Ajker Patrika

কেমন হবে কোরবানি—ইসলাম যা বলে

মাহমুদ হাসান ফাহিম 
কেমন হবে কোরবানি—ইসলাম যা বলে

কোরবানি হচ্ছে নিজের প্রিয় বস্তু আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করা। এটি আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের অন্যতম উপায়। গোটা মুসলিম জাতি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ একযোগে শরিয়তের এ বিধানটি পালন করে থাকে।

এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা যাচাই করেন বান্দার তাকওয়া ও তার অন্তরের অবস্থা এবং তাঁর হুকুম পালনে একনিষ্ঠতা। যেমনটি পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোরবানির (পশুর) গোশত এবং রক্তের কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং পৌঁছে শুধু তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি এসব পশুকে তোমাদের বশীভূত করেছেন, যেন তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা কর, তিনি তোমাদের হেদায়াত দান করেছেন বলে। সুতরাং যারা সুচারুরূপে সৎকর্ম করে, তাদের সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ: ৩৭)

গোটা মুসলিম জাহানে কোরবানির ইতিহাস জানে না এমন কেউ নেই। কোরবানি আল্লাহ তাআলার বিধান। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত। হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) সূত্রে বর্ণিত, কয়েকজন সাহাবি প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কোরবানি কী?’

রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত।’ সাহাবিরা বললেন, ‘এতে আমাদের জন্য কী প্রতিদান রয়েছে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৭)

হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা ‘খলিলুল্লাহ’ উপাধি দিয়েছেন বেশ কিছু বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পর। তিনি স্নেহের পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে আল্লাহর রাহে কোরবানি করতে আদিষ্ট হয়েছেন। পবিত্র কোরআনের সুরা সাফফাতে এর বিষদ বিবরণ এসেছে।

তিনি কোরবানির যে পরীক্ষা দিয়েছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে তা নজির বিহীন। তার সেই আদর্শকে মানুষ যুগ যুগ ধরে স্মরণে রেখেছে। সে ধারাবাহিকতা রক্ষার তাগিদে কোরবানি করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর হুকুম পালনে পূর্ণ ইমানের পরিচয় দিই।

এই কোরবানি মানুষের মাঝে গড়ে তুলে ঐশী ভালোবাসার সেতুবন্ধ। কোরবানি নিছক গোশত খাওয়ার কোনো উৎসব নয়, বরং এটি খোদা প্রেমের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আত্মত্যাগের মহা উৎসব এই কোরবানি। যেহেতু এই কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা উৎসর্গ ও ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে ধর্মীয় কর্তব্য পালন করে, তাই একে আমরা আত্মত্যাগের উৎসব বলি।

আরবি কোরবানি শব্দটি কুরবুন শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ-আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের উদ্দেশ্যে আত্মোৎসর্গ করা। আল্লাহর পথে আত্মোৎসর্গ করতে পারা মোমিন-মুসলমানের জন্য সবচেয়ে বড় খুশির বিষয়।

শরিয়তে কোরবানির বিধান

ইসলামি শরিয়তের বিধানমতে কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরবানির নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং পশু জবাই কর।’ (সুরা কাউসার: ২)

আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা আদেশসূচক ক্রিয়া ব্যবহার করেছেন। আর আল্লাহর নির্দেশ পালন সাধারণত ফরজ বা ওয়াজিব হয়ে থাকে। যদি কারও কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সাড়ে সাত ভরি সোনা কিংবা এর সমমূল্যের অন্য যে কোনো সম্পদ ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত তার মালিকানায় থাকে, তাহলে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (ফাতাওয়া শামি: ৯/৪৫৪-৪৫৮, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ২৬/২২৬)

কোরবানিতে ধন-সম্পদের মোহ ও মনের পাশবিকতা দূর করার ক্ষেত্রে আমাদের কয়েকটি করণীয়—

লৌকিকতা পরিহার

কোরবানির উদ্দেশ্য মানুষের পশুবৃত্তিকে জবাই করে অন্তরে আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা জাগ্রত করা। এখানে লৌকিকতার স্থান নেই। কারও নিয়তে যদি এ ধরনের বিষয় থাকে, তাহলে সে কোরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে বঞ্চিত। এ প্রতিযোগিতার কোরবানি কখনো আল্লাহ তাআলার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই দাম হাঁকিয়ে, লোক দেখিয়ে, মানুষের বাহবা কুড়ানোর জন্য যা করা হয়, তা আর যাই হোক ইবাদত হবে না। এটি প্রাচীন জাহেলি যুগের অজ্ঞতা।

বিশুদ্ধ নিয়ত

পশু ক্রয় করার আগে কোরবানির নিয়ত করা। গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে মোটাতাজা পশু কিনলে পশু কেনা হবে এবং গোশতও খাওয়া যাবে কিন্তু কোরবানি হবে না।

কোরবানির শরিক নির্বাচন

একাধিক লোক মিলে কোরবানি করলে অবশ্যই শরিকদের ভেতরগত অবস্থা জেনে নেওয়া। কারণ শরিকদের কোনো একজনের টাকা হারাম হলে তারসহ সকলের কোরবানি বাতিল হয়ে যাবে। তাই যথাসম্ভব যাচাই-বাছাই করে কোরবানি করার চেষ্টা করা। হালাল উপার্জনকারী না পাওয়া গেল বড় পশুতে শরিক না হয়ে বকরি বা ছাগল কোরবানি দেওয়া।

কোরবানির গোশত বণ্টন

কোরবানির গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজে রাখা। আরেক ভাগ বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের মাঝে বিতরণ করা। আর অন্য ভাগ গরিব, মিসকিন ও অভাবীদের মাঝে বণ্টন করা উত্তম।

প্রয়োজন হলে কোরবানির গোশত পুরোটাই নিজে খাওয়া যায়, কিন্তু কোরবানি যেহেতু নিছক গোশত খাওয়ার কোনো উৎসব নয়—তাই তা ফ্রিজে জমিয়ে না রেখে প্রয়োজন অতিরিক্তটুকু প্রতিবেশী ও অসহায়দের মাঝে বণ্টন করে দেওয়ার মনমানসিকতা লালন করা চাই।

লেখক: শিক্ষক বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদরাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলাম যা বলে

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)

আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।

জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।

এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য যে সুসংবাদ দিয়েছেন নবীজি (সা.)

আবরার নাঈম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)

জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।

জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লাশ দেখে যে দোয়া পড়বেন

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)

কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’

এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)

পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’

অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রজব মাসে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস হলো রজব। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ বা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। রজব মাসের আগমন আমাদের সামনে রমজানের বারতা নিয়ে আসে। ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত রমজান মাসের প্রস্তুতির শুরু হয় মূলত এই রজব মাস থেকেই।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাস শুরু হলে একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (অর্থাৎ রমজান পাওয়ার তৌফিক দান করুন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)

এই মাসের আমল সম্পর্কে কিছু জরুরি দিক হলো: ১. ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া: যেকোনো ফজিলতপূর্ণ সময়ের প্রথম শর্ত হলো ফরজ ইবাদতগুলো নিখুঁতভাবে পালন করা। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। ২. নফল ইবাদত বৃদ্ধি: এই মাসে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকির-আজকারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ৩. গুনাহ বর্জন: যেহেতু এটি সম্মানিত মাস, তাই এই সময়ে পাপাচার থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪. বেশি বেশি নফল রোজা: যদিও রজব মাসের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রোজার বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আইয়ামে বিজের (চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করা যায়।

রজব মাস আমাদের আত্মশুদ্ধি এবং রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে বরকত প্রার্থনা করি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত