Ajker Patrika

নামাজ যে ৬ পুরস্কার বয়ে আনে

আব্দুল্লাহ আলমামুন আশরাফী
নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। ছবি: সংগৃহীত
নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। ছবি: সংগৃহীত

ইমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপনের অব্যর্থ উপায় এটি। নামাজ জীবন সাজিয়ে তোলে। যাপিত জীবনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। কোরআন-হাদিসে নামাজ আদায়কারীর জন্য অনেক পুরস্কারের ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকে নির্বাচিত ৬টি পুরস্কারের গল্প শুনুন।

১. সফলতার নিশ্চয়তা

সফলতা। মানবহৃদয়ের কাঙ্ক্ষিত অনুষঙ্গ। আমরা সবাই সফল হতে চাই। সফলতার সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে চাই। জীবনকে ফুলে ফলে সাজিয়ে তুলতে চাই। জীবন হোক কর্মের দীপ্তিতে সমুজ্জ্বল, সফলতার সৌরভে সুরভিত—এই কামনা প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। জীবনজুড়ে আমাদের অনিঃশেষ ছুটে চলাও সেই একই উদ্দেশ্যে—সফলতার স্নিগ্ধ ফল্গুধারার স্পর্শ পাওয়া। কাঙ্ক্ষিত পরম আরাধ্য সেই সফলতার দেখা মিলবে কীভাবে? কোন সে পথ যেখানে চললে সফলতার মানজিলে পৌঁছে যাওয়া সহজ হবে? সর্বোপরি দুনিয়ার জীবন হবে প্রশান্তিময় আর আখেরাতে মিলবে চূড়ান্ত সফলতা তথা জান্নাতের হৃদয়কাড়া অকল্পনীয় নেয়ামত?

আসুন মানবজাতির সফলতার মূলমন্ত্র কোরআন মাজীদের কাছ থেকে জেনে নেই সফলতা লাভের অব্যর্থ সেই পাথেয়র গল্প।

নামাজ। হ্যাঁ, মানবজীবনে সফলতার অনন্য পাথেয় এই নামাজ। নামাজ মানুষের জীবন সুন্দর করে। আলোকিত করে। যাপিত জীবনে মনোমুগ্ধকর সুরভি ছড়ায় এই নামাজ। নামাজ ব্যক্তিকে সফলতার কাঙ্ক্ষিত মানজিলে পৌঁছে দেয়। নামাজ সফল মোমিনের প্রধান গুণ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই সফলতা লাভ করেছে মুমিনগণ; যারা তাদের নামাজে আন্তরিকভাবে বিনীত।’ (সুরা মুমিনুন: ১-২)

এখানে সফল মোমিনের অনন্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে সালাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নামাজ মোমিনের জীবন সফল ও অর্থবহ করে তুলে।

২. পবিত্র জীবন লাভ

নামাজ ব্যক্তিকে পবিত্র জীবন বোধে উদ্দীপ্ত করে। আল্লাহর অবাধ্য ও নাফরমানির অন্ধকার থেকে পুণ্যের আলোকময় রাজপথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায়। যথার্থভাবে নামাজ আদায়ে অভ্যস্ত ব্যক্তির মনন ও মানসে অনির্বচনীয় সুখানুভূতি ও পবিত্র আমেজ বিরাজ করে। ফলে তার জন্য অন্যায় অশ্লীল গর্হিত কাজ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়ে যায়।

এভাবে নামাজ ব্যক্তিকে অশ্লীল ও গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ ব্যক্তিকে অশ্লীল ও পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)

৩. রহমতপ্রাপ্তি

আমরা সবাই আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। আল্লাহর রহমত পেতে চাতক পাখির মত সবাই অপেক্ষায় থাকি। আর এই রহমতপ্রাপ্তির অনন্য উপায় হচ্ছে একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করে যাওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কর। এতে তোমাদের ওপর রহমত বর্ষণ করা হবে।’ (সুরা নুর: ৫৬)

৪. পরিচ্ছন্নতার সৌরভ

নামাজ ব্যক্তির জীবনকে গুনাহ থেকে ধুয়ে মুছে পরিচ্ছন্ন করে তোলে। আর গুনাহমুক্ত স্বচ্ছ জীবন আমাদের সবারই পরম পাওয়া। এই আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায়ের বিকল্প নেই।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘তোমাদের কারও বাড়ির দরজার সামনে যদি একটি নদী থাকে, আর সে ওই নদীতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে তাহলে কি তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে?’ সবাই বলল ‘না, তার শরীরে কোনো প্রকার ময়লা থাকবে না।’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘এটিই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত। এর দ্বারা আল্লাহ তাআলা সকল পাপ মুছে নিঃশেষ করে দেন।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৪০৮)

৫. গোনাহমুক্ত নির্মল জীবন

শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায়। এটা প্রকৃতির সাধারণ নিয়ম। একজন মানুষ যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তার গোনাহগুলোও গাছের পাতার মতো ঝরে যায়।

হজরত আবু জর গিফারি (রা.) বলেন, শীতকালে একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) বাইরে বের হলেন। আমি তার সঙ্গেই ছিলাম। গাছ থেকে তখন পাতা ঝরছিল। নবীজি (সা.) গাছের দুটো ডাল হাত দিয়ে ধরলে সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবেই পাতা ঝরতে থাকে। তখন তিনি আমাকে ডাক দিয়ে বলেন, ‘আবু জর, একজন মুসলমান যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তখন এই গাছের পাতাগুলোর মতো তার পাপগুলোও ঝরে যায়। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৫৬)

ছয়. জান্নাত লাভের প্রতিশ্রুতি

আমরা সবাই জান্নাতে যেতে চাই। জান্নাতের মনোমুগ্ধকর নহরের পাশে বসে গল্পে গল্পে কেটে যাবে বেলা, আনন্দের উচ্ছলতায় মেতে উঠব আমরা—আমাদের সবার হৃদয় কোণে এ স্বপ্ন দোলা দিয়ে যায় প্রায়শই। কল্প পাখায় ভর করে যেন উড়তে থাকি জান্নাতের সবুজ প্রান্তরে। মানব হৃদয়ের পরম আরাধ্য এই জান্নাতের দেখা মিলবে কীভাবে? জান্নাতের অকল্পনীয় সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে মেতে উঠতে আমাদের করণীয় কী?

আপনি নামাজে নিয়মিত হোন। একাগ্রচিত্তে ধীরস্থিরভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন। আপনার রব আপনাকে আপনার পরম আকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে পৌঁছে দেবেন।

হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বান্দার ওপর আল্লাহ যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আবশ্যক করে দিয়েছেন যে ব্যক্তি তা গুরুত্বপূর্ণ সহকারে আদায় করবে কোনোরূপ অবহেলা ছাড়া, আল্লাহ সে ব্যক্তির জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪২০)

এভাবে নামাজ ব্যক্তির জীবনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তুলে, জীবনে রহমতের ফল্গুধারা বয়ে আনে এবং জীবনের চূড়ান্ত সফলতা জান্নাতের নয়নাভিরাম উদ্যানে পৌঁছে দেয়।

তাই আসুন আমরা আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মনোযোগী হই। জীবন সফল ও সুরভিত করে তুলি। পবিত্র জীবনবোধে উদ্দীপ্ত হই। আলোকিত জীবন গড়ে পরকালের নাজাত লাভ করি। জান্নাতের পথে এগিয়ে যাই।

লেখক: মুহাদ্দিস ও খতিব

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ৫০০ কোরআনের হাফেজকে রাজকীয় সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্‌যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।

আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।

তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।

রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।

অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।

সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাবলিগ জামাতের খুরুজের জোড় শুরু ২ জানুয়ারি

ইসলাম ডেস্ক 
তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নেজামের জোড় ইজতেমা। ছবি: সংগৃহীত
তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নেজামের জোড় ইজতেমা। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২, ৩ ও ৪ জানুয়ারি তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) ব্যবস্থাপনায় খুরুজের জোড় অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে প্রয়োজনীয় মাঠ প্রস্তুতির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, এই জোড়ে তাঁরাই অংশগ্রহণ করবেন, যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় এক চিল্লা, তিন চিল্লা ও বিদেশ সফরের উদ্দেশ্যে বের হবেন এবং যাঁরা মেহনতের মাধ্যমে সাথিদের এই কাজে উদ্বুদ্ধ করে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।

একটি মহল শুরায়ি নেজামের এই খুরুজের জোড়কে বিশ্ব ইজতেমা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করে হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, এটি কোনো ইজতেমা নয়; বরং সীমিত পরিসরে খুরুজের প্রস্তুতিমূলক জোড়।

এদিকে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী টঙ্গীতে ৫৯তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের পর তা আয়োজন করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ি নেজাম) গত ৩ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি দেশবাসীকে অবহিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আকাশপথে মুসলিম যাত্রীদের জন্য এমিরেটসের বিশেষ ব্যবস্থা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।

এমিরেটস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বহরের প্রতিটি ফ্লাইটে এখন থেকে এই বিশেষ পকেট জায়নামাজ পাওয়া যাবে। ফার্স্ট ক্লাস, বিজনেস ক্লাস কিংবা ইকোনমি—সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য এই সুবিধা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ফ্লাইট চলাকালে নামাজের প্রয়োজন হলে যাত্রীরা কর্তব্যরত কেবিন ক্রুদের কাছে অনুরোধ করলেই দ্রুত এই জায়নামাজ সরবরাহ করা হবে।

এমিরেটস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, যাত্রীদের সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে জায়নামাজটির মান ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: ইসলামিক ইনফরমেশন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের টুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৯
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?

ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।

কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।

শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।

তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত