
বেক্সিমকো ফার্মা গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে তাদের অবস্থান ঠিক স্বাভাবিক সময়ের মতো। যেখানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার কথা, সেখানে প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে সুসংহত হচ্ছে, এত কিছু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ আলী নাওয়াজ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক রোকন উদ্দীন।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

আজকের পত্রিকা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্রমিক ছাঁটাই হয়। সেই বাস্তবতায় বেক্সিমকো ফার্মার উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড কীভাবে টিকে আছে?
আলী নাওয়াজ: সত্যি বলতে, বেক্সিমকো ফার্মার জন্য সময়টা ছিল ভয়াবহ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সুনামের ওপর। নামের আগে ‘বেক্সিমকো’ থাকায় অনেক নেতিবাচক প্রচার হয়েছে। অফিস ও ডিপোতে হামলা হয়েছে, ৪-৫টি ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি আমাদের আরজেএসসিতে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার অ্যাকসেস বন্ধ রাখা হয়েছিল। ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে ছয় সপ্তাহ লেগেছে। এসব নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গত এক বছরে বেক্সিমকো ফার্মা আরও এগিয়েছে। কারণ, বেক্সিমকো ফার্মা মূলত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। মালিকদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার, বাকি ৮৬ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। আর কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থেকে আমরা চেষ্টা করেছি ফার্মার উৎপাদন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং কর্মসংস্থান সব সময় সচল রাখার। এতে সরকারের প্রশাসনিক সহায়তাও আমরা পেয়েছি। ফলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বেক্সিমকো ফার্মার প্রবৃদ্ধি হয়েছে। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতেও বেক্সিমকো ফার্মা সচল রাখার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
আজকের পত্রিকা: এত প্রতিকূল অবস্থায়ও কোম্পানি কীভাবে স্থিতিশীল থাকতে পেরেছে?
আলী নাওয়াজ: এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বেক্সিমকো ফার্মার ম্যানেজমেন্ট সব সময় পেশাদারদের হাতেই থেকেছে। আমাদের বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতা ছিল, তারা দৈনন্দিন কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। দ্বিতীয়ত, ফার্মার মার্কেটিং টিম মাঠে এই প্রতিকূল সময়ে দ্বিগুণ পরিশ্রম করেছে এবং সবাইকে বুঝিয়েছে, বেক্সিমকো ফার্মা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় ৮৬ শতাংশ শেয়ার ও বিনিয়োগই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার। তৃতীয়ত, ফার্মার ওষুধের মান আন্তর্জাতিক মানের; তাই রোগী ও চিকিৎসকদের আস্থা সব সময় একটা বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। এর জন্য গত এক বছরে একজন কর্মীও চাকরি ছাড়েননি, ছাঁটাইয়ের প্রশ্নই ওঠেনি।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো গ্রুপের বিশাল ব্যাংকঋণ নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। বেক্সিমকো ফার্মার ঋণ পরিস্থিতি কেমন?
আলী নাওয়াজ: আমাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ আছে; কিন্তু বাস্তবে সর্বোচ্চ ৬০০ কোটি টাকার কার্যকরী মূলধন ঋণ নিয়েছিলাম; যার থেকে ব্যবহার হয়েছিল ১০০ কোটির কম। বর্তমানে ঋণ নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটির মধ্যে। বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিক্রি হয়, তাই বেক্সিমকো ফার্মার কোনো ঋণের চাপ নেই।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো ফার্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্জিত মুনাফা থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্য কোম্পানিকে অর্থ সরবরাহ করা হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সিএফও হিসেবে আপনার বক্তব্য কী?
আলী নাওয়াজ: অভিযোগটি আমরাও শুনেছি, যা সত্য নয়। কারণ, এটা সম্ভবও নয়। বেক্সিমকো ফার্মা গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তদুপরি বেক্সিমকো ফার্মা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত, যেখানে কঠোরভাবে আর্থিক স্বচ্ছতা মনিটর করা হয়।
আজকের পত্রিকা: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের ওষুধশিল্প কীভাবে বেড়েছে বলে মনে করেন?
আলী নাওয়াজ: ২০১০ সালের পর থেকে ওষুধশিল্প ধারাবাহিকভাবে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। শুধু কোভিড-১৯ সময়টা ব্যতিক্রম। দেশের অর্থনীতি বেড়েছে, মানুষের আয় ও জীবনমান উন্নত হয়েছে, উপজেলা পর্যায়েও চিকিৎসাসেবা পৌঁছেছে। ফলে মানুষ ফুল কোর্সে ওষুধ কিনছে। প্রতিবছর বড় কোম্পানিগুলো ২০-৩০টি নতুন ওষুধ বাজারে আনছে। এখন বাজারের আকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার, যার ৯৮ শতাংশই স্থানীয় উৎপাদন।
আজকের পত্রিকা: রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো সীমিত। সমস্যাগুলো কোথায়?
আলী নাওয়াজ: ওষুধ রপ্তানি খুব জটিল প্রক্রিয়া। আফ্রিকার একটি দেশে যেতে হলেও এজেন্ট নিয়োগ, ডসিয়ার তৈরি, রেজিস্ট্রেশন, এমনকি ওষুধ কর্তৃপক্ষের কারখানা পরিদর্শন করতে হয়। অনুমোদন পেতে ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ, প্রায় সাড়ে তিন বছর লেগে যায়। খরচও বিপুল; শুধু মার্কিন নিবন্ধনের ফি মাঝারি কোম্পানির জন্য এক মিলিয়ন ডলারের বেশি। বেক্সিমকো ফার্মা প্রতিবছর লাইসেন্স ও অডিট বজায় রাখতেই দেড় মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।
আজকের পত্রিকা: বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মার রপ্তানির অবস্থা কী?
আলী নাওয়াজ: আমরা ৬০টির বেশি দেশে প্রায় ২৫০ ধরনের ওষুধ রপ্তানি করি। সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ২০টি ওষুধের নিবন্ধন আছে এবং ৮টি আমরা রপ্তানি করছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার। লাভজনক হতে হলে অন্তত ১০-১৫ মিলিয়নের ওপরে আয় করতে হয়; কারণ, খরচ বেশি। তবে একবার ইউএস এফডিএ সার্টিফিকেশন পাওয়া গেলে অন্য দেশে অনুমোদন পাওয়া সহজ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাজার।
আজকের পত্রিকা: এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধ খাতের জন্য কী চ্যালেঞ্জ আসবে?
আলী নাওয়াজ: সবচেয়ে বড় সুবিধা, এখন আমরা পেটেন্ট ছাড় পাই। ফলে নতুন ওষুধ এলেই দ্রুত উৎপাদন করতে পারি। গ্র্যাজুয়েশনের পর সেটা থাকবে না, আবিষ্কারক কোম্পানির লাইসেন্স লাগবে। ইতিমধ্যে বাজারজাত করা পেটেন্টের ওষুধের জন্য রয়্যালটি দাবি করতে পারে। অনেক দেশ আমাদের জেনেরিক নিতে পারবে না, রপ্তানি কমে যাবে। দামও বাড়বে; কারণ, পেটেন্ট হোল্ডার কোম্পানিকে লাইসেন্স ফি ও রয়্যালটি দিতে হবে; অথবা তাদের নির্ধারিত দামে কাঁচামাল কিনতে হবে। আমরা সরকারকে এসব বিষয়ে জানাচ্ছি এবং শিল্প সমিতি থেকেও আলাপ চলছে। প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: সামনে বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান ফোকাস কী হবে?
আলী নাওয়াজ: বেক্সিমকো ফার্মার মূল দৃষ্টি এখন বায়োলজিকসের দিকে; বিশেষ করে অ্যান্টি ক্যানসার ও অ্যান্টি ডায়াবেটিস ওষুধে। বিশ্বজুড়ে এগুলোই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রথমেই এসব পণ্য আনতে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নতুন কিছু ওষুধ রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে; যাতে বলা যায়, এগুলো এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগেই বাজারে এসেছে। এ ছাড়া নোভিস্তা ফার্মা ও সাইনোভিয়া ফার্মা নামক দুটি বহুজাতিক কোম্পানির বাংলাদেশের শেয়ার আমরা কিনে নিয়েছি; যাতে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হয়।
আরও খবর পড়ুন:
আজকের পত্রিকা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্রমিক ছাঁটাই হয়। সেই বাস্তবতায় বেক্সিমকো ফার্মার উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড কীভাবে টিকে আছে?
আলী নাওয়াজ: সত্যি বলতে, বেক্সিমকো ফার্মার জন্য সময়টা ছিল ভয়াবহ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সুনামের ওপর। নামের আগে ‘বেক্সিমকো’ থাকায় অনেক নেতিবাচক প্রচার হয়েছে। অফিস ও ডিপোতে হামলা হয়েছে, ৪-৫টি ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি আমাদের আরজেএসসিতে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার অ্যাকসেস বন্ধ রাখা হয়েছিল। ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে ছয় সপ্তাহ লেগেছে। এসব নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গত এক বছরে বেক্সিমকো ফার্মা আরও এগিয়েছে। কারণ, বেক্সিমকো ফার্মা মূলত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। মালিকদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার, বাকি ৮৬ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। আর কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থেকে আমরা চেষ্টা করেছি ফার্মার উৎপাদন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং কর্মসংস্থান সব সময় সচল রাখার। এতে সরকারের প্রশাসনিক সহায়তাও আমরা পেয়েছি। ফলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বেক্সিমকো ফার্মার প্রবৃদ্ধি হয়েছে। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতেও বেক্সিমকো ফার্মা সচল রাখার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
আজকের পত্রিকা: এত প্রতিকূল অবস্থায়ও কোম্পানি কীভাবে স্থিতিশীল থাকতে পেরেছে?
আলী নাওয়াজ: এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বেক্সিমকো ফার্মার ম্যানেজমেন্ট সব সময় পেশাদারদের হাতেই থেকেছে। আমাদের বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতা ছিল, তারা দৈনন্দিন কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। দ্বিতীয়ত, ফার্মার মার্কেটিং টিম মাঠে এই প্রতিকূল সময়ে দ্বিগুণ পরিশ্রম করেছে এবং সবাইকে বুঝিয়েছে, বেক্সিমকো ফার্মা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় ৮৬ শতাংশ শেয়ার ও বিনিয়োগই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার। তৃতীয়ত, ফার্মার ওষুধের মান আন্তর্জাতিক মানের; তাই রোগী ও চিকিৎসকদের আস্থা সব সময় একটা বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। এর জন্য গত এক বছরে একজন কর্মীও চাকরি ছাড়েননি, ছাঁটাইয়ের প্রশ্নই ওঠেনি।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো গ্রুপের বিশাল ব্যাংকঋণ নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। বেক্সিমকো ফার্মার ঋণ পরিস্থিতি কেমন?
আলী নাওয়াজ: আমাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ আছে; কিন্তু বাস্তবে সর্বোচ্চ ৬০০ কোটি টাকার কার্যকরী মূলধন ঋণ নিয়েছিলাম; যার থেকে ব্যবহার হয়েছিল ১০০ কোটির কম। বর্তমানে ঋণ নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটির মধ্যে। বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিক্রি হয়, তাই বেক্সিমকো ফার্মার কোনো ঋণের চাপ নেই।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো ফার্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্জিত মুনাফা থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্য কোম্পানিকে অর্থ সরবরাহ করা হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সিএফও হিসেবে আপনার বক্তব্য কী?
আলী নাওয়াজ: অভিযোগটি আমরাও শুনেছি, যা সত্য নয়। কারণ, এটা সম্ভবও নয়। বেক্সিমকো ফার্মা গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তদুপরি বেক্সিমকো ফার্মা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত, যেখানে কঠোরভাবে আর্থিক স্বচ্ছতা মনিটর করা হয়।
আজকের পত্রিকা: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের ওষুধশিল্প কীভাবে বেড়েছে বলে মনে করেন?
আলী নাওয়াজ: ২০১০ সালের পর থেকে ওষুধশিল্প ধারাবাহিকভাবে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। শুধু কোভিড-১৯ সময়টা ব্যতিক্রম। দেশের অর্থনীতি বেড়েছে, মানুষের আয় ও জীবনমান উন্নত হয়েছে, উপজেলা পর্যায়েও চিকিৎসাসেবা পৌঁছেছে। ফলে মানুষ ফুল কোর্সে ওষুধ কিনছে। প্রতিবছর বড় কোম্পানিগুলো ২০-৩০টি নতুন ওষুধ বাজারে আনছে। এখন বাজারের আকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার, যার ৯৮ শতাংশই স্থানীয় উৎপাদন।
আজকের পত্রিকা: রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো সীমিত। সমস্যাগুলো কোথায়?
আলী নাওয়াজ: ওষুধ রপ্তানি খুব জটিল প্রক্রিয়া। আফ্রিকার একটি দেশে যেতে হলেও এজেন্ট নিয়োগ, ডসিয়ার তৈরি, রেজিস্ট্রেশন, এমনকি ওষুধ কর্তৃপক্ষের কারখানা পরিদর্শন করতে হয়। অনুমোদন পেতে ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ, প্রায় সাড়ে তিন বছর লেগে যায়। খরচও বিপুল; শুধু মার্কিন নিবন্ধনের ফি মাঝারি কোম্পানির জন্য এক মিলিয়ন ডলারের বেশি। বেক্সিমকো ফার্মা প্রতিবছর লাইসেন্স ও অডিট বজায় রাখতেই দেড় মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।
আজকের পত্রিকা: বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মার রপ্তানির অবস্থা কী?
আলী নাওয়াজ: আমরা ৬০টির বেশি দেশে প্রায় ২৫০ ধরনের ওষুধ রপ্তানি করি। সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ২০টি ওষুধের নিবন্ধন আছে এবং ৮টি আমরা রপ্তানি করছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার। লাভজনক হতে হলে অন্তত ১০-১৫ মিলিয়নের ওপরে আয় করতে হয়; কারণ, খরচ বেশি। তবে একবার ইউএস এফডিএ সার্টিফিকেশন পাওয়া গেলে অন্য দেশে অনুমোদন পাওয়া সহজ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাজার।
আজকের পত্রিকা: এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধ খাতের জন্য কী চ্যালেঞ্জ আসবে?
আলী নাওয়াজ: সবচেয়ে বড় সুবিধা, এখন আমরা পেটেন্ট ছাড় পাই। ফলে নতুন ওষুধ এলেই দ্রুত উৎপাদন করতে পারি। গ্র্যাজুয়েশনের পর সেটা থাকবে না, আবিষ্কারক কোম্পানির লাইসেন্স লাগবে। ইতিমধ্যে বাজারজাত করা পেটেন্টের ওষুধের জন্য রয়্যালটি দাবি করতে পারে। অনেক দেশ আমাদের জেনেরিক নিতে পারবে না, রপ্তানি কমে যাবে। দামও বাড়বে; কারণ, পেটেন্ট হোল্ডার কোম্পানিকে লাইসেন্স ফি ও রয়্যালটি দিতে হবে; অথবা তাদের নির্ধারিত দামে কাঁচামাল কিনতে হবে। আমরা সরকারকে এসব বিষয়ে জানাচ্ছি এবং শিল্প সমিতি থেকেও আলাপ চলছে। প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: সামনে বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান ফোকাস কী হবে?
আলী নাওয়াজ: বেক্সিমকো ফার্মার মূল দৃষ্টি এখন বায়োলজিকসের দিকে; বিশেষ করে অ্যান্টি ক্যানসার ও অ্যান্টি ডায়াবেটিস ওষুধে। বিশ্বজুড়ে এগুলোই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রথমেই এসব পণ্য আনতে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নতুন কিছু ওষুধ রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে; যাতে বলা যায়, এগুলো এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগেই বাজারে এসেছে। এ ছাড়া নোভিস্তা ফার্মা ও সাইনোভিয়া ফার্মা নামক দুটি বহুজাতিক কোম্পানির বাংলাদেশের শেয়ার আমরা কিনে নিয়েছি; যাতে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হয়।
আরও খবর পড়ুন:

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৭ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

বেক্সিমকো ফার্মা গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে তাদের অবস্থান ঠিক স্বাভাবিক সময়ের মতো। যেখানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার কথা, সেখানে প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে সুসংহত হচ্ছে, এত কিছু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান...
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৭ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

বেক্সিমকো ফার্মা গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে তাদের অবস্থান ঠিক স্বাভাবিক সময়ের মতো। যেখানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার কথা, সেখানে প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে সুসংহত হচ্ছে, এত কিছু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান...
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বেক্সিমকো ফার্মা গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে তাদের অবস্থান ঠিক স্বাভাবিক সময়ের মতো। যেখানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার কথা, সেখানে প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে সুসংহত হচ্ছে, এত কিছু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান...
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মা গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে তাদের অবস্থান ঠিক স্বাভাবিক সময়ের মতো। যেখানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার কথা, সেখানে প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে সুসংহত হচ্ছে, এত কিছু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান...
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৭ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে