Ajker Patrika

মুসলিম ঐতিহ্যের শহর মারাকেশ

ইজাজুল হক
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯: ০৫
মুসলিম ঐতিহ্যের শহর মারাকেশ

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় মরক্কোর সাংস্কৃতিক শহর মারাকেশ। আফ্রিকার আটলাস পর্বতমালার পশ্চিম পাদদেশে গড়ে ওঠা শহরটি হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। আন্দালুসিয়ান স্থাপত্যে তৈরি রেড সিটি খ্যাত এই প্রাচীন শহর দেশটির জনপ্রিয়তম পর্যটনকেন্দ্র। ১৯৮৫ সালে ইউনেসকো শহরটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। মারাকেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা লিখেছেন ইজাজুল হক

মরক্কোর রাজধানী রাবাত থেকে ৩২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত মারাকেশে একসময় বারবার জাতির চাষিরা বসবাস করত। ১০৭০ সালে আল-মুরাবিতুন সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে আমির আবু বকর ইবনে ওমর একে শহরে রূপান্তরিত করেন। লাল পাথরের বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন দালানে সজ্জিত শহরটি নির্মাণে নেতৃত্ব দিয়েছেন আফ্রিকার মুসলিম বীর ইউসুফ বিন তাশফিন। এরপর তাঁর ছেলে আলি ইবনে ইউসুফ ১১২২ ও ১১২৩ সালে অসমাপ্ত কাজের পূর্ণতা দেন। ফলে তখন থেকেই শহরটি আল-মাদিনাতুল হামরা বা লাল শহর হিসেবে পরিচিতি পায়।

দ্রুত উন্নতি করা মারাকেশ অল্প সময়েই পতনের মুখ দেখে। তবে ১৬ শতকের গোড়ার দিকে সাদিয়ান রাজবংশের রাজধানী হওয়ার সুবাদে শহরটি ফের প্রাণ ফিরে পায়। সুলতান আবদুল্লাহ আল-গালিব ও আহমেদ আল-মানসুর একে দারুণ সব স্থাপত্যে সমৃদ্ধ করে তোলেন। ১৭ শতকের শুরুতে সুফিদের তীর্থস্থান হয়ে ওঠে মারাকেশ। ১৯১২ সালে মরক্কোয় ফরাসি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৫৬ সালে স্বাধীনতার মাধ্যমে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

মারাকেশ বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শহর এবং আফ্রিকার ব্যস্ততম বাণিজ্যকেন্দ্র। ২১ শতকে মারাকেশ ইউরোপীয় পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। হোটেল ও আবাসনব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নও হয়। ফলে মারাকেশ শহরটি ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে চমৎকার এক নগরে রূপ নেয়। স্থানীয় কারুশিল্প পর্যটকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। মারাকেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ও স্থাপনার কথা এখানে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—

জামা এল ফিনা: মারাকেশের কেন্দ্রে অবস্থিত জামা এল ফিনা স্কয়ার শহরের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। মুরাবিতুন সাম্রাজ্য থেকে এটি বাজার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে সাদিয়ান রাজবংশের আমলে এটি নতুনত্ব লাভ করে। ২০০১ সালে স্কয়ারটিকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। 

কুতুবিয়া মসজিদ: মারাকেশের সবচেয়ে বড়, প্রাচীন ও আইকনিক স্থাপত্যের নাম কুতুবিয়া মসজিদ। ১১৪৭ সালে আল-মোহাদ সাম্রাজ্যের খলিফা আবদ আল-মুইন এটি নির্মাণ করেন। ১১৯৫ সালে খলিফা ইয়াকুব আল-মানসুর মসজিদের ২৫৩ ফুট উঁচু দৃষ্টিনন্দন মিনারটি তৈরি করেন, যা প্রায় পুরো মারাকেশ থেকে দেখা যায়। 

মারাকেশের আইকনিক স্থাপত্য কুতুবিয়া মসজিদবেন ইউসুফ মাদ্রাসা: বেন ইউসুফ মাদ্রাসা মারাকেশের একটি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের শিলালিপিতে ১২ শতকের আল-মুরাবিত সুলতান আলি ইবনে ইউসুফের একটি বাণী উৎকীর্ণ আছে। তিনিই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ঐতিহাসিকদের ভাষ্যমতে, এটি একসময় মরক্কোর সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা ছিল।

এল বাদি প্রাসাদ: ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে থেকে আমদানি করা মূল্যবান পাথরে নির্মাণ করা হয়েছিল এল বাদি প্রাসাদ তথা প্যালেস অব ওয়ান্ডার। ১৫৭৮ সালে সুলতান আহমেদ মানসুর প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৭ শতকের শুরুতে প্রাসাদটি ধ্বংস হয় এবং এর মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়ে যায়। 

বাব আগনাউ: এটি মারাকেশের একটি প্রাচীনতম ফটক। আলমোহাদ খলিফা আবু ইউসুফ ইয়াকুব আল-মানসুর ১১৯০ সালে নির্মাণ করেছিলেন। ফটকটি এখনো নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর জন্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। 

মারাকেশ প্রাচীর: এটি শহরের সীমানাপ্রাচীর। ১১ শতকে যখন মারাকেশ নির্মাণ করা হচ্ছিল, তখন শহরের সীমান্তজুড়ে দীর্ঘ এই প্রাচীর নির্মিত হয়। এই প্রাচীরের রয়েছে অসংখ্য নান্দনিক ফটক।

ঐতিহ্যের শহর মারাকেশ ৮ সেপ্টেম্বরের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উল্লিখিত স্থাপনাগুলোও তাতে বাদ যায়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, কুতুবিয়া মসজিদ, মারাকেশ প্রাচীরসহ অনেক প্রাচীন স্থাপনা বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনের কারণে এগিয়ে এল কওমি মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর কেন্দ্রীয় বোর্ড পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছে। কওমি সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) ও বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

নতুন সূচি অনুযায়ী, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। এ ছাড়া ২০২৬ সালের দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়।

আল-হাইআতুল উলয়ার অফিস ব্যবস্থাপক মু. অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ৬৬ নম্বর সভার সিদ্ধান্ত ও ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মনিটরিং সেলের সভার সিদ্ধান্তক্রমে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। টানা ১০ দিন পরীক্ষা চলার পর ৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষা শেষ হবে।

প্রথম দিনের পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং শেষ হবে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে। অবশিষ্ট ৯ দিন পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৯টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে।

প্রথম দিন তিরমিজি শরিফ প্রথম খণ্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর শেষ দিন পরীক্ষা হবে মুওয়াত্তায়ে ইমাম মালিক ও মুওয়াত্তায়ে ইমাম মুহাম্মদ কিতাবের।

এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী জানান, বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। শুক্রবারসহ চলবে ২৪ জানুয়ারি (শনিবার) পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ কোরআন প্রতিযোগিতা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ‘টি কে গ্রুপ’-এর উদ্যোগে এই ‘ইসলামিক রিয়্যালিটি শো’টি দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিজনেস ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোফাচ্ছেল হক দেশবরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ, আলেম ও শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেধাবী কিশোর-কিশোরী হাফেজদের জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরা এবং তাদের মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্যে পুষ্টি পবিত্র কোরআন চর্চার যে যাত্রা শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। আমাদের বিশ্বাস, দ্বিতীয় এই আসরে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, টি কে গ্রুপের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ইসলামের খেদমতে এই আয়োজন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে টি কে গ্রুপের পরিচালক (এইচআর) আলমাস রাইসুল গনিও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি এবং ‘পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট’-এর প্রধান বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। তিনি বলেন, ‘কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে পবিত্র কোরআনের প্রতি অনুরাগী করতে এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। সমাজে ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় টি কে গ্রুপের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুদে প্রতিভাবান হাফেজগণ প্রাথমিক অডিশন রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। অভিজ্ঞ বিচারক এবং আলেমগণের বিবেচনায় সেরা প্রতিযোগীরা মূল পর্বে অংশগ্রহণ করবে। রিজিওনাল অডিশনে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা পুষ্টির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় উপহার পাবে।

২২ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী অডিশন পর্ব শুরু হবে। চূড়ান্ত পর্ব পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন বিকেল ৫টা হতে মাগরিবের আজানের আগে দেশের অন্যতম চ্যানেল ‘নাইন’-এ প্রচারিত হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীরা পাবেন লক্ষাধিক টাকাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিভিন্ন ইউনিটের হেড অব সেলস, হেড অব বিজনেসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত