Ajker Patrika

মুসলিম নারীর অধিকার ভাবনা

ড. মুহাম্মাদ আকরাম নদভি
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৭: ০৯
মুসলিম নারীর অধিকার ভাবনা

বিশ্বকোষ রচনার প্রেক্ষাপট
১৯৯৪ কিংবা ৯৫ সালের কথা। যুক্তরাজ্যের কয়েকটি সংবাদপত্রে মুসলিম নারী নিয়ে কিছু নেতিবাচক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাতে মুসলিম বিশ্বে নারীদের পশ্চাৎপদ ও শোচনীয় অবস্থার জন্য ইসলামকেই দোষারোপ করা হয়। সত্যি কথা হলো, বর্তমান মুসলিম সমাজে আসলেই নারীদের সম্মানের চোখে দেখা হয় না। তাদের কোনো অনুষ্ঠানে যেতে দেওয়া হয় না; গেলেও কোনো গয়না নিয়ে যেতে দেওয়া হয় না। জোর-জবরদস্তি ও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার এমন মানসিকতা মানুষের প্রতি অশ্রদ্ধারই নামান্তর। নারীরা মানুষ; তাদের মন আছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে নির্দেশনা দেন; ভালো-মন্দ ব্যাখ্যা করেন। এর পর যার ইচ্ছা ভালোটা গ্রহণ করবে, আর যার ইচ্ছা মন্দটা গ্রহণ করবে। এই সুযোগ সব মানুষকেই দিয়েছেন। 

আল্লাহ পৃথিবীর সব মানুষকে সম্মানিত করেছেন। তিনিই আমাদের স্রষ্টা। অথচ আমরা সব সময় নারীদের বাধ্য করার পথ খুঁজি। আলেমদের মুখেও নারীর প্রতি অবমাননাকর ও বিদ্রূপাত্মক কথা শুনি; যা শুনে যে কেউ-ই রাগান্বিত হবেন। পুরুষদের নিয়ে অবমাননাকর কিছু বলা হলে তো তারা নিঃসন্দেহে রেগে যাবেন। মূলত আমরা নারীদের মানুষই মনে করি না। এমন মনোভাব ইসলাম সমর্থন না করলেও মুসলিম সমাজে দুঃখজনকভাবে প্রচলিত আছে। 

যা হোক, প্রবন্ধগুলো পড়ে আমি খুবই আহত হই। কেউ খামাখা ইসলামকে দোষারোপ করুক, তা আমরা চাই না। তখন আমার মাথায় একটা চিন্তা এল। দীর্ঘদিনের হাদিস গবেষণার সূত্রে জ্ঞানচর্চায় বিখ্যাত অনেক মুসলিম নারী স্কলারের কথা আমার জানা ছিল। ভাবলাম, তাঁদের জীবনী এক মলাটে তুলে ধরলে একটা মোক্ষম জবাব হবে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বইটি মুসলিম নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় প্রেরণা হবে। তা ছাড়া আলেমদের আমাদের হারানো অতীত স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চিন্তাও ছিল। এসব কারণেই আমি প্রকল্পটি হাতে নিই। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পৃষ্ঠপোষকতা করেনি। পুরো কাজটি একান্তই আমার আগ্রহের জায়গা থেকে করা। অক্সফোর্ডে আমি অন্য কাজ করতাম, পাশাপাশি এ কাজটিও স্বল্প পরিসরে শুরু করি। এর পর আরও তথ্য আমার কাছে আসতে থাকে। আমি সিরিয়া, মিসর ও অন্যান্য দেশ ভ্রমণ করে পুরোনো পাণ্ডুলিপি থেকে অনেক তথ্য সংগ্রহ করি। অবিশ্বাস্যভাবে অনেক বেশি তথ্য হাতে আসে। বইয়ের ভলিউম শুধুই বাড়ছিল। 

মনে আছে, ৫ হাজার নারী স্কলারের তথ্য সংগ্রহ করার পর আমার এক খ্রিষ্টান প্রাচ্যবিদ সহকর্মী এসে বলেন, ‘আপনি তো ৫ হাজারের তথ্য সংগ্রহ করলেন। আপনাকে এক বিখ্যাত প্রাচ্যবিদের কিছু কলাম দিচ্ছি।’ তিনি তা আমাকে সরবরাহ করেন। তাতে লেখক দাবি করেন, মুসলমানরা যদি পাঁচজন শিক্ষিত নারীর নাম পেশ করতে পারে, তবে তিনি স্বীকার করবেন যে, ইসলাম নারীর অধিকার দেয়। লেখাটি হাতে আসার পর আমার সংগ্রহ বাড়তে বাড়তে ৫ হাজার থেকে ৯ হাজার, তারপর ১০ হাজারে উন্নীত হয়। এর পর কাতারে আমাকে শাইখ ইউসুফ আল-কারজাবি কাজটি শেষ না হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন। তিনি পরামর্শ দেন, কাজে বিরতি দিয়ে যা হয়েছে, তা প্রকাশ করে দিতে। তাঁর অনুরোধে আমি কাজটি থামাই। বইটি বের হওয়ার পরও তাতে যুক্ত করার মতো আরও ২ হাজার নারীর তথ্য এখন আমার হাতে আছে। 

এ বিষয়ে স্বতন্ত্র বিশ্বকোষ রচনার কাজ এটিই প্রথম। আশা করি, এর পর অনেকেই এ কাজে এগিয়ে আসবেন। আমি ফারসি জানলেও ফারসি ভাষাসহ মধ্য এশিয়ার অন্যান্য ভাষা, উজবেক কিংবা তুর্কি সোর্স থেকে আমি তথ্য নিইনি। ফলে এ ক্ষেত্রে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। একজনের জানা ভাষা ও সোর্স থেকে যদি এত তথ্য পাওয়া যায়, তবে ভবিষ্যতে বিষয়টি আরও সমৃদ্ধ হবে। তাই আমি অনেক খুশি। 

৪৩ খণ্ডের এই বিশ্বকোষের ভূমিকা হিসেবে আরবি ও ইংরেজিতে একটি ভলিউম প্রকাশিত হয়। একবার আমি যুক্তরাষ্ট্রের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হই। সেখানে এক নারী শিক্ষার্থী তা নিয়ে আমার কাছে হাজির হন। তাঁর কপিটির প্রত্যেক পৃষ্ঠাতেই তিনি টীকা সংযোজন করেন। তিনি জানান, ‘সুদান, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ইসলাম ত্যাগ করা অনেক নারীই এ বই পড়ে ইসলামে ফিরে আসেন।’ 

সুতরাং আমি মনে করি, এ গবেষণা মানুষকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে সাহায্য করছে। আমি সম্প্রতি ওমরাহ থেকে ফিরেছি। সৌদি আরবে দেখলাম, অনেক নারী-পুরুষই আমার এ কাজের জন্য আপ্লুত। হৃদয়ের গভীর থেকে বলি, নারীদের, বিশেষভাবে মুসলিম নারীদের, আরও বিশেষভাবে ভারত উপমহাদেশের মুসলিম নারীদের জন্য আমি কাজ করতে চাই। কারণ, আমার শেকড় ভারতেই। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের মুসলিম নারীদের অবস্থা অধিক শোচনীয়—আমি জানি। 

ইসলামে নারীর অবদান
বিশ্বকোষটি রচনা করতে গিয়ে আমি দেখি, এ যুগের নারীদের তুলনায় আগের যুগের নারীদের অবস্থা আরও খারাপ ছিল। তবুও তাঁরা জ্ঞানচর্চায় পিছিয়ে পড়েননি। তাঁদেরও পারিবারিক জীবন ছিল। তাঁদের মধ্যেও ধনী-দরিদ্র ছিলেন। কারও বাচ্চা ছিল, পারিবারিক কলহ ছিল; কেউ আবার ডিভোর্সি ছিলেন। তাঁরা কোনো অভিযোগ না করে সবকিছু সামলে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান। ইসলামের গণ্ডির মধ্যে থেকে সময়ের সদ্ব্যবহার করেন। সততার সঙ্গে ইসলামকে জানতে চান এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই জ্ঞান অর্জন করেন। তাই তো পুরুষদের বিরুদ্ধে হাদিস জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও নারী হাদিস বর্ণনাকারীদের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ নেই। 

ইসলামে নারীরা বিস্ময়কর অবদান রাখেন। ইসলামি জ্ঞানচর্চার এক চতুর্থাংশেই নারীর একচেটিয়া আধিপত্য। বাকি তিন ভাগে রয়েছে নারী-পুরুষের সমান অবদান। ইসলামি জ্ঞানের বিখ্যাত গ্রন্থগুলোতে নারীদের বর্ণিত হাদিসের ভিত্তিতেই অনেক বিধান প্রণীত হয়। নারী হওয়ার কারণে মুহাদ্দিসরা কখনো তাঁদের হাদিস বাদ দেননি; বরং সাদরে গ্রহণ করেন। কেবল নারীদের বর্ণিত হাদিসের ওপর ভিত্তি করেই অনেক বিধান প্রণীত হয়। তাই নারী আমাদের ধর্মেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মের সূচনাকালে নারীদের এমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহসহ হাদিসের অসংখ্য গ্রন্থে তাঁদের অবদান অবিস্মরণীয়। এসব গ্রন্থের রচয়িতারা নারীদের কাছে শুধু জ্ঞান আহরণই করেননি; বরং তাঁদের সনদ বর্ণনা সর্বাধিক বিশুদ্ধ বলেও প্রমাণিত। 

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পবিত্র কোরআনের পর বিশুদ্ধতম গ্রন্থ সহিহ বুখারির বিশুদ্ধতম কপিটি এক নারীর সম্পাদিত—কারিমা বিনতে আহমাদ ইবনে মুহাম্মদ আল-মারওয়াজি (মৃত ৪৬৩ বা ৪৬৪ হি.)। অথবা উম্মুল খাইর ফাতিমা বিনতে ইবরাহিম (মৃত.৭১১ হি.)-এর কথাই ধরুন। তিনি সহিহ বুখারির শিক্ষক ছিলেন। বুখারির সর্বোৎকৃষ্ট সনদ তাঁর ছিল। অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি তাঁর কাছে শিখতেন। সিরিয়া থেকে হজে এসে তিনি মদিনায় জিয়ারতে আসেন এবং মসজিদে নববীতে হাদিস পাঠদান করেন। এমন আরও দু-তিনজন নারী স্কলার আছেন। সেকালের মুসলিম সমাজে যদি নারীর সম্মান না-ই থাকত, তাহলে কীভাবে তারা একজন নারীকে মহানবী (সা.)-এর পবিত্র রওজার পাদদেশে বসার অনুমতি দিয়েছিলেন? একইভাবে তিন নারী স্কলার পবিত্র কাবাঘরের পাদদেশে হাতিম-এ পাঠদান করেছিলেন। 

তাই আমি বলি, নীতিমান হলে অবশ্যই আপনাকে নারীর সম্মান দিতে হবে। ইসলামে তাদের অবদান স্বীকার করতে হবে; কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে। এসব নারী স্কলারের জ্ঞানচর্চা ও শিক্ষাদানের কারণেই অনেক হাদিসগ্রন্থ আজ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। তাঁদের কারণেই অনেক হাদিসগ্রন্থ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাবরানি প্রণীত বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ মুজাম আল-কাবির তাঁর ছাত্রী ফাতিমা আল-জুজদানিয়া (মৃত ৫২৪ হি.)-এর সূত্রে বর্ণিত। এই ফাতিমার ছাত্ররাই স্পেন থেকে এসে মিসরে হাদিসশাস্ত্র পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। 

আরেক বিখ্যাত নারী স্কলারের নাম ফাতিমা আল-সামারকান্দি। তিনি তাঁর বাবা মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ আল-সামারকান্দি রচিত তুহফাত আল-ফুকাহা পুরো মুখস্থ করেন। আল-কাসানি নামে তাঁর এক ছাত্র ছিলেন। শিক্ষকের কন্যা ফাতিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি তা নাকচ করে দেন। কারণ তিনি জানতেন, তাঁর মেয়ে তাঁর ছাত্রের তুলনায় বেশি জ্ঞানী। তবে পরে তাঁর গ্রন্থের একটি ব্যাখ্যা লিখে দেওয়ার শর্তে রাজি হন। আল-কাসানি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং বাদায়ে আল-সানায়ে নামের অনবদ্য এক ব্যাখ্যা-গ্রন্থ লিখে দেন, যা এখন পর্যন্ত হানাফি ফিকহের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। চিন্তা করে দেখুন, হানাফি মাজহাবের একটি সেরা গ্রন্থ একজন নারীকে পেতে লেখা হয়েছিল! 

মুসলিম নারী স্কলারদের নিয়ে তিনি রচনা করেন ৪৩ খণ্ডের বিশ্বকোষ আল-ওয়াফা বি-আসমা আন-নিসা

ইসলামে নারীর অধিকার
মহানবী (সা.) কখনোই নারী-পুরুষের শিক্ষাগ্রহণ, শিক্ষাদান ও যুদ্ধে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বৈষম্য করেননি। নারীদের জন্য যুদ্ধ বাধ্যতামূলক না করলেও যেতে চাইলে তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। তেমনি জুমার নামাজ তাদের জন্য আবশ্যক করা না হলেও অংশ নিলে অবশ্যই পুরস্কৃত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নারীদের মসজিদে আসতে বাধা দিয়ো না।’ 

আপনি দেখবেন, নারী সাহাবিরা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন, তলোয়ার হাতে লড়াই করছেন এবং মহানবী (সা.) নিজেই তাঁদের উৎসাহ দিচ্ছেন। ইয়ারমুকের যুদ্ধে ৩৫ জন নারী অংশ নেন। আপনিই বলুন, নারীরা যুদ্ধ করতে নামলে কি নারী হওয়ার কারণে শত্রুপক্ষ তাদের ছাড় দেবে? কখনোই না, আঘাত করার সুযোগ মোটেও হাতছাড়া করবে না। তো মুসলিম নারী যদি রণাঙ্গনে শত্রুর বিরুদ্ধ লড়াই করার অনুমতি পায়, তাহলে আর কোন জায়গাটি তাদের জন্য অনুপযুক্ত থাকে? আয়েশা (রা.)-কেই দেখুন! পুরো একটি সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভাষণ দিয়েছেন এবং হাজারো মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো বিতরণ করেছেন। হজ-ওমরাহর তাওয়াফেই নারী-পুরুষের কত ভিড় দেখুন! এমন ভিড় পৃথিবীর কোথাও দেখবেন না। যে ধর্মে তাওয়াফের মতো ভিড়ের স্থানে যাওয়ার অনুমতি আছে, সেখানে আর কোথায় যেতে বাধা থাকতে পারে? 

নারীদের এগিয়ে যেতে হবে। জ্ঞানচর্চায় ব্রতী হতে হবে। ভারতীয়রা নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে। আমি বলি, আসল ক্ষমতায়ন হলো জ্ঞান-বিজ্ঞান। মানুষকে শেখানো এবং শিক্ষিত জাতি তৈরি করাই আসল উন্নয়ন। আমি নারীদের বলি, আপনি বিদ্যার্জন অব্যাহত রাখলে পুরুষও আপনার কাছে শিখতে আসবে। সুতরাং যুক্তিতর্ক করার দরকার নেই। 

আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, নারীরা ইসলামের বেশি খেদমত করতে পারে। কারণ তাদের প্রতারণার মনোভাব কম; আন্তরিকতা বেশি। ক্ষমতালিপ্সু নয় তারা। মুম্বাইয়ে আমার এক ছাত্রী তাফসির পড়ান। কিছু আলেম তাঁকে বলেন যে, ‘নারীরা পুরুষদের পড়াতে পারে না।’ আমি তাঁকে বলি, ‘কিছুই বলার দরকার নেই। নারীরা হাদিস শেখাতে না পারলে আমাদের কী হবে? এত মানুষ কীভাবে বিদ্যার্জন করবে। আমাদের বেশির ভাগ শিক্ষকই তো আমাদের মাহরাম নন। সুতরাং কাজ করে যান। সত্য একদিন ছড়িয়ে পড়বে ইনশাআল্লাহ। আমি নারীদের পড়াই বলে অনেকেই এক সময় আমার সমালোচনা করতেন। এখন দেখি তাঁরাও নারীদের পড়ান।’ 

মুসলিম নারীদের পিছিয়ে পড়ার কারণ
মুসলিম বিশ্ব সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে। শুধু নারীর ক্ষেত্রেই নয়, আজকাল পুরুষদেরও চরম অধঃপতন ঘটেছে। মুসলিমরা শিক্ষাকে মাদ্রাসার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ করে ফেলে। অতীতে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য পড়াশোনার সুযোগ থাকলেও বর্তমানে অধিকাংশ মাদ্রাসা পুরুষদের জন্য বরাদ্দ। বিশেষ করে উপমহাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে এবং মুসলিম কারিকুলামে গ্রিক দর্শনে বেশ জোর দেওয়া হয়। কারণ, গ্রিক দার্শনিকদের মধ্যে অ্যারিস্টটল থেকে শুরু করে প্রায় সবাই নারী অবমাননা করতে অভ্যস্ত ছিলেন। এ কারণেই কোনো নারী গ্রিক দার্শনিক আপনি খুঁজে পাবেন না। তাঁরা মনে করতেন, নারী বুদ্ধিমত্তায় নীচ। অ্যারিস্টটলকে আমি সম্মান করি, তবে তিনিই বলেন যে, ‘বুদ্ধিমত্তায় নারীদের নীচ হওয়ার একটি প্রমাণ হলো পুরুষের তুলনায় তাদের দাঁত কম।’ এত বড় দার্শনিক এমন বক্তব্য দিচ্ছেন, ভাবতেই অবাক লাগে! 

মুসলিম বিশ্বের গ্রিক দর্শন প্রভাবিত কোনো মানুষই নারীদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয় না। এ কারণেই আমার বিশ্বকোষে সব ঘরানার নারী স্কলার থাকলেও দার্শনিক পরিবার থেকে আসা কোনো নারী স্কলার নেই। এমনকি ইমাম গাজ্জালির মতো বিখ্যাত দার্শনিক আলিমও রাজা-বাদশাহদের উপদেশ দেন যে—নারীর সঙ্গে পরামর্শ করবেন না; করলেও তাদের মতের বিপরীত কাজ করুন। তিনি আরও বলেন যে—নারীর কারণেই পৃথিবীর সব মন্দ কাজ সংঘটিত হয়। মাদ্রাসাগুলোতে এখনো ইমাম গাজ্জালির বিরাট প্রভাব আছে। আমি নিজেও মাদ্রাসার ছাত্র। আমি সারা জীবন মাদ্রাসায় পড়েছি; তাঁদের শ্রদ্ধা করি এবং তাঁদের নিয়ে লিখি। তারপরও আমি বলব, এমন মানসিকতা তাঁদের মধ্যে আছেই; সেখান থেকে তাঁরা বেরোতে পারছে না। মাদ্রাসাগুলোর পরিবর্তনে সময় লাগবে। আমি তাঁদের সঙ্গে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে চাই না; আমি মানুষকে শেখাতে চাই। পরিবর্তন ধীরে ধীরেই হয়। ইনশা আল্লাহ একদিন পরিবর্তন আসবেই। 

ঘরবন্দী করে রাখার যুক্তির অসারতা
অবশ্য নারীবাদকে তাদের জন্য সহায়ক মনে করি না আমি। এটি আরেক চরমপন্থা। নারীবাদের সমালোচনা করে আমি আরেকটি বই লিখেছি; শিগগিরই তা প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ। তবে নারীবাদের একটি ভালো দিক আছে—এটি নারীর জন্য সুবিচারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই পয়েন্টে আমরা একমত। নারীদের প্রতি সুবিচার করা উচিত। তবে নারীবাদের সমাধান ভালো নয়; সেটি তাদের জন্য ক্ষতিকর। 

আয়েশা (রা.)-এর যুগে একটি হাদিস প্রচলিত ছিল—নামাজরত কোনো পুরুষের সামনে দিয়ে কোনো নারী হেঁটে গেলে নামাজ নষ্ট হবে। কুফার বিখ্যাত আলিম ও ফকিহ আসওয়াত ইবনে ইয়াজিদ আয়েশাকে হাদিসটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি রেগে যান এবং বলেন, ‘হে কুফাবাসী, আমরা, নারীদের তোমরা গাধা ও বানরের সমান বানিয়ে ছেড়েছ! মহানবী (সা.) নামাজরত থাকতেন, আমি তাঁর সামনে থাকতাম, কই কিছুই তো হয়নি!’ এভাবে তিনি এই প্রচলিত ভুল শুধরে দেন। এ ঘটনা থেকে বুঝতে পারি, নারীরা মাঠে না থাকলে পুরুষেরা তাদের সম্পর্কে যা ইচ্ছা বলবে। প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না। 

অনেকেই নারীদের নিকাব পরা বাধ্যতামূলক বলে দাবি করেন। আমার মনে হয়, তাঁদের এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ইসলামের মূল শিক্ষার চেয়ে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাবই বেশি। তাঁরা যুক্তি দেন যে, আপনার হিরে-জহরত থাকলে তা বাড়ির অন্দরে লুকিয়ে রাখেন। নারীও হিরে-জহরতের মতোই। আমরাও এক সময় এই যুক্তি বিশ্বাস করতাম। তবে এখানে একটি মৌলিক ভুল আছে—হিরে-জহরতের মন নেই, জীবন নেই; তবে নারীর চিন্তাশীল মন-মনন আছে। তারা ভালো-মন্দ বোঝে। কোরআন আদম (আ.)-কে এ আদেশ দেয়নি যে, স্ত্রীকে ভালো-মন্দ শেখান। বরং উভয়কে সম্বোধন করেই সমানভাবে আদেশ করা হয়েছে। নারীরা ভালো-মন্দ বোঝে, তাদের সঙ্গে পাথরের মতো আচরণ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। 

নারীদের সঙ্গে কথা বলার সময় মাথায় রাখতে হবে যে, তারাও সচেতন মানবসন্তান। আল্লাহ তাআলা এভাবেই তাদের সম্বোধন করেন। আমার যুক্তি হলো, নারীরা মূল্যবান হিরে-জহরত হওয়ার কারণে যদি তাদের অন্তপুরে লুকিয়ে রাখতে হয়, তাহলে পুরুষেরা তো নারীর চেয়েও মূল্যবান, তাদের তো বাক্সবন্দী করে রাখা দরকার! এই যুক্তি কি পুরুষসমাজ মেনে নেবে? মূলত কোরআন-হাদিসে এমন যুক্তির কোনো ভিত্তি নেই। এটি মানুষের মনগড়া ব্যাখ্যা। কোরআন নারীদের সঙ্গে কেমন মনোভাব পোষণ করে দেখুন। সাহাবিদের কর্মপন্থা দেখুন। ওমর (রা.) মদিনার নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই গনিমতের মাল বরাদ্দ করতেন। তিনি বাড়ি বাড়ি খবর পাঠাতেন—পুরুষেরা তাদের ভাগ নিয়ে যাক, নারীরা তাদের ভাগ নিয়ে যাক; কেউ কারও প্রতিনিধি হিসেবে আসার দরকার নেই। তিনি নিজ হাতেই তা নারীদের মধ্যে বণ্টন করতেন। কারও ভাই কিংবা স্বামী প্রতিনিধি হিসেবে এলে সেই নারীকে তিনি উপদেশ দিতেন—অন্য কাউকে তোমার টাকা নিতে পাঠানো সঠিক নয়। 

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর স্ত্রী একবার তাঁর কাছে একটি বিষয় জানতে চান। বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তিনি বলেন, ‘তুমি মহানবী (সা.)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো।’ তাঁর স্ত্রী বললেন, ‘না, তুমি গিয়ে জিজ্ঞেস করে এসো।’ তিনি অস্বীকৃতি জানান এবং তাঁকেই যেতে বলেন। তখন তিনি মহানবী (সা.)-এর কাছে গিয়ে বিষয়টি সরাসরি জিজ্ঞেস করেন। এ যুগের লোকজন বলবে, ‘না, না! মুফতির কাছে যেয়ো না; তোমার বদলে আমিই যাচ্ছি।’ 

নারীরা রাসুলের কাছে গিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করতেন; কারণ ইসলাম সকল মানুষের ধর্ম। আমাদের সমাজে যা প্রচলিত আছে, তা অস্বাভাবিক। ইসলামের স্বাভাবিক নির্দেশনা হলো, আপনি তাদের চিন্তাশীল মানুষ ভাবুন, তাদের মন-মননকে সম্মান করুন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের আল্লাহর ইবাদত করার সুযোগ করে দিন। এতে তারা পুরুষের চেয়ে বেশি ধার্মিক হবে। আল্লাহভীতি কখনোই জোর-জবরদস্তি করে আনা যায় না; মন থেকেই আসতে হয়। পাথর কিংবা দেয়াল তো ধার্মিক নয়। তারা তো মিথ্যা বলে না। ভালো-মন্দ পরখ করার সুযোগ দিলেই তো ধার্মিক হওয়ার সুযোগ আসে। নারীরা নিজেদের পথ বেছে নিক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি কি তাকে (ভালো-মন্দ) দুটি পথ দেখাইনি?’ (সুরা বালাদ, আয়াত: ১০) তাই যুক্তি যাদের পক্ষ থেকেই আসুক, পরখ করে দেখুন। ইসলাম মজবুত যুক্তিই গ্রহণ করে; দুর্বল-খোঁড়া যুক্তি নয়। 

ফিকহের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি
ইসলাম কোরআন-সুন্নাহর ওপরই প্রতিষ্ঠিত। ফিকহ কোরআন-সুন্নাহর একটি অংশ মাত্র। ফিকহের অধিকাংশ মাসায়েলই ইজতিহাদের ভিত্তিতে। এটি প্রথা ও সময়ের আলোকেই প্রণীত হয়। ফিকহি মতামত যুগের বিবর্তনে পরিবর্তিত হয়। মতামতগুলো মানুষেরই; একটি আরেকটির চেয়ে ভিন্নতর। একাধিক অর্থের সুযোগও থাকে অনেক ক্ষেত্রে। আমরা কোরআন-সুন্নাহর পরিবর্তন করতে বলছি না। তবে যুগের আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করছি। আর ব্যাখ্যা দিতে হলে আমাদের মহানবী (সা.)-এর যুগে ফিরতে হবে। মদিনার সমাজবাস্তবতায় তিনি নারীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন, তা দেখতে হবে। নারীদের মসজিদে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন—আমাদেরও তা-ই করতে হবে। নারীদের কৃষি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে উৎসাহ দিয়েছেন—আমাদেরও তা-ই করতে হবে। ওমর (রা.) শিফা বিনতে আবদুল্লাহ নামের এক নারীকে বাজার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এত পুরুষ সাহাবি থাকার পরও তিনি একজন নারীকেই দায়িত্ব দেন। অন্য এক নারী, সামারা বিনতে নাহিককে তিনি সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ বিষয়ক দায়িত্ব দেন। হাতে লাঠি নিয়ে তিনি মানুষের অপরাধের শাস্তি দিতেন। নারীরা তখন কত সক্রিয় ছিল ভাবুন! 

এই বিশ্বকোষটি লেখার পর আমি ইংল্যান্ডের লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই। সেখানে কয়েকজন আলেম আমাকে বলেন, ‘আপনার বইটি ইসলামকে পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।’ আমি বলি, ‘না, এটি পরিবর্তনকেই সরাতে যাচ্ছে। এটি মানুষকে মহানবী (সা.)-এর সমাজে নিয়ে যাচ্ছে।’ আমি আরও বলি, ‘আপনারা আলেম মানুষ। আমার তথ্য-উপাত্তে কোনো ধরনের ভুল থাকলে শুধরে দিন। আমি তা বই থেকে মুছে দেব।’ 

একবার আমি ইংল্যান্ডের এক মসজিদে বক্তৃতা দিই। তাতে নারীদের মসজিদে আসতে উৎসাহ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করি। ইমাম সাহেব এসে বলেন, ‘যা ইচ্ছা বলেন, তবে এমন কথা বলবেন না।’ আমি বলি, ‘কেন? আমার যুক্তিতে কোনো ভুল আছে?’ তিনি বলেন, ‘নাই। যুক্তি যথাযথ। তবে তারা মসজিদে আসুক, তা আমরা চাই না।’ 

নারীদের মসজিদে আসতে নিষেধ করার পেছনে চলমান সংস্কৃতিই তাদের আসল কথা; বাস্তবে তাদের কাছে নিরেট কোনো যুক্তি নেই। কিছু মানুষের কাছে ইসলামের চেয়ে মুসলিম সংস্কৃতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম সংস্কৃতি সর্বস্ব ধর্ম নয়, বরং এটি আল্লাহ ও পবিত্র কোরআনের নির্দেশনা। নারী-পুরুষকে এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ক্লাসে নারী-পুরুষ সমানভাবে অংশ নেওয়া সুযোগ রেখেছি। 

নারীর অধিকার বনাম বঞ্চনা
বিয়ের পর নারীর স্বাধীন ও আলাদা ঘর নিশ্চিত করা পুরুষের দায়িত্ব, যা দুই পক্ষের আত্মীয়-স্বজনের ঘর থেকে পৃথক হবে—এ বিষয়ে কোনো আলিমের দ্বিমত নেই। ঘরের পরিবেশও হতে হবে নিরিবিলি, হিজাব করা কিংবা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে চিন্তা থাকা যাবে না। স্বামী তার স্ত্রীকে বাবা-মা কিংবা ভাইয়ের ঘরে তুলতে পারে না। সকল মাজহাবেই এমনটি বলা হয়েছে। লোকে বলে, আমার বাবা-মা আছে, তাদের খেদমত করা লাগবে। আমি তাদের বলি, নারীদেরও বাবা-মা আছে। তারা স্বামীর বাবা-মায়ের সেবা করতে বাধ্য নয়। বাবা-মায়ের সেবার দায়িত্ব আপনারই। আপনি না পারলে লোক নিয়োগ দেন; স্ত্রীকে বাধ্য করতে পারেন না। তবে সে নিজ থেকে করলে তা একান্তই তার অনুগ্রহ; সে জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞ হোন। আপনার স্ত্রীর খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। তার ভরণপোষণ, চিকিৎসা এমনকি শিক্ষার জন্যও ব্যয় করতে হবে। এটি অনুগ্রহ নয়; দান-সদকাও নয়। তার লাখ টাকা থাকলেও আপনাকে তা দিতে হবে। পরিবারের অন্য সদস্যরা অভাবগ্রস্ত হলেই তাদের দিতে হয়, তবে স্ত্রী ধনী হলেও দিতে হয়। এটি স্বামীর কর্তব্য। 

কেউ কেউ বলে, ‘এত টাকা দিয়ে তারা কী করবে?’ আমি বলি, ‘তারা চ্যারিটি করবে; মসজিদ তৈরি করবে—অতীতের মতো। আগের যুগের নারীরা এমন কাজ অনেক করেছেন। তবে পরিহাসের বিষয় হলো, ফাতিমা আল-ফিহরিয়া নামের এক নারী মরক্কোর ফেজ শহরের কারাউয়্যিন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কিন্তু সেখানে দীর্ঘদিন নারীদের পড়াশোনার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমি সেই কলেজে একবার লেকচার দিতে যাই। শ্রোতাদের সবাই আলেম। আমি বলি, ‘এই কলেজ একজন নারীর তৈরি। হাজার বছর ধরে আপনারা তাদেরই পড়াশোনার সুযোগ দেননি।’ অবশ্য এখন তারা নারীদের পড়ার অনুমতি দিচ্ছেন। তেমনি ভারতেও এমন অনেক মসজিদ আছে, যা নারীদের অর্থায়নে নির্মিত হলেও তাদের নামাজের অনুমতি নেই। মানুষ ইসলাম পড়ে না। মহানবী (সা.)-এর যুগের প্রেক্ষাপট এবং কোরআন-সুন্নাহ থেকে স্পষ্ট উদ্ধৃতি না দিলে কারও যুক্তিতে কান দেওয়ার দরকার নেই। 

মুসলিম নারীর করণীয়
আমি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ইংল্যান্ডে বসবাস করছি। আমার মত হলো, নারী-পুরুষ উভয়কেই মূলধারার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কারণ, আমাদের তা অর্জনের অন্য কোনো বিকল্প পথ নেই। তবে পাশাপাশি আরবি ভাষা ও ইসলাম শিক্ষা পড়াতে হবে। সেই লক্ষ্যপূরণেই আমি ক্যামব্রিজে কাজ করে যাচ্ছি। আমি মনে করি, ভারত উপমহাদেশেও নারী-পুরুষদের মূলধারার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করা উচিত। তবে সপ্তাহের একদিন ইসলাম ও আরবি শেখার জন্য বরাদ্দ রাখলে তারা ইসলাম ভালোভাবে বুঝতে পারবে। ধর্মীয় জ্ঞান আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করবে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়েদের জন্য আরবি শেখা মোটেও কঠিন কিছু নয়। তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করাই আসল কথা। আমার ক্লাসে নারী শিক্ষার্থীরা পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে থাকেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও তাঁরা এগিয়ে যান। তাই নারীদের পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য করবেন না। সেক্যুলার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও তারা ইসলাম শিখতে পারে। এতে তাঁরা আরও বেশি ধার্মিক হবে। 

অনেক পিএইচডিধারী নারী আমার ক্লাসে আসেন। মাথায় স্কার্ফ নেই। সহিহ বুখারি পড়েন। লোকজন বলে, ‘এই নারী এমন পবিত্র গ্রন্থ স্কার্ফ ছাড়া পড়ছেন!’ আমি তাঁদের বলি, ‘চিন্তার কিছু নেই। ওদের আসতে দিন। দেখবেন, তাঁরা বদলে যাবে। তাঁরা তাহাজ্জুদগুজার হয়ে যাবে। এখান থেকে গিয়ে পরিবারকে শেখাবে। তাঁদের জানার সুযোগ দিতে হবে। তা জানলে আমরা কীভাবে তাঁদের বাধ্য করব? পুরুষদের মতো নারীরাও জান্নাতে যেতে চায়। তাদের পড়াশোনার করার সুযোগ দিন।’ 

উপমহাদেশের মহিলা মাদ্রাসাগুলোর ব্যাপারে আমি সন্তুষ্ট নই। তা খুবই নিম্নমানের। তারা নারীদের স্রেফ পাঁচ-ছয় বছর পড়াশোনা করার সুযোগ দেয়। এই অল্প সময়ে তারা তেমন কিছু শিখতে পারে না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক; সপ্তাহান্তে সময় বের করে ইসলাম শিখুক। কারণ, মাদ্রাসাপড়ুয়া নারীরা সাধারণ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলে নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। তাই তাদের আত্মবিশ্বাস বিকশিত করার সুযোগ দিন। অনেক পুরুষ ধার্মিক স্ত্রী পেলে খুশিতে গদগদ হয়। তবে তারাই আবার চায় না—নারীরা শিখুক। তবে একবার শিখে যখন তা মানার চেষ্টা করে, তখন সেই পুরুষদের খুশির সীমা থাকে না। তাহলে আমার কথা হলো—তাদের শিখতে দেন না কেন?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৫ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৭ মিনিট
ফজর০৫: ১৮ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
জোহর১২: ০০ মিনিট০৩: ৪২ মিনিট
আসর০৩: ৪৩ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট
মাগরিব০৫: ২০ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
এশা০৬: ৪০ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের পোস্টে সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে সপরিবারে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাল-সবুজ রঙের একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে তিনি রওনা হন পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চের দিকে।

এদিনের প্রতিটি মুহূর্ত ধরা পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফ্রেমে। দেশে ফেরা উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বেলা ২টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সাতটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। প্রতিটি পোস্টে ফুটে ওঠে দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফেরার অনুভূতি, আবেগ ও কৃতজ্ঞতার ভাষা।

পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছার আগ মুহূর্তে আজ বেলা ৩টা ১৭ মিনিটে তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি জনতাকে উদ্দেশ্য করে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এর ক্যাপশনে তিনি উল্লেখ করেন পবিত্র কোরআনের সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত—‘হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ্! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন; যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সফর শেষে নিজ দেশে ফিরে যে আমল করতেন নবীজি

কাউসার লাবীব
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১১
মরুভূমির পথ ধরে হেঁটে চলছে একটি কাফেলা। ছবি: সংগৃহীত
মরুভূমির পথ ধরে হেঁটে চলছে একটি কাফেলা। ছবি: সংগৃহীত

সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো।’ (সুরা রুম: ৪২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না—তাহলে তারা হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারত, আর তাদের কান শুনতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভেতর যে হৃদয় আছে তা অন্ধ।’ (সুরা হজ: ৪৬)

আমাদের নবী করিম (সা.) একেবারে ছেলেবেলা থেকেই ভ্রমণ করেছেন দূরদেশে। এরপর ব্যবসায়িক কাজে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন কাফেলা নিয়ে দেশ থেকে দেশান্তরে। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত প্রাপ্তির পরও এই ধারা অব্যাহত ছিল। ইসলামের জন্য হিজরত করেছেন মক্কা থেকে মদিনায়। আল্লাহর পথে লড়াইয়ের জন্য সফর করেছেন। নানা কাজে ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়।

নবীজি (সা.)-এর সুন্নত ছিল, তিনি সফর থেকে ফিরে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। সফর নিরাপদে শেষ করতে পারায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন। দোয়া পড়তেন। এরপর পরিবারের কাছে যেতেন।

সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সফর থেকে যখন ফিরতেন, তখন একটি দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো, ‘আয়িবুনা ইনশা আল্লাহু তায়িবুনা আবিদুনা লি-রাব্বিনা হামিদুন।’

অর্থ: আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদতকারী নিজ রবের প্রশংসাকারী। (সহিহ্ বুখারি: ১৭৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪৪)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোথাও সফরের উদ্দেশ্যে তাঁর উটে আরোহণের সময় তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন, এরপর এই দোয়াটি পাঠ করতেন—‘সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফি সাফারিনা হাজাল বিররা ওয়াত তাকওয়া। ওয়া মিনাল আমালি মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাওয়িন আলাইনা সাফারানা হাজা ওয়াত্উই আন্না বু’দাহু। আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফিস সাফারি ওয়াল খালিফাতু ফিল আহলি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ওয়াছাইস সাফারি ওয়া কাআবাতিল মানজারি ওয়া সুইল মুনকালাবি ফিল মালি ওয়াল আহলি।’

অর্থ: ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের নিকট ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ, এই সফরে আমরা তোমার নিকট কল্যাণ, তাকওয়া এবং তোমার সন্তুষ্টি অর্জন হয় এমন কাজের সামর্থ্য চাই। হে আল্লাহ, আমাদের এই সফর সহজ করে দাও এবং এর দূরত্ব কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ, তুমিই (আমাদের) সফরসঙ্গী এবং পরিবারের তত্ত্বাবধানকারী। হে আল্লাহ, তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট, দুঃখজনক দৃশ্য এবং ফিরে এসে সম্পদ ও পরিবারের ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে।’

এরপর তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখনো উপরিউক্ত দোয়া পড়তেন এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতেন, ‘আইবুনা তাইবুনা আবিদুনা লিরাব্বিনা হামিদুন।’ অর্থ: ‘আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, আমাদের প্রতিপালকের ইবাদতকারী ও প্রশংসাকারী।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪২)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অতিথিকে যেভাবে সম্মান করতে বলেছেন নবীজি (সা.)

আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।

হেরা গুহায় নবী (সা.) প্রথমবার যখন হজরত জিবরাইল (আ.)-কে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে হজরত খাদিজা (রা.)-এর কাছে ফিরে এলেন, তখন তিনি তাঁকে যেসব কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, এর মধ্যে মেহমানদারি অন্যতম। খাদিজা (রা.) বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম, কখনোই নয়। আল্লাহ তাআলা আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায়-দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩)

মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকে। আর যারা স্বভাবজাত লোভ-লালসা ও কামনা থেকে মুক্তি লাভ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা হাশর: ৯)

মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ঘরে মেহমানদারি করা হয়, উটের কুঁজের মাংস কাটার উদ্দেশ্যে ছুরি যত দ্রুত অগ্রসর হয়, সে ঘরে বরকত তার চেয়েও দ্রুত প্রবেশ করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

অন্যত্র মেহমানদারির প্রতি উৎসাহিত করে নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার ওপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।’ (সহিহ্ বুখারি)

প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত, মেহমানদারির হক ও নিয়মগুলো মেনে চলা। কোরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত ফজিলত ও মর্যাদাগুলো অর্জন করা। অযথা কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তাআলা উম্মাহকে মেহমানদারির হকগুলো যথাযথ আদায় ও ফজিলতসমূহ লাভ করার তাওফিক দান করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত