Ajker Patrika

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ঝুলন্ত অঙ্গরাজ্যই ভাগ্যবিধাতা

জাহীদ রেজা নূর, নিউইয়র্ক থেকে
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯: ৩১
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার সকাল থেকেই নিউইয়র্ক মহানগরের আকাশের মুখ ভার। আকাশজুড়ে মেঘের দৌরাত্ম্য। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে অবশ্য বলা হয়েছে, কখনো কখনো একটু সূর্যের মুখ দেখাও যেতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোন প্রার্থীর জীবনটাই আপাতত মেঘলা করে দেবে, আর কোন প্রার্থীর মুখে এনে দেবে ঝকঝকে রোদ্দুর, তা জানা যাবে আর কটা দিন পরই।

বরাবরের মতো এবারও দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোই ঠিক করে দেবে কে হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মাত্র কয়েকটি অঙ্গরাজ্যই পাল্টে দেয় সব হিসাব-নিকাশ। দেশটির বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যই আগে থেকে ঠিক করে নেয়, কার পক্ষে যাবে। এই যেমন নিউইয়র্ক হলো ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি। এই অঙ্গরাজ্যের মানুষ এখন পর্যন্ত নীল ডেমোক্র্যাটদের ওপরই ভরসা রেখে চলেছে। তেমনি কানেটিকাট, ভারমন্ট, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউজার্সি, ক্যালিফোর্নিয়া, অরেগন, ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যও ডেমোক্র্যাটদের বিশ্বাস করে এসেছে সব সময়। অন্যদিকে লাল রিপাবলিকানদেরই ভালোবাসে অ্যালাবামা, আরকানসাস, ওয়াইওমিং, আলাস্কার মতো অঙ্গরাজ্যগুলো। এই অঙ্গরাজ্যগুলোয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা খুব বেশি চাপের মধ্যে থাকেন না। যারা নীল, তারা সব সময়ই নীল। যারা লাল, তারা সব সময়ই লাল। যে রাজ্যগুলোকে সহজেই লাল-নীলে ভাগ করা যায় না, সেখানেই যত জ্বালা আর স্নায়ুর চাপ। এ রকম অঙ্গরাজ্যগুলোর মানুষের মন ভজাতে কী কষ্টটাই না করতে হয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের! এবার কমলা হ্যারিস আর ডোনাল্ড ট্রাম্পও বুঝতে পারছেন, এই অঙ্গরাজ্যগুলোই তাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো তাই সব রাজনীতিবিদ ও সংবাদমাধ্যমের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। এসব রাজ্যে যাঁরা এখনো স্থির করেননি কাকে ভোট দেবেন, তাঁদের নিজের দিকে টানতে প্রাণপাত করে থাকেন প্রার্থীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরাসরি ভোট হয় না। এখানে আছে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ বা নির্বাচকমণ্ডলী নামের একটি ব্যবস্থা। কোনো অঙ্গরাজ্যের জনগণ যাঁকে বেশি ভোট দেয়, তাঁর ভাগ্যেই যায় রাজ্যটির সব ‘ইলেকটোরাল ভোট’। একেই বলে ‘উইনার টেক অল’ পদ্ধতি। যেমন জনবহুল নিউইয়র্কে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ২৮, ক্যালিফোর্নিয়ায় আরও বেশি, ৫৪টি। আবার জনবিরল উত্তর ডাকোটায় মাত্র ৩টি। মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তার বেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাবেন, তিনিই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

কোন রাজ্যগুলো দোদুল্যমান

সব সময় একই অঙ্গরাজ্য দোদুল্যমান থাকে, তা নয়। এটা নির্ভর করে জনসংখ্যা, সামাজিক ঘটনাবলি এবং চলতি অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর। অর্থনীতিকে তালিকার প্রথমেই রাখতে হয়। তবে এ বছর গর্ভপাত প্রসঙ্গটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নির্বাচনে। গত শতকের সত্তরের দশকে সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের পক্ষে যে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিলেন, সে রায় ভঙ্গ করে কোনো অঙ্গরাজ্য গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা নিতে পারত না। কিন্তু ২০২২ সালে গর্ভপাতবিরোধী সুপ্রিম কোর্টের আরেকটি আলোচিত রায় অঙ্গরাজ্যগুলোকে ইচ্ছেমতো গর্ভপাতবিরোধী অবস্থানে যাওয়ার পথ খুলে দিয়েছে। এতে অনেক নারী ক্ষুব্ধ। কমলা হ্যারিস লড়ছেন নারীর গর্ভপাতের অধিকার ফিরে পেতে। ট্রাম্প সেটা চান না। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে, এই নির্বাচনে গর্ভপাত একটি জোরালো ঘটনা, যার ওপর প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা-ও অনেকটা নির্ভর করছে।

আমরা এবার দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর দিকে দৃষ্টি দিই। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যই অর্থনীতি ও জাতীয় প্রশ্নের পাশাপাশি রাজ্যের নিজস্ব সংকট ও সমস্যাকেও ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখে।

আরিজোনা

আরিজোনার মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো অভিবাসন। আরিজোনার পাশেই মেক্সিকো। ফলে সীমান্ত গলে অভিবাসীরা বেআইনিভাবে ঢুকে পড়ছে এই রাজ্যে। জো বাইডেন তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে প্রতিবেশী এই দেশের সঙ্গে আমেরিকার সমস্যার ‘মূল কারণ’ মোকাবিলা করে সীমান্ত সংকট সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু কমলা তাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অনেকেই মনে করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প সে সুযোগটা নির্বাচনী প্রচারণায় কাজে লাগাচ্ছেন।

মেক্সিকো থেকে বিপুল জনস্রোত এসে মিশে যাচ্ছে আরিজোনায়, ফলে তা জনসংখ্যার দিক থেকে হয়ে উঠছে বর্ধিষ্ণু। এই রাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ মানুষই লাতিন আমেরিকার বংশোদ্ভূত। লাতিনেরাই এখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে।

২০২০ সালে আরিজোনায় জিতেছিলেন জো বাইডেন। আরিজোনার জন্য রয়েছে ১১টি ইলেকটোরাল ভোট।

জর্জিয়া

১৯৯২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ায় জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকানরা। শুধু ২০২০ সালে এসে দেখা গেল লাল জর্জিয়া এবার নীল হয়েছে। তবে হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ট্রাম্প পেয়েছিলেন মাত্র ০.২ শতাংশ কম ভোট। এই অঙ্গরাজ্যের ৩৩ শতাংশ মানুষ কৃষ্ণাঙ্গ। কমলা হ্যারিস তাদের কাছে অগ্রাধিকার পেতে পারেন।

জর্জিয়ার একটি গ্র্যান্ড জুরি ২০২০ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে উল্টে দিতে চেয়েছেন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেছিল। এখন মামলাটি স্থগিত রয়েছে এবং নির্বাচনের আগপর্যন্ত তা বিচারের দিকে গড়াবে না।

২০২০ সালে জর্জিয়ায় জয়ী হয়েছিলেন জো বাইডেন। এই রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১৬।

মিশিগান

গাড়িশিল্পের জন্য বিখ্যাত মিশিগান। ডেট্রয়েট শহরটির কথাই ধরুন, এটি ফোর্ড, জেনারেল মোটরস, ক্রাইসলার গাড়ির জন্মভূমি। এই রাজ্যের লোকজনের জন্য গাড়ি কারখানায় চাকরি পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। বাইডেনের শাসনামলেই চীন থেকে কম দামে গাড়ি আমদানি থামানো হয়েছে অতিমাত্রায় গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপ করে।

কিন্তু মিশিগানে এবারও ডেমোক্র্যাটরা জিতবেন, নিশ্চিত হয়ে সে কথা বলা যাচ্ছে না। বাইডেনের রাজনীতির, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ওপর নাখোশ মিশিগানবাসীরা। ইসরায়েলকে সমর্থন করে বাইডেন সরকার ফেঁসেছে এই রাজ্যে। মিশিগানে অনেক আরবের বাস। তাদের নিজের দিকে টানতে না পারলে কমলার পক্ষে এই অঙ্গরাজ্যের ভোট নিজের দিকে আনা সম্ভব হবে না।

২০২০ সালে বাইডেন জিতেছিলেন এই রাজ্যে। ১৫টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে মিশিগানে।

নেভাদা

নেভাদার জন্যও অভিবাসন একটি মূল সমস্যা। রাজ্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তের কাছে অবস্থিত। রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লাতিন আমেরিকান। এখানকার শহুরে জনসংখ্যার অংশ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

নেভাদা পর্যটনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই অঙ্গরাজ্যের জিডিপি অন্য যেকোনো দোদুল্যমান রাজ্যের চেয়ে বেশি পরিমাণে বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বেকারত্বের হার। যুক্তরাষ্ট্রে এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি বেকারের বসবাস।

নেভাদায় ২০২০ সালের নির্বাচনে জিতেছিলেন বাইডেন।

এই রাজ্য থেকে নির্বাচকের সংখ্যা ৬।

উত্তর ক্যারোলাইনা

বাইডেন যখন নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, তখনো উত্তর ক্যারোলাইনা যে ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকে পড়বে, তা জানান দিচ্ছিল। কিন্তু বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কমলা হ্যারিসকে শুরু করতে হচ্ছে একেবারে শূন্য থেকে। তবে মনে রাখতে হবে, শেষ ১১টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এখানে ডেমোক্র্যাটরা জিতেছেন মাত্র একবার।

উত্তর ক্যারোলাইনায় জনসংখ্যার ধরন বদলেছে। ১৯৯০ সালের দিকে এই রাজ্যের ৭৫ শতাংশই ছিল শেতাঙ্গ। এখন তা নেমে এসেছে ৬০ শতাংশে। তবে শেষ ৩০ বছরে জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বগতি দৃশ্যমান হয়েছে। পেনশনভোগী, অবসরপ্রাপ্ত সেনা এবং যুব সম্প্রদায় মিলেমিশে আছে এখানে।

২০২০ সালে এখানে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প। ইলেকটোরাল ভোট এই অঙ্গরাজ্যে ১৬টি।

পেনসিলভানিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় এখানে দ্রব্যমূল্য বেশি হারে বাড়ছে। তবে হাইড্রোলিক ফ্র্যাকচারিং প্রযুক্তির ব্যবহার এই রাজ্যকে টেক্সাসের পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস উৎপাদনকারী অঙ্গরাজ্যে পরিণত করেছে। পেনসিলভানিয়াতেই গত ১০ সেপ্টেম্বর কমলা-ট্রাম্প একমাত্র বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই রাজ্যে ২০২০ সালে বাইডেন জয়ী হয়েছিলেন। এখানে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১৯।

উইসকনসিন

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের মধ্যে এই অঙ্গরাজ্যেই সবচেয়ে বেশি শ্বেতাঙ্গের বসবাস। গত দুই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশের সর্বোচ্চ ভোটের হার ছিল এই অঙ্গরাজ্যে। ২০১৬ ও ২০২০ সালে, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীরা উইসকনসিনে তাঁদের প্রতিপক্ষকে ২৫ হাজারের কম ভোটে পরাজিত করেছিলেন। এতেই বোঝা যায়, এই রাজ্যে একটি ভোটও কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালে এই রাজ্যে জয়ী হয়েছিলেন জো বাইডেন। এখানে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১০।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো জয় করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন নীল আর লালেরা। জয়ের আগপর্যন্ত প্রার্থীদের ভাগ্যের ধূসরতা বজায় থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইয়েমেন সংঘাতে মুখোমুখি অবস্থানে সৌদি ও আরব আমিরাত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৬
আমিরাত সমর্থিত ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’-এর সৈন্যরা। ছবি: দ্য টাইমস
আমিরাত সমর্থিত ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’-এর সৈন্যরা। ছবি: দ্য টাইমস

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।

অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।

এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।

এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘২০২৫’ নিয়ে ১৯৯৮ সালে করা আমেরিকানদের ভবিষ্যদ্বাণী কতটুকু মিলেছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।

এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।

একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।

জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।

তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।

গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার অভিযোগ—‘মিথ্যা’ বলছে ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৭
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’

জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।

এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।

রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাইওয়ানকে ঘিরে ধরেছে চীনের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।

চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত