জিনাতুন নুর

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির জোয়ার এসেছিল। তখনকার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদই পরে ইউরোপীয় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের ভিত্তি স্থাপন করে। এর কৃতিত্ব মুসলিমদের। জ্ঞান–বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদানের টানা ৬০০ বছরের এই সময়কাল ‘ইসলামি স্বর্ণযুগ’ হিসেবে পরিচিত।
সপ্তম শতকে ইসলাম ধর্মের উত্থানের মধ্য দিয়ে ইসলামি স্বর্ণযুগের সূচনা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ওহির মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধ ও বাণিজ্যের মাধ্যমে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এর সঙ্গে বিশ্বজুড়ে গড়ে ওঠে মাদ্রাসা বা ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র, যেখানে ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি গ্রিক, রোমান, পারস্য ও ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীন জ্ঞানচর্চাও হতো। এভাবে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে নতুন বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ, যার প্রভাব ভারত থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিষ্ঠা এই স্বর্ণযুগকে আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় ভিত্তি গড়ে দেয়। আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ শহরে গড়ে ওঠে হাউস অব উইজডম বা বাইতুল হিকমাহ, যা অল্প সময়েই জ্ঞানচর্চা, গবেষণা, অনুবাদ ও নতুন নতুন আবিষ্কারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বাগদাদের পাশাপাশি কর্ডোবা বা কায়রোর মতো আরব শহরগুলোতেও গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন ও চিকিৎসাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে। তখন হাউস অব উইজডমসহ এসব প্রতিষ্ঠানই ছিল প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
আরব পণ্ডিতদের হাতে প্রাচীন জ্ঞানের নবজাগরণ
আরব পণ্ডিতেরা প্রাচীন জ্ঞানকে শুধু সংরক্ষণই করেননি, বরং তা আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইবনে সিনা, যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা ‘কানুন অব মেডিসিন’ গ্রন্থটি চিকিৎসাবিদ্যায় এক অনন্য সংকলন হিসেবে পরিচিত, যা পরে মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের চিকিৎসাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া মুসলিম পণ্ডিতেরা ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আল ফাজারি ও ইবনে তারিকের মতো গবেষকেরা অনূদিত গ্রন্থের সাহায্যে ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানকে আরও পরিশিলীত ও সমৃদ্ধ করেছেন। বিশেষ করে, তাঁরা জ্যোতির্বিদ্যাভিত্তিক সারণি প্রস্তুত ও বিশ্লেষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

এই পণ্ডিতেরা ভারতীয়, পারস্য ও গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান একত্র করে সেটিকে সহজবোধ্য ও ব্যবহারযোগ্য করে তোলেন। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি হয় অ্যাস্ট্রল্যাব। এই যন্ত্র সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান এবং সময় নির্ধারণে সাহায্য করত। নাবিকরা অ্যাস্ট্রল্যাব যন্ত্র ব্যবহার করে সূর্য বা নক্ষত্রের উচ্চতা মেপে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতেন।
ইতিহাসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত বিষয় ছিল কাগজ তৈরিতে নতুন উদ্ভাবন, যা ইসলামি স্বর্ণযুগে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এর আগে চীন ও মধ্য এশিয়ায় কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া ধীর, জটিল ও ব্যয়বহুল ছিল। কিন্তু স্বর্ণযুগের শুরুর দিকে পুরোনো লিনেন কাপড় ও জলচালিত মিল ব্যবহারের মাধ্যমে কাগজ তৈরি অনেক সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হয়ে ওঠে। এর ফলে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিক্ষা বিস্তারে এক বিপ্লব ঘটে।
ইসলামি স্বর্ণযুগের অনন্য অর্জন
মুসলিম পণ্ডিতেরা শুধু প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণই করেননি, বরং তাঁদের কৃতিত্ব ইতিহাসের গতিপথকেই পরিবর্তন করেছেন। তার অন্যতম উদাহরণ গণিতবিদ আল-খাওয়ারিজম। তিনি বীজগণিতকে স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং সরল ও দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের জন্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি তৈরি করেন।

ইসলামি স্বর্ণযুগে বিজ্ঞানচর্চা ও আবিষ্কারের জন্য এক অনন্য পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। এ সময়ের কিছু প্রকৌশলী চমকপ্রদ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যেগুলোর বেশির ভাগ আজও ব্যবহৃত হচ্ছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আল-জাজারির উদ্ভাবিত ক্র্যাঙ্কশাফট। এই যন্ত্রাংশের ব্যবহার কৃষি ও শিল্প থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তিতেও বিস্তৃত। বিস্ময়কর বিষয় হলো—সব মোটরগাড়িতেই ক্র্যাঙ্কশাফট ব্যবহৃত হয়, যা শত শত বছর আগে আবিষ্কৃত হলেও আজও সমানভাবে অপরিহার্য।
আল-জাজারি তাঁর প্রকৌশল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বিখ্যাত হাতির ঘড়ি তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল হাতির মতো দেখতে জলঘড়ি। মুসলিম বিজ্ঞানীরাই প্রথম অটোম্যাটা নামে রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এই অটোম্যাটা যন্ত্র হাত ধোয়ার পানি সরবরাহ করত এবং হাত মোছার টাওয়েল পৌঁছে দিত।
জ্ঞান বিস্তারের পথ ও প্রান্তর
ইসলামি স্বর্ণযুগ বিকশিত হয়েছিল এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বে যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছিল। ইউরোপের বিরাট অংশ তখনো বিকশিত হতে না পারলেও বাণিজ্য ও জ্ঞানের প্রবাহ থেমে ছিল না। জ্ঞান আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সিল্ক রুট ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখত। এসব পথে মুসলিম পণ্ডিতদের অসাধারণ অগ্রগতির খবর ধীরে ধীরে বিশ্বের অন্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে, ক্রুসেড চলাকালে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর হয়। ধর্মীয় সংঘাত হলেও এর ফলে দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, প্রভাব ও জ্ঞানবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়। পণ্ডিতেরা তখন সহজে ও কম খরচে বই প্রকাশ করতে পারতেন। অষ্টম শতকের পর ব্যয়বহুল চামড়ার পরিবর্তে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়, যা জ্ঞান সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিরাট অবদান রাখে। যদিও ধর্মীয় ও মূল্যবান লেখার ক্ষেত্রে চামড়ার ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হতো।
মূলত ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রভাবে ইতিহাসের গতিপথও পরিবর্তিত হয়। মুসলমানরা অনেক অঞ্চল জয় করেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি সেই অঞ্চলগুলোতে নতুন নতুন চিন্তাধারা, জ্ঞান ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে সেসব গ্রহণ করেন এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। এই পরিবর্তনের পেছনে জ্ঞানচর্চা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ও জোট গঠনের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও গভীর হয়। অর্থনৈতিক প্রয়োজন আর এই সিল্করোডের মতো বাণিজ্যপথ এই চুক্তিগুলোকে আরও বাস্তব ও প্রয়োজনীয় করে তোলে।
ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল
ইসলামি স্বর্ণযুগ এমন এক সময়ে শুরু হয়, যখন রোম ও পারস্যের প্রাচীন সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে, চারপাশে ভাইকিং, বর্বর ও পরে মোঙ্গলদের আক্রমণের ভয় ছিল সর্বত্র। ফলে বহু মূল্যবান সংরক্ষিত জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এ সময় ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে জ্ঞানচর্চার পথ অনেকটাই সহজ ও উন্মুক্ত হয়।

মুসলিম পণ্ডিতেরা নানা ভাষা থেকে প্রাচীন জ্ঞান অনুবাদ করে তা সংরক্ষণ করেন। শুধু সংরক্ষণে সীমাবদ্ধ না থেকে তাঁরা নতুন নতুন চিন্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবন করেছেন। এভাবেই তাঁরা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে জ্ঞানের সেতুবন্ধন তৈরি করেন। ইসলামি স্বর্ণযুগে উদ্ভাবিত জ্ঞান ইউরোপের রেনেসাঁয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যার প্রভাব আধুনিক যুগেও টিকে আছে। শুধু মুসলিম বিশ্বের জন্য নয়, ইসলামি স্বর্ণযুগ বিশ্বের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল। তখন থেকেই হারিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে জ্ঞানের পুনর্জন্ম হয় এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির জোয়ার এসেছিল। তখনকার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদই পরে ইউরোপীয় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের ভিত্তি স্থাপন করে। এর কৃতিত্ব মুসলিমদের। জ্ঞান–বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদানের টানা ৬০০ বছরের এই সময়কাল ‘ইসলামি স্বর্ণযুগ’ হিসেবে পরিচিত।
সপ্তম শতকে ইসলাম ধর্মের উত্থানের মধ্য দিয়ে ইসলামি স্বর্ণযুগের সূচনা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ওহির মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধ ও বাণিজ্যের মাধ্যমে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এর সঙ্গে বিশ্বজুড়ে গড়ে ওঠে মাদ্রাসা বা ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র, যেখানে ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি গ্রিক, রোমান, পারস্য ও ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীন জ্ঞানচর্চাও হতো। এভাবে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে নতুন বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ, যার প্রভাব ভারত থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিষ্ঠা এই স্বর্ণযুগকে আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় ভিত্তি গড়ে দেয়। আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ শহরে গড়ে ওঠে হাউস অব উইজডম বা বাইতুল হিকমাহ, যা অল্প সময়েই জ্ঞানচর্চা, গবেষণা, অনুবাদ ও নতুন নতুন আবিষ্কারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বাগদাদের পাশাপাশি কর্ডোবা বা কায়রোর মতো আরব শহরগুলোতেও গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন ও চিকিৎসাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে। তখন হাউস অব উইজডমসহ এসব প্রতিষ্ঠানই ছিল প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
আরব পণ্ডিতদের হাতে প্রাচীন জ্ঞানের নবজাগরণ
আরব পণ্ডিতেরা প্রাচীন জ্ঞানকে শুধু সংরক্ষণই করেননি, বরং তা আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইবনে সিনা, যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা ‘কানুন অব মেডিসিন’ গ্রন্থটি চিকিৎসাবিদ্যায় এক অনন্য সংকলন হিসেবে পরিচিত, যা পরে মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের চিকিৎসাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া মুসলিম পণ্ডিতেরা ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আল ফাজারি ও ইবনে তারিকের মতো গবেষকেরা অনূদিত গ্রন্থের সাহায্যে ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানকে আরও পরিশিলীত ও সমৃদ্ধ করেছেন। বিশেষ করে, তাঁরা জ্যোতির্বিদ্যাভিত্তিক সারণি প্রস্তুত ও বিশ্লেষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

এই পণ্ডিতেরা ভারতীয়, পারস্য ও গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান একত্র করে সেটিকে সহজবোধ্য ও ব্যবহারযোগ্য করে তোলেন। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি হয় অ্যাস্ট্রল্যাব। এই যন্ত্র সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান এবং সময় নির্ধারণে সাহায্য করত। নাবিকরা অ্যাস্ট্রল্যাব যন্ত্র ব্যবহার করে সূর্য বা নক্ষত্রের উচ্চতা মেপে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতেন।
ইতিহাসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত বিষয় ছিল কাগজ তৈরিতে নতুন উদ্ভাবন, যা ইসলামি স্বর্ণযুগে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এর আগে চীন ও মধ্য এশিয়ায় কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া ধীর, জটিল ও ব্যয়বহুল ছিল। কিন্তু স্বর্ণযুগের শুরুর দিকে পুরোনো লিনেন কাপড় ও জলচালিত মিল ব্যবহারের মাধ্যমে কাগজ তৈরি অনেক সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হয়ে ওঠে। এর ফলে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিক্ষা বিস্তারে এক বিপ্লব ঘটে।
ইসলামি স্বর্ণযুগের অনন্য অর্জন
মুসলিম পণ্ডিতেরা শুধু প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণই করেননি, বরং তাঁদের কৃতিত্ব ইতিহাসের গতিপথকেই পরিবর্তন করেছেন। তার অন্যতম উদাহরণ গণিতবিদ আল-খাওয়ারিজম। তিনি বীজগণিতকে স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং সরল ও দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের জন্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি তৈরি করেন।

ইসলামি স্বর্ণযুগে বিজ্ঞানচর্চা ও আবিষ্কারের জন্য এক অনন্য পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। এ সময়ের কিছু প্রকৌশলী চমকপ্রদ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যেগুলোর বেশির ভাগ আজও ব্যবহৃত হচ্ছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আল-জাজারির উদ্ভাবিত ক্র্যাঙ্কশাফট। এই যন্ত্রাংশের ব্যবহার কৃষি ও শিল্প থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তিতেও বিস্তৃত। বিস্ময়কর বিষয় হলো—সব মোটরগাড়িতেই ক্র্যাঙ্কশাফট ব্যবহৃত হয়, যা শত শত বছর আগে আবিষ্কৃত হলেও আজও সমানভাবে অপরিহার্য।
আল-জাজারি তাঁর প্রকৌশল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বিখ্যাত হাতির ঘড়ি তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল হাতির মতো দেখতে জলঘড়ি। মুসলিম বিজ্ঞানীরাই প্রথম অটোম্যাটা নামে রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এই অটোম্যাটা যন্ত্র হাত ধোয়ার পানি সরবরাহ করত এবং হাত মোছার টাওয়েল পৌঁছে দিত।
জ্ঞান বিস্তারের পথ ও প্রান্তর
ইসলামি স্বর্ণযুগ বিকশিত হয়েছিল এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বে যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছিল। ইউরোপের বিরাট অংশ তখনো বিকশিত হতে না পারলেও বাণিজ্য ও জ্ঞানের প্রবাহ থেমে ছিল না। জ্ঞান আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সিল্ক রুট ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখত। এসব পথে মুসলিম পণ্ডিতদের অসাধারণ অগ্রগতির খবর ধীরে ধীরে বিশ্বের অন্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে, ক্রুসেড চলাকালে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর হয়। ধর্মীয় সংঘাত হলেও এর ফলে দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, প্রভাব ও জ্ঞানবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়। পণ্ডিতেরা তখন সহজে ও কম খরচে বই প্রকাশ করতে পারতেন। অষ্টম শতকের পর ব্যয়বহুল চামড়ার পরিবর্তে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়, যা জ্ঞান সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিরাট অবদান রাখে। যদিও ধর্মীয় ও মূল্যবান লেখার ক্ষেত্রে চামড়ার ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হতো।
মূলত ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রভাবে ইতিহাসের গতিপথও পরিবর্তিত হয়। মুসলমানরা অনেক অঞ্চল জয় করেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি সেই অঞ্চলগুলোতে নতুন নতুন চিন্তাধারা, জ্ঞান ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে সেসব গ্রহণ করেন এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। এই পরিবর্তনের পেছনে জ্ঞানচর্চা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ও জোট গঠনের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও গভীর হয়। অর্থনৈতিক প্রয়োজন আর এই সিল্করোডের মতো বাণিজ্যপথ এই চুক্তিগুলোকে আরও বাস্তব ও প্রয়োজনীয় করে তোলে।
ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল
ইসলামি স্বর্ণযুগ এমন এক সময়ে শুরু হয়, যখন রোম ও পারস্যের প্রাচীন সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে, চারপাশে ভাইকিং, বর্বর ও পরে মোঙ্গলদের আক্রমণের ভয় ছিল সর্বত্র। ফলে বহু মূল্যবান সংরক্ষিত জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এ সময় ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে জ্ঞানচর্চার পথ অনেকটাই সহজ ও উন্মুক্ত হয়।

মুসলিম পণ্ডিতেরা নানা ভাষা থেকে প্রাচীন জ্ঞান অনুবাদ করে তা সংরক্ষণ করেন। শুধু সংরক্ষণে সীমাবদ্ধ না থেকে তাঁরা নতুন নতুন চিন্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবন করেছেন। এভাবেই তাঁরা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে জ্ঞানের সেতুবন্ধন তৈরি করেন। ইসলামি স্বর্ণযুগে উদ্ভাবিত জ্ঞান ইউরোপের রেনেসাঁয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যার প্রভাব আধুনিক যুগেও টিকে আছে। শুধু মুসলিম বিশ্বের জন্য নয়, ইসলামি স্বর্ণযুগ বিশ্বের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল। তখন থেকেই হারিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে জ্ঞানের পুনর্জন্ম হয় এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জিনাতুন নুর

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির জোয়ার এসেছিল। তখনকার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদই পরে ইউরোপীয় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের ভিত্তি স্থাপন করে। এর কৃতিত্ব মুসলিমদের। জ্ঞান–বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদানের টানা ৬০০ বছরের এই সময়কাল ‘ইসলামি স্বর্ণযুগ’ হিসেবে পরিচিত।
সপ্তম শতকে ইসলাম ধর্মের উত্থানের মধ্য দিয়ে ইসলামি স্বর্ণযুগের সূচনা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ওহির মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধ ও বাণিজ্যের মাধ্যমে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এর সঙ্গে বিশ্বজুড়ে গড়ে ওঠে মাদ্রাসা বা ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র, যেখানে ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি গ্রিক, রোমান, পারস্য ও ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীন জ্ঞানচর্চাও হতো। এভাবে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে নতুন বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ, যার প্রভাব ভারত থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিষ্ঠা এই স্বর্ণযুগকে আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় ভিত্তি গড়ে দেয়। আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ শহরে গড়ে ওঠে হাউস অব উইজডম বা বাইতুল হিকমাহ, যা অল্প সময়েই জ্ঞানচর্চা, গবেষণা, অনুবাদ ও নতুন নতুন আবিষ্কারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বাগদাদের পাশাপাশি কর্ডোবা বা কায়রোর মতো আরব শহরগুলোতেও গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন ও চিকিৎসাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে। তখন হাউস অব উইজডমসহ এসব প্রতিষ্ঠানই ছিল প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
আরব পণ্ডিতদের হাতে প্রাচীন জ্ঞানের নবজাগরণ
আরব পণ্ডিতেরা প্রাচীন জ্ঞানকে শুধু সংরক্ষণই করেননি, বরং তা আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইবনে সিনা, যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা ‘কানুন অব মেডিসিন’ গ্রন্থটি চিকিৎসাবিদ্যায় এক অনন্য সংকলন হিসেবে পরিচিত, যা পরে মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের চিকিৎসাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া মুসলিম পণ্ডিতেরা ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আল ফাজারি ও ইবনে তারিকের মতো গবেষকেরা অনূদিত গ্রন্থের সাহায্যে ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানকে আরও পরিশিলীত ও সমৃদ্ধ করেছেন। বিশেষ করে, তাঁরা জ্যোতির্বিদ্যাভিত্তিক সারণি প্রস্তুত ও বিশ্লেষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

এই পণ্ডিতেরা ভারতীয়, পারস্য ও গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান একত্র করে সেটিকে সহজবোধ্য ও ব্যবহারযোগ্য করে তোলেন। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি হয় অ্যাস্ট্রল্যাব। এই যন্ত্র সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান এবং সময় নির্ধারণে সাহায্য করত। নাবিকরা অ্যাস্ট্রল্যাব যন্ত্র ব্যবহার করে সূর্য বা নক্ষত্রের উচ্চতা মেপে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতেন।
ইতিহাসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত বিষয় ছিল কাগজ তৈরিতে নতুন উদ্ভাবন, যা ইসলামি স্বর্ণযুগে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এর আগে চীন ও মধ্য এশিয়ায় কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া ধীর, জটিল ও ব্যয়বহুল ছিল। কিন্তু স্বর্ণযুগের শুরুর দিকে পুরোনো লিনেন কাপড় ও জলচালিত মিল ব্যবহারের মাধ্যমে কাগজ তৈরি অনেক সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হয়ে ওঠে। এর ফলে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিক্ষা বিস্তারে এক বিপ্লব ঘটে।
ইসলামি স্বর্ণযুগের অনন্য অর্জন
মুসলিম পণ্ডিতেরা শুধু প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণই করেননি, বরং তাঁদের কৃতিত্ব ইতিহাসের গতিপথকেই পরিবর্তন করেছেন। তার অন্যতম উদাহরণ গণিতবিদ আল-খাওয়ারিজম। তিনি বীজগণিতকে স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং সরল ও দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের জন্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি তৈরি করেন।

ইসলামি স্বর্ণযুগে বিজ্ঞানচর্চা ও আবিষ্কারের জন্য এক অনন্য পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। এ সময়ের কিছু প্রকৌশলী চমকপ্রদ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যেগুলোর বেশির ভাগ আজও ব্যবহৃত হচ্ছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আল-জাজারির উদ্ভাবিত ক্র্যাঙ্কশাফট। এই যন্ত্রাংশের ব্যবহার কৃষি ও শিল্প থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তিতেও বিস্তৃত। বিস্ময়কর বিষয় হলো—সব মোটরগাড়িতেই ক্র্যাঙ্কশাফট ব্যবহৃত হয়, যা শত শত বছর আগে আবিষ্কৃত হলেও আজও সমানভাবে অপরিহার্য।
আল-জাজারি তাঁর প্রকৌশল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বিখ্যাত হাতির ঘড়ি তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল হাতির মতো দেখতে জলঘড়ি। মুসলিম বিজ্ঞানীরাই প্রথম অটোম্যাটা নামে রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এই অটোম্যাটা যন্ত্র হাত ধোয়ার পানি সরবরাহ করত এবং হাত মোছার টাওয়েল পৌঁছে দিত।
জ্ঞান বিস্তারের পথ ও প্রান্তর
ইসলামি স্বর্ণযুগ বিকশিত হয়েছিল এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বে যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছিল। ইউরোপের বিরাট অংশ তখনো বিকশিত হতে না পারলেও বাণিজ্য ও জ্ঞানের প্রবাহ থেমে ছিল না। জ্ঞান আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সিল্ক রুট ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখত। এসব পথে মুসলিম পণ্ডিতদের অসাধারণ অগ্রগতির খবর ধীরে ধীরে বিশ্বের অন্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে, ক্রুসেড চলাকালে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর হয়। ধর্মীয় সংঘাত হলেও এর ফলে দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, প্রভাব ও জ্ঞানবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়। পণ্ডিতেরা তখন সহজে ও কম খরচে বই প্রকাশ করতে পারতেন। অষ্টম শতকের পর ব্যয়বহুল চামড়ার পরিবর্তে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়, যা জ্ঞান সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিরাট অবদান রাখে। যদিও ধর্মীয় ও মূল্যবান লেখার ক্ষেত্রে চামড়ার ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হতো।
মূলত ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রভাবে ইতিহাসের গতিপথও পরিবর্তিত হয়। মুসলমানরা অনেক অঞ্চল জয় করেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি সেই অঞ্চলগুলোতে নতুন নতুন চিন্তাধারা, জ্ঞান ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে সেসব গ্রহণ করেন এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। এই পরিবর্তনের পেছনে জ্ঞানচর্চা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ও জোট গঠনের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও গভীর হয়। অর্থনৈতিক প্রয়োজন আর এই সিল্করোডের মতো বাণিজ্যপথ এই চুক্তিগুলোকে আরও বাস্তব ও প্রয়োজনীয় করে তোলে।
ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল
ইসলামি স্বর্ণযুগ এমন এক সময়ে শুরু হয়, যখন রোম ও পারস্যের প্রাচীন সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে, চারপাশে ভাইকিং, বর্বর ও পরে মোঙ্গলদের আক্রমণের ভয় ছিল সর্বত্র। ফলে বহু মূল্যবান সংরক্ষিত জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এ সময় ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে জ্ঞানচর্চার পথ অনেকটাই সহজ ও উন্মুক্ত হয়।

মুসলিম পণ্ডিতেরা নানা ভাষা থেকে প্রাচীন জ্ঞান অনুবাদ করে তা সংরক্ষণ করেন। শুধু সংরক্ষণে সীমাবদ্ধ না থেকে তাঁরা নতুন নতুন চিন্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবন করেছেন। এভাবেই তাঁরা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে জ্ঞানের সেতুবন্ধন তৈরি করেন। ইসলামি স্বর্ণযুগে উদ্ভাবিত জ্ঞান ইউরোপের রেনেসাঁয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যার প্রভাব আধুনিক যুগেও টিকে আছে। শুধু মুসলিম বিশ্বের জন্য নয়, ইসলামি স্বর্ণযুগ বিশ্বের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল। তখন থেকেই হারিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে জ্ঞানের পুনর্জন্ম হয় এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির জোয়ার এসেছিল। তখনকার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদই পরে ইউরোপীয় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের ভিত্তি স্থাপন করে। এর কৃতিত্ব মুসলিমদের। জ্ঞান–বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদানের টানা ৬০০ বছরের এই সময়কাল ‘ইসলামি স্বর্ণযুগ’ হিসেবে পরিচিত।
সপ্তম শতকে ইসলাম ধর্মের উত্থানের মধ্য দিয়ে ইসলামি স্বর্ণযুগের সূচনা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ওহির মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধ ও বাণিজ্যের মাধ্যমে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এর সঙ্গে বিশ্বজুড়ে গড়ে ওঠে মাদ্রাসা বা ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র, যেখানে ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি গ্রিক, রোমান, পারস্য ও ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীন জ্ঞানচর্চাও হতো। এভাবে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে নতুন বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ, যার প্রভাব ভারত থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিষ্ঠা এই স্বর্ণযুগকে আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় ভিত্তি গড়ে দেয়। আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ শহরে গড়ে ওঠে হাউস অব উইজডম বা বাইতুল হিকমাহ, যা অল্প সময়েই জ্ঞানচর্চা, গবেষণা, অনুবাদ ও নতুন নতুন আবিষ্কারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বাগদাদের পাশাপাশি কর্ডোবা বা কায়রোর মতো আরব শহরগুলোতেও গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন ও চিকিৎসাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে। তখন হাউস অব উইজডমসহ এসব প্রতিষ্ঠানই ছিল প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
আরব পণ্ডিতদের হাতে প্রাচীন জ্ঞানের নবজাগরণ
আরব পণ্ডিতেরা প্রাচীন জ্ঞানকে শুধু সংরক্ষণই করেননি, বরং তা আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইবনে সিনা, যিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা ‘কানুন অব মেডিসিন’ গ্রন্থটি চিকিৎসাবিদ্যায় এক অনন্য সংকলন হিসেবে পরিচিত, যা পরে মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের চিকিৎসাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া মুসলিম পণ্ডিতেরা ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আল ফাজারি ও ইবনে তারিকের মতো গবেষকেরা অনূদিত গ্রন্থের সাহায্যে ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানকে আরও পরিশিলীত ও সমৃদ্ধ করেছেন। বিশেষ করে, তাঁরা জ্যোতির্বিদ্যাভিত্তিক সারণি প্রস্তুত ও বিশ্লেষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

এই পণ্ডিতেরা ভারতীয়, পারস্য ও গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞান একত্র করে সেটিকে সহজবোধ্য ও ব্যবহারযোগ্য করে তোলেন। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি হয় অ্যাস্ট্রল্যাব। এই যন্ত্র সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান এবং সময় নির্ধারণে সাহায্য করত। নাবিকরা অ্যাস্ট্রল্যাব যন্ত্র ব্যবহার করে সূর্য বা নক্ষত্রের উচ্চতা মেপে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতেন।
ইতিহাসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত বিষয় ছিল কাগজ তৈরিতে নতুন উদ্ভাবন, যা ইসলামি স্বর্ণযুগে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এর আগে চীন ও মধ্য এশিয়ায় কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া ধীর, জটিল ও ব্যয়বহুল ছিল। কিন্তু স্বর্ণযুগের শুরুর দিকে পুরোনো লিনেন কাপড় ও জলচালিত মিল ব্যবহারের মাধ্যমে কাগজ তৈরি অনেক সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হয়ে ওঠে। এর ফলে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিক্ষা বিস্তারে এক বিপ্লব ঘটে।
ইসলামি স্বর্ণযুগের অনন্য অর্জন
মুসলিম পণ্ডিতেরা শুধু প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণই করেননি, বরং তাঁদের কৃতিত্ব ইতিহাসের গতিপথকেই পরিবর্তন করেছেন। তার অন্যতম উদাহরণ গণিতবিদ আল-খাওয়ারিজম। তিনি বীজগণিতকে স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং সরল ও দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের জন্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি তৈরি করেন।

ইসলামি স্বর্ণযুগে বিজ্ঞানচর্চা ও আবিষ্কারের জন্য এক অনন্য পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। এ সময়ের কিছু প্রকৌশলী চমকপ্রদ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যেগুলোর বেশির ভাগ আজও ব্যবহৃত হচ্ছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আল-জাজারির উদ্ভাবিত ক্র্যাঙ্কশাফট। এই যন্ত্রাংশের ব্যবহার কৃষি ও শিল্প থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তিতেও বিস্তৃত। বিস্ময়কর বিষয় হলো—সব মোটরগাড়িতেই ক্র্যাঙ্কশাফট ব্যবহৃত হয়, যা শত শত বছর আগে আবিষ্কৃত হলেও আজও সমানভাবে অপরিহার্য।
আল-জাজারি তাঁর প্রকৌশল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বিখ্যাত হাতির ঘড়ি তৈরি করেছিলেন। এটি ছিল হাতির মতো দেখতে জলঘড়ি। মুসলিম বিজ্ঞানীরাই প্রথম অটোম্যাটা নামে রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এই অটোম্যাটা যন্ত্র হাত ধোয়ার পানি সরবরাহ করত এবং হাত মোছার টাওয়েল পৌঁছে দিত।
জ্ঞান বিস্তারের পথ ও প্রান্তর
ইসলামি স্বর্ণযুগ বিকশিত হয়েছিল এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বে যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছিল। ইউরোপের বিরাট অংশ তখনো বিকশিত হতে না পারলেও বাণিজ্য ও জ্ঞানের প্রবাহ থেমে ছিল না। জ্ঞান আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সিল্ক রুট ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখত। এসব পথে মুসলিম পণ্ডিতদের অসাধারণ অগ্রগতির খবর ধীরে ধীরে বিশ্বের অন্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে, ক্রুসেড চলাকালে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর হয়। ধর্মীয় সংঘাত হলেও এর ফলে দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, প্রভাব ও জ্ঞানবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়। পণ্ডিতেরা তখন সহজে ও কম খরচে বই প্রকাশ করতে পারতেন। অষ্টম শতকের পর ব্যয়বহুল চামড়ার পরিবর্তে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়, যা জ্ঞান সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিরাট অবদান রাখে। যদিও ধর্মীয় ও মূল্যবান লেখার ক্ষেত্রে চামড়ার ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হতো।
মূলত ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রভাবে ইতিহাসের গতিপথও পরিবর্তিত হয়। মুসলমানরা অনেক অঞ্চল জয় করেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি সেই অঞ্চলগুলোতে নতুন নতুন চিন্তাধারা, জ্ঞান ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে সেসব গ্রহণ করেন এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। এই পরিবর্তনের পেছনে জ্ঞানচর্চা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ও জোট গঠনের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও গভীর হয়। অর্থনৈতিক প্রয়োজন আর এই সিল্করোডের মতো বাণিজ্যপথ এই চুক্তিগুলোকে আরও বাস্তব ও প্রয়োজনীয় করে তোলে।
ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল
ইসলামি স্বর্ণযুগ এমন এক সময়ে শুরু হয়, যখন রোম ও পারস্যের প্রাচীন সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে, চারপাশে ভাইকিং, বর্বর ও পরে মোঙ্গলদের আক্রমণের ভয় ছিল সর্বত্র। ফলে বহু মূল্যবান সংরক্ষিত জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এ সময় ইসলাম চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে জ্ঞানচর্চার পথ অনেকটাই সহজ ও উন্মুক্ত হয়।

মুসলিম পণ্ডিতেরা নানা ভাষা থেকে প্রাচীন জ্ঞান অনুবাদ করে তা সংরক্ষণ করেন। শুধু সংরক্ষণে সীমাবদ্ধ না থেকে তাঁরা নতুন নতুন চিন্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবন করেছেন। এভাবেই তাঁরা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে জ্ঞানের সেতুবন্ধন তৈরি করেন। ইসলামি স্বর্ণযুগে উদ্ভাবিত জ্ঞান ইউরোপের রেনেসাঁয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যার প্রভাব আধুনিক যুগেও টিকে আছে। শুধু মুসলিম বিশ্বের জন্য নয়, ইসলামি স্বর্ণযুগ বিশ্বের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল। তখন থেকেই হারিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে জ্ঞানের পুনর্জন্ম হয় এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।
১ ঘণ্টা আগে
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।
এমিরেটস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বহরের প্রতিটি ফ্লাইটে এখন থেকে এই বিশেষ পকেট জায়নামাজ পাওয়া যাবে। ফার্স্ট ক্লাস, বিজনেস ক্লাস কিংবা ইকোনমি—সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য এই সুবিধা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ফ্লাইট চলাকালে নামাজের প্রয়োজন হলে যাত্রীরা কর্তব্যরত কেবিন ক্রুদের কাছে অনুরোধ করলেই দ্রুত এই জায়নামাজ সরবরাহ করা হবে।
এমিরেটস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, যাত্রীদের সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে জায়নামাজটির মান ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ইসলামিক ইনফরমেশন

আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।
এমিরেটস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বহরের প্রতিটি ফ্লাইটে এখন থেকে এই বিশেষ পকেট জায়নামাজ পাওয়া যাবে। ফার্স্ট ক্লাস, বিজনেস ক্লাস কিংবা ইকোনমি—সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য এই সুবিধা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ফ্লাইট চলাকালে নামাজের প্রয়োজন হলে যাত্রীরা কর্তব্যরত কেবিন ক্রুদের কাছে অনুরোধ করলেই দ্রুত এই জায়নামাজ সরবরাহ করা হবে।
এমিরেটস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, যাত্রীদের সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে জায়নামাজটির মান ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ইসলামিক ইনফরমেশন

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন
২৬ নভেম্বর ২০২৫
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।
কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।
শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।
তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।
কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।
শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।
তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন
২৬ নভেম্বর ২০২৫
আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৮ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০১ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৪০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৮ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০১ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৪০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন
২৬ নভেম্বর ২০২৫
আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।
১ ঘণ্টা আগে
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৭ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৮ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০০ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৭ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৭ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৮ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০০ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৭ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মানবেতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ইসলামি স্বর্ণযুগ। বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ থেকে শুরু করে একাডেমিক গবেষণা—সব ক্ষেত্রেই তখন অসাধারণ অগ্রগতি ঘটেছিল। অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল শিল্প, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানচর্চার দুর্লভ বিকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন জ্ঞান সংরক্ষণ, চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে তখন
২৬ নভেম্বর ২০২৫
আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।
১ ঘণ্টা আগে
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে