্যাটাগরির পদে মোট ২১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ১০ ডিসেম্বর এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ১২ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম: সহকারী প্রকৌশলী।

পদসংখ্যা: ৭টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ কৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসসি), ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল, পানি সরবরাহ প্রকৌশল বা পরিবেশ প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি।

বেতন: ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা।

পদের নাম: উপসহকারী প্রকৌশলী।

পদসংখ্যা: ১৪টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, সিএসসি, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস, পরিবেশ, পাওয়ার বা অটোমোবাইল প্রকৌশলে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি থাকতে হবে।

বেতন: ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ টাকা।

আবেদনের শর্তাবলি

প্রার্থীকে অবশ্যই জন্মসূত্রে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। প্রার্থীর বয়সসীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ১৮-৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রে স্বীকৃত শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত এসএসসি বা সমমান সনদে উল্লিখিত জন্মতারিখ বিবেচনা করা হবে, কোনো প্রকার এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবে না।

আবেদন ফি: ২২৩ টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)। তবে অনগ্রসর প্রার্থীদের (শারীরিক প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গ) ক্ষেত্রে সব পদে আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা।

আবেদন পদ্ধতি

পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আগ্রহী প্রার্থীদেরকে প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের এই https://cwasa.teletalk.com.bd লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকেল ৫টা।সূত্র: বিজ্ঞপ্তি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমন্বিত তিন ব্যাংকের পরীক্ষার সূচি প্রকাশ, প্রার্থী ২৯৪৪

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত দুটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। সূচি অনুযায়ী, আগামী ৩ জানুয়ারি এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে ২ হাজার ৯৪৪ জন প্রার্থী অংশ নেবেন।

গত বুধবার বিএসসিএসের পরিচালক মিজানুর রহমান আকন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: সোনালী ব্যাংক পিএলসি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন।

২০২২ সাল ভিত্তিক ‘সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল)/উপসহকারী প্রকৌশলী (পুরকৌশল)’-এর ১৮টি শূন্য পদে নিয়োগের উদ্দেশে ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই নিয়োগে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্য বিবেচিত ২ হাজার ৯৪৪ জন প্রার্থীর ৩ ঘণ্টাব্যাপী (১ ঘণ্টা প্রিলিমিনারি ও ২ ঘণ্টা লিখিত) পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডেমরায় অবস্থিত সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে এই পরীক্ষার সিলেবাস উল্লেখ রয়েছে। প্রার্থীদের প্রবেশপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে আপলোড করা হয়েছে। প্রার্থীরা পরীক্ষা শুরুর আগপর্যন্ত ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রবেশপত্র ব্যতিরেকে কোনো প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৭ পদের লিখিত পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর

চাকরি ডেস্ক 
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৭ পদের লিখিত পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন পদের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। সূচি অনুযায়ী, ২৬ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বুধবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব শেখ মুর্শিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পদগুলো হলো ফার্মাসিস্ট, হোমিওপ্যাথ, লাইব্রেরি সহকারী, রেফারেন্স সহকারী ও লাইনো মেশিনম্যান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব পদের পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

আর হোমিও কম্পাউন্ডার (ইসলামিক মিশন) ও লেডি ফার্মাসিস্ট পদের লিখিত পরীক্ষা একই দিন বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আগারগাঁও তালতলা সরকারি কলোনী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজকেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরীক্ষার বিষয়ে ইতিমধ্যে টেলিটকের মাধ্যমে প্রার্থীদের কাছে এসএমএস দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের লিংকে গিয়ে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা এবং বেলা ২টার মধ্যে প্রবেশপত্রে উল্লেখিত পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। এর আগে, গত ২৭ জুলাই এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ৪ দক্ষতা

ক্যারিয়ার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২২
নতুন আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ৪ দক্ষতা

ডিসেম্বর মাস মানেই চারদিকে উৎসবের আমেজ, শীতের সকাল আর ছুটির পরিকল্পনা। অধিকাংশ মানুষ যখন বছর শেষের আলস্যে গা ভাসিয়ে দেন, ঠিক এ সময়ে ক্যারিয়ারসচেতন মেধাবীরা পরবর্তী বছরের ছক আঁকতে শুরু করেন। প্রকৃতপক্ষে, ডিসেম্বরের এই শান্ত সময়টাই নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার এবং প্রতিযোগিতায় অন্যদের চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার মোক্ষম সুযোগ।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমান শ্রমবাজারে দক্ষতার মানদণ্ড দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রথাগত ডিগ্রির চেয়ে এখন প্রায়োগিক জ্ঞান বা ‘স্কিল সেট’ বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে যাঁরা নিয়মিত কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করছেন, তাঁরা সহকর্মীদের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি আয় করছেন। নিচে এমন চারটি দক্ষতা তুলে ধরা হলো, যা আপনি এই ডিসেম্বরেই ঝালিয়ে নিতে পারেন:

এআই প্রম্পটিং: ডিজিটাল যুগের নতুন হাতিয়ার

এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আর কেবল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বিষয় নয়, এটি আমাদের প্রতিদিনের অফিসের কাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চ্যাটজিপিটি, জেমিনি বা ক্লডের মতো টুলগুলো যাঁরা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেন, আধুনিক কর্মক্ষেত্রে তাঁদের কদর আকাশচুম্বী। লাইটকাস্টের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, যেসব চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে এআই দক্ষতার কথা উল্লেখ থাকে, সেখানে বেতন সাধারণের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি হয়।

এআই প্রম্পটিং শেখার জন্য আপনাকে প্রোগ্রামার হতে হবে না। প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজ, যেমন: জটিল রিপোর্টের সারসংক্ষেপ তৈরি, ই-মেইল ড্রাফট করা কিংবা প্রেজেন্টেশনের আউটলাইন তৈরির ক্ষেত্রে এআইকে কীভাবে সঠিক নির্দেশনা দিতে হয়, তা অনুশীলন করুন। একটি সঠিক নির্দেশনাই আপনার কয়েক ঘণ্টার কাজকে কয়েক মিনিটে নামিয়ে আনতে পারে। এ দক্ষতা আপনার প্রোডাকটিভিটি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে, যা নিয়োগকর্তাদের নজর কাড়তে বাধ্য।

ডেটা লিটারেসি: তথ্যের ভাষায় কথা বলা

আধুনিক বিশ্বে ডেটা বা তথ্য হলো নতুন জ্বালানি। আপনি যে খাতেই কাজ করুন না কেন, সেখানে বিপণন, অর্থায়ন কিংবা মানবসম্পদ—সব ক্ষেত্রেই তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারাটা এখন অত্যন্ত জরুরি। ডেটা লিটারেসি মানে কেবল জটিল সব সংখ্যা নয়; বরং তথ্যের লুকানো অর্থ বুঝতে পারা।

এই ডিসেম্বরে আপনি এক্সেল, গুগল ডেটা স্টুডিও কিংবা পাওয়ার বিআইয়ের মতো টুলের প্রাথমিক ব্যবহার শিখে নিতে পারেন। যখন আপনি প্রতিষ্ঠানের গত এক বছরের পারফরম্যান্স গ্রাফ বা চার্টের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে ঊর্ধ্বতনদের সামনে উপস্থাপন করবেন, তখন আপনার গুরুত্ব আলাদাভাবে প্রকাশ পাবে। তথ্যের ভিত্তিতে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আপনাকে একজন সাধারণ কর্মী থেকে কৌশলী নীতিনির্ধারকে রূপান্তরিত করবে।

কার্যকর যোগাযোগ: সহজ লেখায় নিজের প্রভাব তৈরি

আপনার আইডিয়া বা পরিকল্পনা যতই চমৎকার হোক না কেন, তা যদি পরিষ্কারভাবে সহকর্মী বা ক্লায়েন্টকে বোঝাতে না পারেন, তবে তার কোনো মূল্য নেই। বর্তমান হাইব্রিড বা রিমোট কাজের যুগে লিখিত যোগাযোগের গুরুত্ব আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। স্পষ্ট এবং সংক্ষিপ্ত লেখনী মানুষের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

আপনার লেখনী উন্নত করতে এই মাসটিকে কাজে লাগান। নিজের লেখা পুরোনো ই-মেইল বা রিপোর্টগুলো আবার পড়ুন এবং দেখুন কোথায় আরও সহজ করা যেত। মূল কথাটি শুরুতে লেখা এবং বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করে তথ্য উপস্থাপনের অভ্যাস করুন। যে ব্যক্তি জটিল বিষয়কে সহজ শব্দে লিখে বোঝাতে পারেন, করপোরেট দুনিয়ায় তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার পথ দ্রুত প্রশস্ত হয়। মনে রাখবেন, ভালো লিখতে পারা আপনার পেশাদারত্বের এক শক্তিশালী বিজ্ঞাপন।

ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক জ্ঞান: টিম লিড করার প্রস্তুতি

নেতৃত্ব বা ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা কেবল ম্যানেজারদের জন্য নয়। আপনি যদি একজন সাধারণ কর্মীও হন, তবু ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক জ্ঞান আপনাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করবে। কাজের সঠিক বণ্টন, ফিডব্যাক দেওয়ার কৌশল এবং কৌশলগত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি যেকোনো প্রজেক্ট সফলভাবে পরিচালনা করতে পারবেন।

এই ডিসেম্বরে অফিসে ছোট কোনো প্রজেক্ট বা সভার সমন্বয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিন। সহকর্মীদের কাজে সহায়তা করা এবং মেন্টর হিসেবে ভূমিকা রাখা শুরু করুন। যখন আপনি নিজের নির্দিষ্ট কাজের গণ্ডি পেরিয়ে টিমের সামগ্রিক সাফল্যে অবদান রাখতে শুরু করবেন, তখন প্রতিষ্ঠান আপনাকে একজন ভবিষ্যৎ লিডার হিসেবে বিবেচনা করবে। আর নেতৃত্বের এ গুণাবলিই উচ্চ বেতন ও সম্মানজনক পদের নিশ্চয়তা দেয়।

সূত্র: ফোর্বস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত