ইজাজুল হক, ঢাকা

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন। এসব মূলত ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে, যা সময়ের ব্যবধানে ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।১. কেফিয়েহ
কেফিয়েহকে কুফিয়াও বলা হয়। এটি আরব বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত বর্গাকারের বড় সুতি রুমাল। স্বতন্ত্র প্যাটার্নে নকশা করা এসব রুমাল ফিলিস্তিনি নারী–পুরুষ সবাই পরিধান করে। সাদা জমিনে কালো ডোরের এই কাপড় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রুমালে জয়তুন পাতার প্যাটার্ন উদ্যম, শক্তি ও স্থিতির প্রতীক। মাছ ধরার জালের প্যাটার্ন ফিলিস্তিনি জেলে ও জনগণের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের সম্পর্ক নির্দেশ করে। আর মোটা প্যাটার্নটি ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক রুটকে প্রতিনিধিত্ব করে।
মধ্যপ্রাচ্যে গরম থেকে বাঁচতেই মূলত রুমাল ব্যবহার করা হয়। গত শতকের তিরিশের দশকে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহের সময় মূলত এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কেফিয়েহ ফিলিস্তিনের প্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের ব্যক্তিগত স্টাইলও ছিল। তিনি একে ত্রিভুজ আকারে ভাঁজ করে কাঁধের ওপর দিয়ে মাথা ঢাকতেন।
এটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংস্থা এটি ব্যবহার করে।
২. জয়তুনের ডাল
ফিলিস্তিনের সঙ্গে জয়তুন গাছের গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। জয়তুনের ডাল হাজার বছর ধরে শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।
জয়তুন গাছের শক্ত কাণ্ড খরা, শূন্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রা, তুষারপাত এমনকি আগুনও সহ্য করতে পারে। এটি ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের অবিচলতা এবং এখানকার মাটির সঙ্গে তাঁদের নাড়ির সম্পর্কের প্রতিনিধিত্ব করে।
তেল, সাবানসহ অনেক পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে জয়তুন। ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার জয়তুন চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিবছর অক্টোবর–নভেম্বরেই জয়তুন ফল সংগ্রহ করা হয়। এ সময়টি তাদের জন্য উৎসবের। তবে এ সময়ে বারবার ইসরায়েলি আগ্রাসনে উবে যায় সব আনন্দ।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, ২০২৩ সালের প্রথম ৫ মাসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ৫ হাজারের বেশি জয়তুন গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৯৭৪ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন, ‘আজ আমি এক হাতে জয়তুনের ডাল এবং অন্য হাতে মুক্তিযোদ্ধার বন্দুক নিয়ে এসেছি। আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল যেন পড়ে না যায়। আমি আবার বলছি, আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল পড়ে যেতে দিয়ো না।’
৩. ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি
ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি শিল্পকে তাতরিজও বলা হয়। সুই–সুতার নান্দনিক এক শিল্প, ফিলিস্তিনি নারীদের হাত ধরে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে।
ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের জীবনধারা ও অভিরুচির আলোকে তাতরিজের একাধিক স্বতন্ত্র শৈলী তৈরি হয়েছে। প্রতিটি শৈলীর পেছনে রয়েছে আলাদা গল্প। গাছের মতো প্রকৃতি অনুপ্রাণিত মোটিফ থেকে শুরু করে জ্যামিতিক আকৃতির মোটিফও এতে ব্যবহৃত হয়।
ফিলিস্তিনি নারীরা এমব্রয়ডারি করা ঢিলেঢালা একটি জামা পরিধান করে, যাকে আরবিতে সওব বলা হয়। এগুলো সাধারণত পাট, তুলা, পশম বা রেশমের তৈরি হয় এবং হাতে বোনা বা মেশিনে তৈরি হয়। লাল এমব্রয়ডারি প্রভাবশালী বর্ণ; যদিও তা অঞ্চল বা শিল্পী ভেদে ভিন্নও হয়।
২০২১ সালে ইউনেসকো ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারিকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করেছে।
৪. ফিলিস্তিনি চাবি
১৯৪৮ সালে ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনী সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে, যা নাকাবা (নাকবা) বা বিপর্যয় নামে পরিচিত। মানুষ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের সময় ঘরের চাবিটি সঙ্গে নিয়ে যায়। কারণ তাদের বিশ্বাস, তারা একদিন নিশ্চিত ঘরে ফিরবে।
অনেক ফিলিস্তিনি এখনো তাদের আসল বাড়ির চাবি ধরে রেখেছে তাদের আশা ও সংকল্পের প্রতীক হিসেবে। এই চাবিগুলো কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এবং ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরার অধিকারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ আক্রমণে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে, যা ১৯৪৮ সালের নাকবার সময়ের দ্বিগুণ। ফিলিস্তিনিদের জন্য নাকবা ঐতিহাসিক কোনো ঘটনা নয়; এটি তাদের বিরতিহীন বাস্তুচ্যুতির চলমান প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে।
৫. ফিলিস্তিনের মানচিত্র
ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মানচিত্রটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগে এই অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত ভৌগোলিক সীমানার প্রতিনিধিত্ব করে। মানচিত্রটি ফিলিস্তিনিদের ভূমি এবং স্বাধিকারের দাবির দৃশ্যমান প্রতীক।
১৯৪৮ সালে সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাড়িয়ে এই মানচিত্রের ৭৮ শতাংশ ভূমি দখল করে নেয় ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনী। অবশিষ্ট ২২ শতাংশ নামেই ফিলিস্তিনিদের ভাগে রাখা হয়েছে, যা বর্তমানে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নামে পরিচিত।
বর্তমানে ৭০ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি দেশটির ভেতরে ও আশপাশের দেশগুলোর শরণার্থীশিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থী সমস্যা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর একটি।
নেকলেস, টিশার্ট, চাবির তোড়াসহ অনেক উপহারসামগ্রীতে ফিলিস্তিনি মানচিত্র ব্যবহার করা হয়, যা দেশটির স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
৬. আল–আকসা প্রাঙ্গণ
ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতের মূলে রয়েছে আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ, যা জেরুজালেমে অবস্থিত। ৩৫ একরের এই প্রাঙ্গণে রয়েছে আল–কিবলি মসজিদ ও ডোম অব দ্য রকসহ ফিলিস্তিনিদের গভীর ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য।
ইসলামি বিশ্বাস মতে, আল–আকসা থেকেই নবী মুহাম্মদ (সা.) মিরাজে গমন করেন। তাই ইসলামে মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীর পরই এটিকে ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান বিবেচনা করা হয়। প্রাঙ্গণটি মুসলমানদের কাছে আল–হারাম আশ–শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত।
এই প্রাঙ্গণ সব সময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী এখানে বারবার হামলা চালায় এবং মুসলমানদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে।
৭. হানযালা
হানযালা হলো ফিলিস্তিনি কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলির আঁকা একটি কার্টুন চরিত্র। এর মাধ্যমে তিনি নিজের শৈশবের শরণার্থী জীবনের অভিজ্ঞতা এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। ১৯৬৯ সালে একটি কুয়েতি সংবাদপত্রে কার্টুনটি প্রথম ছাপা হয়।
১৯৭৩ সালে অক্টোবরের যুদ্ধের পর আল–আলি পুরো বিশ্ব কীভাবে ফিলিস্তিন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তা তুলে ধরতে পিঠ দেখানো হানযালা কার্টুন আঁকতে শুরু করেন। হানযালার মাধ্যমে শিল্পী ১০ বছর বয়সে ঘরবাড়ি ছেড়ে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া তালিযুক্ত পোশাক পরা ও খালি পায়ে হাঁটা নিজের শৈশবকে খুঁজে বেড়ান।
ফিলিস্তিনের শুষ্ক এলাকায় উৎপাদিত তিক্ত ফল ‘হানযাল’–এর নামানুসারে এর নামকরণ। এই গাছগুলো কেটে ফেললে আবার বেড়ে ওঠে। আর এর শিকড় থাকে অনেক গভীরে।
১৯৮৭ সালে লন্ডনে কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হাতে খুন হন। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে কাউকে অভিযুক্ত পর্যন্ত করা হয়নি।
৮. তরমুজ
তরমুজই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করে। জেনিন থেকে গাজা পর্যন্ত জন্মানো এই ফল দেখতে ফিলিস্তিনি পতাকার মতো। পতাকার মতো এই ফলে রয়েছে লাল, সবুজ, সাদা ও কালো অংশ। তাই এটিকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের পতাকার প্রতীক হিসেবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় ব্যবহার করে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর, ইসরায়েল যখন পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে, তখন দখলদারেরা অধিকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি পতাকা নিষিদ্ধ করে। তবে আইন করে পতাকা নিষিদ্ধ করা যায়নি। মুক্তিকামী মানুষ প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তরমুজ প্রদর্শন করতে শুরু করে। ফলে তরমুজ শিল্পমাধ্যম, টিশার্ট, গ্রাফিতি, পোস্টার এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইমোজি হিসেবেও ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হতে থাকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুলিশকে জনসমাগম স্থল থেকে ফিলিস্তিনি পতাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরে জুনে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পতাকা নিষিদ্ধ করার বিল আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা জাজিম তেল আবিবের ডজনখানেক ট্যাক্সিতে তরমুজের ছবি লাগিয়ে দেয়।
চলমান যুদ্ধে গাজার ঘটনা পোস্ট করার ক্ষেত্রে মানুষ তরমুজের ইমোজি ব্যবহার করছে। কারণ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনি পতাকা ব্যবহার কার্যত নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন। এসব মূলত ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে, যা সময়ের ব্যবধানে ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।১. কেফিয়েহ
কেফিয়েহকে কুফিয়াও বলা হয়। এটি আরব বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত বর্গাকারের বড় সুতি রুমাল। স্বতন্ত্র প্যাটার্নে নকশা করা এসব রুমাল ফিলিস্তিনি নারী–পুরুষ সবাই পরিধান করে। সাদা জমিনে কালো ডোরের এই কাপড় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রুমালে জয়তুন পাতার প্যাটার্ন উদ্যম, শক্তি ও স্থিতির প্রতীক। মাছ ধরার জালের প্যাটার্ন ফিলিস্তিনি জেলে ও জনগণের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের সম্পর্ক নির্দেশ করে। আর মোটা প্যাটার্নটি ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক রুটকে প্রতিনিধিত্ব করে।
মধ্যপ্রাচ্যে গরম থেকে বাঁচতেই মূলত রুমাল ব্যবহার করা হয়। গত শতকের তিরিশের দশকে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহের সময় মূলত এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কেফিয়েহ ফিলিস্তিনের প্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের ব্যক্তিগত স্টাইলও ছিল। তিনি একে ত্রিভুজ আকারে ভাঁজ করে কাঁধের ওপর দিয়ে মাথা ঢাকতেন।
এটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংস্থা এটি ব্যবহার করে।
২. জয়তুনের ডাল
ফিলিস্তিনের সঙ্গে জয়তুন গাছের গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। জয়তুনের ডাল হাজার বছর ধরে শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।
জয়তুন গাছের শক্ত কাণ্ড খরা, শূন্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রা, তুষারপাত এমনকি আগুনও সহ্য করতে পারে। এটি ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের অবিচলতা এবং এখানকার মাটির সঙ্গে তাঁদের নাড়ির সম্পর্কের প্রতিনিধিত্ব করে।
তেল, সাবানসহ অনেক পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে জয়তুন। ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার জয়তুন চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিবছর অক্টোবর–নভেম্বরেই জয়তুন ফল সংগ্রহ করা হয়। এ সময়টি তাদের জন্য উৎসবের। তবে এ সময়ে বারবার ইসরায়েলি আগ্রাসনে উবে যায় সব আনন্দ।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, ২০২৩ সালের প্রথম ৫ মাসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ৫ হাজারের বেশি জয়তুন গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৯৭৪ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন, ‘আজ আমি এক হাতে জয়তুনের ডাল এবং অন্য হাতে মুক্তিযোদ্ধার বন্দুক নিয়ে এসেছি। আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল যেন পড়ে না যায়। আমি আবার বলছি, আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল পড়ে যেতে দিয়ো না।’
৩. ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি
ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি শিল্পকে তাতরিজও বলা হয়। সুই–সুতার নান্দনিক এক শিল্প, ফিলিস্তিনি নারীদের হাত ধরে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে।
ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের জীবনধারা ও অভিরুচির আলোকে তাতরিজের একাধিক স্বতন্ত্র শৈলী তৈরি হয়েছে। প্রতিটি শৈলীর পেছনে রয়েছে আলাদা গল্প। গাছের মতো প্রকৃতি অনুপ্রাণিত মোটিফ থেকে শুরু করে জ্যামিতিক আকৃতির মোটিফও এতে ব্যবহৃত হয়।
ফিলিস্তিনি নারীরা এমব্রয়ডারি করা ঢিলেঢালা একটি জামা পরিধান করে, যাকে আরবিতে সওব বলা হয়। এগুলো সাধারণত পাট, তুলা, পশম বা রেশমের তৈরি হয় এবং হাতে বোনা বা মেশিনে তৈরি হয়। লাল এমব্রয়ডারি প্রভাবশালী বর্ণ; যদিও তা অঞ্চল বা শিল্পী ভেদে ভিন্নও হয়।
২০২১ সালে ইউনেসকো ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারিকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করেছে।
৪. ফিলিস্তিনি চাবি
১৯৪৮ সালে ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনী সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে, যা নাকাবা (নাকবা) বা বিপর্যয় নামে পরিচিত। মানুষ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের সময় ঘরের চাবিটি সঙ্গে নিয়ে যায়। কারণ তাদের বিশ্বাস, তারা একদিন নিশ্চিত ঘরে ফিরবে।
অনেক ফিলিস্তিনি এখনো তাদের আসল বাড়ির চাবি ধরে রেখেছে তাদের আশা ও সংকল্পের প্রতীক হিসেবে। এই চাবিগুলো কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এবং ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরার অধিকারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ আক্রমণে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে, যা ১৯৪৮ সালের নাকবার সময়ের দ্বিগুণ। ফিলিস্তিনিদের জন্য নাকবা ঐতিহাসিক কোনো ঘটনা নয়; এটি তাদের বিরতিহীন বাস্তুচ্যুতির চলমান প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে।
৫. ফিলিস্তিনের মানচিত্র
ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মানচিত্রটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগে এই অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত ভৌগোলিক সীমানার প্রতিনিধিত্ব করে। মানচিত্রটি ফিলিস্তিনিদের ভূমি এবং স্বাধিকারের দাবির দৃশ্যমান প্রতীক।
১৯৪৮ সালে সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাড়িয়ে এই মানচিত্রের ৭৮ শতাংশ ভূমি দখল করে নেয় ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনী। অবশিষ্ট ২২ শতাংশ নামেই ফিলিস্তিনিদের ভাগে রাখা হয়েছে, যা বর্তমানে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নামে পরিচিত।
বর্তমানে ৭০ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি দেশটির ভেতরে ও আশপাশের দেশগুলোর শরণার্থীশিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থী সমস্যা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর একটি।
নেকলেস, টিশার্ট, চাবির তোড়াসহ অনেক উপহারসামগ্রীতে ফিলিস্তিনি মানচিত্র ব্যবহার করা হয়, যা দেশটির স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
৬. আল–আকসা প্রাঙ্গণ
ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতের মূলে রয়েছে আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ, যা জেরুজালেমে অবস্থিত। ৩৫ একরের এই প্রাঙ্গণে রয়েছে আল–কিবলি মসজিদ ও ডোম অব দ্য রকসহ ফিলিস্তিনিদের গভীর ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য।
ইসলামি বিশ্বাস মতে, আল–আকসা থেকেই নবী মুহাম্মদ (সা.) মিরাজে গমন করেন। তাই ইসলামে মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীর পরই এটিকে ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান বিবেচনা করা হয়। প্রাঙ্গণটি মুসলমানদের কাছে আল–হারাম আশ–শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত।
এই প্রাঙ্গণ সব সময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী এখানে বারবার হামলা চালায় এবং মুসলমানদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে।
৭. হানযালা
হানযালা হলো ফিলিস্তিনি কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলির আঁকা একটি কার্টুন চরিত্র। এর মাধ্যমে তিনি নিজের শৈশবের শরণার্থী জীবনের অভিজ্ঞতা এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। ১৯৬৯ সালে একটি কুয়েতি সংবাদপত্রে কার্টুনটি প্রথম ছাপা হয়।
১৯৭৩ সালে অক্টোবরের যুদ্ধের পর আল–আলি পুরো বিশ্ব কীভাবে ফিলিস্তিন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তা তুলে ধরতে পিঠ দেখানো হানযালা কার্টুন আঁকতে শুরু করেন। হানযালার মাধ্যমে শিল্পী ১০ বছর বয়সে ঘরবাড়ি ছেড়ে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া তালিযুক্ত পোশাক পরা ও খালি পায়ে হাঁটা নিজের শৈশবকে খুঁজে বেড়ান।
ফিলিস্তিনের শুষ্ক এলাকায় উৎপাদিত তিক্ত ফল ‘হানযাল’–এর নামানুসারে এর নামকরণ। এই গাছগুলো কেটে ফেললে আবার বেড়ে ওঠে। আর এর শিকড় থাকে অনেক গভীরে।
১৯৮৭ সালে লন্ডনে কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হাতে খুন হন। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে কাউকে অভিযুক্ত পর্যন্ত করা হয়নি।
৮. তরমুজ
তরমুজই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করে। জেনিন থেকে গাজা পর্যন্ত জন্মানো এই ফল দেখতে ফিলিস্তিনি পতাকার মতো। পতাকার মতো এই ফলে রয়েছে লাল, সবুজ, সাদা ও কালো অংশ। তাই এটিকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের পতাকার প্রতীক হিসেবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় ব্যবহার করে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর, ইসরায়েল যখন পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে, তখন দখলদারেরা অধিকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি পতাকা নিষিদ্ধ করে। তবে আইন করে পতাকা নিষিদ্ধ করা যায়নি। মুক্তিকামী মানুষ প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তরমুজ প্রদর্শন করতে শুরু করে। ফলে তরমুজ শিল্পমাধ্যম, টিশার্ট, গ্রাফিতি, পোস্টার এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইমোজি হিসেবেও ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হতে থাকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুলিশকে জনসমাগম স্থল থেকে ফিলিস্তিনি পতাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরে জুনে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পতাকা নিষিদ্ধ করার বিল আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা জাজিম তেল আবিবের ডজনখানেক ট্যাক্সিতে তরমুজের ছবি লাগিয়ে দেয়।
চলমান যুদ্ধে গাজার ঘটনা পোস্ট করার ক্ষেত্রে মানুষ তরমুজের ইমোজি ব্যবহার করছে। কারণ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনি পতাকা ব্যবহার কার্যত নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা
ইজাজুল হক, ঢাকা

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন। এসব মূলত ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে, যা সময়ের ব্যবধানে ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।১. কেফিয়েহ
কেফিয়েহকে কুফিয়াও বলা হয়। এটি আরব বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত বর্গাকারের বড় সুতি রুমাল। স্বতন্ত্র প্যাটার্নে নকশা করা এসব রুমাল ফিলিস্তিনি নারী–পুরুষ সবাই পরিধান করে। সাদা জমিনে কালো ডোরের এই কাপড় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রুমালে জয়তুন পাতার প্যাটার্ন উদ্যম, শক্তি ও স্থিতির প্রতীক। মাছ ধরার জালের প্যাটার্ন ফিলিস্তিনি জেলে ও জনগণের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের সম্পর্ক নির্দেশ করে। আর মোটা প্যাটার্নটি ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক রুটকে প্রতিনিধিত্ব করে।
মধ্যপ্রাচ্যে গরম থেকে বাঁচতেই মূলত রুমাল ব্যবহার করা হয়। গত শতকের তিরিশের দশকে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহের সময় মূলত এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কেফিয়েহ ফিলিস্তিনের প্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের ব্যক্তিগত স্টাইলও ছিল। তিনি একে ত্রিভুজ আকারে ভাঁজ করে কাঁধের ওপর দিয়ে মাথা ঢাকতেন।
এটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংস্থা এটি ব্যবহার করে।
২. জয়তুনের ডাল
ফিলিস্তিনের সঙ্গে জয়তুন গাছের গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। জয়তুনের ডাল হাজার বছর ধরে শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।
জয়তুন গাছের শক্ত কাণ্ড খরা, শূন্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রা, তুষারপাত এমনকি আগুনও সহ্য করতে পারে। এটি ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের অবিচলতা এবং এখানকার মাটির সঙ্গে তাঁদের নাড়ির সম্পর্কের প্রতিনিধিত্ব করে।
তেল, সাবানসহ অনেক পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে জয়তুন। ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার জয়তুন চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিবছর অক্টোবর–নভেম্বরেই জয়তুন ফল সংগ্রহ করা হয়। এ সময়টি তাদের জন্য উৎসবের। তবে এ সময়ে বারবার ইসরায়েলি আগ্রাসনে উবে যায় সব আনন্দ।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, ২০২৩ সালের প্রথম ৫ মাসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ৫ হাজারের বেশি জয়তুন গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৯৭৪ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন, ‘আজ আমি এক হাতে জয়তুনের ডাল এবং অন্য হাতে মুক্তিযোদ্ধার বন্দুক নিয়ে এসেছি। আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল যেন পড়ে না যায়। আমি আবার বলছি, আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল পড়ে যেতে দিয়ো না।’
৩. ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি
ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি শিল্পকে তাতরিজও বলা হয়। সুই–সুতার নান্দনিক এক শিল্প, ফিলিস্তিনি নারীদের হাত ধরে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে।
ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের জীবনধারা ও অভিরুচির আলোকে তাতরিজের একাধিক স্বতন্ত্র শৈলী তৈরি হয়েছে। প্রতিটি শৈলীর পেছনে রয়েছে আলাদা গল্প। গাছের মতো প্রকৃতি অনুপ্রাণিত মোটিফ থেকে শুরু করে জ্যামিতিক আকৃতির মোটিফও এতে ব্যবহৃত হয়।
ফিলিস্তিনি নারীরা এমব্রয়ডারি করা ঢিলেঢালা একটি জামা পরিধান করে, যাকে আরবিতে সওব বলা হয়। এগুলো সাধারণত পাট, তুলা, পশম বা রেশমের তৈরি হয় এবং হাতে বোনা বা মেশিনে তৈরি হয়। লাল এমব্রয়ডারি প্রভাবশালী বর্ণ; যদিও তা অঞ্চল বা শিল্পী ভেদে ভিন্নও হয়।
২০২১ সালে ইউনেসকো ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারিকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করেছে।
৪. ফিলিস্তিনি চাবি
১৯৪৮ সালে ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনী সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে, যা নাকাবা (নাকবা) বা বিপর্যয় নামে পরিচিত। মানুষ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের সময় ঘরের চাবিটি সঙ্গে নিয়ে যায়। কারণ তাদের বিশ্বাস, তারা একদিন নিশ্চিত ঘরে ফিরবে।
অনেক ফিলিস্তিনি এখনো তাদের আসল বাড়ির চাবি ধরে রেখেছে তাদের আশা ও সংকল্পের প্রতীক হিসেবে। এই চাবিগুলো কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এবং ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরার অধিকারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ আক্রমণে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে, যা ১৯৪৮ সালের নাকবার সময়ের দ্বিগুণ। ফিলিস্তিনিদের জন্য নাকবা ঐতিহাসিক কোনো ঘটনা নয়; এটি তাদের বিরতিহীন বাস্তুচ্যুতির চলমান প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে।
৫. ফিলিস্তিনের মানচিত্র
ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মানচিত্রটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগে এই অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত ভৌগোলিক সীমানার প্রতিনিধিত্ব করে। মানচিত্রটি ফিলিস্তিনিদের ভূমি এবং স্বাধিকারের দাবির দৃশ্যমান প্রতীক।
১৯৪৮ সালে সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাড়িয়ে এই মানচিত্রের ৭৮ শতাংশ ভূমি দখল করে নেয় ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনী। অবশিষ্ট ২২ শতাংশ নামেই ফিলিস্তিনিদের ভাগে রাখা হয়েছে, যা বর্তমানে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নামে পরিচিত।
বর্তমানে ৭০ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি দেশটির ভেতরে ও আশপাশের দেশগুলোর শরণার্থীশিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থী সমস্যা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর একটি।
নেকলেস, টিশার্ট, চাবির তোড়াসহ অনেক উপহারসামগ্রীতে ফিলিস্তিনি মানচিত্র ব্যবহার করা হয়, যা দেশটির স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
৬. আল–আকসা প্রাঙ্গণ
ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতের মূলে রয়েছে আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ, যা জেরুজালেমে অবস্থিত। ৩৫ একরের এই প্রাঙ্গণে রয়েছে আল–কিবলি মসজিদ ও ডোম অব দ্য রকসহ ফিলিস্তিনিদের গভীর ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য।
ইসলামি বিশ্বাস মতে, আল–আকসা থেকেই নবী মুহাম্মদ (সা.) মিরাজে গমন করেন। তাই ইসলামে মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীর পরই এটিকে ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান বিবেচনা করা হয়। প্রাঙ্গণটি মুসলমানদের কাছে আল–হারাম আশ–শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত।
এই প্রাঙ্গণ সব সময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী এখানে বারবার হামলা চালায় এবং মুসলমানদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে।
৭. হানযালা
হানযালা হলো ফিলিস্তিনি কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলির আঁকা একটি কার্টুন চরিত্র। এর মাধ্যমে তিনি নিজের শৈশবের শরণার্থী জীবনের অভিজ্ঞতা এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। ১৯৬৯ সালে একটি কুয়েতি সংবাদপত্রে কার্টুনটি প্রথম ছাপা হয়।
১৯৭৩ সালে অক্টোবরের যুদ্ধের পর আল–আলি পুরো বিশ্ব কীভাবে ফিলিস্তিন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তা তুলে ধরতে পিঠ দেখানো হানযালা কার্টুন আঁকতে শুরু করেন। হানযালার মাধ্যমে শিল্পী ১০ বছর বয়সে ঘরবাড়ি ছেড়ে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া তালিযুক্ত পোশাক পরা ও খালি পায়ে হাঁটা নিজের শৈশবকে খুঁজে বেড়ান।
ফিলিস্তিনের শুষ্ক এলাকায় উৎপাদিত তিক্ত ফল ‘হানযাল’–এর নামানুসারে এর নামকরণ। এই গাছগুলো কেটে ফেললে আবার বেড়ে ওঠে। আর এর শিকড় থাকে অনেক গভীরে।
১৯৮৭ সালে লন্ডনে কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হাতে খুন হন। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে কাউকে অভিযুক্ত পর্যন্ত করা হয়নি।
৮. তরমুজ
তরমুজই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করে। জেনিন থেকে গাজা পর্যন্ত জন্মানো এই ফল দেখতে ফিলিস্তিনি পতাকার মতো। পতাকার মতো এই ফলে রয়েছে লাল, সবুজ, সাদা ও কালো অংশ। তাই এটিকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের পতাকার প্রতীক হিসেবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় ব্যবহার করে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর, ইসরায়েল যখন পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে, তখন দখলদারেরা অধিকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি পতাকা নিষিদ্ধ করে। তবে আইন করে পতাকা নিষিদ্ধ করা যায়নি। মুক্তিকামী মানুষ প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তরমুজ প্রদর্শন করতে শুরু করে। ফলে তরমুজ শিল্পমাধ্যম, টিশার্ট, গ্রাফিতি, পোস্টার এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইমোজি হিসেবেও ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হতে থাকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুলিশকে জনসমাগম স্থল থেকে ফিলিস্তিনি পতাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরে জুনে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পতাকা নিষিদ্ধ করার বিল আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা জাজিম তেল আবিবের ডজনখানেক ট্যাক্সিতে তরমুজের ছবি লাগিয়ে দেয়।
চলমান যুদ্ধে গাজার ঘটনা পোস্ট করার ক্ষেত্রে মানুষ তরমুজের ইমোজি ব্যবহার করছে। কারণ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনি পতাকা ব্যবহার কার্যত নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন। এসব মূলত ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে, যা সময়ের ব্যবধানে ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।১. কেফিয়েহ
কেফিয়েহকে কুফিয়াও বলা হয়। এটি আরব বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত বর্গাকারের বড় সুতি রুমাল। স্বতন্ত্র প্যাটার্নে নকশা করা এসব রুমাল ফিলিস্তিনি নারী–পুরুষ সবাই পরিধান করে। সাদা জমিনে কালো ডোরের এই কাপড় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রুমালে জয়তুন পাতার প্যাটার্ন উদ্যম, শক্তি ও স্থিতির প্রতীক। মাছ ধরার জালের প্যাটার্ন ফিলিস্তিনি জেলে ও জনগণের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরের সম্পর্ক নির্দেশ করে। আর মোটা প্যাটার্নটি ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক রুটকে প্রতিনিধিত্ব করে।
মধ্যপ্রাচ্যে গরম থেকে বাঁচতেই মূলত রুমাল ব্যবহার করা হয়। গত শতকের তিরিশের দশকে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহের সময় মূলত এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কেফিয়েহ ফিলিস্তিনের প্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের ব্যক্তিগত স্টাইলও ছিল। তিনি একে ত্রিভুজ আকারে ভাঁজ করে কাঁধের ওপর দিয়ে মাথা ঢাকতেন।
এটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংস্থা এটি ব্যবহার করে।
২. জয়তুনের ডাল
ফিলিস্তিনের সঙ্গে জয়তুন গাছের গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। জয়তুনের ডাল হাজার বছর ধরে শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।
জয়তুন গাছের শক্ত কাণ্ড খরা, শূন্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রা, তুষারপাত এমনকি আগুনও সহ্য করতে পারে। এটি ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের অবিচলতা এবং এখানকার মাটির সঙ্গে তাঁদের নাড়ির সম্পর্কের প্রতিনিধিত্ব করে।
তেল, সাবানসহ অনেক পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে জয়তুন। ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার জয়তুন চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিবছর অক্টোবর–নভেম্বরেই জয়তুন ফল সংগ্রহ করা হয়। এ সময়টি তাদের জন্য উৎসবের। তবে এ সময়ে বারবার ইসরায়েলি আগ্রাসনে উবে যায় সব আনন্দ।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, ২০২৩ সালের প্রথম ৫ মাসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ৫ হাজারের বেশি জয়তুন গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৯৭৪ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন, ‘আজ আমি এক হাতে জয়তুনের ডাল এবং অন্য হাতে মুক্তিযোদ্ধার বন্দুক নিয়ে এসেছি। আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল যেন পড়ে না যায়। আমি আবার বলছি, আমার হাত থেকে জয়তুনের ডাল পড়ে যেতে দিয়ো না।’
৩. ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি
ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারি শিল্পকে তাতরিজও বলা হয়। সুই–সুতার নান্দনিক এক শিল্প, ফিলিস্তিনি নারীদের হাত ধরে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে।
ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের জীবনধারা ও অভিরুচির আলোকে তাতরিজের একাধিক স্বতন্ত্র শৈলী তৈরি হয়েছে। প্রতিটি শৈলীর পেছনে রয়েছে আলাদা গল্প। গাছের মতো প্রকৃতি অনুপ্রাণিত মোটিফ থেকে শুরু করে জ্যামিতিক আকৃতির মোটিফও এতে ব্যবহৃত হয়।
ফিলিস্তিনি নারীরা এমব্রয়ডারি করা ঢিলেঢালা একটি জামা পরিধান করে, যাকে আরবিতে সওব বলা হয়। এগুলো সাধারণত পাট, তুলা, পশম বা রেশমের তৈরি হয় এবং হাতে বোনা বা মেশিনে তৈরি হয়। লাল এমব্রয়ডারি প্রভাবশালী বর্ণ; যদিও তা অঞ্চল বা শিল্পী ভেদে ভিন্নও হয়।
২০২১ সালে ইউনেসকো ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি এমব্রয়ডারিকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করেছে।
৪. ফিলিস্তিনি চাবি
১৯৪৮ সালে ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনী সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে, যা নাকাবা (নাকবা) বা বিপর্যয় নামে পরিচিত। মানুষ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের সময় ঘরের চাবিটি সঙ্গে নিয়ে যায়। কারণ তাদের বিশ্বাস, তারা একদিন নিশ্চিত ঘরে ফিরবে।
অনেক ফিলিস্তিনি এখনো তাদের আসল বাড়ির চাবি ধরে রেখেছে তাদের আশা ও সংকল্পের প্রতীক হিসেবে। এই চাবিগুলো কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এবং ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরার অধিকারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ আক্রমণে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে, যা ১৯৪৮ সালের নাকবার সময়ের দ্বিগুণ। ফিলিস্তিনিদের জন্য নাকবা ঐতিহাসিক কোনো ঘটনা নয়; এটি তাদের বিরতিহীন বাস্তুচ্যুতির চলমান প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে।
৫. ফিলিস্তিনের মানচিত্র
ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মানচিত্রটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগে এই অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত ভৌগোলিক সীমানার প্রতিনিধিত্ব করে। মানচিত্রটি ফিলিস্তিনিদের ভূমি এবং স্বাধিকারের দাবির দৃশ্যমান প্রতীক।
১৯৪৮ সালে সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাড়িয়ে এই মানচিত্রের ৭৮ শতাংশ ভূমি দখল করে নেয় ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনী। অবশিষ্ট ২২ শতাংশ নামেই ফিলিস্তিনিদের ভাগে রাখা হয়েছে, যা বর্তমানে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নামে পরিচিত।
বর্তমানে ৭০ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি দেশটির ভেতরে ও আশপাশের দেশগুলোর শরণার্থীশিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থী সমস্যা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর একটি।
নেকলেস, টিশার্ট, চাবির তোড়াসহ অনেক উপহারসামগ্রীতে ফিলিস্তিনি মানচিত্র ব্যবহার করা হয়, যা দেশটির স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
৬. আল–আকসা প্রাঙ্গণ
ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতের মূলে রয়েছে আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ, যা জেরুজালেমে অবস্থিত। ৩৫ একরের এই প্রাঙ্গণে রয়েছে আল–কিবলি মসজিদ ও ডোম অব দ্য রকসহ ফিলিস্তিনিদের গভীর ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য।
ইসলামি বিশ্বাস মতে, আল–আকসা থেকেই নবী মুহাম্মদ (সা.) মিরাজে গমন করেন। তাই ইসলামে মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীর পরই এটিকে ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান বিবেচনা করা হয়। প্রাঙ্গণটি মুসলমানদের কাছে আল–হারাম আশ–শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত।
এই প্রাঙ্গণ সব সময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী এখানে বারবার হামলা চালায় এবং মুসলমানদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে।
৭. হানযালা
হানযালা হলো ফিলিস্তিনি কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলির আঁকা একটি কার্টুন চরিত্র। এর মাধ্যমে তিনি নিজের শৈশবের শরণার্থী জীবনের অভিজ্ঞতা এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। ১৯৬৯ সালে একটি কুয়েতি সংবাদপত্রে কার্টুনটি প্রথম ছাপা হয়।
১৯৭৩ সালে অক্টোবরের যুদ্ধের পর আল–আলি পুরো বিশ্ব কীভাবে ফিলিস্তিন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তা তুলে ধরতে পিঠ দেখানো হানযালা কার্টুন আঁকতে শুরু করেন। হানযালার মাধ্যমে শিল্পী ১০ বছর বয়সে ঘরবাড়ি ছেড়ে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া তালিযুক্ত পোশাক পরা ও খালি পায়ে হাঁটা নিজের শৈশবকে খুঁজে বেড়ান।
ফিলিস্তিনের শুষ্ক এলাকায় উৎপাদিত তিক্ত ফল ‘হানযাল’–এর নামানুসারে এর নামকরণ। এই গাছগুলো কেটে ফেললে আবার বেড়ে ওঠে। আর এর শিকড় থাকে অনেক গভীরে।
১৯৮৭ সালে লন্ডনে কার্টুনিস্ট নাজি আল–আলি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হাতে খুন হন। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে কাউকে অভিযুক্ত পর্যন্ত করা হয়নি।
৮. তরমুজ
তরমুজই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করে। জেনিন থেকে গাজা পর্যন্ত জন্মানো এই ফল দেখতে ফিলিস্তিনি পতাকার মতো। পতাকার মতো এই ফলে রয়েছে লাল, সবুজ, সাদা ও কালো অংশ। তাই এটিকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের পতাকার প্রতীক হিসেবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় ব্যবহার করে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর, ইসরায়েল যখন পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে, তখন দখলদারেরা অধিকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি পতাকা নিষিদ্ধ করে। তবে আইন করে পতাকা নিষিদ্ধ করা যায়নি। মুক্তিকামী মানুষ প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তরমুজ প্রদর্শন করতে শুরু করে। ফলে তরমুজ শিল্পমাধ্যম, টিশার্ট, গ্রাফিতি, পোস্টার এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইমোজি হিসেবেও ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হতে থাকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুলিশকে জনসমাগম স্থল থেকে ফিলিস্তিনি পতাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরে জুনে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পতাকা নিষিদ্ধ করার বিল আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা জাজিম তেল আবিবের ডজনখানেক ট্যাক্সিতে তরমুজের ছবি লাগিয়ে দেয়।
চলমান যুদ্ধে গাজার ঘটনা পোস্ট করার ক্ষেত্রে মানুষ তরমুজের ইমোজি ব্যবহার করছে। কারণ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনি পতাকা ব্যবহার কার্যত নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।
৪ ঘণ্টা আগে
একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো...
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া
৬ ঘণ্টা আগে
রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার এই হামলার ঘটনা ঘটে। এক বছর আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর এটিই প্রথম কোনো হামলা, যাতে মার্কিন বাহিনীর প্রাণহানি ঘটল।
সেন্টকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, হামলাকারীকে পাল্টা অভিযানে হত্যা করা হয়েছে। পেন্টাগনের নীতিমালা অনুযায়ী, নিকটাত্মীয়দের না জানানো পর্যন্ত নিহত সেনাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।
এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেন, হামলাকারীকে ‘হত্যা করা হয়েছে’। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জেনে রাখুন, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে আমেরিকানদের ওপর হামলা হলে আমরা আপনাকে খুঁজে বের করব এবং হত্যা করব।’
এর আগে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানায়, পালমিরার কাছে হোমস প্রদেশে যৌথ টহলের সময় সিরীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ঘটনার পর দেইর আজ জোর-দামেস্ক মহাসড়কে সাময়িকভাবে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয় এবং এলাকায় সামরিক বিমান টহল দেয়।
সানা আরও জানায়, আহতদের ইরাক সীমান্তের কাছে আল-তানফ ঘাঁটিতে মার্কিন হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিরীয় সামরিক কর্মকর্তা জানান, পালমিরার একটি সিরীয় ঘাঁটিতে সিরীয় ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক চলাকালে গুলির ঘটনা ঘটে। শহরের এক প্রত্যক্ষদর্শীও জানান, তিনি ঘাঁটির ভেতর থেকে গুলির শব্দ শুনেছেন।
আইএসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ এক দশক ধরে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেনা মোতায়েন রেখেছে। সেখানে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
২০১৫ সালে সিরিয়ায় সামরিক শক্তির চূড়ায় থাকা অবস্থায় আইএস পালমিরা দখল করে নেয়। প্রায় ১০ মাস পর শহরটি তাদের হাতছাড়া হয়। ওই সময় আইএস পালমিরার বহু প্রাচীন নিদর্শন ধ্বংস করে এবং কিছু স্থানে প্রকাশ্যে গণহত্যা চালায়। ২০১৮ সালে সিরিয়ায় আইএস পরাজিত হলেও তারা এখনো ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ১৪ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনের চেষ্টা চালালেও সিরিয়া এখনো নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে।

সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার এই হামলার ঘটনা ঘটে। এক বছর আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর এটিই প্রথম কোনো হামলা, যাতে মার্কিন বাহিনীর প্রাণহানি ঘটল।
সেন্টকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, হামলাকারীকে পাল্টা অভিযানে হত্যা করা হয়েছে। পেন্টাগনের নীতিমালা অনুযায়ী, নিকটাত্মীয়দের না জানানো পর্যন্ত নিহত সেনাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।
এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেন, হামলাকারীকে ‘হত্যা করা হয়েছে’। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জেনে রাখুন, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে আমেরিকানদের ওপর হামলা হলে আমরা আপনাকে খুঁজে বের করব এবং হত্যা করব।’
এর আগে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানায়, পালমিরার কাছে হোমস প্রদেশে যৌথ টহলের সময় সিরীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ঘটনার পর দেইর আজ জোর-দামেস্ক মহাসড়কে সাময়িকভাবে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয় এবং এলাকায় সামরিক বিমান টহল দেয়।
সানা আরও জানায়, আহতদের ইরাক সীমান্তের কাছে আল-তানফ ঘাঁটিতে মার্কিন হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিরীয় সামরিক কর্মকর্তা জানান, পালমিরার একটি সিরীয় ঘাঁটিতে সিরীয় ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক চলাকালে গুলির ঘটনা ঘটে। শহরের এক প্রত্যক্ষদর্শীও জানান, তিনি ঘাঁটির ভেতর থেকে গুলির শব্দ শুনেছেন।
আইএসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ এক দশক ধরে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেনা মোতায়েন রেখেছে। সেখানে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
২০১৫ সালে সিরিয়ায় সামরিক শক্তির চূড়ায় থাকা অবস্থায় আইএস পালমিরা দখল করে নেয়। প্রায় ১০ মাস পর শহরটি তাদের হাতছাড়া হয়। ওই সময় আইএস পালমিরার বহু প্রাচীন নিদর্শন ধ্বংস করে এবং কিছু স্থানে প্রকাশ্যে গণহত্যা চালায়। ২০১৮ সালে সিরিয়ায় আইএস পরাজিত হলেও তারা এখনো ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ১৪ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনের চেষ্টা চালালেও সিরিয়া এখনো নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো...
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া
৬ ঘণ্টা আগে
রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো থেকে সরে যাচ্ছেন। টানা ১২ মাস চলা এই ভ্রমণ বর্জন থামার কোনো লক্ষণ এখনো নেই।
দীর্ঘদিন ধরে কানাডা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সবচেয়ে বড় উৎস। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিদেশি পর্যটকদের ২৮ শতাংশই ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেই সংখ্যা দ্রুত কমতে শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসটিএ) জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২৩ শতাংশ কমেছে। ফলে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার (৩০০ কোটি পাউন্ড) আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
তবে কানাডিয়ানরা ভ্রমণ কমাননি। তাহলে প্রশ্ন হলো, তাঁরা যাচ্ছেন কোথায়?
অনেকে নিজের দেশেই ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভ্রমণবিষয়ক লেখক ও কনটেন্ট নির্মাতা এমিলি ব্রিয়োঁ জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কানাডিয়ানরা যুক্তরাষ্ট্র বাদ দিয়ে দেশের ভেতরেই ঘুরতে শুরু করেছেন। এমিলি ব্রিয়োঁ বলেন, ‘আমি আগে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র দুটো দেশেই রোড ট্রিপ কভার করতাম। কিন্তু গত মার্চে সিদ্ধান্ত নিই, শুধু কানাডাকেই কেন্দ্র করব। আমি ২০২৫ সালের এপ্রিলে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে যাওয়ার পারিবারিক ভ্রমণ বাতিল করে সেই বাজেট কানাডায় ঘুরে ব্যয় করেছি।’
টরন্টোভিত্তিক জনসংযোগকর্মী ট্রেসি লামুরি আরও কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি আর কখনো সীমান্ত পার হব না। ভ্রমণের জন্য ইউরোপ বেছে নিয়েছি, আর কাজের জন্য জুমই যথেষ্ট। ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ আর মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে আগেও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপদ মনে হতো না, এখন তো পুরোপুরি ‘নো-গো’ তালিকায়।
এই মনোভাব শুধু কানাডিয়ানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইউএসটিএর হিসাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক পর্যটকেরা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ কমিয়ে দিলে মোট ক্ষতি ৫.৭ বিলিয়ন ডলার (৪.২৮ বিলিয়ন পাউন্ড) হতে পারে।
কানাডার জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা জানায়, ২০২৫ সালে দেশের ভেতরে ভ্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি কানাডিয়ানদের ভ্রমণ বেড়েছে মেক্সিকো, পর্তুগাল, বাহামাস ও বেলিজে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোর শহরগুলোতে কানাডিয়ান পর্যটক প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে বুয়েনস আইরেস, ওসাকা, কোপেনহেগেন ও কুরাসাওয়ের মতো গন্তব্যে কানাডিয়ানদের খরচ ২০২৪ সালের তুলনায় ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

অন্যদিকে, কানাডিয়ান পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঞ্চল ক্ষতির মুখে পড়েছে। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা ভারমন্টে কানাডা থেকে আসা পর্যটক কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। লাস ভেগাসে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৮ শতাংশ কানাডিয়ানের ভ্রমণ কমেছে। ফোর্ট লডারডেল, আপস্টেট নিউইয়র্কসহ অনেক এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
এদিকে ইউরোপ ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানোয় যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে যাওয়া কানাডিয়ানদের জন্য বিকল্প আরও সহজ হয়েছে। এয়ার কানাডার নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্ক গালার্ডো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বার্লিন, পন্তা দেলগাদা, নঁত ও ব্রাসেলসের মতো ইউরোপীয় শহরে নতুন নন-স্টপ রুট চালু করছি, যাতে ভ্রমণ সহজ হয় এবং পর্যটন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হয়।’
৪ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে এয়ার কানাডা ক্যারিবীয়, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১৩টি নতুন রুট চালু করছে; যা মূলত শীতকালে ফ্লোরিডা বা ক্যালিফোর্নিয়ার ওপর নির্ভর করা কানাডিয়ান ‘স্নোবার্ড’দের লক্ষ্য করেই।
এই প্রবণতা কত দিন চলবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে এমিলি ব্রিয়োঁ মনে করেন, এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এটা কানাডিয়ানদের জন্য নিজের দেশের কম পরিচিত অঞ্চল ঘুরে দেখার সুযোগ। যেমন ব্যানফের বদলে কুটেনে। আমার মনে হচ্ছে না এটা স্বল্পমেয়াদি বিষয়; বরং কানাডিয়ানদের ভ্রমণ পছন্দে একটি স্থায়ী পরিবর্তনের সূচনা হচ্ছে।’

একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো থেকে সরে যাচ্ছেন। টানা ১২ মাস চলা এই ভ্রমণ বর্জন থামার কোনো লক্ষণ এখনো নেই।
দীর্ঘদিন ধরে কানাডা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সবচেয়ে বড় উৎস। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিদেশি পর্যটকদের ২৮ শতাংশই ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেই সংখ্যা দ্রুত কমতে শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসটিএ) জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২৩ শতাংশ কমেছে। ফলে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার (৩০০ কোটি পাউন্ড) আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
তবে কানাডিয়ানরা ভ্রমণ কমাননি। তাহলে প্রশ্ন হলো, তাঁরা যাচ্ছেন কোথায়?
অনেকে নিজের দেশেই ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভ্রমণবিষয়ক লেখক ও কনটেন্ট নির্মাতা এমিলি ব্রিয়োঁ জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কানাডিয়ানরা যুক্তরাষ্ট্র বাদ দিয়ে দেশের ভেতরেই ঘুরতে শুরু করেছেন। এমিলি ব্রিয়োঁ বলেন, ‘আমি আগে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র দুটো দেশেই রোড ট্রিপ কভার করতাম। কিন্তু গত মার্চে সিদ্ধান্ত নিই, শুধু কানাডাকেই কেন্দ্র করব। আমি ২০২৫ সালের এপ্রিলে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে যাওয়ার পারিবারিক ভ্রমণ বাতিল করে সেই বাজেট কানাডায় ঘুরে ব্যয় করেছি।’
টরন্টোভিত্তিক জনসংযোগকর্মী ট্রেসি লামুরি আরও কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি আর কখনো সীমান্ত পার হব না। ভ্রমণের জন্য ইউরোপ বেছে নিয়েছি, আর কাজের জন্য জুমই যথেষ্ট। ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ আর মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে আগেও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপদ মনে হতো না, এখন তো পুরোপুরি ‘নো-গো’ তালিকায়।
এই মনোভাব শুধু কানাডিয়ানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইউএসটিএর হিসাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক পর্যটকেরা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ কমিয়ে দিলে মোট ক্ষতি ৫.৭ বিলিয়ন ডলার (৪.২৮ বিলিয়ন পাউন্ড) হতে পারে।
কানাডার জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা জানায়, ২০২৫ সালে দেশের ভেতরে ভ্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি কানাডিয়ানদের ভ্রমণ বেড়েছে মেক্সিকো, পর্তুগাল, বাহামাস ও বেলিজে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোর শহরগুলোতে কানাডিয়ান পর্যটক প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে বুয়েনস আইরেস, ওসাকা, কোপেনহেগেন ও কুরাসাওয়ের মতো গন্তব্যে কানাডিয়ানদের খরচ ২০২৪ সালের তুলনায় ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

অন্যদিকে, কানাডিয়ান পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঞ্চল ক্ষতির মুখে পড়েছে। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা ভারমন্টে কানাডা থেকে আসা পর্যটক কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। লাস ভেগাসে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৮ শতাংশ কানাডিয়ানের ভ্রমণ কমেছে। ফোর্ট লডারডেল, আপস্টেট নিউইয়র্কসহ অনেক এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
এদিকে ইউরোপ ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানোয় যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে যাওয়া কানাডিয়ানদের জন্য বিকল্প আরও সহজ হয়েছে। এয়ার কানাডার নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্ক গালার্ডো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বার্লিন, পন্তা দেলগাদা, নঁত ও ব্রাসেলসের মতো ইউরোপীয় শহরে নতুন নন-স্টপ রুট চালু করছি, যাতে ভ্রমণ সহজ হয় এবং পর্যটন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হয়।’
৪ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে এয়ার কানাডা ক্যারিবীয়, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১৩টি নতুন রুট চালু করছে; যা মূলত শীতকালে ফ্লোরিডা বা ক্যালিফোর্নিয়ার ওপর নির্ভর করা কানাডিয়ান ‘স্নোবার্ড’দের লক্ষ্য করেই।
এই প্রবণতা কত দিন চলবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে এমিলি ব্রিয়োঁ মনে করেন, এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এটা কানাডিয়ানদের জন্য নিজের দেশের কম পরিচিত অঞ্চল ঘুরে দেখার সুযোগ। যেমন ব্যানফের বদলে কুটেনে। আমার মনে হচ্ছে না এটা স্বল্পমেয়াদি বিষয়; বরং কানাডিয়ানদের ভ্রমণ পছন্দে একটি স্থায়ী পরিবর্তনের সূচনা হচ্ছে।’

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া
৬ ঘণ্টা আগে
রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দী মুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার মিত্রদেশ বেলারুশের ওপর আরোপিত কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সার উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা। পটাশ বেলারুশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য।
১২৩ বন্দী মুক্তির পর জন কোয়াল বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে পর্যায়ক্রমে আরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’ বেলারুশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পটাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়া হবে।
২০২০ সাল থেকে কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা দীর্ঘ সময় একাকী বন্দিত্বে ছিলেন। মুক্তির পর তাঁর বোন তাতিয়ানা খোমিচ ভিডিও কলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খোমিচ বলেন, ‘সে মুক্ত। তাকে ভালো ও সুস্থই দেখাচ্ছে। তাকে জড়িয়ে ধরার অপেক্ষায় আছি।’ তিনি আরও জানান, কোলেসনিকোভা প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আলোচনায় অংশ নেওয়া বেলারুশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, বেলারুশের একটি আদালত ২০২৩ সালের মার্চে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী অ্যালেস বিলিয়াতস্কিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। সে সময় দেশটির আদালত চোরাচালান ও জনজীবনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কর্মকাণ্ডে অর্থায়নে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
৬৩ বছর বিলিয়াতস্কি ২০২২ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী তিনজনের একজন। ২০২১ সালে বেলারুশের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়লে বিলিয়াতস্কিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে সহযোগিতার জন্য অবৈধভাবে বাইরে থেকে বেলারুশে অর্থ আনার অভিযোগে আনা হয়।
মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকজনকে শিগগিরই লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাইরে লোকজন জড়ো হচ্ছেন।
এই সমঝোতাকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর জন্য বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পর ব্যাপক বিক্ষোভ নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে দমন করে। সে সময় শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কোলেসনিকোভা।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর বেলারুশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরও কড়া হয়। কারণ, দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করেই রুশ সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কোয়াল জানান, আলোচনায় তিনি লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেছেন এবং সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় মিনস্ক কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়েও মতবিনিময় হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মিনস্কের সঙ্গে ওয়াশিংটনের এই সম্পৃক্ততা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত, যা ইউরোপের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইউরোপ যেখানে এখনো বেলারুশকে বিচ্ছিন্ন ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপে রাখতে চায়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দী মুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার মিত্রদেশ বেলারুশের ওপর আরোপিত কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সার উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা। পটাশ বেলারুশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য।
১২৩ বন্দী মুক্তির পর জন কোয়াল বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে পর্যায়ক্রমে আরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’ বেলারুশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পটাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়া হবে।
২০২০ সাল থেকে কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা দীর্ঘ সময় একাকী বন্দিত্বে ছিলেন। মুক্তির পর তাঁর বোন তাতিয়ানা খোমিচ ভিডিও কলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খোমিচ বলেন, ‘সে মুক্ত। তাকে ভালো ও সুস্থই দেখাচ্ছে। তাকে জড়িয়ে ধরার অপেক্ষায় আছি।’ তিনি আরও জানান, কোলেসনিকোভা প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আলোচনায় অংশ নেওয়া বেলারুশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, বেলারুশের একটি আদালত ২০২৩ সালের মার্চে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী অ্যালেস বিলিয়াতস্কিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। সে সময় দেশটির আদালত চোরাচালান ও জনজীবনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কর্মকাণ্ডে অর্থায়নে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
৬৩ বছর বিলিয়াতস্কি ২০২২ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী তিনজনের একজন। ২০২১ সালে বেলারুশের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়লে বিলিয়াতস্কিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে সহযোগিতার জন্য অবৈধভাবে বাইরে থেকে বেলারুশে অর্থ আনার অভিযোগে আনা হয়।
মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকজনকে শিগগিরই লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাইরে লোকজন জড়ো হচ্ছেন।
এই সমঝোতাকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর জন্য বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পর ব্যাপক বিক্ষোভ নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে দমন করে। সে সময় শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কোলেসনিকোভা।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর বেলারুশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরও কড়া হয়। কারণ, দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করেই রুশ সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কোয়াল জানান, আলোচনায় তিনি লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেছেন এবং সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় মিনস্ক কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়েও মতবিনিময় হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মিনস্কের সঙ্গে ওয়াশিংটনের এই সম্পৃক্ততা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত, যা ইউরোপের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইউরোপ যেখানে এখনো বেলারুশকে বিচ্ছিন্ন ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপে রাখতে চায়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।
৪ ঘণ্টা আগে
একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো...
৫ ঘণ্টা আগে
রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেঙ্কোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাতভর চালানো এসব হামলায় দেশের পাঁচটি অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগুন নেভানো এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। তবে শীতকাল ঘনিয়ে আসায় সাম্প্রতিক সময়ে এসব হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জার্মানি সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবেন। বার্লিনে প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির সর্বশেষ খসড়া নিয়েই মূলত আলোচনা হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, রাতভর হামলায় রাশিয়া ৪৫০টির বেশি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাইমেঙ্কো জানান, হামলার শিকার অঞ্চলগুলো হলো—দনিপ্রোপেত্রোভস্ক, কিরোভোহরাদ, মাইকোলাইভ, ওডেসা ও চেরনিহিভ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, এসব হামলায় তারা কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাঝপথে দিক পরিবর্তন করতে পারে, ফলে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ সারা রাত বিচ্ছিন্ন ছিল। হামলার কারণে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে আবার বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে চালু নেই, তবে রিঅ্যাক্টর ঠান্ডা রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন।
এদিকে রাশিয়ার সারাতোভ অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর রোমান বুসারগিন।

রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেঙ্কোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাতভর চালানো এসব হামলায় দেশের পাঁচটি অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগুন নেভানো এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। তবে শীতকাল ঘনিয়ে আসায় সাম্প্রতিক সময়ে এসব হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জার্মানি সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবেন। বার্লিনে প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির সর্বশেষ খসড়া নিয়েই মূলত আলোচনা হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, রাতভর হামলায় রাশিয়া ৪৫০টির বেশি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাইমেঙ্কো জানান, হামলার শিকার অঞ্চলগুলো হলো—দনিপ্রোপেত্রোভস্ক, কিরোভোহরাদ, মাইকোলাইভ, ওডেসা ও চেরনিহিভ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, এসব হামলায় তারা কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাঝপথে দিক পরিবর্তন করতে পারে, ফলে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ সারা রাত বিচ্ছিন্ন ছিল। হামলার কারণে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে আবার বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে চালু নেই, তবে রিঅ্যাক্টর ঠান্ডা রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন।
এদিকে রাশিয়ার সারাতোভ অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর রোমান বুসারগিন।

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে মিছিলগুলো হচ্ছে, তাতে অনেককে সাদাকালো একটি রুমাল গায়ে জড়াতে দেখা যায়। একে কেফিয়েহ বলে। একইভাবে বিক্ষোভকারীদের বড় বড় চাবি বহন করতেও দেখা যাচ্ছে। আবার দেখা যায়, শিশুদের পিঠে তুলে ঘোরানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তরমুজ এঁকেও নিয়ে আসেন।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।
৪ ঘণ্টা আগে
একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো...
৫ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া
৬ ঘণ্টা আগে