Ajker Patrika

সৌদি আরবের মামলায় ফাঁস হয়ে যেতে পারে মার্কিন গোপন তথ্য

আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১৫: ৩৭
সৌদি আরবের মামলায় ফাঁস হয়ে যেতে পারে মার্কিন গোপন তথ্য

সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল জাবরির বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আদালতে এই মামলাগুলো করা হয়েছে। এতে মার্কিন কর্মকর্তাদের গোপন সন্ত্রাসবিরোধী অপারেশনের তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়তে পারে। বিশ্লেষকদের শঙ্কা, এই মামলায় ওয়াশিংটন বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল জাবরি। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র গোপন অপারেশন চালায়।

এদিকে সৌদির ক্ষমতাসীন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও আল জাবরির মধ্যে বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন। সেই বিরোধিতার কারণেই জাবরির বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো করা হয়েছে।

সৌদির সাবেক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের উপদেষ্টা ছিলেন আল জাবরি। ২০১৭ সালে নায়েফকে সরিয়ে সিংহাসন দখল করেন সালমান।

গত এপ্রিলে  ম্যাসাচুসেটসের আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো একটি নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তামূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে উদ্বেগজনক সব ফাঁস করার ইচ্ছা ছিল আল জাবরির। কীভাবে জাবরি এ তথ্য প্রকাশ করতেন, মার্কিন সরকার তা খতিয়ে দেখছে।

গত বছর আল জাবরি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে করা একটি মামলায় বলেন, তাঁকে হত্যা করার জন্য মোহাম্মদ বিন সালমান ‘টাইগার স্কোয়াড’ পাঠিয়েছিলেন কানাডায়। বর্তমানে আল জাবরি বসবাস করেন কানাডায়। সেখান থেকে তাঁকে দেশে ফিরতে বাধ্য করার জন্য তাঁর দুই সন্তানকে আটক করা হয়েছে।

চলতি বছরের মার্চে রাষ্ট্র পরিচালিত কোম্পানি সাকাব সৌদি হোল্ডিং আল জাবরির বিরুদ্ধে ৩৪৭ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছেন। তিনি যখন মোহাম্মদ বিন নায়েফের অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করতেন, তখন এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ মামলায় ম্যাসাচুসেটসের আদালতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, আল জাবরির বোস্টনে থাকা ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের সম্পদ জব্দ করতে। একই অভিযোগে রাষ্ট্রমালিকানাধীন কয়েকটি কোম্পানি কানাডার টরন্টোতে আল জাবরির বিরুদ্ধে মামলা করার কয়েক সপ্তাহ পরে এই মামলা করা হয়। কানাডার আদালত এর পরপরই বিশ্বজুড়ে আল জাবরির যে সম্পদ আছে তা জব্দ করার আদেশ দেন।

তবে আর্থিক কোনো অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন আল জাবরি। তাঁর আইনজীবীদের টিম বলেছে, মোহাম্মদ বিন সালমান এবং মোহাম্মদ বিন নায়েফের শত্রুতার শিকার হয়েছেন আল জাবরি। ২০২০ সালের মার্চের পর আর মোহাম্মদ বিন নায়েফকে দেখা যায়নি।

সাদ আল জাবরির ঘনিষ্ঠ এক সূত্র বলেছেন, যে গোপন সন্ত্রাসবিরোধী প্রকল্প মার্কিনিসহ হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করেছে, তা নিয়ে কখনো তথ্য প্রকাশ করতে চান না আল জাবরি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, মোহাম্মদ বিন সালমানের অন্ধ প্রতিশোধের শিকারে পরিণত হয়েছেন আল জাবরি। এর ফলে তাঁকে একপেশে করে ফেলা হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রে মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতিনিধিত্বকারী একজন আইনজীবী এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেড স্কয়ারে কেন গায়ে আগুন দিলেন রুশ প্রতিরক্ষা কারখানার মালিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার বিখ্যাত রেড স্কয়ার। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার বিখ্যাত রেড স্কয়ার। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার ৭৫ বছর বয়সী বিজ্ঞানী ভ্লাদিমির আর্সেনেভ কেন মস্কোর রেড স্কয়ারে নিজের ওপর আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশটির প্রতিরক্ষা খাতের তীব্র চাপেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন আর্সেনেভ।

আর্সেনেভ মূলত মস্কো-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ভোলনা সেন্ট্রাল সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর প্রধান। এই প্রতিষ্ঠানটি এমন সব হেলমেট রেডিও কন্ট্রোল ডিভাইস উপাদান করে, যেগুলো যুদ্ধ ক্ষেত্রে ট্যাংক ক্রুরা ব্যবহার করেন।

২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের সময় আর্সেনেভের কোম্পানিতে একের পর এক প্রতিরক্ষা আদেশ আসতে থাকে। কিন্তু সেই আদেশগুলো তাঁর কাছে বিষের মতো জটিল ও বিপজ্জনক ছিল বলে জানিয়েছেন রয়টার্সকে। তাঁকে উৎপাদন দ্রুত বাড়াতে হয়েছিল এবং আদেশ অনুযায়ী রেডিও ডিভাইস কন্ট্রোলগুলো রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সময়সীমা এবং মূল্যে ডেলিভারি দিতে হয়েছিল। ব্যর্থতার কোনো সুযোগ ছিল না।

এদিকে ২০২৩ সালের বসন্তে আর্সেনেভের কারখানা উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ে এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। সংস্থাটি তখন দেউলিয়া হওয়ার পথে। এ অবস্থায় ২০২৪ সালে ২৬ জুলাই মস্কোর রেড স্কয়ারে যান আর্সেনেভ। ক্রেমলিনের বাইরেই সোভিয়েত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা লেনিনের সমাধির কাছে নিজের শরীরে তিনি আগুন ধরিয়ে দেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় পরে তিনি কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।

আর্সেনেভ বলেন, ‘আমাদের কাজ ঠিকঠাক চলছে, আমরা আদেশ পূরণ করছি, তারপরও কেন আমরা ডুবে যাচ্ছি। সম্ভবত সমস্যা আছে।’ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ক্রেমলিন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আর্সেনেভের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে ওই ঘটনায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পের চাপ স্পষ্ট হয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ায় অন্তত ৩৪ জনকে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা আদেশে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ১১ জনই কোম্পানির প্রধান।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন—ক্রেমলিনের নীতি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রোস্টেকের মাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভাবন ও আধুনিকীকরণের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। রেডিও কন্ট্রোল ডিভাইস উৎপাদনের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল আর্সেনেভের প্রতিষ্ঠান। উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা এবং সরকারের সঙ্গে মূল্য নিয়ে দর-কষাকষি কোম্পানিটিকে আর্থিক সংকটে ফেলে। একপর্যায়ে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে অক্ষম এই প্রতিষ্ঠানটি মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে চাপের উদাহরণ আরও দেখা যায় দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের বক্তব্যে। ২০২৩ সালের মার্চে শিল্প নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি স্তালিনের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন একটি টেলিগ্রাম পড়ে শোনান, যেখানে সময়মতো অস্ত্র সরবরাহ করতে ব্যর্থ কোম্পানিকে ‘গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

চিকিৎসার মধ্যে থেকেও আর্সেনেভকে এখনো তাঁর দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে। তবে আদালতের শুনানিতে অংশগ্রহণই এখন তাঁর দিনের প্রধান কাজ। এ ছাড়া রেড স্কয়ারের মতো সংবেদনশীল স্থানে অনুমোদনহীন প্রতিবাদ করার জন্য তাঁকে বিপুল পরিমাণ জরিমানা করা হয়েছে।

এই ঘটনাটি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে প্রশাসনিক চাপ, সময়সীমার বাধ্যবাধকতা, আর্থিক অস্থিতিশীলতা ও আমলাতন্ত্রের চরম বাস্তবতা তুলে ধরেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাগরিকত্বের জন্য বসবাসের শর্ত দ্বিগুণ করল জাপান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাপানে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশিদের জন্য বসবাসের ন্যূনতম সময় দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, জাপানের নাগরিকত্ব পেতে হলে বিদেশিদের দেশটিতে অন্তত ১০ বছর বসবাস করতে হবে। বর্তমানে এই মেয়াদ পাঁচ বছর। একই সঙ্গে নাগরিকত্ব ও স্থায়ী বসবাসের ক্ষেত্রে ভাষা দক্ষতা এবং ভালো আচরণকে বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, আগামী বছরের মধ্যেই জাপানের অভিবাসন নীতির বড় ধরনের সংস্কার কার্যকর হতে পারে। দেশটির ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দল ‘নিপ্পন ইশিন’ বিদ্যমান নাগরিকত্ব নীতিকে ‘অতিরিক্ত শিথিল’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।

গত ৪ ডিসেম্বর তাকাইচির দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির এক বৈঠকে উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে—নাগরিকত্ব অনুমোদন শুধু বসবাসের সময়ের ওপর নির্ভর করবে না; আবেদনকারীর আচরণ, জীবিকা নির্বাহের সক্ষমতা এবং আয়ের স্থায়িত্বও বিবেচনায় নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপক ক্ষমতা থাকবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘নিপ্পন ইশিন’ দলের পক্ষ থেকে বিচার মন্ত্রণালয়ে বিদ্যমান নীতির তুলনায় আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে বিদেশি বাসিন্দার সংখ্যা সীমিত করা এবং কিছু ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের সুযোগ রাখার কথাও বলা হয়। তবে আরও কট্টর অবস্থান নেয় অতি ডানপন্থী সানসেইতো পার্টি। তারা ‘কিকাজিন’ বা নাগরিকত্ব পাওয়া বিদেশিদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সে সময় তারা অভিযোগ করে, সরকার জাতিগত জাপানিদের চেয়ে বিদেশিদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

তবে প্রস্তাবিত নিয়মে কিছু ব্যতিক্রম রাখার কথাও বলা হয়েছে। যেমন—জাপানে বহু বছর ধরে খেলাধুলায় প্রতিনিধিত্ব করা ক্রীড়াবিদেরা ১০ বছরের শর্ত পূরণ না করলেও নাগরিকত্ব পেতে পারেন। বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ১২ হাজার ২৪৮টি নাগরিকত্ব আবেদন জমা পড়ে, যার মধ্যে ৮ হাজার ৮৬৩টি অনুমোদিত হয়।

এ ছাড়া স্থায়ী বসবাসের আবেদনকারীদের জন্য জাপানি ভাষা ও নাগরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। এই প্রস্তাব ঘিরে দেশটির অনলাইনে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই নীতির সমর্থকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি বাসিন্দাদের জন্য এসব শর্ত যুক্তিসংগত। তবে সমালোচকেরা বলছেন, শ্রম ঘাটতিতে ভোগা জাপানে অভিবাসন নিরুৎসাহিত করতে রক্ষণশীল সরকার নতুন বাধা তৈরি করছে।

আসাহি শিম্বুন জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ‘সামাজিক অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচির’ লক্ষ্য হলো বিদেশিদের ভাষাজ্ঞান ও মৌলিক সামাজিক ধারণা জোরদার করা, যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কমে এবং বাড়তে থাকা বিদেশি-বিরোধী মনোভাব নিয়ন্ত্রণে আসে। এই উদ্যোগের আওতায় জাপানি ভাষায় দুর্বল শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে।

২০১৫ সালে জাপানে বিদেশি বাসিন্দার সংখ্যা ছিল প্রায় ২২ লাখ ৩০ হাজার। ২০২৫ সালের জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ লাখ ৫০ হাজারে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার বিদেশি স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনি লড়াইয়ে পরাজয়, দুই শিশুকে বিষ খাইয়ে বাবা-দাদির আত্মহত্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৫
দুই শিশুকে নিজের কাছে রাখতে না পারার যন্ত্রণা সইতে পারেননি বাবা ও দাদি। ছবি: সংগৃহীত
দুই শিশুকে নিজের কাছে রাখতে না পারার যন্ত্রণা সইতে পারেননি বাবা ও দাদি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কেরালা রাজ্যে সন্তানদের নিজের কাছে রাখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আইনি লড়াইয়ের এক মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সন্তানদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে দুই শিশুসন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে নিজেরাও আত্মঘাতী হয়েছেন বাবা ও দাদি। কেরালার কান্নুর জেলার পায়্যানুরের রামান্থালিতে এ ঘটনা ঘটে।

তদন্তকারী কর্মকর্তাদের প্রাথমিক তথ্যের বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত কালাধরন এবং তাঁর মা উষা দুই শিশুকে দুধের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে খাইয়েছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দুধের বোতল এবং কীটনাশকের খালি শিশি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সন্তানদের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর কালাধরন ও উষা একই বিষ পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। গতকাল সোমবার সকালে প্রতিবেশীরা দীর্ঘক্ষণ ঘর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দিলে এই আত্মহত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

কালাধরন এবং তাঁর স্ত্রী নয়নতারা দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য কলহের জেরে আলাদা বসবাস করছিলেন। তাঁদের দুই শিশুসন্তান কালাধরন ও তাঁর মা উষার কাছেই ছিল। সন্তানদের নিজের হেফাজতে পেতে নয়নতারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালত নয়নতারার পক্ষে রায় দেন এবং সোমবারের মধ্যে সন্তানদের তাঁর কাছে হস্তান্তরের সময়সীমা বেঁধে দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার রাতেই স্থানীয় থানা থেকে কালাধরনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল যাতে সোমবার সকালে কোনো ঝামেলা ছাড়াই হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু সন্তানদের মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি কালাধরন ও তাঁর মা।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। সেখানে সন্তানদের বিচ্ছেদ সহ্য করতে না পারা এবং আদালতের আদেশের প্রতি তাঁদের ক্ষোভ ও মানসিক যন্ত্রণার কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ বর্তমানে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র মামলা করেছে। কান্নুর জেলার পুলিশ সুপার বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং আবেগতাড়িত হত্যাকাণ্ড। আইনি নির্দেশ অমান্য করার চরম পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।’

পায়্যানুর এলাকায় এ ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রতিবেশীদের ভাষ্যমতে, কালাধরন সন্তানদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন, কিন্তু সেই ভালোবাসার এমন নৃশংস রূপ কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকে বলছেন, বড়দের দ্বন্দ্বে এভাবে নিরপরাধ শিশুদের প্রাণ যাওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

পুলিশ শিশুদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের আলোচনা প্রকৃত ফলাফলের খুব কাছাকাছি: জেলেনস্কি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৩
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনা ‘প্রকৃত ফলাফলের খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইউক্রেন সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রুস্তম উমেরভের নেতৃত্বে ইউক্রেনীয় আলোচক দল ও ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে যাচ্ছেন, যার মধ্যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত আলোচনাও অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিনিয়োগবিষয়ক দূত ও আলোচক কিরিল দিমিত্রিভও ফ্লোরিডায় মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইউক্রেন ও রাশিয়া—উভয় দেশের কর্মকর্তারাই জানিয়েছেন, আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ করতে তাঁদের প্রতিনিধিদল নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে। ইউক্রেনীয় কূটনীতিকদের এক সমাবেশে জেলেনস্কি বলেন, ‘সবকিছুই বেশ সম্মানজনক মনে হচ্ছে... এবং এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এটি আমাদের (ইউক্রেন) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র—উভয় পক্ষেরই কাজ। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা একটি প্রকৃত ফলাফলের খুব কাছাকাছি রয়েছি।’

জেলেনস্কি আরও জানান, আলোচকেরা মার্কিন প্রতিনিধিদের প্রস্তাবিত ২০ দফার একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে এটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এর আগে প্রাথমিক খসড়াটি রাশিয়ার দিকে বেশি ঝুঁকে আছে—এমন সমালোচনা করে তা প্রত্যাখ্যান করেছিল ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয়রা। তিনি বলেন, এর সবকিছু আদর্শিক না হলেও একটি পরিকল্পনা অন্তত আছে।

লড়াই থামার পর ভবিষ্যতে রাশিয়ার সম্ভাব্য সামরিক তৎপরতা রুখতে ইউক্রেন নিরাপত্তা গ্যারান্টি চেয়ে আসছে এবং দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘সব নথিপত্রের মৌলিক কাঠামো তৈরি, এটি খুবই প্রাথমিক বিষয়। এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলোর জন্য আমরা প্রস্তুত নই। আবার আমি নিশ্চিত যে, এমন কিছু বিষয়ও আছে, যার জন্য রুশরা প্রস্তুত নয়।’

ফ্লোরিডার এই আলোচনায় মার্কিন দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও তাঁর সাবেক জামাতা জ্যারেড কুশনার। পরে রাতে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, এখন মূল বিষয় হলো, এটা নিশ্চিত করা যে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কাছ থেকে কোনো সাড়া পায় কি না—অর্থাৎ দেশটি আগ্রাসন বাদ দিয়ে অন্য কোনো বিষয়ে মনোনিবেশ করতে সত্যিই প্রস্তুত কি না।

জেলেনস্কি আরও উল্লেখ করেন, মস্কোর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা কমিয়ে আনতে ক্রেমলিনের ওপর ক্রমাগত চাপ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, রুশ তেলের দাম কমানো, কঠোর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য চাপ অব্যাহত রাখাই কেবল একজন জেদি মানুষকে রাজি করাতে পারে। রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রের জন্য বরাদ্দ অর্থ কমিয়ে আনতে এ বছর ইতিমধ্যে অনেক কিছু করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত