Ajker Patrika

রয়টার্সের প্রতিবেদন /সর্বোচ্চ ক্ষমতা পেয়েই ওয়াশিংটন কব্জায় নিতে ট্রাম্পের নির্মম চাল

আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৩২
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সিএএনএন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সিএএনএন

ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বসেছেন মাত্র পাঁচ দিন হলো। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই তিনি মার্কিন প্রশাসনে দ্রুততা ও দক্ষতার সঙ্গে নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দিয়েছেন। এটি প্রমাণ করে যে, তিনি যেসব কট্টর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেগুলো নিছক কথার ফুলঝুরি ছিল না।

এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট তাঁর প্রথম মেয়াদের মতো এবারও ফেডারেল প্রশাসন পুনর্গঠনের প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁর মতে, অনেক কর্মকর্তাই ‘শত্রুভাবাপন্ন’। তিনি শত শত সরকারি কর্মকর্তার দপ্তর পুনর্বণ্টন বা তাদের বরখাস্ত করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপও নিয়েছেন।

ট্রাম্প দায়িত্ব নিয়েই সামরিক বাহিনীকে দক্ষিণে মেক্সিকো সীমান্তে মোতায়েন করেছেন, ইউএস কোস্টগার্ড প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন এবং একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এসব নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি পরিবেশ-জলবায়ুগত ইস্যু থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব নীতিমালার মতো বিষয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ২৬টি নির্বাহী আদেশ জারি করেন।

তবে সম্ভবত ট্রাম্পের সবচেয়ে বিতর্কিত পদক্ষেপ ছিল ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিল হামলায় জড়িত প্রায় দেড় হাজার সমর্থককে ক্ষমা করা। এই হামলা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ক্যাপিটলের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়।

ট্রাম্পের মিত্ররা তাঁর এই কার্যক্রমকে বিশেষ বাহিনীর আকস্মিক অভিযানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁর সমর্থকদের এই হামলা মার্কিন ফেডারেল কর্মী, শ্রমিক সংগঠন, অধিকার সংস্থা এবং এমনকি সংবাদমাধ্যমকেও হতচকিত করে দিয়েছিল। তারা বলছেন, দ্বিতীয় মেয়াদের আগে ৪ বছর ট্রাম্পের ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় তার রক্ষণশীল মিত্রদের কয়েক বছরের পরিশ্রমের ফলে এই কার্যক্রম সম্ভব হয়েছে। ট্রাম্পের রক্ষণশীল মিত্ররাই ট্রাম্পের জন্য এসব বিষয়ে নীতিগত পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন, যাতে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই তা কার্যকর করা যায়।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে হোয়াইট হাউসের প্রধান কৌশলবিদ ও বর্তমানে ট্রাম্পের মূল পলিসি অ্যাডভাইজর স্টিভ ব্যানন এই বিষয়ে বলেন, ‘এটি (ট্রাম্পের মিত্ররা) ফেডারেল সরকার দখল করার সেনা দল।’

তবে বিরোধীরা বলছেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকে বিকৃত করছেন এবং নির্বাহী ক্ষমতার সীমা অতিরিক্ত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তাদের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার চেয়ে রূপান্তর ঘটানো এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রতিশোধ নেওয়ার দিকে বেশি মনোযোগী।

প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরপরই ট্রাম্প কয়েক ডজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেন। এই কর্মকর্তারা একসময় অভিযোগ করেছিলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টারকে নিয়ে কিছু নেতিবাচক সংবাদ রাশিয়ার প্রভাব বাড়ানোর কার্যক্রমের অংশ।

ইরান থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে এমন তিন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও সরিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। এমনকি তাঁর প্রশাসনের সমালোচক ও সেনাপ্রধান জেনারেল মার্ক মিলির ছবি পেন্টাগনের এক করিডর থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল থেকেও অনেক পেশাদার কূটনীতিককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ, ট্রাম্পের প্রতি তাদের আনুগত্য নিয়ে সন্দেহ আছে। এর ফলে ট্রাম্প নিজের অনুগত ব্যক্তিদের ১০০ টিরও বেশি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পদে বসানোর সুযোগ পেয়েছেন।

মার্কিন থিংক ট্যাংক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো উইলিয়াম গ্যালস্টন বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) সহজে শত্রুতার কথা ভুলে যান না।’

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের তুলনায় গত পাঁচ দিনের পদক্ষেপগুলো সম্পূর্ণ আলাদা, এমনকি তাঁর বিরোধীরাও এ কথা স্বীকার করেন। প্রথম মেয়াদে দলীয় বিভক্তি এবং দুর্বল প্রস্তুতির কারণে অনেক উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ইতিহাস নিয়ে কাজ করা নিক্সন প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরির সাবেক পরিচালক টিমোথি নাফটালি বলেন, ‘এসব পদক্ষেপের ব্যাপকতা এবং দ্রুততার দিক থেকে বলা যায়, তাঁর (ট্রাম্পের) দল যে প্রস্তুতি নিয়েছে, তা সত্যিই অসাধারণ।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক নীতিই ‘প্রজেক্ট ২০২৫’—এর সঙ্গে খাপে খাপ মিলে যায়। এটি বিভিন্ন রক্ষণশীল সংগঠনের একটি উদ্যোগ। এই সংগঠনটি ট্রাম্পের সম্ভাব্য ফিরে আসার প্রস্তুতি হিসেবে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করেছে। যদিও ট্রাম্প গত বছর এই প্রকল্প থেকে দূরত্ব তৈরি করে বলেছিলেন, তিনি এর কিছু জানেন না। তবে তারপরও তাঁর অনেক সাবেক উপদেষ্টা এতে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন এবং ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনে এর প্রভাব স্পষ্ট।

এ ছাড়া, ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ থেকে পেশাদার কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। সেটা বাস্তবায়িত হয়েছে। শিডিউল-এফ নামে নতুন এক ধরনের কর্মী শ্রেণি তৈরি করার পরামর্শও দিয়েছিল এই প্রজেক্ট। যার ফলে লক্ষাধিক কর্মীকে বরখাস্ত করা সহজ হবে।

ট্রাম্প ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিতেও (ফেমা) পরিবর্তনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। যার ফলে ফেডারেল সরকারের অনেক কাজ অঙ্গরাজ্যগুলোতে স্থানান্তরিত হবে। এটিও ‘প্রজেক্ট ২০২৫’—এর আরেকটি সুপারিশ ছিল। এ বিষয়ে স্টিভ ব্যানন বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রতি গভীরভাবে বিশ্বাসী অনেক নীতিগত ও রাজনৈতিক ব্যক্তি ২০২১ সাল থেকেই তাঁর পুনরাগমন নিয়ে কাজ করছেন। আর এখন আমরা তার ফলাফল দেখতে পাচ্ছি।’

ট্রাম্পের এজেন্ডা সামনে বড় বাধার মুখোমুখি হতে পারে। অনেক সমর্থকই স্বীকার করেছেন, তাঁর প্রশাসনের প্রথম কয়েক সপ্তাহ হয়তো ক্ষমতার শীর্ষ সময় হতে পারে। ট্রাম্পের অনেক নির্বাহী আদেশ সাংবিধানিক আইনের সীমাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী অভিবাসীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার বাতিলের আদেশ ইতিমধ্যেই ফেডারেল কোর্ট স্থগিত করেছে।

এ ছাড়া, তাঁর অন্যান্য প্রতিশ্রুতি ও আদেশও অঙ্গরাজ্য ও অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলোর মামলা মোকাবিলা করছে, যা তার প্রশাসনের সময়সীমার বড় অংশ আইনি জটিলতায় আটকে রাখতে পারে।

দুই বছর পর হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস তথা প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখা ট্রাম্পের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। মধ্যবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের দল সাধারণত আসন হারায়। যদি তা হয়, ট্রাম্পের জন্য আইন প্রণয়নের পথ আরও সংকীর্ণ হয়ে যাবে।

ট্রাম্পের আইন ও বিচার সংক্রান্ত ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা মাইক ডেভিস বলেন, ‘আমেরিকান ভোটারদের কাছ থেকে ট্রাম্প স্পষ্ট ম্যান্ডেট পেয়েছেন ওয়াশিংটনে বড় ধরনের সংস্কার আনার জন্য। কিন্তু তিনি যদি দ্রুত তা বাস্তবায়ন করতে না পারেন, তবে সেই রাজনৈতিক ম্যান্ডেট ম্লান হয়ে যাবে।’

রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।

প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’

ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।

বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।

৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।

গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’

তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।

গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’

গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।

গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪২
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।

বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।

এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।

দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন
বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।

এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।

তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।

ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন
শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত