Ajker Patrika

মুসলিম বিশ্বে উচ্চশিক্ষার প্রথম সুসংহত প্রয়াস

আমজাদ ইউনুস 
মুসলিম বিশ্বে উচ্চশিক্ষার  প্রথম সুসংহত প্রয়াস

নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থা ছিল মুসলিম বিশ্বে উচ্চশিক্ষার প্রথম সুসংগঠিত বিদ্যাপীঠগুলোর একটি। সেলজুক সাম্রাজ্যের প্রতিটি বড় শহরে এ মাদ্রাসার শাখা ছিল। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায়ও বেশ জোর দেওয়া হতো এখানে। নিজামিয়া মাদ্রাসা এতই সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ছিল যে ইউরোপেও এর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল। ইউরোপের অনেক আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থা থেকে প্রভাবিত বলে মনে করা হয়। লিখেছেন আমজাদ ইউনুস

সেলজুক সুলতান মালিক শাহের উজির নিজামুল মুলক ১০৬৫ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদে প্রথম নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। নিজামুল মুলক একজন অনন্য বুদ্ধিমান ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। নিজামিয়া মাদ্রাসা ছিল গতানুগতিক শিক্ষায় সম্পূর্ণ নতুন সংযোজন। বাগদাদের পর ইস্পাহান, নিশাপুর, বলখ, হেরাত, তাবারিস্তান, খুজিস্তান, ইউফ্রেটিস দ্বীপসহ বিভিন্ন প্রধানতম শহরে নিজামিয়া ধারার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেন।

ইসলাম বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সুসংগঠিত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সূচনা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে কেউ কেউ বলেছেন, নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থাই ইসলামের ইতিহাসের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত মাদ্রাসা। এসব মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর নামেই এর নামকরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে নিজামিয়া মাদ্রাসার অনুকরণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মাদ্রাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে।

নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল, শুদ্ধ ও একনিষ্ঠভাবে মহান আল্লাহর উপাসনা করার শিক্ষা দেওয়া, ধর্মের বিধিবিধান যথাযথভাবে পালনের জন্য বিশুদ্ধ ইসলামি শিক্ষা দেওয়া, ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজে সৎভাবে জীবনযাপন করা, অন্যকে সৎ কাজে উদ্বুদ্ধ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখা ইত্যাদি।

এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের জন্য শিক্ষা গবেষণা ও লেখালেখির পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছিল। শিক্ষকেরা বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতেন। গবেষণা করতেন। লেখালেখি রচনা ও সংস্কারের কাজ করতেন। শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক জগৎ উন্মোচন করার কাজও আঞ্জাম দিয়েছিল নিজামিয়া মাদ্রাসা। ইতিহাস থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়েছিল।

পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায়ও জোর দেওয়া হতো। বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হতো। পরবর্তী সময়ে তাঁরা সরকারি-বেসরকারি নানা কাজে সম্পৃক্ত হতেন। এ ছাড়া সুন্নি চিন্তাধারার প্রচার-প্রসার করে শিয়া চিন্তাধারার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার একটি লক্ষ্যও ধারণ করত নিজামিয়া মাদ্রাসা।

সংরক্ষিত নিশাপুর নিজামিয়া মাদ্রাসার দেয়ালের ধ্বংসাবশেষের ছবিসিলেবাসে দুটি মৌলিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এক. শাফেয়ি মাজহাবের মতানুসারে ইসলামি আইনশাস্ত্র পাঠদান, দুই. আকিদা-বিশ্বাসে আশআরি চিন্তাধারার মৌলিক বিষয়গুলো পাঠদান। তা ছাড়া এই সিলেবাসে হাদিস, ব্যাকরণ, ভাষা ও সাহিত্যও বিদ্যমান ছিল।

নিজামুল মুলক মাদ্রাসার লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেন। মাদ্রাসার জন্য উদারভাবে ব্যয় করতেন। প্রত্যেক শিক্ষক ও কর্মচারীর জন্য সম্মানজনক মজুরি বরাদ্দ করেন। শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের দায়িত্বও নিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন চার পাউন্ড রুটির ব্যবস্থা করতেন। ছিল চমৎকার আবাসন-সুবিধাও। প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ ছিল আলাদা কক্ষ।

সময়ের সেরা আলিম ও ধর্মবিশারদদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়া হতো। যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী ছিলেন এই মাদ্রাসার শিক্ষক। ফারসি কবি শেখ সাদি বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন।

নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থা প্রায় চার শ বছর টিকে ছিল। এখান থেকেই শাফিয়ি সুন্নি চিন্তাধারার অনেক বিশ্বখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত তৈরি হন। তাঁরা শাফিয়ি ফিকহ ও হাদিস পাঠদানের জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলাম যা বলে

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)

আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।

জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।

এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য যে সুসংবাদ দিয়েছেন নবীজি (সা.)

আবরার নাঈম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)

জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লাশ দেখে যে দোয়া পড়বেন

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)

কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’

এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)

পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রজব মাসে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)

এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।

রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত