Ajker Patrika

কোরআনের বর্ণনায় পাখির উড়ালকৌশল

ড. আলি আস-সাল্লাবি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পাখিদের উড়ালশৈলীর গভীর পর্যবেক্ষণ একজন মানুষকে পূর্ণরূপে বিশ্বাসী হতে এবং আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দিতে সাহায্য করে। আল্লাহ তাআলা সর্বোৎকৃষ্ট সৃজনশীলতার অধিকারী এবং পাখি তাঁর আশ্চর্য সৃষ্টি। বর্তমানে পাখি বিশেষজ্ঞরা এমন এক সত্যে উপনীত হয়েছেন, যা জানলে অবিশ্বাসী মানুষও আল্লাহর বড়ত্ব ও শক্তিমত্তায় বিশ্বাস স্থাপন করতে বাধ্য হবেন। পবিত্র কোরআনের দুটি আয়াতে পাখিদের দুই ধরনের উড়ালকৌশলের কথা বিবৃত হয়েছে। এখানে আয়াত দুটির ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো—

মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন পাখি

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আকাশের শূন্যগর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন পাখিদের দিকে তারা কি লক্ষ করে না? আল্লাহই ওদের স্থির রাখেন। অবশ্যই এতে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে শিক্ষা।’ (সুরা নাহল: ৭৯)

এ আয়াতে পাখির দেহে এবং বায়ুস্রোতে আল্লাহ তাআলার সেট করে দেওয়া ফাংশনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে পাখিরা উড়তে পারে। পাখির আকাশে ওড়া এবং শূন্যে ভেসে বেড়ানোর জন্য দুটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক. হালকা ওজনের হওয়া এবং দুই. অতিমাত্রায় শক্তি ও বলপ্রয়োগ করা। এ ছাড়া দুটি ডানাও থাকা চাই, যা পাখিকে সহজভাবে আকাশে উড়তে এবং শূন্যে ভেসে বেড়াতে সহায়তা করে।

হালকা ওজন পাখির ওড়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি পাখিদের দেহাবয়বে বিভিন্নভাবে বিদ্যমান। যেমন:

পালকের গঠন: জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য পাখি তাঁর পালকগুলো আবশ্যকভাবে পরিষ্কার রাখে এবং সব সময় উড়াল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। পালকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পাখি তার লেজের নিচের তৈলাক্ত গ্রন্থির ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। ওই তেলের মাধ্যমেই পাখিরা তাদের পালক পরিচ্ছন্ন ও ঝকঝকে রাখে। তেমনিভাবে সাঁতার কাটা, ডুব দেওয়া এবং বৃষ্টিমুখর আবহাওয়ায় চলাফেরা করার সময় সেই তেল তাদের পালকগুলোকে ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।

কঙ্কাল: ফাঁপা ও হালকা হাড্ডি দিয়েই আল্লাহ পাখি সৃষ্টি করেছেন। তবে দেখতে কোমল মনে হলেও ভেতরের ভিত্তি মজবুত হওয়ার কারণে তা খুবই শক্ত। পাখির শ্বাসনালির সঙ্গে সংযুক্ত কিছু বায়বীয় শূন্যস্থান রয়েছে, যা তাদের শ্বাস নিতে, প্রাণবন্ত থাকতে এবং হালকা হতে সহায়তা করে। তেমনিভাবে তা তাকে অধিক পরিমাণে অক্সিজেন নেওয়ারও সুযোগ করে দেয়।

এ ছাড়া পাখিদেহের অ্যারোডাইনামিক আকৃতি তাকে তুলনামূলক কম প্রতিরোধের মাধ্যমে বাতাসের স্রোত কাটতে সহায়তা করে। শূন্যে উড়াল দিতে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে তার পাখাগুলোর অবদান মোটেও কম নয়।

ডানা মেলে ধরা পাখি

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তারা কি তাদের ওপরের দিকে পাখিগুলোর প্রতি লক্ষ করে না, যারা ডানা মেলে ধরে আবার গুটিয়ে নেয় তথা ডানা ঝাপটিয়ে ওড়ে? দয়াময় ছাড়া অন্য কেউই তাদের স্থির রাখেন না। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।’ (সুরা মুলক: ১৯)

পাখির উড়ালকৌশলে এমন সব অবাক করা শিক্ষা রয়েছে, যা কেবল অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং তথা উড্ডয়ন প্রকৌশল এবং ডাইনামিকস তথা গতিবিদ্যার সমৃদ্ধি ও উৎকর্ষের কারণেই মানুষের সামনে এসেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দুটি শান্ত ডানার সাহায্যেই, নাড়াচাড়া না করেই পাখিরা শূন্যে উড়তে পারে, এমনকি তারা উড়তে উড়তে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যেতে পারে।

পাখির উড়ালকৌশল ও বিজ্ঞান

বিজ্ঞান বলে, ডানা মেলে ধরা পাখিগুলো এমন সহায়ক বায়ুস্রোতে ভেসে বেড়ায়, যেটি কোনো প্রতিবন্ধকের সঙ্গে বাতাসের সংঘর্ষের কারণে অথবা উষ্ণ বায়ুর কলামগুলো ওপরে ওঠার ফলে সৃষ্টি হয়। বায়ু শান্ত থাকলে কলামগুলো দাঁড়িয়ে থাকে এবং পাখিরা ডানা মেলে ধরে সর্পিল গতিতে ওড়ে। বায়ুপ্রবাহ প্রবল হলে কলামগুলো আনুভূমিক হয়ে উল্টে যায়; তখন পাখিরা লম্বা সরলরেখায় ডানা মেলে ধরে উড়ে চলে।

বিজ্ঞান আরও জানায়, প্রতিটি পাখি যখন ডানা ঝাপটায় তখন তা তার পেছনের পাখিটি থেকে এক স্তর ওপরে উঠে যায় এবং এর ওপর ভিত্তি করেই পরিযায়ী পাখিরা সম্মিলিতভাবে ইংরেজি ভি আকৃতি ধারণ করে। এ পদ্ধতিতে একা পথ চলার তুলনায় কমপক্ষে ৭১ শতাংশ বেশি দ্রুতবেগে তারা পথ চলতে পারে। সেই গতিপথ থেকে কোনো পাখি বের হলে হঠাৎ মাধ্যাকর্ষণ ও বায়ুর শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়ে, তাই পাখিরা দ্রুতই আগের সিকুয়েন্সে ফিরে আসে, যাতে সংঘবদ্ধতা থেকে প্রাপ্ত শক্তি ও সহায়তা থেকে উপকৃত হওয়া যায়। দলনেতা যখন শক্ত প্রতিরোধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন সেটি পেছনে চলে যায় এবং অন্য নেতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়। এভাবেই পর্যায়ক্রমে নেতৃত্ব দেওয়া হয়। পেছনের সদস্যরা সামনের সদস্যদের উৎসাহ জোগাতে চিৎকার করতে থাকে।

পাখিদের উড়ালশৈলীর বর্ণনা—ডানা মেলে ধরা ও গোটানোই আধুনিক অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মূল থিউরি। ১০০ বছর আগেও এ সত্য মানুষের অজানা ছিল। ডানা মেলে ধরার অর্থ পাখির দুই ডানা নাড়াচাড়া না করে সোজাসুজি মেলে ধরা। দূরের পথ পাড়ি দিতে পাখি শূন্যে ভেসে বেড়ায়—চলা বা ওপরে ওঠার সময় তারা বায়ুস্রোতের সাহায্য নেয় এবং ধীরে অবতরণের সময় মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য নেয়। তখন তার ডানা ঝাপটানো বা অনবরত ওপর-নিচ করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রথমবারের ঝাপটানো তাকে সামনের দিকে নিয়ে যায় এবং দ্বিতীয়বার ঝাপটানো তাকে ওপরের দিকে তুলে দেয়।

বিজ্ঞান বলে, পাখির ডানাই উড়োজাহাজ তৈরির রোলমডেল। ধারাবাহিক অনুশীলনের জন্য কিছু পাখা ছোট ও শক্ত হয়। দ্রুতগতিতে ওড়ার জন্য কিছু পাখা চিকন ও ধারালো হয়। ওপরে ওঠার জন্য কিছু পাখির পাখা লম্বা ও প্রশস্ত হয়। বায়ুমণ্ডলে সহজে ভেসে বেড়ানোর জন্য কিছু পাখা চিকন ও লম্বা হয়। আল্লাহ তাআলা প্রতিটি পাখির দেহকেই ওড়ার জন্য পূর্ণ উপযোগী করে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রয়োজনমতো উপাদান দিয়েছেন। কিছু পাখি কয়েক মাস ধরে আকাশে উড়তে থাকে; শূন্যেই তারা খাওয়াদাওয়া করে এবং ঘুমোয়। এসব ঐশ্বরিক প্রযুক্তি দেখেই বিজ্ঞানীরা উড়োজাহাজ তৈরির প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করছে।

লেখক: লিবিয়ান লেখক ও ইতিহাসবিদ, আল জাজিরা আরবি থেকে সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: ইজাজুল হক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৭ মিনিট
ফজর০৫: ০৮ মিনিট০৬: ২৮ মিনিট
জোহর১১: ৫১ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১১ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৩ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৫: ০৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে আত্মীয়তার বন্ধন দৃঢ় করার উপায়

আবদুল্লাহ নুর
আত্মীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা। ছবি: সংগৃহীত
আত্মীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা। ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল আল্লাহর নেয়ামতের ঋতু। ফলমূল ও শস্যে পরিপূর্ণ হয় শহর-গ্রাম। রসে রসে টইটম্বুর হয় খেজুরগাছে ঝুলে থাকা কলসি। প্রকৃতিতে আসে নতুন সাজ। শীতকাল মানুষের সামাজিক জীবনেও অনেক ভূমিকা রাখে। আত্মীয়তার সম্পর্ক করে দৃঢ়। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। হাদিসে এসেছে, হজরত জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) বলেন, ‘আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৮৪)

পৌষ ও মাঘ মাসের তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে যায় মানুষ। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে যায় চারদিক। ধনাঢ্য ও বিত্তবানেরা আবৃত হয় শীতের দামি পোশাকে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন শ্রেণির মানুষ হয়ে পড়ে অসহায়। এই শীতে ধনাঢ্য লোকদের উচিত মধ্য ও নিম্নবিত্ত আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া। সামর্থ্য অনুযায়ী পরিধেয় পোশাক উপহার দেওয়া। কেননা, উপহারের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘পরস্পর হাদিয়া দাও, মহব্বত বাড়বে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪)

অন্য আরও এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অন্য মুসলিমকে পোশাক পরিধান করায়, তখন দানকারী আল্লাহর হেফাজতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত দান গ্রহণকারী সে পোশাকের টুকরাবিশেষও ব্যবহার করতে থাকে। অর্থাৎ কাপড়টি পরিত্যক্ত হওয়া পর্যন্ত দানকারীকে আল্লাহ তাআলা বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করেন।’ (জামে তিরমিজি: ২৪৮৪)

শীতকাল আল্লাহর নেয়ামতে পরিপূর্ণ থাকে। গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস নামান। ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠাপুলির উৎসব। পিঠাপুলির আনন্দ আত্মীয়স্বজনের মাঝেও ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। শীতকালীন পিঠা, খেজুরের রস ও গুড় একে অপরকে হাদিয়া দেওয়া। মধ্য ও নিম্ন শ্রেণির আত্মীয়কে দাওয়াত দেওয়া। কেননা, হাদিয়া দ্বারা পারস্পরিক দূরত্ব কমে যায়। তৈরি হয় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আত্মীয়স্বজনকে খাদ্যদানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি। অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কী? তা হচ্ছে, দাসমুক্তি অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে এতিম আত্মীয়কে অথবা ধূলি-ধূসরিত মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো।’ (সুরা বালাদ: ১০-১৬)

আর হাদিসে অসহায় আত্মীয়স্বজন বা ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো সর্বোত্তম কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করেন—‘ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ?’ মহানবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো।’ (সহিহ্ বুখারি: ১২, সহিহ্ মুসলিম: ৩৯)

লেখক: ইমাম ও খতিব, ভবানীপুর জামে মসজিদ, ২ নম্বর ওয়ার্ড, গাজীপুর সিটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমাজকে পবিত্র রাখতে বিবাহের গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৩
সমাজকে পবিত্র রাখতে বিবাহের গুরুত্ব

বিবাহ মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা শুধু পারিবারিক বন্ধন নয়—ধর্মীয়, সামাজিক এবং নৈতিক দায়িত্বও বটে। ইসলামে বিবাহ পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের বৈধ উপায় হওয়ার পাশাপাশি, এটি এক বরকতময় ইবাদতও। মহানবী (সা.) বলেন, ‘বিবাহ আমার সুন্নত। অতএব যে আমার সুন্নত পালন থেকে বিরত থাকবে, সে আমার অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

কিন্তু আধুনিক সমাজে নানা ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক জটিলতার কারণে অনেকেই সময়মতো বিবাহে বাধা পাচ্ছেন। এতে করে সমাজে বেড়ে চলেছে অনৈতিকতা, চারিত্রিক অবক্ষয় এবং পারিবারিক শৃঙ্খলার ভাঙন। সমাজে বাড়ছে যৌন অপরাধ। ছেলেমেয়েরা অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনসহ বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে। সন্তানদের পাপাচার থেকে বাঁচাতে এবং অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে বিবাহের গুরুত্ব অপরিসীম।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ করিয়ে দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর: ৩২)। বিবাহ বরকতময় ইবাদত। বিবাহের পরের সময়ের রিজিকের ভয়ে তা থেকে বিরত থাকা অনুচিত। এই আয়াত সে কথাই প্রমাণ করে।

অবশ্য, যাদের বিবাহ করার সামর্থ্যই নেই এবং অসচ্ছল দিনাতিপাত করছে, তাদের করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যতক্ষণ না তাদের সামর্থ্য দান করেন, ততক্ষণ তারা সংযম অবলম্বন করবে এবং নিজ চরিত্র রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে।’ (সুরা নুর: ৩৩)

বিবাহকে সহজ ও সম্মানজনকভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম যেখানে বিবাকে ইবাদত এবং চারিত্রিক সংরক্ষণের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছে, সেখানে আমাদের দায়িত্ব—বিবাহের প্রকৃত তাৎপর্য ও গুরুত্বকে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া। তরুণদের পবিত্র সম্পর্কের দিকে উৎসাহিত করতে হলে অভিভাবক, সমাজ এবং ধর্মীয় নেতৃত্বের সমন্বয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই আমরা গড়তে পারব একটি সুস্থ, পরিশুদ্ধ ও নৈতিক সমাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৭ মিনিট
ফজর০৫: ০৮ মিনিট০৬: ২৭ মিনিট
জোহর১১: ৫১ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১০ মিনিট
মাগরিব০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৫: ০৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত