Ajker Patrika

জামাতে নামাজ আদায়ের ৪ উপকারিতা

ইসলাম ডেস্ক 
জামাতে নামাজ আদায়ের ৪ উপকারিতা

প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর দৈনন্দিন নির্ধারিত সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। এটি ইসলামের অবশ্য পালনীয় বিধানের একটি। পুরোপুরি ‘বেহুঁশ’ হওয়ার আগ পর্যন্ত মুসলমানের ওপর এই আবশ্যকতা বহাল থাকে। দাঁড়িয়ে না পারলে বসে, বসে না পারলে শুয়ে; ইশারা-ইঙ্গিতে তাকে নামাজ সম্পন্ন করতে হবে। তবে কোনো অক্ষমতা বা প্রতিবন্ধকতা না থাকলে নির্ধারিত সময়ে ইমামের পেছনে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার প্রতি বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত আদায় করো এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা: ৪৩)। আয়াতের শেষাংশে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এ ছাড়া আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দিই, অতঃপর নামাজ আদায়ের আদেশ দিই, তারপর নামাজের আজান দেওয়া হলে এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামতি করার নির্দেশ দিই। অতঃপর আমি (ওই) লোকদের নিকট যাই এবং তাদের (যারা নামাজে শামিল হয়নি) ঘর জ্বালিয়ে দিই...।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৫১)

ওসামা ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে অনুরূপ আরেকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘লোকজনকে অবশ্যই জামাত ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, অন্যথায় আমি তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেব।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৭৯৫)

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘লোকেরা যদি জানত, আজান দেওয়া ও নামাজের প্রথম সারিতে দাঁড়ানোর কী মাহাত্ম্য আছে, অতঃপর (তাতে অংশগ্রহণের জন্য) যদি লটারি ছাড়া অন্য কোনো উপায় না পেত, তবে তারা অবশ্যই সে ক্ষেত্রে লটারির সাহায্য নিত।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬১৫)

নামাজ একদিকে মুমিনের দেহ-মনে প্রশান্তি ও পবিত্রতার পরশ বুলিয়ে চোখের শীতলতা এনে দেয়, অন্যায়-অশ্লীলতা থেকে বিরত রেখে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন ও সুশৃঙ্খল জীবনের বার্তা দেয় এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জান্নাতুল ফেরদৌস প্রাপ্তির সুসংবাদ শোনায় ইত্যাদি। অন্যদিকে নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় ব্যক্তিকে পার্থিব-পরকালে অফুরন্ত নেয়ামত ও কল্যাণের অংশীদার বানায়। নিম্নে এ সম্পর্কে কয়েকটি বর্ণনা তুলে ধরা হলো—

১. মর্যাদা বৃদ্ধি ও গুনাহ মাফের সুযোগ:

মহান আল্লাহ নামাজের মধ্যে বান্দার জন্য অতীত গুনাহ মাফ, সওয়াব অর্জন ও মর্যাদা বৃদ্ধির অবারিত সুযোগ রেখে দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন বস্তুর সন্ধান দেব না, যা দ্বারা আল্লাহ তাআলা গুনাহসমূহ ক্ষমা এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন? তা হলো-কষ্টকর অবস্থায়ও পূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদের দিকে অধিক পদচারণা এবং এক নামাজের পর অন্য নামাজের অপেক্ষা করা। এটাই ‘রিবাত’ (এতে ইসলামি রাষ্ট্রের সীমানা পাহারা দেওয়ার ন্যায় সওয়াব রয়েছে।) এ কথা (তিনি) তিন বার বলেন।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৫১)

২. পঁচিশ থেকে সাতাশ গুণ সওয়াব বেশি:

আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে যে কয়েকটি বিষয়ে অন্যান্য জাতির ওপর এই উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম—‘পৃথিবীর সমস্ত পবিত্র জমিন এই উম্মতের জন্য মসজিদতুল্য করেছেন।’ অর্থাৎ মুসলমান কোনো পবিত্র স্থানে নামাজ আদায় করলে বাহ্যত তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

তবে নিজ বাড়ি, দোকান অথবা অন্য কোথাও একাকী নামাজের তুলনায় ইমামের সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায়কারীর জন্য অধিক সওয়াবের ঘোষণা এসেছে।

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘একাকী নামাজ আদায়ের চেয়ে ইমামের সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত পঁচিশ গুণ বেশি।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬৪৬)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত একাকী নামাজ অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশি।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৫০)

৩. আরশের ছায়ায় আশ্রয়ের সুযোগ:

সাধারণত মসজিদে ইমামের পেছনে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের কারণে মসজিদের সঙ্গে ব্যক্তির আলাদা একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে, এক নামাজ শেষে পরবর্তী আজান-নামাজের অপেক্ষায় থাকে; আজান হলে শত ব্যস্ততা ফেলে কালবিলম্ব না করে মসজিদে এসে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে।

এমন ব্যক্তি সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে দিন আল্লাহর (আরশদের) ছায়া ব্যতীত কোনো ছায়া থাকবে না, সে দিন আল্লাহ তাআলা সাত শ্রেণির মানুষকে সেই ছায়ায় আশ্রয় দেবেন।...ওই ব্যক্তি যার অন্তরের সম্পর্ক সর্বদা মসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে...।’ (সহিহ্ বুখারি: ১৪২৩)

৪. নেফাকি ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির নিশ্চয়তা:

কোনো মুসলমানের জন্য শোভনীয় নয়-সে শয়তানের অনুসরণ ও জাহান্নামের পথে হাঁটবে এবং কথা-বার্তা ও আচার-আচরণে দ্বিচারিতা প্রকাশ করবে। যথাসময়ে নামাজ আদায় ব্যক্তিকে নেফাকি (দ্বিচারিতা) ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়।

আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য চল্লিশ দিন জামাতের সঙ্গে তাকবিরে উলাসহ (তাকবিরে উলা বলা হয়-ইমাম যখন তাকবির দেন, তখন সেও তাকবির দিয়ে তার সঙ্গে নামাজ শুরু করে।) নামাজ আদায় করবে, তার জন্য দুটি মুক্তির নিশ্চয়তা লেখা হয়; একটি হলো জাহান্নাম থেকে আর অন্যটি নেফাকি থেকে মুক্তি।’ (জামে তিরমিজি: ২৪১)

এ ছাড়া সামাজিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে জামাতে নামাজ আদায়ের ভূমিকা অপরিসীম। নিয়মিত নামাজিদের দৈনিক পাঁচবার দেখা-সাক্ষাৎ ও খোঁজ-খবর নেওয়ার সুযোগ হয়। পারস্পরিক একতা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে ওঠে এবং সাম্য ও বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়।

প্রবল ঝড় ও মুষলধারে বৃষ্টি হলে, প্রচণ্ড ঠান্ডা; বের হলে অসুস্থ হওয়া বা রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে, রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকলে, সম্পদ নষ্ট হওয়া বা গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে জামাতে শরিক না হয়ে একাকী নামাজ আদায়ের অবকাশ রয়েছে। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় জামাত ত্যাগ করা মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়।

লেখক: ইকরামুল ইসলাম, ইমাম ও খতিব, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ জামে মসজিদ ঝিনাইদহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৭ মিনিট
ফজর০৫: ০৮ মিনিট০৬: ২৮ মিনিট
জোহর১১: ৫১ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১১ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৩ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৫: ০৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে আত্মীয়তার বন্ধন দৃঢ় করার উপায়

আবদুল্লাহ নুর
আত্মীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা। ছবি: সংগৃহীত
আত্মীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা। ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল আল্লাহর নেয়ামতের ঋতু। ফলমূল ও শস্যে পরিপূর্ণ হয় শহর-গ্রাম। রসে রসে টইটম্বুর হয় খেজুরগাছে ঝুলে থাকা কলসি। প্রকৃতিতে আসে নতুন সাজ। শীতকাল মানুষের সামাজিক জীবনেও অনেক ভূমিকা রাখে। আত্মীয়তার সম্পর্ক করে দৃঢ়। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। হাদিসে এসেছে, হজরত জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) বলেন, ‘আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৮৪)

পৌষ ও মাঘ মাসের তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে যায় মানুষ। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে যায় চারদিক। ধনাঢ্য ও বিত্তবানেরা আবৃত হয় শীতের দামি পোশাকে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন শ্রেণির মানুষ হয়ে পড়ে অসহায়। এই শীতে ধনাঢ্য লোকদের উচিত মধ্য ও নিম্নবিত্ত আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া। সামর্থ্য অনুযায়ী পরিধেয় পোশাক উপহার দেওয়া। কেননা, উপহারের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘পরস্পর হাদিয়া দাও, মহব্বত বাড়বে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪)

অন্য আরও এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অন্য মুসলিমকে পোশাক পরিধান করায়, তখন দানকারী আল্লাহর হেফাজতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত দান গ্রহণকারী সে পোশাকের টুকরাবিশেষও ব্যবহার করতে থাকে। অর্থাৎ কাপড়টি পরিত্যক্ত হওয়া পর্যন্ত দানকারীকে আল্লাহ তাআলা বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করেন।’ (জামে তিরমিজি: ২৪৮৪)

শীতকাল আল্লাহর নেয়ামতে পরিপূর্ণ থাকে। গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস নামান। ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠাপুলির উৎসব। পিঠাপুলির আনন্দ আত্মীয়স্বজনের মাঝেও ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। শীতকালীন পিঠা, খেজুরের রস ও গুড় একে অপরকে হাদিয়া দেওয়া। মধ্য ও নিম্ন শ্রেণির আত্মীয়কে দাওয়াত দেওয়া। কেননা, হাদিয়া দ্বারা পারস্পরিক দূরত্ব কমে যায়। তৈরি হয় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আত্মীয়স্বজনকে খাদ্যদানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি। অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কী? তা হচ্ছে, দাসমুক্তি অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে এতিম আত্মীয়কে অথবা ধূলি-ধূসরিত মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো।’ (সুরা বালাদ: ১০-১৬)

আর হাদিসে অসহায় আত্মীয়স্বজন বা ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো সর্বোত্তম কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করেন—‘ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ?’ মহানবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো।’ (সহিহ্ বুখারি: ১২, সহিহ্ মুসলিম: ৩৯)

লেখক: ইমাম ও খতিব, ভবানীপুর জামে মসজিদ, ২ নম্বর ওয়ার্ড, গাজীপুর সিটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমাজকে পবিত্র রাখতে বিবাহের গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৩
সমাজকে পবিত্র রাখতে বিবাহের গুরুত্ব

বিবাহ মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা শুধু পারিবারিক বন্ধন নয়—ধর্মীয়, সামাজিক এবং নৈতিক দায়িত্বও বটে। ইসলামে বিবাহ পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের বৈধ উপায় হওয়ার পাশাপাশি, এটি এক বরকতময় ইবাদতও। মহানবী (সা.) বলেন, ‘বিবাহ আমার সুন্নত। অতএব যে আমার সুন্নত পালন থেকে বিরত থাকবে, সে আমার অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

কিন্তু আধুনিক সমাজে নানা ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক জটিলতার কারণে অনেকেই সময়মতো বিবাহে বাধা পাচ্ছেন। এতে করে সমাজে বেড়ে চলেছে অনৈতিকতা, চারিত্রিক অবক্ষয় এবং পারিবারিক শৃঙ্খলার ভাঙন। সমাজে বাড়ছে যৌন অপরাধ। ছেলেমেয়েরা অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনসহ বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে। সন্তানদের পাপাচার থেকে বাঁচাতে এবং অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে বিবাহের গুরুত্ব অপরিসীম।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ করিয়ে দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর: ৩২)। বিবাহ বরকতময় ইবাদত। বিবাহের পরের সময়ের রিজিকের ভয়ে তা থেকে বিরত থাকা অনুচিত। এই আয়াত সে কথাই প্রমাণ করে।

অবশ্য, যাদের বিবাহ করার সামর্থ্যই নেই এবং অসচ্ছল দিনাতিপাত করছে, তাদের করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যতক্ষণ না তাদের সামর্থ্য দান করেন, ততক্ষণ তারা সংযম অবলম্বন করবে এবং নিজ চরিত্র রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে।’ (সুরা নুর: ৩৩)

বিবাহকে সহজ ও সম্মানজনকভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম যেখানে বিবাকে ইবাদত এবং চারিত্রিক সংরক্ষণের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছে, সেখানে আমাদের দায়িত্ব—বিবাহের প্রকৃত তাৎপর্য ও গুরুত্বকে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া। তরুণদের পবিত্র সম্পর্কের দিকে উৎসাহিত করতে হলে অভিভাবক, সমাজ এবং ধর্মীয় নেতৃত্বের সমন্বয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই আমরা গড়তে পারব একটি সুস্থ, পরিশুদ্ধ ও নৈতিক সমাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৭ মিনিট
ফজর০৫: ০৮ মিনিট০৬: ২৭ মিনিট
জোহর১১: ৫১ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১০ মিনিট
মাগরিব০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৫: ০৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত